Monday, October 6, 2025







ধূসর রাঙা মেঘ ২ পর্ব-০২

#ধূসর_রাঙা_মেঘ_২
#পর্ব_২
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

মেঘ আর আয়মান চৌধুরী সমশের চৌধুরীর রুমে প্রবেশ করেই দেখতে পেল সে কিছু কাগজপত্র দেখছেন। আয়মান চৌধুরী বললেন,,

“আব্বা আসবো?”

সমশের চৌধুরী মাথা উঠিয়ে বললেন,,

“হ্যা এসো!’

“আব্বা কি বলবেন যার জন্য রুমে আলাদা ভাবে আসতে বললেন?”

“আগে বসো তারপর বলছি মেঘ দরজা আটকে দিয়ে আসো।”

মেঘ দরজা আটকে আয়মান চৌধুরীর পাশে বসলো। সমশের চৌধুরী বলল,,

“আয়মান গ্ৰামে আমাদের যে বাড়ি আছে সেটা আমি তোমার নামে করতে চাচ্ছি। ”

“আব্বা আমার এসবের প্রয়োজন নেই আল্লাহ আমাকে অনেক দিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আপনি ওগুলো শাফিয়ান কে দিয়ে দিয়েন।”

“তোমার প্রয়োজন না হলেও আমার প্রয়োজন আছে তোমার নামে করে দেওয়ার। প্রথমত তুমি আমার বড় পুত্র সন্তান। আমি আগে থেকেই ওটা তোমার নামে করে দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু সবকিছু এমন ভাবে অগোছালো হয়ে গেল যে কিছুই হলো না। দ্বিতীয়ত ওটা আমি শাফিয়ান কে দিতে চাই না কারন সে ঐ বাড়ি ভেঙে ফ্যাক্টরি তৈরি করতে চায় যা গ্ৰামের জন্য ক্ষতিকারক। আমি আমার পৈতৃক বাড়ি ভাঙতে চাই না।”

“কিন্তু আব্বা এটা সবাই খারাপ ভাবে নেবে আয়না, বড় আপা আছে ওদের অধিকারও তো আছে।”

“অধিকার থাকলেও আমি ঐ বাড়িটা ওদের দিয়ে রিস্ক নিতে চাই না। আমি অন্য জায়গায় থেকে ওদের ন্যায্য অধিকার দিয়ে দেব। তাছাড়া সারাজীবন তো ভাইবোন আর পরিবারের কথা ভাবলে এবার না হয় আমার কথা ভাবো।”

“আব্বা আপনি বুঝতে পারছেন না।”

“আমি জানতাম তুমি এটাই বলবে তাই বাড়িটা আমি মেঘের নামে করে দিয়েছি।”

সমশের চৌধুরীর এহেন কথায় মেঘ চমকে তার দিকে তাকালো। আয়মান চৌধুরীও তাই মেঘ বলল,,

“দাদুভাই আবার আমি কেন?”

“কারন আমি জানি আমার শেরনি বাড়িটা রক্ষা করতে পারবে। তাছাড়া বাড়িটার ওপর শুধু শাফিয়ান এর নজর নেই আরো অনেকের আছে।”

“কিন্তু এখন হঠাৎ করে এসব কেন দাদুভাই?”

সমশের চৌধুরী মেঘের গালে হাত রেখে বলল,,

“সত্যি বলতে আমার মনে হচ্ছে আমার জীবনের গন্তব্য শেষ হতে চলেছে। আজকাল তোমার দাদীকে ভিশন মনে পড়ে। আমার মনে হয় এই পৃথিবীতে আমি বেশিদিন নেই। তাই তো সব তোমাদের দুজনের হাতে দিচ্ছি।”

“এসব কি বলছেন দাদুভাই ইনশাআল্লাহ আপনার আয়ু দীর্ঘ হবে।”

“আব্বা দয়া করে এরকম কথা বলবেন না।”

“বুঝলে আয়মান পৃথিবীতে সবকিছু অনিশ্চিত থাকলেও মৃত্যু নিশ্চিত আজ না হয় কাল সবাইকে এই দুনিয়া ছাড়তে হবে। আল্লাহ তায়ালা আল কুরআন স্পষ্ট করে বলেছেন প্রত্যেকটা প্রান অবশ্যই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। মৃত্যুর কথা ভেবে ভয় না করে আখিরাত নিয়ে আমাদের ভয় করতে হবে। কে জানে রবের নিকট তার প্রিয় বান্দা হয়ে নিজেকে পেশ করতে পারবো কিনা।”

“দাদুভাই এমন করে কেন বলছেন ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হবে।”

সমশের চৌধুরী কাগজ এনে মেঘের কাছে দিয়ে বলল,,

“এই যে মেঘ তোমার বাড়ি । যাই হয়ে যাক বাড়িটা তুমি অবশ্যই রক্ষা করার চেষ্টা করবে। কারন ঐ বাড়িতেই তোমার দাদুভাই এর শৈশব কৈশোর আর বিবাহের পনেরোটি বছর কেটেছে। ঐ বাড়ি নিয়ে অনেক স্মৃতি আমার।”

“দাদুভাই কেউ কি ঐ বাড়ি নিয়ে আপনাকে থ্রেট দিয়েছে। নামটা বলুন শুধু বাকি দায়িত্ব আমার।”

“কার কার নাম বলবো এখানে আপনপর সবাই আছে। তাই নাম বলছি না।”

মেঘ কিছু ভাবলো তারপর বলল,,

“আচ্ছা ঠিক আছে কিছু বলতে হবে না। এখন ঘুমিয়ে পড়ুন। কাগজটা আমি নিয়ে যাচ্ছি। টেনশন করবেন না যা হবে ভালোই হবে। আব্বা চলুন আল্লাহ হাফেজ দাদুভাই।

“আল্লাহ হাফেজ।”

মেঘ কি ভেবে কাগজটা ওরনার নিচে লুকিয়ে দরজা খুলে বেরুলো ও বেরুতেই কয়েকটা ছায়া দেখতে পেল আয়মান চৌধুরী ও। মেঘ হাসলো আর বলল,,

“আব্বা দাদুভাই এর সাথে আড্ডাটা বেশ ভালো হলো তাই না। কিন্তু আমার কেন যেন মনে হচ্ছে আশেপাশে কিছু দৃশ্যমান দুষ্টু শয়তান জ্বীন ঘুরছে।”

কথাটা শুনে ছায়া গুলো তাড়াতাড়ি করে সরে গেল। মেঘ মুচকি হাসলো আয়মান চৌধুরী মেয়ের দিকে হেঁসে বলল,,

“আম্মা রাতে অবশ্যই আয়তুল কুরসি পাঠ করে ঘুমাবেন। তাহলে দুষ্টু শয়তান জ্বীন আপনাকে ছুঁতে পারবে না।”

“অদৃশ্য দুষ্টু শয়তান জ্বীন এর থেকে কিছু দৃশ্যমানুষ ভয়ঙ্কর বেশি, জ্বীনদের থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া গেলেও এই ভয়ঙ্কর মানুষদের থেকে সহজে মুক্তি মেলেনা।”

“আপনার তো কাজ আছে যান রুমে যান।”

“হুম আব্বা তুসবিহুন আলা খইর!”

“তুসবিহুন আলা খইর আম্মা!”

মেঘ হেসে নিজের রুমে চলে গেল। কিন্তু রুমে গিয়ে তার হাঁসি গায়েব হয়ে দীর্ঘশ্বাসে পড়িনত হলো। মেঘ কাগজ টা আলমারির লকারে রেখে দিল। তারপর তার ল্যাপটপ টা বের করে কিছু কাজ করতে লাগলো। কাজ করতে করতে একটা সময় কিছু মনে পড়তেই চোখটা ছলছল করে উঠলো। মেঘ ল্যাপটপ বন্ধ করে শুয়ে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে বলল,,,

“মাই ডিয়ার রুম আবার ও তোমাদের নিকট ফিরে এসেছি সেই পুরোনো ভাঙা মেঘ হয়ে। কিন্তু তোমাদের থেকে দূরে গিয়ে এই আমি জুড়ে গিয়েছিলাম অনেক সুন্দর ভাবে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আবারও সেই ভাঙা মেঘ হয়েই ফিরলাম। তবে সেখানেও আমি শেষের দিকে ভাঙাই ছিলাম। তোমরা আমার কথা শুনে হাসছো নাকি তোমাদের বলছি কারন তোমরাই তো এই ভাঙা আমাকে দেখতে পাও আর কেউ কি পায়। সবাই তো দেখতে পায় একটা নিষ্ঠুর মেয়ে কে।”

এটুকু বলে কি ভেবে মেঘ উঠে পড়লো। একটা চিঠি লিখলো সবার ওপরে প্রিয় সম্বধোন তার ব্যাক্তিগত মানুষের নাম লিখলো। তারপর একটা আবেগ মাখা চিঠি লিখতে শুরু করলো চিঠি লেখার মাঝে তার মুখে মিষ্টি হাঁসি দেখা গেল একটু অভিমান ও দেখা গেল।সবার শেষে,, “ইতি আপনার একান্ত ব্যক্তিগত নিষ্ঠুর মেয়েটা।” লিখে সুন্দর করে চিঠিটা ওর টেবিলে রাখা একটা ব্যাগে রাখলো সেখানে আগে থেকেই অনেকগুলো চিঠি ছিল । সবার ওপরে চিঠি রেখে ব্যাগটা যত্ন করে আলমারি তে রেখে দিল এটা তার কত নম্বর চিঠি সেটা একমাত্র সেই জানে। সে খুশিমনে বিছানায় বসলো কিন্তু কি যেন মনে হতেই মনটা বিষন্নতায় ছেয়ে গেল সে ল্যাপটপ নিয়ে কিছু টাইপিং করতে লাগলো।

“কঠিন বাস্তবতা আর চারপাশের মুখোশধারী ভালোবাসার ভিড়ে, নিঃস্বার্থ আপনাকে পাবার জন্য অপেক্ষা নামক বস্তুটা রয়েছে আমাকে ঘিরে।”

এটুকু লিখে কারো নাম্বারে সেন্ট করতে গিয়েও করলো না ড্রাফট এ রেখে দিল। মেঘ উঠে ওযু করে নফল সালাত আদায় করলো কেন যেন মনটা অস্থির হয়ে উঠেছে কমছেই না। তাই মানসিক শান্তি পেতে সালাত আদায় করে নিল। দীর্ঘ মুনাজাত শেষ করে নামাজ শেষ করলো এখন একটু ভালো লাগছে। কারন শান্তির চাবিকাঠিই তো নামাজ। মেঘ শুয়ে পড়লো যদি একটু ঘুম হয়।

_________________

এদিকে রুমে ঢুকে আয়মান চৌধুরী দেখলো মায়মুনা চৌধুরী বিছানায় বসে আছে আয়মান চৌধুরীর অস্তিত্ব টের পেয়ে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,,

‘ও তুমি এসো গেছো তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।”

“কেন তার দরকার তো দেখছি না।”

‘আয়মান তুমি কি আজ কাঁদছিলে?”

মায়মুনা চৌধুরীর এহেন কথায় আয়মান চৌধুরী একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন। তিনি নিজেকে সামলিয়ে বললেন,,

‘না তো!”

“তাহলে মেঘ তোমার চোখে কি পরিস্কার করলো।”

‘একটা ময়লা ঢুকে পড়েছিল বোধহয় তাই।”

” মিথ্যে বলছো তাই না ঠিক আছে বলতে হবে না কিছু। আচ্ছা আয়মান এবার কি আমাদের সম্পর্ক সম্পূর্ণ ঠিক করা যায় না।”

‘তোমার কি মনে হয় আমাদের সম্পর্ক ঠিক নেই।”

“ব্যাপারটা তেমন না ঠিক আছে কিন্তু কোথাও একটা কিন্তু রয়েই গেছে।”

“এই কিন্তু থাকার কারন তুমি ভালো করেই জানো তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি সত্যি করে বলবে তুমি কি এখনো আমাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারো। যেমনটা ছয় বছর আগে করতে।”

মায়মুনা চৌধুরী আয়মান চৌধুরীর দিকে ছলছল চোখে তাকালেন আর বললেন,,

“তোমার সত্যতা জানার পর আমি আগের মতোই তোমাকে বিশ্বাস করি।”

আয়মান চৌধুরী হাসলেন আর বললেন,,

“সত্যতা জানার পর তুমি বিশ্বাস করলে কিন্তু এই বিশ্বাস টা আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে সেই ছয়বছর আগেই সেই নোংরা ঘটনায় করতে তাহলে কি আমাদের জীবন এমন হতো, হতো না আমরা আগেই মতোই একটা স্বাভাবিক সম্পর্কে থাকতাম। জীবনসঙ্গী মানে কি শুধু সঙ্গী তা নয় একে অপরের প্রতি সম্মান, বিশ্বাস আর ভরসা করাও সম্পর্কে থাকতে হয় সবথেকে বড় কথা একেঅপরের বোঝা পড়াটা থাকতে হয়। তুমি আমাকে চিনতে না আমার সাথে এত বছর সংসার করেছো তবুও তুমি আমাকে চিনতে পারো নি বুঝতে পারো নি সবথেকে বড় কথা একটা ছোট জিনিসে তুমি আমাকে অবিশ্বাস করেছো তুমি কি পারতে না মেঘের মতো আমার হাতটা শক্ত করে ধরতে আর বলতে পৃথিবীর সব মানুষ তোমার বিপক্ষে গেলেও আমি তোমার সাথে আছি।”

এটুকু বলেই আয়মান চৌধুরী থামলেন। ওনার চোখে পানি চিকচিক করছে। মায়মুনা চৌধুরী কাঁদছেন তিনি কাঁদতে কাঁদতে আয়মান চৌধুরী কে জরিয়ে ধরে বললেন,,

“আমার অনেক বড় ভূল হয়ে গেছে আমাকে মাফ করো প্লিজ আমি তোমাকে এভাবে সহ্য করতে পারছি না। আমি তো তোমাকে ভালোবাসি তোমার এই অদৃশ্য দূরত্ব আমাকে ভেতরে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।”

আয়মান চৌধুরী ওনাকে ধরলেন না শুধু বললেন,,

“পৃথিবীর সবথেকে অসহায় সময় কোনটা জানো যখন তোমার আপন জনেরাই তোমাকে বিশ্বাস করে না। ঐ পরিস্থিতিতে যারা পড়ে তারাই বুঝতে পারে বাকিরা শুধু নাটক ভেবে দেখে যায়।”

“আমাকে মাফ করে দাও জীবনে এই ভুল আর কখনো করবো না। তোমাকে ওয়াদা করলাম।”

” হুম অনেক রাত হয়েছে শুয়ে পড় এখন আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।”

বলেই আয়মান চৌধুরী মায়মুনা চৌধুরী কে নিজের থেকে ছাড়িয়ে সামনে দাঁড় করিয়ে দিল তখন মায়মুনা চৌধুরী বলল,,

“আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না? ঐ সময়টা আমার মাথাই কাজ করছিল না সবকিছু বোধহয় আমার গলা চেপে ধরেছিল মন মস্তিষ্কে দুটোই কার্যক্ষমতা হাড়িয়ে ছিল। কাছের মানুষটির অপত্যাশিত ঘটনা যখন সামনে আসে তখন বোধ বুদ্ধি সব লোপ পায় আমারও পেয়েছিল আমায় ক্ষমা করে দাও। কিন্তু বিশ্বাস করো তোমাকেও হাড়িয়ে আমি একদম ভালো ছিলাম না। প্রত্যেকটা দিন আমার অসহ্য লাগতো শুধু পরিবারের কথা ভেবে বাচতাম‌।

আয়মান চৌধুরী হেঁসে বলল,,

“তোমার ওপর আমার রাগ কখনোই ছিল না। তোমাকে আমি বহু আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি যা ছিল তোমার প্রতি অভিমান তুমি তো আমায় জানতে চিনতে তাহলে।আর যা হয়েছে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে কেউ ধোঁকা খাবে। তবে আমি তোমার ঐ অবিশ্বাস করে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া ভুলতে পারছিলাম না তাই সম্পর্কে কিছু একটা থেকেই গেছে। তবে আজ থেকে থাকবে না কথা দিচ্ছি তুমি এভাবে কেঁদো না প্লিজ। এই তিনটা বছর তো শাস্তি পেলে আর না।”

মায়মুনা চৌধুরী কান্না বন্ধ করে হেঁসে আয়মান চৌধুরী কে জরিয়ে ধরলেন আর বললেন,,

“তুমি তাহলে আমাকে ইচ্ছে করে শাস্তি দিচ্ছিলে।”

এই তিনিও জরিয়ে ধরে হেঁসে বললেন,,

“তুমি যে আগুনে আমাকে পুড়িয়েছিলে সে আগুনে তোমাকেও তো পুরতে হতো তবে এই তিনবছর তোমার মাঝে আমাকে মানানোর সেই আমার নতুন বউকে দেখতে পেতাম তাই তো সুযোগ লুফে নিয়েছি। আমি জানতাম তো আমাকে ছাড়া তুমি ভালো ছিলে না।”

“তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে ক্ষমা করার জন্য।”

“পুরনো সব বাদ এখন আমরা আবার নতুন করে শুরু করবো। যে অতীত কষ্ট দেয় সেই অতীত মনে না করাই উত্তম।”

_________________

ফজরের আজান কানে যেতেই ঘুম থেকে ওঠার দোয়া পড়ে বিছানা ছাড়ল মেঘ। ওয়াশরুম থেকে ওযু করে একমনচিত্তে ফজরের নামাজ আদায় করে নিল। কিছুক্ষণ তসবিহ তাহলিল পাঠ করে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালো চারদিকে আলো ফুটতে শুরু করেছে। কিছুক্ষণ সকালের স্নিগ্ধ হাওয়া গায়ে লাগিয়ে আবার রুমে প্রবেশ করলো। কিছু কাগজপত্র দেখলো তারপর গোসল করলো। আটটা বাজতেই মাথায় ওরনা দিয়ে নিচে নামলো। এখন খেয়ে দেয়ে তাকে কোথাও যেতে হবে। মেঘ নামতেই দেখলো সকলে ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে পরেছে মেঘ গিয়ে বসলো তার আব্বার পাশে কারন আজ জিয়ান দাদুভাই এর পাশের চেয়ারে বসেছে। মেঘ বসতেই মেঘের বড় ফুপি মেঘকে খাবার দিল। মেঘ চুপচাপ খেতে শুরু করলো খাওয়া শেষ করে মেঘ বলল,,

“দাদুভাই আমাকে বেরুতে হবে দুপুরে বাড়ি ফিরতে পারবো না বিকেল বা সন্ধ্যা হতে পারে।”

তখন সমশের চৌধুরী বলল,,

“ঠিক আছে তবে বাড়ির গাড়ি আর ড্রাইভার নিয়ে যেও।”

“দরকার নেই আমার গাড়ি আছে আর আমি ড্রাইভ পারি তাই আমি সেটায় করে চলে যাবো।”

“যেমন তোমার ইচ্ছে কিন্তু কাল তো গাড়ি আনো নি ওটা তো আয়মানের।”

“আমার টা রাস্তায় আছে আসছে। আমি রেডি হতে হতে চলে আসবে।”

“ঠিক আছে।”

মেঘ চলে গেল । ও যেতেই জিয়ান বলল,,

“এমন ভাবে আমার গাড়ি আছে বলল যেন ওর নিজের টাকায় কেনা গাড়ি। নিজের তো যোগ্যতা নেই নিশ্চয়ই কাকাই কিনে দিয়েছে। কিন্তু ভাব দেখো।”

তখন আয়মান চৌধুরী হেঁসে বলল,,,

“কাশফিয়া আয়মান মেঘ কখনো অন্যের জিনিস নিয়ে ভাব নেয় না। গাড়িটা সে নিজের টাকা দিয়ে কিনেছে তাই নিজের গাড়ি বললো। মেঘের যোগ্যতা সম্পর্কে তোমার ধারনা নেই। যার সম্পর্কে ধারণা নেই তার সম্পর্কে কথা না বলাই উত্তম।”

বলেই আয়মান চৌধুরী চলে গেলেন বাকি সবাই অবাক সবথেকে বেশি বড়রা। তবে সমশের চৌধুরী জানেন তাই তিনি মুচকি হাসলো। রেজাউল আহমেদ বলল,,

“মেঘের পড়াশোনাই তো শেষ হয়েছে শুনলাম দশ মাস নাকি এক বছর আগে তাহলে এত তাড়াতাড়ি কিভাবে কি? বাবা আমার মনে হয় মেঘের সম্পর্কে আমাদের জানা উচিৎ ও কোন বে আইনি কাজ করছে না তো।”

তখন সমশের চৌধুরী বলল,,

“সমশের চৌধুরীর নাতনির রক্তে কোন ধোঁকাবাজি নেই। নিজে যা করে মানুষ ভাবে সামনের মানুষ টা তার মতোই। কাশফিয়া আয়মান মেঘ শুধু একজন সাধারণ মেয়ে নয় অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী সে তার মতো হতে এবাড়ির সবার যুগ চলে যাবে তবুও হতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। সে ধূসর রাঙা মেঘ তাকে বোঝার ক্ষমতা সবার নেই। এতদিন কেউ মেঘের খোঁজ নেয়নি আজ সামান্য কারনে মেঘের খোঁজ করতে বলছো হাও ফানি।”

অপমানে মুখটা থমথমে হয়ে গেল রেজাউল এর। তখন আয়না চৌধুরী বলল,,

“রেজাউল ভাই তো খারাপ কিছু বলে নি।”

“এটা নিয়ে আমি কিছু শুনতে চাই না। শুধু শুনে রেখো মেঘ খারাপ কিছু করে না। যা করে সততা আর নিষ্ঠার সাথে।”

তখন মেঘ নামলো কালো বোরকা হিজাব নিকাব পড়ে হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে আয়মান চৌধুরীর সাথে কিছু কথা বলছে। আয়মান চৌধুরী মেয়ের কপালে চুমু দিয়ে বলল,,

“আজকের দিনটা আপনার জীবনে সুখ নিয়ে আসুক।”

মেঘ ‘আমিন আর শুকরিয়া” বলে চলে গেল। সবাই ওর দিকে তাকিয়ে দেখলো। তারপর যে যার কাজে চলে গেল।

_____________

সকাল দশটায় কলিং বেল এর শব্দ শুনে দরজা খুলে দরজার পাশের মানুষ টাকে দেখে হেসে বলল,,

‘ধূসর তোর না কাল আসার কথা ছিল তাহলে আজ?”

“আহ হা মা তোমার ছেলে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরেছে তুমি খুশি হও নি বুঝি।”

ছেলের কথায় দিলরুবা খানম হেসে গালে হাত রেখে বলল,,

“খুশি তো খুব হয়েছি পনেরো দিন পর গ্ৰামের মেডিকেল ক্যাম্প থেকে আমার ছেলেটা বাড়ি ফিরলো কিন্তু কাল রাতে তুই না বললি কাল ফিরবি তাই জিজ্ঞেস করলাম।”

“ওহ আচ্ছা কিন্তু মনে হলো আজকেই আসি তাই চলে এলাম। বাড়িতে কেউ নেই না সবাই সবার কাজে চলে গেছে তাই না।”

“হুম তোর বাবা আর ভাইয়া অফিসে, নোলক ভার্সিটিতে কিন্তু তোর দুই পাকনি তো রয়েছে রিমঝিম।”

“মা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব কথা বলবেন নাকি। ছোট ভাইয়া এত দূর থেকে জার্নি করে এসেছে আগে বাসায় ঢুকতে তো দিন।”

বড় ছেলের বউ রোহিনীর কথায় দিলরুবা খানম হাসলো। তখন ধূসর বলল,,

“একমাত্র তুমি আমার কষ্টটা বুঝতে পারলে ভাবি দেখো না মা সেই কখন থেকেই ক্লাস নিচ্ছে। তা আমার আম্মাজান রা কোথায়?”

তখনি দুটো চার বছরের বাচ্চা মেয়ে দৌড়ে এসে বলল,,

“ছোট বাবা আমরা দুজন এখানে।”

ধূসর এগিয়ে গিয়ে দুজন কে কোলে তুলে নিল। রিম বলল,,

“ছোট বাবা যাও হাত মুখ ধুয়ে নাও বাইরে থেকে আসলে সবার আগে হাত মুখ ধুতে হয় তুমি জানোনা।”

তখন দিলরুবা খানম বললেন,,

“দ্যাখ ধূসর কিছু শিখ তোর মতো ডাক্তার মানুষ এটা ভুলে গেছে কিন্তু আমার দিদিভাইদের দ্যাখ সব মনে রাখে।”

ধূসর ওদের নামিয়ে দিল তারপর পকেট থেকে চকলেট বের করে ওদের দিয়ে ওপরে গেল ব্যাগ নিয়ে। কিছুক্ষণ পর ধূসর ফ্রেশ হয়ে এলো। ওর মা খাবার বেড়ে অপেক্ষা করছিল। ধূসর ড্রাইনিং টেবিল এ বসে খাওয়া শেষ করে ওর মাকে বলল,,

“মা আজকে কি কোন স্পেশাল দিন?”

ধূসরের কথায় দিলরুবা খানম হকচকিয়ে উঠলো। তিনি ভাবতেই পারেনি ধূসর এরকম কিছু জিজ্ঞেস করবে। তিনি নিজেকে সামলিয়ে বলল,,

“তোর কেন মনে হলো আজ স্পেশাল দিন?”

“কি জানি তবে মনে হলো আজকে আমার জন্য কোন স্পেশাল দিন। কারো সাথে সারা দিনটা আমি সেলিব্রেট করতাম। আমি তো কালকেই আসতে চাইছিলাম কিন্তু মনে হলো আজকের দিনটা স্পেশাল তাই আজকেই সকালে চলে এলাম।”

কথাগুলো শুনে দিলরুবা খানম আর রোহিনীর চোখ খুশিতে চকচক করে উঠলো। রোহিনী বলল,,

“কার সাথে সেলিব্রেট করতে বলে তোমার মনে হয় ছোট ভাইয়া।”

“জানি না তবে মনে হয়, সব কেমন ঘোলা। মাথাটাও কেমন যেন করে।”

এ কথা শুনে দিলরুবা খানম বলল,,

“থাক ধূসর এখন এগুলো বাদ দাও আবার মাথা ব্যাথা শুরু করবে। যাও ওপরে গিয়ে রেস্ট নাও।”

“না মা বাড়িতে একা থেকে কি করবো আমি বরং একটু ঘুরে আসি।”

“তোর যেমন ইচ্ছে এমনিতে তো তোর যা ইচ্ছে করে সেটা পূরন করেই ছারিস।”

ধূসর হেঁসে ওপরে চলে গেল ও যেতেই দিলরুবা খানমের চোখ দিয়ে একফোঁটা পানি গড়িয়ে পরল। তা দেখে রোহিনী এগিয়ে এসে বলল,,

“মা একদম কাঁদবেন না প্লিজ। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। দেখেন আজকের সবকিছু কিন্তু পজিটিভ সাইন। ইনশাআল্লাহ সবকিছু তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে।”

“ইনশাআল্লাহ, হুম তুমি ঠিক বলেছো। আল্লাহর লাখ লাখ শুকরিয়া।”

ধূসর রুমে এসে আলমারি খুলল আর ভাবতে লাগলো কোনটা পরে বের হবে ও আলমারিতে খুঁজতে লাগলো হুট ধূসরের চোখ গেল একটা শুভ্র পাঞ্জাবি তে। কি মনে করে সে শুভ্র পাঞ্জাবি টাই পড়লো। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজেকে দেখতে লাগলো আর বলল,,

“এই পাঞ্জাবি টা কবে কিনলাম এটা আমার আলমারিতে ছিল খেয়ালি করিনি এতদিন। মনে হয় এটা আমি কিনি নি। কেউ আমাকে কিনে দিয়েছে তবে যে দিয়েছে তার পছন্দ আছে শুভ্র রঙের পাঞ্জাবি হলেও হালকা কাজ করা।”

কি মনে করে বের হওয়ার সময় একটা মাস্ক পরে নিল। নিচে আসতেই দিলরুবা খানম বলল,,

“মাশাআল্লাহ আমার ছেলেটাকে শুভ্র রঙে দারুন লাগছে। তা কোথায় যাচ্ছো এত পরিপাটি হয়ে।

“শুকরিয়া মা দেখি কোথায় যাওয়া যায় আজ একা একাই ঢাকা ঘুরবো ভাবছি।”

“তা ছোট ভাইয়া মাস্ক কেন?”

‘জানিনা তবে কেউ একজন বলেছিল এই শুভ্র রঙের পাঞ্জাবি পড়লে আমি যেন মাস্ক ছাড়া বের না হই। তাই পরে নিলাম মনে হলো তার কথাটা অনেক ইম্পোর্টেন্ট মানতেই হবে।”

“কে বলেছিল?”

হুট করে ধূসর নিজেই অবাক হলো ও এই কথা কেন বলল । ওকে কে বলেছিল এটা ধূসর নিজেও জানে না। ধূসর বলল,,

“জানিনা তবে কেউ তো বলেছিল। আচ্ছা আমি যাই হ্যা। আল্লাহ হাফেজ।”

বলেই ধূসর চলে গেল । ও চলে যেতেই দিলরুবা খানম আর রোহিনী হাসলো। রোহিনী বলল,,

‘কি বুঝলেন মা সুখের দিন খুব তাড়াতাড়ি আসতে চলেছে ভাইয়ার জীবনে।”

‘ইনশাআল্লাহ!”

______________

মেঘ বের হয়ে ওদের ফ্ল্যাটে আসলো আলমারি থেকে একটা শুভ্র রঙের শাড়ি বের করলো শাড়িটাকে ছুঁয়ে মেঘের চোখটা ছলছল করে উঠলো। মেঘ নিজেকে সামলিয়ে নিল তারপর মুচকি হেসে শাড়িটা পরিধান করলো শুভ্র রঙের ফুল হাতা ব্লাউজের সাথে শুভ্র শাড়িটা দারুন লাগছে। ও শুভ্র রঙের হিজাব আর নিকাব বেঁধে নিল। হাতে লাভ শেপের ওপরে ডি আর এম লেখা ব্রেসলেট। মেঘ আয়নায় একবার নিজেকে দেখলো। অসহায় চোখে ব্যর্থ হাঁসি ফুটানোর চেষ্টা করলো। মেঘ চোখ বন্ধ করলো তখন ওর কানে কেউ ফিসফিস করে বলল,,

“মাশাআল্লাহ মেঘবালিকা তোমাকে আজ এক টুকরো শুভ্র মেঘ লাগছে। আমি তো চোখই ফেরাতে পারছি না। নিষ্ঠুর মেয়ে আমাকে মারার প্ল্যান করেছো নাকি আজ। আজ কিন্তু তোমাকে আমার ভালোবাসায় নিষ্ঠুর হতে দেব না বলে দিলাম।”

মেঘ”ধূসর” বলে চোখ খুললো কিন্তু কাউকে দেখতে পেলো না। নিজেকে সামলিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। মেঘ শুনশান একটা নির্জন লেকে আসলো লোকজন নেই একটা নিরব পরিবেশ। এই দিনটাতে এখানেই সে আসে। সামনে নদী মাথার ওপর বড় বট গাছ তার নিছে একটা বেঞ্চ পাতা। মেঘ আসার সময় কতগুলো গোলাপ আর দশটা বেলুন নিয়ে এসেছে। মেঘ বেঞ্চে বসে পড়লো গোলাপ গুলো তার বাম পাশে বেঞ্চে রাখলো আর বেলুন গুলো বেঞ্চের হাতলে বেঁধে রেখে সামনের নদীর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। কিছু সময় পর মেঘ শুনতে পেল,,,

“আরে মিস কাশফিয়া আপনি তো দেখি আজ কাশফুল হয়ে সবুজের মাঝে বসে আছেন।”

~চলবে,,

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ