#নিভৃতে_তেজস্বিনী
#পর্ব_৩০ [অন্তিম পাতা]
#লেখায়_নামিরা_নূর_নিদ্রা
একদিন যায়, দুইদিন যায়, পরপর নয়টা দিন চলে যায়। নিজের ছোট্ট মেয়েটাকে পাগলের মতো খুঁজেও তার কোনো সন্ধান পায় না সিরাত। দিশেহারা মা তার ছানাকে না পেয়ে ক্লান্ত পথিকের ন্যায় বসে থাকে তার পথ চেয়ে। মেয়েকে হারিয়ে যখন সে পাগলপ্রায় তখনই তার জীবনে ঘটে আরেক অঘটন। যে মানুষটা বটবৃক্ষের মতো তার ছায়া হয়ে ছিল সেই বাবা নামক বটগাছটা তাকে ছেড়ে চলে যায় বহুদূরে। এতটাই দূরে যেখান থেকে আর ফিরে আসা যায় না। পুরো পরিবারে কীভাবে যেন অন্ধকার নেমে আসে। বাড়িতে থাকতেও আর ইচ্ছা করে না। মায়ের চোখের পানি দেখতে দেখতে দমবন্ধ হয়ে আসে সিরাতের। তার বন্ধুমহলের সকলে তার পাশে থাকলেও মানসিক শান্তির দেখা সে আর পায় না। একলা বাড়িতে মা-মেয়ের দিন কাটে কেবল অশ্রু ঝরিয়ে।
“তারপর কী হলো মাম্মা?”
মেয়ের কথায় সিরাত বিষণ্ণ মনে উত্তর দেয়,
“তোমাকে খুঁজে পেয়েছিলাম প্রায় একুশ দিন পর। নিমু তোমাকে এক দম্পতির কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। আমার বন্ধুরা পাশে ছিল বলেই হয়তো তোমাকে আবার নিজের কোলে ফিরে পেয়েছি। ইভান আমাকে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে সাহায্য করেছে। বলতে পারো শেষ মুহূর্তে সেই ছেলেটা বাজিমাত করে দিয়েছিল। নিজের জানপ্রাণ এক করে তোমাকে খুঁজে বের করেছিল সে। তোমাকে ফিরে পেয়ে আমি আর তোমার নানুমনি নতুন করে বাঁচার কারণ খুঁজে পেয়েছি। জানো আম্মু? তোমার নানুমনি বেঁচে আছে শুধুই তোমার আর আমার জন্য। কখনো যদি আমার কিছু হয়ে যায়, তুমি কিন্তু নানুমনিকে যত্নে রাখবে। সামান্য কষ্টও যেন তাকে স্পর্শ করতে না পারে। পারবে তো?”
পনেরো বছর বয়সী নাবিহা মায়ের হাতের উপর হাত রেখে কথা দেয়,
“এ দেহে প্রাণ থাকতে আমি তোমাকে আর নানুমনিকে একটুও কষ্ট পেতে দিব না মাম্মা। আমার জগতে যে তোমরা ছাড়া আর কেউ নেই। তোমাদের তো ভালো থাকতেই হবে। আর তোমাদের ভালো রাখব আমি। কথা দিলাম তোমাকে।”
মেয়ের কথায় সিরাত সযত্নে তাকে নিজের বুকের মাঝে আগলে নেয়। মা-মেয়ের এমন সুন্দর মুহূর্তের সাক্ষী হতে সেখানে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ হাতে হাজির হয় মিসেস ইতি ইসলাম। নাতনির পাশে বসে তিনি বলেন,
“আমাদের ছোট্ট নাবিহা আজ কত বড়ো হয়ে গেল!”
নাবিহা নানুমনিকে দেখে হেসে তাকে জড়িয়ে ধরে।
“নানুমনি আমি তো ছোট-ই আছি।”
কিছু একটা ভেবে নাবিহা সিরাতকে প্রশ্ন করে,
“আচ্ছা মাম্মা আমাকে যে তোমার কাছ থেকে কেঁড়ে নিয়েছিল পরবর্তীতে তার কী হয়েছে?”
মেয়ের এহেন প্রশ্নে সিরাত এক বাক্যে উত্তর দেয়,
“হয়তো সে আজও শাস্তি পাচ্ছে!”
ফোনের রিংটোনের আওয়াজে সিরাত ফোন হাতে নেয়। দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর চিরচেনা সেই নাম্বার থেকে কল আসতে দেখে সিরাত উঠে চলে যায় নিজের ঘরে। অতঃপর কল রিসিভ করে বলে,
“হ্যালো!”
“ভালো আছ?”
“যেমন থাকার কথা তেমনই আছি।”
“আমাদের মেয়ে কেমন আছে?”
“আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছে।”
“তার কি বাবার কথা একবারও মনে পড়ে না?”
“কি জানি!”
“আচ্ছা একটা প্রশ্ন করব তোমাকে?”
“হুম।”
“তুমি কেন আমার এত বড়ো ক্ষতি করলে তার কারণটা কাউকে জানালে না কেন?”
“তোমার জীবন থেকে সবাই হারিয়ে গিয়েছে। হাতে গোনা কয়েকজন তোমার পাশে থেকেছে। এসব জানলে তারাও ঘৃণার চোখে তাকিয়ে থাকত তোমার দিকে। অনেক তো কষ্ট পেলে। আজও কষ্ট পাচ্ছ। স্ত্রী হিসেবে বাকি কষ্টটুকু নাই-বা দিলাম তোমাকে। বেঁচে থাকার জন্য মানসিক শান্তির ভীষণ দরকার। সেটাই যদি না থাকে, তাহলে তুমি বাঁচবে কীভাবে? এই যে গুমরে গুমরে ম*রছ এটাই তোমার সবচেয়ে বড়ো শাস্তি। বুঝলে?”
“হুম বুঝলাম। শুধু তোমাকেই বুঝতে পারিনি কখনো। এই আফসোস আমার আজন্ম থেকে যাবে।”
“রাখি এখন?”
“মেয়ের সাথে একটু কথা বলিয়ে দিতে পারবে?”
মাহতাবের আবদারে সিরাত নাবিহার কাছে গিয়ে বলে,
“তোমার বাবা তোমার সাথে কথা বলতে চাইছে।”
এর উত্তরে নাবিহা বলে,
“বাবা? কে বাবা? যে বাবা আমার মা’কে কষ্ট দিয়েছে তাকে আমি ঘৃণা করি। বাবা শব্দটার প্রতি আমার কেবল ঘৃণা আছে, কোনো ভালোবাসা নেই!”
ফোনের ওপাশ থেকে এই কথা শুনে মাহতাবের চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। ফোন কেটে দিয়ে সে ভাবে,
“সব থেকেও যেন কিছুই নেই আমার। পাপের ফল হয়তো এমনই হয়!”
ঘড়ির কাঁটায় যখন রাত একটা বেজে সাইত্রিশ মিনিট, তখন সিরাত স্মৃতিচারণ করতে ব্যস্ত। তার সামনে পড়ে আছে একটা খোলা ডায়েরি। যেখানে লেখা,
“জীবন থেকে বারোটি বছর পেরিয়ে গেল। ছাব্বিশ বছর বয়সে তেজস্বিনী রূপে ধরা দেওয়া আমি আজ আটত্রিশ বছর বয়সী একজন পূর্ণ নারী। এই আটত্রিশ বছরে কী পেলাম আর কীই-বা হারালাম তা জানা নেই আমার। শুধু এটুকু জানি, সবকিছু মিলিয়ে ভালোই আছি। জীবন দিব্যি চলে যাচ্ছে।”
স্মৃতিচারণ করতে করতেই রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে যায়। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে সিরাত বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। ঘন্টা খানেকের রাস্তা পেরিয়ে একটা বাড়ির ভেতরে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা আটকে দেয় সিরাত। তাকে দেখে নার্স সুমি বলে,
“আপু আপনি আজ আসবেন সেটা বলেননি তো।”
“তুরাগের ঠিকমতো খেয়াল রাখছ তো তুমি?”
“হ্যা আপু। সেটা তো রাখছি। কিন্তু ওনার খেয়াল রেখেই বা কী লাভ? সে তো জীবন্ত লা*শ হয়ে বেঁচে আছে।”
“শেষ দিন অবধি ওর এভাবেই বাঁচতে হবে। যাইহোক, এখানে পঞ্চাশ হাজার টাকা আছে। তোমার দুই মাসের অগ্রীম বেতন।”
“আপনার মতো মানুষ আমি আর একটাও দেখিনি আপু। আমার দুঃসময়ে আপনি যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন তা আমি কখনো ভুলব না। আপনার জন্যই আমি আমার পরিবারের হাল ধরতে পেরেছি।”
“তুমি নিজ যোগ্যতার জন্য এই টাকা পাচ্ছ। এটা তোমার পারিশ্রমিক। তার জন্য ধন্যবাদ দিতে হবে না। শুধু মনে রেখো, হালাল পথে উপার্জন করবে। কখনো অসৎ পথ অবলম্বন করবে না। তাহলেই তুমি সফল হতে পারবে।”
“আপনার প্রতিটা কথা আমি মেনে চলার চেষ্টা করব আপু। সব সময় হালাল পথে উপার্জন করব ইনশাআল্লাহ।”
“এখন আমাকে যেতে হবে৷ আসি আমি।”
“আচ্ছা।”
ঘরে গিয়ে এক নজর তুরাগকে দেখে বেরিয়ে আসে সিরাত। এখন তাকে আরেক জায়গায় যেতে হবে। পথিমধ্যে কল আসায় সিরাত নিজ গন্তব্য পরিবর্তন করে বাড়িতে চলে আসে।
সিরাতকে দেখে সিয়াম এগিয়ে এসে বলে,
“এত সকালে কোথায় গিয়েছিলে আপু?”
“একটা কাজ ছিল। তোরা কখন এলি? আজ যে আসবি সেটা বলবি না আমাকে?”
“নিতু নাবিহাকে দেখতে চাইছিল। তাই নিয়ে এলাম।”
“ভালো করেছিস। নিতু কোথায়?”
“নাবিহার ঘরে। ওদের দু’জনের কাজই তো গল্প করা।”
“করুক না, সমস্যা নেই।”
“আপু!”
“হুম বল।”
সিয়াম লম্বা শ্বাস ছেড়ে বলে,
“সেদিন যদি আমার রিকশায় তুমি না উঠতে তাহলে হয়তো আমার জীবনটা এত সুন্দর হয়ে উঠত না।”
“তোর ভাগ্যে ভালো কিছু বলেই তুই এসব পেয়েছিস।”
“সবটা এত সহজ হতো না যদি তুমি আমার পাশে এসে না দাঁড়াতে। আমি আজ সেলস এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে কাজ করতে পারতাম না। পড়াশোনা শেষ না করে হয়তো রিকশাচালক হয়েই বাঁচতে হতো আমাকে। বাবা চলে যাওয়ার পর পরিবারের দায়িত্ব নিতে পারতাম না। সবকিছু তো তোমার জন্যই হয়েছে। এমনকি নিতুর মতো একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছি তোমার জন্যই। আমাকে আপন ভাইয়ের থেকে কখনো কম ভালোবাসা দাওনি তুমি।”
“আল্লাহ চেয়েছে বলেই তুই এত সুন্দর একটা জীবন পেয়েছিস। সবকিছুর জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় কর। আমিও খুব ভাগ্যবতী যে তোর মতো একজনকে ভাই হিসেবে পেয়েছি। আমাদের দুঃসময়ে তুই আর খালামনি পাশে থেকেছিস। এটাই বা কয়জন করে?”
“আপু!”
সিরাতকে জড়িয়ে ধরে সিয়াম বলে,
“তোমার মতো মেয়ে যেন ঘরে ঘরে জন্ম নেয়। তাহলে আমাদের পৃথিবী অন্যরকম সুন্দর হয়ে উঠবে।”
“ধুর বোকা, কেউ কারোর মতো হতে পারে না। তবে হ্যা, নিজেকে এমনভাবে গড়ে তোলা উচিত যেন তাকে দেখে আরও দশটা মানুষ বেঁচে থাকার উৎসাহ পায়।”
“সেদিক থেকে তো তুমি সফল। তোমার জন্য শতশত মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছে। নীলাদ্রির অধিকাংশ কর্মচারী তো মেয়ে। তাছাড়া তুমি তো একজন সমাজসেবক। প্রতিনিয়ত কত মানুষের উপকার করো তার হিসেব নেই।”
“আচ্ছা হয়েছে। আমি এখন ঘরে যাচ্ছি। ফ্রেশ হয়ে এসে তোদের সাথে গল্প করব।”
ঘরে এসে সিরাত ফ্রেশ হয়ে নেয়। কেন জানি না আজ বন্ধুদের কথা খুব মনে পড়ছে তার। ছবির একটা অ্যালবাম বের করে সেখানে হাত বুলিয়ে দেয় সে। একের পর এক ছবিগুলো দেখে মনে একটা প্রশান্তি কাজ করে। তারিন, অথৈ, মাওয়া এদের তিনজনের একসাথে বিয়ে হয়েছে একই মঞ্চে। এখন তারা সবাই সুখে আছে। অভি আর মাওয়ার যমজ মেয়ে হয়েছে। অথৈ আর নাবিলের ছেলের বয়স এখন প্রায় দশ বছর। তারিন একজন ডাক্তারকে বিয়ে করে বেশ সুখেই আছে। তাদেরও মেয়ে হয়েছে। তামান্না এখন ইতালিতে থাকে তার স্বামীর সাথে। পারিবারিকভাবে বিয়ে হওয়ার পরেও তারা দু’জন ভীষণ ভালো আছে। নকশি আর ফারহান তাদের দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে এখন লন্ডন প্রবাসী। উর্মি এখন সিরাতের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গায় ভালো আছে। হয়তো ইভানও ভালো আছে। নাবিহাকে পাওয়ার পর সেই যে সে উধাও হলো, আজও তার খোঁজ পায়নি সিরাত। অনেক বার চেষ্টা করেছিল যোগাযোগ করার। কিন্তু পারেনি।
অ্যালবামের ভাজে ভাজে সব স্মৃতিরা ছুটে বেড়ায় প্রতিনিয়ত। সবার সাথে যোগাযোগ থাকলেও ইভানের জন্য মন কেমন করে সিরাতের। সবার সাথে তো বছরে একবার হলেও দেখা হয়। কিন্তু ইভানের সাথে গত বারো বছরে একবারও কথা হয়নি তার। সিরাতের খুব জানতে ইচ্ছা করে, কেমন আছে ইভান? সে কি নতুন করে জীবন শুরু করেছে? সেই জীবনে ভালো আছে তো ছেলেটা? সিরাত মনেপ্রাণে চায় ইভান যেন খুব ভালো থাকে।
দিন পেরিয়ে যায়, সিরাতের বয়স বাড়ে। কিন্তু অন্যায় দেখলে সে আজও তেজস্বিনী রূপে ফিরে আসতে দু’বার ভাবে না।
অন্ধকারাচ্ছন্ন এক ঘরে প্রবেশ করে সিরাত ডাকে,
“নিমু? কোথায় তুমি? সামনে এসো আমার।”
জীর্ণশীর্ণ শরীরে সিরাতের সামনে এসে দাঁড়ায় নিমু। তার চোখগুলো একদম ভেতরে ঢুকে গিয়েছে৷ চোয়াল ভেঙে গিয়েছে। চেহারায় আগের মতো আর উজ্জ্বলতা নেই। ভাঙা গলায় নিমু বলে,
“আমাকে ছেড়ে দাও সিরাত। দীর্ঘ বারো বছর যাবত আমি এই বদ্ধ ঘরে আটকে আছি। আমার দমবন্ধ হয়ে আসে। খুব কষ্ট হয় আমার।”
“এটুকু শাস্তি কি তোমার প্রাপ্য নয়? আমার সাথে তুমি যা যা করেছ তারপর তো তোমাকে বাইরে ছেড়ে রাখা যেত না। আমি তোমাকে শারীরিকভাবে একটুও আঘাত করিনি। শুধুমাত্র এই বদ্ধ ঘরে বন্দী করে রেখেছি তোমাকে। তোমার দেখভালের জন্য এখানে সর্বদা দু’জন থাকে। তাছাড়া খাবার থেকে শুরু করে দৈনন্দিন সবকিছুই তো তুমি ঠিক সময়ে পেয়ে যাচ্ছ। তাহলো সমস্যা কোথায়? একটা কথা মনে রেখো, বেঁচে থাকাকালীন সময়ে তুমি আর কখনো বাইরের দুনিয়া দেখতে পারবে না। এটাই তোমার শাস্তি।”
সিরাত চলে যাওয়ার আগে নিমুকে বলে,
“তোমার বাবা-মা ভালো আছে। তোমার ভাই এখন আর নে*শা করে না। জানো? তোমার ভাই নাফির বিয়ে হয়েছে। আমি নিজে দায়িত্ব নিয়ে ওকে ভালো পথে ফিরিয়ে এনেছি। যা কিছু তোমার করার কথা ছিল সেই সবকিছু আমি দায়িত্ব নিয়ে সম্পূর্ণ করেছি। বিনিময়ে এবার অন্তত আমার প্রতি একটু কৃতজ্ঞ হও।”
কথাটা বলে সিরাত বের হয়ে দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। বাইরে থেকে সে নিমুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। কিন্তু এই আওয়াজ তাকে একটুও ব্যথিত করে না।
ব্যস্ত রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে সিরাত বলে,
“এই ব্যস্ত শহরে সবারই না বলা কিছু গল্প থাকে। আমারও আছে। এই যে আমি এতজনের মাঝে থেকেও পরিপূর্ণ মানসিক শান্তি পাই না। রোজ রাতে নিয়ম করে কাঁদতে হয়। অতঃপর ভোর হলে হাসিমুখে ঘরের দরজা খুলতে হয়। বদ্ধ ঘরে আমি কেমন থাকি সেই গল্পটা কেউ জানে না। আমার গল্পটা কেবল আমি জানি। আমি ভালো আছি নাকি ভালো নেই তা জানি না। শুধু এটুকু জানি, তেজস্বিনীদের কখনো ভেঙে পড়তে হয় না। তাদের বাঁচতে হয়। তাদের সমাজকে দেখিয়ে দিতে হয়, চুপ করে সহ্য করা আর নয়। বাঁচতে হলে প্রতিবাদ করে বাঁচতে হবে। স্বাধীনভাবে বাঁচতে হবে। সর্বোপরি বেঁচে থাকার মতো করে বাঁচতে হবে। কারণ, তেজস্বিনীরা কখনো মা*থা নত করে ম*রতে পারে না। তেজস্বিনীরা মা*থা উঁচু করে বাঁচে, বীরের মতো ম*রে।”
★সমাপ্ত★