নসীব পার্ট_১১
#আরবি_আরভী
কাঁন্না করে খুব মিনতি করছি কিন্তু খালামনি কোনো পাত্তাই দিচ্ছেন না আমাকে টেনে গেইটের বাহিরে রেখে গেলেন।। খুব কান্না করছি।। বৃষ্টির ঠান্ডা পানিতে কাঁপতে শুরু করেছি রীতিমত,,,
কিছু না ভেবে হাটতে শুরু করলাম,, অনেকটা পথ যাওয়ার পর একটা গাড়ি প্রায় আমার একসিডেন্ট করতে করতে থেমে যায়।। প্রচন্ড ঝড় হচ্ছে।। গাড়ির লাইট ভেদ করে একটা চেনা মুখ।। আবির মাতাল হয়ে গাড়ি থেকে নেমে ,,,
-আর ইউ ক্রেজি ,,,
-মদ খেয়েছেন,,,
-তাতে তোমার কি,,, এত রাতে কোথায় যাচ্ছ তুমি??
-আমি নীলয়কে,,,,
-নীলয় নীলয়,,, কে হয় তোমার ওঁ হুমম,, নিউ কাস্টমার তাই না ,, (আমার হাটটা শক্ত করে চেঁপে ধরে)
-একদম চুপ নীলয়কে নিয়ে আর একটা বাজে কথা বলবেন না,,, আমার হাত ছাড়ুন,,,
-কেন ছাড়বো নীলয়কে পেয়ে আমাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছ,,, ওঁ কি আমার থেকে বেশি আদর করে বল,,,
-উউফফফ আপনি এত নোংরা কেন,,, কেন আমার সাথেই আপনাকে এসব বলতে হবে,,,
-প্রমিস ওঁর থেকে বেশি টাকা পাবা ওকে,,
আবিরকে থাপ্পড় মেরে,,,
-আপনি একটা অমানুষ,,, ছাড়েন আমাকে ছাড়েন,,
আবির রেগে আমার ডান গালে কষে থাপ্পড় দিয়ে বলতে থাকে,,,
-হাউ ডের ইউ,,, দুটাকার মেয়ে হয়ে আমাকে শোনাচ্ছিস,,,
তার থাপ্পড়ের জোরে আমি মাটিতে ছিটকে পড়ি,,,হঠাৎ ফোনে কল,,,আমি ডুকরে কেদে উঠে,,,
-হ্যালো ডক্টর,,
-Mrs. নীলয় আপনার আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্ট গুলো কাল এসে নিয়ে যাবেন,,আর হ্যা বেবীর প্রতি খেয়ার রাখবেন,,,
-জি,,,ধন্যবাদ ,,
কথা শেষ হতেই আবির আমাকে টেনে উঠিয়ে মুখটা চেপে ধরে বলতে থাকেন,,,
-বেবী মানে,,, কার বেবী?? নীলয় তাহলে খুব ভালো রেখেছে,, আমার সন্তান অপারেশন করে প্রিতমের সাথে,,,
-আমি আর নিতে পারছি না প্লিজ চুপ করেন,,,
-তুমি করলে কিছু না আর আমি বলবেই দোষ,,, আমি তো চাইনি তুমি আমাকে ছেড়ে যাও আমি তো চাইনি তোমার বাবা মারা যান ,,,ভেবেছিলাম আমি তোমার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছি ভেবেছিলাম আমার কারনেই তোমার বাবা আজ তোমার কাছে নেই কিন্তু কে জানতো এসবকিছুই যে তোমার নষ্টামির ফল,,,, মায়া হয়ে গিয়েছিল নীলা,,, আম্মু ঠিকই বলে তোরা কখনো ভালো হতেই পারিস না,,,তুই ঠিক তোর বাবার মতই স্বার্থপর,,,
-আপনার নাটক আর সহ্য হচ্ছে না,, প্লিজ যেতে দিন,,
আবির আমার হাতটা ধরে একটানে উনার বুকে জড়িয়ে পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে,,,
-তোমার বাবার নামে এতিমখানা করার সিধান্ত নিয়েছি আগামীকাল থেকে কাজ শুরু হবে ,,,,জানি ক্ষমা পাবো না কিন্তু তবুও বলব আই এম সরি,,সবকিছুর জন্য,, অন্য কারো পাশে তোমাকে মেনে নিতে পারিনা তারপর তুমি যখন আমার দেয়া শাড়ি পড়ে নীলয়ের সাথে ঘুরতে গেলে খুব খারাপ লাগছিল,,,,,নিলা i am sorry আমাকে ক্ষমা করো প্লিজ ,,
কথাগুলো বলে আস্তে আস্তে আবির আমার খুব কাছে চলে আসছিলেন,,,,
-ভালোবাসি নীলা,,নীলয়ের সাথে যেও না,,
এমন সময় নীলয় এসে আবিরকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়,,
-ছাড় নীলাকে,,,
-আপনি এখানে??
-নিপা আমাকে কল দিয়ে জানিয়েছে তুমি নাকি বাড়ি থেকে চলে এসেছ তাই ,,
আবির কোনো রিয়েক্ট না করে আমাকে বলতে লাগে,
-ভালো থেকু,,নীলয়ের বেবীর ক্যার নিও,,
নীলয় আবিরকে মারতে থাকলে একপর্যায়ে আবির রক্তাক্ত হয়ে যায়,,, নীলয়কে খুব রিকুয়েস্ট করছি উনাকে ছেড়ে দিতে কিন্তু নীলয় কথাই শুনছেন না,,,,
-আবির মাতাল হয়ে আছেন,, উনি আমার কোনো ক্ষতি করেননি প্লিজ আর মারবেন না ,,,
নীলয় রেগে আমাকে গাড়িতে উঠিয়ে বলতে লাগলেন,,,
-আবিরটাকে মেরে ফেলব,,,, নীলা কোনোদিন তোমাকে একা ছেড়ে দিব না ভালোবাসি তোমাকে,,, দাদীমা বাবাই তোমাকে দেখলে অনেক খুশি হবে,,,
উনি আমার ফোনটা জানালা দিয়ে ফেলে,,,
-আজ থেকে তোমার নতুন জীবন শুরু ওকে ,,চিন্তা করো না নতুন কিনে দিব,,,,,(মুচকি হেসে)
আমি মুখ চেপে কাঁন্না করছি।।বুঝতে পারছিলাম না কি হচ্ছিল আমার সাথে,,।।
অনেকটা দূর ঘন্টাখানেক পর একটা বিশাল বাড়ি।। অবাক হচ্ছি এত বড় একটা বাড়িতে মাত্র দুটি লাইট।। সবকিছু প্রায় অন্ধকার।। দেখতে ভূতুরে।। নীলয় এখানে থাকে ভাবতেও ভয় লাগছে।।
-আপনার পরিবার কোথায়,,,
-কিসের পরিবার,,,,
-মানে
নীলয় সোফায় বসে ড্রিঙ্ক
করতে করতে ফোনে কথা বলতে থাকেন,,
-হুমম এনেছি সাথেই আছে,,, না সপ্তাহখানেক অপেক্ষা করতে হবে,,, প্রেগন্যান্ট অপারেশন করতে হবে তারপর ডেলিভারী,,,
আমি হা করে তার কথাগুলো শুনছিলাম।। কে উনি??
চলবে,,,,,,