ধর্ষিতা_বউ পার্ট:১৫

0
3970

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট:১৫

#Rabeya Sultana Nipa

 

__আয়ানের কথা শুনে আকাশ আর ঝিনুক আয়ানকে এক পাশে টেনে নিয়ে,

আকাশ -তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?
না জেনে শুনে তুই মেয়েটাকে বিয়ে করবি?
আব্বু যখন জিজ্ঞাস করবে তখন কি বলবো?

আয়ান -ভাইয়া আমি ওই অরণী নামের মেয়েটা কে কখনোই বিয়ে করবোনা।বিয়ে যদি করতেই হয় আমি প্রাপ্তিকেই করবো ওর জীবনে যাই ঘটুকনা কেনো!

ঝিনুক -প্লিজ আয়ান তুই একবার ভেবে দেখ, এই মেয়ের সাথে এমন কিছু ঘটেছে যা এই এলাকার সবাই জানে।

আয়ান -আপু! তোরা ভালো করেই জানিস আমি এক কথার মানুষ। বিয়ে যখন আমি করবো বলছি ওই মেয়েকেই করবো।
আয়ান আসিফের কাছে এসে, ভাইয়া প্লিজ আমাকে একবার ওর সাথে কথা বলতে দিন।
আসিফ চোখে কোনে পানি নিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক বুজিয়ে আজাদ সাহেবের দিকে তাকিয়ে, আব্বু! তুমি বাহিরের দিক টা দেখো আমি এইদিক টা ঠিক করেই আসছি।

আসিফ আয়ানকে নিয়ে প্রাপ্তির দরজার সামনে গিয়ে দেখে দরজা ভিতর থেকে আটকানো। আসিফ দরজায় নক করে, প্রাপ্তিকে বলতে লাগলো,আমি জানি তুই আমার কথা গুলো শুনছিস।আমি তোকে কোনো কিছু নিয়ে জোর করবো না শুধু এইটুকু বলবো তোর জন্য যদি আমি সামান্য কিছুও করে থাকি সেই আবদার নিয়ে বলছি তুই দরজাটা একবার খোল।
আমি জানি তোর সঙ্গে আজ যা হয়েছে সব কিছুর জন্য আমি দায়ী। কি করবো বল আমি যে তোকে সুখে দেখতে চাই।কিরে,,,, দরজাটা খুলবিনা?ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি।কথা বলতেই প্রাপ্তি দরজা খুলে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আসিফ আর আয়ানকে কিছু না বলেই খাটের এক কোণায় গিয়ে বসে পড়লো।
আয়ান রুমে এসে আসিফ কে বললো ভাইয়া আপনি কিছু মনে করবেন না আমি ওনার সাথে আলাদা ভাবে একটু কথা বলতে চাই।আসিফ কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।আয়ান চুপ করে থেকে প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে একদম অপ্সরী। দেখেছেন আমার পছন্দ আছে মানতে হবে।
কথাটা শুনে প্রাপ্তি আয়ানের দিকে আড় চোখে একবার তাকিয়ে আবার নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
আয়ান আবার বলতে লাগলো আপনার জীবনে কি ঘটেছে আমার জানার দরকার নেই।আমি শুধু জানি আপনাকে প্রথম দেখাতেই আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
আরেক টা জিনিস আমি খেয়াল করেছি আল্লাহ চান আমাদের বিয়েটা হোক।
এই কথাটা শুনে প্রাপ্তি পুরোপুরি ভাবে আয়ানের দিকে তাকালো,আয়ান মুছকি হেঁসে আমার কিন্তু তাই মনে হচ্ছে না হলে দেখুন না আপনার পরার শাড়ী গহনা গুলোতো যার সাথে আমার বিয়ে হওয়ার কথা তাকেই দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু ভুল হয়ে হয়তো সেই গুলো আপনাকেই পরানোই হয়েছে।তাহলে এইভার ভেবে দেখুন তো কিছু কিছু ভুলও মানুষের জীবনকে সুন্দর করে তুলতে পারে।
ওহ্ দেখেছে কতক্ষণ থেকে আমি একা একাই বকবক করেই যাচ্ছি আপনি কিছু বলুন।(প্রাপ্তি আবার অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে বসে আছে)কি বলবেন না তাই তো?আচ্ছা আমাকে কি আপনার পছন্দ হয়নি? না হলেও বলতে পারেন।
আচ্ছা আপনি এইরকম পাথরের মতো হয়ে আছেন কেনো? কিছুতো বলুন! বিয়ে টা কি হচ্ছে?

প্রাপ্তি -(নিরবতা ভেঙে বললো) নাহ্।

আয়ান -কেনো আমাকে কি আপনার যোগ্য
মনে হয় মা?

প্রাপ্তি -আমিই আপনার যোগ্য না।আমার জীবন এতো সহজ সরল নয়। আমাকে বিয়ে করলে এই সমাজ আপনাকে ভালো চোখে দেখবেনা।আর আপনি জানলেও এই বিয়ের কথা মুখ দিয়েই বের করতেন না।

আয়ান -আমার জানা দরকার নেই।তোমার অতীত আমি জানতে চা,,,,,,,,,,

প্রাপ্তি আয়ানকে থামিয়ে আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা ছেয়ে নিচ্ছি আপনারা চলে যান।তবে এইটা ভেবে আমি শান্তি পাচ্ছি দুটো মানুষের ভালোবাসার জয় হয়েছে আজ।

আয়ান -না আমি যাবো না। আমি জানতে চাই কেনো আপনি আমাকে বিয়ে করবেন না?

আয়ানের কথা শুনি প্রাপ্তি উঠে দাঁড়িয়ে চিৎকার দিয়ে কারণ আমি ধর্ষিতা।(কথাটা বলতেই আয়ানের সব কিছু যেনো থমকে গেছে মনে হচ্ছে আবার প্রাপ্তির কথাটা বার বার তার কানে ভেসে আসছে প্রাপ্তির দিকে একরাশ অবাক দুটো চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আয়ান)হ্যাঁ আমি ধর্ষিতা।আমাকে সেইদিন ৪ জন মিলে ৩ দিন ধরে একটা রুমে আটকে রেখে ছিলো। যখন যার ইচ্ছে হতো সেই এসে আমাকে ভোগ করতো।আমি তাদের হাতের একটা পুতুল ছিলাম মাত্র।আমি এই এইগুলোর কথা বলতে সাহস পাইনা। আজ যখন আপনি জোর করেলে তাই বললাম।বুজতে পেরেছেন মিঃ আয়ান।আর কিছু জানতে চান? নাকি ওই ৩ দিন যা যা আমার সাথে করে ছিলো সেই গুলোও আপনাকে ভেঙে ভেঙে বলতে হবে।ওকে তাহলে সেই গুলোও বলছি তাহলে শুনুন
কথাটা বলতেই আয়ান চিৎকার দিয়ে জাস্ট সেট আপ।আপনাকে আমি একবারো বলেছি এইগুলো বলতে।আপনার মন মানসিকতা ঠিক করে নিন কারণ আজ এবং এখনি বিয়েটা হচ্ছে।

কথাটা শুনে প্রাপ্তি অবাক দুটো চোখ নিয়ে আয়ানের দিকে তাকিয়ে, করুণা করছেন? চাইনা আমি কারো করুণা।

আয়ান -বললাম না আপনার মন মানসিকতা ঠিক করুণ। যেটাকে আপনার কাছে করুণা মনে হচ্ছে সেটা আমার কাছে ভালোবাসা।কথাটা বলেই প্রাপ্তির হাত ধরে টেনে ড্রইংরুমে নিয়ে গেলো।সবার মনে এক বিষণ্ণতার চাপ।আসিফ ভাবছে আয়ান কি পারবে প্রাপ্তিকে রাজি করেতে?
আয়ানে আর প্রাপ্তিকে একসাথে দেখে ঝিনুক আর সুমি বসা থেকে উঠে আয়ানের কাছে আসলো।আয়ান তাদেরকে কিছু না বলে আসিফ কে বললো আপনি বিয়ের ব্যবস্থা করুন।আসিফ দৌঁড়ে এসে প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে তুই আমার লক্ষ্মী বোন।আমি জানতাম তুই আমার কথা রাখবি।(মামার দিকে তাকিয়ে)মামা বিয়ের ব্যবস্থা করুন।
সবকিছু ঠিকঠাক করে দুইটো বিয়েই একসাথে হলো।প্রাপ্তির মুখে কোনো কথা নেই সেইযে আয়ানের সাথে কয়েকটা কথা বলেই চুপ করলো আর এখনো কথা বলেনি।সিয়ামরা সন্ধ্যার আগেই বিদায় নিয়ে অরণীকে নিয়ে চলে গেলো। এইবার প্রাপ্তিকে বিদায় দেওয়ার ফালা কিন্তু সেই কোনো কথাই বলছেনা।আসিফ আয়ানের হাতে প্রাপ্তির হাত তুলে দিতে যাবে তখনি প্রাপ্তি আয়ানের হাতে তুলে দেওয়ার আগেই হাতটা গুটিয়ে নিলো।
আয়ান দেখে আসিফ কে বললো ভাইয়া হাত দিতে হবেনা শুধু পরিস্থিতি টা সামাল দিন।আয়ানের কথা শুনে আসিফ মনে মনে ভাবছে আমার বোনের জন্য হয়তো আল্লাহ ঠিক মানুষটাই তার জীবনে পাঠিয়েছে।

চলবে,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে