নীলপরী (পর্ব ০৭)
#শান্তনা_ইসলাম
·
·
·
নীল পরীর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,, নীল এখনো দুহাতে কোমর জড়িয়ে ধরে আছে,,, নীলের হাতের ছোয়া কোমড়ে
.
পেয়ে পরীর শরির কাপছে,,,,নীলের ওভাবে তাকিয়ে থাকাতে পরীর ভিষন লজ্জা লাগছে,,ও মাথা নিচু করে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে,,,নীল পরীকে কিছু বলতে যাবে তখনি
নীলের বোন নেহা চলে এসে ওদের ওমন দেখে বললো
নেহাঃঃএহম এহম,,,,এই যে এখনি এতো রোমান্স করলে হবে,,,মানুষ দেখলে কি হবে??আড়ালে গিয়ে রোমান্স করলেওতো পারেন,,,
নেহার কথা শুনে পরী ভিষন লজ্জা পেয়ে গেলো,,তাড়াতাড়ি করে নীলের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে সরে যায়,,মাথা নিচু করে চুপটি করে দাড়িয়ে আছে,,,
নীল বলে উঠলোঃঃএই তুই আসার আর সময় পেলি না??কাবাব মে হাড্ডি,,, উফ,,
নেহাঃঃ ভাইয়া তুই তো এতো বেহায়া ছিলি না,,,এতো নির্লজ্জ কবে থেকে হইলি???রোমান্স করছিস কর,, বাট এভাবে ওপেনে করতে হবে??
এবারে পরী বলে উঠলো ঃঃনা না তুমি ভুল বুঝছো,,আমি আসলে শাড়িতে বেধে পড়ে যাচ্ছিলাম,উনি আমায় ধরেছে,,পড়তে দেয়নি,,আর আমরা রোমান্স কেনো করবো বলো নেহা??আমরাতো লাভার না যে রোমান্স করতে যাবো,,,,আমরাতো খুব ভালো বন্ধু,,,,
নীলঃঃআমার বোনটা এরকমিগো,, ওর কথায় কিছু মনে করো না,,,,,নেহা তুই সবকিছু এতো নেগেটিভ নিস কেনো??মন পরিষ্কার কর,,
।
নেহাঃঃযা বাবা,এখন আমারি দোষ ধরছে,,মানছি আমি ভুল বুঝেছি,,তাহলে ভাই তুই কেনো আমায় বললি কাবাব মে হাড্ডি,,,বল বল??আর পড়ে যেতে লাগছিলো তাই বাচাইছিস মানলাম,,বাট তারপর ঐ অবস্থায় ওভাবে ভেবলাকান্তের মতো পরীর কোমড় ধরে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলি কেনো??কোনো বন্ধু কি ওভাবে বন্ধুর দিকে তাকায়??
নীলঃঃএকটা থাপ্পর দিবো,,,এতো বেশি বুঝিস কেনো তুই???আর একটা কথাও না বলে সোজা এখান থেকে বের হ,,
নেহা আর কিছু বললো না,,রাগে গজগজ করতে করতে চলে যেতে লাগলে,,
পরী পেছন থেকে ডাক দিয়ে বললোঃঃআমিও যাবো তোমার সাথে নেহা,,,,
নীল বলে উঠলো ঃঃআরে না তুমি এখানে থাকো,,আমার একটা কথা আছে,,,তুমি একটু পর,, যাবে,,,নেহা তুই যা
নেহা রাগি লুক নিয়ে চলে গেলো,,,
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
পরীঃঃকি বলবেন বলুন??এভাবে আলাদা করে কথা বললে সবাই মাইন্ড করতে পারে,,হাজার হলেও বাঙালি জাতি বলে কথা,,,পৃথিবীর এই একমাত্র বাঙালি জাতির মেন্টালিটি এরকম,,একটা ছেলের সাথে একটা মেয়েকে দেখলেই খারাপ ভাববে,,কেনো বন্ধ বা ভাই বোন ও তো হতে পারে নাকি,,,মানুষের মেন্টালিটি এরকম কেমনে হয় বুঝিনা,,,জানেন সেদিন ভাইয়ার সাথে বাজারে গেছি ওমনি ছেলেরা বাজে কমেন্ট করা শুরু করছে,করছিলো পায়ের জুতো খুলে পিটাই,,,না না এটা করলে কম শাস্তি হবে,,,এমন মানসিকতার লোকজনকে,,, ছুইপাড়ের স্পেশাল ঝাড়ু দিয়ে পেটানো উচিত,,,যতোসব,,,আচ্ছা যায় হোক,,কি বলবেন সেটা তাড়াতারি বলুনন,নিজেরা নিজেদের মতো সেভ থাকা উচিত,,,
চারটা বাজে কথা শোনার থেকে সাবধান থাকাই ভালো,,সো যা বলার বলুন,,,
নীল,,ঃঃ(চুপ)
পরীঃঃওমা সে কি কথা,,কথা বলছেন না কেননো,,চুপ কেনো??
নীলঃঃনা আসলে ভাবছি,,
পরীঃঃকি ভাবছেন??
নীলঃঃএই যে এতোক্ষণ ধরে কতো সুন্দর রচনা বললে সেটার কথায় ভাবছি,,
পরীঃঃকি আমার কথাগুলো আপনার রচনা মনে হয়ছে??যান আপনার সাথে কথা নাি,,আমি বাসায় চলে যাবো,,,(বলেই যেতে লাগলে নীল পেছন থেকে পরীর হাত চেপে ধরে,,,
পরীঃঃআহহ,,,এই কি করছেন কি হাত ছারুন বলছি,,,
পরী হাত ছাড়াতে লাগলে নীল আরো জোড়ে শক্ত করে হাত চেপে ধরে
পরীঃঃএটা কিন্তু ঠিক না,,কারো পারমিশন ছাড়া হাত ধরা ঠিক না,,
বলতেই চট করে নীল পড়ির হাত ছেরে দিয়ে বলে
ঃঃসরি
পরীঃঃহুমম,,
নীলঃঃএকটা কথা বলবো?
পরীঃঃহুম বলুন,,,
নীলঃঃনেহা তখন বললো আমি তোমার দিকে ভেবলাকান্তের মতো তাকিয়ে ছিলাম,,,কেনো চিলাম জানো??
পরীঃঃনা জানিনা,,কেনো ছিলেন??
নীলঃঃতোমারে আমি এই প্রথম শাড়ি পড়া অবস্থায় দেখে অবাক হয়ে গেছি,,,হলুদ শাড়ি,,তারসাথে তোমার ঢেউয়ের মতো কোকরানো কোমড় ছোয়া চুল,,চোখে কাজল,,ঠোটে হালকা গোলাপি রঙের লিপ্সটিক,,তোমায় একদম হলুদ পরীর মতো লাগছে,,চোখ ফিরাতে পারছিনা আমি,,,
নীলের মুখে এমন কথা শুনে পরী ভিষন লজ্জা পেল,,,কিছুনা বলে ওখান থেকে চলে গেলো,,,,,
নীল পরীর যাওয়ার পানে চেয়ে রইলো,,
পরী হলুদের অনুষ্ঠানে গেলো,,,,
পরীকে দেখতেই নেহা বললো
ঃঃপরী আমায় হেল্প করোতো প্লিজ,,আমিতো খিরের প্লেট সাজাতে পারছিনা,,,
পরীঃও এই কথা,,তুমি আমায় জাস্ট একটু হেল্প করো আমি যা করার সব করছি,,
পরী শাড়ির আচল কোমড়ে গুজে,,, প্লেট সাজাতে শুরু করলো,,প্লেট সাজানো শেষে সবার জন্য পুলি পিঠা,,পাটিশাপটা আর কুশলি পিঠা বানালো,,,
তারপর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হলো,,,
ছেলের গায়ে সবাই হলুদ দিচ্ছে আর ছেলের ভাবি ও দাদি নানিরা গীত গাইছে,,,,গ্রামের বিয়েতে বয়স্ক মানুষদের এসব গীত শুনতে পরীর কুব মজা লাগে,,পরী ফোনে সবকিছু ভিডিও করছে,,,পেছন থেকে কেও একজন এসে পরীর গালে হলুদ লাগিয়ে দিলো,,
পরী ঃঃএই কোন হারামিরে(,,বলেই পেছনে তাকিয়ে দেখে নীল)
নীলঃঃআমি হারামিগো,
পরীঃঃসরি,,বাট আপনে আমায় হলুদ দিলেন কেনো??
নীলঃঃহলুদ পরীকে হলুদ না মাখলে কি মানায় বলো,,,
পরী কিছু বলতে যাবে তার আগেই নীলের বন্ধুরা নীলকে ডাক দিলে নীল ওখান থেকে চলে যাই
পরীঃঃখাটাসটা হলুদ মাখিয়ে আমার সাজটাই নস্ট করে দিলো,,
হলুদের অনুষ্ঠান
শেষে বরকে গোসল করিয়ে খির খাওয়ানো শুরু হলো,,,পরী আর নেহা সেলফি তুলতে ব্্যাস্ত,,আর নীল ওর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ব্্যাস্ত,,,
সব শেষে নেহার আম্মা মানে নীলের চাচিমা,,,(নেহা নীলের চাচাতো বোন,,)পরী আর নেহাকে নিয়ে আসলো নতাদের রুমে,,,,,,তিনি পরী আর নেহা খেতে দিলেন,,
এমন সময় নীল আসলো রুমে
নীলঃঃআমায় ছাড়া একাই খাচ্ছো?? বাহ ভালোতো,একবার ডাকলেও না,,এই নাকি ভালো বন্ধুর নমুনা,,,
পরীঃঃসরি ভুলে গেছিলাম,,
এমন সময় চাচিমা পানি আনতে চলে যায়,,নেহাও নেহা ওর মার পিছু গেল,,
পরী একলোকমা খাবার তুলে নীলের মুখের সামনে ধরে বলেঃঃহা করুন,,
নীলঃঃকেও যদি চলে আসে,?
পরীঃঃআসলে আসুক,,নিনতো,,
নীল পরীর হাত থেকে খাওয়ার মুখে নিলো,,,পরী আবার এক লোকমা খাবার দেই,,,আর নেহাকে আসতে দেকে পরী বসে পরে
নেহাঃঃলুকিয়ে লাভ নাই,,আমি কিন্তু দেখে ফেলেছি,,,
চাচিমা এসে বললোঃআমিও কিন্তু দেখে ফেলেছি,,
পরী লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকলো,,আরআএকটা কথাও বললোনা,,,নীল পড়ীর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে,,,
চাচিমা বললোঃঃএতো লজ্জা পেতে হবেনা,,আমরা সবাই খুব ফ্রি বুঝলে, মা??
পরী এখনো চুপ
নীলঃঃআরে শোনো আমার বোন চাচিমা বাসার সবাই আমার বন্ধুর মতো এতো লজ্জা পেতে হবেনা,,,,
পরী তবুও চুপ করে থাকলো,,,কোনোমতে খাওয়া শেষ করে বললো,,
ঃঃসন্ধা হয়ে গেলোতো আমার বাসায় যেতে হবে,,,
চাচিমাঃঃ না তোমার যাওয়া হবে না,,তুমি একেবারে কালকে যাবে,,আজ থাকো,,,
পরীঃঃনা না ভাইয়া খুব বকবে,,আমি যাবো,,,
চাচিমাঃঃনা তোমায় যেতে দিবোনা,,থাকতেই হবে
পরীঃঃবাট আজ বাসায় না গেলে ভাইয়া আমায় বাসা থেকে বের করে দিবে,,তখন সারাজিবন এখানেই থাকতে হবে,,,
নীল চট করে বলে উঠলোঃঃহ চাচিমা ওরে রেখে দাও,,,,এই শীতে একা থাকা খুব কস্ট,,ও থাকলে আমার সুবিধাই হবে,,
চাচিমাঃঃওরে এ বাড়িতে রাখলেও কি তোর ঘরে রাখবো নাকি??পরী মা আমার সাথে ঘুমাবে
নীলঃঃএহহ জি না আমার সাথেই থাকবে,,,শীত কম লাগবে
পরীঃঃএই থামবেন আপনি,,,কি সব বলছেন আপনি??তাও আবার চাচিমার সামনে???লজ্জার মাথা খাইছেন নাকি??আমি কারো সাথে থাকবোনা,,আমি এখন বাসায় যাবো,,আপনারা সবাই মিলে আমায় এভাবে লজ্জায় ফেলছেন,,দুর,,,আমি বাসায় যাবো,,
চাচিমা নেহা নীল তিনজনেই হাসছে
পরীঃঃআমি যাচ্ছি,, বলেই উঠতে লাগে
চাচিমাঃঃআচ্ছা সরি আর ফাজলামো করবোনা,,,তুমি আজ থেকে যাও,,
পরীঃঃনা চাচিমা,,বাসায় অনেক প্রবলেম হবে,,আমারে যেতেই হবে,,যাচ্ছি
আমি,,,
চাচিমাঃঃপ্রবলেম হবে যখন যাও বাট একা যাবেনা,,,সন্ধা হয়ে গেছে,,,একা যাওয়া ঠিক না,,নীল তোমায় তোমার বাসার একটু আগে নামিয়ে দিয়ে আসবে,,,,তোমার ভাইয়াকে বলবে বান্ধবি আর কাকু তোমায় বাসার সামনে রেখে গেছে,, বুঝলে,,
পরীঃঃবাবাহ চাচিমা আপনারতো সেই বুদ্ধি
তারপড় নীলের বাইক বের করলো,,পরী নিলের বাইকে উঠলো
পরীঃঃএই শুনুন আমার কিন্তু বাইকে খুব ভয় লাগে,,একটু আস্তে যাবেন কেমন,,
নীল ঃঃঠিক আছে
অনেক্ক্ষণ পর
পরীঃঃএই যে এভাবে এতো আস্তে চলালে কি বাসায় যেতে পারবো??দেখুনতো ঐ সাইকেল টাও আমাদের আগে চলে গেলো,,আরেকটু জোড়ে চলেন,,বাসায় যেতে ১৫/২০ লাগে,,,১ ঘন্টা হলো এখনো হাফ রাস্তাও পার হতে পারলাম না,,এভাবে তো সারারাত লাগবে
নীলঃঃদু মিনিটে বাসায় দিয়ে আসবো,বাট আমায় পেছন থেকে জড়িয়ে ধরো তাহলে
পরীঃঃএহহ দরকার নাই,,আমি এই ঠেলাগাড়িতেই যেতে রাজি
নীলঃঃওকে টিক আছে
নীল পরীর বাসার দিকের রাস্তায় না গিয়ে বাইক অন্য দিকে নিলে পরী বললো
ঃঃএই এদিকে কোতায় নিয়ে যাচ্ছেন???
নীলঃঃকাজি অফিসে
·
·
·
চলবে………………