#দখিনের_জানলা (পর্ব-২৯)
লেখনীতে– ইনশিয়াহ্ ইসলাম।
৫৮.
দরজায় ঠক ঠক করে দুইবার শব্দ হলো। আব্রাহাম ডিভাইনে বসা ছিল। আওয়াজ পেয়ে উঠে গিয়ে দরজা খুলতেই তার পিএ রেজওয়ানকে দেখল। রেজওয়ান একটা ছোট প্যাকেট এগিয়ে দিলো আব্রাহামের দিকে। তারপর বলল,
-‘আর কিছু লাগবে স্যার?’
আব্রাহাম সবটা দেখে নিয়ে মাথা নাড়ল। মুঁচকি হেসে ধন্যবাদ জানালো রেজওয়ানকে।
-‘থ্যাঙ্কস! আর কিছু লাগবে না।’
-‘তাহলে আমি আসি স্যার?’
-‘হ্যাঁ, শিওর।’
দরজা বন্ধ করে আব্রাহাম বিছানার দিকে এগিয়ে এলো। চমচম শুয়ে আছে কমফোর্টার গায়ে দিয়ে। আব্রাহাম নরম স্বরে ডাকল,
-‘চমচম? এই চমচম!’
চমচম একটু নড়ে উঠল। আব্রাহাম তার হাত ধরল। ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকালো চমচম। আব্রাহাম কিছুসময় তার সেই চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
-‘মেডিসিন নে। ওঠ!’
চমচম ওঠার চেষ্টা করল। পারল না, শরীরে শক্তি নেই তার। জ্ব’রের কারণে আরো বেশি দুর্বল হয়ে পড়েছে যেন। আব্রাহাম সাহায্য করল তাকে উঠতে। ঔষুধ খাইয়ে দিয়ে বলল,
-‘বেশি খা’রা’প লাগছে?’
চমচম কথা বলল না। মুখ ঘুরিয়ে নিলো। আব্রাহাম হুট করে তাকে কমফোর্টার সহই পাঁজাকোলা করে নিলো। চমচম আকস্মিক এমন কাজে চমকে উঠল। আকড়ে ধরতে চাইল আব্রাহামকে, পারল না বদ্ধ অবস্থায় থাকাতে। আব্রাহাম তাকে নিয়ে সোজা বারান্দায় গেল। সেখানে সাজিয়ে রাখা মাঝারি ধরনের বিছানায় শুইয়ে দিলো চমচমকে। চমচমের খুব বি’র’ক্ত লাগছিল। এমনিতেই জ্ব’র হলে তার ভালো লাগে না। তারওপর আরো কিছু শারীরিক অসুস্থতা ঘিরেছে তাকে। না পারছে বলতে না পারছে সইতে। সে মুখ ফিরিয়ে সমুদ্রের দিকে তাকালো। রিসোর্টটা পুরো সমুদ্রের গা ঘেসে উঠেছে। একদম কাছ থেকে সব কিছু দেখা যাচ্ছে। সমুদ্রের ঢেউ, বালুচর, সুন্দর নীল আকাশ, দুই একজন মানুষ! সেদিকে তাকিয়েই গত রাতটা মনে করল। আর মনে করতেই সে আরেকবার কেঁপে উঠল। ঠিক হয়নি! যা হয়েছে তা একদমই ঠিক হয়নি। সত্যি বলতে তার ল’জ্জা লাগছে। ভীষণ রকম অস্ব’স্তি হচ্ছে। আব্রাহামকে এতদিন সে তো ভাই ডেকে এসেছে। রক্তের সম্পর্ক না থাকুক, পাশের বাড়ির ভাই বলেই তো মেনেছে। তার সাথে বিয়েটা যেমন মেনে নেওয়ার মতো নয় তেমনই বৈবাহিক সম্পর্কটাও মেনে নেওয়ার মতো নয়। কাল কি যে হলো! কেন সে নিজে আহ্বান করল আব্রাহামকে! এখনও আব্রাহাম পাশে আছে। চমচমের ইচ্ছা করছে দূরে কোথাও গিয়ে মুখ লুকিয়ে বসে থাকতে। আব্রাহামের ওই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিটা তাকে আরো বেশি করে ঘা’য়ে’ল করছে।
আব্রাহাম চমচমের দিকে একবার তাকিয়ে সমুদ্রের দিকে তাকালো। মেয়েটা নিজেকে কমফোর্টার দিয়ে প্যাকেট করে ফেলেছে একদম। এই প্যাকেট করার মূল কারণ যে কেবল শীত নয় তা সে ভালোই জানে। ঠোঁট টিপে হেসে সে বলল,
-‘ব্রেকফাস্ট করবি না?’
চমচম কিছু বলল না। আব্রাহাম কিছুক্ষণ জবাবের আশায় বসে থেকে উঠে দাঁড়ায়। ব্রেকফাস্ট অর্ডার করে এসে দেখে চমচম উঠে বসেছে। চমচমের গায়ে আব্রাহামের টি শার্ট আর ট্রাউজার। টি শার্টটা অত্যন্ত বড় মাপের হওয়ায় কেমন ঝুলে ঝুলে আছে এমন মনে হচ্ছে। ট্রাউজারে ফিতা আছে তাই ফিতা বেঁধে নেওয়াতে সেটা পড়তে অসুবিধা হচ্ছে না কোনো।
-‘সবাই কখন বের হবে?’
আব্রাহাম একটু অবাক হয়ে বলল,
-‘কোন সবাই?’
চমচম ইতস্তত করে এদিক ওদিক দৃষ্টি ফেলে বলল,
-‘আমার অফিসের সবার কথা বলছি। এটা না বোঝার মতো কিছু তো না!’
-‘ওহ আচ্ছা আচ্ছা! তোর বস আই মিন তোর অফিসের সবাই তো চলে গেছে।’
চমকে উঠল চমচম। অবাক হয়ে গেল রীতিমত।
-‘কখন? আমাকে না নিয়েই চলে গেল! আশ্চর্য!’
-‘ওরা এক ঘন্টা আগেই বের হয়েছে। আর এখন ফ্লাইটে বোধ হয়।’
-‘তুমি মি’থ্যে বলছ। আমাকে ফেলে ওরা যাবে না।’
আব্রাহাম রে’গে গেলেও রা’গটা বের করল না। শান্ত স্বরেই জানালো,
-‘তুই কল করে জেনে নে তবে! আমি অর্ডার দিয়ে আসছি।’
৫৯.
চিনি অফিসে এসে আজ কাজে মন দিতে পারল না। গতকাল রাত থেকে তার মন মেজাজ ভালো নেই। সায়ন কয়েকবার কল করেছে। রিসিভ না করায় মেসেজ দিয়েছে বেশ কিছু। সেখানে কোনো কথা নেই গুরুত্বপূর্ণ। কেবল বেশ কিছু গানের লাইন আর ছন্দ। চিনি বুঝে উঠতে পারছে না সায়ন কী করে জানল তার আর আশফাকের বিচ্ছেদের ব্যাপারে? এটা তো তার পরিবারের লোক ছাড়া আর কেউ জানে না। আশফাকও তো কাউকে জানায়নি। সে আরো দুটো মাস গেলেই সকলকে জানাবে সবটা এমনই তো বলেছিল তাকে। চিন্তায় অস্থির হয়ে যাচ্ছে চিনি। দু হাতে চুল খা’ম’চে ধরতেই দরজায় নক করার শব্দ শুনতে পেল। নিজেকে ঠিক করে নিয়ে সে বলল ‘কাম ইন!’ জবাব পেয়ে ভেতরে তখন প্রবেশ করল সায়ন। তাকে দেখে চিনি আরো বেশি চমকে গেল। বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
-‘আপনি এখানে?’
সায়ন মৃদু হেসে বলল,
-‘হুম এসেছি। একটু দরকার ছিল। একটু বাহিরে বসতে চাইছি কোথাও। যাবে?’
-‘দরকারটা অফিসিয়াল নয় নিশ্চয়ই! আমরা পরে কথা বলতে পারি। আসলে আমার কাজ আছে। বের হতে পারছি না। স্যরি।’
-‘ওকে। ইটস্ ওকে। এখানেও কথাটা বলা যায়।’
সায়ন নিজেই চেয়ার টেনে বসল। চিনি বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছে। তবে সেটা ভেতরেই দমিয়ে রেখে সে বেল টিপল। পিয়ন আসতেই কফি বলে দিলো। তারপর বসে সায়নকে বলল,
-‘বলুন, কি বলতে চান!’
-‘ফর্মালিটিস্ মেইনটেইন করতে হবে না চিনি। আমিই তো!’
চিনি দৃষ্টি সরিয়ে নিলো সায়নের থেকে। আশ্চর্য! লোকটার এখন বউ আছে। এভাবে কেন সে চিনির কাছে নিজেকে নিবেদন করছে!
-‘আপনার স্ত্রী কেমন আছে?’
-‘সেটা স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলে ভালো হয়। সে ভালো জানে সে কেমন আছে।’
-‘আপনি এমন ভাবে কথা বলছেন মনে হচ্ছে আপনি তাকে ভালো রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন।’
-‘হয়তো!’
-‘দরকারি কথাটা কি বললেন না তো!’
সায়ন কিছুক্ষণ থম মে’রে বসে রইল। তারপর বেশ গাঢ় স্বরে জানতে চাইল,
-‘তুমি ভালো আছো চিনি?’
চিনির গলা কেঁপে উঠল। চোখটা ভিজেই আসছিল প্রায়। কথা বের হতে চাইছিল না তার গলা দিয়ে। সায়ন আবারও জিজ্ঞেস করল,
-‘ভালো আছো চিনি?’
চিনি মাথা নাড়ল দুই পাশে। হ্যাঁ, না দুটোর একটারও ঠিক করে বোঝা গেল না তাতে। সায়ন বলল,
-‘আমি কেমন আছি একটু জিজ্ঞেস করবে কি?’
চিনি চোখ তুলে তাকালো। কোমল স্বরে শুধালো,
-‘কেমন আছেন আপনি?’
সায়ন মৃদু হাসল। তার হাসিতে বোধ হয় বেদনা ছিল। চিনি স্পষ্ট অনুভব করতে পারছিল তা। সায়নের জন্য তার মনে একটা দুঃখ ছিল। উহু! সায়নকে সে কখনো মন দেয়নি, ভালোবাসেনি। যা ছিল সবই সহমর্মিতা। একটা মানুষ তাকে ভালোবাসে ভীষণরকম তা জানার পরে, তাকে প্রত্যাখ্যান করার পরে, দুঃখ, ক’ষ্টে না পাওয়ার আক্ষেপে তাকে জ’র্জ’রিত হতে দেখে মানুষ হিসেবেই কেবল একটা সহমর্মিতা জেগেছে তার মনে। এছাড়া এর বাহিরে আর কিছু নেই। চিনি নিজেকে অপ’রা’ধী ভাবত এমনকি এখনও ভাবে। সায়নকে সে কাঁদিয়েছিল। খুব খুব কেঁদেছে ছেলেটা!
চিনির মাঝে মাঝে মনে হয় অতীতে সে যেমন করেছে বর্তমানে ঠিক তেমনটাই ফেরত পাচ্ছে। সে একজনের ভালোবাসা পায়ে ঠেলে সরিয়ে দিয়েছে আরেকজন তার ভালোবাসাকে উপেক্ষা করেছে। চিনি আশফাকের বি’রু’দ্ধে কোনো পদক্ষে’প নিচ্ছে না একমাত্র এই কারণেই। তার বারবার এটাই মনে হচ্ছে সে নিজের কর্ম ফল ভোগ করছে। সেও তো বহু বছর আগে একজনকে এমনই ভাবে তাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সে পরক্ষণে এটাও ভাবে, ভালোবাসাটা তাড়িয়ে দেওয়ার পেছনে তো কোনো জ’ঘ’ন্য কারণ ছিল না। যেমনটা আশফাকের আছে তেমন কিছু তো তার ছিল না। চমচম তখন চট্টগ্রামে। বাবার হাই প্রেশার, মায়ের নানান অসুস্থতা। ঘরে মানুষ বলতে তারা তিনজন। তন্মধ্যে দুজনেই অসুস্থ। সেই অবস্থায় সায়ন প্রস্তাব দিয়েছিল তাকে। বিয়ে করে বিদেশে নিয়ে যাবে একেবারে। চিনি জানতো, বাবা যদি এই প্রস্তাব পান অবশ্যই মেনে নিবেন। সুমন আঙ্কেলদের সাথে তাদের ভালোই সম্পর্ক। সায়নও যে বাবার পছন্দের তা চিনির জানা ছিল। চিনি তো মনে মনে নিজেকে ঠিক করছিল! প্রস্ততি নিচ্ছিল সবরকমের সায়নকে সুযোগ দেওয়ার। কিন্তু সায়ন? সায়ন তো কিছুতেই মানতে চায়নি, শর্ত একটাই ছিল তার, চিনিকে দেশ ছাড়তে হবে তার সাথে। পারেনি চিনি! বাবা-মাকে ছেড়ে স্বার্থপরের মতো যেতে পারেনি সেদিন সায়নের সাথে। এক পর্যায়ে বাকবিতণ্ডা হলো। চিনি সইতে না পেরে বলে বসল, সে কোনোদিনই বিয়ে করবে না। সায়ন তবুও পিছু ছাড়েনি। চিনি অনড় ছিল নিজের কথায়। শেষে হাল ছাড়তে হলো সায়নকে। ফিরে গেল ভিনদেশে। তার কিছুদিন পরেই তো! সায়ন বিয়ে করল। চিনি তো জানে সায়ন চিনিকে নিশ্চয়ই ভুলে গেছে। সব ভুলেই নতুন জীবনে পা দিয়েছে। চিনিও পরিবারের দিকে তাকিয়ে আবার ভাবতে লাগল জীবন নিয়ে। আশফাক এলো তখন জীবনে। একটা প্রেম ভালোবাসার সম্পর্কও গড়ে ওঠে। তারপর তো বিয়ে আর তারপরই তো ধোঁ’কা! চিনির আফসোস হয় এখন। সেদিনের করা প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করা উচিত হয়নি তার। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকলে আজ আর এই অবস্থায় পড়তে হতো না তাকে।
৬০.
সমুদ্রের পানিতে পা ফেলতেই চমচমের মন ভালো হয়ে গেল। আশেপাশে মানুষ কম থাকায় তার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছে। শাড়ি উঁচিয়ে একটু একটু করে সামনের দিকে অগ্রসর হতেই পেছন থেকে সত’র্ক’মাখা ডাক এলো,
-‘চমচম সাবধানে! বেশি দূরে যাবি না।’
চমচম পেছন ফিরে আব্রাহামের দিকে তাকালো। উফ! পিছুই ছাড়ছে না ব’দ’মাই’শটা। চমচম আর গেল না সমুদ্রের দিকে। তাকে ফিরে আসতে দেখে আব্রাহাম অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,
-‘চলে এলি যে?’
-‘তুমি আমার পিছু নিয়েছ কেন? একটা ঘন্টা আমাকে একটু একা শান্তিতে থাকতে দেওয়া যায় না?’
আব্রাহাম হেসে দুদিকে মাথা দুলিয়ে বলল,
-‘না।’
চমচম ছাতার নিচে বসল। আব্রাহামও পাশেই বসল। চমচম সরে গেল না। তবে ব্যাপারটা পছন্দও করল না।
-‘আমার ফোন থেকে আমার বসকে মি’থ্যে মেসেজ কেন পাঠিয়েছ?’
-‘না পাঠালে তোর বসটা তো যেত না। আর আমি চাই না ও থাকুক। চমচম আমরা হাজব্যান্ড-ওয়াইফ! আমাদের কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করার দরকার আছে! সেখানে ওই ওয়াসিম বারবার এসে বেগড়া দিতো। তাছাড়া আমি আয়মানকেও পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন শুধু আমি আর তুই আছি। ব্যাস!’
-‘থাকো তুমি। আমি আজই ফিরে যাচ্ছি।’
আব্রাহাম দুষ্টু হেসে বলল,
-‘ফ্লাইট নেই এখন।’
-‘গাড়িতে যাব।’
-‘কার গাড়িতে?’
-‘বাসে যাব। বাসে! বুঝেছ?’
-‘যেতে দিব না।’
-‘তুমি আমাকে আ’ট’কে রাখতে পারবে?’
-‘হ্যাঁ, না পারার তো কিছু নেই।’
-‘পারবে না। আমি যখন ফিরে যাব বলেছি, আমি অবশ্যই ফিরে যাব। তুমি একা একা কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করো আমি কিছু বলব না।’
-‘ঠিক আছে, কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করতে হবে না তোকে আমার সাথে। তুই তারপরেও এখন বাস জার্নির কথা চিন্তা করিস না। তুই এখনও অসুস্থ!’
চমচম হুট করেই রে’গে গেল। বসা থেকে দাঁড়িয়ে বলল,
-‘অসুখটাও তো তুমিই বাঁধিয়েছ। অ’স’ভ্য!’
আব্রাহাম হকচকিয়ে গেল এমন কথা শুনে। সে আবার কি করল! চমচম সবসময় অযথা একটা না একটা বলে তাকে দো’ষী বানিয়ে দেয়। চমচম রিসোর্টে ফিরে গেলেও আব্রাহাম আর নড়ল না জায়গা থেকে।
চমচম রুম পর্যন্ত এসে দেখে আব্রাহাম তার পেছন পেছন আসেনি। চাবিটাও তো সাথে নেই। অগত্যা কল করতে হলো আব্রাহামকে। আব্রাহাম এসে চাবি দিয়ে চলে যাচ্ছিল চমচম বলল,
-‘কোথায় যাচ্ছো আবার?’
-‘বাহিরে।’
-‘না যেও না।’
-‘কেন?’
-‘আমি একটু ঘুমাবো। তুমি রুমে থাকো। আমার ভালো লাগছে না। রিসোর্টটা খুব বেশিই খালি খালি মনে হচ্ছে।’
আব্রাহাম রুমে এসে টিভি ছাড়তেই চমচম বলল,
-‘বললাম না আমি ঘুমাবো? টিভি অন করছ কেন?’
আব্রাহাম টিভি অফ করে বারান্দায় গিয়ে বসল। কিছুক্ষণ পর চমচম আবার ডাক দিতেই ভেতরে গেল। চমচম তাকে নিজের কাছে আসতে বলতেই সে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। কাছে যেতেই চমচম বলল,
-‘ভালো লাগছে না আমার। বাড়ি যাবো।’
-‘কালকে সকালেই যাব। এত হাইপার হচ্ছিস কেন?’
-‘আমার ভালো লাগছে না একটুও।’
আব্রাহাম চমচমের কপালে হাত ছুঁয়ে দেখল। না জ্বর তো নেই এখন আর। চমচম বলল,
-‘তুমি এখানে থাকো। যেও না কোথাও।’
-‘আমি আছি তো।’
-‘বারান্দায় যেও না। এখানেই থাকো।’
চমচম হুট করেই আব্রাহামের হাতটা আকড়ে ধরল। তারপর ধীরে ধীরে ঘুমে তলিয়ে গেল। এরপর আব্রাহাম পুরোটা সময় চমচমের পাশে বসেছিল।
#চলবে।