পুরোনো_ভালোবাসা
পার্ট:৯
_নিশুকে আসতে দেখে অনিক হাঁসি দিয়ে নিশুকে বললো আমি জানতাম তুমি আসবে।আমি জানি আমার নিশু কখনওই আমার কথা ফেলতে পারবে না।
তোমাকে যা যা আনতে বলেছিলাম এনেছো?
নিশু-অনিক! আমরা ভুল কিছু করছিনা তো?বিয়েটা পরে করলে হতো না।কাউকে না জানিয়ে আমরা ঠিক করছি না।তুমি পাগলামি করোনা। আমি তোমাকে ছেড়ে কথাও যাবনা।
অনিক-তুমি কি বিয়ে করবে না? না করলে হয়তো আমি তোমাকে আর কখনো ফিরে পাবোনা।প্লিজ নিশু তুমি আর না করো না।
নিশু-ঠিক আছে চলো।বিয়ে করে কিন্তু আমার বাসায় আগে যাবো।তুমি আমার বাবাকে কি করে রাজি করাবে সেটা তোমার ব্যাপার।
অনিক-ঠিক আছে।আগে বিয়েটা হক। আমি সব কিছু ঠিক করে নিবো।চলো আমি সব কিছু রেডি করে রেখেছি। আমার ফ্রেন্ডরা কাজী অফিসে বসে আছে।তুমি গেলেই বিয়েটা হবে।
_নিশু আর অনিকের বিয়ে পড়াতে পড়াতে দুপুর হয়ে গেলো।এই দিকে নিশুদের বাসায় সব গেস্ট চলে এসেছে।ইয়াসমিন বেগম নিশুর বাবাকে ডেকে বললো তোমার মেয়েতো এখনো এলো না।সকালে ওকে যেতে দেওয়া তোমার একদম ঠিক হয়নি।ছেলের বাড়ির সবাই মেয়েকে খুঁজছে এখন তোমার বন্ধুকে বুজিয়ে বলো ওর কলেজ এখনো ছুটি হয় নাই।আমি একটা কিছু বুজলাম না যার সাথে নিশুর engaged সেই এলো না কেনো?নিশুর বাবা ইয়াসমিন বেগমকে বুজিয়ে বললেন ছেলের কাজ পড়ে গেছে তাই আসতে পারে নাই।বিকেলের আগেই চলে আসবে।
_নিশু অনিককে নিয়ে বাসার পথে পা বাড়ালো।সে জানে না আজ তার বাবা মা তার উপর কেমন আচরণ করবে।বাবা মা কি আমার বিয়েটা মেনে নিবে।ছোটোবেলা থেকেই বাবা আমার কোনো কিছুতেই না করে নাই। হয়তো আজও করবে না।অনিক তো আর খারাপ ছেলে না। বাবাকে সব বুজিয়ে বললে হয়তো মেনে নিবে এই সব ভাবতে ভাবতে নিশু বাসায় চলে আসলো।
__নিশু বাসায় এসে এতো গেস্ট দেখে অবাক চোখে তাকিয়ে সব দেখছে।ইয়াসমিন বেগম নিশুকে দেখে বললো এই তোর আসার সময় হল কখন থেকে সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে।অনিক দেখে নিশুর মা বললো তোর কলেজের ফ্রেন্ড নাকি?
নিশু- মা! ও হচ্ছে,,,,,,,,,
এমন সময় নিশুর বাবা এসে অনিক আর নিশুকে এক সাথে দেখে স্তব্ধ হয়ে গেলেন।আজই এই ছেলেকে সাথে নিয়ে আসতে হলো? কথা গুলো মনে মনে ভাবছে।গেস্টরা সবাই অনিক আর নিশুর দিকে তাকিয়ে আছে।সবার এমন তাকানো দেখে অনিকের দিকে তাকিয়ে বললো তুমি আমার সাথে এসো তোমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই।ইয়াসমিন তুমি নিশুকে নিয়ে রেডি করো।
নিশুর বাবা অনিককে সাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো নিশুর ভালো ফ্রেন্ড বলে।
_ইয়াসমিন বেগম নিশুকে নিয়ে গেলেন তার রুমে।খাটের উপর শাড়ী গহনা দেখে নিশু অবাক হয়ে তার মাকে বললো।মা!এই গুলো কে এনেছে?আর বাড়ীতে এতো লোক কেন?
ইয়াসমিন বেগম-ছেলের বাড়ী থেকে এনেছে।ওরা তোর বাবার বন্ধু আর তার পরিবার।ওনার ছেলের সাথেই তোর engaged এখন চল।এমনিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে।ভাগ্যে ভালো ছেলে বাড়িতে আসার আগেই তুই এসে গেছিস।
নিশু-মা! কই তোমরা তো আমাকে আগে কিছু বলো নাই।আর আমি এই বিয়ে করতে পারবো না।
ইয়াসমিন বেগম -পারবিনা মানে?তোর বাবা তোর উপর কত ভরসা করে সব ঠিক করেছে আর এখন তুই কি বলছিস?আর তোর বাবার চাওয়া পাওয়া কোনো দাম না তোর কাছে?
নিশু-মা! একজন স্বামী থাকতে আরেক জনকে বিয়ে করা যায়?
ইয়াসমিন বেগম -পাগলের মতো কি বলছিস এইগুলো?আমাকে একটু বুজিয়ে বলতো।
নিশু-একটু আগে যে আমার সাথে এসেছে সে অনিক।আমার কোনো ফ্রেন্ড নয়।আজ সকালে ও আর আমি বিয়ে করেছি।
__ইয়াসমিন বেগম মেয়ের মুখে এই রকম কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারছেনা। চুপ করে খাটে বসে পড়লেন।
নিশু তার মায়ের পায়ের নিচে বসে তার মাকে জড়িয়ে কান্না করছে মা! আমি জানি তুমি অনেক কষ্ট পাইছো। আমাকে ক্ষমা করে দাও। নিশুর বাবা অনিক কে একটা রুমে বসিয়ে নিশুর মায়ের কাছে এলো নিশুর হয়েছে কিনা দেখার জন্য।মা মেয়ের এমন অবস্থা দেখে নিশুর মাকে বললো কি হয়েছে তোমাদের? নিশুকে এখনো রেডি করাও নাই কেন?
ইয়াসমিন বেগম নিশুর বাবার দিকে তাকিয়ে বললো ওদেরকে চলে যেতে বলো। আমার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।
নিশুর বাবার বুজতে আর বাকি রইলোনা।নিশুকে জড়িয়ে ধরে নিশুর বাবা বললো এই তুই কি করলি মা? আমি কি তোর খারাপ চাই বল?ছোটোবেলা থেকে তুই যেই ভাবে বলছিস সেই ভাবেই তোকে সব কিছু দেয়েছি।আজ তুই এই ভাবে তার প্রতিদান দিলি।নিশু কিছু বলছেনা শুধু কান্না করেই যাচ্ছে।
কথা গুলো বলেই নিশুর বাবা রুম থেকে বাহিরে গেল।নিশুর বাবা তার বন্ধুর কাছে গিয়ে বসে হাত ধরে বললো আমাকে তুই ক্ষমা করে দে।আমার মেয়েটা এমন কাজ করবে আমি সত্যি কিছু জানতাম না।নিশুর বাবার বন্ধু খালেক সাহেব বললেন আমি এখান থেকে সব শুনেছি।আসলে আমরা একটা বড় ভুল করতে যাচ্ছিলাম।ওরতো পচন্দের একটা ব্যাপার আছে।আমারা সেটা না জেনে বিয়েটা ঠিক করা উচিত হয় নাই।তুই সব কিছু মেনে নে।তাহলে আজ আমরা আসি।
__ সবাই চলে যাওয়ার পরে অনিক এসে নিশুর বাবাকে বললো আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।আমি চাই না নিশু আমাকে ছেড়ে অন্য কারো হয়ে যাক।আমি আপনাকে বলছি নিশুকে কখনো অযত্ন করবোনা।
__নিশুর বাবা-তোমার ফ্যামিলিকে ডাকো। আমি তাদের সাথে কথা বলতে চাই।আমার মেয়েকে তো আমি এমনি এমনি তোমার অনিশ্চিত জীবনের কাছে ছেড়ে দিতে পারিনা।
অনিক-ঠিক আছে আমি তাদেরকে আসতে বলছি।
__অনিক আনিকাকে ফোন দিয়ে সব বললো। আনিকা সব শুনে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো আমি মাকে সব বলছি।কিন্তু আমি জানিনা তোর কপালে কি আছে।তবে ভাইয়া! আমি কিন্তু অনেক খুশি।
__আনিকা তার বাবার কাছে গিয়ে অনিক আর নিশুর ব্যাপারে সব বললো। অনিকের বাবা কি বলবে বুজতে পারছেনা।অনেকক্ষণ পরে আনিকাকে বললো তোর মাকে এখন কিছু বলিসনা।আগে চল ওইখানে গিয়ে দেখি কি হয়।
_অনিকের বাবা আর আনিকা নিশুদের বাসায় এসে কলিং বেল চাপলো। কলিং বেল বাজার সাথে সাথেই নিশুর বাবা দরজা খুলে দিয়ে তাদের ভেতরে এসে বসতে বললো।
চলবে,,,,,,,,,