প্রথম দেখায় ভালোবাসা পার্ট অন্তিম পর্ব

0
3615

প্রথম দেখায় ভালোবাসা পার্ট অন্তিম পর্ব
#jannatul_ferdous

বিকেলে রাদ আর মুনতাহা হাসপাতালে যেতেই আনন্দের ঝড় বয়ে গেলো।সবাই খুব খুশি,বিশেষ করে রোদ-রাগিনীর খুশি ধরছেই না।রাগিনী অনেক ধরেই স্বপ্ন দেখতো একটা পিচ্চি মানুষের,যে কিনা সারাটা দিন বাড়িটাকে মাতিয়ে রাখবে।

রাদ-কিন্তু ভাবি তোমার মাথায় ব্যান্ডেজ কেনো?

রোদ-বলছিলাম তো সিড়ি দিয়ে পড়ে গেছে।

রাদ-ডাক্তার কী বলেছে কোনো সমস্যা নেই তো?

রোদ-না বলছে এবার থেকে সাবধানে থাকতে।

মুনতাহা-আপু তোমার স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেলো আমার খুব ভালো লাগছে।

রাগিনী-চিন্তা করো না তোমারটাও হবে।

হঠাৎ করেই দরজার দিকে তাকাতেই দেখলো রিত্ত দাঁড়িয়ে আছে।

রাগিনী-কি রে ভিতরে আয়।

রিত্ত-কেমন আছিস এখন?

রিত্ত-হুম ভালোই।

রিত্তকে দেখেই রাদ বের হয়ে চলে গেলো।রাদের পিছনে মুনতাহাও চলে গেলো।বাইরে বের হতেই রাদ মুনতাহাকে জড়িয়ে ধরলো।

রাদ-মুন কেনো আসে ও আমার সামনে।আমার কষ্ট হয় ওকে দেখলে।ও কেনো বুজে না।

মুনতাহা-এত ভাবিস না সব ঠিক হয়ে যাবে।তুই তো বলছিলি আমরা ঘুরতে যাবো।

রাদ-হুম চল।

রাত ৯ঃ০০টা বেজে গেলো।একটা জায়গায় গিয়ে বসলো রাদ আর মুনতাহা।দুইজনেই খুব খুশি,ছোট বেলার খেলার সাথীর সাথে অনেক দিন পর সময় কাটাচ্ছে দুইজনেই।

মুনতাহা-রাতের শহরটা অনেক সুন্দর রে।

রাদ-হুমম তবে আমার জীবনের মত পুরোপুরি অন্ধকারাচ্ছন্ন না।

মুনতাহা-এরকম একদম ভাববি না।

রাদ-জানিস ওকে প্রোপোজ করবো বলে কত প্ল্যান করছিলাম।কিন্তু সব শেষ হয়ে গেলো।

মুনতাহা-এত কেনো ভাবছিস ওর কথা।আমি কী তোর ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না?

রাদ-মানে?

মুনতাহা-দেশে এসেছি শুধু তোর জন্য।অনেক ভালোবাসি রে তোকে।

রাদ-তুই আর আমার সামনে আসবি না।তোকে আমি শুধু ফ্রেন্ড ভাবি,কিন্তু তুই…..

বলেই রাদ রেগে চলে আসছিলো সেখান থেকে।পিছন থেকেই মুনতাহা বলে উঠলো—
যতক্ষন না তুই আমাকে এখানে এসে আই লাভ ইউ না বলিস ততোক্ষন আমি এক পাও নড়বো না এখান থেকে।

রাদ শুনেও চলে আসলো বাসায়।মুনতাহার কথাটাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।

রাত ১ঃ০০টায় হঠাৎ কল আসলো রাগিনীর ফোনে।রাগিনী ফোন রিসিভ করতেই……

মুনতাহার আম্মু-মা রে তুই কই?

রাগিনী-এই তো সন্ধ্যায় বাড়িতে এসেছি।আন্টি এত রাতে কল দিলেন?

মুনতাহার আম্মু-মেয়েটা এখনো বাসায় ফিরেনি।আমার চিন্তা হচ্ছে ওকে নিয়ে।রোদকে কল দিলাম রিসিভ করছে না।

রাগিনী-আচ্ছা আমি দেখছি।মনে হয় রাদের সাথেই আছে।

রাগিনী রাদের রুমে যেতেই দেখলো রাদ বসে বসে গান শুনছে আর কিছু ভাবছিলো।ডাক দিতেই চমকে উঠলো।

রাদ-ভাবি কিছু হইছে?

রাগিনী-মুনতাহা তো তোর সাথে ছিলো,এখনো বাসায় যায় নি।কই মুনতাহা?

হঠাৎ করেই মনে পরলো মুনতাহার শেষ কথাটা।

রাদ-ভাবি আমি আসছি।আন্টিকে বলো টেনশন করতে না।আমি মুনতাহাকে নিয়েই ফিরবো।

বলেই বেরিয়ে গেলো রাদ।বাইক নিয়ে সেখানেই গেলো,যেখানে মুনতাহা এখনো বসে আছে।বৃষ্টি হচ্ছিলো,তার মাঝেই মুনতাহা চুপচাপ কান্না করছে।বৃষ্টির পানিতে চোখের পানিও ধুয়ে যাচ্ছিলো।

রাদ-মুন।

মুনতাহা-আমি জানতাম তুই আসবি।আমি তোকে সত্যিই অনেক ভালোবাসি রে।তোর পায়ের নিছে একটু জায়গা দে।শুধু একটু ভালোবাসিছ আমাকে।আমি আর কিছু চাইবো না রে।অনেক ভালোবাসি তোকে।

রাদ-হুমম আই লাভ ইউ।

মুনতাহা জড়িয়ে ধরলো রাদকে।রাদও জড়িয়ে ধরলো।

আজ অনেকদিন পর ডায়েরী লিখতে বসলো রাগিনী।ডায়েরীর পাতায় কয়েকটা শব্দ লিখতেই পিছন থেকেই রোদ জড়িয়ে ধরলো রাগিনীকে।

রাগিনী-এরকম একটা মিষ্টি পরী আসবে আমাদের।

রোদ-হুমমম।কিন্তু রাদ কোথায়?

রাগিনী-ভালোবাসার মানুষটার খুঁজে।

রোদ-মানে?

রাগিনী-সত্যিকারের সুখ যেখানে আছে সেখানেই রাদ আছে,মুনতাহার কাছে।

রোদ-তাহলে পেয়ে গেলো মুনতাহা রাদকে।

রাগিনী-আমি জানতাম ও পারবে।

রোদ-তাহলে আগামী সকালে নতুন সূর্য উদিত হবে আর সবার জীবনেও নতুন রং ছড়াবে।

রাগিনী-সূর্য আর রশ্মি কল দিছিলো।খুব খুশি হয় কথাটা শুনে।আমার মিষ্টি পরীটা আসতে চলছে।

রোদ-এ্যা শুধু তোমার?

রাগিনী-হ্যা আমার।

রোদ-না আমাদের।

রাগিনী-না আমার।

রোদ-একদম না।

মিষ্টি মিষ্টি ঝড়গার মাঝে তাহলে কেটে যাক সময়।এভাবেই পূর্ণতা পেয়ে যাক সবার প্রথম ভালোবাসা,পেয়ে যাক তাদের ভালোবাসার মানুষকে।

সমাপ্ত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে