ধূসর রাঙা মেঘ_২ পর্ব-২৩ এবং শেষ পর্ব

0
786

#ধূসর_রাঙা_মেঘ_২
#সমাপ্তি_পর্ব
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

ধূসরের ভালোবাসার পরশে মেঘের কষ্ট কমতে শুরু করলো। আস্তে আস্তে দুজনের ভালোবাসা গভীর হতে লাগলো। ধূসর নিজের ভালোবাসার মধ্যে দিয়েই জানিয়ে দিল। তার মেঘবালিকার কষ্ট তার সহ্য হয় না।তার ভালোবাসা দিয়ে সে তার মেঘবালিকার সব কষ্ট মুছে ফেলবে।

নিচে সবাই কেমন বিমর্ষ হয়ে আছে। কারো মধ্যে কোন অনুভূতি আছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। চৌধুরী বাড়ির আত্মীয় স্বজন বাদে আর সবাই যে যার মতো চলে গেছে। রহমান পরিবার ও লজ্জায় আগেই প্রস্থান নিয়েছে। আয়মান চৌধুরী ধূসরকে ভেতরে ঢুকতে দেখে চলে এসেছেন। মেঘের বান্ধবীরা আর ধূসরের পরিবার মেঘের কাছে যেতে চাইলে তিনি বাঁধা দেন। ধূসর আছে ও সব সামলে নেবে। সমশের চৌধুরী থম মেরে বসে আছেন। আজান তার হাত ধরে বসে আছে। আয়মান চৌধুরী সমশের চৌধুরী পাশে গিয়ে বসলেন। সমশের চৌধুরী আয়মান চৌধুরীর হাত ধরে বললেন,,

“এই সবকিছুর জন্য আমি দায়ী তাই না আয়মান। যদি সেদিন আমি হামিদের কথামতো সব করতাম তাহলে কিছুই হতো না। ঐ আব্দুল রহমান কাদের কিছুই করতো না। ওটা বাদ দিলাম আয়মান আমার দুই মেয়ের জামাই আমার ছোট ছেলে এগুলো কি করতে পারলো। নিশ্চয়ই আমারই কোন ভুল ছিল নাহলে ওরা আমার আপন হয়ে কিভাবে এরকম করতে পারলো।

আয়মান চৌধুরী তার আব্বার হাত শক্ত করে ধরে বলল,,

“না আব্বা কোনকিছুতেই আপনার কোন ভুল ছিল না। আপনি ঠিক ছিলেন ভুল তো তারা ছিল। তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য আজ এই অবস্থায় পৌঁছেছে। তারা নিজেরাই নিজেদের কৃতকর্মের জন্য দায়ী আপনি নন।

“আমার দুই মেয়ের জামাইরাই এখন জেলে তাদের কি হবে এই বয়সে এসে। তারমানে আমি আমার মেয়েদের জন্য সঠিক মানুষ নির্বাচন করতে পারি নি। সেই সাথে আমি আমার ছোট ছেলেকে মানুষ করতে পারি নি। তার জন্য তোমাদের সন্তান কে এই পৃথিবীর আলো দেখার আগেই শেষ করে ফেলেছে। আমি একজন ব্যর্থ পিতা আয়মান। ”

তখন আয়না চৌধুরী আর আশা চৌধুরী সমশের চৌধুরীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসলেন। আশা চৌধুরী বললেন,,

“আপনি ব্যর্থ পিতা নন আব্বা। আমাদের সাথে যা হলো এবং হয়েছে সব আমাদের তকদিরে ছিল। রেজাউল আগে থেকেই লোভী ছিল এটা নতুন নয়। ওকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে এর জন্য ভাববেন না আপনার মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। আপনার মেয়ে ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুব সুখে থাকবে।”

আয়না চৌধুরী বললেন,,

“আপা ঠিক বলেছে । আমরা খুব সুখে থাকবো যে আমাদের মাকে মেরেছে তাদের আমরা মনেই রাখবো না বাবা। তোমার মেয়েরা খুব সুখে থাকবে তুমি দেখে নিও। এতদিন যা যা মেঘের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি সব মায়ের মৃত্যুর জন্য।আমি ভেবেছিলাম ওর জন্যই মা আমাদের মাঝে নেই। ওর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। জানিনা ও ক্ষমা করবে কিনা আমি ওর কাছে মাফ চাইবো বাবা। আমার সব ভুল সুধরে নতুন ভাবে জীবন শুরু করবো‌। তুমি চিন্তা করো না বাবা।”

সমশের চৌধুরী মেয়েদের আগলে নিলেন। কিছুক্ষণ চৌধুরী পরিবারের সবার মেলোড্রামা হলো। সবশেষে সমশের চৌধুরী বললেন,,

“যা হয়েছে হয়েছে আমরা আর পুরোনো কিছু ভাববো না। নতুন ভাবে সব শুরু করবো।”

সবাই সমশের চৌধুরীর কথায় সায় জানালো। সকলে একবার মেঘের সাথে দেখা করতে চাইলো। কিন্তু আয়মান চৌধুরী সবাইকেই বলল আজ ওদের মতো ওদের কে ছেড়ে দিতে। কাল সকালে সবাইকে দেখা করতে।

________________

অতঃপর নতুন সকালের আগমন। মিষ্টি রোদ মুখে পরতেই মেঘ চোখ মুখ কুঁচকে ফেলল। তখন ও কারো আওয়াজ শুনতে পায়,,

“মেঘবালিকা উঠো সকাল হয়ে গেছে তো!”

মেঘ চোখ পিটপিট করে তাকায়। সামনেই ধূসর গোসল সেরে সাদা পাঞ্জাবি আর পায়জামা পরে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে কোন শুভ্র মানব ওর সামনে দাঁড়িয়ে। ধূসরকে এভাবে দেখে মেঘের মুখেও হাসি ফুটে উঠে। ধূসর বলল,,

“শুভ সকাল মেঘবালিকা! এখন উঠে গোসল সেড়ে নাও। ফজরের নামাজ আদায় করতে হবে তো ওটা কাযা হয়ে গেছে। তুমি আর আমি একসাথে ফজরের কাযা নামাজ আদায় করবো।

এবার মেঘের নিজের দিকে খেয়াল হলো। মেঘ লজ্জায় ব্ল্যাঙ্কেট দিয়ে মুখ ঢাকলো। তারপর সব ঠিক করে গুটি গুটি পায়ে ব্ল্যাঙ্কেট থেকে বের হয়ে জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। তা দেখে ধূসর হাসলো। মেঘ গোসল শেষে একটা সাদা রঙের থ্রিপিস পরে বের হলো। একেবারে ওযু করে বের হয়েছে। ধূসর জায়নামাজ বিছিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।যে কাজটা সবসময় মেঘের থাকে আজ ধূসর করছে। আসলে কাল মেঘের প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছিল কিন্তু ও প্রকাশ করে নি। তাই ঘুম থেকে উঠতে দেরি হলো এখনো মাথা ব্যাথা আছে তবে এখনো ও প্রকাশ করছে না। ধূসরকে জায়নামাজ বিছিয়ে রাখতে দেখে মেঘ হেঁসে ড্রয়ার থেকে টুপি বের করে ধূসরের হাতে দিল। ধূসর টুপি পরে মেঘকে নিয়ে নামাজে দাঁড়ালো। অতঃপর দু’জনে একসাথে নামাজ আদায় করে নিল। মেঘ নামাজ শেষ করে বিছানায় বসলো ওর মাথাব্যথা এখন একটু বেড়েছে। ও চুপ করে হেলান দিয়ে বসে আছে। তা দেখে ধূসর বলল,,

“কি হয়েছে?”

“ঐ একটু মাথা ব্যথা করছে?”

“কখন থেকে?”

“তেমন কোন ব্যাপারনা ছাড়ুন তো। আমি ঠিক আছি?”

“সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি এটা কাল ওষুধ না খাওয়ার ফল। কাল রাতে ওষুধ খাওনি এতো ঝামেলায় মাথা থেকে বেরিয়ে গেছিল। তোমার জন্য সময়মতো ওষুধ খাওয়া অনেক জরুরী। একটা ওষুধ মিস হলে তোমার শরীরে দ্রুত ইফেক্ট করবে। অবশ্য তোমার তাতে কি তুমি তো বুঝবে না। যদি নিজের খেয়াল রাখতে একটু। নিষ্ঠুর মেয়ে একটা।

“এটা কিন্তু বেশি বলছেন আপনি। আপনি যখন ছিলেন না তখন আমিই নিজের খেয়াল নিজে রাখতাম।”

“কেমন রাখতে সেটা বুঝতেই পারছি। এখন নিচে চলো খেয়ে তাড়াতাড়ি ওষুধ খেতে হবে নাহলে ব্যাথা আরো বাড়বে পরে সমস্যাও দেখা দিতে পারে।”

“আমি এখন কোথাও যাবো না। আমি এখন আবার ঘুমাবো।”

বলেই মেঘ শুয়ে পড়লো ওর খুব খারাপ লাগছে। ধূসর বুঝতে পারলো মেঘের অনেক খারাপ লাগছে। তাই কিছু বললো না মেঘের ভেজা চুল দেখে ও হেয়ার ড্রায়ার খুঁজতে লাগলো ভেজা চুলে ওর মাথা ব্যাথা আরো বাড়বে। কিছুক্ষণ খুঁজে পেয়েও গেল মেঘ কে বসতে বলল চুল শুকানোর জন্য। কিন্তু মেঘ উঠলো না ধূসর মেঘকে জোর করে উঠিয়ে দিল তারপর যত্ন সহকারে মেঘের চুল শুকিয়ে আবার শুয়িয়ে দিয়ে নিচে গেল। সবে সাতটা বাজে নিচে আসলেও কাউকে পেল না। হয়তো সবাই কালকের ঘটনায় ডিসটার্ভ হয়ে আছে। ধূসর কিচেনে গিয়ে খাবার খুঁজতে লাগলো। পেয়েও গেল কিন্তু সব হেভি খাবার। এগুলো এখন খাওয়া ঠিক হবে না। হুট করে ওর নজর গেল ওপরের তাকে রাখা নুডুলসের ওপর। ধূসর ফটাফট ওটাই রেঁধে ফেললো আর কফি বানালো। ততক্ষনে চৌধুরী বাড়ি ও খান বাড়ির সবাই নিচে নেমে এলো । ধূসর কে সকাল সকাল কিচেনে দেখে সবাই অবাক হলো। মায়মুনা চৌধুরী এগিয়ে গিয়ে বললেন,

“কি ব্যাপার ধূসর তুমি এতো সকালে কিচেনে? কিছু লাগলে আমাদের বলতে তুমি জামাই মানুষ হয়ে কিচেনে এসেছো?”

ধূসর হেঁসে বলল,

“তেমন কোন ব্যাপার না মা। বাড়ির জামাই তো কি হয়েছে মেঘের পরিবার মানেই আমার পরিবার। আর মেঘের বাড়ি মানেই আমার বাড়ি। নিজের বাড়িতে নিজের কিচেনে ঢুকেছি তাতে কি হয়েছে মা। আসলে মেঘ কাল রাতের ওষুধ খায় নি তাই মাথা ব্যাথা করছে সাথে একটু অসুস্থ হয়ে পরেছে। খাবার খায়িয়ে ওষুধ খাওয়াতে হবে। আপনারা কেউ নিচে ছিলেন না তাই তাই কিচেনে এসেছিলাম খাবার খুঁজতে। খাবার পেলাম কিন্তু হেভি খাবার যেটা এতো সকালে খাওয়া উচিত নয়। নুডুলসের দিকে নজর পরতেই ওটায় বানালাম। এখন আমি ওপরে যাই বেশি দেরি করা যাবে না।”

ধূসর নুডুলস নিয়ে ওপরে গেল। সবাই ধূসরের ব্যাবহারে মুগ্ধ এরকম কেউ শ্বশুরবাড়ি কে নিজের ভেবে বউয়ের জন্য রান্না করতে পারে। মেয়ে অসুস্থ শুনে আয়মান চৌধুরী মেয়ের কাছে গেল। মেঘ আধশোয়া হয়ে বসে আছে ধূসর জোর করে মেঘকে খাওয়াচ্ছে। মাথাটা বোধহয় সোজা করতে পারছে না। আবার মেঘ খেতে চাইছে না। দরজায় আয়মান চৌধুরী কে দেখে মেঘ বলল,,

“আব্বা ভেতরে আসুন!”

আয়মান চৌধুরী ভেতরে ঢুকে মেয়ের পাশে বসলেন আর বললেন,,

“আপনি নাকি অসুস্থ? তাই দেখতে এলাম!

“আমি অসুস্থ না শুধু একটু মাথাব্যথা করছিল। তাতেই উনি যা করছে মনে হয় আমি আইসিইউ এর পেশেন্ট। জামাই ডাক্তার হলে অনেক সমস্যা আব্বা। কিছু হলেই বাড়াবাড়ি। এই অতিরিক্ত ভালোবাসা নামের টর্চার আমার আবার সহ্য হয় না।”

তখন ধূসর ধমকে বললে,,

“এই তুমি আব্বা কে কি বললে? আমি তোমাকে টর্চার করি। নিজে তো আমার বউয়ের কেয়ার করবে না। আমি করছি তাতেও ওনার সমস্যা আবার আব্বার কাছে নালিশ দেওয়া হচ্ছে। আমি নাকি উনাকে টর্চার করছি।”

“তো কি করছেন? আমার এখন খেতে ইচ্ছে করছে না জোর করে খাওয়াচ্ছেন। আমার ঘুম পরিপূর্ণ হয় নি আমি আরো ঘুমাবো।”

“হুম ঘুমাও এই সবটুকু শেষ করে ওষুধ খেয়ে তারপর।”

ধূসর আর মেঘের খুনসুটি দেখে আয়মান চৌধুরী হাসলেন। আর বললেন,,

“আম্মা ধূসর ঠিকই বলেছে খেয়ে দেয়ে ওষুধ খেয়ে তারপর ঘুমান। সবথেকে বড় কথা আপনার এখনকার অবস্থা কাল ওষুধ না খাওয়ার ফলে হয়েছে।”

মেঘের আর কি জামাই আর আব্বার ভালোবাসার কাছে নিজেকে পরাজিত করতেই হলো। সে খাবার খেয়ে ওষুধ খেল। কিন্তু ঘুমাতে গিয়েও কি ভেবে ঘুমালো না। একটু ভালো লাগতেই সোজা নিচে গেল। সবাই নিচেই আছে এখন মেঘকে নিচে নামতে দেখে ধূসর এগিয়ে আসতে চাইলো মেঘ মানা করলো সে গিয়ে তার চার বান্ধবীর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,,

‘মাই ডিয়ার বান্ধবীগন একটু বাগানে আসেন। কিছু কথা বলার ছিল।”

মেঘ বাইরে বাগানে চলে গেল। সাথে তার চার বান্ধবী ও গেল। মেঘ গিয়ে বেতের সোফারাখা আছে সেটায় বসলো শরীর খুব একটা ভালো না তাই। হির গিয়ে মেঘের পাশে বসে বলল,,

“নে আমার ঘাড়ে মাথা রাখেন আপামনি। আপনার না মাথা ব্যাথা।”

মেঘ হেঁসে মাথা রাখলো । তখন জাবিন বলল,,

‘কি বলবি বলে ফেল তারপর রুমে গিয়ে রেস্ট নে। এই শরীরে উনি এসেছেন কথা বলতে।”

তখন লিয়া বলল,,

“একটু নিজের খেয়াল যদি রাখে। সারাদিন শুধু বলবে কিছুই করতে হবে না জীবন তো জীবনের মতো চলবে। বলি জীবন তো জীবনের মতো চলবেই কিন্তু একটু ভালো থাকার জন্য সুস্থ থাকার জন্য একটু নিজের খেয়াল রাখতে হবে তো।”

তখন নীলি বলল,,

‘ভাইয়া একদম ঠিক বলে নিষ্ঠুর মেয়ে। নিজের প্রতিই তার যতো নিষ্ঠুরতা।’

বান্ধবীদের কথা শুনে মেঘ হাসে। মেঘ বলল,,

“তোরা একটু এগিয়ে আয়। যাতে তোদের চারজন কে আমি একসাথে জড়িয়ে ধরতে পারি।

মেঘ উঠে দাঁড়ালো মেঘের চার বান্ধবী গিয়ে মেঘকে জড়িয়ে ধরলো। তখন মেঘ বলতে শুরু করল,,,

“আমার জীবনে আসার জন্য অনেক অনেক শুকরিয়া। এই নিষ্ঠুর মেয়েটার পাশে সবসময় থাকার জন্য শুকরিয়া। সবসময় হাসিখুশি রাখার জন্য শুকরিয়া।এতো এতো খেয়াল রাখার জন্য শুকরিয়া। কাঁদতে চাইলে নিজেদের কাঁধ দেওয়ার জন্য শুকরিয়া। জীবনে যতো খারাপ সময় এসেছে শক্ত করে আমার হাত ধরে রাখার জন্য শুকরিয়া। সবাই বলে এমনি অনেকগুলো বন্ধু থাকলেও বেস্টফ্রেন্ড একটাই থাকে। কিন্তু আমার বেলায় নয় আমার চারজন বন্ধুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আর এই চারজন বন্ধুই আমায় একভাবে ভালোবাসে কেয়ার করে। আমি খুব লাকি যে তোদের মতো চারজন বন্ধু পেয়েছি। আমি সব জায়গায় হেরে গেলেও বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার কাছে জিতে গেছি। তোরা তোদের কথা রেখেছিস তোরা আমায় ছেড়ে যাসনি। আমি তোদের খুব ভালোবাসি । শুকরিয়া সবকিছুর জন্য।”

মেঘ ওদের ছেড়ে দিল সবার অপত্যাশিত ভাবে এভাবে শোনার জন্য খুশিতে তাদের চোখ ভরে উঠলো। সবাই খুব খুশি। সবাই একসাথে বলে উঠলো,,

“আমরাও তোকে খুব ভালোবাসি।”

হুট করে হির বুকে হাত চেপে দাঁড়িয়ে তা দেখে মেঘ বলল কি হয়েছে,,

“কি হয়েছে?’

“আর বলিস না দোস্ত। আজ আমগো নিষ্ঠুর বান্ধবী জীবনে প্রথমবার ভালোবাসি বলছে । খুশির ঠেলায় হার্ট অ্যাটাক না করি এই জন্য আগে থাকতেই হাত দিয়ে ধরে রাখছি।”

হিরের কথা শুনে সবাই হেঁসে উঠল। মেঘ আবার সবাই কে জড়িয়ে। এভাবে বান্ধবীদের ভালোবাসি আর শুকরিয়া কতোজনেই বা বলতে পারে। বন্ধুত্ব শুরু থেকে শেষ হয়ে যায় তবুও হয়তো বলা হয়ে উঠেনা শুকরিয়া আমার জীবনে আসার জন্য। অতঃপর চার বান্ধবী মিলে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে ভেতরে গেল। এখন মেঘের ভালো লাগছে ওষুধ যে পেটে পরেছে। মেঘকে দেখে মায়মুনা চৌধুরী বললেন,,

‘মেঘ তোমার বান্ধবীদের নিয়ে খেতে বসো।”

“আমি এখন খাবো না একটু আগেই খেয়েছি ওদের খেতে দিন।”

মেঘ হিরদের খেতে পাঠিয়ে দিল। সকলে ড্রাইনিং টেবিলে বসেছে। মেঘ সোফায় বসলো দিলরুবা খানমের কাছে কারন তারা মহিলারা পরে খাবে। তখন লিলি এলো মেঘের কাছে। মেঘ লিলিকে কোলে নিয়ে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। দিলরুবা খানম বললেন,,

“তো মেঘ এখন কেমন লাগছে?”

“আলহামদুলিল্লাহ ভালো মা। তবে এখন আপনার কাঁধে মাথা রাখতে ইচ্ছে করছে রাখি?”

“তা আর বলতে অবশ্যই!”

মেঘ দিলরুবা খানমের কাঁধে মাথা রেখে গল্প করতে লাগলো। মায়মুনা চৌধুরী দেখলেন তার খারাপ লাগছে। কিন্তু তিনি এটা ভেবে খুশি হলেন তার মেয়ে জীবনে অনেক কষ্ট পেলেও আর পাবে না ও ভালো একটা পরিবার পেয়েছে। সবার খাওয়া শেষ হলে সবাই সোফায় এসে বসলো যারা খায় নি তারা এখন খাবে। মেঘ সমশের চৌধুরীর কাছে গিয়ে কথা বলতে লাগলো। তখন হুট করে আয়না চৌধুরী মেঘের কাছে এসে ক্ষমা চাইলেন। মেঘ প্রথমে অবাক হলেও পরে বুঝলো মেন কাহিনী মেঘ কিছুই বললো না মুচকি হেসে চলে গেল। সেদিন খান বাড়ির সবার সাথে মেঘ ও চলে গেল। পরের দিন মেঘ গেল আতাউর রহমানের কাছে মেঘকে দেখেই তিনি গর্জে উঠলো। আর বলল,,

“এখানে কি দেখতে এসেছো তুমি? আমি একবার শুধু বের হই মেঘ। তোমাকে কি করবো তুমি ভাবতেও পারবে না।”

মেঘ হেঁসে বলল,,

“আগে বের হয়ে তো দেখান তারপর দেখা যাবে‌। আপাতত নিজের কথা চিন্তা করুন।সব থেকে বড় কথা আপনি A.R.K অন্ধকার জগতের বস সেটাও আমি প্রমান করে দেব। এতগুলো অভিযোগ আপনার নামে আপনি কোনটা কোনটার জন্য ছাড়া পাবেন A R.K……

“আমি A .R.K নই আমি শুধু বিজনেস ম্যান আতাউর রহমান।”

“ঐ আকাশ আপনার সব তথ্য দিয়ে দিয়েছে। মিস্টার A.R.K যাস্ট ওকে বলা হয়েছিল ওকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

“বিশ্বাসঘাতক আমি ওকে ছাড়বো না। ওর জন্য আমার সব প্ল্যান ভেস্তে গেল।”

“তার মানে আপনি মেনে নিলেন আপনি A.R.K ……

“মানে?”

“মানে হলো আকাশ কিছুই বলে নি আপনিই স্বীকার করলেন আপনি কে? আপনি নয়নার বাবা এটা সবাই জানে তাই না। আপনাকে ধরা দুই মিনিট এর ব্যাপার। অফিসার সব রেকর্ড করেছেন তো।”

তখন আড়াল থেকে একজন বের হয়ে বলল,,

“ইয়েস ম্যাডাম!”

আতাউর রহমান মেঘের দিকে আসতে নিলেই অন্যান্য পুলিশরা এসে ওনাকে ধরে। মেঘ হেঁসে বলল,,

‘আচ্ছা বাই হ্যাপি জার্নি।”

মেঘ চলে গেল সেদিনের মতো। অতঃপর দুই দিন পর কেস কোর্টে উঠলো। চৌধুরী পারিবারের সকলেই এসেছে কোর্টে। মেঘ আর ধূসর উপস্থিত হলো। এবং মেঘ যে লয়ার হিসেবে কেস লড়বে এটা শুনে সবাই অবাক হলো আয়মান চৌধুরী আর সমশের চৌধুরী ছাড়া কেউ জানতোই না মেঘ একজন নামকরা লয়ার। কোর্টের সময় হয়ে এলে মেঘ এক এক করে সবকিছুর প্রমান দিলো। রেজাউল করিম আশরাফ হক শাফিয়ান চৌধুরীর মোবাইল রেকডিং শোনানো হলো আতাউর রহমানের কিছু ভিডিও দেখানো হলো। আর আতাউর রহমানই যে A.R.K সেটা প্রমান করে দিল। মেঘ প্রথম A.R.K দেখেছিল যখন প্রথম বার ওকে কিডন্যাপ করা হয়েছিল নয়না আর আকাশ গাড়ি থামিয়ে ওনার সাথে কথা বলছিল। উনি মেঘকে না দেখলেও মেঘ ঠিকই দেখতে পায় ওনাকে তাই তো মুনের বিয়েতে দেখে চমকে গিয়েছিল। বিভিন্ন প্রমানের ভিত্তিতে ওনারা দোষী সাব্যস্ত হলো। সবাইকে আইন অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করা হলো। চৌধুরী বাড়ির সকলেই মেঘকে ধন্যবাদ জানিয়ে চলে গেল। মেঘ বুঝতে পারলো তার আব্বার এখন তাকে দরকার। তাই ধূসরকে বাড়ি যেতে বলে মেঘ আয়মান চৌধুরীকে নিয়ে একটা পার্কে গেল। কতোগুলো বাদাম কিনলো আর আয়মান চৌধুরীর হাতে দিয়ে বলল,,

“নিন আব্বা খোসা ছাড়িয়ে দিন আমি বাদাম খাবো।”

আয়মান চৌধুরী খোসা ছাড়িয়ে মেয়ের হাতে বাদাম দিয়ে বলল,,

“আম্মা দুনিয়াটা বড় আজব। মানুষের শুধু চাই আর চাই। এই চাওয়া পাওয়ার জন্য কতোকিছু না মানুষ করে ফেলে। তারপর সবথেকে বড় কথা প্রতিহিংসা এটা মানুষ কে কতটা নিচে নামিয়ে দেয়। আজ এই লোভ আর প্রতিহিংসার কারনে এসব হয়েছে।”

মেঘ বাদাম মুখে দিয়ে বলল,,

“মানুষ শুধু দুনিয়াবির চিন্তা করে। তারা আখিরাত কে ভুলে যায়। দুনিয়ার একটু সুখে থাকার জন্য কতোকিছু করে। লোভ হিংসা বিদ্বেষ মানুষের ঈমান নষ্ট করে ফেলে এবং আমাদের কলব কে মেরে ফেলে। তখন তারা কি করে হীতাহিত জ্ঞান থাকে না।তারা এটা ভাবে না। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কারো সম্পর্কে (মন্দ) ধারণা হতে বেঁচে থাক। কেননা ধারণা বড় ধরনের মিথ্যা। কারো কোন দোষের কথা জানতে চেষ্টা কর না। গোয়েন্দাগিরি কর না, ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকাবাজি কর না, পরস্পর হিংসা রেখ না, পরস্পর শত্রুতা কর না এবং একে অন্যের পিছনে লেগ না। বরং পরস্পর এক আল্লাহর বান্দা ও ভাই ভাই হয়ে থাক। অপর এক বর্ণনায় আছে, ‘পরস্পর লোভ-লালসা কর না’। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, বাংলা মিশকাত হা/৪৮০৮)।

একদম কষ্ট পাবেন না আব্বা তারা তাদের কৃতকর্মের শাস্তি পাচ্ছে।”

“আম্মা আপনার কাঁধে একটু মাথা রাখি!”

মেঘ হেঁসে সায় জানালো। আয়মান চৌধুরী কাঁধে মাথা রেখে বললেন,,

“আপনি আমার সুখ আম্মা। আপনার কাঁধে মাথা রেখে আমি পৃথিবীর সবথেকে সুখ অনুভব করি। আপনার সাথে কথা বললে মনটা খারাপ থাকলেও ভালো হয় যায়। আপনি আমার অভিভাবক এর ন্যায় সর্বদা আমার খেয়াল রাখেন। আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি আম্মা।”

“আমিও আপনাকে খুব ভালোবাসি আব্বা।”

বাবা মেয়ে আরো কিছুক্ষণ নিজেদের মতো প্রকৃতি বিলাস করে নিজেদের গন্তব্যে চলে গেল।

_______________

দুই মাস পর,,

সবার জীবন তার অতীত কে ফেলে সামনে এগিয়ে গেছে। কেউ তাদের অতীত ভাবতে চায় না। সবাই নিজেদের খুশি রাখতে জীবনকে সুন্দর ভাবে এগিয়ে নেওয়ার প্রয়াস করছে। ধূসর আর মেঘ আজ সারা দিন নিজেদের মতো সময় কাটাবে। দু’জনেই দু’জনের দেওয়া শুভ্র পাঞ্জাবি আর শুভ্র শাড়ি হিজাব নিকাব পড়ে পরে রেডি। আজ তারা তাদের সেই লেকে যাবে। ওরা দুজনে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বের হলো। রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ধূসর একটা বেলী ফুলের মালা, কয়েকটা লাল গোলাপ আর কতোগুলো রঙ বেরঙের বেলুন কিনলো। তারপর চলে গেল তাদের কাঙ্খিত জায়গায়। আশেপাশে কেউ নেই। ধূসর বেলুন গুলো হাতলে বাঁধলো। ধূসর আর মেঘ বেঞ্চে বসে পড়লো। ধূসর হেঁসে বলল,,

“মেঘবালিকা তোমার হাত দাও!”

মেঘ মুচকি হেসে হাত বাড়িয়ে দিল। ধূসর মেঘের হাতে বেলী ফুলের মালা পরিয়ে দিল। আর গোলাপগুলো মেঘের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,,

“এই লাল গোলাপ নিষ্ঠুর মেয়েটার জন্য। যদি এই লাল গোলাপ দিয়ে তার মুখে ভালোবাসার ফুল ফোটে।”

মেঘ মুচকি হেসে বলল,,

“বলুন তো আজ এই ভাবে এখানে এসেছি কেন?”

“কেন আবার কয়েকমাস আগে যখন আমরা অপরিচিতভাবে এসেছিলাম সেদিন আমাদের আকদ হয়েছিল সেই তারিখ টা ছিল। আর আমরা সবসময় সেই দিনটাকে গোলাপ বেলুন আর শুভ্র রঙের পাঞ্জাবি,শাড়ি পরে সেলিব্রেট করতাম। সারাদিন নিজেদের মতো কাটাতাম। সেদিন পারি নি তাই আজ এসেছি।”

মেঘ হেঁসে বলল,,

“আজ সেই কারনটা থাকলেও আরেকটা কারনে এসেছি?”

“কি কারন?”

মেঘ ধূসরের মুখোমুখি বসলো ওর দুই কাঁধে হাত রেখে বলল,,

“আজ নিষ্ঠুর মেয়েটা তার নিষ্ঠুর মেয়ে উপাধিকে মুছে ফেলবে তার ভালোবাসার প্রকাশের মাধ্যমে আর একটা সুসংবাদ দেবে।”

ধূসরের ভেতরে খুশির জোয়ার বইতে লাগলো। এই দিনটার জন্য সে কতোদিন অপেক্ষা করছে। ধূসর মেঘের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘ মুচকি হেসে বলল,,

“আপনাকে প্রথম দেখেছি শীতের মাঝে বৃষ্টির ভাঁজে,
তারপর দেখেছি নিজের কাজে মত্ত হতে কোন রাস্তার মাঝে। তারপর দেখেছি কখনো বাড়িতে, কখনো ছাদে কখনো সামনের রাস্তায়। কিন্তু,

ভালোবাসা এসেছিল চুপিসারে
চোখে চোখে দেখে দেখি তে
আমি বুঝিনি
ভালোবাসা এসেছিল অভিসারে
আমি তার গভীরতা খুঁজিনি।
আপনি মুখ ফিরেয়ে নিতেন
অভিমানে কখনো নিষ্ঠুর মেয়ে উপাধি
দিয়ে কখনো চোখ সরিয়ে নিয়ে
কিন্তু কখনো অভিমান ভাঙাতে
আমি ভালোবাসি বলিনি।
কারন আমি মনে করি মুখে বলার
চেয়ে কাজে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ প্রকাশ শ্রেয়!
শুনেছি কবিতায় নাকি
বেশি ভালোবাসা প্রকাশ করা যায়
তাই তো আপনাকে রেখেছি আমার কবিতায়।
সবশেষে আমার ভালোবাসা আপনাতে শুরু
আপনাতেই সমাপ্তি
আপনি আমার জীবনের
সবথেকে সেরা বড়প্রাপ্তি
জীবনের শেষে আমি
আপনাকেই ভালোবেসে
করতে চাই এক সুন্দর সমাপ্তি
আপনি আমার মুগ্ধতা আর স্নিগ্ধ হাসি
শুনুন আমার একান্ত
মেঘ রাঙা ধূসর গোধূলি
আমি আপনাকে ভালোবাসি !

ধূসর মুগ্ধ হয়ে মেঘের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। এই কথাগুলো যেন ওকে চারপাশ থেকে ভালোবাসায় মুড়িয়ে রেখেছে। ধূসর মুগ্ধ চোখে বলল,,

“আমার প্রকাশিত ভালোবাসার চেয়ে তোমার অপ্রকাশিত ভালোবাসার গভীরতা বেশি।
শুনো মেঘবালিকা আমিও
তোমায় অনেক ভালবাসি।

তখন মেঘ মুচকি হেসে বলল,,

“আপনার আগমন আমার জীবনে বসন্তের মতো। যা আমাকে সারাজীবন আঁকড়ে রাখে। যার রেশ আমায় মন খারাপে ডুবতে দেয় না। যার ভালোবাসায় আমার শহর বড্ড রঙিন। এই ধূসর রাঙা মেঘ ছিল বড্ড বেরঙিন কিন্তু আপনার আগমনে আপনার ভালোবাসার রাঙানো মেঘ আজ বড্ড রঙিন।
হয়তো আমি ধূসর রাঙা মেঘ
আপনি মেঘ রাঙা ধূসর গোধূলি!

মেঘ ধূসরকে ছেড়ে উঠে সামনে নদীর তীরে দাঁড়ালো। ধূসর পেছন থেকে মেঘকে জড়িয়ে ধরে বলল,,

“আজ আমার নিষ্ঠুর মেয়ে উপাধি তুলে ফেললাম মেঘবালিকা। এখন আমার সুংসবাদ দাও আমি কিন্তু ভুলিনি।

মেঘ মুচকি হেসে বলল,,

“আমাদের মাঝে এক ছোট্ট ধূসরের আগমন ঘটতে চলেছে জনাব।”

হুট করে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে কাঙ্ক্ষিত কিছু পেয়ে ধূসর থমকে গেল। মেঘকে ছেড়ে নিজের দিকে ঘুরিয়ে মাথা নাড়িয়ে জিজ্ঞেস করল যা বলছে সত্যি কি না। মেঘ হেঁসে মাথা নাড়ালো তারমানে সত্যি। ধূসর খুশিতে মেঘকে কোলে নিয়ে ঘুরাতে লাগলো। ধূসরের এতো খুশি দেখে মেঘ ও হাসলো। কিছুক্ষণ পর ধূসর সাবধানে মেঘকে বেঞ্চে বসিয়ে কপালে একটা চুমু দিয়ে বলল,,

‘আজ আমি কতটা খুশি তুমি ভাবতেও পারবে না। কতোদিন হয়েছে?”

“এক মাস! কালকেই জানতে পারলাম।”

“সব ঠিক আছে কিন্তু তুমি ছোট্ট ধূসর কেন বললে? আমি ছোট্ট মেঘবালিকা চাই। দেখো ছোট্ট মেঘবালিকা আসবে।”

“না ছোট্ট ধূসর আসবে!”

“না মেঘবালিকা আসবে!”

কিছুক্ষণ খুনশুটি করার পর দুজনে একসাথে বলল,,

“আচ্ছা যেই আসুক সে আমাদের চোখের মনিই থাকবে। আমরা দুজন তাকে খুব ভালোবাসবো। আমাদের তিনজনের অনেক সুন্দর একটা ছোট্ট পৃথিবী থাকবে।”

দু’জনেই একসাথে বলে একসাথে হেসে উঠলো। ধূসর বসে মেঘকে একহাত দিয়ে জড়িয়ে বলল,,

“ভালোবাসি মেঘবালিকা!”

“ভালোবাসি আমার জীবনসঙ্গী আমার ধূসর !”

~ ভালোবাসা সুন্দর যদি মানুষ টা সঠিক এবং সম্পর্কটা পবিত্র হয়। সাময়িক সুখের জন্য হারামে লিপ্ত না হয়ে সার্বজনীন সুখের জন্য সবার অপেক্ষা টা হোক হালালের প্রতি।

~~~সমাপ্ত ~~~

বিঃদ্রঃ আসসালামু আলাইকুম। পরিস্থিতির চাপে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে সময়ের অভাবে গল্পের সমাপ্তি হলো। গল্পটা কেমন হলো অবশ্যই জানাবেন। আপনাদের মতামত জানার জন্য অপেক্ষা করবো। খুব খারাপ লাগছে এভাবে শেষ করতে কারন এই গল্পটা শুরুর আগে অনেক কিছু ভেবে রেখেছিলাম। জানিনা কতোটুকু কি করতে পেরেছি। কিছু জিনিস মিস হয়ে যেতে পারে এই জন্য আমি দুঃখিত। জানিনা আপনাদের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী গল্পটা শেষ করতে পেরেছি কি না। কোন কিছু ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। মেঘ আর ধূসর বড্ড ভালোবাসার আর শখের। এবং গল্পটাও আমার খুব শখের। প্রথম থেকে যারা গল্পটার সাথে ছিলেন সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং ভালোবাসা। নিজেদের খেয়াল রাখবেন এবং ভালোবাসা নিবেন এই লেখিকার থেকে। সবাই একটু লেখিকার জন্য দোয়া করবেন। সবশেষে পাঠকমহলের প্রতি ভালোবাসা অবিরাম!❤️🥀

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে