প্রথমদেখায়ভালোবাসা পার্ট ০৯

0
3265

প্রথমদেখায়ভালোবাসা পার্ট ০৯
#jannatul_ferdous

আস্তে আস্তে যাওয়ার দিন ঘনিয়ে আসলো।আজকেই শুভর ফ্লাইট।এয়ারপোর্টে চুপচাপ বসে আছে নিজের গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে।আর কোনোদিনেই ফিরবে না সে দেশে।হঠাৎ করেই রিত্ত এসে শুভকে জড়িয়ে ধরলো।

শুভ-রিত্ত তুমি এখানে?

রিত্ত-ভালোবাসি যে অনেক।

শুভ-তুমি চলে যাও তোমাকে ভালোবাসার জন্য রাদ আছে তো।

রাদ-আমি ভালোবাসলেও সে যে বাসে না।

শুভ-এসব কী বলছো।

রাদ-তোমাদের মাঝে থেকে তোমাদের জীবনটা কেনো এলোমেলো করে দিবো বলো।ভালো থেকো তোমরা দুইজন।মাঝখানে তোমাদের মাঝে চলে এসেছি ক্ষমা করে দিয়ো।

রিত্ত-কেনো বলো নি আমাকে সব কিছু।

শুভ-বললে তো কষ্ট পেতে।

রিত্ত-যখন কিছু হয় নাই তখন তো বলতে পারতে।

শুভ-বলতে তো গেছিলাম কিন্তু রাদের সাথে তোমাকে দেখে……

রিত্ত-শুভ্র ভাইয়া না বললে তো জানতেও পারতাম না কিছু।

শুভ-মানে ভাইয়া।

রিত্ত-হুম তোমার লেখা চিরকুট টা ভাইয়া আমাকে আর রাদকে দেখাইছিলো।

শুভ-আচ্ছা।

রিত্ত-চলো এবার।আর যাওয়া লাগবে না কোথাও

শুভ-হুমম,পাগলীটা তো আমার-ই আছে,কার উপর অভিমান করে চলে যাবো।

রিত্ত-হুমম

ওইদিকে রাদ বের হতেই দেখলো রোদ আর রাগিনী দাঁড়িয়ে আছে।গিয়ে রোদকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো।

রোদ-কাঁদছিস কেনো?

রাদ-আমিও যে ওকে অনেক ভালোবাসতাম।কেনো আমার ভালোবাসাটা বুজলো না।

রোদ-ও তোর ছিলো না।

রাগিনী-চোখের পানি মুছো।আর ভেবো না এইসব,সময় সব ঠিক করে দিবে।

রাদ-হুম ভাবি বাসায় চলো।আমার ভালো লাগছে না এই আলোর পৃথিবীটা।

রাগিনী-ছেলেদের কে চোখের পানি মানাই না।তাই চোখ মুছো।

রোদ-চল ভাই আব্বু আম্মু অপেক্ষা করতেছে তোর জন্য।

রাদ-চল।

এরপর থেকে রাদ নিজেকে সম্পূর্ণ ভাবে রুমের মধ্যে বন্ধি করে পেললো।বাইরের আলো বাতাসে বের হতোই না।রাদের এরকম অবস্থার জন্য সবাই কষ্ট পাচ্ছিলো।বিশেষ করে অনেক দিন পর দেশে ফিরা মেয়েটা,যে কিনা ছোট বেলা থেকে ভালোবাসতো রাদকে। অনেক চেষ্টা করছিলো রাদের সাথে দেখা করতে,কিন্তু রাদ দেখা করে নি।

প্রায় ৬মাস কেটে গেলো।রাদ আগের মতই আছে।কোনো ফ্রেন্ড আসলেও বাইরে বের হয় না,কারো সাথে কথা বলে না।

৬মাস পর……..

রাগিনী-এভাবে আর কতদিন চলবে।রাদের এই অবস্থার জন্য হয়তো আমি-ই দায়ী।

রোদ-তুমি নিজেকে দোষারোপ করছো কেনো?

রাগিনী-রিত্ত তো আমার-ই বোন।আর রিত্তের জন্য মুনতাহাও তার ভালোবাসা পাচ্ছে না।

রোদ-দোষটা রিত্তের না।আর মুনতাহা তো ফিরে এসেছে মাত্র কয়েক মাস হলো।সব ঠিক হয়ে যাবে দেখবা।

রাগিনী-এখন তাহলে কিছু একটা করো।এরকম যে আর নিতে পারছি না।

রোদ-কী করবো বলো।

রাগিনী-ওকে অফিসে জয়েন করাও।কাজের মধ্যে থাকলে হয়তো এসব ভুলতে পারবে।আর মুনতাহা তো অফিসে আছেই।হয়তো মেয়েটাই পারবে ওর ভালোবাসা দিয়ে রাদকে সব ভুলিয়ে দিতে।

রোদ-হুম দেখি করে কিনা।

রাগিনী-আমি বলবো।ও আমার কথা পেলবে না।

রাদ-ভাবি ডেকেছো আমাকে??

রাগিনী-আচ্ছা তোকে তো আমি নিজের ভাই মনে করি তাহলে আমার কথা রাখবি না?

রাদ-তুমি বলো,রাখবো তো।

রাগিনী-কাল থেকে তোর ভাইয়ার সাথে অফিসে জয়েন করিছ।

রাদ-মানে কেনো?

রাগিনী-আমি বলছি তাই।

রাদ-ঠিক আছে।তোমার কথা কী আর পেলতে পারি।

পরের দিন…….

রোদ আর রাদ দুইজনেই একসাথে বের হলো অফিসের উদ্দেশ্যে।অফিসে গিয়েই মুনতাহা কে ডাকলো রোদ।

মুনতাহা-বলো ভাইয়া।

রোদ-রাদকে অফিসটা ঘুরিয়ে দেখাও আর কাজ বুজিয়ে দিবে।

মুনতাহা-ঠিক আছে রাদ সরি স্যার চলো।

রাদ-হুমম।

রাদ-মুনতাহা যেতেই রোদের ফোনে কল আসলো।ফোনের ওপাশ থেকে যা শুনলো তাতে চিন্তায় পড়ে গেলো রোদ।

রোদ-রাদ কই গেলি?তাড়াতাড়ি আয়।

রাদ-হুম বল।

রোদ-তোর ভাবি নাকি মাথা ঘুরে সিড়ি দিয়ে পড়ে গেছে আমি হাসপাতালে যাচ্ছি তুই যাবি?

রাদ-হুম যাবো।

মুনতাহা- আমিও যাবো ভাইয়া।

রোদ-না তুই এইদিকটা দেখ।রাদ তুইও থাক,মুনতাহা রাদকে সব বুজিয়ে দিস।

মুনতাহা-ঠিক আছে ভাইয়া।

রোদ চলে যেতেই রাদ মুনতাহাকে জিজ্ঞেস করলো—
তোমার পরিচয়-ই তো জানা হলো না।কে তুমি?

মুনতাহা-ছোট বেলার খেলার সাথীকে এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলি?

রাদ-মুন তুই?

মুনতাহা-হুমম।

রাদ-তুই তো আমাকে না জানিয়েই বিদেশ চলে গেছিলি।একবার বলেও গেলি না।

মুনতাহা-ওই সবের জন্য সরি।প্লিজ মাপ করে দে।

রাদ-আচ্ছা এখানে কীভাবে আসলি?

মুনতাহা-দেশে আসার পর বেশ কিছুদিন ধরেই তোর সাথে দেখা করতে চাইছিলাম।কিন্তু তুই নাকি কারো সাথেই দেখা করতি না।তাই ভাইয়া আর ভাবির সাথে দেখা করি।তারপর রোদ ভাইয়া তোকে অফিসে নিয়ে আসলো।

রাদ-জানিস আমার ভালোবাসা হারিয়ে গেছে।

মুনতাহা-আমি সব জানি।এসব ভুলে যা,ও তোর ছিলো না।

রাদ-হুমমম সেটাই।

মুনতাহা-আচ্ছা আমি শহরের তেমন কিছুই চিনি না।আমাকে নিয়ে ঘুরবি আজকে?

রাদ-ঠিক আছে বিকেলে বের হবো।আবার হাসপাতালে যেতে হবে ভাবিকে দেখতে।

মুনতাহা-হুমমম।

বিকেলে……..

চলবে………

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে