– বউ মা রেডি হলে? এখনও সাজছো? পাত্রীপক্ষ অপেক্ষা করবে যে!
– আমি তো রেডিই মা,, কখন থেকে!
সাবিহা মাথা থেকে পা পর্যন্ত জেসমিনকে দেখে বলল,”এই কামিজেই যাবে? একটু ভালো দামী শাড়ি পরে গেলে হতো না মা, ওরাও বুঝতো আমাদের রহন সহন !
জেসমিন ঠান্ডা গলায় বলল, “খিলগাঁওয়ে না পাত্রীর বাড়ি? পাত্রীর বাবা তো শুনেছি সরকারি কর্মচারী ছিলেন, এমন কি মহল গড়েছেন যে সঙ সেজে যেতে হবে?ওদের নিয়ে আপনি ভাববেন না মা, আমরা কারা সবাই ভালো মতই জানে। তাদের কাছে এত রহন সহন প্রমাণ না দিলেও চলবে! ”
সাবিহা কথা বাড়ালেন না। জেসমিন বিরক্ত অলস ভঙিতে গাড়িতে উঠে বসলো।দেবর আবিরের জন্য মেয়ে দেখতে জেসমিন আজকাল তেমন গোছগাছ করে টরে না,করে না মানে করার দরকার নাই আরকি!
সে বাড়ির দাপুটে বউ, তার সাহেব পৈতৃক বিশাল ব্যাবসার কান্ডারি, বাড়ির চাবিটা শাশুড়ি আহ্লাদে আটখানা হয়ে মেলা আগেই তাকে তুলে দিয়েছেন।হাতে বিশাল রাজকোষ হাইপার মলে শপিং লেগেই আছে। ভালো কাপড় জামা সে সবসময় পড়েই থাকে, গায়ে রেগুলার পাচ-ছ ভরি গয়না তোলাই থাকে , দেখতেও বেশ সুন্দর- মুন্দর। ভুইয়া বাড়ি এসে নিয়ম করে পার্লারের মেয়েগুলো ফেসিয়াল করিয়ে যায়। জেসমিন বেগম সব সময়ই বেশ টিপ টপ! কাজেই তেমন কোন প্রস্তুতির তার দরকার ফরকার হয় টয় না৷
মেয়ে দেখতে যায়, দেখে মিষ্টি খায়, মিষ্টি কথা কয়,মেয়ের হাতে তার শাশুড়ি পাচশ টাকাগুজে দিয়ে এসে পড়েন।
অর্থাৎ মেয়ে গুলো হয়ে যায় ফার্স্ট স্টেজেই আউট ! আবিরের স্টেজে তারা যেতে পারে না৷ আবিরের স্টেজে যাওয়া মানেই ভাব বিনিময় মনের কথা অর্থাৎ প্রেমের সুচনার সম্ভাবনা। ওই ভেজালের চেয়ে প্রাথমিক বাছাইতেই সতর্ক হয়া ভালো।
জেসমিনের শাশুড়ির কথা হলো দু দুটা বউ বাড়িতে আসবে দুইটা হবে রাজকন্যে। একটা রাজকন্যে একটা উজির কন্যে তো আর হতে পারে না! সাবিহার তার বড় বউটার উপর আবার অনেক বিশ্বাস। হবেও বা না কেন, ওই যে সেবার, যে বছর সাবিহার অনেক ডায়রিয়া হলো, এহে! এক্কেবারে বিছানায় মাখামাখি! বুড়ো মানুষ কিছু বলতেও পারেননা ওই বউটাই তো এত্ত ছুতমার্গ না করে এত্ত কাজের লোক থাকতে নিজ হাতে যত্ন আত্তি করলো!নিজ হাতে বিছানার চাদর পর্যন্ত খেচে দিয়েছে! নিজের মেয়েগুলো উকি মেরে দেখেছে নাকি? অকম্মার ধাড়িগুলো সব ! কোন প্রয়োজনে বাপের বাড়ি বায়না ধরে আসবে কাজ গুছিয়ে চলে যাবে! মা মরলে তাদের কি?
সাবিহার তো রাজ কপাল বলা লাগে যে এমন মেয়ে বড় ছেলের ভাগ্যে জুটেছে, সেবার সাবিহাও সেরে উঠলেন আর ঘরের চাবিও চলে গেল জেসমিনের সুযোগ্য হাতে।
সেই থেকেই দারুণ সামলে চলছে সংসার মেয়েটা, সাথে খুব সাবধানে করে চলেছে নিজের একমাত্র হবু জায়ের বাছাই। আশেপাশের আত্মিয়োরা যদিওবা বলছে আজ কাল নাকি বড় বউয়ের দেমাগে পা পড়ে না, ধরাকে সরা জ্ঞান করছে,। তা বলুকগে, হিংসে! হিংসে হয়েছে সবার। নয়তো সাবিহা কি আর জানে না জেসমিন তার আদরের দেবরের জন্য লাখে একটা মেয়ে দেখেই নিয়ে আসবে।
কিন্তু সেই লাখে একটা মেয়ের খোঁজে প্রতিবার মেজাজ খারাপ করেই ফিরতে হয় সাবিহার। বাড়ির লক্ষ্মী জেসমিনই আঙুল দেখিয়ে ধরিয়ে দেয় সব খুঁত গুলো। তার কট্টর যুক্তি না মেনে উপায় নেই, দেখা গেল কোন মেয়ের ঢাকা বাপের বাড়ি নেই দূর্বল ব্যাকগ্রাউনণ্ড মা! দেখা গেল মেয়ের দুনিয়ার আত্মিয় স্বজন বাড়িতে এসেই উঠছে ।
আবার কোন মেয়ের বাপই নেই, ” আহা! আবীরটা তো আদরই পাবে না শশুড়বাড়ির! “আবার কোন মেয়ের আদব লেহাজ নেই, “পোশাকের গলা কি বড় দেখেছেন মা? ভাগ্য ভালো আবিরটা আসেনি ওর এগুলো এক্কেবারে পছন্দ না৷ ”
কোন মেয়ে বাড়ি চা খেতে দিলো তো চিনি দিয়েছে ডিপ্লোমা দুধের সাথে ফ্রি চামুচে, “এমা এতো ছোট লোক মা, মেয়ে দেখতে বাড়ি এসেছে, কোথায় ভালো বাসনকোসন নামাবে তা না ডিপ্লোমার ফ্রি চামুচে চিনি! এহে! ”
কখনও কাপ পিরিচ চামুচ মেয়ে সবই ভালো,” এমা বাড়ি কত নোংরা দেখেছেন? মাকড়সার বিরাট হাউজিং সোসাইটি! একবছর মনে হয় ঝুল ঝাড়েনি! এমন বাড়ির মেয়ে আনবেন? ”
পরিস্কার ঘরের বড়লোকের মেয়ে এলো,” এমা কি মোটা! এক্কেবারে মৈনাক পর্বত! আবিরের কথা ছাড়ুন সবাই বলবে পয়সার লোভে বিয়ে দিয়েছি। আমাদের কি পয়সার অভাব মা?”
ডাক্তার মেয়ে এলো, ডাক্তার ঠিক আছে এর গায়ের রঙটা বড্ড চাপা গো মা,, খারাপ না তবে বিয়ে দিলে ফর্সা নাতির সম্ভাবনার কথা বাদ দেন।
। ফর্সা মেয়ে এলো, “লম্বা না তেমন আমাদের আবিরটা পাচফিট দশ এই মেয়ে পাচ ফিটও না, তবে ভালো লাগলে আনেন লিলিপুট বউ! ”
কঠিনতম সব যুক্তি, না মেনে উপায় নেই, এদিকে সময় গড়িয়ে যাচ্ছে বড় ছেলে নিবিড় এই বয়সে বাচ্চার বাবা হয়ে গিয়েছিলো। বেশি সময় নিলে আবিরটা এখনও সুবোধ বালক
কবে জেদ করে উল্টো পালটা কাউকে ধরে নিয়ে আসে তার বিশ্বাস নেই! কিন্তু কিছুতেই ব্যাটে বলে রান হয় না, ফার্স্টের রাউন্ডে কেউ উতরাতেও পারছে না, কথাও আগাচ্ছে না। প্রতিবার ফিরতি পথে জেসমিন বলে সবুর করেন মা সবুর! সবুরে সময় মত মেওয়া ফলবে!
*******
আজ সাবিহার মন বলছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এলো বলে। সবুরে সম্ভবত মেওয়া ফলছে। মেয়ে দেখতে খিলগাঁওতে যেই বাড়িতে তারা বসে আছে তাতে তাদের আপত্তির কোন কারন এই পর্যন্ত সাবিহা পাচ্ছে না। খিলগাঁওয়ে কোন বড় রাজমহল না হলেও ছ তালা বেশ বড় বাড়ি বাবা রিটায়ার্ড সরকারি কর্মকর্তা,মা স্কুল টিচার ভাইবোন সব মেধাবী। উচ্চ শিক্ষিত বিদেশ সেটেলড, নামীদামি আত্মিয় স্বজন! এই মেয়েই ছোট মেয়ে তার মানে আবিরের শালা শালির চাপও নেই সম্ভ্রান্ত আতিথ্য , মার্জিত ব্যাবহার কোথাও এত্তটুকু কমতি নেই! নাহ৷ মেজ মেয়ে লিলির আনা প্রস্তাবটা খারাপ নয় মোটেও,
লিলি মায়ের দিকে ঝুকে এসে বলল -কি বুঝছো মা, এটা আমার আনা প্রস্তাব, অন্যদের মত হেজোপেজো মেয়ে আমি আনি না। চেষ্টা করে দেখ এত সহজে ক্ষুত এখানে বেরোবে না, হুহ!
কথার খোচা যাকে দেবার তার গায়ে কথাটা ঠিকই লাগলো, জেসমিন বলল,” আমরা বাসা বাড়ি নয় মা মেয়ে দেখতে এসেছি, যেটা এখনও সামনেই আসেনি! ”
লিলি বাকা হেসে বলল,” সবুর কর ভাবি ভালো জিনিসের জন্য অপেক্ষা করা লাগে। লিলির আত্মবিশ্বাস ভরা হাসি দেখে সাবিহা যত আনন্দিত হলো, জেসমিন ততই হলো শঙ্কিত!
বায়োডাটায় মেয়ের যা কোয়ালিফিকেশন সেটাও ভিমড়ি খাবার মত, সিভিলে এই বছরই বি এস সি করেছে তারপর চাকরিও পেয়ে গেছে একটা মোবাইল কোম্পানিতে চাকরি করতে থাকলে বলা যেত বয়স বেশি কিন্তু চাকরিতে এখনও ঢোকেনি তার কারনে এটাও বলা যাচ্ছে না৷ বাড়ির যে ঠাটবাট তাতে বোঝাই যাচ্ছে বনেদী বাড়ি শিক্ষার ব্যাপারে তো মনে হয়ে তার শশুড়বাড়ির চেয়ে বেশি এগিয়ে। জেসমিনের জন্য এসব কিছুই যে স্বস্তি জনক নয়,, তবে মেয়ের মনে হয় ঘাপলা আছে নয়তো এত দেরি হয়?.
– আসো বিনু, এই আপা আমার ছোট মেয়ে বিনু।
লিলি সাবিহা জেসমিন কয়েক মুহূর্ত চোখে পলক ফেলতে পারলো না! এই মিষ্টি মুখের সাথে তুলনা চলে ভোরের শিশির ভেজা গোলাপের৷ বেশি লম্বাও নয় খাটোও নয়৷ খাজ কাটা গড়ন আর মিষ্টি ব্যাবহার! এককথায় অসাধারণ! নিরবেই দর্শকের মুগ্ধতা বাকরুদ্ধতা পরিণত হলো।
*******
” কষ্ট দিয়ে গেলাম আপনাদের, আমরা পরে ইনশাআল্লাহ যোগাযোগ করব।”
জেসমিনের বিদায় বেলার দ্রুত ঘোষণা। লিলির হলো মেজাজ খারাপ যা বলার সেই বলতো তার আনা প্রস্তাব এখানেও ভাবির মাতবরী।
কন্যার বাবা অমায়িক হাসি হাসলেন বিনু ধীর পায়ে এলো বিদায় দিতে,সাবিহা আবার মুগ্ধ হলেন কি লক্ষিমন্ত মেয়ে কি মায়াকাড়া!
– ওহ তোমার সালামীটা তো দেওয়া হয়নি! এইনাও সাবিহা হাত বাড়িয়ে একটা জিনিস দিলেন মেয়ের হাতে, বিনু দেখলো একটা সোনার আধুলি পয়সা!
” অনেক দিন ধরে এই পয়সা খানা ব্যাগে নিয়ে নিয়ে ঘুরছি জানো? আমার আবিরটার জন্য যোগ্য মেয়েকে দেব! আজ আলহামদুলিল্লাহ সেইদিন! ”
মুহূর্তে পরিবেশ পালটে গেল জেসমিন হতভম্ব! যাবার বেলায় পাশার দান উল্টো পড়ে গেল! বিনু সালাম করলো সাবিহাকে
মেয়ের বাড়ির সবার মুখে আনন্দের হাসি, লিলির মুখে বিজয়ের, আর জেসমিনের কাষ্ট , মানে ওইযে কোষ্ট কাঠিন্য হলে বাথরুমে হয় না…. ওই আর কি।
********
আজ বলা চলে সাবিহার নিশ্চিন্তে ঘুমাতে গেলেন। প্রাথমিক বাছায়ে মেয়ে উত্তির্ণ হয়েছে।খাবার টেবিলে আবিরকেও বলে দেয়া হলো, আবির ছবি দেখে আর চোখ সরাতে পারে না বিয়ের কথায় একই রকম রক্তিম আভা খেয়াল করেছিলেন মেয়ের মধ্যেও। যাকে বলে পয়েন্টে পয়েন্টে মিল!এই দিনের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি, আজ আরামে ঘুম আসবে তার!
একদিকে সুখ নিদ্রায় সাবিহা আরামে চোখ বুজেছেন, আরেক দিকে দুশ্চিন্তায় জেসমিনের ঘুম দৌড়ে পালিয়েছে। তার স্বামী মহা আনন্দে ঘোতর ঘোতর তালে নাক ডেকে যাচ্ছে কিন্তু সেই তালে জেসমিনও এপাশ ওপাশ করে মরছে! মেয়ে দেখতে গিয়ে তার শাশুড়ির দুবাই থেকে কেনা সোনার পয়সাটা মেয়ের হাতে দিয়ে আসা সহজ ব্যাপার না। দুশ্চিন্তায় মাথা ধরে আসছে জেসমিনের!
করবেও বা না কেন? তার মসনদের সিংহাসনটা টলমেলে হয়ে উঠেছে যে,।
বাড়ি ঘর, বুদ্ধি, রূপ, যোগ্যতা সব দিক হতেই এই মেয়ে তার চেয়ে শক্ত,! এত্তবড় ভূইয়ার বাড়ির সংসারে প্রতিপত্তি আর বুঝি চড়ে খাওয়া হলো না, ।এত গুছিয়ে আনা একটা পরিকল্পনা তীরে এসে তরি ডুবছে।
কত কষ্ট করে গত বছর শাশুড়ির ডায়রিয়ার সময় যত্ন আত্তি করেছে তা কি সাধে,? ও চাদর তো ঠিকে ঝি নাজমাই খেচে দিত, জেসমিন সেই ধোয়া চাদর আবার শাশুড়ির বাথরুমে নিয়ে পানিতে চুবিয়ে খাঁচতে ভোলেনি! বোকা মহিলা কিছু বুঝতেও পারেনি। তাই দেখে খুশিতে বাক বাকুম। আরে চার জন কাজের লোক পয়সা দিয়ে রেখে ওমন কষ্ট জেসমিন করবে মাথা খারাপ? আর এই “কষ্টের” উপহার স্বরুপ চাবি গোছা তার কোমরে!কিন্তু একার রাজত্বে আরেকটা বুদ্ধিমান মাথা এলে হিসেবে গড়বড় হয়ে যাবে।
জেসমিন উঠে বসলো ভেবেছিল আর দু তিনটা মেয়ে দেখে শাশুড়ির কাছে আসল কথা টা পাড়বে, আবিরের তো বয়স পার হয়ে যাচ্ছে হাতের কাছে একটা ভালো মেয়েই আছে জেসমিনের মামাতো বোন তন্নি! বাপের পয়সাও আছে দেখতে শুনতে বেশ ভালো,
ঘটে যত টুক বুদ্ধি যা আছে খালি খরচ করে সাজগোজে! পড়াশোনায় ডাব্বা, সাংসারিক কাজে মন নেই জীবনে নায়িকা হওয়া যার ধ্যান জ্ঞান, তাকে জা বানানো জেসমিনের জন্য উৎকৃষ্ট! নিজের মত থাকবে তার পেছনে লাগতে আসবে না লাগতে আসলে তার পুরানো কেচ্ছা কাহিনীতো জেসমিন জানেই…. টাইট দিয়ে রাখা যাবে । একে বারে হাতের পাচ ধরে ভেবেছিল তন্নিকে নিয়ে আসবে। এখন সেই গুড়ে বালি, কি যে করে…
জেসমিন মোবাইল হাতে নিয়ে চলে যায় বারান্দায় মাথা গরম করা যাবে না৷
– হ্যা হ্যালো রানা! শোন একটা মেয়ের বইয়োডাটা পাঠাচ্ছি তুই একটু খোজ নে তো?
– ক্যান রে আপা আবির ভায়ের বিয়ে ফাইনাল?
– হওয়ার পথে যদি না এর মধ্যে কিছু করা না যায় তুই তাড়াতাড়ি কাজে লেগে যা। রেশমি কাপড় যত সুন্দর হোক মিহি হবার জন্য ছিদ্র কোথাও না কোথাও হয়েই যায়।
– ছিদ্র না পেলে?
– না পেলে করে দেয়া সমস্যা না। সে দেখা যাক, তুই ছিদ্র খোজায় নামতো,
জেসমিন ফোন নামিয়ে রাখলো।
**********
মা শোন আবিরের বিয়েতে দিল্লি আর ব্যাঙ্গালোর যাব শাড়ি নিতে, নিবিড় ভাইয়ের বিয়েতে মেলা কিপ্টামি করস!
সাবিহা হাল্কা গলায় বলল,” ব্যাঙ্গালোর গেলে নাহয় আমি আর বড় বউমা যাব, তোরা জামায়ের ব্যাবস্থায় যেতে পারলে যাবি,
“-জামায়ের ব্যাবস্থায় মানে ভায়ের বিয়ের শপিংয়ে যাব তাও জামায়ের পয়সায়? দেশে করলে আমাদের ডাকতা না? ছি মা তুমি বিয়ে দিয়ে আমাদের পর করে দিলা? ”
“আমি পর কোথায় করলাম, এই বউমা দেখেছ কান্ডটা… ”
ডাইনিং টেবিলে সকালের নাস্তায় সম্ভাব্য মাতা কন্যার তর্ক বিতর্ক হতে অনেক দূরে জেসমিন গভীর চিন্তায়( দুশ্চিন্তায়) মগ্ন! আনমনে গোল মরিচদানীর থেকে নব ঘুরাতে ঘুরাতে অমলেট কালো কয়লায়খনি করে ফেলছে! বিয়ের শপিং, ভেন্যু এইগুলি আলোচনা আসছে, এইবারে তার ধুরন্ধর ননদ দুটাও এসে জুটেছে তারা যেন এবার বড় বেশি সতর্ক। লিলি তো সেদিন বলেই ফেলল, “যত যাই চেষ্টা করি তুমি তো একজন আছোই আবিরের বিয়েতে ভেটো দিতে!, ”
“কিইইইই? তোমরা আমায় এত খারাপ ভাবো? আমি কি চাই না আবিরের বিয়ে হোক? ”
“তোমার ট্র্যাক রেকর্ড দেখে তো তাই মনে হচ্ছে! বিয়ে হোক হয়তো চাও,কিন্তু তুমি চাওনা তোমার চেয়ে যোগ্য কেউ আসুক আর এ সংসারে তোমার একচ্ছত্র মাতব্বরীটা নিয়ে নিক! ”
“কি! এত্তবড় কথা! মা আ আ আ দেখলেন আপনার মেয়ে কি.. বলল..”
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে দুই ননদের সাথে সেদিন তুমুল লড়াই লেগেই গিয়েছিল। সাবিহা সেদিন মধ্যস্থতা করে দিয়েছিলেন বলে রক্ষা, কিন্তু সেদিন প্রথমবার নিজের শাশুড়ির মধ্যে নিজের জন্য মায়াটা কমই দেখেছে জেসমিন। মনে হচ্ছিলো শাশুড়িও তার বদ মেয়েগুলোর কথায় বিশ্বাস করছে আজকাল!
জেসমিন একই সাথে বিষন্ন শঙ্কিত! সামনে সমুহ বিপদ দেখছে আজকাল এই দিকে রানা শয়তানটা কোন খবরই দিচ্ছে না!
বউ মা শোন তুমি আমার মীনে করা অনন্তটা পরতে নিয়েছিলে না? সেটা নিয়ে এসো তো,
– ও ওটা কেন মা? ওটা তো আপনি আমায় দিয়ে ছিলেন!
– ওমা ওটা তোমায় কবে দিলাম? ওটা তো আমার আবিরের বউয়ের জন্য তোলা! তোমায় তো রুলি দিয়েছি। তুমি তো জানতে, যা হোক নিয়ে এস তাড়াতাড়ি ধুয়েটুয়ে রাখি সামনের শুক্রবার পাকা কথায় আংটি না নিয়ে সোজা অনন্তই পরাবো,
জেসমিন গজ গজ করতে করতে আলমারি খুলছে রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে। প্রকৌশলী বউয়ের জন্য এখন থেকেই আহ্লাদে আট খানা, এদিকে ওই অকাল কুষ্মাণ্ডকে দিয়েছে একটা কাজে সে কোন খবরই বের করতে পারছে না। যাই বের করে আনে তা তেমন কোন কাজেরই না এদিকে আবির সম্ভবত মেয়ের সাথে যোগাযোগ করতে শুরু করেছে। দেবরের মুখ দেখে বোঝা যায় ভাবের রসে এক্কেবারে টলটলে!এই রস ঘন হয়ে জমে যাবার আগে কিছু করা না গেলে সামনে জেসমিনের সমুহ বিপদ।
আলমারির চাবিটা ঘুরিয়েছে এর মাঝেই ফোন, ওই রানা গাধাটাই হবে আবার কোন ফালতু খবর দেবে।
জেসমিন বিরক্ত হয়ে ফোন তুলল,,- জলদি বল কাজে আছি
– আরে আপা কাজের কথা তো আমি বের করেছি শুনলে এক্কেবারে হেসে ফেলবা
ফালতু ভনিতা বাদ দিয়ে কাজের কথায় আয়৷
রানা বলতে লাগলো জেসমিন ভ্রুকুটি করে মনোযোগ দিয়ে শুনতে শুনতে এক সময় মুখে সত্যি সত্যি হাসি ফুটে উঠলো, এত ক্ষনে অরিন্দম কহিল বিষাদে!
দারুন খবর রানা এই জিনিস আমাদের চোখেই পড়ে নাই এত্তবড় ফ্রডবাজি?লিলি এত চেপে গেছে? আর আবিরটাই যেখানে বোকা, আমাদের তো বাসাবাড়ির চমকদমকেই চোখ উলটে গেছিল।চোখেই পড়েনি ব্যাপারটা! দাড়া এখন সাইজ করছি। এত দেখি আসলেই সিরিয়াস কেস!
**********
– তো আমার সর্বনাশটা মানে তোমার বিয়েটা হচ্ছে কবে? মাহফুজ উদাস গলায় জিজ্ঞাস করলো
বিনু চমকে উঠলো,” জ্বি মাহফুজ ভাই বুঝলাম না!
– আরে ঠাট্টা করছি, ছোট ভায়েরা সব বিয়ে করে বাচ্চার বাপ হয়েছে আর আমি এই একত্রিশ বছরে কিছু করতে পারি নাই এদিকে চোখের সামনে আরেকটা সুন্দরী মেয়ের বিয়ে হয়ে গেল মানে আমার সম্ভাবনা আরেকটু কমে গেল, সর্বনাশ না বল?
– ও আচ্ছা এই ব্যাপার! ধৈর্য ধরেন সেই ভাগ্যবতী রমনী সময় হলেই সামনে এসে হাজির হবে!
মাহফুজ বিনুর বাড়ির দিকে গাড়ি টার্ন নিতে নিতে হাসি মুখে বলল, তুমি কিন্তু বললে না বিয়েটা কবে?
বিনু একটু রক্তিম হয়ে জবাব দিলো এইতো সামনে শুক্রবার পাকা কথা তার পর একমাসের মধ্যেই কোন ডেট ফাইনাল হবে!
মাহফুজ আগ্রহী হয়ে বলল- মানে একমাস এখনও বাকি আছে? গুড! তাহলে চেষ্টা চলিয়ে যাওয়া যায় কি বল?
– মাহফুজ ভাই! আবার শুরু করলেন?
– পারলাম আর কই? তোমার বাড়ি এসে গেছে!
– ওহ! অনেক ধন্যবাদ লিফটের জন্য!
– বেস্ট অফ লাক!
-থ্যাংকস! বিনু লজ্জার হাসি হাসলো
-বিয়ের জন্য নয়! কাল বোর্ডের সামনে তোমার প্রথম প্রজেন্টেশন সেটার জন্য।
বিনু হেসে ফেলল, মাহফুজ হেসে গাড়ি টান দিল।
জীবনে প্রথম চাকরিতে মাহফুজের মত একজন ভালো মেধাবী বস পাওয়া আসলেই ভাগ্যের ব্যাপার। বিনু অবশ্য সব ক্ষেত্রেই লাকি!ছোট বেলা থেকেই বাবা ভায়েরা সব সময় সঙ্গ দিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে, বন্ধুরা কখনও হীনমন্যতায় থাকতে দেয়নি নতুন অফিসের সবই ভালো তার উপর আবিরের মত স্বপ্নের রাজপুত্র যখন হবু স্বামী। কি আশ্চর্য,সম্পুর্ণ অচেনা একটা মানুষ একটু একটু করে কত কাছে আসছে । ধৈর্য আর পরিচ্ছন্নতার উপহার পাচ্ছে সে, পাকা কথার পর দেখা হবে সেই শর্তে শুধু ফোনের কথোপকথনে কত আপন হয়ে গেছে সে !প্রতিদিন কমপক্ষে দশবার ফোন করছে, বিনুকে সে কিছু বলতেই দেয় না নিজেই আবলতাবল বকে। বিনুর জীবন এখন আবির ময় ।
“কি আম্মা এত ক্ষণ বেল বাজাচ্ছি কোন খবর নেই, ”
বিনুর মা তাসলিমা উত্তর দিলেন না মুখ কেমন থমথমে । বিনু ভেতরে ঢুকলো, বারান্দায় বাবা নিচু গলায় ফোনে কথা বলছে কারো সাথে, বিনুর চোখে চোখ পড়তেই চোখ সরিয়ে নিলেন।
মা কেমন ক্লান্ত হয়ে বসে পড়েছেন ডাইনিং এর চেয়ারে! পাশে নাজু খালা তার মুখও বিষাদ গ্রস্থ! সমস্যা কিছু আছে বুঝে বিনু বসে পড়লো মায়ের পাশে বিনু মায়ের ঘাড়ে হাত রাখলো,
– ওরা সামনে সপ্তাহে আসবে না। তিনি থমথমে গলায় বললেন
– কারা আসবে না? কি বলছ এসব?
– আবির আবিরের মা বোনেরা এরা আর শুক্রবারের পাকা কথা বলতে আসবে না!
বিনু শান্ত মুখে তাকিয়ে আছে, নাজু খালা বিরক্ত হয়ে বলল
– আশ্চর্য তারা নিজে এসে দেখে গেল সেদিন তবু বুঝলো না?.
” বিনুর বা পাটা ডান পায়ের চেয়ে একইঞ্চি ছোটর জন্য ওর জুতা স্যান্ডেল গুলো সব সেভাবেই তৈরি থাকে যেন হাটতে কষ্ট না হয় , অত বোঝা যায় না, তাসলিমা ধরা গলায় বললেন,
এটা ওদের নাকি জানা ছিলো না। লিলি নাকি খুলে বলেনি তার মা ভাইকে, তারা এখন আরও সময় চাইছে….
নাজু খালা বললেন, “আমার মনে হয় ওদের ওই বউটাই যত নষ্টের গোড়া শুনেছি অনেক মাতব্বর, দেবরের সব সম্মন্ধে বাগড়া দেয়! ”
তাসলিমা হঠাৎ মাথা তুলে বলল,” বিনু তুই একটু আবিরের সাথে কথা বল না হয়… আসল সমস্যাটা কি একটু যদি খুলে বলত…”
” সমস্যাটা কি তাতো বুঝতেই পারছো মা আবার জানা কেন,? ” বিনু ঠান্ডা মাথায় জবাব দিল।
গত কাল রাত থেকে আবির যোগাযোগ করেনি। বিনু আবিরকে শুরুতেই বলেছিল আমার সম্পর্কে সব জেনেবুঝে এগিয়েছেন তো? লিলি আপুকে যদিও বলেছি তবু আপনাকে বলছি আমার কিন্তু একটা ছোট ত্রুটি আছে যেটা সহজে ধরা পড়ে না ৷আমার..
আবির থামিয়ে হেসে বলেছিল, সব জানি, ত্রুটি ছাড়া মানুষ হয়? আমার মায়ের হৃদয় জয় করেছ শত ত্রুটি থাকলেও আমার মনের দরজা খোলা তোমার জন্য।
বিনুর তীব্র বিষাদের মধ্যেও হাসি পেল কথাটা মনে করে।
– “আসলে সময়ইতো চেয়েছে, একেবারে না তো বলেনি ওদের সময় দেয়া দরকার ” তাসলিমা নরম গলায় বললেন।
বিনু উঠে দাড়াতে দাড়াতে বলল- তাদের সময় দিতে হবে না মা তুমি আমার মতামত জানিয়ে দাও ওদের উপকার হবে, আর আমার মত হলো, ” আমি রাজি নই!”
“বিনু, মারে একবার ভেবে..দেখ এভাবে,….
” আম্মা আমি বলে দিয়েছি যা বলার। কাল আমার নতুন প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশন আছে অনেক কাজ আর আমায় বিরক্ত করো না প্লিজ। ”
বিনু ধীর লয়ে নিজের ঘরে দিকে চলে গেল। তাসলিমা অশ্রু সজল চোখে তাকিয়ে দেখলেন, বিধাতা এই অপূর্ব নিখুঁত মেয়েটিকে সব কিছু ভরিয়ে দিলেন একটা বিষয়ে কেন কার্পণ্য করলেন? এটা তার সৃষ্টির দৈন্যতা ছিলো? না মানুষের মনে দৈন্যতা চেনানোর উপায়, সেটা কে বলবে?
************
আঠাশ বছর পর,
জেসমিন ঝিম।ধরে বসে আছে তার ঘরের কোনে।
অথচ আজ তার বাড়িতে মেহমানে ভরে গেছে। তার ছোট কন্যা ত্রপাকে দেখতে এসেছে ছেলে পক্ষ।
এমনিতে ভাব ভালোবাসার বিয়ে ছেলে মেয়ে আগে থেকে এগিয়েই ছিল জেসমিন তবু খুশি, চুরি করলে রত্নই করা উচিত। বিশেষ করে ত্রপার জন্য পাত্র বলা চলে অকল্পনীয় ভালো। জেসমিনের রূপ পায়েনি তার মেয়ে জন্মের পর কেউ বোঝেও নি এ তার মেয়ে।
বড় দুশ্চিন্তা ছিল তাদের ত্রপা কে নিয়ে। তার স্বামীর আগের বোলবালা থাকতো মেয়ের জন্য মোটামুটি টাইপ ছেলে জোগাড় হয়েই যেত!
কিন্তু ওই তন্নিটাকে ঘরে এনেই কাল হয়েছিল । ওই ইঞ্জিনিয়ার মেয়েটার সম্বন্ধ ভাঙতে শাশুড়ি তেমন রাজি না থাকলেও গাধা দেবরটাকে বুঝিয়ে ফেলা গিয়েছিল দ্রুতই, এর পর দেরি না করে তন্নির সাথে বিয়েটা পাকা করে ফেলা লাগলো।
জেসমিনের পরিকল্পনার সফলতায় শেষ বার বিজয়ের হাসি হেসেছিল আবিরের বিয়েতেই! কিন্তু কে জানতো পরদিন থেকে সব উলটে যাবে । সাজসজ্জার পারদর্শি তন্নি দেখা গেল ছোট ছোট জিনিসে কথার গিট লাগাতেও ওস্তাদ। বোকা আবিরটাকেও যেন তাবিজ করেছিল বউ আর শাশুড়ির কথায় উঠে বসে। লেগে গেল ঝগড়া, দুবছরের মাথায় ব্যাবসা আলাদা বাড়ি আলাদা সবই বিভক্ত! আবিরটা সব গুছিয়ে বেচে টেচে বউ নিয়ে চলে গেল বিদেশ। শাশুড়ি অথর্ব হয়ে পড়ে ছিলেন শেষ আট বছর, সেটাও টানতে হয়েছিল জেসমিনকেই! ব্যাবসা ভাঙার পর মেয়ে ত্রপার জন্ম, যার কারণে মেয়ের জন্য তেমন গুছিয়ে কিছু করতেও পারেনি৷
আর মেয়েটাও হয়েছেও কেমন যেন সাজ সজ্জায় আগ্রহ নেই পড়াশোনায় সাধারণ, খালি লেখা লেখি আর এতিমদের এন জিও তে সেচ্ছা শ্রম পথ শিশুদের পড়ানো এও কোন কাজ হলো?রোদে ঘুরে ঘুরে আরও ভুতের মত দেখতে হয়েছে।
এমন সাধারণ কালো, রোগা খাটো মেয়েটার জন্য ডাক্তার তন্ময়ের মত রাজপুত্র পাওয়া যেন স্বপ্ন ! কিভাবে কিভাবে এন জি ও তে কাজের মধ্যে ভাব হয়ে গেল দুজনের জেনে বিশ্বাস ই হতে চায় নি। অনেক দিন পর মন খুশি হয়ে উঠেছিল কে জানতো জেসমিনের এই খুশিও ক্ষনস্থায়ী!আর যাই হোক এখানে তার মেয়ের বিয়ে হবে না। আহারে তার মেয়েটা কত আগ্রহ নিয়েই গল্প করত ডাক্তার ছেলেটার।
তন্ময়ের আত্মিয়ো স্বজনেরা এসে সব ভিড় করেছে এবাড়িতে আজ সবার মুখই গম্ভীর! জেসমিন ছেলের মায়ের মুখ দেখে তাদের উত্তর জেনেই গেছে।
” কি গো এখানে বসে আছ? তন্ময়ের মা যে খুজছে তোমায়?” ত্রপার বাবা এসে বসলেন জেসমিনের কাছে।
– কি লাভ হবে? কিছু কি আগাবে? মেয়ে তো তাদের পছন্দ হয় নি।! আর তন্ময় বলে দিয়েছে তার মায়ের পছন্দই আসল! ”
জেসমিন ধরা গলায় বলল।
– “তা কিন্তু ঠিক বলেছেন ছেলে আমার একটু মায়েরই ভক্ত! ”
ভারী সুললিত কন্ঠে জেসমিন চমকে উঠে দাড়ালো। সম্ভ্রান্ত পোষাকে নাসিদ কামাল নামে পিডিপির অসম্ভব মেধাবী উচ্চ পদস্থ প্রকৌশলী পরিচয়ে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন তার মধ্যে সাতাশ আঠাশ বছর আগের বিনু হারিয়ে যায়নি মোটেও। একটু ভার ভারিক্কি এলেও আজও আছে একই রকম সুন্দর বরং ব্যাক্তিত্বে যেন আরও সম্মৃদ্ধ।
অতিথিকে চেয়ার টেনে নিবিড় সাহেব চলে গেলেন ঘরের বাইরে
” মা উনি দিলেন! ” ত্রপা লাজুক কন্ঠে এগিয়ে দিল মায়ের দিকে একটা সোনার আধুলী পয়সা।।
জেসমিন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন, ত্রপা লজ্জায় ততক্ষণে চলে গেছে। বিনু হেসে বলল, আপনাদের আমানত আপনার মেয়েকেই ফিরিয়ে দিলাম।
– আপনার কাছেই ছিল এটা?
– আমার বিয়ে ঠিক হলে ফিরিয়ে দিতে এসেছিলাম। আপনার শাশুড়ি কিছুতেই নেননি বলেছিলেন, আমায় মেয়ে মেনে দিয়েছেন বিয়ের উপহার হিসেবে যেন রাখি। মাথায় হাত রেখে দোয়া করে দিয়েছিলেন আমি যেন অনেক সুখি হই।
জেসমিন হতভম্ব হয়ে শুনে যাচ্ছিল
“উনার দোয়া সত্যি হয়েছিল ,বিয়ের পর থেকে আমি খুবই সুখি! সত্যি কথা বলব তো এক অর্থে আপনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। যা হয়েছে তা না হলে মাহফুজ আমার জীবনে আসত না আর নাই আমি তন্ময়কে পেতাম।, আমরা দুজনে মিলে নিজেদের শ্রেষ্ঠটা দিয়ে বড় করেছি ছেলেকে।
“হীরের টুকরো ছেলে আপনার ” জেসমিন বিরবির করে বলে উঠলো
“এই সোনার পয়সার সাথে আজ আমার হীরেটার দায়িত্ব আপনার মেয়েকে দিলাম ”
জেসমিন বিস্মিত, বিনুর দুই হাত চেপে কৃতার্থ টলটলে চোখে বলল – সত্যি! আমি… আমি ভাবতেও পারিনি আমার ত্রপাকে আপনি যোগ্য মনে করবেন।
-ছিঃ ছিঃ এমন করে কেন বলছেন? আপনার মেয়ে তার কর্মে ভালো! আর সত্যিকারের শিক্ষিত ভদ্রলোকেরা কোন মানুষের যোগ্যতা তার রঙ রূপ বংশ দিয়ে নয় তার কর্ম দিয়ে বিচার করে থাকে। মেয়ে নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকুন।
বিনু নিরবে হাসছে, জেসমিন তার চোখের দর্পনে যেন নিজেরই ছায়া দেখছে।দম্ভ, মিথ্যা অহংকার, আর স্বার্থপরতায় দগ্ধ একটা পরাজিত ছায়া।
( সমাপ্ত)
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept All”, you consent to the use of ALL the cookies. However, you may visit "Cookie Settings" to provide a controlled consent.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. These cookies ensure basic functionalities and security features of the website, anonymously.
Cookie
Duration
Description
cookielawinfo-checkbox-analytics
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Analytics".
cookielawinfo-checkbox-functional
11 months
The cookie is set by GDPR cookie consent to record the user consent for the cookies in the category "Functional".
cookielawinfo-checkbox-necessary
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookies is used to store the user consent for the cookies in the category "Necessary".
cookielawinfo-checkbox-others
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Other.
cookielawinfo-checkbox-performance
11 months
This cookie is set by GDPR Cookie Consent plugin. The cookie is used to store the user consent for the cookies in the category "Performance".
viewed_cookie_policy
11 months
The cookie is set by the GDPR Cookie Consent plugin and is used to store whether or not user has consented to the use of cookies. It does not store any personal data.
Functional cookies help to perform certain functionalities like sharing the content of the website on social media platforms, collect feedbacks, and other third-party features.
Performance cookies are used to understand and analyze the key performance indexes of the website which helps in delivering a better user experience for the visitors.
Analytical cookies are used to understand how visitors interact with the website. These cookies help provide information on metrics the number of visitors, bounce rate, traffic source, etc.
Advertisement cookies are used to provide visitors with relevant ads and marketing campaigns. These cookies track visitors across websites and collect information to provide customized ads.