Monday, October 6, 2025







নিষ্প্রভ প্রণয় পর্ব-০৯

#নিষ্প্রভ_প্রণয়
#পর্ব_০৯
লেখনীতেঃএকান্তিকা নাথ

সেতুর পরনে সবুজ রংয়ের শাড়ি।ফর্সা রংয়ে মানিয়েছে বেশ।সদ্য স্নান সারায় চুলগুলোও ভেজা।তোয়ালে দিয়ে চুলগুলো মুড়িয়ে নিয়েই কপালে লাল টিপ পরল।সিঁথি রাঙ্গিয়ে সিঁধুর পরতেই আয়নায় চোখ রেখে সিঁথিতে তাকাল।দুদিন আগেও সিঁথিটা খালি ছিল তার।সেই খালি সিঁথিটাই দ্বিতীয়বার রাঙ্গিয়ে দিল নিষাদ।সেতু ভেতর থেকে লম্বা শ্বাস ফেলে উঠে গিয়ে নীরের পাশে বালিশ রাখল।ধীর পায়ে রুম থেকে বেরিয়ে এসেই এদিক ওদিক তাকাল।এই বাড়ির সবকিছুই তার কাছে নতুন।বাড়ির ঘরগুলো,মানুষগুলো,সব!কিয়ৎক্ষন তাঁকিয়ে বুঝার চেষ্টা করল রান্না ঘর কোনদিকে।আন্দাজ করেই একপ্রকার সামনে এগিয়ে গেল।তারপর পেয়েও গেল রান্নাঘরের হদিশ।ভেতরে নিষাদের মা আর নিলিকে কাজ করতে দেখে সেও ডুকল।মাথা নত করে কিছু বলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক তখনই নিষাদের মা প্রশ্ন ছুড়ল,

” তুমি?এই সময়ে এখানে কেন?”

সেতু অপ্রস্তুত হলো।প্রশ্নের উত্তরে নরম গলায় বলল,

” আমি সাহায্য করি কাজে?”

নিষাদের মা চুলায় লুচি ভাঁজছিল।এক পলক তাকিয়েই বলল,

” তুমি নতুন বউ হয়ে এসেছো মাত্র।কাজ করার ঢের সময় আছে।এখন ঘরে যাও মা।”

সেতুর মনের ভেতর ভালো লাগারা ছুঁয়ে গেল।নিষাদের মা এর আগেও তাকে একবার “মা” সম্বোধন করেছিল।দ্বিতীয়বারের মতো আবারও উনার মুখে “মা” শব্দটা শুনে খুশি হলো সে।শান্ত চাহনীতে তাকিয়ে বলল,

“লুচি বেলে দিই আমি?”

ফ্লোরে বসে লুচি বেলতে থাকা নিলি এতক্ষনে মাথা তুলে তাকাল সেতুর দিকে।সুচালো চাহনিতে তাকিয়েই বলল,

” লুচি আমি বেলছি।মা তোমায় যেতে বলেছে না?যাচ্ছো না কেন?তোমার ছেলেকে গিয়ে দেখো।এখন কাজ করে একেবারে আমাদের উদ্ধার করতে হবে না।মানুষ কি বলবে নতুন বউকে দিয়ে কাজ করালে?তোমার ছেলেকে গিয়ে দেখো।ঘুমের মধ্যে পড়ে টড়ে গেলে?”

” পড়বে না।বালিশ দিয়ে এসেছি পাশে।”

” তাও যাও।কাজ যা আছে আমি আর মা করতে পারব।”

সেতু ঠোঁটে ঠোঁট চাপল।আরো কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে থেকেই বলল,

” কোন কাজই করা যাবে না? নীর ঘুমোচ্ছে।একা একা বসে থাকতে ভালো লাগছিল না। ”

নিষাদের মা ফিরে চাইল আবার। বলল,

” ঠিকাছে,এক কাজ করো।নীরুকে গিয়ে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিতে পারবে?ওর সামনে পরীক্ষা।”

সেতু তড়িৎ গতিতে মাথা নাড়াল।যার অর্থ পারবে।নিষাদের মা মৃদু হাসল।শুকনো গলায় বলল,

” ওর ঘরটা তোমাদের ঘরের বা পাশেই।খুঁজে পাবে?”

“পাব।”

কথাটা বলেই সেতু পা বাড়াল।নীরুর ঘরের সামনে এসেই দরজা হালকা ঠেলতেই খুলে গেল।সেতু পা এগিয়ে রুমে ডুকল।পুরো রুম অগোছাল।কাপড়, বই, বিছানা, টেবিল সব বিচ্ছিরি ভাবে অগোছাল।সেতু ভ্রু উঁচাল।বিছানায় নীরুকে হাত পা ছড়িয়ে ঘুমিয়ে থাকতে দেখেই হেসে দিল।মৃদু গলায় ডাকল,

” নীরু?সকাল হয়েছে।উঠবে না?”

নীরুর ঘুম পাতলা।সহজে ডাকলেই ঘুম ভেঙ্গে যায়।আজও তাই হলো। সেতু ডাকতেই ঘুম ভাঙ্গল তার।আড়মোড়া ভেঙ্গে চোখ মেলে চাইল।ছোট ছোট চোখে তাকিয়ে বলল,

” তুমি?কয়টা বেঁজেছে?”

” বোধহয় সাতটা।”

” এত তাড়াতাড়ি?মা বলেছে ডেকে দিতে?”

সেতু মাথা নাড়িয়ে বলল,

” হ্যাঁ।”

নীরু মুখ কুঁচকাল।বিরক্তি সমেত বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল।ওয়াশরুম থেকে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে এসেই মিষ্টি হাসল।বলল,

” নীর সোনা কি করছে?ঘুমোচ্ছে?”

” হু।তুমি পড়তে বসো।আমি বরং তোমার রুমটা গুঁছিয়ে দিই?কেমন?”

নীরু মিনমিনে চোখে সারা ঘর তাকাল।তার এই অগোছাল ঘর নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই।যে বিছানায় কিছুক্ষন পর পরই আবার গড়াগড়ি খাবে সেই বিছানা গুঁছিয়ে লাভটা কি?যে পড়ার টেবিলে কিছুক্ষন পর পর আবার বই মেলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখবে, সে টেবিল গুঁছানোর মানে আছে?কোন মানে নেই। শুধু শুধু সময় নষ্ট।নীরু হেসে বলল,

” রুম এলোমেলো থাকলে কি হবে?আমার রুম সারাবছরই এমন থাকে সেতু দি।রুম গুঁছানোর অতো সময় আছে আমার? আমি হলাম সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যস্থ মানুষ!”

সেতু হেসে দিল এবার।একে একে টেবিল, বিছানা, জানালার পর্দা সব গুঁছিয়েই থামল।তারপর নীরুকে পড়তে বলেই বেরিয়ে আসবে সে সময়ই কানে আসল কান্নার আওয়াজ।নীর কাঁদছে।সেতু দ্রুত পা চালাল। রুমে ডুকতেই নীরকে হাত পা ছড়িয়ে কান্না করতে দেখে পা চালাতেই ওয়াশরুমের দরজা খুলে হুড়মুড় করে বেরোতে দেখল নিষাদকে।সেতু দ্রুত গিয়ে নীরকে কোলে নিয়ে তাকাল নিষাদের দিকে।মাথায় শেম্পু, মুখে সাবান সব রয়ে গেছে।পরনে ভেঁজা টাউজার। উম্মুক্ত খালি বুক।সেতু এক নজর তাকাতেই নিষাদ দ্রুত প্রস্থান করল সেই স্থান থেকে।কানে আসল ধুম করে লাগানো দরজার আওয়াজ।হয়তো স্নান করতে করতেই নীরের কান্নার আওয়াজ পেয়েই এই অবস্থায় বেরিয়ে এসেছে।সেতু মনে মনে হাসল নিষাদের সেই শ্যাম্পু,সাবান সমেত রূপ ভেবে।কোলে নীরকে দোল দিতে দিতেই উঠে বেলকনিতে গেল।বেশ অনেকক্ষন পর কান্না থামিয়ে আবারও রুমে ফিরে এল।বিছানায় খেলনা দিয়ে নীরকে বসিয়ে দিয়ে পাশে বসল।তার কিছুটা সময় পরই নিষাদ বের হলো ওয়াশরুম থেকে।ভেজা শরীরে কালো টাউজার পরিহিত।গলায় তোয়ালে পেঁছানো।মাথার ভেজা চুল থেকে টুপটাপ পানি ঝরছে।সেতু একনজর তাকাতেই আবারও চোখে পড়ল উম্মুক্ত চওড়া বুক। বিন্দু বিন্দু পানি জমা ত্বকে।নিষাদ গলা থেকে তোয়ালে টেনে বুক মুঁছল।পরপরই মাথায় হাত চালিয়ে তোয়ালে দিয়ে চুল মুঁছতে লাগল।ঘরে যে সে ব্যাতীত অন্য কেউ আছে সেটা যেন খেয়ালই করল না।কিংবা খেয়াল করলেও বিশেষ দৃষ্টিপাত করল না।নিজের মতো পা চালিয়ে শার্ট হাতে নিয়ে গায়ে জড়াল।ভেজা তোয়ালেটা চেয়ারের এককোনে রেখেই হঠাৎ নীরকে এক ঝটকায় কোলে তুলে নিল। নীরের গালে ঠোঁট ছুঁইয়ে গুঁটি গুঁটি পায়ে বেলকনিতে গেল।সেতু সবটাই দেখে গেল চুপচাপ।অবাক হলো এই ভেবে, নিষাদ একবার ও তার দিক ফিরে চাইল না।ফিরে চাওয়া তো দূর, তার আচরণে মনে হলো যেন এই ঘরে সেতু নেই। কোথাও নেই!সেতু চুপসানো দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল। বেলাকনিতে নিষাদকে নীরের উদ্দেশ্যে হাত নাড়িয়ে কিছু বলতে দেখে ভ্রু কুঁচকাল।দু পা বাড়াতেই কানে এল নিষাদের গলার আওয়াজ,

“বড় হলে তোমার জন্য একটা বউ আনব।বুঝলে?”

সেতু ভ্রুজোড়া আরো কুঁচকাল।আরেকটু এগিয়ে যেতেই শুনল,

” বলো তো ব্রো, এটা কি? ”

সেতু অবাক হলো নিষাদের সম্বোধনে।ব্রো?ঐটুকু বাচ্চাকে সম্বোধন করার মতো নিষাদের কাছে আর কোন শব্দ ছিল না?এটা কোন সম্বোধন হলো?সেতু বেলকনির দরজায় উঁকি দিয়ে চাইল।নিষাদের হাতে একটা লাল টুকটুকুে পুতুল।নিষাদ সেটা নীরের হাতে তুলে দিয়েই আরাম করে বসল চেয়ারে।ভ্রু জোড়া উঁচু করে নীরের ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকা দেখে চোখ টিপল।ঠোঁট চওড়া করে বলল,

” এটা হচ্ছে পুতুল বউ।বুঝলে?বড় হও।তোমাকে সত্যি সত্যি বউ এনে দেব। এখন এই ছোট্ট পুতুল বউ নিয়ে সংসার করো।হু?বড় হয়ে যে মেয়েকেই পছন্দ হোক আগে আমায় বলবে, একদম তুলে নিয়ে এসে বিয়ে দিয়ে দিব তোমার সাথে।সেবেলায় নো কম্প্রোমাইজ!”

নিষাদের বাচ্চাসুলভ কথা শুনে পুনরায় অবাক হলো সেতু।বেলকনিতে পা রেখে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

” ওকে এসব কি শেখাচ্ছেন?মেয়ে তুলে এনে বিয়ে দেওয়া শিখাচ্ছেন আপনি?

নিষাদ ভুলেও সেতুর দিকে তাকাল না।আগের মতোই নীরের দিকে তাকিয়ে গালে হাত দিল।নীরের চোখে চোখ রেখেই দাঁত কেলানো হাসি দিয়ে বলল,

” তো?ওটা নীর আর আমার ব্যাপার।তাই না নীর?আর নীর কি বলেছে ও এসব শিখতে চায় না?তুমি তাহলে নাক গলাচ্ছো কেন?”

সেতু হতাশ হলো।কিশোরী বয়সে যে নিষাদকে দেখেছিল সেই হাসিখুশি প্রাণবন্ত নিষাদকে পুনরায় দেখতে পেয়েই হতাশায় চোখ ছোট ছোট করল।ঠান্ডা গলায় বলল,

” নাক গলাব না?”

” না গলাবে না, দুই বন্ধুর মাঝে মেয়ে, বিয়ে,বাচ্চা আরো অনেক আলোচনা হতে পারে।কখনো দেখেছো অন্য কাউকে নাক গলাতে?”

” তাই বলে এই বয়সে?বয়স কত ওর?এসব বুঝার বয়স হয়ছে ওর?”

নিষাদের ভাবাবেগ হলো না।আগের মতোই দাঁত কেলানো হাসি উপহার দিয়ে গলা ঝেড়ে বলল,

” বুঝবে বুঝবে!না বুঝলে আমি আছি কি করতে? বুঝিয়ে দিব।আগে থেকে সব বুঝিয়ে সুঝিয়ে প্রস্তুত করতে হবে না ওকে?বড় হলে যাকে ভালোবাসবে তাকে যদি অন্য কেউ বিয়ে করে নেয় পরে?বাপ-ব্যাটা একই হাল হয়ে চিৎফটাং হয়ে মা’রা পরব?ছোট থেকেই একদম তৈরি করে নিচ্ছি তাই।”

“বাপ-ব্যাটা”!সম্বোধনটা শুনে সেতুর দৃষ্টি ক্ষীণ হলো।নিষাদের আচরণে বিন্দুমাত্র সন্দেহ হলো না তার।নিষাদকে আগেও সে এমন আচরণসুলভ দেখেছে।যখন নতুন নতুন তার প্রেমে পড়েছিল নিষাদ।ঠিক এমনই ছিল তার কথাবার্তার ধাঁচ!আজ এতদিন পর সেই আগের নিষাদকেই দেখে মনে মনে খুশি হলো।সঙ্গে নিষাদ আর নীরের সম্পর্কের পরিণতি দেখে তৃপ্তিও পেল।সে আর কিছু না বলেই বেরিয় গেল।

.

সোফায় নিলু পা ছড়িয়ে বসে আছে।নিলু নিষাদের বড় বোন নিলির মেয়ে।বয়স ছয় বছর।সামনে লুচি আর তরকারির বাটি নিয়ে নিচের ঠোঁট উল্টে রেখে রাগ দমিয়ে রাখার চেষ্টা চালাল।বয়সে ছোট হলেও চুল বেশ লম্বা আর ঘন তার।সেই চুলেই দুটো বেনী করা।শরীর বেশ নাদুশনুদুশ। দুধে আলতা গায়ের রংয়ে সাদা রংয়র জামা।সেতু এগিয়ে গেল।নিলুর সাথে বিয়ের দিনই নীরু পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। এগিয়ে গিয়ে হেসে দিয়েই বলল,

” রাগ করেছো নিলু?”

নিলু চোখ তুলে তাকাল।সেতুকে দেখেই ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে উঠল। এক দৌড়ে নীরুকে গিয়ে দুই চারটে থাপ্পড় লাগিয়ে দিয়ে আবারও দৌড়ে আসল সেতুর কাছে।অভিযোগের সুরে বলল,

” নীরু পঁচা!ও আমায় কোলে নিতে দিচ্ছে না মামি।”

সেতু ভ্রু বাঁকিয়ে নীরুর দিকে তাকাল।নিলুর দিকে তাকিয়েই ভেংচি কাঁটতে ব্যস্ত ছিল নীরু।কোলে ছোট্ট নীর। সেতু হাঁটু গেড়ে বসে নিলুর গালে হাত রাখল।বলল,

” বকে দেব ওকে?কোন সাহসে নীরকে তোমার কোলে দিচ্ছে না সেই অপরাধে? ”

নিলু তৎক্ষনাৎ উপর নিচ মাথা দুলাল। যার অর্থ, হ্যাঁ।মুখে বলল,

” শুধু বকা না, মেরেও দেবে।মনে থাকবে?”

সেতু হেসে উঠল।গাল টিপে বলল,

” আচ্ছা ঠিকাছে। ”

বলেই উঠে দাঁড়াল। সোফায় বসে ঘড়ির দিকে তাকিয়েই বলল,

” নয়টা বাঁজে।তুমি খাচ্ছো না কেন?ক্ষিধে নেই?”

” না নেই।”

সেতু মৃদু হাসল। লুচি ছিড়ে তরকারি দিয়ে খাইয়ে দিতে দিতে বলল,

” ক্ষিধে না পেলেও খেতে হয়৷ বুঝলে?না খেলে তো নীরুর মতো বড় হবে না।ওকে মারবে কি করে তাহলে?খেয়ে নাও তাড়াতাড়ি।”

নিলু মুখে আর কিছু বলল না।গাল ফুলিয়ে খেতে লাগল।দৃষ্টি তীক্ষ্ণ করে তাকিয়ে রইল নীরুর দিকে।

.

নিষাদ যখন অফিস থেকে ফিরল তখন রাত আটটা।ঘামে ভেজা শার্টটা খুলেই বিছানায় ছুড়ে রাখল।টানা আধঘন্টা স্নান সেরেই বের হলো।গায়ে টিশার্ট আর টাউজার।পা বাড়িয়ে রুম ছেড়ে বের হবে সে মুহুর্তে সেতু এল।হাতে গরম চা।নিষাদের দিকে এগিয়ে দিয়েই শান্ত গলায় বলল,

” মা পাঠিয়েছে।”

নিষাদ দূরত্ব বজায় রেখে চায়ের কাপটা হাতে নিল।একনজর তাকিয়েই বলল,

” সকাল সকাল স্নান করেছিলের কেন আজ?ভেজা চুল নিয়ে আর কক্ষনো আমার সামনে আসবে না।আসলেই কিন্তু শাস্তি!মাথায় থাকবে?”

সেতু ভ্রু কুঁচকাল।নিষাদের কথার আগামাথা না বুঝে বলল,

” সকালে তো স্নান প্রায় সময়ই করি।কাল রাতে ভারী শাড়িতে অস্বস্তি হচ্ছিল তাই সকাল সকাল স্নান সেরেছি।কেন?অন্যায় করেছি?”

নিষাদ অবাক হওয়ার ভান করল।গমগমে সুরে বলল,

” করোনি?চো’রের মায়ের বড় গলা!”

” কি অন্যায় করেছি?”

নিষাদ চায়ের কাপে চুমুক দিল।পরক্ষনেই ঠান্ডা গলায় বলল,

” অনেক বড় অন্যায়।তোমার সে অন্যায়ের মাশুল আমায় কেন দিতে হবে?সব দোষ তোমার!তুমিই একমাত্র দোষী আমার জীবনে।”

সেতু ছোট্ট শ্বাস ফেলে ক্লান্তি নিয়ে বলল,

” আমি সবকিছুতেই দোষী নিষাদ।আর কিছু?”

” তো অন্য কেউ দোষ করেছে যে তাকে দোষী বলব?”

” কি করেছি বলুন।”

নিষাদ গভীর চাহনীতে তাকাল।শান্ত কন্ঠে শুধাল,

” বলব না।”

” ঠিকাছে।”

কথাটা বলেই সেতু পা বাড়িয়ে বাইরে আসতে নিলেই নিষাদ আবারও বলে উঠল,

” আজ সারাদিন মন দিয়ে কাজ করতে পারিনি আমি সেতু।একটা কাজও ভালোভাবে করতে পারিনি। এর দায়ভার কার?”

সেতু পিঁছু ঘুরল।শান্ত গলায় বলল,

” আপনার।কাজগুলো তো আপনারই ছিল।”

নিষাদ মাথা দুলাল।যার অর্থ, না।দায়ভার তার না।নিরেট কন্ঠে বলল,

” না, এর সম্পূর্ণ দায়ভার তোমার সেতু।শুধু এবং শুধু তোমার।আমার সব মনোযোগকে এলোমেলো করার দায় তো তোমারই।তুমিই অন্যায় করেছো।তুমিই দোষ করেছো।দোষী কেবল তুমিই।”

সেতু ছোট ছোট চোখে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।কিছু না বলে একটা লম্বা শ্বাস টেনে বেরিয়ে এল।পৃথিবীর সব দোষ তার।সব অন্যায় কেবল সেই করে।পৃথিবীতে একমাত্র দোষী ব্যাক্তিও কেবল সে। আর কেউ না।

#চলবে….

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ