পুরোনো_ভালোবাসা
পার্ট: ১২
__আনিকা আর নিশু ডাক্তার দেখিয়ে বসে আছে রিপটের জন্য।ডাক্তার অনেক গুলি টেস্ট দিয়েছে। টেস্ট গুলো করে রিপটের জন্য অপেক্ষা করছে।
নিশু -যদি রিপটে খারাপ কিছু হয় তাহলে কি হবে বলো তো।আমি নিজের জন্য কিছু ভাবছিনা।ভাবছি অনিকের কথা।
__ভাবী তোমার ফোন ভাজতেছে। আনিকা কথায় নিশু বললো।
দেখছো বলতে না বলতেই তোমার ভাইয়ার ফোন চলে আসছে। ও অফিসে আছে ঠিকি কিন্তু মন পড়ে আছে এখানে।
নিশু-হুম বলো?
অনিক – রিপট পেয়েছো?
নিশু -এখনো পাই নাই। পেলে তোমাকে ফোন দিবো।তুমি চিন্তা করছো কেন? আমার কিচ্ছু হবে না।
অনিক -ঠিক আছে আমি চিন্তা করবোনা। পাশের বাড়ির রিনা ভাবীর হাসবেন্ডকে বলবো তোমার জন্য চিন্তা করতে।এইভার খুশিতো?
নিশু -অনিক তুমিও না।পাগল একটা।এখন রাখি বাসায় গিয়ে তোমাকে ফোন দিবো।
__একজন লোক এসে বলে গেলো রিপট এসে গেছে। আপনারা একজন গিয়ে নিয়ে আসুন।
আনিকা-ভাবী তুমি বসো আমি নিয়ে আসছি।
কথাটা বলেই আনিকা রিপট আনতে গেলো।
__একটু পর আনিকা ফিরে এসে নিশুকে জড়িয়ে ধরে বললো congratulations ভাবী।
নিশু অবাক হয়ে বললো কি হয়েছে? তুমি এইরকম করছো কেন?
আনিকা- ভাবী জানো আমি না ফুফু হতে যাচ্ছি।
নিশু -আনিকার কথা শুনে নিশু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কি বলবে বুজতে পারছেনা
আনিকা -ভাবী তুমি খুশি হও নাই?
নিশু-আমি খুশি হয়েছি কিনা তা পরের কথা,তোমার ভাইয়া যদি রাগ করে? তোমার ভাইয়া বলেছিল তার পড়ালেখা শেষ করে বেবি নিবে।
আনিকা -ভাবী তুমি তো pregnant হয়েছো ৩ মাস চলতেছে।তুমি একটুও বুজতে পারো নাই?
নিশু-হ্যা কয়দিন থেকে শরীর টা ভালো লাগছিলোনা।কিন্তু বুজতে পারি নাই। আনিকা! তোমাকে একটা কথা বলবো রাখবে?
আনিকা -বলো কি কথা?
নিশু- বাসার কাউকে এখন কিছু বলো না।তোমার ভাইয়াকেও না।
আনিকা-কি বলো এইরকম একটা খুশির খবর কাউকে বলবো না, কিন্তু কেন?
নিশু-৬ দিন পর অনিকের জন্মদিন। সবাইকে সেই দিন সারপ্রাইজ দিবো।প্লিজ তুমি আগে থেকে কিছু বলো না।
আনিকা-ঠিক আছে। তোমার কথায় রাখলাম।
__নিশু বাসায় আসার আগেই অনিক বাসায় এসে বসে আছে।নিশু হাসি দিয়ে বললো আরে তুমি এতো তাড়াতাড়ি চলে আসছো।
অনিক -হুম চলে আসছি।তোমার রিপটে কি আসছে?
নিশু-এইজন্য তুমি অফিস থেকে চলে আসছো?
এতো পাগলামি কেন করো।
অনিক-তোমাকে আমি এই গুলো কিছু জিজ্ঞাস করিনি।যা করেছি তার আনসার দাও?
নিশু-আমি একদম সুস্থ আছি।ডাক্তার বলেছে দুইদিন পর এমনি ঠিক হয়ে যাবে।
অনিক -ঠিক আছে। তোমার কথা মানলাম।
কথাটা বলেই নিশুকে জড়িয়ে ধরেছে। এমন সময় আনিকা বলে উঠলো।
আনিকা -ভাইয়া ভুলে যাসনা আমি এইখানে আছি।এইটা তোদের বেড রুম না।
নিশু -(রাগ হয়ে অনিককে ধাক্কা দিয়ে)সব কিছুতেই তোমার বাড়াবাড়ি। পাগল কথাকার।বলেই রুমে চলে গেলো।
অনিক -আনিকা তুইও না!দাড়া তোকে দেখাচ্ছি মজা।বলে আনিকার পিছন পিছন ছুটলো।
__ রেহানা বেগম এসে ভাইবোনে দুষ্টামি দেখে বললো এখনো কি তোরা ছোটো আছিস? এইরকম করছিস কেন তোরা? অনিক তুই এইদিকে আয় তোর সাথে কথা আছে।
অনিক-হুম বলো কি কথা?
রেহানা বেগম -কালতো ছেলের বাড়ির লোক আসবে ওরা বলচ্ছে একসাথে engaged করে ফেলতে।তোর বাবাও রাজি হয়ে গেছে।
অনিক-মা! তোমরা যা ভালোমনে করো।
নিশু এসে বললো মা! আমি একটা কথা বলি?
রেহানা বেগম -হ্যা বলো?
নিশু-আনিকাকে একবার জিজ্ঞাস করলে ভালো হতোনা। ও এই বিয়েতে রাজি কি না?
রেহানা বেগম-তুমি চুপ করো (ধমক দিয়ে)।আমার মেয়ে আমরা যেটা বলবো সেটাই শুনবে।
__নিশুকে মন খারাপ করে চলে যেতে দেখে অনিকও পিছন পিছন গেলো।
অনিক -নিশু! বার বার এক কথা কেন বলছো?শুধু শুধু এখন মায়ের বকা খেতে গেলে।আমি চাই না তুমি আর এই ব্যাপারে কিছু বলো।
নিশু-ঠিক আছে এখন খেতে চলো রাত অনেক হয়েছে।
তবে তোমাকে একটা কথা আমি বলতে পারি। আমার মনে হয় আনিকা এই বিয়েতে রাজি হবে না।
(কথাটা বলেই নিশু রান্নাঘরে চলে গেলো।)
__সবাই এক বসে খাওয়া খাচ্ছে।কিন্তু অনিকের মন হলো নিশু আর আনিকার দিকে।
অনিক -আনিকা! কাল তোকে ছেলেপক্ষ এসে দেখে engaged করে যাবে।এতে কি তোর কোনো আপত্তি আছে?
আনিকা -আপত্তি থাকবে কেন।তোরা যা করবি আমার ভালোর জন্যই করবি।আমার কোনো আপত্তি নাই।
__অনিক নিশুর দিকে তাকিয়ে বললো।আমার খাওয়া হয়ে গেছে আমি রুমে যাচ্ছি।একে একে সবাই চলে গেলো।আনিকা আর নিশু বসে আছে।
নিশু-এখন তো তোমার ভাইয়াকে বলতে পারতে।তুমি এই বিয়ে করতে পারবেনা।
আনিকা-ভাবী তুমি চিন্তা করোনা।বিয়েতো দূরের কথা engaged ও হবেনা।
নিশু-আমিতো কিছুই বুজতেছিনা তোমার কথা।
আনিকা -এখন কিছু বুজা লাগবেনা।তুমি রুমে যাও,ভাইয়া অপেক্ষা করছে।এমনিতেই এখন ভালোভাবে চলতে হবে।আর সবসময় আমার ভাইয়াকে নিয়ে ভালো থাকবে।যে আসছে তারও খেয়াল রাখবে।আর দাঁড়িয়ে থেকোনা রুমে যাও।
নিশু -আনিকা তুমি যেই ভাবে কথা বলছো মনে হচ্ছে আজকেই কথাও চলে যাবে।
আনিকা -আরে নাহ এমনি বললাম।
__নিশুও আর কথা না বাড়িয়ে রুমে চলে আসলো।
অনিক খাটের একপাশে বসে বসে ল্যাপটপ এ কাজ করছে।নিশুকে আসতে দেখে,
অনিক – এই তোমার আসার সময় হলো?
নিশু -তাড়াতাড়িই তো এলাম।দিন দিন তুমি কেমন যেন অবুজের মতো কথা বলছো।সরো কাল অনেক কাজ আছে সকাল সকাল উঠতে হবে,আমি এখন ঘুমাবো।বলেই নিশু শুয়ে পড়লো।
অনিক- তুমি ঘুমাবে মানে?আমি মানছি কাল অনেক কাজ।তাই বলে তুমি এখন ঘুমাবে?
নিশু-না! তোমাকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবো।তুমি যা চাচ্ছো তা কিছুই হবে না।তুমিও আর একটা কথা না বলে এখন ঘুমাও।
চলবে,,,,,