ধর্ষিতা_বউ
পার্ট:২১
_প্রাপ্তির কান্না ভালো লাগছে না আয়ানের কিন্তু কিছু কারার নেই তার দেখে যাওয়া ছাড়া। চুপকরেই প্রাপ্তি এক পাশে বসে আছে।খুব অসহায় লাগছে নিজেকে।ওই বাড়ীতেই ভালো ছিলো কেন যে আসতে গেলাম।
নিলিমা বেগম এসে, বাবা তুমি কিছু মনে করো না এদের কথায়।
আয়ান -উঠে দাঁড়িয়ে না মা আমি কিছু মনে করিনি।মা আপনি যদি কিছু মনে না করেন আমি একটা কথা বলবো?
নিলিমা বেগম -বলনা কোনো সমস্যা নেই। বলো আমার কাছে তোমার সংকোচ করার কিছু নেই বাবা।
আয়ান-(আমতা আমতা করে প্রাপ্তির দিকে আড় চোখে তাকিয়ে)আমি,, আমি,,,চাচ্ছি মানে আমি চাচ্ছি এইখান থেকে বিকালবেলা চলে যেতে।
আয়ানের কথা শুনে নিলিমা বেগম কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে ড্রইংরুমে গেলেন।
আসিফ নিলিমা বেগমকে চুপ হয়ে এসে সোপায় বসতে দেখে,আম্মু কি হয়েছে? আয়ান কি কিছু বলছে?
নিলিমা বেগম -তেমন কিছু না। ও চাচ্ছে বিকেলে চলে যেতে।এইটা কি ভালো দেখাবে তুই বল?ওই বাড়ীর সবাই কি বলবে?
আসিফ কিছু বলার আগেই আয়ান এসে,মা আমাদের বাড়ী কেউ কিচ্ছু মনে করবে না।আমি সব বুজিয়ে নিবো।ভাইয়া আপনি তো ব্যাপার টা বুজবেন,আমার মনে হয় প্রাপ্তিকে এইখানে রাখাটা ঠিক হবেনা।
আসিফ -আচ্ছা ঠিক আছে তোমরা আগে খাওয়াদাওয়া করে নাও তারপর না হয় দেখা যাবে।
দুপুয়ের খাওয়াদাওয়া শেষ করে একটু রেস্ট নিয়ে সবার সাথে কথাবার্তা বলে সন্ধ্যায় আয়ান আর প্রাপ্তি আয়ানদের বাড়ী উদ্দেশ্য রওনা হলো।আয়ানের সাথে মোটরবাইকে করে যেতে খারাপ লাগছেনা প্রাপ্তির, অনেক খানি পথ যেতেই জোনাকি পোকার আলোতে ভালোই লাগছে,কয়েকটাকে হাত বাড়িয়ে ছোঁয়ার চেষ্টা করছে।গ্লাসের মধ্যে প্রাপ্তির এইভাবে হাত বাড়িয়ে পোকা গুলোকে ছুতে দেখে মোটরবাইক কে রাস্তার এক পাশে দাঁড় করালো।মোটরবাইক দাঁড় করাতে দেখে প্রাপ্তি পেয়ে ভাবলো, আমাকে বকাঝকা করবে নাকি? চুপচাপ কিছু না বলে মাঝ রাস্তায় এসে দাঁড়িয়ে পড়লো। আমার ও এইভাবে হাত বাড়ানো উচিত হয়নি।
আয়ান -বসে আছো যে? আমি বুজতে পেরেছি জায়গা টা তোমার ভালো লেগেছে। জোনাকি পোকার আলোয় চারপাশ ঝিকমিক করছে।এইখানে কিছু সময় কাটিয়ে তারপর না হয় বাড়ী যাবো।
আয়ানের কথা শুনে এক নিমিষেই মনটা ভালো হয়ে গেলো প্রাপ্তির।ও কি করে বুজলো জোনাকি পোকা আমার ভালো লাগার মধ্যে একটা।হয়তো হাত বাড়ানো দেখেই বুজে নিয়েছে।বাহিরে কিছুটা সময় পার করে বাসায় এলো দুজন। তাদের দেখে সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
আকাশ -কিরে তোরা? তোদের না আজ ওই বাড়ীতে থাকার কথা?
আয়ান -(কথা ঘুরিয়ে)আর বলিস না ওই খানে আমার একদম ভালো লাগছেনা।তোদের সবার জন্য আমার খুব খারাপ লাগছে। তাই চলে এলাম।রুমকিকে কোলে নিয়ে কি ছোটো আম্মু ঠিক করিনি?
রুমকি -একদম ঠিক করেছো আমারো ভালো লাগছিলো না নতুন মামনিকে না দেখে।সুমি প্রাপ্তির কাছে এসে, তুমি চলে যাওয়াতে আমার ও ভালো লাগছিলো না।
যাও আয়ান আর তুমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো।আমি চা দিচ্ছি।
আয়ান সিঁড়ি দিয়ে উঠতে যাবে তখনি অধরা নেমে আসতে আসতে (ন্যাকামি করে)আয়ান তুমি এসেছো । তুমি চলে যাওয়ার পর আমার খুব খারাপ লাগছিলো।প্রাপ্তি তাদের দিকে একবার তাকিয়ে তাদের পাশ দিয়ে উপরে উঠে চলে গেলো।
অধরা -(হাত ধরে)আয়ান তুমি এখন কোথায় যাচ্চো? চলো আমার রুমে আমি আর তুমি বসে আড্ডা দিবো। তোমার সাথে আমার অনেক কথা আছে।
আয়ান-অধরা হাত টা ছাড়ো।আমি রুমে যাবো। ফ্রেশ হতে হবে।
অধরা -আয়ান বিয়ে করে তুমি এতোটা পাল্টে গেলে? তুমি দেখছি পুরোই বউ পাগল হয়ে গেছো।
আয়ান -প্লিজ অধরা উল্টা পাল্টা কথা বলবে না।আমাকে যেতে দাও প্রাপ্তি রুমে একা আছে।
অধরা ও আর কথা বাড়ালো না।হাত টা ছেড়ে দিয়ে এসে ভাবি (সুমিকে)সত্যি করে বলো তো প্রাপ্তির সাথে আয়ানের কি আগে কোনো রিলেশন ছিলো?
সুমি ভাবছে অধরা কে কি থেকে কি বলবে বুজতে পারছেনা।মিনু এসে সুমি আমতা আমতা করছে দেখে ভাবী ভাইয়া তোমাকে ডাকছে আগে গিয়ে কথা শুনে আসো। পরে এসে না হয় অধরাকে সব বলবে।
মিনুর কথা শুনে সুমি যেনো হাপ ছেড়ে বাঁচলো।
প্রাপ্তির বিয়ের এক সাপ্তাহ কেটে গেলো। এই বাড়ী সবাই প্রাপ্তিকে ভালোবেসে ফেলেছে।প্রাপ্তিও সবাইকে ভালোবাসে।শুধু আয়ানে সাথে কথা হয়না প্রাপ্তির। আয়ান সবসময় নিজেই বকবক করে যায় আর প্রাপ্তি শুধু শুনেই যায়।সকালে নাস্তা করে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে নেমে আসলো আয়ান আর আকাশ।
সুমি রান্নাঘর থেকে দৌঁড়ে এসে আকাশ অফিস থেকে আজ বিকালে চলে এসো, মা ফোন করেছে একবার গিয়ে দেখা করে আসতে।
আকাশ -আচ্ছা রেডি হয়ে নিও আমি এসে তোমাকে নিয়ে যাবো।
কথাটা বলতে বলতে বাসা থেকে বের হবে এমন সময় দেখে আবিদ চৌধুরী দরজায় দাঁড়িয়ে।
আকাশ -(অবাক হয়ে)আব্বু! তুমি?
আবিদ চৌধুরী -হুম আমি! (বাসার ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে)কেমন সারপ্রাইজ দিলাম বল?রফিক গাড়ী থেকে ব্যাগ গুলো নিয়ে আসো।
আয়ান এসে, আব্বু! সত্যিই অনেক বড় সারপ্রাইজ । তুমি না একমাসে জন্য গেছো।
আবিদ চৌধুরী -বাড়ীর ছোটো লক্ষী কে দেখার জন্য কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করলাম।
আকাশ -আব্বু তুমি একবার বলে আসতে। আমি না হয় এয়ারপোর্ট গিয়ে তোমাকে নিয়ে আসতাম।
আবিদ চৌধুরী -এতো চিন্তা করতে হবে না।আমার কোনো প্রবলেম হয়নি।
সুমি গিয়ে আয়েশা বেগমকে ডেকে আনলেন।
আয়েশা বেগম -সবাইকে কি সারপ্রাইজ দিলে নাকি?
আবিদ চৌধুরী -হুম ঠিক বলছো।কই সবাইকে ডাকো। সুমি ছোটো বউ, ঝিনুক মিনু এরা কোথায়?
আয়ান বার বার উপরের দিকে তাকাচ্ছে। সুমির দিকে তাকিয়ে ইশারা দিয়ে প্রাপ্তিকে নিয়ে আসতে বললো।
রুমকি দৌঁড়ে এসে নানা ভাইয়া এসেছে নানা ভাইয়া এসেছে বলে কোলে উঠলো।
আবিদ চৌধুরী -আমার রুমকি মনি দেখছি আমাকে ভুলেই গেছে।আমি যাওয়ার পর আমাকে একবারো ফোন দেয়নি।
কথা গুলো বলতে বলতে সিঁড়ি দিকে নজর পড়তেই দেখে সুমি প্রাপ্তিকে নিয়ে নামছে।সবাই চুপ হয়ে আছে। আয়ান মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আয়েশা বেগম চুপচাপ গিয়ে সোফায় বসে পড়লো।
প্রাপ্তি কাছে এসে আবিদ চৌধুরীকে পা ছুঁয়ে সালাম করে উঠে দাঁড়াতেই, সুমি কে ও?
সুমি -বাবা ও,, ও,, আয়ানের বউ!
চলবে,,,,,,,