#প্রণয়ের_রংধনু
#পর্ব-৩৪
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফারিশ মিষ্টির আসল বাবা নয় কথাটি বারংবার মাথা আসতেই, কেমন যেন মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে অনন্যার। সে অসহায় পানে তাকিয়ে বলে, ‘ ইরাশ খান এবং ইশিতা আপুর মেয়ে অনন্যা! কিন্তু ইশিতা ভাবি তো..’
অনন্যা সম্পূর্ন কথা শেষ করার পূর্বেই, সেখানে রুমা খান প্রবেশ করে বললেন, ‘ হ্যা ইশিতা বেঁচে নেই, অনন্যার জন্মের সময়ই সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে।’
‘ কিন্তু মি: ফারিশ খান কী করে মিষ্টির বাবা হয়ে উঠলেন দাদি এবং করিমা আপু বলছে ইশিতা ভাবি নাকি ইরাশ খানের প্রেমিকা, এইসব এর কি মানে কি? ‘
‘ মানে হচ্ছে, ওরা প্রেমিক- প্রেমিকা ছিলো দিদিভাই। মিষ্টি ওদের অবৈধ সন্তান। ‘
কথাটি বলেই থামলেন রুমা খান। অনন্যা থমকে গেলো একপ্রকার। করিমা হঠাৎ নিশব্দে কেঁদে ফেললো। ইশিতা নামক রমনী যথেষ্ট ভালো ছিলো, তার কথা উঠলেই সে কেঁদে ফেলে। তার আজও আফসোস হয়! ইস রে, ইশিতা ভাবি এবং ইরাশ ভাইয়ের ভালোবাসা পূর্ণতা পাইলো না কেইন? মাঝে মাঝে করিমার মনে হয় উপরওয়ালা বড় নিষ্ঠুর! নাহলে এমন বাজে ভাবে বিচ্ছেদ ও বুঝি ঘটে?
_____________
অপরদিকে, ফারিশের ফোনে থানা থেকে কল আসায় কিছুটা ভ্রু কুচকে গেলো ফারিশের। সে ফোনটা রিসিভ করলো, অপাশ থেকে একজন ভারি কন্ঠের অফিসার বললো, ‘ জ্বী! আমি ওসি সাহেব বলছি। আমি কী মি: ফারিশ খানের সাথে কথা বলছি?’
‘ যখন ফারিশ খানের নাম্বারে ফোন দিয়েছেন, তাহলে নিশ্চই তার নাম্বারে বাড়ির দাড়োয়ানের সাথে কথা বলবেন না, তাইনা?’
ফারিশের এমন জবাবে হচকিয়ে গেলেন ওসি সাহেব। তিনি গলার স্বর নরম করে বললেন,
‘ আসলে, আমি যতটুকু জানি, বড় বড় বিসনেজ ম্যানদের ফোন ধরারও আলাদা মানুষ থাকে, যেমন ধরেন ম্যানেজার, পিএ, ইত্যাদি। আমি ভাবলাম আপনার ক্ষেত্রেও বুঝি তাই হবে, আফটার অল আপনি শহরের এতো বড় একজন বিসনেজম্যান। হা হা হা। ‘
ফারিশের এই মুহুর্তে ওসি সাহেবের অযথা হাসি বিরক্ত লাগছে, তার ইচ্ছে করছে ফোন কেটে দিতে, সে ক্ষমতা তার আছে কিন্তু সে তা করলো না বরং শান্ত গলায় প্রশ্ন করলো, ‘ ফোন করার কারণ?’
‘ আসলে, আপনাকে একবার থানায় আসতে হবে। অভি শিকদার আপনার নামে একটা কেইস ফাইল করেছে, মিথ্যে মানহানির মামলা! বুঝতেই পারছেন বেশ বড় ধরণের উকিল। উনি যখন কেইস ফাইল করেছেন, সেই কেইস তো আমি হেলা- ফেলা করতে পারবো না। ‘
ফারিশ থামলো! অর্থাৎ সবকিছুই জেনে গিয়েছে কিন্তু কীভাবে জানলো? হয়তো জুঁই কিংবা শেফালি কারো মাধ্যমে জেনেছে বলে ফারিশের ধারণা। তবুও সেই বিষয়টি তেমন গুরুত্ব না দিয়ে, ফারিশ স্বাভাবিক ভাবেই বললো,
‘ আমি বিকেলের আগে আসতে পারবো না। জরুরী মিটিং আছে। ‘
‘ কিন্তু, মি: ফারিশ, আপনাকে এখুনি আসা প্রয়োজন। অভি শিকদার কেমন লোক, আপনাকে ঠিক বুঝাতে পারবো না। সে সকাল থেকে বসে আছেন। এমন ব্যাবস্হা করবে পরে, পুলিশ আপনার অফিসে যেতে বাধ্য হবে। ‘
ফারিশ বাঁকা হাসি দিয়ে বলে, ‘ তবে পাঠান পুলিশ! তবে আমি আমার জায়গায় কমেটেড! যার – তার ফালতু কেইসের জন্যে আমি এখন মিটিং ছেড়ে থানায় যেতে পারবো না। আই জাস্ট ডোন্ট লাইক দিজ। আমিও অভি শিকদারের পাওয়ার দেখতে চাই।’
বলেই কট করে ফোন কেটে দিলো। ওসি সাহেবের সামনে অভি বসে ছিলো। সে টেবিলে সামান্য আঘাত করে, মাথায় হাত দিয়ে বিড়বিড়িয়ে বলতে লাগলো,
‘ খুব তাড়াতাড়ি আপনার এই তেজ আমি শেষ করবো মি: ফারিশ খান। ওয়েট এন্ড সি। ‘
ফারিশ ফোনটা রেখেই বেডিয়ে যেতে নিলে, ইরাশ প্রশ্ন করে, ‘ ভাই কোথায় যাচ্ছো তুমি এই মুহুর্তে?’
‘ আসলে আমার অফিসে একটা জরুরী মিটিং আছে। আমি মিটিংটা সেরেই ফিরি আসবো। ডোন্ট ওয়ারি তুই বরং তোর ইশিতার সাথে আলাদা রিফ্রেশিং মোমেন্ট কাটা,ততক্ষনে আমি চট করে একবার অফিস থেকে আসি। ‘
বলেই ফারিশ বেড়িয়ে গেলো। ইরাশ ও মুচকি হেসে ইশিতার ছবি বুকে আকড়ে বসে থাকলো।
_____________
অনন্যা বাগানে দাঁড়িয়ে আনমনে হাটছে, বারান্দা থেকে মিষ্টিকে সে লক্ষ্য করছে। মিষ্টি আজ তার পোষা পাখি ময়নার সাথে গল্পের ঝুড়ি নিয়ে বসেছে। হয়তো প্রতিদিনের মতো ময়নাকে তার নাম ধরে ডাকার চেষ্টা করছে। ‘ এই ময়না? আমার নাম ধরে ডাক তো! বল মিষ্টি!’
ময়না অনন্যা দিনের মতোই বোধহয় ‘মি’ বলে থেমে যাচ্ছে কিন্তু মিষ্টি তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, ব্যাপারটা দারুন! কিন্তু অনন্যার মনে চলছে নানা কৈতহূল! কিন্তু তার এইসব প্রশ্নের জবাব দিবে কে? কেন ইরাশ এবং ইশিতার প্রেম পূর্নতা পেলো না? আজ যদি তাদের ভালোবাসা পূর্নতা পেতো, তবে আজ মিষ্টির মতো ফুটফুটে মেয়েটিও তার বাবা- মায়ের সাথে সুন্দর করে বাঁচতো! মিষ্টির জন্যে তার বড্ড খারাপ লাগে, মাকে ছাড়া ছোট থেকে বড় হচ্ছে, তাইতো অনন্যাকে আকড়ে ধরেছে সে মা হিসেবে।অনন্যা নিজেও এখন মিষ্টিকে বড্ড বেশি ভালোবেসে ফেলেছে সন্তান হিসেবে।
কিন্তু অনন্যার ধারণা ফারিশ মানুষটা যতই খারাপ হোক, মিষ্টিকে কখনো তার নিজের বাবা- মায়ের অভাব বোধ করতে দেইনি। এতোদিন এই বাড়িতে থেকেও, অনন্যা বুঝতে পারলো না যে, মিষ্টি ফারিশের নিজের মেয়ে নয়। অনন্যার ভাবনার মাঝেই, মিষ্টি উপর থেকে অনন্যাকে ‘ মা’ বলে ডাকছে। অনন্যা মুচকি হেসে হাত নাড়াচ্ছে, তখনি একজন দেহরক্ষী এসে বললো,
‘ অনন্যা মেম, স্যার বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, আপনাকে ডাকছে।’
‘ কে? মি: ফারিশ খান?’
‘ জ্বী, হ্যা। ‘
অনন্যার বেশ খটকা লাগলো, ফারিশ তাকে বাইরে ডাকবে কেন? কোন দরকার হলে তো, সে তাকে বাড়ির ভিতরে এসেই বলতে পারে। অনন্যার ভাবনার মাঝেই, দেহরক্ষী বললেন,’ কি করছেন ম্যাম? জলদি চলুন! নাহলে স্যার রাগ করবে। ‘
অনন্যা আর কিছু না ভেবে বাইরে চলে গেলো। মিষ্টি অনন্যাকে বাইরে যেতে দেখে ভাবলো, তার মা হঠাৎ বাইরে গেলো কেন? তখন প্রায় সন্ধ্যা। সেখানে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিলো। অনন্যা সেই গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বললো,
‘ আপনি আমাকে বাইরে ডাকলেন কেন?’
অনন্যার কথা শুনে, গাড়ির ভিতর থেকে একজোড়া হাত দিয়ে, অনন্যার মুখে স্প্রে করে দিলো। অনন্যা তৎক্ষনাৎ মাটিয়ে লুটিয়ে পরলো। সে গাড়ি থেকে কালো মাস্ক পরা যুবকটি অনন্যাকে কোলে তুলে, গাড়িতে শুয়িয়ে, তৎক্ষনাৎ গাড়ি ঘুড়িয়ে ফেললো। সেই যুবকটি নিজের মাস্ক খুলে, অনন্যার দিকে তাঁকিয়ে ভয়ংকরভাবে হেসে বললো, ‘ আরশ খান নিজের রিভেঞ্জ ফুলফিল করেই ছাড়ে, মিস অনন্যা!’
_____________________
অপরদিকে, থানায় মুখোমুখি বসে আছে ফারিশ এবং অভি। নিজের চেয়ারে বসে আছেন ওসি সাহেব। ফারিশ তার দেওয়া সময় অনুয়ায়ী থানায় এসে পৌঁছেছে। পরিবেশ থমথমে! অভি একের পর এক ফাইল ওসি সাহেবের হাতে দিয়ে, মৃদ্যু চিৎকার দিয়ে বলে, ‘ অফিসার! এই লোকটা যে কত বড় ফ্রড তার প্রমাণ এতে আছে। দিনের পর দিন সে একটা মিথ্যে ভিডিওকে কেন্দ্র করে, আমার বাগদত্তাকে চরিত্রহীনা প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। আমার কাছে সাক্ষ্যিও আছে। তাতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জুঁইও জড়িত আছে। আপনি তাকেও অ্যারেস্ট করবেন। কেস টা কোর্টে উঠলে আমি আমার সাক্ষ্যিকেও হাজির করবো। ‘
ফারিশ পায়ের উপর পা তুলে সমস্ত কথা শুনছে। ওসি সাহেব সমস্ত ফাইল ঘেটে বললেন,
‘ সমস্ত প্রমাণ আপনার বিরুদ্ধে মি; খান, আপনাকে অ্যারেস্ট না করে, আমাদের কোন উপায় নেই।’
ওসি সাহেবের এমন কথা শুনে, ফারিশ গালে হাত দিয়ে বলে, ‘ তো জেল খানা খুলে দিন, আমি ঢুকে যাচ্ছি। ‘
ফারিশের এমন কথা শুনে অভি ক্ষীপ্ত সুরে বলে,
‘ আপনার মতো নির্লজ্জ মানুষ, আমি একটাও দেখি নি। এতো বড় অন্যায় করেও, এতো বড় বড় কথা!’
‘ মি: অভি শিকদার ডোন্ট বি হাইপার, আসলে বেশি কথা বলা, আই জাস্ট ডোন্ট লাইক দিজ।’
অভি তৎক্ষনাৎ উঠে দাঁড়িয়ে বললো, ‘ আপনাকে এখন জেলে পাঠালাম এবং এখন আমি আমার ভালোবাসার মানুষকেও ফিরিয়ে আনবো। ‘
ফারিশ বিদ্রুপের হাসি হাসলো। অভি ভ্রু কুচকে সেদিকে তাকালো। ফারিশ বাঁকা হেসে বললো,
‘ আমার বন্দীনিকে আমার থেকে কেড়ে নেওয়া এতো সহজ নয় মি: অভি শিকদার। আপনার বাগদত্তা এখন আমার বন্দীনি সেইটা যেই ভাবেই হোক! জাস্ট ঘড়ি ধরে ৩০ মিনিট লাগবে আমার জেল থেকে বেড়োতে। ‘
বলেই জেলে ঢুকে পরলোআ ফারিশ।
চলবে কী?
#প্রণয়ের_রংধনু
#পর্ব-৩৫
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
আখিজোড়া খুলে মেলতেই, নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করলো অনন্যা। হাত- পা তার বাঁধা, মুখেও টেপ লাগানো। সে চারিদিকে তাঁকিয়ে পরিস্হিতি বুঝার চেষ্টা করছে কিন্তু সে ব্যার্থ! সে কিছুক্ষন আগের কথা করার চেষ্টা করছে তাকে ফারিশের কথা বলা বের করে নিয়ে আসা হয়েছিলো কিন্তু গাড়ির সামনে আসতেই সে অজ্ঞান হয়ে পরে, তারপর তার কিছু মনে নেই। সে মুখ দিয়ে ‘উম উম ‘ শব্দ করে যাচ্ছে এবং হাত- পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছটফট করছে, যেন কোনভাবে হাতের বাঁধন খুলে যায়, কিন্তু বরাবরের মতোই সে অসহায় হয়ে পরে! পাশের ঘর থেকে একজন যুবক এসে দরজার এসে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে, ‘ এখুনি এতো ছটফট করলে কীভাবে হবে ডার্লিং? পিকচার তো আবি বাকি হে!’
বলেই ঘর কাঁপিয়ে কুৎসিত এক হাসি উপহার দিলো আরশ! স্তম্ভিত অনন্যা! সে আখিজোড়া বড় বড় করে মেলে চেয়ে আছে তার জীবনের অনাকাঙ্ক্ষিত যুবকটির দিকে, যে যেকোন সময়ে তার বড়সড় কোন ক্ষতি সাধন করতে পারে।
_________
অপরদিকে, ফারিশকে জেলে ভিতরে ঢুকানো হলে, অভি ফারিশের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের উকালতির কালো কোর্টটি খুলে হাতে নিয়ে নেয়, তার পরনে সাদা শার্ট! সে কিছুটা তাচ্ছিল্যের সুরে লতে থাকে,
‘ আমিও দেখবো, কী করে আপনি এই জেলের ভিতর থেকে বের হন মি: ফারিশ খান। অনেক অন্যায় করেছেন আপনি দিনের পর দিন! সেই প্রতিশোধ নেওয়ার সময় এখন এসেছে। আমি এখুনি গিয়ে আপনার বাড়ি থেকে আমার অনন্যাকে নিয়ে আসবো এবং এমন ব্যাবস্হা করবো যেন আপনি কিছুতেই জেল থেকে বের হতে না পারেন। ‘
ফারিশ কোনপ্রকার জবাব না দিয়ে বাঁকা হাসি দেয়। ফারিশের এমন তাচ্ছিল্যের হাসি দেখে রাগ উঠে যায় অভির। সে ক্ষিপ্ত সুরে বলে, ‘ আপনি নিজেকে বেশ স্মার্ট মনে করেন তাইনা মি: ফারিশ খান?’
‘ উহু ভূল বলে ফেললেন অভি সাহেব! এখনো উকালতিকে বেশ কাঁচা আপনি। ‘
অভি অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো, ‘ মানে? কী বলতে চাইছেন আপনি?’
ফারিশ অভির কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে ফিসফিসিয়ে বলে, ‘ আমি নিজেকে স্মার্ট নই, ওভারস্মার্ট মনে করি! লুক! ‘
ফারিশের ইশারা শুনে অভি পিছনে তাকিয়ে দেখে, ইরাশের সাথে একজন মধ্য বয়স্ক উকিল দাঁড়িয়ে আছেন, সবথেকে বড় অবাক হয়েছে অভি শেফালিকে তাদের সাথে দেখে। অভি এগিয়ে এসে বলে, ‘ শেফালি তুমি এখানে? ‘
শেফালি আমতা আমতা করে কিছু বলার পূর্বেই, সেই ইরাশের সাথে থাকা সেই মধ্য বয়স্ক উকিলটি অফিসারের দিকে তাঁকিয়ে বললেন, ‘ আসলে মেয়েটাকে টাকা খায়িয়ে, মি: খানের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ সাঁজিয়েছেন অভি শিকদার এমনকি কলের রেকর্ডিংও জুঁই এবং তারই প্লেন! এখানে শুধু শুধু মি: খানকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার সাথে সমস্ত ডেটাও আছে। দেখুন অফিসার এবং তৎক্ষনাৎ মি: খানকে বের করুন। ‘
বলেই কয়েকটা ফাইল ওসি সাহেবের কাছে জমা রাখলেন উকিল সাহেব! অভি থমকে গিয়ে বললো, ‘ ওয়াট! এইসব কী হচ্ছে? শেফালি তুমি এইসব কি বলেছো এদের? প্লিয দেখো! তুমি তো নিজ থেকে অনন্যাকে সাহায্য করতে চেয়েছিলে তবে এখন কেন এমন করছো? তুমি কী বুঝতে পারছো না অনন্যা এই নিকৃষ্ঠতম লোকের কাছে কত বড় বিপদে আছে?’
শেফালি কোনপ্রকার জবাব দিলো না শুধুমাত্র অসহায় ভঙ্গিতে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। ওসি সাহেব উপায় না পেয়ে, ফারিশকে বের করে দিলো। ফারিশ করিমার ফোন দেখেই সেদিন আন্দাজ করতে পেরেছিলো, শেফালির সাথে অনন্যার যোগাযোগ হয়েছে, তাই শেফালি অভির কাছেই সাহায্য চাইবে এবং অভিও সবকিছু জেনে, তার নামে কেইস তৈরি করে ফেলবে, তাই আজ সকালে থানা থেকে ফোন আসায়, ফারিশ সোজা শেফালির বাসায় গিয়ে, তাকে হুমকি দিয়ে দমিয়ে ফেলে ফারিশ, যেন সে তার স্ট্যাটমেন্ট বদলায় এবং অভিকে ভূল প্রমাণিত করে! নাহলে ফারিশ তার বাবা- মায়ের বড়সড় ক্ষতি করে ফেলবে।
ফারিশ বেড়িয়ে, অভির কানে গিয়ে বলে উঠে,
‘ বলেছিলাম না? জাস্ট ৩০ মিনিট লাগবে আমার জেল থেকে বেড়োতে! ঠিক ৩০ মিনিট শেষ হওয়ার ২সেকেন্ড আগে আমি বের হয়ে একদম আপনার সামনাসামনি মি: অভি শিকদার! বললাম না আপনি বড্ড কাঁচা! ‘
অভি দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
‘ আমি জানি আপনি নিশ্চই কোনভাবে শেফালিকে ব্ল্যাকমেইল করেছেন। ‘
ফারিশের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘ ইয়েস! বিকজ এভ্রিথিং ইজ ফেয়ার ইন লাভ এন্ড ওয়ার!’
__________________
অপরদিকে অনন্যা পরেছে বেশ বিপদে, তার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে আরশ! অনন্যা মুখ দিয়ে ‘উম উম ‘ করে যাচ্ছে। আরশ দ্রুত এগিয়ে, অনন্যার মুখের বাঁধন খুলে দিয়ে বলে, ‘ উফফ সুইটহার্ট! ডোন্ট বি প্যানিকড! এমন ভাবে ছটফট করছো কেন? আজ তো তোমার সুখের দিন! আরশ খানের বেড পার্টনার হওয়ার এতো বড় সুযোগ এসেছে, তোমার কাছে। ‘
অনন্যা চিৎকার করে বলে, ‘ আমার হাতের বাঁধন খুলে দিন বলছি! অমানুষ, জা*নুয়ার কোথাকার! আপনি কী আদোও মানুষ? ‘
আরশ অনন্যার চুলের মুঠি ধরে বলে, ‘ কী বললি? আমি জা*নুয়ার? তাহলে তো সেইভাবেই কাজ করতে হয় তাইনা? অনেক অপমান সহ্য করেছি তোর! তোর জন্যে নিজের বাড়িতে, নিজের ভাইয়ের কাছে প্রতিনিয়ত হেনস্তা হতে হচ্ছে আমাকে। বলেছিলাম না? তোকে আমার বেড পার্টার করেই ছাড়বো! দেখ এখন কী করি!’
চলবে।।