প্রিয় অনুভব পর্ব-০৬

0
677

#প্রিয়_অনুভব
#সাবরিন_জাহান_রোদেলা
#পর্ব_০৬

সকাল সকাল বাড়িতে হৈ চৈ শুরু হয়ে গেছে। তবুও এর মাঝে নীতি আর বর্ষা ম’রার মতো ঘুমাচ্ছে। ঘুমাবে নাই বা কেনো? ফজরেরও অনেক পরে ঘুমিয়েছে দুইজন। প্রীতি ডেকে ডেকে হয়রান। কত কাজ এখন বাড়িতে, সব ওকে একা করতে হচ্ছে। এই দুইজন ওঠার নামই নিচ্ছে না!

“নীতি, বর্ষা! উঠবি তোরা?”

নীতি ঘুম জড়িত কণ্ঠে বললো, “ডিস্টার্ব করিস না। ঘুমাতে দে।”

প্রীতি দাঁতে দাঁত চেপে বললো, “সারারাত দুইটা নিশ্চয়ই ফোন চালিয়েছে, আর আড্ডা দিয়েছে। এখন উঠতে পারে না। তোদের ভাগের কাজ আমি করতে পারবো না। উঠ!”

দুই একটু নড়ে চড়ে কাঁথা মুরো দিয়ে শুয়ে রইলো। প্রীতি রেগে বললো, “লাস্ট বার বলছি, উঠ..নয়তো পানি এনে তোদের গায়ে ফেলবো।”

দুইজন নিরুত্তর। প্রীতি আর একটা কথাও না বলে ওয়াশরুমে গেল। ছোট বালতিতে পানি ভরে নিয়ে এলো রুমে। আজ দরকার পড়লে মায়ের কাছে দুটো বকা নাহয় খাবে। কিন্তু এদের ও এভাবে কিছুতেই ছাড়বে না। বালতিটা উচু করে ধরে বললো, “তোরা উঠবি নাকি পানি ঢালবো?”

বর্ষা এবার জবাব দিল, “পানি ঢাললে ছোট আন্টির কাছে তুই ই বকা খাবি। বিছানা ভিজলে বড় আন্টির কাছে বকা খাবি। সো পক পক না করে যা কাজ কর!”

“আমি কিন্তু সত্যিই ঢেলে দিবো!”

“ঢাল যা!”

“ওকে!”

বলেই সব পানি দুইজনের দিকে ছুড়ে দিলো। সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে উঠলো নীতি। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললো,

“এটা কি করলি?”

“ঘুম ভেঙেছে?”

“কু’ত্তী তুই পানি ফেললি কেনো? ভালোভাবে বললে একটু পরেই তো উঠে যেতাম!”

“হ্যাঁ দেখছিলামই কেমন উঠছিলে। আর বর্ষাই বলেছে দিতে!”

নীতি আশেপাশে তাকালো, পুরো বিছানায় পানি। সেও প্রায় অনেকটা ভিজে আছে। বর্ষার দিকে তাকাতেই দেখলো সে পানির মধ্যেই ঘুমিয়ে আছে। তার মাঝে এই পানির কোনো ইফেক্ট পড়ে নি। নীতি প্রীতির রাগ বর্ষার উপর ঝাড়লো। বর্ষা ওর উল্টো দিকে ঘুরে থাকায় নীতি পা দিয়ে জোরে বর্ষাকে লা’থি দিলো। ফলস্বরুপ বর্ষা নিচে গিয়ে পড়লো।

“আউচ, কি শুরু করছিস তোরা দুই বোন সকাল বেলা? ঘুমাতে দিস না কেন?”

বলেই কোমর ধরে উঠে বসলো! চোখ এখনও বন্ধ খুলতে পারছে না সে। নীতি ধমকে বললো, “তুই ওকে পানি ঢালতে কেন বলেছিস?”

বর্ষা আধো আধো চোখ খুলে বললো, “কাকে?”

নীতি বিছানার সাইড থাকা টি টেবিলের উপর থেকে পানি ভরতি গ্লাস হাতে নিলো। সেগুলো বর্ষার মুখে ছুঁড়ে দিলো। সঙ্গে সঙ্গে বর্ষা লাফিয়ে উঠলো।

“আরে পানি ছুড়ছিস কেনো? বিছানা ভিজবে তো!”

নীতি চেঁচিয়ে বললো, “অলরেডি ভিজে গেছে।”

বর্ষা চোখ ছোট ছোট করে বললো, “নীতি তুই না বড়? তাহলে কেমনে কি? ছি, লোকের কাছে মুখ দেখাবি কি করে?”

নীতি প্রথমে বুঝলো না কথাটার মানে। মস্তিষ্ক যখন কথাটা ধরতে পারলো তখন তেড়ে বর্ষার কাছে গিয়ে ওর চুল টেনে বললো, “আবা* , তোর নেগেটিভ মাইন্ড তোর মনের ভিতরে রাখ। বেদ্যোপ বেডি। সকাল সকাল একজন পানি দিচ্ছে তো একজন আবোল তাবোল অপবাদ!”

বলেই বর্ষাকে তুলে বিছানায় ফেললো। বর্ষা চমকে ওঠা কণ্ঠে বলল, “এত পানি কেন?”

“বালতি ভরে পানি ফেলেছে।”

“কে?”

নীতি রেগে প্রীতির দিকে তাকালো। প্রীতি এতক্ষণ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছিল। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, “কাম কাজ না করে ম’রার মতো ঘুমালে এমনই হবে।”

নীতি এবার প্রীতির দিকে তেড়ে গেলো। ধাক্কা দিয়ে ওকে বিছানায় ফেলে ওর উপর উঠে বসলো। কিছু বলবে তার আগেই প্রীতি তার দুই হাত দিয়ে আটকে দেয়ার ভঙ্গিমা করে বললো, “ছি নীতি তোকে তো ভালো মেয়ে ভেবেছিলাম। তোর মনে মনে তাহলে এই?”

নীতি হতাশ হয়ে বর্ষার দিকে তাকালো। সেও হাতগুলো সামনে এনে একই ভঙ্গিমা করলো। নীতি কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে প্রীতির পাশে শুয়ে বললো, “ও আল্লাহ! এই দুই নমুনা কোন থেকে টপকাইছে? এই দুই অসুস্থ মানুষের সাথে আমি সুস্থ মানুষ কেমনে থাকবো? একেকটা একটা চিজ! সকাল সকাল কি শুরু করছে আমার সাথে।”

বলেই কাঁদার ভঙ্গিমা করলো। প্রীতি আর বর্ষা শব্দ করে হেসে দিলো।

“তোদের তিনটার ড্রামা শেষ কখন হবে জানতে পারি?”

রীতির আওয়াজ শুনে নীতি উঠে দাঁড়ালো ৷ ঠোঁট উল্টে ওর কাছে গিয়ে বললো,

“দেখো ওরা আমায় কিসব বলছে।”

রীতি ভ্রু কুঁচকে বললো, “ওদের কথা বাদ দে, তুই এমন বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে রেখেছিস কেন?”

বর্ষা হাসতে হাসতে বললো, “ও তো বাচ্চাই। তাই তো বিছানায়-..”

বলেই হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খেলো, ওর সাথে প্রীতিও তাল মেলালো। নীতি এবার ভীষণ ক্ষেপে গেলো।

“তোদের আমি..”

বলেই ওদের গিয়ে উত্তম মধ্যম দিতে লাগলো। রীতি বিরক্ত হয়ে একপ্রকার চিল্লিয়ে বললো, “তোরা থামবি? সেই কখন থেকে রুমে বসে তোদের যুদ্ধ দেখছি!”

“ওরাই তো সক্কাল সক্কাল আমার সাথে লাগছে।”

রীতি ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো, “তোদের জন্য মা আমায় এসে কাজ দিচ্ছে। এর ওর বিছানা গুছাতে বলছে। এটা কর , ওটা কর! আরে আমারই বিয়ে ভাই! আমি কাজ করলে কোন বিয়ে বাড়ির জাত থাকবে শুনি?”

ওরা তিনজন একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দিলো। রীতি শান্ত কণ্ঠে বললো, “তিনটা কাজে যা। নয়তো সত্যি ই বলছি আমার বিয়ের রোস্ট, পোলাও কিচ্ছুটি পাবি না!”
সঙ্গে সঙ্গে তিনজন উঠে দাঁড়ালো। নীতি চট জলদি জামা কাপড় বের করতে করতে বলল, “নে তোরা বিছানা গুছিয়ে ফেল। আমি গোসল সেরে বাকি কাজে হাত লাগাচ্ছি!”

বলেই এক মুহুর্ত দেরী না করে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো। বর্ষা ওকে পিছু ডেকে বললো, “আরে এই ভিজা বিছানা কি করে কি করবো সেটা তো বল?”

কিন্তু ততক্ষণে নীতি ওয়াশরুমে চলে গিয়েছে। বর্ষা এবার প্রীতির দিকে তাকালো। ওর তাকানো দেখে প্রীতি তাড়াতাড়ি বালতি উঠিয়ে ওয়াশরুমের দরজার সামনে রেখে বললো, “নীতি, বালতি ভিতরে নে। আমি গেলাম!”

বলেই দৌড়! নীতিও হাত বাড়িয়ে জলদি বালতি নিয়ে দরজা আটকে দিলো। বর্ষা অসহায় হয়ে রীতির দিকে তাকিয়ে বললো, “আপু!”

ওর অবস্থা দেখে রীতি হেসে দিলো। ভরসা দিয়ে বললো, “আমিও সাহায্য করছি। আয়!”

বর্ষা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো।

__________________________________

বিয়ে বাড়ীতে হৈচৈ ভরপুর। দু হাতে লেহেঙ্গা ধরে সারা বাড়িতে সিনথীকে খুঁজছে নীতি। গতকাল থেকে ওর কাছেও আসেনি মেয়েটা। এমনকি আজকে সাজতেও আসেনি। অথচ নীতির হাত না সাজলে নাকি ওর মন ভরে না। বেশ বুঝেছে অভিমান করে আছে সে। ওদিকে বরযাত্রীও এসে গেছে। সেখানেও সিনথী নেই। তাই বর্ষার হাতে সবটা দিয়ে সে এখন খুঁজছে ওকে। ওদিকে মাও ব্যাস্ত থাকায় ওদের খোঁজ নিতে পারছে না। অনেক খুঁজে প্রীতির রুমে ওকে পেলো। প্রীতির ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে আছে মন খারাপ করে। নীতি ধীরে ওর কাছে গেলো। ধীরে চললেও ওর পায়ের পায়েল সিনথীকে জানান দিলো কেউ এসেছে। ঘুরে তাকালো ও। নীতিকে দেখে মাথা নিচু করে বসলো। নীতি ওর সামনে ড্রেসিং টেবিলের পাশে দেয়ালে হেলান দিয়ে বুকে হাত গুঁজে দাড়ালো। মিহি কণ্ঠে বলল, “কেউ কি এখানে আমার উপর রাগ করেছে?”

সিনথী দু দিকে মাথা নাড়লো। নীতি হেসে ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বললো, “তাহলে এমন মুখ ঘুরিয়ে আছে কেনো আমার থেকে?”

সিনথী ঠোঁট ফুলিয়ে বললো, “কেউ একজন বলেছে আপনজনদের উপর রাগ হয় না, হয় অভিমান!”

নীতি আবার হাসলো। কথাটা সে-ই বলেছে। প্রিয়জনদের উপরে আমাদের রাগ থাকে না। যা থাকে, তা হচ্ছে অভিমান, অভিযোগ আর ভালোবাসা।

“অভিমান করেছেন?”

“অনেক!”

নীতি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, “সরি মাই লিটল সিস্টার! আসলে ঐ ফোনে বেশ দরকারি জিনিস ছিল। আর তুমি তো জানো, যারা আমাদের প্রিয় তাদের কোনো জিনিস আমরা হারিয়ে যেতে দেই না। এই যেমন দিদা দাদুর জিনিসগুলো সামলে রাখে। তাই ওমন করেছি। নাহলে তো জানো, আপু কি কখনো এভাবে বকেছি? মজা করেছি, কিন্তু সিরিয়াস হয়েছি কি?”

“উহুম!”

“সরি!”

“সরি বলে হামি দিতে হয়!”

নীতি হেসে ওকে আদর করে দিলো।

“এবার সাজিয়ে দেও। কেউ আমার খোঁজও নেয়নি। কখন থেকে বসে আছি!”

“আমাকে ডাকলেই হতো!”

“হ্যাঁ, দুর্নীতিকে ডাকলেই দুর্নীতি হাজির হয়ে যেতো।”

পুরুষালি কণ্ঠ শুনে নীতি চোখ ছোট ছোট করে পিছে ঘুরে তাকালো। নাহিয়ান যে মানুষটা তা সম্বোধন শুনেই বুঝছিলো। নাহিয়ান সিনথীর কাছে এসে বললো,

“বুঝলে ক্রাশ?”

“দুর্নীতি কে হ্যান্ডু ভাইয়া?”

“কেনো তোমার আপু!”

সিনথী নীতির দিকে তাকিয়ে হেসে বললো, “দুর্নীতি আপু!”

সঙ্গে সঙ্গে নীতি ধমক দিলো, “চুপ!”

সিনথী আবার ঠোঁট উল্টালো ধমক খেয়ে। নীতি তড়িঘড়ি ওকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে বললো, “সরি সরি!”

নাহিয়ান বাঁকা হেসে বেরিয়ে যেতে নিলেই নীতি ডেকে উঠলো, “নাহি…”

নাহিয়ান চমকে ওর দিকে তাকালো। নীতি বাঁকা হেসে বললো, “ভাইয়া!”

নাহিয়ান গম্ভীর কণ্ঠে বলল, “আমার নাম নাহিয়ান। নাহি না!”

“আমিও নীতি, দুর্নীতি না!”

“আমার লিস্টের অপছন্দের মানুষদের আমি এমন নামই দেই।”

“আমিও আমার লিস্টের অপছন্দের মানুষদের কথা একটু কমই শুনি!”

নাহিয়ান তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। নীতি বাঁকা হাসলো। দুইজন দুইজনার অপছন্দের লিস্টে এখন!

__________________________________

সুষ্ঠভাবে বিয়ে সম্পন্ন হলো। এখন রীতির বিদায়ের পালা। বিদায়ের সময় রীতির কি কান্না। শাফিন পারছে না বউকে এখনই বুকে জড়িয়ে ধরে স্বান্তনা দিতে। শাফিনের অবস্থা দেখে একদিকে প্রীতি, বর্ষা আর নীতির যেমন হাসি পাচ্ছে, তেমনই আবার রীতির জন্য কষ্টও হচ্ছে। অবশেষে ঠিক হলো রীতির সাথে প্রীতি, নীতি আর বর্ষাও যাবে। অতঃপর সব রওনা হলো।

__________________________________

শাফিনদের বাড়িতে পৌঁছে দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে ওরা। কিসব নিয়ম আছে সেগুলো পালন করবে। শাফিনের মা সালেহা বেগম রীতির জন্য মিষ্টি আর পানি আনতে বললেন কাজের ছেলেকে। তার পাশেই নাহিয়ান দাড়িয়ে আছে। ছেলেটি মিষ্টি আর পানি হাতে করে আনছিলো। এ বাড়িতে সে নতুন। বিয়ের কাজ বেশি হওয়ায় তাকে রাখা হয়েছে। তাই এত আদব জানে না। সে তাড়াতাড়ি সেগুলো নিয়ে আসছিলো, তখনই নাহিয়ান তার ডান পা বাড়িয়ে দিলো। ছেলেটি খেয়াল না করায় নাহিয়ানের পায়ে তার পা ঠেকে গেলো। ফলস্বরূপ মিষ্টির বাটি আর পানির গ্লাস শক্ত করে ধরে রাখলেও সেগুলো ছিটকে গিয়ে সামনে থাকা এক রমণীর ড্রেসে গিয়ে পড়লো। সেই রমণী আর কেউ নয়, নীতি! নীতি অবাক হয়ে নিজের শরীরের দিকে তাকাচ্ছে তো একবার নাহিয়ানের দিকে। সে লক্ষ করছিলো নাহিয়ান তার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে ডান পা ওভাবে বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু তখনও বুঝেনি এর কারণ। এখন বেশ বুঝেছে। সালেহা বিরক্ত হয়ে বললো, “দেখে চলতে পারিস না? দিলি তো মেয়েটার জামা নষ্ট করে? আর হাতে করে এগুলো কে আনতে বলেছে? বাড়িতে কি ট্রে নেই?”

ছেলেটি অসহায় ভঙ্গিমায় দাড়িয়ে রইলো। নাহিয়ান তখন বলে উঠলো, “আহা মা। রেগো না তো। ও নতুন! বুঝে না এত কিছু। ব্যাপার না। বেয়াইন সাহেবা কিছু মনে করেনি। বরং তার মিষ্টি মুখের বদলে মিষ্টি জামা হওয়াতে সে খুশিই হয়েছে। তাই না বেয়াইন?”

নীতি ক্ষোভ ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, “জি আন্টি! ওর কোনো দোষ নেই।”

আবার বির বির করে বললো, “যার দোষ, সেই ই ত আড়ালে!”

সালেহা শুনতে না পেয়ে জিজ্ঞেস করলো, “কি বললে?”

নীতি মেকি হেসে বললো,

“কই কিছু না! আমি চেঞ্জ করে নিবো। জামা এনেছি সাথে!”

বলেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নাহিয়ানের দিকে তাকালো। অতঃপর নিয়ম মেনে ওদের ঘরে আনা হলো। সবাই যার যার মতো এগিয়ে গেলেও নীতি ওর ড্রেস ঝাড়ায় ব্যাস্ত ছিল। সেই সুযোগে নাহিয়ান কাছে এসে বললো, “আপ্যায়ন কেমন ছিল বেয়াইন?”

নীতি বড়সড় নিঃশ্বাস ফেলে বললো, “নীতি অনেক ভালো মেয়ে। অহেতুক কারো পিছে লাগে না। তাই কিছু বললো না। ক্ষমা করলো আপনায়!”

“দুর্নীতির কাছে ক্ষমা কে চায়? ভালো মেয়ে, কিন্তু দুর্নীতি করে বেড়ায়!”

“সমস্যা কি? এমন পিছে লাগছেন কেনো?”

“অন্ধ নাকি? দেখছো না আমি সামনে?”

“উফফ! আপনার গিটার ভেঙেছি বলে এমন করছেন? মাফ চাই ভাই! তাও দয়া করে থামেন।”

বলেই এগিয়ে গেলো। পিছ থেকে নাহিয়ান বলে উঠলো,

“হারানো মানুষের জিনিস খুব স্পেশাল হয়। তাই বলে তার জন্য আশেপাশের কেউ কষ্ট পায় এমন কিছু করা আমার লাইফে নেই। তাই ওই বিষয় নিয়ে আপনার সাথে ঝগড়া করার মানে হয় না।”

নীতি দাড়ালো। ঘুরে তাকালো ওর দিকে। নাহিয়ান ওর কিছুটা কাছে এসে বললো, “কেনো যেনো আপনাকে আমার বড্ড অপছন্দ। তাই আপনাকে একদম শান্তিতে থাকতে দিতে ইচ্ছে করছে না। অপছন্দের মানুষদের আমি শান্তিতে রাখতে চাই না। একদম না!”

নীতি থমকে গেলো। সবসময় সবার প্রিয় হয়েছে সে। কারণে, অকারণে। আজ কেউ বলছে সে বিনা কারণে অপছন্দ তার? কেনো অপছন্দ?

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে