#দুই_পথের_পথিক
#পর্বঃ২৭ (অন্তিম পর্ব)
#বর্ষা
জীবনের পয়গম্বর আমরা নিজেরাই।যখন তখন জীবনে নতুন মোড় আসে।আসে নতুন মানুষেরা।তবে ভিন্ন পথেক পথিকেরা প্রতিবারই কেমন করে যেন একসাথে জড়িয়ে যায়।নাহিন যে ছিলো সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ী হঠাৎ করে আসলো বাংলাদেশে সঙ্গ ধরলো এক অজানা রমনীর।বেয়ারা,রাগী,ব্যস্ত ছেলেটা বদলে গেলো।না,না থমকে গেল একজনের প্রতি।সারা দুনিয়ার জন্য ব্যস্ত ছেলেটা প্রিয়তমার জন্য সময় বের করলো অফুরন্ত।ভালোবেসে সঙ্গী হলো প্রতিবাদের তার প্রতিশোধের!
কুহেলিকা দেশে ফিরলো বাবার খোঁজ পেয়ে।বুদ্ধি আটলো প্রতিশোধের।তবে বাবার হাতে দায়িত্ব দিয়ে ফিরে তাকালো পেছনে নাহিনের খোঁজে।প্রেমিক পুরুষের কষ্টে হৃদয়ে করলো ব্যথা উপলব্ধি।প্রিয়তমের সঙ্গ দিলো,প্রমাণ করলো জোগাড় জ্যোতির আত্মহত্যার পেছনে দায়ী খুনীদের গুণাহের!তবে প্রমাণ ছিলো অতি নগণ্য।তাইতো পথ বদলিয়ে অন্য পথে হাটলো। একে একে শাস্তি দিলো অপরাধীদের।
সিনানের হত্যাকারী আর কেউ ছিলো না বরং সাফিন নিজেই ছিলো। পারসোনালিটি ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত সে।দুই দুইটা মানসিক সমস্যায় এখন সে পাগলখানায় আটকা। শুধুমাত্র মুখ দিয়ে সিনান সিনান করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না সে।সাফিনের দ্বি-সত্ত্বা খুন করেছে তার নিজ পুত্রকে।কুহেলিকা এই সত্যি জানতে
পেরেছে সাফিনের ডক্টর মায়রা থেকে।ডক্টর মায়রাই পাগল খানায় দেখভাল করছে সাফিনের।সাফিনের নিজের স্বীকারোক্তি এটা।তবে কুহেলিকার মনে সন্দেহের বীজ নিভে যায় না!
ভালোবাসা নামক অনুভূতিটা জুড়ে দিয়েছে নাহিন-কুহেলিকার নাম।যাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পায় তারাই তো প্রকৃত সুখটা পায়।তবে এই পূর্ণতা আদৌ বিদ্যমান থাকবে কিনা তা তো ভবিষ্যৎ বলবে!জুনায়েদ হয়তো স্ত্রীকে ভালোবাসেনি তবে মেয়েকে তো ভালোবেসেছিলো তবে পায়নি তার পান্হা। আদরের ছোট্ট মেয়ের তার প্রতি ঘৃণার কারণে আর বেঁচে থাকার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলাতেই তো নিজের জীবনের বলিদান দিয়ে দিলো শয়তানের নামে।
সুইসাইড করা তো শয়তানের কাজ।আজ জুনায়েদ তো শয়তানি কাজ করতোই।আর তার মাঝে সে সবচেয়ে বড় গুণাহ আল্লাহর দেওয়া জীবনকে ত্যাগ করলো!এইটা তো শয়তানের কাজ আর সে তো তাহলে শয়তানের নামেই কাজ করলো।
রাইসা-তাকদির ভালো আছে।রামায়সা ভালো বাবাই পেয়েছে।জীবনের নতুন মানে পেয়েছে রাইসা,রামায়সা।আর তাকদির?সে তো এক রমনীর ছেড়ে যাওয়া পুরুষ। নিজের ভালোবাসা হারিয়েছে।তবে নতুন করে ভালোবেসে ঠকে যায়নি। সন্তানের ভালোবাসা পাচ্ছে। রাইসার মতো যত্নশীল স্ত্রী পেয়েছে।জীবনে সুখী থাকতে গেলে আর কি লাগে!
নাহিন-কুহেলিকার জীবনের বদ-লোকেরা তাদের শাস্তি পেয়েছে। জয়নুবা বেগম আর কাসেম মির্জা ছোট ছেলে জাহিদের পরিবার বোঝা হয়ে গিয়েছিলো।তারা এখন বৃদ্ধাশ্রমে থাকছে।হায়!যেই সহায় সম্পত্তির খাতিরে কোহিনুর চৌধুরী,তানজিল চৌধুরীকে ধোঁকা দিয়েছে,সেই সহায় সম্পত্তির উত্তরাধিকারী যাদের বানাতে চেয়েছে তারাই আজ তাদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসেছে।সত্যিই জীবন বড্ড বৈচিত্র্যময়!
রাব্বি মুনতাসির হার্ট অ্যাটাকের পাঁচদিন পর নাহিনের দেখা চেয়েছে।নাহিনের হাত ধরে ইচ্ছে মতো কেঁদেছে। জীবনের মানে সে বুঝেছে।সে নাকি আজরাইলের দেখা পেয়েছে!রাব্বি মুনতাসির ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলো। বাচ্চাদের মতো বিহেভ করছিলো।স্বামীর এমন অবস্থা দেখে ভেঙে পড়েন ফাতেমা বেগম।নাহিনের হাত জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চান। কাঁদতে কাঁদতে বলেন,
”নাহিন আমরা জ্যোতির অপরাধী ক্ষমা করে দে আমাদের।আমরা নিজেদের সন্তানদের হারিয়েছি।বুঝেছি সন্তান হারানোর কষ্ট।”
ফাতেমা বেগমের এই কথা শুনে নাহিন স্তব্ধ করে থাকলে জয়া আর রুহি হেসেছে বাইরে বেড়িয়ে। প্রচুর হেসেছে।তবে এক পর্যায়ে হাসি থামিয়ে একে অন্য জড়িয়ে ধরে একে অপরের চোখের জল মুছেছে। বোনদের সম্পর্ক বলে কথা।তার ওপর আবার বেষ্ট ফ্রেন্ড।জয়া হাসতে হাসতে বলেছিলো,
”এরা কত নিখুঁত অভিনয় জানে!”
তাও সেই ঘটনার পেরিয়ে অনেক গুলো দিন।পেরিয়েছে অনেকগুলো বছর।এর মাঝে হারিয়ে গেছে বহু সম্পর্কের সুতো। ছিঁড়েছে মনের বাঁধন।আবার অনেক বাঁধন জুড়েছে হৃদয়ের সাথে হৃদয়কে।
জিনিয়া-মুফতির সম্পর্ক জোড়ালো করে এসেছে নিয়তি।মেয়ের নাম রেখেছে নিয়তি।নিয়তির কারণেই তো তাদের দেখা হওয়া,একে অপরকে অল্প সময়ে ভালোবেসে আঁকড়ে ধরা। ইফতেখার আহমেদ প্রথমে রাগ দেখালেও পরে মেনে নিয়েছেন ছেলে বউমাকে।কোলে পিঠে করে মানুষ করছেন নিয়তিকে।
সম্পর্কের জোড়াতালি দেওয়া অংশটাও ছিঁড়ে পড়েছে।জিনিয়ার সাথে আর যোগাযোগ নেই বাবা-মায়ের।ওই স্বার্থপর মানুষগুলো একবারও তো ওদের ভালোবেসে আগলে নেয়নি। শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময় ভালোবাসা দেখিয়েছে।তা কি আর সত্যি ছিলো!সেদিনও তো হার্টে অনেক বড় এক অপারেশন করাতে হবে।অনেক টাকার ব্যাপার সেপার। মুনতাসিরদের ব্যবসা তখন লাটে উঠেছে।শেয়ার মার্কেটে ভ্যালু তলানিতে। অপারেশন না করলে হার্টের ব্লকেজের কারণে মৃত্যু অনিবার্য।তাইতো নাহিনকে ডেকে এনে আদর, সোহাগ ক্ষমা চাওয়ার অভিনয় করলো।নাহিন ক্ষমা না করলেও টাকা দিয়েছিলো।কারণ সে হয়তো আগেই বুঝেছিলো গিরগিটি রং বদলায় তবে জাত না। অপারেশন শেষে তারাই আবার নাহিনের নামে কুৎসা রটিয়েছে।হয়তো বাড়ি ছিলো না সে তবে খবর কি কানে যায়নি তার!
জয়া,রুহির খাতির হয়েছে ওদের কাকিসাহ এর সাথে। মুনতাসির বংশের বড়দের সাথে হয়তো যোগাযোগ নেই।তবে ভাতিজা,ভাতিজির সাথেও কি সম্পর্ক ছিন্ন করবে নাকি!নাহিন নিয়ে এসেছিলো ওদেরকে ওদের ভাই-বোন দেখাতে।কি মায়া জড়ানো ভাবে কথা বলেছে ওরা।কুহেলিকার মনে হয়েছে আসলেই কি মুনতাসিররা মানুষ!কি করে পারলো এতো মায়াবী বাচ্চাগুলোকে বোর্ডিং এ রাখতে!
জয়ার বিয়ে হয়েছে তার সেই প্রেমিক পুরুষের সাথে।পালিয়ে বিয়ে করেছে। অবশ্য সাহায্য করেছে রুহি।জয়ার প্রেমিক পুরুষকে দেখে রুহি একদফা হেসেছে।তারপর বলেছে,
”দোস্ত তোর ভ্যাবলা প্রেমিক আমার চিৎকারের শব্দে সাইকেল থেকে পড়েছে।এ তোকে ভাগিয়ে এনেছে বিশ্বাস যেন হতে চাচ্ছে না”
হ্যা,জয়ার প্রেমিক পুরুষের দেখা সেদিন ছাদে থেকেই পেয়েছিলো রুহি।জয়ার ভালোবাসা আরিয়ান।ভাগ্য ওদের এক করেছে।তবে রুহির মনে কষ্টেরা বাসা বেঁধেছে ।মুখটা তার হাসি হাসি হলেও মনের মাঝে তার বিশাল ক্ষত।হ্যা সেই দিনের ভ্যাবলা যুবকটিকে মন দিয়ে বসেছিলো ষোড়শী সেই রমনী।তবে তা এক নজরের ঘটনা বলে এড়িয়ে যায় রুহি।তবে আদৌতে ভালোবাসতে তো এক মুহুর্তই যথেষ্ট।রুহি হয়তো ভুলে বসেছিলো তা।এখনো জীবনে এগিয়ে দেখেনি কাউকে।দুই বোনের সম্পর্কটাও নেই আর আগের মতন।রুহি দেশ ত্যাগ করে নাহিন-কুহেলিকার কাছে।আর জয়া দেশেই আছে স্বামীকে নিয়ে।
নাহিন-কুহেলিকা ভালোবাসার আরেক নাম!কিয়ান আর কিনায়া বড় হয়েছে। বাবা-মায়ের মিষ্টি মধুর সংসার থেকে ভালোবাসতে শিখছে। ভালোবাসা এক পবিত্র অনুভূতি এই সম্পর্কে অবগত তারা। তাদের কাছে ভালোবাসা মানে মাম্মাম,পাপাই,জয়া আপ্পি,রুহি আপ্পি,জিনিয়া মামি,মুফতি মামু,তাকদির মামু,রাইসা মামি আর নিয়তি বনু,রামায়সা আপ্পি।জয়া,রুহি বাদে নাহিনের ভাইদের আর কোনো সন্তান যোগাযোগ রাখেনি ওদের সাথে।নাহিনও আর চেষ্টা করেনি। বাচ্চাদের দুই মাস হওয়ার পরপরই পাড়ি জমিয়েছে সিঙ্গাপুরে।তবে দেশ ছাড়ার পূর্বে নাহিন গিয়েছিল মুনতাসির পরিবারে ফিরে।চলে আসার পূর্বে নাসরিন সুলতানাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলো,
”আম্মু আমি তোমার জন্য ফিরে এসেছিলাম।আর তুমিই আমায় সবচেয়ে বেশি আঘাত দিয়েছো।তোমার প্রতি আমার দায়িত্ব আছে।তাই তোমাদের জন্য একটা ফিক্সড ডিপোজিট করে যাচ্ছি।প্রয়োজন মাফিক টাকা তুলে নিয়ো।তবে এই টাকা অব্দি আমার প্রতি তোমাদের অধিকারের সীমাবদ্ধতা আমি নির্ধারণ করলাম।তোমরা আমার সন্তানদের সাথেও নিজেদের স্বার্থের জন্য দেখা করেছিলে। তুমি কি করে পারছো এদের সাথে মিশে আমার ক্ষতি চাইতে!তুমি না মা,তুমি সন্তানের ক্ষতি চাচ্ছো।বাহ,বেশ ক্ষতি চাও।তবে শুনে রেখো আজ থেকে তোমাদের নিকট জ্যোতি (নাহিনের মৃত বোন)আর নাহিন দু’জনেই মৃত।আসছি আমি।ভালো থাকতে বলবো না। বরং নিজেদের কর্ম অনুযায়ী বাকি জীবন অতিবাহিত করো”
”বর্তমান”
কুহেলিকা আজ আবারো বাংলাদেশে এসেছে।তবে আট বছর অতিক্রম করেই।তবে ওইবার সঙ্গে যেমন কেউ ছিলো না তবে আজ সঙ্গে আছে কিয়ান।মেয়েটা বাবা পাগল হয়েছে।বাবাকে ছাড়া থাকতে পারবে না তাই রেখে আসা।আর কিয়ান সে মা ভক্ত।তাইতো মায়ের সাথে চলে আসা।
”মাম্মাম,এই জায়গার মানুষগুলো এমন কেন?কত হ্যারাস করালো আমাদের”
এয়ার পোর্টে হ্যারাসের শিকার হয়েছে কুহেলিকা। বাংলাদেশের এয়ারপোর্টে এমনটা প্রায়ই হয়।আর সেই সংবাদ ভাইরাল হতেও সময় নেয় না।কুহেলিকা কিয়ানের গালে হাত রেখে বলে,
”পাপা এটা বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর নয়।আর প্রতিটা দেশেই কিছু না কিছু সমস্যা থাকে। তুমি তো জানো তাই না?”
কিয়ান মাথা নাড়ায়।কুহেলিকার সামনে গাড়ি থামতেই দেখতে পায় মুফতিকে।সাথে আছে ছোট্ট নিয়তি আর জিনিয়া।জিনিয়াকে দেখেই কিয়ান ‘পিমি’ বলে জড়িয়ে ধরে।পিপির পি আর মামির মি দিয়ে পিপি ডাকে সে।গাড়িতে উঠতেই কল আসে নাহিনের।নাহিন কল দিয়ে জিজ্ঞেস করে,
”কুহু কিনায়ার হেয়ার কিভাবে বাধবো?মেয়ে তো বলছে তোমার মতো বেঁধে দিতে! মেয়েকে একটু বোঝাও না পাপা তো পাপার মতো বাঁধতে পারে।সে কিভাবে তোমার মতো বাঁধবে!”
”ফোন দেও আমার মেয়েকে”(কুহু)
”মাম্মাম দেখো না পাপাই আমায় কেমন করে চুল বেঁধে দিচ্ছে!মাম্মাম তুমি আমায় চুল বেঁধে দিয়ে যাও।”(কিনায়া)
”বেবি মাম্মাম তো বাংলাদেশে।মাম্মাম কিভাবে বেঁধে দিবে! তুমি পাপার মতোই বেঁধে নেও”(কুহু)
”আমি তোমার কাছে যাবো মাম্মাম।অ্যা অ্যা”(কিনায়া)
নাহিন মেয়ের হাত থেকে মোবাইল নিয়ে কুহেলিকাকে বলে,
”এখন কিন্তু আমিও মেয়ের মতো কেঁদে দিবো!আমরা বাংলাদেশে আসছি।উই মিস ইউ ”
”আমি তো সঙ্গে আসতেই বললাম। তোমাদের বাপ-মেয়েরই তো সুইজারল্যান্ড যাওয়ার ইচ্ছা ছিলো। সেখানে যাও।রাখছি”(কুহেলিকা)
”ভাবী এভাবে বললে কেন?ভাইয়া যদি রাগ করে?”
রাইসার কথায় কুহেলিকা হেসে দেয়।নিয়তি আর কিয়ানকে দেখিয়ে বলে,
”বাচ্চারা যেমন এই মারামারি,ঝগড়া করে পরমুহূর্তেই বন্ধু হয়ে যায় ঠিক তেমন তোমার ভাইয়া আর আমার সম্পর্ক।তোমার ভাইয়াকে আমি অন্য জায়গায় যেতে বললাম না?দেখো আর কয়েক ঘন্টা পরই সে বাংলাদেশে থাকবে মেয়েকে নিয়ে।আমি নিশ্চিত মেয়েকে ইচ্ছে করে কাঁদিয়েছে।আর মেয়েও আছে বাবার সাথে সঙ্গ দিতে কেঁদেছে ”
কুহেলিকার ফোনে রাইসার ভিডিও কল আসে।কুহেলিকা মুচকি হেসে ভিডিও কল রিসিভ করে মৃদু শব্দে বলে ওঠে,”সারপ্রাইজ ভাবী!”
”শয়তান মেয়ে আমি তোমার ভাই বলছি।আমাকে কি তোমার ভাবী ভাবী লাগে!”(তাকদির)
”একদম না,আমার ভাইকে তো ভাইয়ের মতো লাগে।হি হি হি”(কুহু)
”কতদূর এসেছো?আর মুফতি ছোকড়া কোথায়!ওই ছোকড়ার খবর আছে। এতগুলো ফোন দিয়েছি একটাও ধরেনি।”(তাকদির)
”কুল ডাউন ব্রাদার।ইয়োর ব্রাদার ইজ হেয়ার।কাল রামায়সা মামনির থার্টিন বার্থডে আর আমরা তা সেলিব্রেট করতে আসবো না তা কি করে হয়!”(মুফতি)
কুহেলিকার হাত থেকে মোবাইল নিয়ে কথা বলতে থাকে মুফতি।আর জিনিয়া হাসতে থাকে।সবার জীবন সুখেই যাচ্ছে।জীবনটা হচ্ছে একটা দাড়ি পাল্লার মতো। মুনতাসিরদের খবর আর রাখেনি নাহিন। নেওয়ার প্রয়োজনবোধ হয়তো করেনি!হয়তো মনের বিতৃষ্ণা কাটিয়ে উঠতে পারেনি।তবে তাকদির একবার বলেছিলো নাসরিন সুলতানা নাহিনের নাম্বার চেয়েছে।নাহিন দিতে নিষেধ করেছিলো।তারপর কি হয়েছে নাহিন আর জানতে চায়নি। বাচ্চাদের নিয়ে তো বেশ আছে। কয়দিন আগে রুহি কানাডা গিয়েছে।মেডিকেলে আরেকটা কোর্স করতে। যোগাযোগ হয় তবে পড়াশোনা আর নিজের খরচ নিজে চালানোর জেদে সেই যোগাযোগ হয় অতি স্বল্প। তবে যেমনি করেই হোক জীবনের দৌড়ে সবাই এগিয়ে গেছে। পেছন ফিরে তাকানোর এখন আর কারো সময় নেই।তবে হঠাৎ নির্জনে গেলে তাদের সবার ভেতর থেকেই বেরিয়ে আসে এক গভীর দীর্ঘশ্বাস!কারো দীর্ঘশ্বাসের নাম আছে,আবার কারো দীর্ঘশ্বাসের নাম তারা খোঁজার প্রয়াসই করেনি।
জীবন বহমান।বইতে থাকবে সময়।সময়কে তো আর আগলানো যায় না।আগলে রাখতে হয় স্মৃতিদের।দেখা যাক ভবিষ্যৎ কি হবে!আবারো কি তাদের জীবনে দুঃখের হাতছানি হবে নাকি দুঃখ শেষে তারা সুখের মুখ দেখেছে অবশেষে!দোয়া রইলো ভালোবাসার প্রতি।ভালোবাসার মানুষদের প্রতি। ভালোবাসা তখনই সুন্দর যখন ভালোবাসার মানুষটি আপনার আপন!
সমাপ্ত