#প্রিয়_অনুভব
#সাবরিন_জাহান_রোদেলা
#পর্ব_০৭
“অপছন্দের কারণ?”
চলে যেতে যেতেই নাহিয়ান থেমে গেলো। নীতির দিকে না তাকিয়ে উত্তর দিলো, “বলার ইচ্ছে নেই। কিন্তু আপনি আমার অপছন্দ!”
বলেই এক মুহুর্ত দাঁড়ালো না সে। নীতি তাকিয়ে রইলো তার যাওয়ার পানে। হুট করেই অনুভব করলো তার মন ভার হয়ে আসছে। এর কারণ সে জানে। সবসময় সবার মুখে ‘সে প্রিয়’ শুনেই অভ্যস্ত। তাই ‘অপছন্দ’ শব্দটা ভীষণ পীড়া দিচ্ছে তাকে। নিজের মনকে বুঝ দিলো, “সবসময় সবার প্রিয় হওয়া যায় না। নাহিয়ানের মতো আরো অনেকেই আছে যারা ওকে অপছন্দ করে কিন্তু সামনে বলে না।”
নীতি দীর্ঘশ্বাস ফেললো। অতঃপর সেও চললো।
__________________________________
বাসর ঘরে না রেখে বর বউকে নিয়ে বসে আছে সবাই। যদিও বড়রা কেউ নেই। নাহিয়ান, তাহসিন, সাজ্জাদ, প্রীতি, বর্ষা। নীতি আপাতত রুমে এখনও। ড্রেস পাল্টিয়ে আসবে একেবারে। বাকিরা এখনও ফ্রেশটুকুও হয়নি। আড্ডার মাঝেই বর্ষা প্রশ্ন করে বসলো, “আচ্ছা শাফিন ভাইয়া, তোমাদের প্রেমের বিয়ে নাকি অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ?”
বর্ষা এখানে তখন ছিল না। তাই এ বিষয়ে কিছুই জানে না সে। বর্ষার প্রশ্নে প্রীতি উত্তর দিলো, “অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ!”
নাহিয়ান মাঝ থেকে বলে উঠলো, “লাভ ম্যারেজ!”
প্রীতি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো, “কে বলেছে?”
“তোমার বোন আমাদের ফ্রেন্ড। তাই আমরা বেশীই জানি!”
তাহসিনের কথায় প্রীতি চমকে তাকালো রীতির দিকে। সে মাথা নিচু করে ঠোঁট চেপে হাসছে। ততক্ষণে নীতিও হাজির। সে এসেই প্রীতি আর বর্ষার মাঝে বসে বললো, “কত বছরের প্রেম?”
নাহিয়ান নীতিকে দেখে নাক মুখ কুচকে বললো, “আসছে এক মুরুব্বী।”
“মুরুব্বী কাকে বলেন?”
“তোমাকে!”
“আমি মুরুব্বী?”
“এভাবে সম্পূর্ন সাদা জামা পড়ে বিধবা সেজে থাকলে তো মুরুব্বীই বলবো!”
নীতি দাঁত কিড়মিড় করে বললো, “আপনাকে আমার জামা নিয়ে কমেন্ট করতে কেউ বলেনি। তাই মুখ বন্ধ রাখেন।”
নাহিয়ান কিছু বলবে তার আগেই বর্ষা বললো, “আরে তোরা ঝগড়া থামা। ওদেরও তো বাসর রাত। আমাদের সাথে কি এতক্ষণ বসে থাকতে পারবে? গল্প শুনতে দে। ওদের বাসরে দেরী হয়ে যাবে।”
রীতি সঙ্গে সঙ্গে ধমক দিয়ে বললো, “লাগাম দে মুখে।”
“নো লাগাম। তুমি কাহিনী বলো।”
রীতি লজ্জাবতী লতার ন্যায় নুইয়ে গিয়ে বললো, “কাহিনী তেমন কিছুই না।”
সাজ্জাদ মাঝ দিয়ে বলে উঠলো, “ওরা কিছুই বলবে না। আমরা বলছি, শোনো।”
নীতি,প্রীতি,বর্ষা কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকালো। মূলত ওদের সামনে ব্যাপারটা অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হিসাবে হলেও ভিতরে কি হয়েছে, তা জানার প্রবল আগ্রহ তাদের। সাজ্জাদ বলতে শুরু করলো,
“আমি, নাহি, তাহসিন আর রীতি একই ভার্সিটির হলেও নাহি রীতির বেস্ট ফ্রেন্ড। সেই সুবাদে নাহির মা রীতিকে চিনেন। মাঝে মাঝে উনার গল্প করার মানুষ না থাকলে উনি রীতিকে বাড়িতে ডাকেন। রীতিও আসতো। তখনই শাফিনের সাথে আলাপ ওর।”
বর্ষা উৎসুক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, “তারপর?”
“তারপর তাদের কথা বার্তা, প্রেম আরো কত কি!”
বর্ষা রীতির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “প্রপোজ কে আগে করেছিলো?”
শাফিন জলদি করে বলে উঠলো, “ও!”
রীতিও চেতে বলে উঠলো, “একদমই না! তুমি বলেছিলে আমার চোখের মাঝে তুমি ডুবে যাচ্ছো, তোমাকে যেনো বাঁচাই!”
সঙ্গে সঙ্গে সবাই হেসে উঠলো। শাফিন মাথা চুলকালো। প্রীতি জিজ্ঞেস করলো, “ভাইয়া সত্যি এটাই বলেছিলো?”
“হুমম?”
“তোমাদের রিলেশন কয় বছরের?”
নীতির প্রশ্নে রীতি উত্তর দিলো, “তিন বছরের!”
নীতি, প্রীতি, বর্ষা একসাথে অবাক হয়ে বলে উঠলো, “তিন বছর!”
বর্ষা আবার আগ্রহী জিজ্ঞেস করলো, “তাহলে ভাইয়া কি বলে প্রপোজ করেছিলো এখনও মনে আছে কি করে? আমি তো জানতাম তুমি মনে রাখায় একদম জিরো টাইপ!”
রীতি হেসে বললো, “প্রিয় মানুষের কথাগুলো একটু বেশীই স্পেশাল হয়। ওগুলো মনের মাঝে এমনিতেই গেঁথে যায়!”
বর্ষা মন দিয়ে কথাটা শুনলো। অতঃপর চোখ বড় বড় করে চিল্লিয়ে বলে উঠলো, “পেয়েছি।”
প্রীতি চমকে উঠে বর্ষার গালে ঠাস করে চ’ড় বসিয়ে দিলো। বর্ষা আর্তনাদ করে উঠলো, “আহ! মা’রলি কেন?”
“এমন চিৎকার দিলি কেন? হার্ট অ্যাটাক করিয়ে মা’রবি নাকি? কি পেয়েছিস?”
বর্ষা নীতির দিকে তাকাতেই নীতিও আরেক গালে চ’ড় দিয়ে বললো, “এমনে কেউ চিল্লায়? আরেকটু হলে জান যেতো আমার!”
বর্ষা দু গালে হাত বুলিয়ে ঠোঁট ফুলিয়ে বসে রইলো। তাই দেখে বাকিরা হেসে দিলো। সাজ্জাদ হেসে হেসে বললো, “রীতি কিন্তু আবার শাফিন ভাইয়াকে নিয়ে হেব্বি পজেসিভ ছিল।”
তাহসিন তাল মিলিয়ে বললো, “তা আর বলতে? সুরাইয়া একবার কেবল শাফিন ভাইয়ের সাথে ফ্লার্ট করতে এসেছিল। ওকে কি যে ঝাড়লো!”
“এটা তো নরমাল। মেসেঞ্জারে কোথাকার কোন মেয়ে নিজেকে ওর সতীন বলেছিলো। সেই নিয়ে আমার সাথে কি যে ঝগড়া।”
নীতি চমকে উঠলো। প্রীতি অবাক হয়ে বললো, “সে কি? কি হয়েছিলো?”
এবার সবাই ই উৎসুক। কারণ এই কাহিনী এখানে কেউ ই জানে না।
“মেসেঞ্জারে এক মেয়ে ওকে নক দিয়ে বলে আমি নাকি তার সাথে ফ্লার্ট করি। আমাকে যেনো সামলে রাখে। আরো অনেক কথা। আর একদিন তো নিজেকে সতীন বলে দাবী করেছিলো। তাই সে নিয়ে আমার সাথে এমন ঝগড়া করলো যে আমিও রাগ করে মেয়েটার আইডি নষ্ট করে দিয়েছিলাম।”
“আইডি কেনো নষ্ট করলেন? তাকে বোঝালেই তো হতো।”
নীতির কণ্ঠে উত্তেজনা। রীতি বলে উঠলো, “নিজের প্রিয় মানুষের ভাগ অন্য কাউকে দেয়া যায় না। সেটা মজার ছলেই হোক না কেনো! মেয়েটাকে অনেক বার বারন করেছি, কিন্তু সে শোনেনি। আর আমিও জানতাম না শাফিন এমন করবে।”
নীতি চুপ করে গেলো। আজ বুঝলো রীতি কেনো রেগে যেতো। তারই বা কি দোষ? রীতি কখনো বলেনি শাফিনের কথা।
প্রীতি জিজ্ঞেস করলো, “মেয়েটার নাম কি ছিলো?”
রীতি মনে করার চেষ্টা করে বললো, “পিউ মেবী! মনেও নেই। এসব কে মনে রাখে?”
“তাও ঠিক!”
“কিরে নীতি, এমন চুপ করে গেলি কেন?”
বর্ষার কথা শুনে নাহিয়ান টিটকারী দিয়ে বললো, “নতুন কি দুর্নীতিগিরি করা যায় ভাবছে ।”
নীতি রাগ দেখালো না এবার। শুধু একবার মলিন চোখে রীতির দিকে তাকিয়ে বললো, “তিনবছরের মাঝে একবার বললেও পারতে আপু। এতটাও পর ছিলাম না কিন্তু আমরা!”
বলে আর বসে রইলো না সে। ওদের জন্য বরাদ্দকৃত রুমের উদ্দেশ্যে চলে গেলো সে। রীতি বেশ কয়েকবার ডাকলো তাকে। কিন্তু সে তাকালোও না।
“নীতি ভুল বুঝছে আমায়।”
বর্ষা মানিয়ে নেয়ার জন্য বললো, “আরে আপু চিল। ওকে তো চিনোই এমনিতে ঠিক হয়ে যাবে।”
নাহিয়ান ফোন বের করতে করতে বলল,“ওকে জানালে নির্ঘাত দুর্নীতি করে বসতো। এখন নিউ কাপলদের ছাড়! এই দেখ দেড়টা বাজতে চললো।”
বলেই তার ফোন দেখালো। প্রীতি আর বর্ষা উঠলো রীতিকে নিয়ে। আর তাহসিন, সাজ্জাদ শাফিনকে নিয়ে। অতঃপর তাদের ঘরে দিয়ে যে যার ঘরে গেলো।
__________________________________
রাত তিনটা। জানালার ধারে দাঁড়িয়ে আছে নীতি। চোখে তার ঘুম নেই। চোখের কোণে তার পানি। ভীষণ আফসোস হচ্ছে তার। ইশ, যদি রীতি তাকে আগে এসব বলতো সে হয়তো কোনদিনই মজা করতো না। বরাবরই বোনদের ভীষণ ভালোবাসে সে। ওরা কষ্ট পাক এমন কিছু সে কখনোই করতে চায় না। সেই হিসেবে ও হয়তো এমন মজা করতো না। তার আইডিও থাকতো। সব স্বাভাবিক থাকতো। ভাবতেই দীর্ঘশ্বাস ফেললো। চোখের কোণে থাকা পানিটুকু মুছে ফেললো। এখন প্রতি মুহূর্তে সে বুঝতে পারছে অনুভব তার অনুভবই। কোনো আবেগ নয়, না কোনো টাইম পাস। কেবল ভালোবাসা!
“ওই আইডিটা তোর ছিল?”
বর্ষার আওয়াজে কিছুটা চমকালেও প্রকাশ করলো না নীতি।
“ঘুমাস নি?”
“ঘুমিয়েছিলাম! তোকে পাশে না পেয়ে দেখলাম এখানে দাঁড়িয়ে আছিস!”
নীতি হাসলো! বর্ষা আবার বললো, “অনুভবকে খুব ভালোবাসিস তাই না?”
“অনেক বেশি!”
“খোঁজার রাস্তা পেয়েছি তাকে!”
নীতি বর্ষার দিকে তাকালো।
“কিরকম রাস্তা?”
“তোর আর অনুভবের আলাপ তো একটা গ্রুপের জন্য। আর অনুভব তো ছন্দ লিখতো বেশি। তাহলে এমন কিছু নিশ্চয়ই আছে যেটা কেবল তোর জন্য লিখা! সেটা তুই ওই গ্রুপে পোস্ট কর। অনুভব যদি দেখে তাহলে তো অবশ্যই তোকে রেসপন্স করবে। তাই না?”
“ও বুঝবে কি করে ওটা আমি?”
“ছন্দ যদি কেবল তোর জন্যই লিখা হয়, তাহলে অবশ্যই বুঝবে। এমন কিছু কি নেই?”
“আছে তো!”
“কি সেটা?”
নীতি হাসলো। আইডি লগ ইন করে সেই গ্রুপে গেলো। অতঃপর লিখলো, “প্রিয়! তুমি আমার জীবনে লিখিত এক অসম্পূর্ণ কাব্য; যাকে নিয়ে যতই লিখি, তা কখনো শেষ হবার নয়! তুমি এমন একজন যাকে যতই ভালোবাসি না কেনো, তা কখনো ফুরাবার নয়!”
তাই দেখে বর্ষা জিজ্ঞেস করলো, “এটা সে বলেছে?”
“হুমম!”
নীতি চোখ বন্ধ করলো। স্মৃতিচারণ করলো সেই মুহূর্তের!
__________________________________
“এই যে মিস প্রিয়!”
“বলেন জনাব!”
“কি করছেন?”
“আপনার জন্য লিখছি!”
“কি লিখছেন?”
“স্পেশাল কিছু?”
“কিরকম?”
“কিছু কথা!”
“ওহ!”
প্রিয় সেই কথাগুলো লিখে সেন্ড করলো। আর জিজ্ঞেস করলো, “কেমন হয়েছে?”
“আমি পড়িনি!”
“কেনো?”
“আমি শুনতে চাই প্রিয়!”
“মানে?”
“আপনার কণ্ঠে শুনতে চাই!”
প্রিয় চমকালো। ওদের কখনো কলে কথা হয়নি। প্রিয় অনুভবের আওয়াজ শুনলেও, অনুভব কখনো শুনেনি। তাই হয়তো এই আবদার।
প্রিয়র উত্তর না পেয়ে অনুভব মেসেজ করলো, “প্রিয়? রাগ করলে? আরে আমি জোর করছি না। ইচ্ছে হলো হঠাৎ! তুমি না চাইলে আমার চাই না। আমি পড়েছি! সুন্দর হয়েছে অনেক।”
প্রিয় হাসলো। ইশ, ওর রাগের কত খেয়াল রাখে মানুষটা। অনেক সাহস জুগিয়ে প্রিয় কল করলো মেসেঞ্জারে। ওপাশে রিসিভও হলো। দুইজন নিশ্চুপ । কেউ কোনো কথা বলছে না। অনুভব মৃদু স্বরে ডাক দিলো, “প্রিয়!”
প্রিয় চোখ মুখ খিচে বন্ধ করলো। তাদের প্রথম কথা। নতুন অনুভূতি। তার হৃদস্পন্দন বাড়ছে। কথা আটকে আসছে। কিছু বলতে পারছে না সে।
“রেখে দিবো?”
প্রিয় লম্বা শ্বাস নিলো। অতঃপর অনুভবের মতোই মৃদু কণ্ঠে বলতে লাগলো,
“তুমি আমার প্রিয় প্রহরের, প্রিয় অভিমান..
তুমি আমার প্রিয় নগরের, প্রিয় ভালোবাসা!
তুমি আমার স্নিগ্ধ বিকেলের, শুভ্র রঙা লাল খামের চিরকুট..
তুমি আমার প্রিয় প্রভাতের এক ফালি রোদ্দুর!”
বলেই থামলো সে। অপরপাশে অনুভব হাসলো।
“প্রিয় ছন্দ সাজাতে শিখে গেছে দেখছি!”
“আরো অনেক কিছুই শিখেছে প্রিয়!”
“কি কি?”
“অনুভূতিগুলো বুঝতে শিখেছে সে। উপলব্ধি করতে শিখেছে সে। ভালোবাসতে শিখেছে সে।”
“তাহলে ছন্দগুলো কি স্বীকারোক্তি ছিলো?”
“এত দেরিতে বুঝলেন?”
অনুভব হাসলো। বেশ কিছুক্ষণ চুপ রইলো সে। প্রিয় তাকে ডাকলো।
“অনুভব?”
“প্রিয়! তুমি আমার জীবনে লিখিত এক অসম্পূর্ণ কাব্য; যাকে নিয়ে যতই লিখি, তা কখনো শেষ হবার নয়! তুমি এমন একজন যাকে যতই ভালোবাসি না কেনো, তা কখনো ফুরাবার নয়!”
প্রিয় হাসলো। নতুন নতুন অনুভূতির জোয়ারে ভাসছে সে! হুট করেই বলে উঠলো, “ভালোবাসি অনুভব!”
__________________________________
ধরফরিয়ে উঠে বসলো অনুভব। বড় বড় নিঃশ্বাস নিচ্ছে সে। জলদি করে পাশে থাকা বোতল থেকে পানি খেলো সে। তবুও শান্ত হতে পারলো না। দেয়াল ঘড়িতে তাকাতেই দেখতে পেলো ভোর সাড়ে চারটা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে মাথার চুল টেনে ধরলো নিজের। বির বির করে বললো, “শান্তিতে কেনো থাকতে দিচ্ছো না প্রিয়? তুমি তো ভুলে গিয়েছো। তবে আমাকে কেনো ভুলতে দিচ্ছো না? কেনো এভাবে তোমার স্মৃতিতে বেঁধে রেখেছো? কেনো সেদিন বলেছিলে ‘তুমি স্বীকার করছো ভালোবাসো’? কেনো বলেছিলে ‘ভালোবাসি’? আমি মা’রা যাচ্ছি প্রিয়। পুরুষ হয়েও আমি পারছি না থাকতে। অসহ্য লাগছে আমার প্রিয়! বলেছিলে তো অনুভূতি সম্পর্কে নিশ্চিত হলে তখনের পদক্ষেপ নিবে। তাহলে তোমার নিশ্চিতকরণ কোনটা ছিল?”
অনুভব বিছানা থেকে উঠলো। ওয়াশরুমে গিয়ে মুখে পানি দিলো। সামনে থাকা আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে দেখে নিলো একবার। রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে প্রিয়। যদি যেতেই হয় তবে এত মায়ায় কেনো জড়ালো? সে কি টের পাচ্ছে না কেউ একজন ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে? অনুভব বির বির করে বললো,
“যদি ক্ষমতা থাকতো, তবে আমার ঘুম কেড়ে নেয়ার দায়ে তোমাকে আমার জীবনে বন্দী করে রাখতাম প্রিয়! আমায় ছাড়া তুমি ভালো আছো প্রিয়?”
ওয়াশরুম থেকে এসে ফোন হাতে নিলো সে। অনুভব নামক আইডিতে ঢুকলো সে। প্রিয়র স্মৃতি মুছে ফেলতে আগের আইডি সেই কবেই ডিলেট করে দিয়েছে। কিন্তু পারেনি মুছতে। মাস খানেক আগেই নতুন আরেক আইডি খুলেছে। তার মন বলে প্রিয় তার কাছে আবার আসবে। তাই এই নামেই খুলে রেখেছে। প্রতিদিন প্রিয়র আইডি খোঁজে সে। কিন্তু পায় না। তাদের আলাপকৃত সেই গ্রুপে আবার গেলো। নাহ, কিচ্ছুটি নেই। রেগে সেখান থেকে লিভ নিলো ও। দুই হাতে মাথা চেপে বললো, “আমি দেখিয়ে দিবো, তোমায় ছাড়া আমি ভালো আছি। একদম ভালো আছি!”
কিছুক্ষণ বাদে নামাজ পড়ে নিলো। আবার ঘুমানোর চেষ্টা করলো সে। কিন্তু ঘুমেরা যে এত সহজে ধরা দেয় না।
__________________________________
#চলবে