#প্রনয়
#নুসরাত সুলতানা সেজুতি
পর্ব-১৯
“রুদ্র চড় মেরেছে,রুদ্র চড় মেরেছে”সেই তখন থেকে কানের পাশে ভনভন করে ঘুরছে কথাটা।
গালে হাত দিয়ে অবাক চোখে রুদ্রর দিকে চেয়ে আছে সেঁজুতি।শক্ত হাতের শক্ত চড়ে এত ব্যাথা?ছোট বেলা থেকে বাবার আদূরে মেয়ে বলে আমির ঘুনাক্ষরেও মেয়ের গায়ে হাত তোলেননি।সেঁজুতিও জানেনা মার কাকে বলে!বিশ বছর বয়সে এসে একটা পুরুষের হাতে চঁড় খেয়ে মূর্ছা যাওয়ার উপক্রম।পাথরে পরিনত হয়েছে যেন।মূর্তির মতো রুদ্রর শক্ত চোয়াল দেখছে সে।রুদ্রতো এমনিই রেগে ছিলো।সেঁজুতি নিরুত্তর দেখে রাগ যেন বেশি চাপলো মাথায়।মুহুর্তেই দুহাতে সেঁজুতির কাঁধ ঝাকিয়ে বলল,
‘এই মেয়ে কোনও সেন্স নেই তোমার?এরকম একটা অচেনা জায়গায় এত সাহস নিয়ে এত দূর চলে এলে? তাও এই ফালতু প্রজাপতি ধরতে?আর ইউ লস্ট ইওর মাইন্ড?হ্যাভ ইউ এনি আইডিয়া আমি তোমায় কতক্ষন ধরে খুঁজে যাচ্ছি?কত চিন্তা হচ্ছিলো,ভয় পেয়েছি আমি জানো? জানো তুমি?
কোনো মূল্য নেই আমার কথার?তোমাকে নঁড়তে বারন করেছিলাম তো ওখান থেকে।করেছিলাম না বারন?? আন্সার মি ড্যামেট!
রুদ্র চিৎকার করতেই সেঁজুতি থরথর করে কেঁপে উঠলো।রুদ্র রাগে হিঁসহিঁস করছে।চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে।অধিক ক্রোধে প্রথম বার সেঁজুতি কে তুমি করে বলেছে।কিন্তু সেসবে কী খেয়াল আছে মেয়েটার?সেঁজুতি কিয়ৎক্ষন হতবিহ্বল হয়ে চেয়ে থেকেই ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দিলো।থতমত খেলো রুদ্র।বোঁকা বনে গেলো কিছু সময়ের জন্যে।এতক্ষন রাগের মাথায় কি করেছে টনক নড়লো এবার।মনে মনে আওড়ালো
শীট!শীট! শেষে কিনা চঁড় মেরে বসলাম!
সেঁজুতি বাচ্চাদের মতো কাঁদছে।ঠোঁট দুটো তিরতির করে কাঁপছে।রুদ্র অসহায় চোখে তাকালো।ভীষণ আফসোস হচ্ছে এখন।এসেছে নাহয় একটু দূরে।এত্ত রিয়্যাক্ট করার কি ছিলো? মাথাটা একটু ঠান্ডা রাখলেই পারতি রুদ্র।ইশ! কি বাচ্চার মত কাঁদছে,নিশ্চয়ই অনেক ব্যাথা পেয়েছে।
সেঁজুতি হেঁচকি তুলে ফেলল।কাঁদতে কঁাদতে চোখ ডলে বলল ‘ আমমি জীবনে কখনও মার খাইনি।
রুদ্রর আফসোস আরও বাড়লো,মোলায়েম কন্ঠে বলল,
প্লিজ কাদবেন না!আমি ইচ্ছে করে মারিনি।আসলে তখন আপনাকে না দেখতে পেয়ে..আমি আসলে,,, ইয়ে…ওই….
সেজুতির কান্না থামার নাম নেই।এমন কান্নায় রুদ্রর সব কিছু গুলিয়ে যাচ্ছে।সব সময় গুছিয়ে কথা বলা লোকটাও হিমশীম খাচ্ছে সান্ত্বনা দিতে।নির্জন চা বাগানে সেঁজুতির কান্নার শব্দ বাড়ি খাচ্ছে এদিক ওদিক।রুদ্র অনেকক্ষন সেঁজুতির কান্না দেখলো।এই মেয়ে আর থামবে না বোধ হয়।রুদ্রর এবার বিরক্ত লাগলো।একটা চড়ে এত কাঁদতে হয়? আর সে কিনা কদিন আগেই সেঁজুতির নিজেকে সামলানোর ক্ষমতায় অভিভূত হলো?রুদ্রর ভেতরের সত্ত্বাটা চেঁচিয়ে বলল,
‘ উফফ রুদ্র!ঝোকের বশে একটা নন স্টপ এফ -এম চালু করে দিলি তুই।কি করে থামাই এখন?
রুদ্র আগের থেকেও নরম কন্ঠে বলল,
‘শুনুন প্লিজ! সেঁজুতি? আমার কথাটা শুনুন।
প্রথম দিকে শান্তস্বরে বলল। সেঁজুতি থামছেনা।রুদ্র এমনিতেই বদরাগী।আবার খেই হারালো মেজাজের।
‘ যাস্ট স্টপ ইট ড্যামেট,,থামতে বলেছিতো আপনাকে…
রুদ্রর একটা ধমকই যথেষ্ট।কেঁপে উঠে চুপ করে গেল সেঁজুতি। রুদ্র স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে না ফেলতেই আবারও আগের মত ভ্যা করে কেঁদে উঠলো। হাল ছেড়ে দিলো রুদ্র।
‘ কাঁদুক উনি।যত ইচ্ছে কাঁদুক।
রুদ্র এক হাত ভাঁজ করে আরেক হাতে থুতনী ঘষে সেঁজুতির দিকে মন দিলো।খেয়াল পরলো সেঁজুতির কানে একটা বুনো ফুল গুঁজে রাখা।কান্নায় নাকের ডগা টা লাল হয়ে উঠেছে।চোখের পাপড়ি গুলো ভিজে চুপচুপে।ঠোঁট ভেঙে, চোখ বুজে হেচকি তুলে কাঁদছে।এর আগেও বহুবার সেজুতিকে কাঁদতে দেখেছে রুদ্র।তবে সে কান্নায় বড্ড ম্যাচুরিটি ছিলো।যার ছিটেফোটাও আজ নেই।
সেঁজুতির বাচ্চা বাচ্চা ভঙিমায় প্রচন্ড হাসি পেলো রুদ্র।আজ আর আটকাতে পারলোনা।পেট ফেঁটে বেরিয়ে এলো।হু- হা করে হেসে ফেলল রুদ্র।আচমকা হাসিতে সেঁজুতির কান্না থেমে গেলো।বিস্ময় ছেয়ে এলো চোখ জোড়ায়। এক মাসের মধ্যে এই প্রথম রুদ্রকে এভাবে হাসতে দেখে আশ্চর্যকিত হয়ে তাকিয়ে রইলো।আপনা আপনি তার ঠোঁটেও হাসি ফুটলো।অভিভূতের মতো দেখছে রুদ্রর ঝলমলে হাসি।ভেতর থেকে প্রশ্ন এলো ‘ পুরুষ মানুষের হাসিও এত সুন্দর হয়?
কি সুন্দর করে হাসে লোকটা।অথচ সব সময় এমন গোমড়া মুখে থাকে কেনো?সেঁজুতি মুখ ফস্কে বেরিয়ে এলো
‘ হাসলে আপনাকে ভীষণ সুন্দর লাগে।
চট করে রুদ্রর হাসি থেমে গেলো।সেঁজুতি অপ্রস্তুত হয়ে পরলো। রুদ্র তীক্ষ্ণ চোখে তাকাতেই চোখ সরিয়ে এলোমেলো ভবে তাকালো এদিক ওদিক।রুদ্র দুহাতের আজোলে সেজুতির মুখ তুলল।সেঁজুতি চমকালো খুব।রুদ্র সেসবে তোয়াক্কা না করে নিজের মতো সেঁজুতির চোখের কাঁনিশে জমে থাকা পানি টুকু মুছে দিলো।ঠান্ডা স্পর্শে সেঁজুতির শরীর শিরশির করছে।রুদ্র অত্যাধিক বরফ কন্ঠে বলল
‘এভাবে কাঁদলে আপনাকেও বেশ লাগে।
সেঁজুতি হা করে চেয়ে আছে। কোন রুদ্র রওশনের সাথে পরিচিত হচ্ছে সে?রুদ্র একভাবে সেঁজুতির স্নিগ্ধ মুখটা দেখছে।সেঁজুতিও যেন বাদামী দৃষ্টির স্বীকার হলো আজ।সম্মোহনের মতো তাকিয়ে আছে সেও।ধাবমান বাতাসে সেঁজুতির কপালের ছোট চুল উড়ছে।পলক হীন চোখের মায়ায় আটকে অবাধ্য ইচ্ছে মাথা তুলল। রুদ্র সেঁজুতির দিকে ঝুঁকে এলো কিঞ্চিৎ।সেঁজুতি এক চুল ও নঁড়লোনা।যেন এই মুহুর্তে শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়া এক জড় সে।রুদ্র সেঁজুতির ঠোঁটের কাছে ঠোঁট আনলো।সেঁজুতির ঠোঁট দুটো ঠকঠক করে কাঁপাতে ঘি ঢাললো রুদ্রর অনুভূতির আগুনে।দুজনের ঠোঁটে অর্ধইঞ্চি ফাঁক।ছুঁইছুঁই হতে যাবে হঠাৎ গাড়ির হর্নের শব্দ এসে পৌঁছায়। ধ্যান ভাঙলো দুজনের।হুশ ফিরতেই দুজন দুদিকে ছিটকে গেলো।সেঁজুতি লজ্জ্বা,ঘৃনায় আড়ষ্ট।রুদ্ররও একি অবস্থা।একে অন্যের দিকে তাকাতেও পারছেনা।আরেকটু হলে কী হতে যাচ্ছিলো ভেবেই সেঁজুতির শ্বাস আটকে এলো।ছি! ছি! শেষে কীনা এসব?সেঁজুতি কপাল চাঁপড়ালো মনে মনে।রুদ্রর ফোন বাজলো তখন।রুদ্র রিসিভ করে আসছি বলল শুধু।এরপর মুখের কাছে হাত এনে খুকখুক করে কাশলো।উদ্দেশ্য সেঁজুতির মনোযোগ। উশখুশে কন্ঠে বলল
‘গাড়ি এসে গেছে হয়তো।যেতে হবে আমাদের।
সেঁজুতির উত্তর জানতে রুদ্র তাকালো।সেঁজুতি শুধু মাথা দোলালো।টু শব্দ করলোনা।রুদ্র হাঁটা ধরলে সে বরাবরের মতোন পেছন পেছন এগোয়।
গাড়ি চলছে অনেকক্ষন।অস্বস্তিতে গাট হয়ে আছে দুজনেই।রুদ্রর মনে হঠাৎ ভয় জেঁকে বসলো।তখনকার ব্যাবহারের জন্যে সেঁজুতি কী রেগে গেলো? ক্ষেপে আছে? ভুল বুঝছে তাকে? রুদ্র একটা ছোট্ট পরীক্ষা নিতে চাইলো সেঁজুতির।সামনে ড্রাইভার। পেছনে রুদ্র আর পাশেই জড়োসড়ো হয়ে বসে সেঁজুতি। রুদ্র নিরবতা ভেঙে বলল
‘একটা প্রজাপতি দেখে এত দূর আসার কারন?
সেঁজুতি বাইরে থেকে চোখ ফিরিয়ে তাকালো।পরমুহূর্তে চোখ রাখলো কোলের ওপর রাখা হাতে।নীঁচু কন্ঠে বলল,
‘আসলে, তখন ওখানে একটা সাপ দেখে দাঁড়িয়ে থাকতে ভয় লাগছিলো।আপনিও ফোনে কথা বলছিলেন,তাই আপনাকে না ডেকে নিজের মত একটু হাটছিলাম।কখন যে এতো টা দূরে চলে এসেছি বুঝতেই পারিনি।আর প্রজাপতির পিছু নেয়া আমার ছোট বেলার অভ্যেস।ঢাকার যান্ত্রিক জীবনে ঢাকা পরেছিলো বলতে পারেন।কাজের চাপেও এসবের তেমন সুযোগ হয়না।হঠাৎ প্রজাপতি টা উড়তে দেখে এত ভালোলাগলো যে ছেলেমানুষী যেন আবার ফিরে এলো।কিছু না ভেবেই ওর সাথে পা মেলালাম।
সেঁজুতি মৃদূ হাসলো।রুদ্র ভেতরে ভেতরে শান্তি অনুভব করলো। স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো সে।যাক! সেঁজুতি তবে রেগে নেই।পরিস্থিতি স্বাভাবিক। সেঁজুতি জিজ্ঞেস করলো,
‘এটা সিলেটের কোন জায়গা?
‘জাফলং।
সেঁজুতি উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল,
— জাফলং?? ওয়াও!এটার সম্পর্কে আমি বইতে পড়েছিলাম।সিলেটের প্রকৃতি কন্যা বলা হয় এ জায়গা কে তাইনা?সত্যিই এমনি এমনি দেয়নি এমন নাম।ভীষণ সুন্দরও। আমার অনেক ইচ্ছে ছিলো সিলেটে আসার,কিন্ত হয়ে ওঠেনি।আজ আপনার জন্যেই আমার ইচ্ছে টা পূরন হলো।
জবাবে কিছুই বললোনা রুদ্র।সেজুতির থেকে চোখ সরিয়ে জানলা দিয়ে বাইরে তাকালো।
দেশে বিদেশে কত জায়গায়ই না ঘুরেছে। অথচ সামান্যতম প্রতিক্রিয়া আসেনি নিজের মধ্যে।
আর এই মেয়েটা,দেশের এতো ছোট একটা জায়গায় আসা নিয়েও কতটা আনন্দিত!
—-
পাঁচ তারকা বিশিষ্ট একটি হোটেলের সামনে এসে গাড়ি থামানো হলো। দুপাশের দরজা খুলে নেমে এলো রুদ্র -সেজুতি ।
সেজুতিকে রেখেই হোটেলের ভেতর ঢুকে গেলো রুদ্র।সেঁজুতি একটু ক্ষুন্নই হলো এতে।ড্রাইভার তখন লাগেজ নামাতে ব্যাস্ত।সেঁজুতি আমিরকে ফোন সিয়ে জানালো ওরা পৌঁছেছে।রুদ্র গিয়ে রিসিপশনে দাঁড়িয়েছে।
” রুম রেডি??
ছেলেটি সৌজন্য হেসে বলল,
‘ ইয়েস স্যার!সব কিছু আগে থেকেই ঠিকঠাক করে রেখেছি। আপনার কথা অনুযায়ী পাশাপাশিই দুটো রুম দিয়েছি। আর সব থেকে বেস্ট দুটোই।
রুদ্র তুষ্ট কন্ঠে বলল,
‘ গুড।চাবি দিন,,
___
সেঁজুতি ওপরের ছাদ থেকে নিচের মেঝে অব্দি দেখতে দেখতে হাটছে।বাইরের থেকে ভেতরটা আরো বড়।এমন নয় সে ফাইভ স্টারে প্রথম এলো।এর আগে গিয়েছিলো, রুদ্রর আর-আর-সিতে।ওটাওতো ফাইভ স্টারই ছিলো।কিন্তু সেদিন অত কিছু দেখার মত মন -মানসিকতা কোনোটাই রপ্ত ছিলোনা ।আজ তাই এই হোটেলটি খুঁটিয়ে খাঁটিয়ে দেখছে সে। সেঁজুতি যখন এদিক ওদিক দেখছে ঠিক তখনি কারো সাথে ধাক্কা লাগলো।সেঁজুতি পরে যেতে নিলে সামনের আগন্তুক ফিল্মের হিরোর মত ওর কোমড় ধরে আটকাতে চাইলো।কিন্তু ধরার আগেই কোত্থেকে হাওয়ার বেগে উদয় হলো রুদ্র। ছেলেটির হাত খপ করে ধরে ফেলে আটকালো।সেঁজুতি কে কেন ছোঁবে এই ছেলে?আর ব্যাস! ধপাস করে মেঝেতে পরলো সেঁজুতি। আর্তনাদ করে উঠলো ব্যাথায়,
” ও বাবা! কে ফেললো আমায়?হাড়গোড় বোধ হয় সব ভেঙে গুড়ো গুড়ো হয়ে গিয়েছে।
রুদ্র গম্ভীর হয়ে দেখছে সেঁজুতিকে।একটু যদি হাসি থাকে মুখে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটির হাত তখনও মুঠোয়।ছেলেটি একবার ওকে দেখছে একবার সেঁজুতি কে।রুদ্র তাকালো।ছেলেটির হাত ছেড়ে দিয়ে নিজের এক হাত পকেটে গুঁজলো।
ছেলেটি ভ্রু কুঁচকে বলল,
‘কি ব্যাপার? আপনি আমাকে আটকালেন কেনো?আমি ধরলে উনি তো পরতেন না।
রুদ্রর কাটকাট জবাব,
‘ ওনার পরে যাওয়া নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবেনা। সেজন্যে আমি আছি,আপনি নিজের কাজ করুন
আশেপাশে তাকালো রুদ্র।স্টাফ যারা আছে তারা যথেস্ট স্বাভাবিক।আর সেটাও এখানে সে উপস্থিত তাই। অন্য সময় হলে সেজুতিকে নিয়ে এতক্ষনে হয়তো হাসির রোল পরে যেতো।
সেজুতি গাল ফোলালো।টাইলসের মেঝেতে পরে ভীষণ ব্যাথা লেগেছে পিঠে।সব রাগ গিয়ে পরলো অজ্ঞাত ছেলেটির ওপর। সে না হয় একটু অন্যমনস্ক ছিলো।কিন্তু ইনি? ইনি চোখ কোথায় রেখেছিলেন?
সেঁজুতি কোমড় চেঁপে উঠে দাঁড়ালো।কাঁধব্যাগ টা আগের মত কাঁধে ছড়িয়ে ছেলেটির দিকে তাকালো।সে এখনও ভ্রু কুঁচকে চেয়ে আছে ওর দিকে।যেন কিছু একটা মেলাচ্ছে।সেঁজুতি মৃদূ মেজাজ নিয়ে বলল,
‘ এই যে আপনি চোখে দেখতে পান না?? মেয়ে দেখেছেন আর ধাক্কা মেরে দিলেন?
ছেলেটি অবাক হয়ে বলল,
“কি বলছেন এসব?আমি তো দেখিইনি।ইচ্ছে করে ধাক্কা মারার মত অভদ্র আমি নই।
সেঁজুতি সন্দেহী কন্ঠে বলল,
”
সত্যি বললেন নাকি মিথ্যে?
‘সত্যি বিশ্বাস করুন।
রুদ্র পাশ থেকে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
‘লিসেন মিস সেজুতি।, আপনি নিজেই নিজেকে সামলাতে পারেন না।,উনি না হয় দেখেন নি,,,
কিন্তু আপনার চোখ কোথায় ছিলো?
সেঁজুতি চুপসে গিয়ে বলল,
‘ইয়ে আমি তো,হোটেল টা দেখছিলাম।
রুদ্র বিরক্তি দেখিয়ে বলল,
‘ চলুন।
সেঁজুতি মুখ কালো করে বলল,
“বলছিলাম কি,একটা ট্রেচার নিয়ে আসা যায়না?যা জোড়ে পরেছি। ভীষণ ব্যাথা করছে।
রুদ্র ভ্রু নাঁচালো,
‘ হোটেলে স্ট্রেচার?
সেঁজুতি কাঁদোকাঁদো কন্ঠে বলল,
” কিছু একটা আনুন না।আমি হাটবোনা পায়েও ব্যাথা পেয়েছি।
কিঞ্চিৎ এগিয়ে এলো রুদ্র।সেঁজুতির কানের কাছে মুখ নিয়ে কন্ঠ খাদে নামিয়ে বলল,
‘ভালোয় ভালোয় চলুন।নাহলে হসপিটালের সেদিনের সেই ব্যাবস্থা নেবো আমি।
ইঙ্গিত বুঝতে এক সেকেন্ড ও লাগেনি সেজুতির।দুদিকে মাথা নেঁড়ে ভাবলো,
‘ আর যাই হোক,এর কোলে ওঠা যাবেনা।
রুদ্র বুকের সাথে দুহাত ভাঁজ করে দাঁড়ালো।সেঁজুতি তাকাতেই ডান ভ্রু উঁচালো।ঠোঁট উলটে হাটা ধরলো সেঁজুতি। পা ব্যাথায় টনটন করে উঠলেও থামলোনা।রুদ্র পেছন পেছন ঠোঁট বাকিয়ে এগোলো।বিড়বিড় করে বলল,
— পানিশমেন্ট ইজ পানিশমেন্ট।
ছেলেদের সাথে ধাক্কা খাওয়ার মজা বুঝুন এবার।
চলবে….