দখিনের জানলা পর্ব-২৪

0
804

#দখিনের_জানলা (পর্ব-২৪)
লেখনীতে— ইনশিয়াহ্ ইসলাম।

৪৮.
আজ খুব ভোরে চমচমকে ঘুম থেকে উঠতে হয়েছে। আটটার আগে অফিস যেতে হবে। আজকে একটা বড় বিজনেস ডিল আছে। বেশ নামকরা কোম্পানির সাথে ডিলটা। ওয়াসিম এই প্রোজেক্টের কাজে চমচমকেও রেখেছে। বারবার সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে এই ডিলটা কোম্পানির জন্য অনেক জরুরী। তাদের প্রতিযোগী দুই তিনটা কোম্পানিও ডিলটার জন্য ল’ড়’বে। এত বড় সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেলে অনেক লস হতে পারে।

চমচম পরোটা চায়ে ডুবিয়ে সবেমাত্র মুখে দিতে নেয় ওমনি তার মা বলে উঠেন,

-‘কি যে হলো! নিগার ভাবী একমাস ধরে আসছেন না। কোনো যোগাযোগ করছেন না। আমার ল’জ্জা লাগে তাই আমিও নিজে থেকে কিছু বলতে পারি না। তুই এরকম কেন রে? বিয়ের জন্য রাজি হলি না কেন বল না!’

চমচম মনোযোগ দিয়ে সবটা শুনল। শুনে কোনো কথা বলল না। চুপচাপ খেতে লাগল। মেয়ের কোনো প্রতিক্রিয়া না পেয়ে ফাতেমা বেগম নিরস গলায় বললেন,

-‘আব্রাহামটা বাড়ি ছেড়েছে এক মাস হলো। ভাবী ভেবেছিল ছেলেটাকে তোর সাথে বিয়ে দিয়ে একসাথে নতুন বাড়িতে পাঠাবে। কিন্তু তা আর হলো কোথায়? ছেলে একাই চলে গেছে তার বাড়িতে। একা কি করে, কি খায়! মায়েদের তো এসব ভাবলেই মন খা’রা’প হয়ে যায়। ভাবীর রা’গের কারণ তো আমি বুঝি। আরেকটু ভাবনা চিন্তা কর না রে! ছেলেটা দেখতে শুনতে কত ভালো। একে তো একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আবার তার বাবার এত বড় ব্যবসাও সামলায়। কতদিক দেখে! এসব ছেলেরা দায়িত্ববান। মেয়েরা এমন ছেলে পেলে হাত ছাড়া করে?’

চমচম চা টা শেষ করে হেসে বলল,

-‘আমি করি মা।’

ব্যাগ নিয়ে চমচম যখন ঘরের দরজা খুলল তখন তার চিনির সাথে দেখা হলো। চিনি সবেমাত্র এসেছে। চমচমকে দেখে মৃদু হাসল। বোনের চেহারা দেখে আর এমন হুট করে এত বড় স্যুটকেস নিয়ে আগমন করাতে চমচম চমকে উঠল। মনে মনে অনেক কিছু ভেবে ফেলল। চিনিকে সেসব বুঝতে দিলো না। জড়িয়ে ধরল। বাসায় ঢুকে মাকে ডাকল। মা এসে চিনিকে ধরে কেঁদে দিলেন। চমচম পাঁচ ছয় মিনিট টুকটাক কথা বলে তাড়াতাড়ি ফিরে আসার চেষ্টা করবে বলে বের হয়ে এলো।

গাড়িতে উঠে সে চিনির কথা ভাবল। অফিসের কাজের কথা ভাবল। আর ভাবল আব্রাহামের কথা। সেদিনের তাদের শেষ কথোপকথনের পরের দিনই আব্রাহাম তার নতুন বাড়িতে চলে গিয়েছিল। বিদেশ থাকতেই জমি কিনে বাড়ির কাজ ধরেছিল সে। দেশে ফেরার আগেই কাজ সমাপ্ত হয়েছে। আরো আগেই তার সেই বাড়িতে ওঠার কথা ছিল নাকি। নিগার খানম যেতে দেননি, বলেছেন বউ নিয়ে উঠবে পরে। অনেক বছর বাহিরে ছিল আবারও বাহিরেই থাকবে এটা তিনি মানতে পারেননি। আব্রাহাম তাই থেকে গিয়েছিল। হয়তো তার মনে এই আশা ছিল সে চমচমকে বিয়ে করে তাকে সাথে নিয়েই নতুন বাড়িতে উঠবে। চমচম মাথাটা সিটে এলিয়ে দিলো। তার আব্রাহামের কথা ভাবলেই মন কেমন করে। আজ ক’দিন সে ঘুমাতে পারে না। উহু! কাজের চাপ নয়। আব্রাহামের কথা ভেবে ঘুমাতে পারে না। রাতে কেমন ছটফট করে তার বুকের ভেতরটা। ইচ্ছে করে আব্রাহামকে দেখতে। দখিনের জানলাটা খুলে দাঁড়িয়েও থাকে, আব্রাহামের বারান্দার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু আব্রাহাম তো আসে না। আসবে কি করে? সে তো নেই। দূরে চলে গেছে চমচমের থেকে।

অফিসে আসতেই চমচম দেখল আজকের পরিবেশটা একটু অন্যরকম। একটা থমথমে অবস্থা চারিদিকে। নিজের কেবিনে গিয়ে ব্যাগ রেখে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল গুলো নিয়ে চমচম মিটিং রুমে গেল। গিয়ে দেখে সেখানে আগে থেকেই ওয়াসিম সহ আরো চার পাঁচজন বসে আছে। সবাই চমচমের অনেক সিনিয়র। চমচম সবাইকে সালাম দিলো। ওয়াসিম চমচমের দেরি হওয়াতে যদিও একটু রা’গ ছিল কিন্তু এখন তাকে দেখার পর রা’গটা তার গায়েব হয়ে গেল।
চমচম চেয়ার টেনে বসতেই সবাই মিটিং নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগল। প্রেজেন্টেশন গুলো রিচেক দেওয়ার পর ওয়াসিম আর ম্যানেজার সাহেব উঠে পড়লেন। তাদের ক্লায়েন্ট এসে পড়েছে তাদেরকে রিসিভ করতে যেতে হবে।

আব্রাহাম আয়মানের দিকে আরেকবার রা’গী চোখে তাকিয়ে বলল,

-‘আর ইউ কিডিং মি?’

-‘ভাই ইটস্ জাস্ট আ বিজনেস ডিল। চমচম এখানে চাকরি করছে তো কি হয়েছে? ওর কাজ ও করুক, আমাদের কাজ আমরা করব।’

-‘তুই আমাকে আগে কেন বললি না?’

-‘বললে তুমি আসতে না।’

-‘আমি ভেতরে যাব না। তুই যা।’

-‘ভাই তুমি কি ভ’য় পাচ্ছ?’

আব্রাহাম এই কথা শুনে চোখ গ’র’ম করে ফেলল। বলল,

-‘আমি কাকে ভ’য় পাব আয়মান?’

-‘না মানে চমচমকে!’

-‘ওহ শাট আপ! ওকে আমি গোণাতে ধরি না।’

-‘তাহলে এমন কেন করছ? চলো প্লিজ। এভাবে গাড়িতে বসে থাকলে আমাদের পা’গ’ল বলবে।’

গাড়ি থেকে নেমে ভেতরে প্রবেশ করতেই ওয়াসিমের দেখা পেল আব্রাহাম। আর সাথে সাথেই তার মুখটা বি’র’ক্তি’তে ভরে গেল। ওয়াসিম আয়মান আর আব্রাহামকে চেনে। চিনির বিয়ের দিনই পরিচয় পেয়েছিল তাদের। আয়মানের সাথে কথা না হলেও আব্রাহামের সাথে অবশ্য কথা হয়েছিল। কিন্তু সেসব কথোপকথন মোটেও সুখকর ছিল না। ওয়াসিম ম্যানেজারের দিকে তাকালো। বিড়বিড় করে বলল,

-‘ইব্রাহীম চৌধুরী কোথায়?’

-‘স্যার উনারা হলেন ইব্রাহীম চৌধুরীর দুই ছেলে। বর্তমানে চৌধুরী গ্রুপ তারাই দেখছেন।’

ওয়াসিম আর কিছু বলল না। হাসিমুখে হাত মেলালো দুই ভাইয়ের সাথে। আব্রাহামের মুখোমুখি হলো যখন, তখন দুজনের একে অপরের দিকে তাকানোটা দেখে মনে হচ্ছিল দীর্ঘ দিনের পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বী।

৪৯.
আব্রাহামকে দেখে চমচম যেন সবচেয়ে বেশি অবাক হলো। তার মাথা আউলে গেল। কি বলবে, কি করবে কিছুই বুঝতে পারে না। প্রেজেন্টেশন দেওয়ার সময় এত বেশি ভুল করেছে যে ওয়াসিম দুই তিন বার চোখ গ’র’ম করে তাকিয়েছিল। কিন্তু চমচমের তো সেই দৃষ্টি দেখার সময় নেই। সে তো আব্রাহামের ওই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতেই বারবার আটকা পড়ছিল। শেষে তার এমন অবস্থা হলো যে আর সইতে না পেরে স্যরি বলে রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেল। আকস্মিক তার এমন কান্ডে সবাই ভড়কে গেল। ওয়াসিম তার পিএ কে ইশারা করতেই সে চমচমের পেছনে ছুটল। চমচম লেডিস ওয়াশরুমে ঢুকে মুখে পানি দিলো। মুখ মুছে বের হতেই দেখল ওয়াসিম বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। চমচমকে দেখেই সে বলল,

-‘হোয়াট হ্যাপেন আজরা? এসব কি করছ? আর ইউ অলরাইট!’

-‘ইয়েস স্যার। আসলে মাথাটা ব্যথা করছিল। স্যরি স্যার। মিটিং কি শেষ?’

-‘তুমি তো মূল প্রেজেন্টেশন দেখাতেই পারলে না। তাই কফি ব্রেক দেওয়া হয়েছে। এই তো এখনই আবার শুরু করা হবে।’

-‘তবে চলুন।’

-‘তুমি পারবে নাকি অন্য কাউকে বলব?’

-‘স্যার আমি পারব। এবার কোনো ভুল হবে না।’

ওয়াসিম ভরসাপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো চমচমের দিকে। চমচম তার সাথেই মিটিং রুমে প্রবেশ করল। তাদের দুজনকে এক সাথে দেখে আব্রাহাম নিজের হাতটা মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলল। চোখ বন্ধ করে একবার শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে চমচমের দিকে তাকালো আবার। চমচম এবার আর আগের ভুল করল না। সে যেন ভুলেই গেল আব্রাহাম বলতে কেউ আছে এখানে।

সবকিছু খুব সুন্দর ভাবেই সম্পন্ন হলো। আয়মান আব্রাহামকে ইশারা দিতেই সে ওয়াসিমকে বলল ডিল ফাইনাল। তারা এই প্রোজেক্টে এই কোম্পানির যে দুইজন কর্মচারী নিতে চায় চব্বিশ ঘন্টা আপডেট নেওয়ার জন্য সে দুইজনকে তারা নিজেরা সিলেক্ট করতে চায়। এটা বলতেই চমচম ঘামতে লাগল। সে চায় না কোন ভাবে আব্রাহামের কিছোতে জড়াতে। কিন্তু আব্রাহাম যেন বদ্ধপরিকর তাকে নিজের সাথে জড়ানোর জন্য। তাই তো সেই দুইজন কর্মচারীর মধ্যে চমচমও একজন ছিল।

ওয়াসিম চায়নি আব্রাহামের প্রোজেক্টের কাজে চমচমকে পাঠাতে কিন্তু এখানে ডিলারের ডিমান্ড। তাই কিছু বলতেও পারেনি। চমচমকেও সব কিছু চুপচাপ মেনে নিতে হয়েছে।

যাওয়ার আগে আব্রাহাম চমচমকে আরো একবার ভালো করে দেখে নিলো। বে’য়া’দ’বটা দিন দিন সুন্দর হয়ে উঠছে। হুট করে এই সৌন্দর্য বাড়ার পেছনের কারণ কী? ওয়াসিম মাহমুদ?

পরদিন চমচম নিজের অফিস থেকে কাজ বুঝে নিয়ে আব্রাহামের অফিসে পৌঁছালো। তাকে প্রথমে আয়মান বুঝিয়ে দিলো সবটা। তারপরও বলল আব্রাহামের সাথে যেন দেখা করে। বিল্ডিং এর ডিজাইন গুলো আব্রাহামের কাছে। সেগুলো বুঝে নিতে হবে।

উপায়ন্তর না পেয়ে চমচমকে ছয় তলায় আব্রাহামের কেবিনে যেতে হলো। দরজায় নক করার আগে ওয়াল মিররে নিজেকে কেন যেন একবার দেখে নিলো। আকাশী রঙের শাড়িটায় তাকে ম’ন্দ লাগছে না। চমচমের হুট করেই ল’জ্জা লাগল। আজ সে একটু সেজেছে। কেন সেজেছে নিজেই জানেনা। সাজটা আহামরি না, তবে স্বাভাবিক চলাফেরা করা চমচমকে এই কাজল চোখে, রাঙা ঠোঁটে আজ অন্যদিনের থেকে একমদই আলাদা লাগছে। লিপবাম একটু দিয়েছিল ঠোঁটে। রং তেমন ছড়ায়নি তারপরও চমচমের অস্বস্তি লাগছে। আব্রাহাম নিশ্চয়ই তাকে নিয়ে হাসবে। উফ! কেন যে সেজে এসেছে!

দরজায় নক করতেই ভেতর থেকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হলো। চমচম কেবিনে প্রবেশ করতেই এসির শীতল হাওয়া তাকে ছুঁয়ে গেল। এত বেশি নিরবতা চারিদিকে যে চমচম হাঁটলে তার ব্লক হিলস এর জন্য খটখট শব্দ হচ্ছে। আব্রাহাম এতক্ষণ ল্যাপটপে তাকিয়ে থাকলেও এবার চোখ তুলে চমচমের দিকে তাকালো। আব্রাহামকে নিজের দিকে তাকাতে দেখেই চমচমের বুক কাঁপতে থাকে। গতদিনের মতো কথা জড়িয়ে যায় তার। আব্রাহাম তাকে বসতে ইশারা করে বলল,

-‘সিট!’

চমচম বসলে আব্রাহাম বলল,

-‘লোকেশনটা কোথায় তা জানা আছে?’

চমচম কোনো মতে মাথা নাড়ল। কিন্তু আব্রাহামকে তারপরও শক্ত চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখে মুখে বলল,

-‘জ্বি।’

-‘এখানে সব গুলো ডিজাইন রয়েছে। কনস্ট্রাকশন প্লেসে গেলে চেক করে নিবেন সবকিছু আবার।’

-‘ওকে স্যার।’

আব্রাহাম আর কিছু বলল না দেখে চমচম স্বস্তি পেল। বলল,

-‘এবার আমি আসতে পারি?’

-‘কোথায়?’

চমচম অবাক হয়ে গেল। কিছু বলতে যাবে তার আগেই আব্রাহাম বলল,

-‘কোথায় আসতে চাইছেন?’

চমচম ব্যস্ত হয়ে বলল,

-‘আমি বলতে চাইছিলাম..

-‘মিস আজরা! আপনি কি আমার কাছে আসতে চাইছেন?’

-‘আমি সেটা কখন বললাম!’

-‘আপনার কাজে তো তেমনই মনে হচ্ছে। কেবিনের সামনে এসে আপনি নিজেকে আয়নার সামনে গুছিয়ে নিতেই দুই মিনিট বত্রিশ সেকেন্ড সময় ন’ষ্ট করেছেন। এর কারণ কী? ওয়ান্ট টু লুক বিউটিফুল টু মি?’

এই কথার উত্তরে কি বলবে চমচম বুঝতে পারল না। সে মানছে সে নাহয় নিজেকে দেখেছে তাই বলে এভাবে বলবে আর বুঝে নিবে? আর তাছাড়া সে তো কেবিনে ছিল। তবে জানল কী করে? চমচম হুট করেই ল্যাপটপ স্ক্রিনে তাকালো। ওহ নো! আব্রাহাম তবে তাহলে সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে দেখছিল তখন! আব্রাহাম বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। চমচমের কাছে এসে বলল,

-‘চলুন। মনে হচ্ছে না আপনি পারবেন একা। আমিও সাথে যাই। আমার কাজ কর্ম পণ্ড করার শখ তো আপনার নতুন না। দেখা গেল এটাতেও একটা উল্টাপাল্টা কিছু করে ফেলেছেন। রি’স্ক নিতে চাইছি না।’

চমচম চরম অ’প’মা’ন বোধ করল। সে চেয়ার ছেড়ে উঠতে নিলেই শাড়িতে পা বেঁধে ধপাস করে পড়ল আব্রাহামের বুকের উপর। আব্রাহাম তাকে দুহাতে জড়িয়ে ধরেই বলল,

-‘মিস আজরা! আপনার আজ হলো কী? বারবার কেন আমার এত কাছে আসতে চাইছেন?’

চমচম কিছু বলতে পারল না। অনুভব করল তার হাত পা ভীষণ ঠান্ডা হয়ে পড়ছে। হার্টবিট হচ্ছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। হুট করেই কি হলো খামচে ধরল আব্রাহামের বুকের কাছের শার্টটা। আব্রাহাম তখন পরম আবেশে চমচমের গালে চুমু খায়। ভালোবাসার পরশে চমচমের চোখ গড়িয়ে একটা ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল। সে অনুভব করল এই ছোঁয়া তার বহুদিনের আকাঙ্খা হয়েছিল। কিন্তু আগে তো এমন অনুভব করেনি! কোথায় লুকিয়ে ছিল তার এতসব অনুভূতি গুলো?

#চলবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে