#প্রণয়_বর্ষণ(৯)
#বোরহানা_আক্তার_রেশমী
_____________
সামনে নাঈম ছিটকে পড়ে আছে অন্যদিকে রুদ্র ভ’য়ং’কর রুপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কাকে ছেড়ে কাকে সামলাবে কিছুই মাথায় আসলো না, তারওপর তার নিজের গালও জ্বালা করতেছে। ফুসকাওয়ালা ভয়ে কাছে আসছে না। স্পর্শী সব দ্বিধাদন্দ পাশে রেখে রুদ্রর হাত চেপে ধরে। কোনো রকম আ’তঙ্ক নিয়ে বলে,
‘উনাকে আর মা’র’বে’ন না প্লিজ।’
রুদ্র অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে তাকায়। রাস্তা থেকে কয়েকজন লোক দৌড়ে আসে স্পর্শীদের কাছে। নাঈমের নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়ছে। সে সময়ই হারুণ আর রিফাতও ছুটে আসে। একটা হৈ হুল্লোড় শুরু হয়ে যায়। লোকজন নাঈমকে ধরছেও না আবার রুদ্রকেও কথা শোনাতে ছাড়ছে না। স্পর্শী কাঁপা কাঁপা গলায় হারুণ আর রিফাতের উদ্দেশ্যে বলে,
‘উনাকে প্লিজ শান্ত করুন। নাঈম ভাইকে এখনই হসপিটাল না নিলে ঝামেলা বাড়বে। কিন্তু উনাকে দেখে মনে হচ্ছে না যে উনি সহজে থামবে!’
স্পর্শীর করুণ অবস্থা আর গালের হাল দেখে দুজনে মেনে নেয়। আস্তে করে বলে, ‘আপনি চিন্তা কইরেন না আমরা বস রে দেখতাছি।’
স্পর্শী কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে রুদ্রকে ছেড়ে ছুটে যায় নাঈমের কাছে। ক্ষ্যা’পা রুদ্র আরো ক্ষে’পে ওঠে। এগোতে নিলে দুপাশ থেকে জাপটে ধরে হারুণ আর রিফাত৷ হারুণ আ’তঙ্কিত কন্ঠে বলে,
‘বস ভাবি অনেক আ’তঙ্কে আছে। প্লিজ শান্ত হন। ভাবির গালের অবস্থা এমনেই খারাপ। ৫ আঙুলের ছাপ স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে।’
রুদ্র রাগী দৃষ্টিতে তাকায়। দাঁতে দাঁত চেপে বলে, ‘ছাড় হারুণ। শা’লা রে আজ কু’র’বা’নি দেবো। আমার পর্শীর দিকে নজর দিছে!’
হারুণ আর রিফাত অনেক কষ্টে টেনে সরিয়ে নিয়ে যায়। ততক্ষণে স্পর্শী নাঈমকে নিয়ে হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। অতিরিক্ত ব্লিডিং এর জন্য নাঈম সেন্স হারায়। রাগের চেয়ে বর্তমানে ভয়টাই বেশি কাজ করছে স্পর্শীর। যদি নাঈমের কিছু হয়ে যায়!
________
হসপিটালের করিডোরে বসে স্পর্শী কল দেয় নীরব আর সামিরাকে। দুজনকেই বলে দেয় একটু স্টুডেন্টের প্যারেন্টস এর সাথে কথা বলতে। আজ সে পড়াতে যাবে না। প্রচন্ড টেনশন নিয়ে দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে বসে থাকে। কি হতে কি হয়ে গেলো! নাঈম এখন ঠিক আছে। সেন্সও ফিরছে। ঘন্টাখানেক বাদেই নাঈমকে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেয় স্পর্শী। লজ্জায় কিছু বলতে পারে না৷ নাঈমকে তাদের ফ্ল্যাটে পৌছে দিয়ে নিজেও চলে আসে তানিয়ার ফ্ল্যাটে। তানিয়া এতো তাড়াতাড়ি স্পর্শীকে ফিরে আসতে দেখে বলে,
‘কিরে আজ এতো তাড়াতাড়ি!’
রান্নাঘর থেকে রেণু আপা একবার উঁকি দিয়ে পানি নিয়ে আসে। স্পর্শী ঢকঢক করে পানি শেষ করে। কাঁপা কাঁপা গলায় কিছু বলতে নিলেই তানিয়া স্পর্শীর গালে হাত দেয়। ৪ আঙুলের স্পষ্ট ছাপে কপাল কুঁচকে যায়। সন্দিহান গলায় শুধায়,
‘তোকে কেউ থা’প্প’ড় মে’রে’ছে? তোর গালে কিসের দাগ?’
স্পর্শী তানিয়ার হাত সরায়। নিজেকে সামলে বলে, ‘আজ অনেক কিছু হয়ে গেছে তানু৷ জানি না এর পরিণতি কি হবে!’
এর মধ্যেই কলিং বেল বেজে ওঠে। স্পর্শী কেঁপে ওঠে। তানিয়া একবার স্পর্শী আর একবার দরজার দিকে তাকায়। রেণু আপা ততক্ষণে চুলা বন্ধ করে স্পর্শীর কাছে এসে বসে। তানিয়া দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ে বাড়িওয়ালা আর তার বউ। তানিয়া ভ্রু কুঁচকে বলে,
‘কি হয়ছে আঙ্কেল? এভাবে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ছেন কেনো?’
বাড়িওয়ালা তেঁতেঁ ওঠে। স্পর্শীর দিকে আঙুল তুলে বলে, ‘আমার ছেলে তোমাদের এখানে থাকার ব্যবস্থা করে দিলো আর তুমি মেয়ে আমার ছেলেকেই ওই গু’ন্ডার হাতে মা’র খাওয়ালে!’
স্পর্শী মাথা নিচু করে নেয়। বাড়িওয়ালা আর তার বউ হাজারটা কথা শোনায়। স্পর্শী জবাবে কি বলবে খুঁজে পায় না। কোনো রকমে ভাঙা ভাঙা ভাবে বলে,
‘আমি দুঃখিত আঙ্কেল৷ আমি বুঝতে পারিনি এমন কিছু হয়ে যাবে।’
পাশ থেকে তানিয়া বলে, ‘ওয়েট। কি হয়ছে স্পর্শী? আর আঙ্কেল নাঈম ভাই ওদের এখানে থাকার ব্যবস্থা করেছে কথাটার মানে কি? এখানে আমি থাকি একা, হতে পারে আপনার ফ্ল্যাট কিন্তু ভাড়াটিয়া তে আমি! কাকে রাখবো না রাখবো তা আমার ব্যাপার।’
বাড়িওয়ালার বউ দাঁতে দাঁত চেপে বলে, ‘কত্ত বড় বে’য়া’দ’ব মেয়ে দেখেছো! একে তো তোমার বান্ধবীর জন্য আমাার ছেলে মা’র খেয়ে বাড়ি ফিরলো আর তুমি বড় বড় কথা বলতেছো! বলি তোমাদের কি ল’জ্জা, শ’রম নেই?’
তানিয়া কিছু বলতে নিলে আটকে দেয় স্পর্শী। রাগে তার শরীর রি রি করছে তবুও নিজেকে সামলে বলে, ‘ওর কথায় কিছু মনে করবেন না আন্টি।’
বাড়িওয়ালা বলে, ‘নাহ। তোমাদের আর রাখা যাবে না। কবে দেখা যাবে আমার ছেলেকে তোমরা মে’রেই ফেলবে।’
স্পর্শী শান্ত গলায় বলে, ‘এবারের মতো মাফ করে দিন আঙ্কেল। আর কখনো এমন হবে না। আর কখনো এমন কিছু হলে আমরাই চলে যাবো।’
রেণুও অনুরোধ করলো। দুজনের কেউই চায় না তাদের জন্য তানিয়ার থাকার জায়গাটাও চলে যাক তাই তো এমন অনুরোধ। অনেক তর্ক বিতর্কের শেষে গিয়ে বাড়িওয়ালা গম্ভীর গলায় বললেন,
‘ঠিক আছে। এবারের মতো থেকে যাও। আর কখনো ওই ছেলেকে বাড়ির আশে পাশে দেখলেও তোমাদের এক মিনিটও থাকতে দিবো না এখানে।’
আর কিছু না শুনেই চলে যায় বাড়িওয়ালা আর তার বউ। তানিয়া ফোঁস করে ওঠে। স্পর্শীর দিকে তাকিয়ে রাগী গলায় বলে, ‘রেণু আপা আর তুই মাফ কেন চাইলি ওদের কাছে? তোদের কি দোষ?’
স্পর্শী দীর্ঘশ্বাস নেয়। মাথা চেপে কিছুক্ষণ বসে থাকে। বলে, ‘দোষ আছে বলেই মাফ চাইছি। তাছাড়া আমি চাইনা আমাদের জন্য তোর থাকার জায়গাটা চলে যাক।’
‘দেখ স্পর্শী প্রথমত একটা জায়গা গেলে ঢাকা শহরে হাজারটা বাড়ি আছে আর দ্বিতীয়ত কি হয়ছে ক্লিয়ার করে বল।’
রেণু আপা আর তানিয়াকে সবটা বলে স্পর্শী। দুজনই সবটা শোনার পর কিছুক্ষণ চুপ থাকে। তানিয়া কিছু ভেবে বলে, ‘এখানে তোর দোষ কোথায়? তুই কি নাঈম ভাইকে বলেছিস তোর সাথে ফুচকা খেতে! নাকি রুদ্র ভাইকে বলেছিস নাঈম ভাইয়ের নাক ফা’টা’তে!’
স্পর্শী কিছু বলে না। তানিয়া স্পর্শীকে ঘুরিয়ে নিজের মুখোমুখি করে বসায়। গালে হাত দিয়ে আঙুলের ছাপ বসা জায়গাতে হাত ছোয়ায়। ব্যাথায় চোখ মুখ নীল হয়ে যায় স্পর্শীর। তানিয়া আস্তে করে বলে,
‘তোকে থা’প্প’ড় দিয়ে একদম ভালো কাজ করেনি বডি বিল্ডার টা। কিন্তু নাঈম ভাইয়ের কেস টা আমার কাছে গোলমেলে মনে হচ্ছে রে। ব্যাটা ফুচকা খেতে গেলো তাও তোর সাথে! আবার একা!’
স্পর্শী তানিয়ার হাত সরায়। ব্যাগ নিয়ে সোফা থেকে উঠতে উঠতে বলে, ‘তোরা জীবনেও রুদ্র ভাইয়ের ভু’ল গুলো দেখতে পাবি না। অ’ন্ধ তোরা!’
গটগট করে নিজের রুমে গিয়ে দরজা আটকে দেয়। তানিয়া আর রেণু আপা একে অপরের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
রাত ৮ টার দিকে স্পর্শীর ফোনে কল আসে রুদ্রের। স্পর্শী কল কে’টে দেয়। এভাবে হবে না বুঝে টেক্সট করে রুদ্র। স্পর্শী টেক্সটের রিপ্লাই না দিলেও মনে মনে কঠিন এক সিদ্ধান্ত নেয়। ফোন টা ফেলে রেখেই ফ্ল্যাট থেকে বের হয়। পেছন থেকে তানিয়া আর রেণু আপা ডাকলেও কানে তোলে না সে। তানিয়া আর রেণু আপাও নিচে নামে স্পর্শীর পেছন পেছন। রুদ্র প্রত্যেকবারের মতো এবারও বাইকের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। স্পর্শীকে আসতে দেখে ঠিকঠাক হয়ে দাঁড়ায়। মনে মনে কয়েকবার আওড়ায় কি বলবে না বলবে। কিন্তু স্পর্শী রুদ্রের কাছে এসেই ঠা’স করে থা’প্প’ড় বসিয়ে দেয়। হতভম্ব রুদ্র, তানিয়া, রেণু আপা। রুদ্র অবাক চোখে তাকায় স্পর্শীর দিকে। ল্যাম্পপোষ্টের আলোতে জ্বলজ্বল করে ওঠে স্পর্শীর মুখ। রুদ্রকে কিছু বলতে না দিয়েই কলার টেনে ধরে স্পর্শী। চোখে চোখ রেখে চোয়াল শক্ত করে কাঠকাঠ গলায় বলে,
‘গু’ন্ডা মা’স্তানের স্বভাব কোনোদিন ভালো হয় না। আপনিও কখনো ভালো হবেন না। পড়াশোনা শেষ করে লা’ফা’ঙ্গাদের মতো গু’ন্ডাগিরি করে বেড়াচ্ছেন। অবশ্য আপনাদের মতো ছেলের থেকে আর কি আশা করা যায়! আমার পেছনে বে’,হায়ার মতো পড়ে আছেন কেন আপনি? আমার না আপনার ছায়াটাও বি’ষের মতো লাগে। বোঝেন না আপনি? আপনার মামা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে চলে এসেছি এখন কি আপনি চাচ্ছেন এই শহরটাই ছেড়ে দেবো আমি? শান্তি তে বাঁচতেও দেবেন না আমাকে? ওহ সরি। ভুলেই গেছিলাম! আপনারা আবার আমাকে শান্তিতে দিবেন বাঁচতে? হাহা ফানি। আপনারা তো আমার শান্তির কথা শুনলেই জ্ব’লে ওঠেন। শান্তিতে বাঁচতে তো দিচ্ছেন না শান্তিতে ম’রতেও দিবেন না। ম’রে গেলে কবরে গিয়েও অশান্তি করে আসবেন। ল’জ্জা বলতে কি কিছু নাই আপনার? আরেহ এখানে তানিয়া থাকে অন্তত ওকে শান্তিতে থাকতে দেন। আর তাও নাা পারলে একটা কাজ করেন! আমাকে সোজা মে’রে ফেলেন। না থাকবে আপনাদের ঝামেলা আর না থাকবে এসব অ’শান্তি। পি’স্তল কোথায় আপনার? বের করুন।’
স্পর্শী একপ্রকার পাগলের মতো করতে থাকে। মুখে যা আসছে সব শুনিয়ে যাচ্ছে। এতক্ষণে একটা টু শব্দও করেনি রুদ্র। চুপচাপ স্পর্শীর চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলো৷ একটা সময় কলার থেকে স্পর্শীর হাত ছাড়িয়ে নেয়। চুপ করে যায় স্পর্শীও। রুদ্র একটা ছোট প্যাকেট বের করে হাতে দেয় স্পর্শীর। কথা না বাড়িয়ে শুধু ছোট্ট শব্দে ‘সরি’ বলে বাইক স্টার্ট দেয়। অদ্ভুত ভাবে ‘সরি’ বলার সময় রুদ্রের কন্ঠ কেপে ওঠে। বোকা বনে যায় স্পর্শী। সে এতো কথা শুনালো আর রুদ্র তাকে কিছু না বলেই চলে গেলো! পেছনে ফিরে তানিয়া আর রেণু আপার কাছে আসে। তানিয়া কিছু না বলে চুপচাপ ফ্ল্যাটে চলে যায়। স্পর্শী একবার পেছনে ফিরে তাকিয়ে নিজেও রেণু আপার সাথে সিড়ি ডিঙায়। ফ্ল্যাটে ঢুকে চুপচাপ সোফায় বসে। তানিয়া স্পর্শীর হাত থেকে ছোট প্যাকেটটা নিয়ে খুলে। ভেতরে মলম, ওষুধ দেখে তাচ্ছিল্যের সুরে হাসে। তারপর ওষুধ গুলো আর মলম টা মেঝেতে ফেলে দেয়। চমকে ওঠে স্পর্শী। কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,
‘কি করছিস?’
তানিয়া একদম শান্ত গলায় বলে, ‘কি আবার করছি! গু’ন্ডা মা’স্তানের দেওয়া ওষুধ, মলম তুই কি করবি? তাই ফেলে দিলাম। ভালো করেছি না?’
স্পর্শী মাথা নিচু করে নেয়। পাশ থেকে রেণু আপা বলে, ‘আপা আইজকা প্রথম তোমারে কিছু কমু! তুমি যে রুদ্র ভাইজান রে গু’ন্ডা কইলা তুমি কি জানো হেই প্রথম কবে পি’স্তল হাতে নিছিলো? হেই কবে থেইকা নিজের নামের লগে গু’ন্ডা লাগাইছে! জানো তুমি?’
স্পর্শী প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকায়। রেণু আপা ফের বলে, ‘হেইও আর ৫ টা পোলার মতোই আছিলো৷ রাগডা খালি বেশি এই আর কি। যেদিন তোমারে তোমার সৎ মা মা’ই’রা মাটিতে ফালায় রাখছিলো হেইদিন তোমারে হাসপাতাল নেওনের সময় দেখা হয় হের লগে। তোমার অবস্থা দেইখা হের কি কান্দন! তোমারে বুকে আঁকড়াইয়া হাসপাতালে নিছিলো। হেই তোমার সব রকমের চিকিস্সা করছে। কয়দিন পর যহন তোমারে তোমার সৎ মা আরেকবার মা’র’তো গেছিলো হেইদিন রুদ্র ভাই আয়ছিলো৷ ওইদিন প্রথম বারের মতো দেখছিলাম হের গু’ন্ডা রুপ। তোমার সৎ মা’রে ডরাইয়া গেছিলো বইলাই আইজ পর্যন্ত তুমি আর মা’ই’র খাওনি।’
স্পর্শী ফ্যালফ্যাল করে তাকায়। পাশ থেকে তানিয়া বলে, ‘বাদ দাও আপা। তাতে ওর কি? রুদ্র ভাই তো গু’ন্ডা মা’স্তান। উনি তো ওরে মে’রে শান্তি পাবে।’
স্পর্শী মাথা নিচু করে নেয়। তানিয়া ফের তাচ্ছিল্যের সুরে হেঁসে বলে, ‘মানলাম রুদ্র ভাই তোকে থা’প্পড় দিয়ে খুব খারাপ করেছে কিন্তু সে আজ পর্যন্ত তোকে টোকাও দিছে কখনো? সেদিন উনার কথার অবাধ্য হয়ে বি’পদে পড়েছিলি বলে রেগে একটা থা’প্প’ড় দিয়েছিলো আর আজ দিয়েছে।’
‘বিষয়টা আমাকে মা’রা দিয়ে না। উনি নাঈম ভাইকে কেন মা’র’লো? তাও না বুঝে! আমি কোন ছেলের সাথে কথা বলবো না বলবো সেইটাও কি উনার থেকে জানতে হবে?’
তানিয়া শব্দ করে হাসে। বলে, ‘আচ্ছা সাফিন, নাহিদ, নীরব এদের সাথে এতদিনের বন্ধুত্ব কখনো এদের নিয়ে কিছু বলেছে রুদ্র ভাই? বন্ধুদের সাথে মিশছিস এটা নিয়ে কিছু বলেছে রুদ্র ভাই? আচ্ছা একটা কথা বল আজ পর্যন্ত কখনো রুদ্র ভাইয়ের একটা ইচ্ছেও পূরণ করেছিস? নাকি রুদ্র ভাইয়ের কোনো কথার গুরুত্ব দিয়েছিস? মানলাম সে খুবই বা’জে তাই বলে নাঈম ভাইকে শুধু শুধু মা’রার মানুষ সে না।’
তানিয়া আর কিছু বলে না। রেণু আপাও রান্নাঘরের দিকে যায়। তানিয়া নিজের রুমের দিকে যেতে গিয়েও থেমে যায়। শান্ত গলায় বলে,
‘আজ যা করলি তার জন্য কখনো আফসোস করিস না। নিজে পুড়ে যাবি রুদ্র ভাইয়ের প্রণয়ে। আমি জানি তুই বুঝিস রুদ্র ভাইয়ের তোর প্রতি ফিলিংস গুলো কিন্তু জানিস না সেই ফিলিংস টা ঠিক কতটা প্রখর!’
স্পর্শী অনুভূতিশূণ্যের মতো চেয়ে রয়। আসলেই কি তার আফসোস করতে হবে! সে কি ভুল করেছে! রুদ্র নামক মানুষটা আসলেই ভ’য়ং’কর সাথে তার অনুভূতিগুলোও ভ’য়ং’কর। সে এই প্রণয়ে পুড়ে না যায়!…
চলবে..
(আসসালামু আলাইকুম। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)