#ধূসর_রাঙা_মেঘ_২
#পর্ব_৩
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি
“আরে মিস কাশফিয়া আপনি তো দেখি আজ কাশফুল হয়ে সবুজের মাঝে বসে আছেন।”
হুট করে অপত্যাশিত ভাবে কাঙ্ক্ষিত কন্ঠস্বর শুনে তাড়াতাড়ি করে পাশ ফিরলো মেঘ । কাঙ্ক্ষিত মানুষটাকে পছন্দের শুভ্র পাঞ্জাবিতে দেখে একরাশ মুগ্ধতা ঘিরে ধরলো ওকে।মেঘ সামনের মানুষটার দিকে তাকালো হাতে রঙ বেরঙের কয়েকটা বেলুন আর লাল গোলাপ। মুখে মাস্ক বিদ্যমান তবুও লোকটাকে চিনতে তার অসুবিধা হলো না। না চাইতেও মেঘের মুখে হাসি ফুটে উঠল। ও বলল,,
“আরে ডক্টর শুভ্র যে, আপনি এখানে? বাহ হাতে আবার গোলাপ।”
“আমাদের কতো মিল দেখেছেন একই রঙের ড্রেস পরেছি। আবার দেখুন আপনি গোলাপ আর বেলুন নিয়ে বসে আছেন। আমিও গোলাপ আর বেলুন নিয়ে এলাম।”
“তাই তো দেখছি এত বড় কোয়েন্সিডেন্স কিভাবে হতে পারে বলুন তো! তা আপনি না কোথায় যেন গিয়েছিলেন সেটা তো আরো একদিন পরে শেষ হওয়ার কথা ছিল।”
“হুম কিন্তু কি মনে করে এলাম আজকেই। অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি। আপনার এই বেঞ্চে বসতে পারি যদি কিছু মনে না করেন।”
“হ্যা বসতে পারেন।”
“শুকরিয়া মিস!”
ধূসর বসে মাস্ক খুলে ফেলল তখন মেঘ ওর দিকে তাকিয়ে বলল,,
“তা হুট করে শুভ্র রঙের পাঞ্জাবি পড়ে, বেলুন আর লাল গোলাপ নিয়ে এখানে এলেন কেন?”
“শুভ্র রঙের পাঞ্জাবি ভালো লাগলো তাই পড়লাম।আর জানিনা গোলাপ আর বেলুন দেখে ইচ্ছে হলো কিনতে তাই কিনলাম। আর বাকি রইল এখানে আসার কথা সেটা আমি জানি না মনে হলো এই জায়গাটা আমি চিনি।”
“আপনার বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তর জানি না এটা কেন বলুন তো? জানি না বলেও সব করে ফেলেন কিভাবে?”
“জীবনে অনেক কিছুই আমরা জানি না। কিন্তু তাই বলে কি আমাদের জীবন থেমে থাকে নাকি। থেমে তো থাকে না তাইনা। অনেক কিছুই আপনাআপনি ভাবে হয়ে যায়। তা আপনি শুভ্র রঙের শাড়ি পড়ে এখানে কেন?
মেঘ হেসে বলল,,
“ঐ আপনার মতো ইচ্ছে হলো পরতে তাই পরলাম। আর এটা আমার প্রিয় জায়গা। মনে হলো নিজের সাথে একটু সময় কাটানো যাক তাই এলাম। তাছাড়া এখানে আমি প্রায়ই আসি।”
“ওহ আচ্ছা!”
“হুম এখন বলুন তো সব ঠিক আছে কিন্তু মাস্ক কেন?”
“কোন নিষ্ঠুর মেয়ে বলেছিল যে শুভ্র পাঞ্জাবি পড়ে আমি যেন মাস্ক ছাড়া বের না হই।”
মেঘ অস্ফুট স্বরে আওয়াজ করলো,,
“নিষ্ঠুর মেয়ে”
তা শুনে ধূসর বলল,,
“হ্যা নিষ্ঠুর মেয়ে! আপনি জানেন, বাড়িতে ভাবি এই কথা জিজ্ঞেস করেছিল মাস্ক কেন পড়েছি তখন আমি বলেছিলাম কেউ বলেছিল পড়তে । কিন্তু রাস্তায় এসে মনে পড়লো কোন নিষ্ঠুর মেয়ে নামক মেয়ে বলেছিল। সে বলেছিল, জনাব এই শুভ্র পাঞ্জাবি পড়ে কখনো মাস্ক ছাড়া বের হবেন না কিন্তু! আমি উত্তরে বলেছিলাম ‘যেমনটা বলো নিষ্ঠুর মেয়ে। তাই বুঝলাম কোন নিষ্ঠুর মেয়ে বলেছিল।”
কথাটা শুনে মেঘের চোখ ছলছল করে উঠলো। ও “ওহ আচ্ছা!” বলে ধূসরের থেকে চোখ সরিয়ে অন্য দিকে তাকালো। তখন ধূসর বলল,,
“জায়গাটা অনেক সুন্দর তাইনা খোলা আকাশ, কি সুন্দর বিশুদ্ধ বাতাস ,সামনে বিশাল নদী আর সিগ্ধ প্রকৃতি এরকম আজকাল ঢাকায় পাওয়ায় যায় না।”
ধূসর হাতের বেলুন গুলো মেঘের মতো বেঞ্চের হাতলে বেঁধে দিল আর গোলাপগুলো মেঘের গোলাপের পাশে রাখলো। ধূসর সামনের দিকে তাকিয়ে প্রকৃতি অনুভব করতে লাগলো আর মেঘ সে তার দৃষ্টি ধূসরে নিবদ্ধ করলো। এক দৃষ্টিতে ধূসরকে দেখতে লাগলো এক তৃষ্ণার্ত ব্যক্তির মতো। যেন কতোদিনের তৃষ্ণা তার শুভ্র মানবকে দেখার এখন তার দিকে তাকিয়ে তার তৃষ্ণা মেটাচ্ছে। কতোক্ষণ এভাবে সময় পেরিয়ে গেল দুজনের জানা নেই। একটা সময় ধূসর পাশে তাকাতেই দেখলো মেঘ ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘ তাড়াতাড়ি করে চোখ সরালো আর অন্যদিকে তাকালো। ধূসর ওর দিকে তাকালো ওর দিকে তাকিয়ে ওর কি হলো কে জানে? ও নিজেও তৃষ্ণার্ত ব্যক্তির মতো মেঘকে দেখতে লাগলো। মেয়েটা হিজাব নিকাব পরে আছে তবুও অদ্ভুত টান অনুভব করছে ধূসর । হুট করেই মেঘ বলল,,
“নিষ্ঠুর মেয়ে আপনার কে হয় ডক্টর?”
মেঘের কথায় ধূসরের ধ্যান ভাঙল ও তাড়াতাড়ি করে দৃষ্টি সরিয়ে ছোট করে বলল,,
“জানিনা!”
“কেন জানেন না আপনি? আচ্ছা নিষ্ঠুর মেয়ে টা যদি আপনার খুব কাছের কেউ হয় তাহলে।”
“হ্যা আমার কাছের কেউই তো হবে নাহলে আমি তার কথা শুনবো নাকি। কিন্তু এই নিষ্ঠুর মেয়েটা কে? সেটাই তো আমি জানি না। এই দেড় বছরে আমি কোথাও নিষ্ঠুর মেয়ে নামক কাউকে দেখি নি। অবশ্য নিষ্ঠুর মেয়ে কারো নাম হয় নাকি?”
“হয়তো! দিলেই হয় মনে করার চেষ্টা করুন আপনিই নামটা দিয়েছিলেন নাকি তাকে।”
ধূসর চোখ বন্ধ করে মনে করার চেষ্টা করলো তখন বোধহয় ওর মতো কারো মুখে শুনতে পেল “তুমি একটা নিষ্ঠুর মেয়ে তোমার এই উপাধি তোমার কাজের সাথে একদম পারফেক্ট দিয়েছি আমি। নিষ্ঠুর মেয়ে একটা।” কিন্তু সামনের মেয়েটার চেহারা স্পষ্ট নয় অস্পষ্ট। এটুকু শুনে আর দেখে ধূসরের মাথাব্যথা শুরু হলো কিন্তু সে প্রকাশ করলো না। মনে মনে ভাবলো কাশফিয়া নামক মেয়েটা ঠিক বলেছে। ধূসর বলল,,
“জানিনা আমি! বাদ দাও ! তো নিষ্ঠুর মেয়ে তুমি বলো এই বেলুন আর লাল গোলাপ কার জন্য এনেছো?”
মেঘ চমকে তৎক্ষণাৎ ধূসরের দিকে তাকালো। তা দেখে ধূসর বলল,,,
“ও সরি সরি আসলে সেই গাড়ি থেকে নিষ্ঠুর মেয়ে নাম ঘুরছে তো তাই আপনাকে নিষ্ঠুর মেয়ে বলে ফেলেছি সরি কিন্তু। তা বলেন এগুলো কার জন্য এনেছেন?
মেঘের ইচ্ছে করছে চিৎকার করে বলতে ,,
“ধূসর এগুলো সব আপনি আমায় দিতেন এই দিনে। কিন্তু আজ তো আমি ভেবেছিলাম আপনি দেবেন না। তাই নিয়ে এসেছিলাম আমার সাথে কিন্তু আপনি আপনার অজান্তেই এগুলো এনেছেন। কারন আপনার কোথাও না কোথাও আজ ও নিষ্ঠুর মেয়ে বিরাজ করে।”
কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলতে পারলো না। মেঘ নিজেকে সামলিয়ে বলল,,
“এই বেলুন তো আমি ঐ ধূসর রাঙা আকাশের জন্য এনেছি একটু পরেই উড়িয়ে দেব। আর গোলাপগুলো আপনার মতো ইচ্ছে হলো নিতে তাই নিয়ে এলাম।”
“ওহ আচ্ছা তাহলে বেলুন গুলো আমিও উড়িয়ে দেব । কিন্তু গোলাপ? আচ্ছা গোলাপ গুলো আপনি নিয়ে যান। এগুলো আমি আপনাকে দিলাম।”
বলেই ধূসর মেঘের দিকে ওর আনা গোলাপ গুলো এগিয়ে দিল। মেঘ হাসলো খুব করে ও হেঁসে বলল,,
‘কাউকে কোনো ফুল দেওয়া হলে সে যেন তা প্রত্যাখ্যান না করে। কেননা, তা বহনে হালকা ও ঘ্রাণে উত্তম।”
(মুসলিম, হাদিস : ৫৬৮)
তবে তা পরিস্থিতি সাপেক্ষেও বটে এটা আমার মতামত। তবে আপনার ফুল আমি নিলাম।
মেঘ ধূসরের হাত থেকে ফুলগুলো নিয়ে দু’টো ফুল ধূসরের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,,
“এগুলো আপনার জন্য।”
ধূসর হেসে ওগুলো নিল কিন্তু ওর মাথাটা কেমন চক্কর দিয়ে উঠলো। মনে হলো এই ঘটনা আগেও ঘটেছে কিন্তু আবছা, ও তাড়াতাড়ি চোখ বন্ধ করে নিল। এক হাত দিয়ে মাথাটা ধরলো মেঘ সবকিছু দেখে উত্তেজিত হয়ে দাঁড়িয়ে ওর সামনে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,,
“কি হয়েছে আপনার মাথা ব্যাথা করছে?”
ধূসর চোখ খুলে তাড়াতাড়ি করে বলল,,
“না না তেমন কোন ব্যাপার না কেন যেন মনে হলো,,,, না তেমন কিছু না। আমিও আপনার ফুল নিলাম।”
ধূসর মেঘকে কিছু বললো না। মেঘের অস্থিরতা কমছে না। কিন্তু ধূসর বোধহয় চোখ দেখে বুঝতে পারল মেঘের অস্থিরতা। তাই ও বলল,,
“মিস কাশফিয়া আমি ঠিক আছি । আই এম ওকে। টেনশন করবেন না।”
মেঘ নিজেকে সামলিয়ে বেঞ্চে বসে পড়লো। তখন আবার ধূসর বলল,,
“আপনি জানেন এই শুভ্র শাড়িতে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে। এক টুকরো শুভ্র মেঘ লাগছে মাশাআল্লাহ। এ যেন এক মেঘবালিকা।
হুট করে এমন কথা শুনে মেঘ চমকে ধূসরের দিকে তাকালো। মেঘ মনে মনে বলল,,
“আপনি সবকিছু ভুলে গেলেও কিছু জিনিস আপনি একেবারেই ভুলেন নি ধূসর।”
কিন্তু মুখে বলল,,
“শুকরিয়া তবে আপনি কিন্তু?”
মেঘকে বলতে না দিয়ে ধূসর বলল,,
“আই নো! আই নো! আপনি কি বলবেন এটা ঠিক নয়। আমার দৃষ্টি সংযত করা উচিৎ। সত্যি বলতে এটা আমার উচিত হয় নি। তবে অজান্তেই যেন আমি সব করলাম। কিছু মনে করবেন না।”
কথাটা শুনে তখন মেঘের খুব হাসি পেল। বিশেষ করে এই কথাটা ‘আমার দৃষ্টি সংযত করা উচিৎ’। কিন্তু একটা সময় বলেও ধূসরের চোখ সরানো যেত না। কিছু বললেই বলতো আমার মেঘবালিকা কে আমি দেখবো তাতে তোমার কি নিষ্ঠুর মেয়ে। সবকিছু ভেবে মেঘ হাসলো। ভুলে গেলে কি হবে মনের টান এখনো রয়েছে। মেঘ হেঁসে বলল,,
“হুম আমার সাথে ফুচকা খাবেন ডক্টর?”
“তারমানে আপনি?”
“আপনার দৃষ্টিতে আমি খারাপ কিছু দেখি নি। তাই আপনার সাথে ফুচকা খাওয়ায় যায় চলুন। তাই বলে সবাইকে কিন্তু এমন অফার দিই না আমি। আপনি আমার জীবনের দ্বিতীয় পুরুষ যার সাথে আমি নিরাপদ।”
“তা প্রথম পুরুষ কে? আপনার বাবা নাকি।”
“আপনি জানলেন কিভাবে?”
“এভাবেই! আপনার যে ব্যক্তিত্ব যাই হোক। চলুন ফুচকা খাবো।”
“দাঁড়ান বেলুন গুলো তো উড়িয়ে দিই। আপনি আপনার বেলুনের গিট খুলে দিন তাহলে ।”
বলেই মেঘ হেঁসে বেলুনের গিট খুলে দিল। ধূসর ও গিট খুলে দিল কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে উড়ন্ত বেলুন গুলো দেখলো। বেলুন দেখতে দেখতে মেঘ হাসলো তারমানে ওর মন্জিল বেশি দূরে নেই। খুব তাড়াতাড়ি এই মিশনে সাকসেসফুল হতে চলেছে ও। মেঘ গোলাপগুলো নিয়ে ওর গাড়িতে উঠলো। ধূসর ও গোলাপ নিয়ে তার গাড়িতে উঠতো। ওরা দুজনে দুজনের গাড়ি করে একটা ফুচকার দোকানে গেল। ধূসর নেমে মেঘের গাড়ির কাছে এগিয়ে এসে জানালো মেঘকে নামতে হবে না। ধূসর নিজেই ওর জন্য গাড়িতে ফুচকা আনছে। মেঘ কিছু বলেনি কিছুক্ষণ পর ধূসর এলো হাতে ফুচকার প্লেট নিয়ে মেঘ ধূসরকে বলল তার গাড়িতে উঠে আসতে ধূসর ও উঠে গেল। দুজনে বেশ ফুচকা খেল। মেঘ নিকাব খুলে ফেলেছে এইবার দিয়ে ধূসর মেঘের মুখ দেখল মোট পাঁচবার। ধূসর এক দৃষ্টিতে অনেকক্ষণ মেঘের দিকে তাকিয়ে ছিল কিন্তু মেঘ দেখার আগেই তাড়াতাড়ি করেই নিজের দৃষ্টি সংযত করে নিল। কিন্তু সে তো জানে না মেঘ সবকিছুই আড়চোখে গাড়ির মিররে সব দেখছে। সব দেখে মেঘের কিরকম হাঁসি পাচ্ছে। ধূসর গাড়ি থেকে নেমে বিল মিটিয়ে এসে মেঘকে বলল,,
“তাহলে আপনি বাড়ি যান আমিও যাই। এতগুলো সুন্দর মুহূর্ত দেওয়ার জন্য শুকরিয়া আপনাকে। আল্লাহ হাফেজ নিজের খেয়াল রাখবেন আসি।”
বলেই ধূসর চলে গেল। মেঘ কিছু বললো না। মেঘ নিজেকে সামলানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না দু ফোঁটা পানি গড়িয়েই পড়লো। মেঘ তাড়াতাড়ি করে মুছে ফেলল। বেশ অনেকটা সময়ই সে ধূসরের সাথে কাটিয়েছে। দুপুর তিনটা বেজে গেছে। ও ওখানে গিয়েছিল এগারোটার দিকে ধূসর এসেছিল সাড়ে এগারোটায়। এত সময় কোথা দিয়ে চলে গেল।ও বুঝতেই পারলো না। ও গাড়ি স্টার্ট দেবে এমন সময় ওর ফোনটা বেজে উঠলো ও ফোনটা কানে নিয়ে ওপাশ থেকে যা শুনলো তা শুনে ওর মুখে হাঁসি ফুটে উঠল। ও ফোনটা রেখে বলল,,
“আজকের দিনটা অনেক লাকি আমার জন্য। শুকরিয়া আব্বা আপনার কথা সত্য হয়েছে । যার সাথে আজকের দিনটা সেলিব্রেট করার ছিল তার সাথেই পুরোটা না হলেও কিছু সময় তো ছিলাম। আর দ্বিতীয়ত আজ তাদের খোঁজ পেয়েছি।
তারপর কিছুটা থেমে আবার বলল,,
“ইশশ একবছর হয়ে গেলো কতো খুঁজলাম তোমাদের কিন্তু পেলাম না। পাবো কিভাবে তোমরা তো দেশেই ছিলে না। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে আজকেই তোমাদের খোঁজ পেলাম। রেডি থেকো মিস্টার এন্ড মিস । তোমাদের কৃতকর্মের শাস্তি খুব তাড়াতাড়ি পাবে। তোমাদের জন্য ধূসরের থেকে আলাদা হয়েছি তোমাদের কি শাস্তি দেব তোমরা ভাবতেও পারবে না। তবে আলাদা হলেও ধূসরের অনুভূতি হারায় নি আমার প্রতি।”
বলেই মেঘ খুশিমনে গাড়ি স্টার্ট দিল। প্রথমে ফ্ল্যাটে গেল তারপর ড্রেস চেঞ্জ করে বাড়ির দিকে রওনা দিল। বাড়ি পৌঁছে দেখলো জায়মা, শায়লা,শিফা আর মুন শায়লার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে ড্রয়িংরুমে বসে আছে। মেঘকে দেখেই জায়মা বলল,,
“এই তোর আসার সময় হলো মেঘ?”
“কেন আপু আমি তো বলেই গিয়েছিলাম বিকেল বা সন্ধ্যা হবে।”
“তা তোমরা সবাই এখানে কেন? তোমরা তো রুমে আড্ডা দাও সবসময়।”
তখন মুন বলল,,
“একটু পর ওয়েডিং প্ল্যানার আসছে তাই আমরা তাদের জন্য অপেক্ষা করছি।”
“ওহ আচ্ছা দাদুভাই কোথায়?”
“রুমে বোধহয়।”
‘ওহ আচ্ছা।”
“আয় না এখানে বোস ওরা চলে আসবে। তুই কিছু প্ল্যান করেছিস নাকি সেটাও তাদের বলতে পারবি।”
“না আপু আমার কোন প্ল্যান নেই। তুমি ভালো করেই জানো আমার অনুষ্ঠান পছন্দ নয়। তোমরা তোমাদের মতো করো না। আমি বাইরে থেকে এলাম ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়বো এখন।”
বলেই মেঘ ওপরে চলে গেল। তখন শায়লা বলল,,
“মেঘ সেই আগের মতোই রয়ে গেছে। এখনো সেই গম্ভীর কোন অনুষ্ঠানে থাকতে চায় না।”
তখন জায়মা বলল,,
“ওর জীবনটা আমাদের মতো স্বাভাবিক ছিল না তাই হয়তো এরকম। একই বাড়ির মেয়ে হয়ে অনেক ভিন্ন ভাবে সে বড় হয়েছে এই পরিবার ওকে কি দিয়েছে শুধু অবহেলা। একজন মানুষের ভালোবাসায় সে টিকে ছিল এখানে সেটা হলো কাকাই এর ভালোবাসা। আমরা ছোট ছিলাম ওতো বুঝতাম নাকি।”
তখন মুন মাথা নিচু করে নিল। কারন তার আপন বোন হওয়া সত্ত্বেও সে কখনো নিজের ভালোবাসা দেখায় নি।তখনি দুজন ওয়েডিং প্ল্যানার এলো। শিফা মেঘকে বাদ দিয়ে বাকি সবাই কে ডেকে আনলো যেহেতু বাড়ির বিয়ে সবার মতামত নেওয়া প্রয়োজন। শমশের চৌধুরী থেকে শুরু করে আজান সবাই এলো। আয়মান চৌধুরী কোথাও গিয়েছেন তাই এখন বাড়িতে নেই তবে শাফিয়ান চৌধুরী আর জিয়ান দুপুরে বাড়ি চলে এসেছে। সবাই আসতেই নিজেদের মতামত দিতে লাগলো। এদিকে মেঘ আগে ওর ব্যাগ থেকে ফুল বের করে যত্ন করে টেবিলের ওপরে রাখলো তারপরও ফ্রেশ হয়ে আসরের সালাত আদায় করে নিল তারআগে যোহরের কাযা সালাত আদায় করেছে। দুপুরে ফুচকা ছাড়া কিছু খাওয়া হয় নি তবুও যেন তার খিদে পেল না কিন্তু পানি খাওয়া প্রয়োজন তাই নিচে নামলো। নিচে সবাই ড্রয়িংরুমে বসে কথা বলছে দুজন মেয়ের সাথে। তাদের চেহারা চেখে মেঘের মুখে হাসি ফুটে উঠল। সে ঘোমটা বড় করে টেনে টেবিলে বসে পানি পান করলো। মেয়ে দুটো বোধহয় মেঘকে খেয়াল করে নি। মেঘ বসে তাদের কথা শেষ হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগলো। অতঃপর বিশ মিনিট পর মেয়ে দুটো উঠে চলে যেতে নিল তখন মেঘ উঠে পেছন থেকে বলল,,,
‘মিস মুমতাহিনা হির এবং মিসেস লিয়া আহমেদ! একটু শুনবেন।
হুট করেই নিজেদের প্রানপ্রিয় বান্ধবীর কন্ঠ শুনে দুজনেই চট করে পেছনে তাকালো। মেঘ হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। দুজনে তার কাছে যেতে চাইলো কিন্তু মেঘ হাত দিয়ে থামিয়ে দিল তা দেখে দুই বান্ধবীর অভিমান হলো । বাকি সবাই অবাক মেঘ কিভাবে জানলো। তখন লিয়া বলল,,,
“জি বলেন কি বলবেন?”
“এখানে নয় বাহিরে চলুন। আপনাদের সাথে কথা আছে।”
বলেই মেঘ হাঁটা ধরলো হির আর লিয়া কিছু আন্দাজ করে ওর পেছনে হাঁটা ধরলো। বাইরে এসে মেঘ হেঁসে বলল,,
“আমার রুমটা একটু সাজাতে চাইছিলাম আপনারা তো ওয়েডিং প্ল্যানার । আমার রুমটা একটু সিম্পল করে ডেকোরেশন করে দিবেন।”
তখন হির বলল,,
“আপনার মতো নিরামিষ মহিলা রুম ডেকোরেশন করবে হাও ফানি।”
এটা শুনে লিয়া হেঁসে উঠল । মেঘ ছোট ছোট করে ওদের দিকে তাকালো আর বলল,,
“এই রকম ব্যবহার আপনাদের। ক্লাইন্টদের সাথে বিনয়ের সাথে কথা বলতে হয় তাকে এভাবে বলতে হয়না ঠিক আছে।
‘আপনি আমাদের ক্লাইন্ট। ওহ আচ্ছা তা কয়টাকা দিবেন আপনার রুম ডেকোরেশন করে দিলে।”
“এক টাকাও না। আপনাদের এক টাকা দিলে সেই একটাকাই লস আমার জন্য।”
“মেঘ এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না।”
‘এই আপনি ক্লাইন্টদের এভাবে নাম ধরে ডাকেন এটা ঠিক না।”
তখন একজন ধুম করে মেঘের পিঠে একটা কিল মেরে বলল,,,
“তো! তোর মতো মেয়েরে আবার সম্মান দেওয়া লাগবে।”
“আরে ভাই এত জোরে দিলি কেন লিয়া? ব্যাথা পাইলাম তো।”
তখন হির মাথায় চাটি মেরে বলল,,
“ব্যাথা পাওয়ার জন্যই তো মারলো। তোকে না মারলে তো তুই ঠিক হবি না। তোর মেরুদন্ড তো বাঁকা।”
“আরে ভাই তোরা মারছিস কেন?”
“কাল আমাদের না বলেই চলে এসেছিস তুই।”
“তোরা তো তোদের ফ্ল্যাটে ছিলিস না তাই বলতে পারি নি সরি।”
“তোর বিলাই কই আসার পরে দেখলাম না হাসপাতাল থেকে আনিস নি।”
“আমার লিলি রে একদম বিলাই বলবি না।”
“তোর বিলাই আর আমি হইলাম চিরশত্রু আমি কেন তোর বিলাইরে নাম ধইরা ডাকমু শয়তান বিলাই।”
“একবার মাত্র খামছি দিছিল তাতেই হির ওরে দেখতে পারে না।”
লিয়ার কথায় মেঘ হাসলো। আর বলল,,
“আচ্ছা বাদ দে। আমি তো জানতামই না তোরাই আপুর বিয়ের ওয়েডিং প্ল্যানার।”
“আমরাও জানতাম না এটা তোর ফ্যামিলি। তারমানে এটা তোর ফ্যামিলি থাক দাওয়াত না দিলেও আমরা তোর বোনের বিয়ে খাইতে পারুম। কিন্তু জাবিন ওরে কেমনে আনমু বেচারি একা একা থাকবোনি।”
তখন পেছন থেকে কারো কন্ঠস্বর এলো,,
“না জাবিন মামনি কেন একা থাকবে? ওকে দাওয়াত দিয়েছি আমি।”
ওর পেছনে তাকিয়ে দেখলো আয়মান চৌধুরী একটা গোল্ডেন কালার বিড়াল হাতে নিয়ে ওদের দিকে আসছে। মেঘ হেঁসে লিলিকে নিজের কোলে নিল। লিলিও মেঘকে দেখে আদুরে ভঙ্গিতে ডেকে মেঘের কোলে রইল। তখন হির বলল,,
“আরে ভালোবাবা! কেমন আছো তুমি?”
‘আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তোরা কেমন আছিস?”
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো।”
তখন মেঘ বলল,,
“আব্বা লিলির আর কোন সমস্যা নেই তো ডক্টর কি বলেছে?”
“না সমস্যা নেই একটা ইনজেকশন পুশ করে দিয়েছে এখন আর অসুস্থ হবে না।”
“আলহামদুলিল্লাহ! হির লিয়া তোরা এখন বাড়ি যা পরে কথা হবে।”
তখন হির বলল,,
“ঠিক এই কারনে তোর বিলাইরে আমার সহ্য হয় না। ওরে পেলেই দুনিয়া ভুলে যাস মানলাম দুলাভাই দিছে তাই সবসময় মাথায় করে রাখতে হইবো শয়তান বিলাই।”
হুট করে দুলাভাই শুনে মেঘ স্থির চোখে হিরের দিকে তাকালো হির বুঝতে পারল বেফাঁস কিছু বলেছে তাই বলল,,
“সরি !”
“ধুর কিসের সরি বাই দা ওয়ে আজ কিন্তু তোদের দুলাভাই আমারে গোলাপ ফুল দিছে আবার ফুচকাও খাওয়াইছে।”
“সত্যি?”
“তিন সত্যি।”
মেঘের কথায় তিনজনেই হাসলো মেঘ ও মুচকি হাসলো।ওরা বিদায় নিয়ে চলে গেল। আয়মান চৌধুরী জিজ্ঞেস করতেই মেঘ সব বলল। তারপর লিলি কে কোলে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো ও ভেতরে ঢুকতেই আজান দৌড়ে এসে বলল,,
“আপু তুমি এই বিড়াল টা কোথা থেকে আনলে? আমাকে একটু কোলে দেবে, আমার বিড়াল খুব পছন্দ।”
মেঘ হেসে বলল,,
“এটা আমার বিড়াল। আমার সাথেই থাকতো। একটু অসুস্থ ছিল তাই ওকে পশু হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। আব্বা এখন নিয়ে এলো। ওর নাম লিলি।”
“নামটা তো দারুন দিয়েছো রঙটাও অনেক সুন্দর দাও আমার কাছে।”
আজান মেঘের থেকে লিলিকে নিতে চাইলো কিন্তু লিলি গেল না উল্টো চিৎকার করে উঠল মানে সে যাবে না ।লিলি আজান কে এমন লুক দিল মনে হলো খেয়েই ফেলবে। তা দেখে আজান বলল,,
“যাহ নিলাম না তোকে ভাবলাম তোকে চকলেট দেব। এখন কিছুই দেব না শয়তান বিলাই।”
তখন মেঘ বলল,,
“আসলে দুদিন আমার কাছে ছিল না তো তাই যেতে চাইছে না কিন্তু ও সবার কাছেই যায় দেখবি কাল তোর কাছে যাবে।”
তখন শিফা বলল,,
‘মেঘ আপু তুমি ঐ ওয়েডিং প্ল্যানার দের চেনো?”
“হ্যা চিনি ! আচ্ছা আমি ওপরে যাই লিলিকে খাওয়াতে হবে।”
বলেই মেঘ ওপরে চলে গেল। আয়মান চৌধুরীও ওপরে চলে গেল।বাকিরা শুধু দেখেই গেল।
____________________
ওদিকে,,
বিকেল বেলা ধূসর খুশি মনে গোলাপ ফুল দু’টো নিয়ে বাড়িতে ঢুকলো। দিলরুবা খানম, রোহিনী আর নোলক ড্রয়িংরুমে কথা বলছিল ধূসরের হাতে ফুল দেখে নোলক বলল,,
“ছোট ভাইয়া কেউ প্রপোজ করেছে নাকি হাতে ফুল তাও লাল গোলাপ।”
ধূসর হেসে বলল,,
“প্রপোজ করে নি তবে এমনি দিয়েছে।”
তখন দিলরুবা খানম বললেন,,
“কে দিয়েছে?”
“আরে মা তোমাকে একবার বলেছিলাম না আট মাস আগে হাসপাতালে একটা নিষ্ঠুর মেয়ের সাথে দেখা হয়েছিল। যার হাত থেকে কতো রক্ত পরছিল তবুও সে একটা টু শব্দ করে নি । তাকে দেখে মনে হচ্ছিল কিছুই হয় নি । তাই তাকে নিষ্ঠুর মেয়ে বলেছিলাম। আর মেয়েটা আমার নিষ্ঠুর মেয়ে শুনে মুচকি হাসছিল। ”
ধূসরের কথা শুনে দিলরুবা খানমের মুখে অবাকতা ছেয়ে গেল। তিনি অবাক হয়েই বললেন,,
“হ্যা তো কি হয়েছে?”
“সেই মেয়েটা দিয়েছে এই দুটো ফুল । অবশ্য আমি তাকে আগে কতগুলো ফুল দিয়েছি।তারপর সেখান থেকে সে দু’টো ফুল আমাকে দিল।”
“তুই কেন ফুল দিলি তাকে?”
কথাটা শুনে ধূসর অপ্রস্তুত হয়ে গেল তাও বলল,,
“আসলে আমি অনেক গুলো গোলাপ কিনেছিলাম। আমি গোলাপ রেখে কি করবো মনে হলো, ওনার গোলাপ পছন্দ তাই ওনাকে দিলাম। তুমি জানো মা উনিও আমার মতো শুভ্র রঙ পরেছিল। শুভ্র রঙের শাড়ি হিজাব নিকাব। তুমি জানো ওনাকে কি সুন্দর লাগছিল মনে হচ্ছিল এক টুকরো মেঘ কোন মেঘবালিকা আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। উনিও কিছু গোলাপ কিনেছিল আর হ্যা বেলুন ও কিনেছিল। উনি সেগুলো নিয়ে একটা লেকে বসেছিল। আমিও ঘুরতে ঘুরতে সেখানে গেলাম। গিয়ে দেখি উনি একা একা গোলাপ আর বেলুন নিয়ে বসে আছে। তুমি জানো, কি মনেকরে আমিও বেলুন কিনেছিলাম আমরা একসাথে সেই বেলুন গুলো উড়িয়ে দিয়েছি আকাশে আর আমার গোলাপগুলো ওনাকে দিয়ে দিয়েছি।”
ধূসরের মেঘের কথা বলতে বলতে মুখে অদ্ভুত হাসি দেখা যাচ্ছিল। সে আজ ভিশন খুশি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তিনজন ধূসরের দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে তারা যে মনোযোগ সহকারে ধূসরের কথা শুনছিল তাতে সন্দেহ নেই। নোলক বলল,,
“ভাইয়া তুমি ঠিক আছো?”
“আমার আবার কি হবে?”
‘তোমাকে শুধু জিজ্ঞেস করা হলো তাকে ফুল কেন দিলে? কিন্তু তুমি তো পুরো ইতিহাস বলে দিলে। যার মেয়েদের সম্পর্কে কোন ইন্টারেস্ট থাকে না সে একটা মেয়ের সম্পর্কে এতকিছু বলে ফেলল।”
ধূসর হেঁসে বলল,,
“কি জানি তবে মিস কাশফিয়ার কথা বলতে গেলে কোন জড়তাই কাজ করে না বরং মুগ্ধতা আসে। এই আটমাসে ওনার সাথে অনেকবার দেখা হয়েছে। কথাও হয়েছে অনেকবার। সব থেকে বড় কথা আমার হাসপাতালে মাসে একবার হলেও কোথাও না কোথাও আঘাত পেয়ে আসে। আমি বুঝতেই পারি না উনি কিভাবে এত আঘাত পায় আমার কেমন যেন লাগে। কিন্তু ওনার মুখে হাঁসি থাকে। কি অসাধারণ সে আজ শুভ্র রঙে তাকে অনেক সুন্দর লাগছিল। আমি ভাবছি ওনাকে বিয়ের প্রস্তাব দেব।”
এ কথা শুনে সবাই চমকে উঠলো। বিশেষ করে নামটা আর বিয়ের কথা শুনে। দিলরুবা খানম বললেন,,
“কি নাম বললি?”
“মিস কাশফিয়া, কাশফিয়া আয়মান!”
এ কথা শুনে তিনজনের খুশিতে চোখ চকচক করে উঠলো। আর তিনজনের মুখ থেকে অস্ফুট স্বরে বেরিয়ে আসলো,, “কাশফিয়া আয়মান মেঘ” দিলরুবা খানম খুশি হয়ে বলল,,
“কবে বিয়ের প্রস্তাব দিবি?”
“খুব তাড়াতাড়ি!”
বলেই ধূসর ওপরে গেল। এদিকে তিনজনেই খুব খুশি। দিলরুবা খানম বলল,,
“ওটা মেঘ ছাড়া আর কেউ নয় ! ওটাই মেঘ শুভ্র রঙের শাড়ি শুনেই আন্দাজ করেছিলাম ওটা মেঘ হবে নাম শুনে সিওর। ধূসরের স্মৃতিতে মেঘ না থাকলেও মেঘ নতুন রুপে কাশফিয়া হয়ে এসেছে। আট মাস আগে ধূসর বলেছিল তখন আমি অবাক হয়েছিলাম এরকম মানুষ হয় সেটা শুধু মেঘকেই দেখতাম কিন্তু তখন বুঝতে পারি নি ওটা মেঘ হবে। আমার ছেলের ভালোবাসা দেখে আমার গর্ভ হচ্ছে রোহিনী। আমার ছেলে তার নিষ্ঠুর মেয়ে তার মেঘবালিকা কে এখনো অনুভব করে তাই তো বিয়ের কথা বলল । ও এখন মেঘের থেকে দূরে থাকতে চাইছে না বা পারছে না তাই তো হালাল ভাবে পেতে চাইছে যেমনটা পাঁচ বছর আগে চেয়েছিল এটাই তো হালাল সম্পর্কের জোর।”
“আপনি ঠিক বলেছেন মা এখন আর বাঁধা নেই ভাইয়ার লাইফ রিস্ক ও নেই। কারন এটা পুরোনো স্মৃতি নয় নতুন স্মৃতি তৈরি হয়েছে। তার নিষ্ঠুর মেয়ে তাকে ছেড়ে দেয় নি। বরং যাতে তার জীবনসঙ্গীর ভালো হয় সেটাই করেছে। এটাই আমাদের মেঘ।”
“ছোট ভাবিকে বোঝা কার সাধ্য। সে যে ধূসর রাঙা মেঘ সে কখন কি করে কিছু বোঝা যায় না। এই যে ভাবির সাথে কথা হয় ভাবি বুঝতেও দেয় নি ভাইয়ার সাথে তার যোগাযোগ আছে।”
~ চলবে,,