#ধূসর_রাঙা_মেঘ_২
#পর্ব_৪
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি
মাগরিবের নামাজ শেষ করে মেঘ নিচে নামলো কফি খাওয়ার জন্য। কিচেনে গিয়ে দেখলো মায়মুনা চৌধুরী চা বানাচ্ছে। মেঘকে দেখে মায়মুনা চৌধুরী বলল,,
“তুমি এখানে?”
“কেন আসতে পারি না বুঝি। ভয় পাবেন না আপনার কিচেন জ্বালিয়ে দেব না। ”
“আমি সেভাবে কিছু বলি নি। আমি বলতে চাইছিলাম কি দরকারে এসেছো?
“আপনি তো বলেন নি কোন কিছু দরকার কি না? আপনি বলেছেন তুমি এখানে তাহলে।”
মায়মুনা চৌধুরী কিছু বললো না। নিজের কাজ করতে লাগলো চা বানানো শেষ এখন কাপে ঢালছে। তা দেখে মেঘ বলল,
“কফি বানাতে এসেছিলাম।”
“আমি সবার চা বানাচ্ছিলাম।”
“আমার জন্যও নাকি?”
“তুমি চাইলে খেতে পারো?”
“লাগবে না আপনি যান আমি আমার কফি বানিয়ে খেতে পারবো।”
মায়মুনা চৌধুরী একবার মেঘের দিকে তাকিয়ে চলে গেল ট্রে নিয়ে। বাকিরা সবাই আস্তে আস্তে নিচে নেমে এলো। এই সময়টা সবার চা খাওয়ার সময়। মেঘ দীর্ঘশ্বাস ফেলে দুই কাপ কফি বানিয়ে নিল কারন আয়মান চৌধুরীও কফি খাবেন। সবাই চা খাচ্ছে আয়মান চৌধুরী বাদে তিনি আর সমশের চৌধুরী একটা সোফায় বসেছে । মেঘ গিয়ে মাঝখানে বসে পরলো। আর আয়মান চৌধুরীর দিকে কফি এগিয়ে দিল। আয়মান চৌধুরী মুচকি হেসে কফি নিল। তখন সমশের চৌধুরী বললেন,,
“মেঘ আবার কফি বানানোর কি দরকার ছিল?”
“দরকার ছিল দাদুভাই। কারন আমি আর আব্বা এই সময় এতদিন কফি খেয়েই এসেছি। এখন এ বাড়িতে এসে হুট করে নিজের পছন্দ বদলাতে পারবো না তাই না।”
“বুঝতে পেরেছি তো সবাই যখন এখানে আছো তাহলে তোমাদের সবাইকে একটা সিদ্ধান্ত জানাতে চাই। কাল থেকে আয়মান আমাদের অফিসে বসবে।”
এ কথা শুনে কিছু লোকের যেন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। তখন আয়মান চৌধুরী বলল,,
“আব্বা আমার সময় হবে না। কারন আমি আমার অফিস থেকে সময় বের করতে পারবো না। ওটা এতদিন যেমন শাফিয়ান দেখছিল তেমনটাই দেখবে না হয়। তাছাড়া ওর সাথে দুলাভাই তো আছে দেখাশোনা করছে।”
“আচ্ছা ঠিক আছে বসতে হবে না। তুমি না হয় সবকিছু দেখে নিও একবার করে। এটা তো তোমারও অফিস।”
“না আব্বা আমার অফিস নয়। আমি সেই অফিস ছয় বছর আগেই পরিত্যাগ করেছি। এবং নিজের বিজনেস দাড় করিয়েছি। যার মাধ্যমে এখন আমি একজন সফল বিজনেসম্যান।”
তখন শাফিয়ান চৌধুরী বললেন,,
“তাছাড়া ভাইয়া বসবে কিভাবে? এতবছর ধরে আমি আর রেজাউল ভাইয়া অফিসের সবকিছু দেখছি হুট করে তো বুঝতেও পারবে না ভাইয়া।”
“একজন সফল বিজনেসম্যান এর কাছে বিজনেস বোঝা কঠিন ব্যাপার নয়। ছয় বছর আগে আয়মান যেভাবে বিজনেস সামলাতো তোমাকে দায়িত্ব দেওয়ায় পর কি সেই ভাবে পালন করতে পারছো? আমরা তো উপরে উঠতেই পারছি না মনে হচ্ছে নিজেদের দাড় করানো বিজনেসটা নিচের দিকে নামছে।”
এ কথা শুনে শাফিয়ান চৌধুরী মাথা নিচু করে ফেলল তখন রেজাউল আহমেদ বললেন,,
“বিজনেসের অবস্থা একদম ভালো না বাবা। তাই তো আমি আর শাফিয়ান মিলেও কিছু করতে পারছি না। আজকাল বিজনেসের সাথে রাজনীতি যুক্ত হয়েছে।”
“এই তোমাদের এক্সকিউজ শুরু হয়ে গেল। আয়মান তুমি বলো কি করবে?
“আমি অফিসে বসবো না আব্বা। আমি আমার বিজনেসটাই দেখবো।”
তখন আয়না চৌধুরী বলল,,,
“ভাইয়া বসে পড়ো অফিসে। এখানে বসলে তুমি আবারও তাড়াতাড়ি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। তুমি কি বিজনেস করো ? তোমার কম্পানির নাম ও শুনলাম না কোথাও? আমাদের এত বড় চৌধুরী ইন্ড্রাস্ট্রিজ যা সবাই এক নামে চিনে এখানে বসলে তোমারই লাভ হবে।”
এতক্ষন চুপ করে থাকলেও মেঘ এখন বলল,,
“কেন? আমার আব্বার নাম কি কম নাকি? আমার আব্বাকে আয়মান চৌধুরী নামে সবাই একনামে চেনে। কি বললেন? আমার আব্বার কম্পানির নামও শুনেননি। শুনবেন কিভাবে? আমার আব্বার কম্পানির নাম জানেন আপনি। তাছাড়া আমার আব্বা অন্যের বিষয়ে নিজের নাম কামায় না। সে নিজের কাজের মাধ্যমেই নিজেকে আলোকিত করতে ভালোবাসে অন্যের আলোয় নয়। তাছাড়া আমার আব্বার লাভের দরকার নেই তাই না আব্বা?
আয়মান চৌধুরী হেঁসে বললেন,,
“একদম তাই!”
তখন সমশের চৌধুরী মেঘের কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলল,,
“কি করছো মেঘ?”
তখন মেঘ ও ফিসফিস করে বলল,,
“আহ হা দাদুভাই আপনি টেনশন কেন নিচ্ছেন? যা হবে ভালো হবে আপুর বিয়েটা ভালোভাবে মিটতে দিন। তারপর থেকে দেখুন না কি কি হয়।”
মেঘ সরে আসলো বাকি সবাই অবাক চোখে দেখলো। তখন সমশের চৌধুরী আবার বলল,,
“আচ্ছা আয়মান যেহেতু পারবে না তাহলে আর বলে লাভ নেই।”
তখন মেঘ বলল,,
“আপনাদের আর কোন জরুরি কথা না থাকলে আমি ওপরে যেতে পারি।’
তখন জায়মা বলল,,
“একদম না মেঘ এখন আমরা সবাই আড্ডা দেব। তুই ওপরে যাবি না।”
“আচ্ছা ঠিক আছে। তবে আমার কাজ আছে আমি তাড়াতাড়ি চলে যাবো কিন্তু!”
“আচ্ছা ঠিক আছে!”
তখন সমশের চৌধুরী বললেন,,
“আমিও আমার নাতি নাতনিদের সাথে আড্ডা দিতে চাই। আমি কি তোমাদের সাথে জয়েন হতে পারি?”
এ কথা শুনে সবাই হা হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইল। কারন সমশের চৌধুরী সবসময় নাতি নাতনিদের থেকে দূরে থাকতেন কারন কেউ ভয়ে তার কাছে ঘেঁষতো না। তখন মেঘ বলল,,
“কেন নয় দাদুভাই।”
“তো বড়রা তোমাদের এখানে থাকতে ইচ্ছে হলে থাকো নাহলে চলে যাও। কিন্তু আমাদের ডিসটার্ভ করা যাবে না। এখন আমি আমার নাতি নাতনিদের সাথে আড্ডা দেব।”
বড়রা সবাই নিজেদের কাজে চলে গেল আবার কতোজন বসেও রইলো। সমশের চৌধুরী আয়মান চৌধুরী কে সরিয়ে মেঘকে নিয়ে জায়মাদের কাছাকাছি সোফায় বসলেন। সবাই চুপ করে আছে কি বলবে বুঝতে পারছে না। তখন মেঘ বলল,,
“দাদুভাই আপনাকে ভয় পেয়ে সবাই চুপ করে আছে।”
“কেন আমি বাঘ না ভাল্লুক যে ভয় পাবে?”
তখন শায়লা বলল,,
“আসলে নানাভাই তুমি তো তেমন আমাদের সাথে মিশতে না তাই কেমন যেন লাগছে।”
“সত্যি বলতে গেলে আমার গিন্নিকে হাড়িয়ে, আমি খুব একা হয়ে পরেছিলাম। সারাক্ষণ তাকে ভোলার জন্য কাজ নিয়ে পরে থাকতাম। ঐ ঘটনার পর বাচ্চা সহ্য হতো না আমার। তাই তোমাদের থেকে দূরে থাকতাম। তবে আমি কিন্তু মানুষ টা খারাপ না।”
এ কথা শুনে মেঘ অন্য দিকে তাকালো। তখন জায়মা বলল,,
“দাদুভাই তোমাদের তো এরেঞ্জ ম্যারেজ ছিল তাই না। দাদি তো আমাদের গল্প বলতো তুমি নাকি একদিন দাদিকে ভুত ভেবেছিলে গাছে চড়েছিল বলে।”
“তো ভাববো না তোমার দাদি ছিল গ্ৰামের চঞ্চল মেয়ে। নতুন নতুন বিয়ে হয়েছে। সে ভরদুপুরে বাড়ির ভেতরে আম গাছে ছিল। সে কাঁচা আম পারতে গাছের মাথায় উঠেছিল পাতার জন্য তার শুধু পা দেখা যাচ্ছিল। আমি দুপুর বেলা কাজ থেকে ফিরে হুট করে গাছের দিকে তাকাতেই শুধু পা দেখে ভয়ে চিৎকার দিয়েছিলাম। গ্ৰামের মানুষ ভুতের ভয় তো থাকবেই তাই না। কি বোকা ছিলাম ভাবতেই হাঁসি পায়। সেদিন ও কি দিন ছিল।
বলেই তিনি হাসলেন সবাই মুগ্ধ চোখে তার হাঁসি দেখলো। তখন কোথা থেকে আজান এসে বলল,
“বাহ ইন্টারেস্টিং তো। দাদুভাই আমি ভাবছি আমার বউয়ের জন্য এখনই একটা আম গাছ লাগাবো। তোমার এই ব্যাপারটা বোঝার জন্য আমার বউকে শাড়ি পড়িয়ে গাছে উঠিয়ে দেব। তারপর তাকে দেখে ভয় পাওয়ার এক্টিং করবো। তারপর আমিও আমার নাতি নাতনিদের গল্প শোনাবো।”
এ কথা শুনে সবাই হাসলো কিন্তু মেঘ তার চিরচেনা মুচকি হাসিটাই হাসলো। হুট করে মেঘের লিলি আর গোলাপ গুলোর কথা মনে পড়লো। মেঘ বলল,,
“দাদুভাই তোমরা আড্ডা দাও আমি যাচ্ছি।”
“আরো বসো না এখন তো আমি ভাবছি বুদ্ধির খেলা খেলবো। ”
“এই মেঘ বোস তুই সবসময় শুধু পালাই পালাই করিস।”
শায়লার ধমকে মেঘ আবার বসলো। তখন সমশের চৌধুরী বললেন,,
“তো আমি দশটা প্রশ্ন করবো। যে সবথেকে বেশি উত্তর দিতে পারবে তার জন্য একটা গিফট থাকবে। তবে হ্যা ফোন ইউজ করা বা কারো কাছে জিজ্ঞেস করা যাবে না।
সবাই ‘ঠিক আছে” বলল, সবাই গিফট পাওয়ার কথা শুনে খুশি হয়ে গেল। তখন জিয়ান বলল,,
“তাহলে তো গিফটা আমিই পাবো কারন আমি এখানে সবথেকে বেশি ইন্টেলিজেন্ট।”
“এই আইছে গোবর পচা মাথা নিয়ে বলতে আমি সবথেকে ইন্টেলিজেন্ট !”
“জায়মা আপু একদম ইনসাল্ট করবে না। ”
তখন মেঘ বলল,,
“আচ্ছা প্রশ্ন শেষ হলেই তো বোঝা যাবে তোমরা ঝগড়া করছো কেন?”
“মেঘ একদম ঠিক বলেছে জিয়ান তুই হম্বিতম্বি না করে বসে থাক।”
সমশের চৌধুরী বললেন,,
“তো তোমাদের সবার প্রথম প্রশ্ন হলো এই, এমন কোন Word আছে যার মধ্যে সবগুলো Vowel আছে? ”
সবাই ভাবতে লাগলো কি হতে পারে। মেঘ হাসলো শুধু বাকিরা ভাবতে লাগলো তিন মিনিট পর সবাই হাল ছেড়ে বলল জানি না। তখন সমশের চৌধুরী বললেন,,
“মেঘ তুমি কিছুই বললে না তারমানে তুমি জানো এর উত্তর কি?”
“হ্যা দাদুভাই উত্তর হলো education. এই ইডুকেশন word টায় পাঁচটা Vowel – ই আছে। a.e.i.o.u সবগুলোই।”
তখন সমশের চৌধুরী হেঁসে বলল,,
“আমি জানতাম তুমি পারবে।”
তখন আজান বলল,,
“আরে মেঘ আপু তুমি তো জিনিয়াস । আমার মাথাতেই আসে নি।”
সবাই মেঘের বাহবা দিল। তখন সমশের চৌধুরী বললেন,,
“আচ্ছা তো এবার দ্বিতীয় প্রশ্ন , আল কুরআন এ কোন সূরায় দুই বার ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ আছে?”
এটা শুনে সবাই আগেই বলল পারবেনা তখন মেঘ বলল,,
“সূরা নামল এ!”
“ওকে তৃতীয় প্রশ্ন আল কুরআন এ মোট কয়বার বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আছে?”
তখন জিয়ান তাড়াতাড়ি করে বলল,,
“১১৫ বার।”
“ভুল উত্তর!” তখন আজান বলল,,
“আমি জানি, ১১৪ বার কারন সূরা নাজমে দুইবার বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম থাকলেও সূরা তওবা তে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম নেই। তাই মোট ১১৪ বার।”
“মাশাআল্লাহ দাদুভাই! তো একটা প্রশ্নের উত্তর আজানের কাছে গেল। তো চতুর্থ প্রশ্ন জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি কে?”
তখন শায়লা বলল,,
“হামিদুর রহমান!”
“ভুল উত্তর!” তখন জায়মা বলল,,
“আমি জানি সৈয়দ মাইনুল হোসেন। আরে শায়লা হামিদুর রহমান তো শহিদ মিনার এর স্থপতির নাম।”
তখন শায়লা বলল,,
“আসলে দুটোর মধ্যে তালগোল পাকিয়ে গিয়েছিলাম। যাই হোক আমারটা তুই নিলি।”
তখন সমশের চৌধুরী বললেন,,
“যাক তোমরা মনে রেখোছো একজন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সবার এগুলো জানা উচিৎ।”
এভাবেই আরো নয়টা প্রশ্ন করে ফেললেন সমশের চৌধুরী। তার মধ্যে মেঘ উত্তর দিয়েছে তিনটা, শায়লা একটা, জিয়ান একটা, জায়মা একটা,আর আজান দুইটা। শিফা আর মুন একটার উত্তর ও দিতে পারে নি। তখন সমশের চৌধুরী বললেন,,
“তো দশ নাম্বার এবং শেষ প্রশ্ন আজান দাদুভাই তোমার একটা চান্স আছে জেতার। কারন তুমি যদি উত্তর দিতে পারো তাহলে তোমাদের দুজনের মধ্যে আরো একটা প্রশ্ন করবো। তবে প্রশ্নটা সবার জন্যই তারপর যে জিতবে তাকে গিফট দেব। তার আগে একটা খাতা কলম নিয়ে এসো।”
আজান গিয়ে খাতা নিয়ে আসলো। সমশের চৌধুরী এক থেকে দশ পর্যন্ত নাম্বার উঠালো। তারপর বলল,,
“এই ১-১০ এর মধ্যে তোমরা যেকোন চারটা সংখ্যা দিয়ে যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ যেকোন একটা করে করে তোমাদের ফলাফল ৭৭৭ বানাতে হবে।
আমি আবারও বলছি যেকোন একভাবেই ফল বের করতে হবে এবং চারটার বেশি সংখ্যা নিতে পারবে না কিন্তু ফলাফল ৭৭৭ ই হতে হবে।”
সকলে চেষ্টা করুল কিন্তু উত্তর মিললো না। তখনি ওর ফোনে একটা মেসেজ এলো তা দেখে ও তাড়াতাড়ি করে এগিয়ে এসে খাতায় লিখতে শুরু করলো কারন এতক্ষন সবার জন্য অপেক্ষা করছিল কেউ পারে কি না ? মেঘ লিখতে লাগলো আর বলল,,
“আমি পারবো দেখো কিভাবে হয়। আমি প্রথমে তিনটা সংখ্যা নিলাম ২৫৯ তার এটাকে ফলাফল ৭৭৭ বের করার জন্য আরেকটা সংখ্যা নিলাম সেটা হলো ৩ মোট চারটা সংখ্যা নিলাম । এরপর ২৫৯× ৩ = ৭৭৭। এবার সব প্রশ্ন শেষ দাদুভাই আমি জিতে গেছি। কিন্তু আপনি গিফট টা আজান কে দিয়ে দিয়েন এখন আমি ওপরে গেলাম।
বলেই মেঘ ফোন নিয়ে কাউকে কল করে ওপরে চলে গেল কারো কথা না শুনেই। কিন্তু ওর কার্যকলাপে সবাই অবাক। তখন আজান বলল,,
“মেঘ আপু একটা জিনিয়াস লেডি। কারন আপু যেগুলোর উত্তর দিয়েছি সেগুলো আমরা ভাবতেই পারি নি। আর আমরা সবাই যেগুলোর উত্তর দিয়েছি সব নরমাল ছিল।”
তখন সমশের চৌধুরী বললেন,,
“ঐ প্রশ্নগুলো আমি তোমাদের জন্য নয় বরং মেঘের জন্যই করছিলাম। আমি জানতাম আমার শের নি পারবে। যাই হোক আজান আমার রুমে এসো তোমার গিফটা নিয়ে যেও।”
“না দাদুভাই লাগবে না কারন ওটার আসল হকদার আমি না।”
“তোমার প্রতি গর্ব হচ্ছে আমার। আচ্ছা আমিও রুমে গেলাম।”
বলেই তিনি চলে গেলেন। তখন জায়মা বলল,,,
“কি জিয়ান মুখ থেকে সব কথা হাওয়া। এই জন্যই বলে বেশি হম্বিতম্বি করতে নেই। মেঘের ভাষায় যদি বলি তাহলে বলা হতো , সামনের জন চুপ করে আছে মানে সে দূর্বল নয় হতেও পারে সে বড় মাপের খেলোয়াড়।”
জিয়ান রেগে চলে গেল জায়মা, শায়লা, আজান আর মুন হাসলো।
এদিকে মেঘ ফোন করে জানতে চাইলো,,
“তুমি সিওর যে ওরা ঐ ফ্ল্যাটেই ঢুকেছে?”
“………..
“ওয়াও গ্ৰেট তুমি নজর রাখো। আর হ্যা এটা তুমি ছাড়া যেন আর কেউ না জানে।”
“……………
“গুড জব নিজের খেয়াল রেখো আল্লাহ হাফেজ।”
ফোন রাখতেই মেঘ হেঁসে বলল,,
“ওকে মিস্টার এবার দেখবো তোমরা পালাও কিভাবে। এখন দাদুভাই এর প্রশ্ন সাজাতে হবে কি বললো ৭৭৭ এটা দিয়ে কি বুঝালো।”
মেঘ কিছুক্ষন ভেবে বের করলো। তারপর গোলাপের দিকে নজর পরতেই দেখলো লিলি গোলাপের সামনে শুয়ে আছে। তা দেখে মেঘ হেসে বলল,,
“লিলি গোলাপ ফুল তোর এত পছন্দ কেন? এত ভালো বিছানা ছেড়ে তুই টেবিলে গিয়ে শুলি। ”
লিলি আয়েশি ভঙ্গিতে ডেকে উঠলো তারপর ওর কোলে বসে পড়লো আর মিয়াও মিয়াও করতে লাগলো। তখন মেঘ ওকে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,,
“তুই জানিস লিলি আজ তোর বাবার সাথে দেখা হয়েছিল। আমার কি মনে হয় জানিস তোর বাবা আমাকে খুব তাড়াতাড়ি বিয়ের প্রস্তাব দেবে। কারন তোর বাবার চোখে দেখেছি আমাকে পাওয়ার আকুলতা আর তীব্র ইচ্ছা। মুখ ফুটে বলতে পারলো না আজ কিন্তু ওনার চোখ বলে দিচ্ছিল।”
লিলি ধূসরের কথা শুনে আরো বেশি মিয়াও মিয়াও করতে লাগলো। তা দেখে মেঘ হাসলো। আর বলল,,
“বাবাকে বুঝি খুব মিস করছিস। আর ক’টা দিন অপেক্ষা কর তোর বাবা আসবে।”
লিলি ওর মতো ডাকতে লাগলো। মেঘ ওকে খাবার দিল। ডিনার সময় হয়ে গেল মেঘ ডিনার করে এসে শুয়ে পড়লো। আজ তার ভালো লাগছে।
________________
“আমায় বিয়ে করবেন ধূসর এহসান শুভ্র?”
কোন মেয়ের এহেন কথায় ধূসর যেন আকাশ থেকে পড়ল। কিন্তু মেয়েটার চেহারা দেখে ধূসর খুশি হয়ে বলল,,
“আপনি সিওর, আপনি কি বলছেন?”
“হুম সিওর!”
“তারমানে আপনি আমায় মেনে নিলেন।”
“হুম নিলাম!”
“আলহামদুলিল্লাহ আর শুকরিয়া মিস কাশফিয়া তাহলে চলুন কাজী অফিসে।”
“হুম চলুন।”
ওরা কাজী অফিসে গেল কিন্তু কাজী অফিস বন্ধ তা দেখে ধূসর বলল,,
” এটা কোন কথা আমি বিয়ে করতে এলাম আর কাজী অফিস বন্ধ। এটা ঠিক না।”
ধূসরের কথা শুনে মেঘ হেঁসে উঠল। তা দেখে ধূসর বলল,,
“একদম হাসবে না নিষ্ঠুর মেয়ে আমি এদিকে টেনশন করছি আর তুমি হাসছো।”
মেঘ হেঁসেই যাচ্ছে তা দেখে ধূসর রেগে একটা পাথর উঠিয়ে কাজী অফিসের জানালায় মারলো। কাঁচ ভাঙ্গার বিকট আওয়াজ হলো। ধূসর ধরফড়িয়ে ঘুম থেকে উঠলো। ধূসর এখন জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলো ভোর চারটা বিশ বাজে তার মানে সে স্বপ্ন দেখছিল। ধূসর পানি খেল আর বলল,,
“কি অদ্ভুত ভয়ঙ্কর সুন্দর স্বপ্ন। মিস কাশফিয়া আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল। আমরা বিয়ে করতে গেলাম কিন্তু কপাল খারাপ শালা স্বপ্নেও বিয়ে করতে পারলাম না।আবার তাকে নিষ্ঠুর মেয়ে বললাম সে হেঁসে উঠল। অদ্ভুত মেয়ে। আচ্ছা আমি ওনাকে এত অবলীলায় কিভাবে নিষ্ঠুর মেয়ে বলতে পারি? কোন জড়তাই কাজ করে না।”
ধূসর মেঘের কথা ভেবে হাসলো তারপর একটু থেমে বলল,,
“আমি বোধহয় আপনাকে ভালোবাসি মিস কাশফিয়া। আপনি জানেন রোজ রাতে আপনি আমার স্বপ্নে আসেন কোন শুভ্র শহরে আপনাকে যখন ধরতে যাই তখনি আপনি অদৃশ্য হয়ে যান। আপনার মুখটা দেখার জন্য কত অস্থির হয়ে উঠে আমার চোখগুলো। আপনার কন্ঠ শোনার জন্য সবসময় আমার কানদুটো খাড়া হয়ে থাকে। আমি জানি এটা ঠিক নয়। কিন্তু আমি আপনার প্রতি এই অনুভূতি গুলো কন্ট্রোল করতে পারি না। এই অনুভূতি খারাপ দিকে যাওয়ার আগে আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই। আমি আপনাকে হালাল ভাবে পেতে চাই। বেশি অপেক্ষা করবো না আর কয়েকটা দিন তারপরেই আপনাকে আমার করে নেব।”
ধূসর খুশি মনে মেঘের কথা ভাবতে লাগলো কিছুক্ষণ পর ফজরের আজান দিলে ও ফজরের সালাত আদায় করে নিল। আল্লাহর কাছে দোয়া করলো খুব সহজেই যেন কাশফিয়া নামক মেয়েটাকে পেতে পারে।
মেঘ ফজরের নামাজ আদায় করে । ভোর হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগলো। ভোরের আলো ফুটতে শুরু করলে ও গিয়ে বেলকনিতে দাঁড়ালো। সূর্য উঠে পড়েছে তখন ওর ফোনটা বেজে উঠলো ও ফোনটা হাতে নিতেই অবাক হলো কারন ফোনটা ধূসর দিয়েছে। মেঘ ফোন ধরে কানে নিতেই শুনলো,,
“আসসালামু আলাইকুম নিষ্ঠুর মেয়ে!”
হুট করে নিষ্ঠুর মেয়ে শুনে মেঘ চমকে উঠলো। ও নিজেকে সামলে বলল,,
“ওয়ালাইকুমুস সালাম! কিন্তু ডক্টর আপনি ঠিক আছেন?”
“ওহ সরি সরি আসলে ভুলে বলে ফেলেছি কিছু মনে করবেন না। আমার মাথায় বোধহয় একটু সমস্যা হয়েছে শুধু নিষ্ঠুর মেয়ে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।”
“তা সকাল সকাল আপনি পাগল হয়েছেন সেটা জানাতে ফোন করলেন। কিন্তু আপনি পাগল হলে সকলে কি বলবে আপনাকে? পাগল ডক্টর।”
পাগল ডক্টর শুনে ধূসরের কেমন যেন লাগলো। কিন্তু ও বলল,,
“বললে আর কি করার?”
“তা কি মনে করে ফোন দিলেন?”
“আপনি তো একজন লয়ার তাই না।”
“হুম তো!”
“আমার একটা কেসে আপনাকে সাহায্য করতে হবে।”
“তা কি রকম কেস?”
“আমার এক বন্ধু ওর গ্ৰামের বাড়িটা বিক্রি করতে চায়। কিন্তু ওর চাচা অবৈধ ভাবে ওটা দখল করেছে। ওকে দখল ও দিচ্ছে না আবার বিক্রি করতেও দিচ্ছে না ।বেশ প্রভাবশালী লোক গ্ৰামের । ওখানের পুলিশরাও ওকে সাহায্য করতে নাকচ করে দিয়েছে।”
“ওহ আচ্ছা তাহলে নিশ্চয়ই পুলিশকে টাকা খায়িয়ে রেখেছে। এটা আজকালকার যুগে তেমন কোন ব্যাপার না।”
“হুম ব্যাপারটা ও কাল রাতে আমার সাথে শেয়ার করলো। আর জিজ্ঞেস করল আমার পরিচিত লয়ার আছে কি না? আমি আপনার নাম বলেছি আর সকালে আপনাকে জানালাম।”
“আপনার বন্ধুর কাছে ঐ বাড়ির কাগজ আছে?”
“এখানেই তো সমস্যা ওর কাগজ টা ওদের বাড়িতে কোথায় যেন আছে। তাই তো জোর দিয়ে কিছু বলতেও পারে না তাছাড়া ওকে বাড়িতে ঢুকতে দেয় না। ওর বাবা পাঁচ বছর আগে মারা গেছে। এখানে সব পড়াশোনা করতো বলে ওর মাকে এখানে নিয়ে আসে। এখন ওর কিছু টাকা লাগবে তাই বাড়ি বিক্রি করতে চাইছে। কিন্তু গ্ৰামে গিয়ে দেখে এই অবস্থা। ওকে বাড়ির বাইরে থেকেই তাড়িয়ে দিয়েছে ওর চাচা।”
সবশেষে মেঘ বলল,,
“ওহ আচ্ছা। সত্যি আপনার বন্ধু নাকি আপনার কলিগ!”
এ কথা শুনে ধূসর একটু অবাক হলো তাই বলল,,
“হুম আমার কলিগ ছয় মাস আগে আমাদের হাসপাতালে জয়েন করেছে। এগুলো সব উনিই বলেছে আমি আগে থেকে জানতাম না। আমার বন্ধু বললাম যাতে আপনি কাজটা নেন।”
মেঘ হাসলো ধূসরের কথা শুনে। ও বলল,,
“আপনার কলিগ বললেও আমি কাজটা করতাম। আপনি আপনার কলিগকে আমার অফিসে পাঠিয়ে দেবেন। যা করার আমি করে নেব।”
“আপনার অফিসের ঠিকানা তো আমি জানি না?”
“তাহলে আমার নাম্বার দিয়ে আমার সাথে কথা বলতে বলবেন। আমি জানিয়ে দেব।”
“কেন আমাকে অফিসের ঠিকানা দিলে কি সমস্যা?”
“আপনার দ্বারা আমার বিশ্বাস নেই কখন হুটহাট অফিসে হামলা করেন।”
কথাটা শুনে মেঘ নিজেই থতমত খেল আর ধূসর তো অবাক হলোই। ধূসর বলল,,
“কি বললেন?”
“আপনার রোগ আমাকে ধরেছে বোধহয় আজব কথাবার্তা বলছি। এক কাপ কফি খাওয়া প্রয়োজন।”
“তো বানিয়ে খেয়ে নিন।”
“হুম এখন কিচেনে যাচ্ছি।”
বলতে বলতে মেঘ নিচে চলে এলো। নিচে কেউ নেই। ও কিচেনে ঢুকে দিল। কফি বানানোর কার্যক্রম শুরু করলো। তখন ধূসর বলল,,
“কিচেনে পৌঁছে গেছেন। ইশশ আমি আর আপনি এক জায়গায় থাকলে এক সাথে কফি খেতে পারতাম।”
মেঘ হেঁসে বলল,,
“তো আমার সাথে কফি খাওয়ার ইচ্ছে কেন হলো?”
“এমনিই! আচ্ছা আপনি আমাকে আরেকটা বন্ধুর কাজে হেল্প করতে পারবেন?
“বলুন শুনি তারপর দেখছি হেল্প করতে পারবো কি না?”
“আচ্ছা বলছি আমার বন্ধু একটা মেয়েকে অনেক পছন্দ করে। মনে করেন অনেক অনেক। তাকে সবসময় সামনে বসিয়ে রাখতে ইচ্ছে করে। তার চোখের দিকে তাকিয়ে ডুবে যেতে ইচ্ছে করে। অদ্ভুত অনুভূতি কাজ করে। একটা অদ্ভুত টান অনুভব হয় যেন শত বছরের চেনা। তার সব কাজই মূলত ভালো লাগে। এখন আমার বন্ধুর কি করা উচিৎ।”
মেঘ মনোযোগ দিয়ে ধূসরের কথা শুনলো। সব শুনে বলল,,
“তাহলে তার উচিৎ মেয়েটাকে নিয়ে তার অনুভূতি খারাপ দিকে যাওয়ার আগেই বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া।”
“যদি সে প্রস্তাবে রাজি না হয়?”
“তাহলে তার থেকে তার অনুভূতি কে কন্ট্রোল করা উচিৎ। আর মেয়েটাকে ভুলে যাওয়া উচিৎ।”
এ কথা শুনে ধূসর রেগে গেল আর বলল,,
“বললেই হলো ভুলে যাওয়া এতোই সহজ। নিষ্ঠুর মেয়ে একটা। একটু ভালো কথা বললেই ওনার নেগেটিভ কথা বলতে হবে। কেন ভালো বললে কি হবে? বললেই তো হয়, মেয়েটা রিজেক্ট করলে তুলে নিয়ে বিয়ে করা উচিৎ। কিন্তু না সে বলছে ভুলে যাওয়া উচিৎ নিষ্ঠুর একটা। আমার ভালোবাসার মূল্য নেই নাকি। আমি আমার কথা বললাম আর উনি বলছে ভুলে যেতে সাধে তোমায় নিষ্ঠুর মেয়ে বলি।”
ধূসর নিজেও জানে না ও কি বলছে এদিকে ধূসরের কথা শুনে মেঘের চোখ ছলছল করে উঠলো। ও বুঝতে পারল এগুলো সব ওর জন্যই বলা বন্ধু এমনিই বলেছে। মেঘ নিজেকে সামলিয়ে বলল,,
“ডক্টর আপনি ঠিক আছেন?”
এতক্ষনে ধূসরের হুশ ফিরল ও কি বলছিল। কিন্তু কি বলছিল ওর মনে নেই। ধূসর বলল,,
“আমি কি আপনাকে কিছু বলছিলাম সরি আমি বুঝতে পারছি না। সবকিছু যেন মাথার ওপর দিয়ে গেল। যদি খারাপ কিছু বলে থাকি তাহলে সরি।
“সরি বলার দরকার তেমন কিছু বলেন নি। এখন তো মনে হচ্ছে আপনার ও কফি খাওয়া প্রয়োজন আমার কফি হয়ে গেছে।”
“ওহ আচ্ছা আপনি জানেন রাতে আপনাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখলাম ?
“আমি কিভাবে জানবো?”
মেঘ কফি নিয়ে সোফায় বসে কফিতে চুমুক দিল। তখন ধূসর বলল,,
“তাও ঠিক। স্বপ্নে আপনি আমায় বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন।”
কথাটা শুনেই মেঘের কফি গলায় আটকে গেল ও কোনরকম কোন শব্দ ছাড়া নিজেকে সামলিয়ে নিল। তারপর বলল,,
“সত্যি বলছেন নাকি মজা করছেন?”
“সত্যি বলছি তারপর শুনুন আপনি আমায় বিয়ের প্রস্তাব দিলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম আপনি সিওর কি না। আপনি সিওর জানালেন তারপর দুজন মিলে কাজী অফিসে গেলাম। কিন্তু কি হলো জানেন?
“কি হলো?”
“কাজী অফিসে তালা ঝুলছিল মানে বন্ধ। আপনি হাসছিলেন তাই আমি রেগে কাজী অফিসের জানালায় পাথর ছুড়ে মারলাম। কাঁচ ভাঙ্গার শব্দে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। আমার আর বিয়ে করা হলো না।
এ কথা শুনে মেঘ একটু জোরেই হেঁসে উঠল। তা শুনে ধূসর বলল,,,
“আর আপনি ঠিক এভাবে হাসছিলেন যখন দেখলাম কাজী অফিস বন্ধ।”
মেঘ হাঁসি থামিয়ে বলল,,
“সিরিয়াসলি ডক্টর আপনি এরকম স্বপ্ন দেখেছেন?”
“হুম সিরিয়াসলি তবে আমার মনে হয় এরকম কেউ কাউকে নিয়ে স্বপ্ন দেখলে তাকে বলে না। কিন্তু আমার মনে হলো আপনাকে জানাই। আপনি আমার জীবনের এমন একজন মানুষ যার সাথে কথা বলতে জড়তা কাজ করে না। মনে হয় আপনি আমার বউ। যাই হোক অনেক অহেতুক কথা হলো। রাখছি আল্লাহ হাফেজ, নিজের খেয়াল রাখবেন।”
বলেই ধূসর তাড়াতাড়ি করে ফোন কেটে দিল। কি বললো? আপনি আমার বউ কি লজ্জার ব্যাপার। এখনো তো প্রস্তাবই দেয় নি। এদিকে মেঘ আমার বউ শুনে মনে থমকে গেছে কতোদিন পর শুনলো কথা টা ‘আমার বউ’।
~চলবে,,