প্রণয় পাড়ে সন্ধ পর্ব-১৫

0
552

#প্রণয়_পাড়ে_সন্ধি
|পর্ব ১৫|
লাবিবা ওয়াহিদ

সেদিনই রুমা নম্রর হাতে রিং পরিয়ে দিল। রিং-টা পরিয়ে দেওয়ার মুহূর্তে-ই শতাব্দ এসেছে। নম্র মাথা তুলে শতাব্দের দিকে তাকাতেই চোখাচোখি হয়ে গেল। নম্র লজ্জায় আবার চোখ নামিয়ে ফেলে। শতাব্দ ততক্ষণে নোমান সাহেব, সাবরিনাকে সালাম জানিয়ে তাদের পাশেই বসে। হালকা কুশল বিনিময় করে যা নম্র কান খাড়া করে শুনে নেয়। হৃদপিন্ডের সশব্দে ওঠা-নামা এখনো কমছে না তার। শতাব্দ তাকে পছন্দ করেছে বলেই কী নম্র তাকে পেতে যাচ্ছে? নাকি তারা শুরু থেকেই একে অপরের ভাগ্যে লেখা ছিল। ছিল বোধহয়, ভাগ্যে যা লেখা ছিল তাইতো হচ্ছে। চোখ বুজে শোকর আদায় করল মহান রবের নিকট। কেউ কেউ আজীবন কেঁদেও প্রিয় মানুষকে পায় না। সেদিক থেকে পৃথিবীর বুকে নম্র বড়োই ভাগ্যবতী। তবে শতাব্দের কাছে তার কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। সেগুলো না করেও থাকতে পারছে না সে। আপাতত শতাব্দকে একা পাওয়ার চেষ্টা করছে। একা পেলেই সাহস করে মনের প্রশ্নগুলো করে ফেলবে নম্র।

পাত্র-পাত্রীর উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো বিয়ে আনিশার নতুন অতিথি’রা আসার পরপরই ধুমধাম করে হবে। নম্র সবার সামনে বসতে পারছিল না বিধায় সে ভেতরে চলে আসল। আনিশা তখন ভেতর রুমেই বিশ্রাম করছিল। নম্র তার কাছেই চলে গেল। আনিশা নম্রকে দেখে মুচকি হেসে বলল,
–“আমার ভাইয়ের হবু বউ, আসো আমার পাশে এসে বসো। প্রাণভরে দেখে নেই তোমাকে, আমার ভাইয়ের পছন্দকে নতুন করে দেখি।”

এজন্যই বোধহয় আনিশা এবং শতাব্দ আপন ভাই-বোন। দুজনেই নম্রকে সবসময় লজ্জায় ফেলতে পছন্দ করে। নম্র কিছুটা তটস্থ হয়ে আনিশার দিকে এগিয়ে গেল। বসার আগেই শতাব্দ এলো আনিশার খোঁজ-খবর নিতে। কিন্তু আনিশা নম্র এবং শতাব্দকে পরখ করে মিটমিট করে হাসছে। নম্র যা বোঝার বুঝে নিল। আনিশা কী আজকে পণ করেছে নম্রকে অস্বস্তিতে ফেলার? নম্র নীরব থাকলেও শতাব্দ মুখের ওপর বলে দিল,
–“এমন ভাবে হাসছিস যেন আমি বিয়ে করে বউ ঘরে তুলেছি, কিছুক্ষণ পর বাসর! লিমিটে থাক আপু!”

এবার আনিশা সশব্দে হেসে উঠল। ভাইয়ের এই ধরণের ত্যাড়া কথা আনিশার বড্ড ভালো লাগে। এদের হাসাহাসির মাঝে নম্র যেন নেতিয়ে পড়ছে সংশয়ে। কোনোরকমে শতাব্দের দিকে চেয়ে ক্ষীণ গলায় বলল,
–“আপনার সাথে কিছু কথা ছিল!”

শতাব্দ সে-কথা শুনে তৎক্ষণাৎ আনিশার উদ্দেশ্যে গলায় গাম্ভীর্য তুলে বলে ওঠে,
–“আপু, আমার হবু বউটাকে বলে দে! বিয়ের আগে মিষ্টি মিষ্টি কথা-বার্তা আমাকে দিয়ে সম্ভব না। সে যেন এরকম কোনো আশা না রাখে। আর তাকে এও বলে দিবি বোরকা ছাড়া যেন ঘর থেকে না বের হয়। নয়তো হাতের আংটিটা খুলে ফেরত নিতে বেশি সময় লাগবে না!”

বলেই শতাব্দ হনহন করে বেরিয়ে গেল। আর নম্র বেকুব বনে দাঁড়িয়ে রইলো একই স্থানে। হঠাৎ এত পরিবর্তন? কিছুদিন আগে যে হাত ধরল, পকপক করল তখন এই পরিবর্তন কোথায় ছিল? যাক, বান্দার দেরীতে হলেও যদি সুবুদ্ধি হয় তাতে ক্ষতি নেই।

আনিশা ভাবল নম্র হয়তো শতাব্দের কথায় কষ্ট পেয়েছে। এজন্যে সে কিছুটা ব্যস্ত হয়ে ভাইয়ের কথাগুলোর ব্যাখ্যা দিতে লাগল। সঙ্গে নম্রকে কম্ফোর্ট হওয়ারও সুযোগ দিল। বিয়ে ঘাবড়ানোর মতো কিছু নয়। আনিশা বোঝাতে লাগল এমন ভাবে যেন আনিশা নম্রের আপন বড়ো বোন। কিছু কিছু সুন্দর, সুলভ সম্পর্কে রক্তের আপনজন হওয়া জরুরি নয়। রক্তের সম্পর্ক ছাড়াও পৃথিবীতে বহু সুন্দর আপনজন হয়েছে মানুষের।

এভাবেই শেষ বিকেলে নোমান সাহেব’রা বিদায় নিলেন। আরিফ সাহেব শতাব্দকে বলেছিল তাদের এগিয়ে দিতে। শতাব্দ তাই করল। পথ দিয়ে হাঁটার সময় সকলে আগে আগে চলল আর নম্রকে বোধহয় ইচ্ছাকৃত-ই শতাব্দের সাথে ছেড়ে দিল। নম্র তটস্থ হয়ে শতাব্দের পাশে হাঁটছে। তবে টু-শব্দও করছে না। শতাব্দ যা বলেছে তাই মনে-প্রাণে মানার চেষ্টা করছে না। শতাব্দও নীরব। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই শতাব্দ বলে ওঠে,
–“আগে যেমন চলাফেরায় সতর্ক ছিলে, এখন একটু বেশি সতর্ক থাকবে৷ বেকারীতে বেশি যেন না দেখি। কিছু লাগলে চঞ্চলকে দিয়ে খবর পাঠাবে, আমি বাসার নিচে এসে দিয়ে যাব। গট ইট?”

নম্র শতাব্দের দিকে না চেয়েই মাথা নাড়াল। শতাব্দ যেভাবে ইন্সট্রাকশন দিচ্ছে যেন এখনই বিয়ে করে ফেলেছে। নম্রের আর প্রশ্ন করা হলো না। অপেক্ষা করতে লাগল সুদিনের।

বাড়ি ফিরেই নিঝুম চঞ্চলকে ডেক মিটমিট করে হেসে জানালো,
–“এখন থেকে রোজ বেকারী ভাইয়ার দোকানের বার্গার খেতে পারবি চঞ্চল। বেকারী ভাইয়া আমাদের আপুর বর হতে চলেছে!”

চঞ্চল সে-কথা ঠেলে চোখ-মুখ চিকচিক করে বলল,
–“নম্র আপুর বিয়ে হবে? আমি কী পোলাও, কোরমা খাব? পোলাও, কোরমাও কী বেকারী ভাইয়াই বানাবে?”

নিঝুম হেসে দিয়ে বলল,
–“আরে না। তবে বিয়েতে অবশ্যই পোলাও-কোরমা খাবা!”
–“আম্মুকে বলব নে টিফিন বক্সটা নিয়ে যেতে। যাতে করে দুপুরে পেট পুরে খাওয়ার পর আবার রাতের জন্যেও নিয়ে আসে!”

—————————
আনিশার সাথে রোজ ঘড়ি ধরে এক দুই ঘন্টা কথা হয় নম্রের। বিয়ের ব্যাপারে, বিভিন্ন কমিউনিকেশন নিয়েও তাকে প্রায় প্রতিদিন-ই বর্ণনা করে। নম্র এতদিন তার মনের কিছু প্রশ্নগুলো করতে পারেনি, যার জন্যে সে ভেতরে ভেতরে খুব আনকম্ফোর্ট এবং কে কী বলবে, ভাববে এ নিয়ে ভীষণ ভয় পেত। হাতে গোণা কয়েকজন ছাড়া নম্র তেমন কারো সাথেই মিশতে পারে না। অল্পতেই লাজে, সংশয়ে আড়ষ্ট হয়ে পড়ে। শতাব্দের ব্যাপারটা অবশ্য ভিন্ন। সে শতাব্দ বাদে সবার সাথে স্পষ্ট গলায় কথা বলতে চায়, ভালো কমিউনিকেশন গড়তে চায়। আনিশা সবগুলো পয়েন্ট ধরে ধরেই তাকে বোঝায়। আনিশা এককালে সাইকোলজি বিভাগের স্টুডেন্ট ছিল। তবে সে কখনো সেভাবে নিজের দক্ষতার চর্চা করেনি। বিয়ের পরপর সংসারেই ধ্যান দিয়েছিল।

এক সপ্তাহ বাদে হঠাৎ-ই মাঝরাতে সাবরিনা নম্রকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। নম্র ঘুমের ঘোরে উঠে বসে মাকে জিজ্ঞেস করে,
–“কী হয়েছে?”

সাবরিনার চোখ-মুখ তখন দুশ্চিন্তায় ছোটো হয়ে গিয়েছে। ঘুমের তাড়নায় নম্র তা খেয়াল করেনি। সাবরিনা ম্লান গলায় বলে ওঠে,
–“আনিশা হসপিটালে আছে। তুই কী তোর বাবার সাথে হসপিটাল যাবি? তোর বাবা তৈরি হচ্ছে!”

ভেতরটা কেমন ধ্ক করে ওঠে নম্রের। সঙ্গে ঘুমটাও উবে গেল। কোনোরকমে বিছানা থেকে নেমে বাথরুমের দিকে যেতে যেতে বলল,
–“বাবাকে বলে দাও আমার বেশি সময় লাগবে না!”

তৈরি হতে হতে নম্র এটুকুই শুনল, আনিশা পানি খেতে উঠতে গিয়ে গিয়েছে। সেই থেকেই তার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। এখন নাকি অবস্থা বেশি ভালো না। এ কথা শুনে প্রচন্ড ভয়ে নম্রের মাথা যন্ত্রণা শুরু করেছে। আতঙ্কে জর্জরিত সে। আনিশাকে উপরওয়ালা ভালো রাখুক, এই দোয়াই সে করে যাচ্ছে বারংবার।

তৈরি হওয়া শেষ হতেই সাবরিনাও তৈরি হয়ে নিল। সে মন টেকাতে পারছে না বাসাতে। নয়তো কথা ছিল নিঝুমকে নিয়ে সে বাড়িতেই থাকবে। এখন নিঝুমকে চঞ্চলদের বাসায় রেখে তারপর হসপিটালে যাবে বলেই সিদ্ধান্ত নিল। নিঝুমকে ঘুম থেকে তুলে চঞ্চলদের বাড়িতে রেখে তিনজন রওনা দেয়। সৌভাগ্যবশত নাফিজের হসপিটালেই আনিশাকে নেওয়া হয়েছে আর নাফিজ এই মুহূর্তে হসপিটালেই আছে। নাফিজ-ই তাদের খবর দিয়েছে। পরে আরিফ সাহেবকে কল দিয়ে নোমান সাহেব ঘটনা কিছুটা হলেও জানতে পারে। আরিফ সাহেব মেয়ের চিন্তায় এখন একদমই ঠিক নেই। কারো সাথেই কথা বলার অবস্থাতে ছিল না বিধায় বন্ধুকে কল দিতে পারেনি।

হসপিটালে এসে নাফিজ সাহেবকে ছোটাছুটির মধ্যে দেখা গেল। যেহেতু সে একজন ডাক্তার, ভালো ডাক্তারদের সাথে তার যোগাযোগ ভালো। এ কারণে এই শেষ রাতে তেমন সমস্যা পোহাতে হয়নি। তবে বাদ-বাকী কিছু কাজে তাকে ছুটতে হচ্ছে।

নোমান সাহেব নাফিজের থেকে বাকিদের খবর৷ জেনে সেদিকেই ছুটেছে। অপারেশন থিয়েটারের সামনে গিয়ে দেখে আরিফ সাহেব কপালে হাত গুঁজে বসে আছে। তার থেকে কয়েক আসন পরে রুমা মুখে আঁচল চেপে কেঁদে চলেছে। রুমার পাশেই রিহাবের মা। খবর পেয়ে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসেছে। রিহাব এখন একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। সবাইকে দেখা গেলেও কোথাও শতাব্দকে দেখা যাচ্ছে না। সাবরিনা এবং নোমান সাহেব একে অপরের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করে তাদের কাছে চলে গেল। আরিফ সাহেব মাথা তুলে বন্ধুর দিকে তাকাল। নোমান সাহেব তার কাঁধে হাত চাপড়ে আশ্বস্তের সুরে বলল,
–“ইন-শা-আল্লাহ্ সব ঠিক হয়ে যাবে!”

আরিফ সাহেব অধরে অধর চেপে মাথা নাড়াল। বিপদের সময়ে বন্ধু কিংবা আপনজনদের কাছে ভরসা পেলে মন দৃঢ় হয়, কেউ একজন পাশে আছে ভেবে অশান্ত মন সামান্য হলেও শান্ত হয়। মানুষ এই সামান্য সান্ত্বনা, সাহসটুকুই বিপদের সময় খুঁজে বেড়ায়।

নোমান সাহেব আশেপাশে তাকিয়ে বলল,
–“শতাব্দ কোথায়?”
আরিফ সাহেব থমথমে সুরে বলল,
–“রক্ত লাগবে। রক্ত দিতে গিয়েছে। সিয়ামও রক্ত যোগাড় করতে গিয়েছে!”

নোমান সাহেব খুবই ক্ষীণ গলায় বলল,
–“অবস্থা সম্পর্কে ডাক্তার কিছু জানিয়েছে?”
–“না। তবে শুধু এইটুকুই বলেছে অবস্থা ক্রিটিকাল।”

এর মাঝেই আরিফ সাহেবের নজর নম্রের দিকে গেল। চোখের ইশারায় কাছে ডাকলেন নম্রকে। নম্র এগিয়ে গিয়ে সালাম দিল। আরিফ সাহেব সালামের উত্তর নিয়ে পাশে বসতে বললেন। তবে নম্র “আমি ঠিক আছি” আঙ্কেল বলেই আশেপাশে হেঁটে বেড়াল। পরে কী করবে ভেবে রুমার কাছে গিয়েছে। এর মাঝে শতাব্দ এসেছে। শতাব্দের ডান হাতের কনুইয়ের উপরের রগে ছোটো ব্যান্ডেজ। ভাইয়ের চোখ-মুখেও দুশ্চিন্তা লেপ্টে আছে। সাবরিনা নম্রকে শতাব্দের দিকে যেতে ইশারা করল। নম্র ধীর পায়ে সেদিকে এগোলো।

শতাব্দ ক্লান্ত নজরে নম্রের দিকে তাকাল। কিছুটা ভ্রু কুচকে বলল,
–“তুমি কেন আসতে গেলে?”
নম্র মিনমিন করে বলল,
–“এই অবস্থায় বাসায় থাকা আমার পক্ষে সম্ভব?”

শতাব্দ আর কিছু বলল না। এর মাঝে সিয়াম এলো। জানালো রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রয়োজন লাগলেই এনে দিবে। রিহাব কিছুটা হলেও স্বস্তি পেল। সিয়াম রিহাবের কাঁধে হাত দিয়ে বলল,
–“ভরসা রাখেন ভাই। ভালো কিছুই হবে।”

এর মাঝে একজন নার্স বেরিয়ে এলো। জানালো একজন মেয়ে এবং একজন ছেলে বাবু হয়েছে। ছেলে বাবুটার অবস্থা একটু খারাপ। তবে দুজনকেই লাইফ সাপোর্টে রাখা হবে। আর আনিশা ভালো আছে।

কয়েক ঘন্টা পেরিয়ে যায়। নম্র হসপিটালের নামাজ ঘর থেকে নামাজ পড়ে চুপ করে চেয়ারে বসে আছে। ছেলে’রা সবাই নামাজ সেরে এসেছে। শতাব্দ নম্রের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে খুবই নরম গলায় বলল,
–“চা বা কফি এনে দিব? আর কিছু খাবে?”

নম্র মাথা তুলে শতাব্দের দিকে চেয়ে মৃদু গলায় বলল,
–“কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না।”
–“না খেয়েও তো থাকতে দিব না। কিছু তো খেতেই হবে। কী খাবে বলো, এনে দিচ্ছি!”
নম্র কিছুই বলল না। শুধু বলল ব্যস্ত হওয়ার দরকার নেই। কিছু খাবে না সে। শতাব্দ চুপ করে শুনে চলে গেল। ফিরল দশ মিনিটে। ফ্লাক্সে করে চা এনেছে, সাথে কয়েকটা ওয়ানটাইম কাপ। সিয়ামের সাহায্য নিয়ে সবাইকে জোর করে খাইয়েছে। নম্রও বাদ গেল না। এক ঘন্টা পর শতাব্দ আবার নম্রের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে।

–“এবার শুধু চায়ে চলবে না। খেলে পেট ভরবে এমন কিছু বলো। এনে দিচ্ছি!”
–“এই অবস্থায় কী করে খাব?”
–“আল্লাহ তো মুখ দিয়েছে, সেটা দিয়েই খাবে!”
নম্র কিছু একটা ভাবল। বলল,
–“তাহলে আমিও আপনার সাথে যাব!”

শতাব্দ বারণ করল না। বাবার থেকে অনুমতি নিয়ে নম্রকে নিয়ে এলো। ভোরের বাতাস জানালা দিয়ে প্রবেশ করে নম্রকে ছুঁয়ে গেলেও সেরকম অনুভব করতে পারছে না। মনটা বড্ড খচখচ করছে তার। শতাব্দের সাথে হাসপাতালের ক্যান্টিন গিয়ে এলো। সেখানে টুকটাক খেয়ে চলে এলো। এসে শুনলো আনিশার লাইফ সাপোর্টে থাকা ছেলে বাবুটা আর নেই। এই খবর শুনে পরিবেশ থমথমে হয়ে এলো।

রিহাব মৃত বাচ্চার কপালে নাক ঠেকিয়ে হু হু করে কেঁদে উঠল। সকলের চোখেই কম-বেশি জল। এই মৃত প্রাণকে তো কেউ আশা করেনি। সকলে স্বপ্ন দেখল দু জোড়া ছোটো ছোটো পা সারা ঘর ছুটে বেড়াবে। উপরওয়ালা তার দেওয়া সম্পদ আবারও তার কাছে নিয়ে গেল। এই যন্ত্রণা আনিশা কী করে সহ্য করবে?

~[ক্রমশ]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে