পুরোনো_ভালোবাসা
পার্ট: ১০
__রেহানা বেগম মনে মনে ভাবতেছে এরা সবাই কথায় গেলো আমাকে কিছু না বলে।আজকে সবাই আসুক তারপর এদের ১২ টা বাজাবো।যেমন বাবা তেমন তার ছেলে মেয়েরা। আমি যে তাদের মা এই কথা তাদের মনেই থাকে না।সব কিছু তাদের বাবা সাথেই শেয়ার করবে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই কলিংবেলের শব্দ শুনে দরজার দিকে এগুলো।
দরজা খুলে দেখে আনিকা আর তার বাবা দাঁড়িয়ে আছে।
রেহানা বেগম -কথায় গিয়েছিলে তোমরা? তোমার ছেলে কথায় এখনো বাড়ী এলোনা রাত তো কম হলো না।তোমরা কোথায় গিয়েছিলে রাত করে বাড়ি ফিরলে?
অনিকের বাবা-সব কথা তুমি বলবে, নাকি আমকেও কিছু বলতে দিবে?কোথায় আর যাবো তোমার গুনোধর ছেলেকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলাম।
রেহানা বেগম-কোনো কিছু হলেই আমার ছেলে।আমার ছেলে কি করেছে শুনি?
__পিছন থেকে অনিক মা বলে ডাক দিলো।রেহানা বেগম তাকিয়ে দেখে অনিক আর সাথে একটা মেয়ে।
নিশু এগিয়ে এসে রেহানা বেগম কে সালাম করলো।
আরে ও আমাকে সালাম করছে কেন? আর এই মেয়েটা কে?
তখন আনিকা বলে উঠলো, মা! ও হচ্ছে নিশিতা। তোমার ছেলের বউ।আর আমার ভাবী।
রেহানা বেগম চোখ বড় বড় করে মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললো। কার বিয়ে, কিসের বিয়ে,আমি এই বিয়ে মানি না।এখুনি এই মেয়েকে এই বাড়ী থেকে বের করে দাও।
__নিশু চুপ করে শুধু কান্না করেই যাচ্ছে।কিছু বলছেনা।
অনিক-নিশু চুপ করো কান্নাকাটি করোনা প্লিজ। সব ঠিক হয়ে যাবে।
__রেহানা বেগম চিৎকার দিয়ে বললো কিসের সব ঠিক হয়ে যাবে? কিছুই ঠিক হবে না। তুই এখুনি এই মেয়েকে এই বাড়ি থেকে বের করে দে।
__অনিকের বাবা রেহানা বেগমকে চুপ থাকতে বলে, আনিকাকে বললো নিশুকে অনিকের রুমে দিয়ে আসতে।অনিক আর রেহানা বেগম কে বললো তোমারা আমার রুমে আসো।
__অনিক তার মাকে বুজানোর চেষ্টা করছে। রেহানা বেগম কান্না করেই যাচ্ছে আর একিকথা বার বার বলছে ওই মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করেদে।না হলে আমি এই বাড়িতে থাকবোনা।
অনিকের বাবা-রেহানা! তুমি একটু চুপ করো। নিশুর বাবাকে আমি কথা দিয়ে আসছি ওনার মেয়ের কোনো কষ্ট এইখানে হবে না।ছেলে যখন বিয়ে করেই ফেলেছে শুধু শুধু লোক হাসানোর দরকার কি।মেয়েও দেখতে শুনতে ভালো।মেয়ের ফ্যামিলিও অনেক ভালো দেখেই বুজা যাচ্ছে।অনিক! এইবার তুই রুমে যা মেয়েটা উপর আজ অনেক ঝড় গেছে।
অনিক- ঠিক আছে বাবা।মা! প্লিজ তুমি আর কান্না করোনা।এই বলে অনিক তাদের রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে গেলো।গিয়ে দেখে আনিকা নিশুর সাথে কথা বলছে।কিন্তু নিশু চুপহয়ে বসে আছে দরজার দিকে তাকিয়ে। হয়তো অনিকের আসার জন্য অপেক্ষা করছে।
আনিকা -ভাইয়া! তুই এসে গেছিস। মাকে বুজাতে পেরেছিস তো?
অনিক- মা কি আর এতো সহজে বুজবে।দেখা যাক কাল কি হয়।
আনিকা-আচ্ছা তাহলে এখন আমি আসি। তোরাও ঘুমিয়ে পড়।
__আনিকা চলে গেলো তার রুমে।অনিক তার রুমের দরজাটা আটকিয়ে নিশুর পাশে এসে বসলো।অনিক জানে নিশু নিশু মনে মনে অনেক কষ্ট পাচ্ছে।কষ্ট এখন হবেই সব কিছু ছেড়ে আমার কাছে চলে এসেছে।
অনিক – আমি জানি তুমি কি ভাবছো? কেন আমি তোমাকে এই ভাবে আজই বিয়ে করলাম।
__নিশু কিছু না বলেই অনিককে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।অনিককে কি আনসার দিবে সে।
অনিক – প্লিজ নিশু এই ভাবে কেদোনা। সব ঠিক হয়ে যাবে।
নিশু- আমিও চাই সব কিছু ঠিক হয়ে যাক।
_সকাল বেলা নিশু উঠে রান্নাঘরে দিকে গেলো।সেইখানে গিয়ে দেখে রেহানা বেগম নাস্তা বানাচ্ছে।
নিশু -মা! আমি আপনাকে হেল্প করি?আমাকে দিন আমি চা টা করে ফেলি।
রেহানা বেগম – এই মেয়ে তোমাকে আমার রান্নাঘরে কে আসতে বলেছে।আসতে না আসতেই আমার সংসার নিজের হাতে নিতে চাইছো।চালাকি তো ভালোই শিখেছো।তবে এইটা শিখোনি? বেকার ছেলেরকে বিয়ে করতে নাই।আমি একটা জিনিস বুজলাম না। এতো দিন দেখে এসেছি মেয়েরা টাকা ওয়ালা ছেলেকে ছাড়া বিয়ে করে না।আর তুমি বিয়ে করেছো যে নিজের খরচ চালায় তার বাপের টাকায়।
__অনিক আর আনিকা দৌড়ে এসে দেখে নিশু কিছু বলছে না শুধু কান্না করে যাচ্ছে।
অনিক – মা! তুমি এইভাবে চিৎকার চেঁচামিচি করছো কেনো।নিশু কি করেছে।
রেহানা বেগম – আজ আমার এই দিন দেখার বাকী ছিল? বউয়ে জন্য এখন আমাকে বকাঝকা করছিস?
আনিকা -মা! ভাইয়া কখন তোমায় বকলো।ভাইয়া তো শুধু কি হয়েছে তা জানতে চাইছে এইখানে তুমি দোষের কি দেখলে??
রেহানা বেগম -তুই যে আমার মেয়ে আমার ভাবতেই অবাক লাগছে।যেমন ভাই তেমনি তার বোন।
অনিক -নিশু তুমি রুমে যাও শুধু শুধু এইখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
__নিশু কিছু না বলে রুমে গিয়ে বসে বসে কান্না করছে।অনিক নিশুর জন্য রুমে নাস্তা নিয়ে এসে বললো তুমি এখনো কান্না করছো?
এইভাবে সারাক্ষণ কান্না করলে তো তুমি অসুস্থ হয়ে যাবে।এই নাও নাস্তাটা খেয়ে নাও।
নিশু -তুমি কি কোথাও যাচ্ছো?
অনিক – দেখি একটা চাকরির ব্যবস্থা হয় কিনা।এইভাবে তো আর বসে থাকা যায় না।কিছু না করলে মা তোমাকে প্রতিটা পদে পদে কথা শুনাবে।
নিশু – অনিক! বাহিরে চাকরি পাবে বলে মনে হয় না। আমার আব্বুকে একবার বলে দেখবো?
অনিক -না নিশু! এমনেতেই ওনার কাছে ছোটো। আমি চাইনা তোমার বাবার কাছে আর ছোটো হতে।
নিশু – ঠিক আছে তোমার যা ভালো মনে হয়।তবে যেখানে যাও তাড়াতাড়ি ফেরে এসো।
অনিক – আসতে তো হবেই আমার বউকে ঘরে রেখে আমি বাহিরেকি আর থাকতে পারি?
চলবে,,,,,,,,,