প্রনয় পর্ব-২৪

0
603

#প্রনয়
#নুসরাত সুলতানা সেজুথি
পর্ব–২৪

সিলেট জার্নি সমাপ্ত।রুদ্রর কাজ শেষ।তাও আরো একদিন আগেই।সেঁজুতি সিলেটে প্রথম আসায় লাস্ট মিটিং সময় নিয়ে ঠিক করেছিলো রুদ্র।কিন্তু আর থাকা যাবেনা।অভ্র অফিস সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।প্রত্যেকবারই খায়।কিন্তু তখন রুদ্র এক দুইদিনের মাথায় ফিরে আসে।এবার চারদিন কাটালো।কারনটা সেঁজুতি। উদ্দেশ্য ওর সাথে আরেকটু বেশি সময় কাটানো।গতকাল ফিরেছে ওরা।রাস্তায় সেঁজুতির অল্পস্বল্প মন খারাপ ছিলো।ঢাকার কোলাহল,যানজট ,কাজের ব্যাস্ততা,দুশ্চিন্তা সব ভুলে সিলেটের সবুজ প্রকৃতিতে মিশে গিয়েছিলো কদিনে।স্নিগ্ধ পরিবেশটায় একরকম মুদে ছিলো।সেঁজুতি মনে মনে খুব করে চাইলো ‘ কোনো একদিন বাবাকে নিয়েও আসবে।অনেকদিন কাটাবে।সিলেটের সব কাজ ভালোয় ভালোয় করেছে সেজুতি।প্রত্যেক টা প্রেজেন্টেশন ই তার সফল হয়েছে।রুদ্রর একটা ডিল ও হাতছাড়া হয়নি।রুদ্র বলেছে এই ক্রেডিট সেঁজুতির।অথচ সেঁজুতি তো জানে,পুরো কৃতিত্বই রুদ্রর।অমন গুছিয়ে লিখে না দিলে সে কী পারতো এত সুন্দর গুছিয়ে উপস্থাপন করতে?কখনও না।
সেঁজুতি ডেস্কে বসেছিলো।কম্পিউটারের স্ক্রিনে চোখ থাকলেও মন ছিলো সিলেটের প্রত্যেকটি ঘটনায়।রুদ্রর বন্ধুত্ব করতে চাওয়ার কথাগুলো স্পষ্ট মাথায় গেঁথে আছে।বারবার মনেও পড়ছে।রুদ্র অফিসে এসেছে ঘন্টাখানেক।এর মধ্যে একবারও ডাকেনি দেখে সেঁজুতি একটু অবাকই হয়েছে।মনে মনে ভয়ও পাচ্ছে।রুদ্র আবার পালটি খেলো নাতো?বন্ধুত্ব করার পেছনের উদ্দেশ্য কী সেঁজুতির মনের কথা জানা ছিলো?হ্যা হতেই পারে।সেঁজুতি মনে মনে বলল ” আমিতো প্রথমে বলতে চাইনি।উনি কী সেজন্যে আমাকে ইমোশোনাল ব্লাকমেইল করলেন?সেঁজুতির এবার নিজের প্রতিই রাগ হলো।এত বোঁকা কেন সে?রুদ্রর চালাকী টেরই পেলোনা।সেঁজুতি যখন গভীর ভাবনায় তলিয়ে তখন বশীর এসে হাঁক পারলেন।রুদ্র ডাকছে।
সেঁজুতি ফোস করে নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
” যাচ্ছি।
___

“আসবো স্যার?

” yes!
অনুমতি পেয়ে ভেতরে এলো সেঁজুতি।কেবিনে রুদ্র একা নয়,অভ্রও আছে।রুদ্রর উল্টোপাশের চেয়ারটায় বসে আছে হাসি হাসি মুখে।এই এক মাসে অভ্রকে দেখলেও সেঁজুতি একটা কথাও বলেনি। অভ্রর প্রতিও তার সমান রাগ।ওইতো ভুলভাল বলে সেঁজুতিকে এগ্রিমেন্টে সই করিয়েছিলো। অভ্র ও কখনও সেঁজুতির সাথে কথা বলতে আসেনি।সে নিজের মতো থাকতো।সেঁজুতি যে চটে আছে তার ওপর, আদৌ সেই খবর সে জানেনা।তাই ওকে দেখতেই হেসে বলল

— হেই মিস সেজুতি!হোয়াটস আপ?
সেঁজুতি সৌজন্যবোধ জানে।তাই রাগ চেপে রেখে ভদ্রভাবে বলল,
” নাথিং স্পেশাল স্যার।

“আপনার পারফমেন্স কিন্তু খুব ভালো ছিলো।একেবারে সবগুলো ডিল-ই কনফার্ম।ভাই বলেছে আমাকে।

অভ্রর গলাটা আরেকটু উৎফুল্ল শোনালো।জবাবে হাসলো সেজুতি।একেবারেই অল্প হাসি।যাকে বলে না চাইতেও জোর করে হাসা।
অভ্র আবার বলল,
“আর আপনার এই সাক্সেস এর জন্যে ভাই কাল সন্ধ্যায় বিশাল বড় পার্টি থ্রো করছে।

পার্টির কথা শুনে সেঁজুতি অবাক হয়।গোল চোখেই রুদ্রর দিকে তাকালো।রুদ্র ভাবলেশহীন। একভাবে নিচের দিক তাকিয়ে ল্যাবটব এ কাজ করছে।যেন কত ব্যাস্ততা মহাশয়ের।সেঁজুতি আবার অভ্রর দিকে ফিরলো।

“পার্টি? আমার জন্যে?

‘ ইয়েস। অফিসের যেকোন বড় বড় ডিল বিদেশী ক্লায়েন্টদের সাথে কনফার্ম হলে ভাই পার্টি থ্রো করে।এটাতো হয়েই আসছে।তবে এবারের পার্টির মধ্যমনি কিন্তু আপনি।

সেঁজুতি ভ্রু কোঁচকালো।এত বড় অফিসের পার্টি,তার মধ্যবিন্দু আবার সে? কী শুনছে এসব?সেঁজুতির বুক ধুক ধুক করছে চিন্তায়।অত গুলো মানুষ দেখে পার্টিতে হার্টফেল না করলে হচ্ছে।সেঁজুতি আবার রুদ্রকে দেখলো।লোকটা দিন দুনিয়া ভুলে ল্যাবটবে ডুবে আছে।সেঁজুতি আসার পর থেকে যে কতবার তাকিয়েছে তা বোধহয় দেখতেও পায়নি।এমন ভাব, যেনো এখানে কেউ নেই।সেঁজুতি মনে মনে বিরক্তই হয়।সেতো রুদ্রকে বন্ধুই ভেবেছে।তাহলে রুদ্র বস বস বিভেব করছে কেন?অফিস বলে?এটাই হবে।হওয়াই উচিত।অফিসে শুধু কাজের সম্পর্ক। এর বাইরের টা বাইরে।সেঁজুতি গলা ঝেড়ে নিভু কন্ঠে বলল,

— স্যার! আমাকে কি জন্যে ডেকেছেন যদি বলতেন।

এতক্ষনে চোখ ওঠালো রুদ্র।কী শান্ত চাউনি! সেকেন্ডের কম সময়ে আবার ফিরলো স্ক্রিনের দিকে।বলল,

‘ আগামীকাল সন্ধ্যা ৭ঃ৩০ -এ রেডিসন ব্লুতে পার্টি থ্রো করেছি।চলে আসবেন।এক মিনিট ও এদিক ওদিক যেন না হয়।
সেঁজুতি ছোট করে বলল ‘ ওকে স্যার।

‘শাড়ি পরে আসবেন। পার্টির থিম শাড়ি।আসুন এখন
।সেঁজুতি মাথা নেঁড়ে বিদায় নিলো।ওমনি অভ্র অধৈর্য কন্ঠে বলল,

‘সিরিয়াসলি ভাই? কাল পার্টির থিম শাড়ি?

রুদ্র উত্তর দিলোনা।সূক্ষ্ম হাসলো।অভ্রর জিজ্ঞাসু চেহারার দিকে চেয়ে বলল ‘ সেটাতো পার্টিতে গেলেই বুঝবি।
____
আজকে প্রচন্ড গরম। সাথে রাস্তার বিরাট জ্যাম। পাশেই দাঁড়িয়েছে এক্টা এম্বুলেন্স। জ্যামে পরতেই ওটা তীব্র শব্দে সাইরেন বাজালো।ব্যাস! সেঁজুতির মাথার দফারফা। মাইগ্রেনের ব্যাথা দপদপানি শুরু করলো মুহুর্তেই।বাসায় পৌঁছোতে পৌঁছোতে সাড়ে দশটা বাজলো।ক্লান্ত পায়ে সিড়ি বেয়ে উঠে বাসার কলিংবেল বাজালো।দরজা খুলল মিনিট খানেকের মাথায়।সেঁজুতি তখন নিঁচু হয়ে জুতো খুলছে।ওপাশের ব্যাক্তিটিকে দুপায়ে দাঁড়ানো দেখে তৎপর মাথা উঁচালো। সঙ্গে সঙ্গে ৪৪০ ভোল্টেজের ঝটকা খেলো একটা।একজন সুদর্শন যুবক দাঁড়িয়ে। ঠোঁটে প্রসস্থ হাসি।সেঁজুতি তাকাতেই এক ভ্রু উঁচু করে বলল ‘ কী? অবাক হলেন?

অবাক হয়েছে মানে!এরকম অবাক সে আজকাল প্রায়ই হচ্ছে।রুদ্রর সাথে থাকতে থাকতে।একদিন অবাক হতে হতেই প্রানটা ঠুস করে বেরিয়ে না যায়!সেঁজুতির চোখে বিস্ময়। ভ্রু কুঁচকে বলল
— আপনি? এখানে?কী করে?
ওপাশের যুবকটি বলে,
‘আগেতো ভেতরে আসুন, তারপর বলছি না হয়।
সেঁজুতি ঘরের ভেতর ঢুকতে ঢুকতে বলল,

‘আপনি কি করে এখানে এলেন? মানে আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা।
এর মধ্যে শেফালী এসে সেঁজুতির হাতে ঠান্ডা এক গ্লাস পানি ধরিয়ে দিয়ে গেলো।

” কি হলো বলুন?

‘ যুবক টি মুচকি হাসলো
‘ বলব বাবা বলব।আপাতত পানি খান।

সেঁজুতি ক্লান্ত ছিলো এমনিতেই।ঢকঢক করে পানি খেলো।যুবকটির দিকে তাকাতেই মিষ্টি হেসে বলল,

— বসে কথা বলি?

সেঁজুতি বিরক্ত হলো এবার।এত রাগঢাকের কী আছে এখানে?যা বলতে ছেলেটির এত গড়িমসি? সেঁজুতি সোফায় বসলো।ছেলেটি বসলো সেঁজুতির মুখোমুখি সোফায়।তখন বসার ঘরে হাজির হলেন আমির।আমিরকে দেখতেই ছেলেটি বলল,

“আপনার প্রশ্নের উত্তর না হয় আংকেলই দিক।
আমির সেঁজুতির দিকে ফিরতেই সেঁজুতি ধৈর্য হীন কন্ঠে বলল,
— ওনাকে তুমি চেনো বাবা??

‘চিনবনা কেন?ওকে না চিনে পারা যায়?অবশ্য অনেক বড় হয়ে গিয়েছে।ছোট ছোট চেহারায় এখন দাঁড়ি গজিয়েছে।আমি অবশ্য প্রথমে চিনতে পারিনি,পরিচয় দেয়ার পরেই না চিনলাম।

সেঁজুতির ভ্রু কুঞ্চন আরো গাঢ় হয়,
‘ মানে? কি এমন পরিচয়?

‘তুইও চিনতে পারিস নি?আরে ও আবির।আমাদের আবির।তোর হোসাইন আংকেলের ছেলে।
সেঁজুতি চমকে তাকালো আবিরের দিকে।আবির মিটিমিটি হাসছে।

‘মানে আপনিই সেই আবির?
” ইয়েস।
” এইজন্যেইতো বলি এত মিল চেহারায় হয় কী করে!আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছিনা।তাহলে সিলেটে থাকা কালীন বলোনি কেনো?? কেনো লুকিয়েছিলে?আর তুমি তো সিঙ্গাপুর ছিলে।সিলেট গেলে কী করে?

‘মাত্র এই কটা প্রশ্ন সেঁজুতি? আমিতো ভেবেছি তুমি প্রশ্নের জাহাজ বানিয়ে ফেলবে।
আমির হাসলেন।বললেন ‘ তোরা কথা বল।আমি আসছি একটু। আমিরের যাওয়ার থেকে চোখ ফিরিয়ে আবির সেঁজুতিকে দেখলো।মলিন কন্ঠে বলল

‘ এসেছিলাম তোমাদের সারপ্রাইজ দিতে।অথচ আঙ্কেল কে এইভাবে দেখে আমি নিজেই সারপ্রাইজড।বাবাও আমাকে কিছু জানাননি।
সেঁজুতির ঠোঁটের হাসিটুকুও মুছে গেলো।দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল ‘ সবই ভাগ্য।

আবির বুঝলো সেঁজুতির মন খারাপ হচ্ছে।তাই উচ্ছ্বল কন্ঠে বলল,
‘ জানো সেঁজুতি!সিলেটে প্রথম দিন তোমাকে দেখে আমি কিন্তু ভীষণ অবাক হয়েছি।তোমাকে চেনা চেনা লাগছিলো আমার।পরে তোমার বসের মুখে নাম শুনতেই শিওর হলাম যে তুমিই সেই আমির আংকেলের মেয়ে সেঁজুতি।তারপর থেকে ইচ্ছে করে করে তোমার সামনে যেতাম কথা বলার ছুঁতোয়।দেখছিলাম তুমি চিনতে পারো নাকী।ভাবলাম চিনতে পারোনি যখন তখন না হয় নাই বলি।একবারে ঢাকা ফিরে চমকে দেয়া যাবে।আর বলে দিলেতো তোমার অবাক মুখটা দেখতেই পেতাম না।তবে যাই বলো,তুমি কিন্তু আমাকে ছ্যাচড়া মনে করেছিলে।ভাবছিলে তোমাকে লাইন মারছি। হা হা।
আবির শব্দ করে হাসাতে সেঁজুতি লজ্জ্বা পেলো।সেতো সত্যিই আবিরকে গায়ে পরা ভেবেছে। তবে এতদূর নয়।
প্রসঙ্গ এড়াতে বলল ‘সিঙ্গাপুর থেকে আগে ঢাকায় না ফিরে সিলেট কেন?
আবির বলল ‘ সে কথা সময় হলেই তোমাকে জানাব।এখন নয়।

সেঁজুতি ঘাড় কাঁত করলো।অল্প সময়েই খোশগল্পে মজে উঠলো দুজন।আমির,হোসাইন গলায় গলায় বন্ধু।একে অন্যের বাসায় লাগামহীন আসা যাওয়া ছিলো।সেই সূত্রে আবির আর সেঁজুতির ও বন্ধুত্ব হয়।আবিরের যখন বারো বছর তখন দেশের বাইরে পড়তে পাঠায় হোসাইন।সেঁজুতির বয়স তখন নয়।আবিরের যাওয়ার পুরোটা সময় সেঁজুতি কাঁদছিলো।আবির তার একটামাত্র বন্ধু।হোক চার বছরের বড়।নাম ধরে ডাকতো বলে, আবির কোনো দিন রাগ করেনি।হেসেছে।এখনও হাসে। ভীষণ শুভ্র ওর হাসি।দেখে মনে হবে কোনো পাপ নেই হাসিতে।আবির দেশ ছাড়ার পর ওদের আর কোনও যোগাযোগ হয়নি।কথা ছিলো গ্রাজুয়েশন শেষ করে ফিরবে আবির।কিন্তু সে অজান্তেই ফিরতে চায়নি।থাকতে চেয়েছে ওখানে।তাই হোসাইনও আর জোর করেননি।
অনেকক্ষন গল্প করার পর আবির বলল,

” সেঁজুতি! তুমি বরং ফ্রেশ হয়ে নাও।অফিস থেকে এসেছো টায়ার্ড নিশ্চয়ই।

“তা একটু বলা যায়।

‘আঙ্কেল বললেন তোমার অফিস আট টায় শেষ হয়। তবে আজ দেরী করলে যে?কাজের অনেক প্রেশার?

‘আরে না।ঢাকার রাস্তায় জ্যামের কথা তো জানোই।লম্বা জ্যামে পরেছিলাম।অবশ্য অফিসেও কাজ অনেক। কাল আবার একটা পার্টি রয়েছে। সেখান কার ডেকোরেশন নিয়েও টুকটাক কথা বললেন বস।

— পার্টি? কী উপলক্ষে?

‘ সিলেটে আমার কাজে বস ইম্প্রেস হয়েছেন।তাই উনি এই পার্টির আয়োজন করেছেন।

“দারুন তো!তার মানে কাল পার্টির মধ্যমনি তুমি?তবে তো আমিও যেতে পারব,কি বলো?

“অবশ্যই। কেনো নয়।
সেঁজুতির হঠাৎ মাথায় এলো আবিরের আহত হওয়ার কথা।
‘ আচ্ছা আবির,শুনলাম তোমাকে নাকী ছিনতাইকারী ধরেছিলো?
আবির মুখ কালো করে বলল,
‘ হু।আর বোলোনা, এরকম অভিজ্ঞতা তাও বেড়াতে গিয়ে হবে কে জানতো?
আমিতো গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলাম।হঠাৎ কোত্থেকে একটা পাথর এসে গাড়ির কাঁচে পরলো।কাঁচ ভেঙে ক্ষান্ত হয়নি,ফাঁকা দিয়ে এসে পাথর টা পরলো সোজা আমার কাঁধে। অকষাৎ, সামলাতে পারিনি বলে গাড়ি লেগে যায় একটা গাছের সাথে।এরপর কয়েকজন মুখোশ পরা লোক এসে আমাকে টেনে নামালো গাড়ি থেকে। দুহাতে পায়ে কয়েকটা বারি মারতেই আমি জ্ঞান হারাই।তারপর কিছু মনে ছিলোনা।জ্ঞান ফিরলে দেখলাম একটা তালপাতা ছাউনীর দোকানের বেঞ্চীতে শুয়ে আছি।স্থানীয়রা তুলে এনেছেন।এরপর ওনাদের মাধ্যমে হোটেলে ফিরলাম।তবে হোটেলের চিকিৎসা ব্যাবস্থা বেশ ভালো।দুদিনেই ফিট হয়ে গিয়েছি দেখছোনা?মজার কথা কী জানো?ছিনতাই করতে এসে আমার ফোন, ওয়ালেট কিছুই নেয়নি ওরা।বোধ হয় নেয়ার আগেই লোকজন চলে আসে।
বাই দ্যা ওয়ে,তুমি কী করে জানলে?তোমার সাথেতো আমার তারপর আর দেখাই হয়নি।
আবিরের কপালে ভাঁজ।সেঁজুতি বলল
‘ সেটাও অনেক কথা।তুমি বোসো, আমি চট করে ফ্রেশ হই।এসে বলব।
‘ আচ্ছা।
____

তখন সন্ধ্যে।রেডিসন ব্লুয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে লোক সমাগম।এখানেই পার্টি থ্রো করেছে রুদ্র।বড় বড় অতিথিদের ভীর।অথচ সেই কখন থেকে গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে রুদ্র। একটু পরপর চোখ বোলাচ্ছে হাতঘড়িতে।কত গেস্ট আসছে,অথচ যার অপেক্ষায়, সে কই?
ঠিক সন্ধ্যা ৭ঃ২০। গেটের সামনে সাদা রংয়ের একটি গাড়ি এসে থামলো।রুদ্র তাকালোনা।যার জন্যে দাঁড়িয়ে, সেতো আর গাড়িতে আসবেনা।অভ্র পাশ থেকে বলল ‘ এইতো,সেঁজুতি চলে এলো।
রুদ্র তখন চোখ ওঠালো।সেঁজুতিকে দেখে ধুকপুকানিটা কয়েকশ গুন বাড়লো।জুড়িয়ে এলো দুচোখ। হাফ সিল্কের একটা কালো শাড়ি পরেছে সেঁজুতি। চুল গুলো ছড়িয়ে আছে পুরো পিঠ।ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক।দু হাত ভর্তি রেশমি চুড়ি।আর কপালে ছোট্ট একটা কালো টিপ।ব্যাস! এতেই যেন রুদ্রর আত্মহুতি দেয়ার মত অবস্থা।শাড়িতে মেয়েটাকে সুন্দর লাগবে ভেবেছিলো,কিন্তু এত সুন্দর লাগবে জানতোনা।তাও এত সামান্য সাজে।সেঁজুতি কে শাড়িতে দেখার লোভ অনেকদিনের।ভাগ্যিশ মিথ্যে বলল। নাহলে কবে দেখতো এরুপে কে জানে?
সেঁজুতি রুদ্র আর অভ্রকে দেখতেই এগিয়ে আসে।হেসে বলল ‘গুড ইভিনিং স্যার!
রুদ্রর ধ্যান ভাঙলো। অন্যদিক ফিরে বলল ‘ হু।অভ্র উত্তর দিলো ‘ গুড ইভিনিং।আপনি একদম ঠিক সময়ে এলেন।সেঁজুতি মৃদূ হাসলো।অভ্রতো আর জানেনা তার দেরী করার গল্প।রুদ্রর
এতক্ষনে নজর পরলো গাড়ির দিকে।জিজ্ঞেস করলো,
— কার গাড়ি এটা?
তখনি আবির বের হয়।পড়নে ব্লু স্যুট। ভূত দেখার মতো চমকালো রুদ্র।এই লোক এখানে কি করে।প্রশ্নটা করেই ফেলল।

‘মিঃ আবির এখানে? তাও আপনার সাথে? হাউ?

সেঁজুতি হা করতেই পাশ থেকে আবির বলে ওঠে,
‘হাই মিঃ রুদ্র রওশন।আমাকে দেখে চমকে গিয়েছেন নিশ্চয়ই??
রুদ্র ভ্রু কুঁচকে বলল
‘ কে আপনি?
সেঁজুতি ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়।একি অবস্থা আবিরেরও।দুজন দুজনের দিক তাকিয়ে আবার রুদ্রর দিকে তাকায়।সেঁজুতি মনে মনে বলল,
‘একটু আগেই তো আবিরের নাম বললেন উনি।এর মধ্যেই ভুলে গেলেন?আজিব তো!এ আবার হয় নাকী!

আবির নিজেকে সামলে নেয়।হেসে বলে,
‘আমি? আমি আবির রহমান।সেজুতির বাবার বন্ধু, ড:হোসাইনের ছেলে। সিলেটে আপনার সাথে দেখা হয়েছিলো।মনে পড়ছে?

রুদ্রর ভালো মুড টা যাস্ট বিগড়ে গেছে।এই ছেলেটা শেষে কীনা সেঁজুতির বাবার বন্ধু?দুনিয়ায় আর কেউ রইলোনা?গম্ভীর কন্ঠে বলল,
” হতে পারে।আসলে অনেকের সাথেই তো রাস্তা ঘাটে চলতে ফিরতে দেখা হয়।কিন্তু যাদেরকে মনে রাখা প্রয়োজন আমি তাদের বাইরে বাকি সবাইকে ভুলে যাই।
রুদ্রর কথায় স্পষ্ট অপমান। বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পরলো আবির।সেঁজুতি রুদ্রর কথায়
হোচট না খেয়ে পারছেনা।আবিরের সাথে এক দফা ঝগড়া অব্দি করা লোক এখন বলছে তাকে মনে নেই?আশ্চর্য না?আবির নিজের অস্বস্তিটা ফের ঢেকে ফেললো হাসিতে।বলল,

” গেস্ট দের কি বাইরেই দাঁড় করিয়ে রাখেন আপনি?? নাকি ভেতরেও আসতে দেবেন?

‘ ইয়াহ শিওর।আসুন।

আবির আর সেঁজুতি ভেতরে ঢুকলো।রুদ্র সেদিকে কটমটে দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে গলার টাই ঢিলে করলো।এত গরম লাগছে কেন? মনে হচ্ছে শরীর থেকে আগুন বের হচ্ছে।কীসের আগুন এটা?হিংসের নাতো!অভ্র এতক্ষন ছিলো নিরব দর্শক।সেঁজুতিরা আঁড়াল হতেই কৌতুহলি কন্ঠে বলল ‘ ইনি কে ভাই?
রুদ্র মুখ কালো করে তাকালো।এই মুহুর্তে তার কথা বলতে ইচ্ছে করছেনা।আবির নামের ছেলেটাকে এত টা হাল্কা ভাবে নিয়ে এখন আবার পস্তাতে না হয়। সেই বা কী করে জানবে যে ঘুরেফিরে এই হবে সেঁজুতির আত্মীয়!উফ!কেমন চিপকে আছে সেজুতির সাথে।অভ্র উত্তর না পেয়ে বুঝলো ভাইয়ের মুড অফ।তাই বলল ‘ সবাইতো এসে গেছে ভাই।পার্টি শুরু করি?

রুদ্র মাথা নাঁড়ে।দুজনে ভেতরে আসে। অভ্র চলে যায় সবার উদ্দেশ্যে কিছু বলতে।আর রুদ্র দাঁড়িয়ে থাকে এক কোনায়।একা একা।চোখ,মন দুটোই সেঁজুতি আর আবিরের ওপর।
অভ্র মাইকে এনাউন্স করতে শুরু করলো।সংক্ষেপে সেজুতির প্রসংশা আর তাদের কোম্পনির বর্ননা দিলো।রুদ্রর বুদ্ধি আর স্কিলের দৌড়ে কোম্পানি কতটুকু এসেছে এই অল্প সময়ে, সেটাই ছিলো মূলবিষয়।সাথে আজকের পার্টি থ্রো করার
কারনটাও বলল ।একটা সময় স্টেজের মেইন পয়েন্টে অভ্র সেঁজুতি কে ডাকে।সেঁজুতি কাঁপা কাঁপা কদমে সেখানে গিয়ে দাঁড়ালে ঘন তালির বর্ষন হয়।সবাই সমস্বরে কংগ্রাচুলেশন জানায়।সেঁজুতির ভালো লাগায় কান্না পেয়ে গেলো।নিঁচের ওষ্ঠ চেপে রেখে সংবরন করলো নিজেকে।এত্ত খুশি কখনও হয়নি তার।পরীক্ষার রেজাল্ট ভালো করলেও নয়।একটু পর অভ্র রুদ্র কেও ডাকলো।থমথমে মুখ নিয়ে হাজির হলো রুদ্র। পকেটে দুহাত গুঁজে সেজুতির পাশে দাঁড়ালো।সেঁজুতি রুদ্রকে দেখলো ক’বার।সাদা শার্টের ওপর কালো কোর্ট পরেছে রুদ্র।চুল গুলো পরিপাটি করে স্পাইক করা।সেঁজুতি মনে মনে বলল ‘ ছেলেদের একটু কম সুন্দর হওয়া উচিত মিস্টার বস।তোহা আপনার ওপর এমনি এমনি ক্রাশ খায়নি।এখনই না বুঝতে পারছি আমি।

অতিথিদের করোতালি একটু পর পর বাজছে।অভ্রর একেকটি উদ্বুদ্ধ মূলক কথা সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনছে।বাদ পরছেনা আবিরও।রুদ্রর মুখে হাসি নেই।ব্যাপার টা অন্যদের কাছে স্বাভাবিক।,কিন্তু সেঁজুতি এ নিয়ে চিন্তিত।কারন তার সামনেই রুদ্র হোহো করে হেসেছে।
তাহলে আজ কি হলো?যখন পার্টিতে এলো তখনও কী সুন্দর হাসিমুখে চেয়ে ছিলো।চাঁদপানা বদনে এমন আমাবস্যা কেন?

স্টেজে একটি বড় কেক আনা হলো।সেঁজুতির এক হাত ধরে কেক কাটলো রুদ্র।একটা কথাও বললনা।কেক কাটা শেষ হলে অভ্র এক টুকরো রুদ্রকে খাওয়াতে নিলে সে হাত সরিয়ে দিলো। বলল ‘ আমার সুগার আছে।তুই খেয়ে নে।তারপরই গটগট করে হেটে চলে গেলো সেখান থেকে।সেঁজুতির মন খারাপ লাগলো।সে এক টুকরো কেক হাতে তুলেছিলো রুদ্রকে খাওয়াবে বলে।যেখানে অভ্রর টাই খেলোনা,তার হাতে খাবে নাকী?

অভ্র সেঁজুতি কে খাওয়ালো।সাথে অফিসের আরো বেশ কজন কর্মকর্তাকে।এক সময় মাইক্রোফোনে ডান্স অফার করলো অভ্র। সবাই তখন মেতে উঠলো উত্তেজনা,আনন্দে।

সেঁজুতি এদিক ওদিক তাকিয়ে রুদ্র কে খুঁজছে। এই লোকের যে কি হয় কে জানে!এদিকে শাড়ি পরেই তার অবস্থা কাহিল।সচারাচর পরেনা বলে অভ্যেস নেই।বারবার জুতোয় বাঁধছে।পার্টিতে এসে তো তার বিষম খাওয়ার উপক্রম হয়েছিলো।
পার্টির থিম নাকী শাড়ি।অথচ এখানে সে একাই শাড়ি পরে এসছে।বাকি সবাই ওয়েস্টার্ন পরেছে নিজেদের মতো করে।তাহলে রুদ্র তাকে মিথ্যে কেনো বলল? নাকী পরে আবার থিম চেঞ্জ হলো।সে জানেনা।হতেই পারে।

ইতোমধ্যেই সবাই নিজেদের কাপল নিয়ে ডান্স শুরু করে দিয়েছে।উজ্জ্বল আলোটা নিভিয়ে সবুজ রঙের একটা টিমটিমে আলো জ্বলছে এখন।সাউন্ড সিস্টেমে বাজছে অরিজিৎ সিংয়ের সফট গান।হঠাৎ পাশ থেকে কেউ বলে ওঠে,

“কি হয়েছে সেঁজুতি?
সেঁজুতি ঈষৎ কেঁপে উঠলো আবিরের ডাকে।রুদ্রকে খুঁজতে গিয়ে আবিরের কথা বেমালুম ভুলে গেছিলো।আস্তে করে বলল

‘কই কিছু নাতো!তুমি এখানে কেন?যাও ডান্স করো…
” ডান্স? কীভাবে করব?তুমিতো এখানে।চলো চলো,

‘ এই না না আবির,আমি এসব পারিনা।তুমি যাওনা।আমাদের অফিসে কিন্তু অনেক সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে।
সেঁজুতি দুষ্টু হাসলো।আবির হেসে বলল ‘ থাকুক।আমার দরকার নেই ভাই।আপাতত তুমি এলেই হবে।চলোতো…

সেঁজুতি কে টেনেটুনে নিয়ে চলল আবির।
দূর থেকে এতক্ষন সবটা দেখেছে রুদ্র। রাগে ব্রক্ষ্মতালু চলছে তার।হিঁসহিসঁ করছে।

সেজুতির এক হাত নিজের বুকের ওপর, আর নিজের হাতটা সেঁজুতির কোমড়ে রাখলো আবির।গা দুলে দুলে সবার সাথে তাল মিলিয়ে নাঁচতে শুরু করলো।সেঁজুতির অস্বস্তি হচ্ছিলো।আবির বিদেশে মানুষ।তাই এগুলো ওর কাছে ডালভাত।কিন্তু সেতো অভ্যস্ত নয়।কেমন কেমন লাগছে। আবিরের খারাপ লাগবে ভেবে মুখে কিছু বলতেও পারছেনা।

হাত ইশারা করে একজন সার্ভেন্ট বয়কে ডাকলো রুদ্র। ছেলেটির হাতে ওয়াইন ভর্তি ট্রে।রুদ্র প্রথম গ্লাসে চুমুক দিলো সেঁজুতির দিকে চেয়ে থেকে।সেঁজুতির কাছে আবিরকে যাস্ট সাপের মতো মনে হচ্ছে তার।যেন পেঁচিয়ে ধরেছে মেয়েটাকে।সাপটাকে এক্ষুনি গিয়ে গলা টেপে মেরে ফেলতে মন চাইছে রুদ্রর।একে একে সাত আটটাা গ্লাস ই ফাঁকা করলো রুদ্র আবিরকে হিংস্র চোখে দেখে দেখে।কিন্তু এতেও লাভ হচ্ছেনা।
রাগ তার কমছেনা।রুদ্র সেঁজুতির দিকে হেলেদুলে এগোলো।গিয়ে দাঁড়ালো একদম আবির আর সেঁজুতির মাঝখানে। রুদ্রকে দেখে আবিরের বুক থেকে হাত নামিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো সেজুতি।কিন্তু আবির সেঁজুতির কোমড় ছাড়লোনা।রুদ্রর রক্ত বর্ন চোখ সেদিকেই তাকিয়ে।আবির বুঝতে পেরে হাত সরালো।বলল
‘এনি প্রব্লেম মিঃ রওশন?
উত্তর দিলোনা রুদ্র।যে হাত সেঁজুতি আবিরের বুকে রেখেছিলো চেপে ধরলো সেটা।সেঁজুতির চোখ উঠলো কপালে।আবিরও বিস্মিত।রুদ্র কারো অভিব্যক্তি পাত্তা না দিয়ে টানতে টানতে সেঁজুতি কে নিয়ে হাটা ধরলো সুইমিং পুলের দিকে।

এতো জোরে টানছে রুদ্র, সেঁজুতি তাল মেলাতে পারছেনা। তার ওপরে শাড়ি।হুমড়ি খেয়ে পরতে নিচ্ছে কয়েকবার।রুদ্র রেগে আছে সেঁজুতি টের পেয়েছে আগেই।কিন্তু কেন?আর তাকে এভাবে নিয়ে যাচ্ছেই বা কোথায়?

গন্তব্যে এসেই সেজুথির হাত ছেড়ে দিলো রুদ্র।নাকের পাটা ক্রমশ ফুলছে।রাগে ফোস ফোস করছে। শক্ত চোয়াল,লাল চোখ দেখে সেঁজুতি ঘাঁবড়াল।সে কী কোনো ভুল করলো?ভীত কন্ঠে শুধালো,

‘কিছু হয়েছে স্যা…
পুরোটা শেষ করার আগেই সেঁজুতির দুইবাহু চেপে ধরলো রুদ্র।মিশিয়ে ফেলল ওকে নিজের বুকের সাথে।চমকে ব্যাথা ভুলে গেলো সেজুথি।রুদ্র ক্ষুব্ধ কন্ঠে বলল,

“আবিরের সাথে সময় কাটাতে আপনার অনেক বেশি ভালো লাগে তাইনা সেজুতি?কেমন বুকে হাত দিয়ে নাঁচছিলেন।ও আপনার কোমড় কেন ধরেছে?হুয়াই?ওর স্পর্শে মজা পাচ্ছিলেন?না পেলে কেন কিছু বললেন না?নাকী পরপুরুষের স্পর্শ খুব ইঞ্জয় করেন আপনি?

সেঁজুতি এতক্ষন শান্ত ছিলো।কিন্তু রুদ্রর নোংরা নোংরা কথায় রেগেমেগে আগুন সে।ঝাঁড়া মেরে রুদ্রর হাত সরাতে চেষ্টা করলো। লাভ হলোনা। রুদ্রর গায়ে যেন অসুরে শক্তি।অগত্যা রুদ্রর সাথে মিশে রইলো ওইভাবে। সেঁজুতি নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করায় রুদ্রর রাগ দ্বিগুন বাড়লো।আগের থেকেও চেঁতে বলল ‘ আমি ধরলেই আপনি নিজেকে সরাতে চান।কই, এতক্ষন আবির ও তো ধরেছিলো।একবারও তো এরকম ছাড়াতে দেখলাম না আপনাকে!কী সম্পর্ক আপনাদের?হ্যা?বলুন?

সেঁজুতি স্তম্ভিত।রুদ্রর মুখ থেকে পাওয়া উৎক গন্ধে বুঝলো রুদ্র আবার মদ খেয়েছে।সেঁজুতির মেজাজ চটে গেলো যেন।বারবার মাতলামি করতে তাকেই পায়? বন্ধু হিসেবেও রুদ্রর মদ খাওয়া তার পছন্দ হলোনা।সেঁজুতি কে নিরুত্তর কিছুতেই মানতে পারলোনা রুদ্র।যদি আবিরের সাথে কিছু না ই হবে তবে বলছেনা কেন?সেঁজুতিকে ঝাঁকালো রুদ্র,দাঁত পিষে বলল ‘ কি হলো বলুন? কি চলছে আপনাদের মধ্যে?আবিরের সাথে এতো ঘষাঘষী কিসের আপনার?? কিসের এতো ঢলাঢলি, বলুন আমায়?

সেঁজুতি ফুঁসে উঠলো এবার,
— ভদ্র ভাবে কথা বলুন।মুখে যা আসছে তাই বলতে পারেন না আপনি।

রুদ্র চিৎকার করে বলল
-“পারি অবশ্যই পারি। আপনার ব্যাপারে তো সব পারি।আপনি আর আবিরের সাথে মিশবেন না। ওর ধারে কাছেও আমি আপনাকে দেখতে চাইনা ব্যাস।

সেঁজুতি অবাক হয়ে বলল,
–মানে? আমি কার সাথে মিশব,কার সাথে মিশব না,সেটা কি আপনি বলে দেবেন?বন্ধু হয়েছি বলে আপনার হুকুমে আমার লাইফ চলবে?আর তাছাড়া,কিসের এতো অধিকার বোধ আপনার!আমি যার সাথে ইচ্ছে নাঁঁচবো,যার সাথে ইচ্ছে মিশবো।যাকে ইচ্ছে ধরব।কেনো আপনি নিষেধ করবেন আমায়?,কেনো?

‘ বিকজ আই লাভ ইউ ড্যামেট!আই লাভ ইউ….!!

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে