প্রণয়ের রংধনু পর্ব-২১+২২

0
702

#প্রণয়ের_রংধনু ❤️‍
#পর্ব-২১
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
‘ আমি ফারিশকে অনেক ভালোবাসি, যেকোন মূল্যে আমার ফারিশকে চাই। আমি কিছুতেই এই মুহুর্তে ফিরে যেতে পারবো না বাপি। তুমি উনাদের সবকিছু বুঝিয়ে বলো। আমার পক্ষে এই বিয়ে, কোনভাবেই সম্ভব না। ‘
জুঁইয়ের বাবা মেয়ের এমন কথা শুনে তড়িৎ গতিতে, ক্ষেপে গিয়ে বললেন, ‘ এইসব কোন ধরনের ছেলেমানুষী জুঁই? উনাদের এইসময় মানা কীভাবে করবো? সমস্ত এন্গেজমেন্টের ব্যাবস্হা করা হয়ে গিয়েছে, উনারা তোর হাতের আঙ্গুলের মাপ অনুযায়ী, এন্গেজমেন্টের আংটি অবদি কিনে ফেলেছে। ‘

‘ তো? আমি কী করবো?’

‘ আমি কী করবো মানে? ভুলে যেও না জুঁই। তুমি এই বিয়ে করতে চেয়েছিলে, আমি কিন্তু প্রথম থেকে এই বিয়ের অমতেই ছিলাম, নিজের বন্ধুর ঘর ভেঙ্গে তার হবু বরের সঙ্গে সংসার করার বিরুদ্ধে আমি ছিলাম, কিন্তু তোমার জেদের কাছে হেরে, বাধ্য হয়ে সবকিছু ঠিক করেছি। এমন একটা টার্নিং পয়েন্টে এসে সব শেষ করা যায় না জুঁই। ‘

জুঁই তার বাবার কথা শুনে বিরক্তিতে ভ্রু কুচকালো। শুকনো অধরজোড়া খানিক্টা ভিজিয়ে, খানিক্টা চেঁচিয়েই উত্তর দিলো, ‘ আমি তোমাকে সেদিন ও বলছি আজও বলছি, তখন আমি অনন্যার থেকে অভিকে আলাদা করার জন্যে, বিয়েটা ঠিক করেছিলাম কিন্তু আমি কিছুতেই এখন অভিকে বিয়ে করবো না। আমি ফারিশকেই বিয়ে করবো। তুমি তাদের সাথে কথা বলে সবকিছু ডিসমিশ করে দাও।’

বলেই কট করে ফোনটা কেটে দিলো জুঁই। ফোনের অপাশ থেকে টুট..টুট শব্দ শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন জুঁইয়ের বাবা। অভির মা, তার থেকে কৈশলে খান বাড়ির ঠিকানা নিয়েছেন। সেখানে নিশ্চই তিনি কিংবা তার ছেলেকে পাঠাবেন তখন কি হবে? বেশ দুশ্চিন্তা হচ্ছে জুঁইয়ের বাবার, তিনি বসে এক কাপ গরম চা ঢগঢগ করে পান করতে লাগলেন! কি সাংঘাতিক অবস্হা! অতি দুশ্চিন্তায় গরম তিনি অনুভব করতে ব্যার্থ হলেন।জুঁইয়ের রুমের দরজা অপাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রেশমি খান। রেশমি খানের উপস্হিতি টের পেয়ে, জুঁই পিছনে ঘুড়ে বললো,

‘ খালা তুমি এখানে?’

রেশমি খান জুঁইয়ের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ তুই এখানে থাকলে কী আর ফারিশকে বিয়ে করতে পারবি? ফারিশের তো এখন আর বউ লাগবে না। পার্সোনাল সার্ভেন্ট একটা এনেছে, তাকে দিয়েই সব চাহিদা পূরণ করিয়ে নিচ্ছে। ‘

‘কিসব বলে যাচ্ছো? তুমি কি অনন্যার কথা বলছো?’

‘ তো কার কথা বলছি রে? ওই মেয়ে দিন নেই রাত নেই, সারাক্ষন ফারিশের ঘরে পরে থাকে। শাস্তি দিতে এনেছে, নাকি মস্তি করতে এনেছে সেইটাই হচ্ছে এখন কথা! সেই কথা মুখের উপর বললে, মেয়ে আবার তেড়ে আসে! সে কি সাংঘাতিক মেয়ে! রেশমি খানের মুখের উপর কথা বলে। ভেবে দেখ একবার। ‘

‘ তুমি এইসব কি বলে যাচ্ছো খালা? ফারিশ এমন ছেলে না। ‘

রেশমি খান বিপরীতে কোনপ্রকার জবাব না দিয়ে খানিক্টা হাসলেন। জুঁই ভ্রু কুচকে প্রশ্ন করলো,

‘ এইভাবে হাসছো কেন খালা?’

‘ তোর খালা এমনি এমনি তো আর এতো বড় বাড়ির বউ হয়নি। কতকিছুই তো দেখলাম রে মা। তুই ও দেখ ভালো করে। দেখলেই বুঝতে পারবি।’

রেশমি খান ইচ্ছে করেই কথাটি বললেন, কারণ সে জানে জুঁইয়ের মনের ইচ্ছে কখনো পূরণ হবেনা। তার থেকে সে এইসব জেনে যদি চলে যায়,তাহলে তা রেশমি খানের জন্যেই মঙ্গল! নাহলে ফারিশ যেমন ভয়ংকর ছেলে! জুঁইয়ের কোন কান্ডে সে রেগে গেলে, যেমন জুঁইয়ের অবস্হা খারাপ হবে তার থেকে দ্বিগুনভাবে অবস্হা খারাপ হবে রেশমি খানের।

______________________________

অনন্যা ফারিশের রুমের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখস্রীতে একরাশ ভয়ের ছাপ। হাত-পা প্রচুর কাঁপছে। কারণ তার সামনের টেবিলে থাকা ল্যাপটপে স্পষ্টভাবে দেখানো হচ্ছে, ফারিশের অনুপস্হিতে, অনন্যা ফারিশের ফোনে হাত দিয়েছিলো। ফারিশের বাড়িটির প্রতিটা কোণায় কোণায় সিসিটিভি রয়েছে। ফারিশ দিনরাত অনন্যার প্রতি নজর রেখেছে, কথাটি মাথায় আসতেই, নিজের কপাল চাপড়াতে ইচ্ছে করছে অনন্যার। এতো বড় ভুল সে কি করে করলো? তার তো জানাই ছিলো, ফারিশ তার প্রতি সর্বোক্ষন নজর রেখে চলেছে। এখন সে কি করবে? সবকিছু কীভাবে সামলাবে? অনন্যার ভাবনার মাঝেই, ফারিশ সোফায় বসে থেকে উঠে দাঁড়ালো। অত:পর অনন্যার চারিপাশে ঘুড়তে ঘুড়তে সিগারেট ধরাতে লাগলো। অনন্যা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ফারিশ সিগারেটের আগুন ধরিয়ে, অনন্যার দিকে তাঁকিয়ে বললো, ‘ সিগারেটের ছ্যাকার কথা মনে আছে মিস?’

ফারিশের কথা শুনে ভয়ে গলা শুকিয়ে আসে অনন্যার। তা দেখে বাঁকা হেসে ফারিশ বলে,

‘ আপনি এইভাবে ভয় পাচ্ছেন কেন মিস অনন্যা? আপনি তো যথেষ্ট সাহসী! নিজেকে নির্দোশ প্রমান করে, এই বাড়ি থেকে নিজেকে মুক্ত করবেন, এই স্ট্রাটাজি নিয়েই তো এই বাড়িতে এসেছিলেন তাইনা মিস? ‘

ফারিশের কথা শুনে, বেশ বড় ধাক্কা খায় অনন্যা! ফারিশ কীভাবে জানলো এইসব? ফারিশ অনন্যার দিকে এগোতে এগোতে বললো, ‘ আপনি গেমে বড্ড কাঁচা মিস অনন্যা! গেমের সর্বপ্রথম শর্ত হলো, নিজের অপরপক্ষের খেলোয়ারকে কখনোই দুর্বল ভাবতে নেই! আপনি কী ভাবেন? আপনিই একা চালাক? বাকি সবাই বোকা? আমার বাড়িতে থেকে, আপনি আমার বিরুদ্ধে নিজের স্ট্রাটাজি ফুলফিল করবেন, অথচ আমি কিচ্ছু টের পাবো না? করিমার ফোন দিয়ে, আপনি অলরেডি আপনার বন্ধুকে মেসেজও করে দিয়েছেন, যেন সে আপনাকে সাহায্য করে! বাহ, বাহ! অথচ আমি কিছুই জানতে পারবো না। কি ভাবেন আমাকে? আমি দূর্বল? এতোটা দূর্বল হলে, এতো ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে এমন একটা অবস্হানে ফারিশ খান কখনোই আসতে পারতো না। ‘

‘ আসলে…. আমি। ‘

বলেই জানালার সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আমতা আমতা করে কিছু বলতে চাইছিলো অনন্যা কিন্তু অনন্যার অধরজোড়াতে আঙ্গুল দিয়ে ‘হুশ ‘ করে থামিয়ে দেয় ফারিশ। ফারিশ ফিসফিস করে বলে,

‘ মিস অনন্যা! আপনার সবটা জুড়ে ফারিশ খানের বিচরণ। ফারিশ খানের নজর থেকে নিজেকে বাঁচানোর কোন উপায় নেই আপনার কাছে। আজীবন আমার বন্দীনী হয়েই কাটাতে হবে আপনাকে। ‘

কথাটি বলেই ফের বাঁকা হাসলো ফারিশ। ফারিশের কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে, নিজের থেকে ফারিশকে আলতো ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো অনন্যা। তিক্ত গলায় উত্তর দিলো, ‘ আজ না হয় কাল, আমি ঠিক আপনার থেকে নিজেকে মুক্ত করে ছাড়বো মি: ফারিশ খান। আপনি চাইলেও আমাকে আটকাতে পারবেন না। ‘

ফারিশ সঙ্গে সঙ্গে তালি দিয়ে বললো, ‘ ওহো! তাই? সো সুইট অফ ইউ! অনেক সাহস আপনার! বুঝলাম।এখন দয়া করে বাইরে যান। ‘

‘ মানে? ‘

‘ মানে, আজ সারারাত আপনি বাইরে গার্ডেনে কাটাবেন এইটাই আপনার শাস্তি। বললাম না মিস? ফারিশ খানের রাজ্যে পদে পদে ভয়ংকর শাস্তি অপেক্ষা করছে মিস আপনার জন্যে। ‘

বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো ফারিশ। অনন্যা অবাক হয়ে বাইরের দিকে চলে আসলো।

_____________

অনন্যার দেওয়া মেসেজটি পেয়েছে শেফালি। সে ঠিকই ভেবেছিলো অনন্যা বড় এক বিপদে রয়েছে। তাইতো সে বাধ্য হয়ে শেফালিকে মেসেজ করেছে। শেফালি বুঝতে পারছে সে বিরাট বড় অন্যায় করেছে, যার জন্যে সে অনুতপ্ত! কিন্তু সে কি করবে এখন? সে কী করে সাহায্য করবে অনন্যাকে? আজ সে নিজেও সর্বহারা! জুঁইয়ের দেওয়া হুমকি পেয়ে কিছুতেই কোনভাবে এগোতে পারছে না শেফালি কিন্তু তবুও সে মনে সাহস সংশয় করলো। তার অপরাধের একটা প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ এসেছে। সে কোন কিছু না ভেবে অভির নাম্বারে ফোন করলো, কিন্তু অপাশ থেকে নাম্বার টা বন্ধ দেখাচ্ছে! শেফালি ফোনটা রেখে হতাশার সাথে মাথায় হাত রেখে বলতে লাগলো, ‘ অভি ছাড়া কেউ এই মুহুর্তে আমাকে সাহায্য করতে পারবে না। অভির সাথে যোগাযোগ করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ! কিন্তু অভির সিম তো বন্ধ! তাহলে কী করবো? ‘

শেফালি অনেক্ষন ভাবলো তারপর আবার ফোনটা হাতে নিয়ে, জুঁই এবং তার একটা ভয়েস রেকর্ড যা তার ফোনে অনেকদিন ধরে আছে, সেইটা অভির ওয়াটসাপ নাম্বারে পাঠিয়ে দিলো। অত:পর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, ‘ আই হোপ! কালকের মধ্যে এই ভয়েস রেকর্ডটা অভি পেয়ে, আমার সাথে যোগাযোগ করবে। অভিকে সবটা বলে দিতে হবে।আমার যাই হয়ে যাক অন্তত এইসব অপরাধের বোঝা থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারবো। ‘
_______________

অক্টোবর মাস এখন। শীত শুরু হওয়ার আগে, একপ্রকার ভয়ংকর মুষূলধারা বৃষ্টি সর্বজায়গায় বিরাজমান হয়। আজও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। মুষূলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে, তার মধ্যে বজ্রপাতের শব্দও শুনা যাচ্ছে মৃদ্যুভাবে! সেই শব্দে কেঁপে কেঁপে উঠছে অনন্যা। এই তীব্র বৃষ্টিতে সেই বাগানে দাঁড়িয়ে আছে এবং খান বাড়ির দিকে তাঁকিয়ে আছে সে।মিষ্টি হয়তো তাকে খুঁজছে! মেয়েটা তাকে ছাড়া এখন খেতেই চায় না, মেয়েটা আদোও খেয়েছে তো? আচ্ছা সেই ফারিশ নামক খারুশকে বলে কী পাঁচ মিনিটের জন্যে অনুমতি নেওয়া যাবে না?যেন সে শুধু গিয়ে মিষ্টিকে খায়িয়ে চলে আসতে পারে, তারপর না হয় ভালোভাবে শাস্তিটুকু সম্পূর্ন করবে। প্রায় এক ঘন্টা হয়ে গিয়েছে সে বাইরে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। বৃষ্টির মাত্রা পূর্বের থেকে আরো দ্বিগুন হয়েছে। চারদিকে শীতল হাওয়া তীব্রভাবে বইছে। অনন্যার ছোটবেলা থেকেই বৃষ্টির মধ্যে থাকা বজ্রপাতে ভিষনভাবে এক ছোটখাটো ফোবিয়া রয়েছে। বজ্রপাতের শব্দ সে কিছুতেই সহ্য করতে পারে না। বৃষ্টি তার পছন্দ হলেও, বজ্রপাতের জন্যে সর্বক্ষন সে ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকতো! বজ্রপাতের শব্দে নিজের দুই কানে হাত দিয়ে, শীতে কেঁপে চলেছে অনন্যা। ফারিশ কফি হাতে নিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। মিষ্টি অনেক্ষন যাবত অনন্যাকে খুঁজে চলেছে! সে নাকি বায়না ধরেছে সে অনন্যাকে ছাড়া কিছুতেই রাতে খাবে না। ফারিশ বুঝতে পারছে না তার এখন কী করা উচিৎ? ফারিশ বারান্দায় থেকেই দেখতে পেলো, বাগানে দাঁড়িয়ে দু কানে হাত রেখে বাচ্চাদের মতো কেঁপে চলেছে অনন্যা। ফারিশ ভ্রু কুচকে সেদিকে তাঁকালো। অত:পর কফিটা টেবিলে রেখে, নীচে ছাতা নিয়ে বাগানে চলে আসলো। ফারিশ ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে, গম্ভীর সুরে বললো, ‘ মিস অনন্যা? আপনি এখন গিয়ে মিষ্টিকে খায়িয়ে আসুন, তারপর আবারো দাঁড়িয়ে থাকবেন। বৃষ্টির জন্যে আপনার শাস্তির এক অংশও কিন্তু কমবে না। ইউ নো না? ফাঁকিবাজি, আই জাস্ট ডোন্ট লাইক দিজ। ‘

ফারিশের কথা শুনে অনন্যা কোনপ্রকার জবাব দেয়নি। সে নিচের দিকে তাঁকিয়ে আছে, হয়তো সে খেয়ালই করেনি তার সামনে ফারিশ দাঁড়িয়ে আছে।
বৃষ্টির প্রবল শব্দে ফারিশের ধীর কন্ঠে বলা আওয়াজটুকুও অবদি হয়তো তার কানে যায়নি।ফারিশ অনন্যার দিকে এগোতেই বুঝতে পারলো, অনন্যা কি যেন বিড়বিড় করে চলেছে। অনন্যা বিড়বিড়িয়ে বলছে, ‘ বেটা লুইচ্ছা! বউ নেই তার অন্য মেয়েকে দিয়ে শার্ট পরায়। আবার এতো ঠান্ডায় আমার মতো ছোট্ট একটা মেয়েকে, এতো ঠা/ডার মধ্যে একা রেখে দিয়েছে। আমার কত ভয় করছে! মা গো! এতো অত্যাচার কেমনে করতে পারে মানুষ? আল্লাহ! তুমি কী এইসব পাষাণ খারুশদের দেখো না? এইসব ঠা/ডা এদের উপর ফেলতে পারো না? ভালো হইছে খারুশ বেটার বউ এরে ফেলে চলে গেছে। বেটা খারুশ একটা। তোর সেকেন্ড বিয়ে হবে
না কোনোদিন। আল্লাহ গো বাঁচাও! এই একটা ঠা/ডা
যদি এখন মাথার উপর পরে, তখন কি হবে? আমি তো ফিনিশড! ‘

অনন্যার এইসব কথা শুনে রাগে শরীর থরথর করে কাঁপছে ফারিশ। ফারিশ হুংকার ছেড়ে বলে,

‘ মিস অনন্যা? কিসব বলছেন আপনি? ‘

অনন্যা ফারিশের হুংকার শুনে সঙ্গে সঙ্গে কেঁপে, মাথা তুলে জবাব দেয়,

‘ মি: খারুশ খান থুরি ফারিশ খান ! আপনি এখানে?’

তখনি বিরাট বড় বজ্রপাত হয়! সেই শব্দে ‘মাগো’ বলে ফারিশকে জড়িয়ে ধরে ভয়ে কাঁপতে থাকে অনন্যা। নিজের বারান্দা থেকে এমন দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায় জুঁই!

শব্দসংখ্যা- ১৬০০

চলবে কি?

#প্রণয়ের_রংধনু ❤️‍
#পর্ব- ২২
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
অনন্যা ফারিশকে জড়িয়ে, তার শার্ট খামচে ধরে রেখেছে। ভয়ে দাঁতের কিড়মিড় শব্দ কানে আসছে ফারিশের। অনন্যার অসম্ভব কাঁপুনি,ফারিশের বুকেও উত্তালের স্রোত বয়েই দিচ্ছে! ফারিশের বুকে ঘাপটি মেরে রয়েছে অনন্যা। ফারিশের কী হলো কে জানে? সে অনন্যাকে সামলাতে, তার হাত অনন্যার মাথায় রেখে, শান্ত গলায় ফিসফিসিয়ে বললো,
‘ জাস্ট কাম ডাউন! প্লিয! জাস্ট চিল! কিচ্ছু হবেনা আপনার। আমি আছি তো। ‘
অনন্যা ফারিশের কথায় বোধহয় কিছুটা হলেও ভরসা পেলো, সে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করতে লাগলো। ফারিশ বুঝতে পারছে তার বুকে এক ঝড় বইছে, কিন্তু সেই ঝড় কিসের ইংগিত দিচ্ছে তাকে?
বাগানে অনন্যা এবং ফারিশের এমন ঘনিষ্ঠতা সবকিছুই বারান্দা থেকে দেখে যাচ্ছে জুঁই। একরাশ ক্ষোভ তার মস্তিষ্কে এসে হানা দিচ্ছে, তবুও সে নিজেকে সামলে রেখেছে। এমন দৃশ্য দেখে সে এখন প্রায় নিশ্চিত তার খালা তাকে ভুল কিছু বলেনি বরং ঠিক কথাই বলেছে। অনন্যাকে শুধু ফারিশ শাস্তি দিতে আনেনি বরং তাকে দিয়ে নিজের চাহিদাও পূরণ করছে। অনন্যা যখন বুঝতে পারে, সে ভয়ের মধ্যে ফারিশকে জড়িয়ে ধরেছে, তখনি সে তৎক্ষনাৎ ফারিশের বুক থেকে সরে এসে, মাথা নিচু করে আমতা আমতা করে বলে, ‘ আসলে..আমি.. ভুলে….’
অনন্যার কথা শেষ হওয়ার পূর্বে, ফারিশ অনন্যাকে থামিয়ে, নিজের গাঁয়ে থাকা জ্যাকেট টা অনন্যার গাঁয়ে জড়িয়ে দিয়ে, সঙ্গে সঙ্গে অন্য দিকে ঘুড়ে তাঁকালো। অনন্যা বুঝতে পারছে না তাকে এইভাবে কেন জ্যাকেট জড়িয়ে দিলো ফারিশ? ফারিশ অন্য দিকে ঘুড়েই গলায় কিছুটা অস্বস্হি নিয়ে বললো,

‘ ভিজে একাকার হয়ে গেছেন আপনি! ঘরে গিয়ে নিজের পোষাক পাল্টে নিন। তাছাড়া প্রচুর বজ্রপাত হচ্ছে, জায়গাটা সেফ নয়। আজকের জন্যে এতটুকুই যথেষ্ট! ‘

ফারিশের কথা শুনে নিজের দিকে ভালো করে তাঁকায় অনন্যা। সে সাদা রংয়ের সেলোয়ার কামিজ পরেছিলো, ভিজে যাওয়ায়, পোষাকটি তার শরীরের সঙ্গে একদম লেপ্টে গিয়েছে। লেপ্টে যাওয়ার ফলে, বেশ বাজে দেখাচ্ছে! শরীরের কিছু অংশ দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। অনন্যা ভালো করে জ্যাকেটটা গাঁয়ে জড়িয়ে নেয়, অত:পর লজ্জায় দ্রুত সে দৌড়ে চলে যেতে নিলে, বাগানের কিছু অংশ পিচ্ছিল হওয়ায়, সে পরে যেতে নিয়েছিলো কিন্তু পিছন থেকে ফারিশ শক্ত করে অনন্যাকে আকড়ে ধরে বলে,

‘ আর ইউ ওকে? বৃষ্টির সময় এইভাবে দৌড়ায় কেউ? এখুনি তো পরে যেতেন। ‘

অনন্যাকে নিজে সামলে নিয়ে, ফারিশের থেকে দূরে সরে গিয়ে, নিচু গলায় বলে, ‘ আমার জন্যে তো আপনিও ভিজে গেলেন। আপনিও দ্রুত ঘরে গিয়ে, চেঞ্জ করে নিয়েন। ‘

অনন্যা কথাটি বলেই, বাড়ির দিকে চলে গেলো! ফারিশ সেখানে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো! অনন্যার বলা কথাটি তার কাছে অদ্ভুদ ঠাওড়ালো তবুও সে ছাতা টা হাতে নিয়ে বাড়ির দিকে পা বাড়ালো। অনন্যা নিজের রুমে দৌড়ে এসে জোড়ে জোড়ে নি:শ্বাস নিলো। তার কেমন যেনো লজ্জা লাগছে, সে কি করে পারলো বেহায়ার মতো ভেজা শরীরে ফারিশ নামক খারুশকে জড়িয়ে ধরতে? আবার সে কীভাবে দরদ দেখিয়ে বললো, যেন ফারিশ নামক খারুশও ঘরে নিয়ে গিয়ে পোষাক বদলে নেয় অথচ সে এমন করলো কেন? তার ভাষ্যমতে এমন নির্দয়, কঠোর মানুষের প্রতি কোনপ্রকার দরদ দেখানো দন্ডনীয় অপরাধের মধ্যে পরে এবং এই অপরাধ যদি আইনে পাশ হয়ে যেতো, তবে এখন সে জেলে বসে বসে শক্ত রুটি খেতো। সবকিছু অনন্যার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। মস্তিষ্ক কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। সে আর কিছু ভাবতে পারলো না, পোষাক হাতে নিয়ে বাথরুমে পোষাক বদলাতে চলে গেলো।

_____________________

ফারিশ তার রুমে আসতেই দেখতে পেলো জুঁই তার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ফারিশ ভ্রু কুচকে প্রশ্ন করলো,

‘ তুমি এইসময়ে এখানে কী করছো?’

‘ ওহ আচ্ছা! এইসময়ে অনন্যা থাকলে বুঝি ভালো হতো?’

জুঁইয়ের এমন কথা শুনে ফারিশ একপ্রকার তেড়ে গিয়ে চেঁচিয়ে বলে, ‘ কিসব যাতা বলে যাচ্ছো তুমি? তুমি কী একবারও ভেবে দেখেছো জুঁই? তুমি কার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছো?’

জুঁই কিছুটা তাচ্ছিল্য করেই হেসেই বললো, ‘ হ্যা হ্যা জানি! আগেই বলতে পারতে ফারিশ! তোমার পার্সোনাল সার্ভেন্ট নয় রক্ষিতা লাগবে! তাহলে অন্তত অনন্যার থেকে বেটার কাউকে হাইয়ার করতাম! অনন্যার মধ্যে এমন কী কি দেখলে?’

ফারিশ নিজের হাত উঁচিয়ে হুংকার ছেড়ে বলে, ‘ নাও জাস্ট স্টপ জুঁই! তুমি কিন্তু মাত্রাধিক করে ফেলছো!’

ফারিশের সেই হাতটি তৎক্ষনাৎ ধরে ফেলে, উত্তেজিত গলায় জুঁই বলতে থাকে, ‘ কি করবে না থামলে? তুমি কী করে ভুলে গেলে? আমি তোমায় সাহায্য করবো বলে, অনন্যাকে ঠকিয়েছি। অভির সাথে মিথ্যে প্রেমের নাটক করেছি। আমি কিন্তু চাইলেই……’

জুঁই সম্পূর্ণ কথা বলতে চাইলো কিন্তু পারলো না, তার পূর্বেই ফারিশ তৎক্ষনাৎ ভ্রু কুচকে বলে, ‘ তুমি কী কোনভাবে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছো বা থ্রেট করছো? তুমি ব্ড্ড বোকা জুঁই, রেশমি খানও অব্দি জানে, আমার জাস্ট ৩০ মিনিট, জাস্ট অনলি থার্টি মিনিটস লাগবে তোমাকে গাঁয়েব করে দিতে, আর আমি ঠিক যা বলি, তাই করি,আশা করি তুমি বুঝতে পেরেছো। ‘

জুঁই ফারিশের কথা শুনে কিছুটা দমে গিয়ে দুই হাত দিয়ে ফারিশের হাত আকড়ে ধরে, নিচু গলায় বলে,
‘সবকিছু করেছি তোমার জন্যে অথচ তুমি কী করলে? আমাকে ফেলে, ওই অনন্যার কাছে চলে যাচ্ছো? ওর মধ্যে এমন কী আছে যা আমার মধ্যে নেই। একবার আমার কাছে তুমি কিছু চেয়ো দেখো, আমি তোমায় সবটা বিলিয়ে দিবো। আমি তোমায় অনেক ভালোবাসি। তবুও তুমি ওই রক্ষিতার কাছে যেও না। ‘

ফারিশ জুঁইয়ের কথা শুনে বিরক্ত এবং তার সঙ্গে প্রচুর রেগেও গেলো তবুও নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রেখে, জুঁইয়ের কানে ফিসফিসিয়ে বললো,

‘ তোমার কাছে ভার্জিনিটি নেই, যা মিস অনন্যার কাছে আছে। তাইতো বারবার তোমাকে রেখে, উনার কাছে যাই। ইউ নো না? ফ্রেশ সবকিছুই আমার ভালো লাগে, বাট কারো ইউজড করা জিনিস আবারোও ইউজ করা, আই জাস্ট ডোন্ট লাইক দিজ! আই থিংক ইউ গট দ্যা কনটেক্স! ‘

বলেই জুঁইয়ের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে, রুমে ঢুকে জুঁইয়ের মুখের সামনে দরজা লাগিয়ে দিলো ফারিশ। তাতে ক্ষীন্ন কেঁপে উঠলো জুঁই! তার বলার ভাষা নেই! ফারিশ তার অতীত সম্পর্কে খুব ভালো করেই অবগত, তা বুঝতে বেশিক্ষন লাগলো না জুঁইয়ের।
_________________

অনন্যা ভাত মেখে মিষ্টিকে খায়িয়ে দিচ্ছে এবং রুমা খান মিষ্টিকে গল্প শুনাচ্ছে। ফারিশ মিষ্টিকে একঝলক দেখতে, মিষ্টির রুমে এসেছিলো কিন্তু এমন দৃশ্য দেখে সে দাঁড়িয়ে যায় কিন্তু মিষ্টি ঠিক খেয়াল করে ফারিশকে। মিষ্টি হাক ছেড়ে ডাকে,

‘ বাপি এসো! তুমি বাইরে দাঁড়িয়ে আছো কেন?’

ফারিশকে দেখে কিছুটা নড়েচড়ে বসলো অনন্যা। তার এখনো লজ্জা লাগছে! ফারিশও ঘরে ঢুকে আমতা আমতা গলায় বললো, ‘ মা! তুমি খেয়ো নাও। তারপর আমি এবং তুমি অনেকক্ষন গল্প করবো। আসলে দাদি তোমার কিছু মেডিসিন দরকার ছিলো না? আমি আনিয়ে রেখেছি তোমার ঘরে। ‘

রুমা খান ‘ আচ্ছা ‘ বলে একপলক অনন্যার দিকে তাঁকালো এবং আরেকবার ফারিশের দিকে তাঁকালো! আজ ফারিশ কিংবা অনন্যা এক-অপরের প্রতি কোন রাগ-ক্ষোভ নিয়ে তাঁকাচ্ছে না বরং যখনই চোখাচোখি হচ্ছে দুজনেই যেন অস্বস্হিতে পরে যাচ্ছে। ব্যাপারটা কি আসলে বুঝতে পারছে না রুমা খান তবে তার বেশ মজা লাগছে বিষয়টি! বিশেষ করে আজ তাকে অনন্যাকে অদ্ভুদ সুন্দরী এক রমনী মনে হচ্ছে। অনন্যার লজ্জায় গালে কেমন লাল আভার রেশ দেখা দিচ্ছে! অসম্ভব সুন্দর!তিনি সামান্য হেসে বললেন, ‘ ফারিশ তুমি কি আরো কিছু বলবে?’

‘ না। আচ্ছা আমি যাচ্ছি, তাহলে। আমার কয়েকটা ফাইলস চেক করতে হবে। ‘

কথাটি বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে যায় ফারিশ তড়িৎগতিতে। ফারিশ চলে যেতেই হাফ ছেড়ে বাঁচে অনন্যা।

______________________

রাতে জানালার ধারে বসে বসে সেই ফুলের গাজরাটা দেখে যাচ্ছে অভি। গাজরাটা দেখলে তার মনে হয়, অনন্যা এখুনি তার পাশে এসে বলবে, ‘ কি হলো? গাজরাটা পরিয়ে দাও। আমি কিন্তু তোমার পছন্দের লাল পারের, সাদা রংয়ের শাড়ি পরেছি এবং তোমার পছন্দের খোঁপাও করেছি। এখন তাড়াতাড়ি পরিয়ে যাও তো। নাহলে কিন্তু গান ধরবো না। ‘

অভি খোপাটা পরালো না। শুধু চেয়ে রইলো তার স্নিগ্ধময়ী অনন্যার দিকে। অত:পর ফিসফিস করে বললো, ‘ উহু! আজকে তোমায় গাজরা পরিয়ে দিবো না।’

‘ কেন পরিয়ে দিবে না? ওহ আচ্ছা! অন্য কারো জন্যে বুঝি নিয়ে এসেছো?

‘ একদম ভুল ভাবছো। তা হবে কেন? এমন কারো কী সাধ্য আছে বলো,যে অনন্যা হাওলাদারের জায়গা নিতে পারবে। ‘

বলেই মুচকি হাসলো অভি।

‘ তাহলে পরিয়ে দিচ্ছো না কেন?

‘ভয় লাগে, গাজরা পেয়ে যদি হারিয়ে যাও আবার! আজকাল তুমি বড্ড দুষ্টিমি করো অনন্যা। আসো আবার ফাঁকি দিয়ে চলে যাও। আজকে ফাঁকি দিও না, কিছুক্ষন থেকে যাও। আজকে তোমায় নয়ন ভরে দেখবো শুধু! অনেকদিন তোমায় দেখি না। ‘

________________________

সকালে অনন্যা রান্নাঘরে করিমার সাথে মিলে ফারিশ এবং মিষ্টির জন্যে নাস্তা বানাচ্ছিলো। মিষ্টি এসে অনন্যাকে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘ গুড মর্নিং মা।’

অনন্যার মিষ্টির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, ‘ গুড মর্নিং, সোনা। আমি তোমার জন্যে নাস্তা বানাচ্ছি। তুমি গুড গার্লের মতো টেবিলো বসো। তারপর বাপির সাথে স্কুলে যেতে হবে তাইনা?’

মিষ্টি মা দুলিয়ে টেবিলে গিয়ে বসে পরে। করিমা অনন্যাকে উদ্দেশ্য করে, ব্রেডে জেল লাগাতে লাগাতে বলে, ‘ কিন্তু আফা! স্যার তো বাড়িতে নাই। ভোরের একডা কামের লেইগা বাইর হইছে। ‘

‘ কি বলো? কখন আমি তো জানিনা। ‘

‘ কি জানি কম্পানির সমস্যা। অনেক তাড়াহুরা নিয়ে বাইর হইছে। ‘

‘ আচ্ছা, তাহলে আমি উনার জন্যে পরে বানাবো নাস্তা। বাসি জিনিশ তো উনি কিছুতেই খান না। সবকিছু উনার ফ্রেশ লাগে। ‘

কথাটি বলেই নিজের মাথার উড়নাটা ভালো করে টেনে, রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে জুঁইয়ের সামনে পরলো
অনন্যা। অনন্যাকে দেখে জুঁই তাচ্ছিল্যে করে বললো,

‘ কি রে? কোথায় যাচ্ছিস? রাতে ঘুম ভালো হয়েছে তো নাকি সারারাত সার্ভিস দিতে দিতেই পার হয়ে যায়?’

‘কিসব যাতা বলে যাচ্ছিস? নিজের মুখ সামলা জুঁই!
এতোবার অন্যায় করার পরেও কীভাবে আমার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিস?’

‘ওহ আচ্ছা! তাহলে একজন রক্ষিতার সামনে আমাকে কীকরে কথা বলতে হবে, তা আমাকে তুই শিখিয়ে দিবি?’

অনন্যা৷ জুঁইয়ের এমন জঘন্য কথায় রেগে গেলেও মিষ্টিকে দেখে সে থেমে যায়। অত:পর নিম্ন গলায় বলে, ‘ প্লিয থেমে যা। এখানে মিষ্টি আছে। নাহলে কিন্তু ফল খারাপ হবে।’

জুঁই অনন্যার বাহু আকড়ে ধরে ক্ষেপে গিয়ে জবাব দেয়, ‘ থামবো কেন? খারাপ করার আর কী বাকি রেখেছিস তুই? আজকে সবাইকে জানাতে হবে, তোর আসল চরিত্র টা আসলে কী। যদিও সবাই জানে, বাট তুই যে একটা চরিত্রহীনা আজকে আরো ভালো করে, সবাই জানবে। ‘

মিষ্টি টেবিল থেকে নেমে গিয়ে কোমড়ে হাত দিয়ে বলে, ‘ জুঁই আন্টি তুমি তো অনেক দুষ্টু। মিষ্টির মাকে ছেড়ে দাও। মিষ্টির মা ব্যাথা পাচ্ছে। ‘

অনন্যা জুঁইয়ের থেকে নিজেকে সরাতে চাইলে, জুঁই আরো জোড়ে আকড়ে ধরে বলে, ‘ খুব শখ না? এই শরীর দিয়ে ছেলেদের বশ করার। রক্ষিতা একটা। ‘

বলেই ধাক্কা দিয়ে অনন্যাকে সরিয়ে দেয় সে। জুঁইয়ের ধাক্কাতে অনন্যা পরে যেতে নিলে, পিছন থেকে তাকে আকড়ে ধরে কেউ। জুঁই তাকে দেখে আমতা আমতা করে বলে, ‘ অভি তুমি?’
চলবে কী?
শব্দসংখ্যা-১৬০০

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে