তোমার_স্পর্শে পর্বঃ ০৮
– আবির খান
– চলো কালই আমরা বিয়ে করে ফেলি। আর কতদিন এভাবে থাকবো বলো?? তোমাকে আমার বউ করে পুতুলের মতো সাজিয়ে রাখবো আর সারাদিন শুধু মন ভরে দেখবো। তোমার এই মায়ায় ঘেরা চোখে বারবার আমি হারিয়ে যাব। (আমি)
মায়া আমার বুক থেকে মাথা তুলে বারান্দার গ্রিল ধরে দাঁড়ায়। ওকে হঠাৎ কেমন জানি লাগছে।
আমিঃ কি হয়েছে মায়া?? তুমি এমন করছো যে??চিন্তিত হয়ে।
মায়াঃ আমার একটা সত্য আছে তোমাকে বলার। কিন্তু তা শুনে তুমি কি আমাকে তোমার কাছে রাখবে নাকি দূরে সরিয়ে দিবে?? অসহায় ভাবে।
মায়ার কথা শুনে মনের মধ্যে কেমন জানি এক অজানা ভয়ের দেখা দিল। দক্ষিণা ঠান্ডা বাতাস এসে আমার গায়ে লাগছে কিন্তু মায়ার কথা শুনে আমার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে শুরু করেছে। আমি মায়ার কাছে গিয়ে ওকে আমার দিকে ঘুরিয়ে বললাম,
আমিঃ মায়া, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। তবে তুমি যদি…
মায়াঃ না না। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না। তুমি আমার জন্য ফেরেস্তা। তুমি আমার কতটা উপকার করেছো তা তুমি নিজেও জানো না। তাই তোমাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছিলাম সেদিন।
আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না। মায়ার কথাগুলো কেমন ঘোলাটে লাগছে।
আমিঃ মায়া সত্যি করে বলতো কি হয়েছে?? আর কি বলতে চাও তাড়াতাড়ি বলো। আমার অনেক টেনশন হচ্ছে।
এ পর্যায় মায়া আমার একদম কাছে এসে কান্নাসিক্ত কণ্ঠে বলে,
মায়াঃ আবির, আমার স্মৃতি ফিরে এসেছে। আর তোমার কথাও অামার মনে আছে। তোমার অবিরাম ভালোবাসা আমার বর্তমানের সাথে মিশে আছে। পারিনি তা ভুলে যেতে।
মায়ার কথা শুনে আমি পুরো পাথর হয়ে যাই নিমিষেই। ও আবার বলতে শুরু করে,
মায়াঃ জানো, কেন বলিনি সেদিন তোমাকে যে আমার স্মৃতি ফিরে এসেছে?? কারণ আমি তোমাকে হারাতে চাইনা। কখনো না। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া তিনি আমাকে তোমার কাছে রেখেছেন। আমাকে প্লিজ মাফ করে দেও এই কয়েকদিনের অভিনয়ের জন্য। আমি তোমাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি। কান্না করতে করতে বলল।
বরাবরই মায়া কান্না আমি মোটেও সহ্য করতে পারিনা। আস্তে করে হাত দিয়ে ওর চোখের জলগুলো মুছে দিলাম। ওকে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম। ও শান্ত হলে ওকে নিয়ে রুমে আসি। এক গ্লাস পানি দি ওকে খেতে। ও বসে পানি খেয়ে নেয়।
আমিঃ মায়া তুমি এগুলো চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে আসো। তারপর তোমার সব কথা শুনবো।
মায়াঃ আচ্ছা। আস্তে করে।
১০ মিনিট পর মায়া বেরিয়ে আসে। এসে আমার কাছে অসহায়ের মতো বসে। আমি জানি ও আমাকে এখন খুব কঠিন কিছু বলবে। আমিও নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়েছি। নিজেকে বলেছি, ওর অতীত বর্তমান যেমনই হোক মায়া শুধু আমারই।
আমি মায়ার কাছে গিয়ে ওর কপালে একটা চুমু এঁকে দিয়ে ওর হাত দুটো ধরে বললাম,
আমিঃ কোনো ভয় নেই। আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমি আছি তোমার সাথে। বলো তোমার যা যা মনে পরেছে। আজ সব শুনবো। আগে বলতো তোমার আসল নাম কি??
মায়াঃ মায়াই আমার আসল নাম। মা রেখেছে নামটা। আমি নাকি ছোট বেলায় দেখতে অনেক মায়াবী ছিলাম তাই এই নাম রেখেছে।
আমিঃ হ্যাঁ এটা সত্য। আমিও তোমার এই নাম দিয়েছি তোমার মায়াবী মুখখানা দেখে। এখন বলতো সেদিন আসলে কি হয়েছিল??
মায়াঃ সব বলছি, যে ছবিটা তুমি আমার ব্যাগে দেখেছো উনি আমার মা। এই দুনিয়াতে আমার মা ছাড়া আর কেউ নাই। বাবা অনেক বছর আগেই মারা গেছে। বাবা হারা একমাত্র মেয়ে আমি। সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চেয়েছিল আমার মামা। আমার বিয়ের জন্য নিজ স্বার্থে একটা গুন্ডা ছেলে ঠিক করে। ছেলেটা প্রথম দিন দেখা করতে এসেই আমার শরীরের হাত দিতে নেয়। আমি এরপর যখন আমার মামাকে বলি এ বিয়ে আমি করতে পারবো না তখন তিনি শুরু করেন আমার উপর নির্যাতন। আমার মা এসব সহ্য করতে পারছিল না। আবার তিনি প্রতিবাদ ও করতে পারছিলো না। তাহলেই আমাদের উপর অত্যাচার করতো মামা। অনেক দিন খাবার দেয়নি মামি আমাদের। না খেয়েই কত দিন রাত পার করেছি আমি আর আমার মা। আমি একটু সুন্দর দেখে ওই গুন্ডার কাছে মামা মূলত আমাকে বেচেই দিচ্ছিল। জানি না কত টাকায়৷ এরপর অনেক অনুরোধ অনুনয় করেও মামা যখন সেই ছেলের সাথে আমার বিয়ে একদম পাকা করে ফেলে। আমি তখন মায়ের কথা মতো বাবার দেওয়া তাকে শেষ সম্বল কিছু সোনা গহনাপত্র নিয়ে পালিয়ে চলে আসি। জানি না আমার মা এখন কেমন আছে। আমি রাস্তায় দিয়ে হাঁটছিলাম কোথাও দূরে চলে যাবো বলে। মায়ের জন্য খুব খারাপও লাগছিল। কিন্তু হঠাৎই কিছু খারাপ ছেলে আমার পিছু নেয়। ওদের মতলব বুঝতে পেরে আমি পালানোর চেষ্টা করি আর তোমার গাড়ির সামনে এসে ধাক্কা খাই। এরপরতো সবই তুমি জানো। আমাকে নষ্ট করতে চেয়েছিলো আমার মামা। কিন্তু ভাগ্যের জোরে তোমার জন্য পারেনি। আজ তুমি না থাকলে হয়তো আমাকে কোনো পাড়ায় পেতে। নিজ মামা যে এমন করবে আমার সাথে আমি কল্পনাও করতে পারিনি। বলেই মায়া কান্নায় ভেঙে পরে।
এদিকে আমি, মায়া সব কথাগুলো শুনছিলাম। আমার মনে হচ্ছে আমি আগুনের উপর বসে আছি। একটা কথা আছে শান্ত মানুষের রাগ অনেক বেশি। আমার রাগ সম্পর্কে মায়ার কোনো ধারণাই নেই। তার ডেমো কাল মায়াকে দিবো ইনশাআল্লাহ। আমার আল্লাহ যদি আমাকে বাচিঁয়ে রাখে কাল মায়াকে দেখাবো আমার রাগ কি জিনিস।
আমি উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে ওযু করে আসলাম। আল্লাহকে ডেকে অনেক কষ্টে রাগটা শান্ত করলাম। মায়া বোকার মতো আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। ও বুঝতে পারছে না আমার কি হয়েছে। আমি শান্ত হয়ে মায়ার কাছে গিয়ে ওকে আমার বুকে নিয়ে নিলাম।
মায়াঃ আমাকে প্লিজ মাফ করে দেও। কান্না জড়িত কণ্ঠে।
আমিঃ বোকা মেয়ে, মাফ সে চায় যার দোষ আছে। আমি তোমার বিন্দু পরিমাণ দোষ খুঁজে পাইনি।
মায়াঃ তাও।
আমিঃ আচ্ছা মায়া, তোমার মা আর মামা কোথায় থাকে??
মায়াঃ উত্তরা ৩ নং সেক্টরে। ৫৪৩ নং বাড়িতে। কেন??
আমিঃ না মানে এমনি। আচ্ছা, তোমার মামার নাম কি??
মায়াঃ জাওলাদ।
আমিঃ আচ্ছা।
মায়াঃ তুমি এতো শান্ত হয়ে গেলে কেন?? আমার সাথে রেগে আছো??
আমিঃ আরে না না। কাল তোমাকে সাথে নিয়ে এক জায়গায় ঘুরতে যাবো। তুমি খুব খুশী হবে দেখো।
মায়াঃ সত্যিই?? খুশী হয়ে।
আমিঃ হ্যাঁ সত্যি। এখন তুমি শোও, আমি অফিসে বলে আসি কাল একটা কাজ আছে৷
মায়াঃ আচ্ছা৷
আমি চলে গেলে মায়া ভাবছে, এতো কঠিন কঠিন কথা বললাম তাকে। কিন্তু সেতো কিছুই বললনা এ বিষয়ে। আবার কালকে কোথায় নিয়ে যাবে আমাকে?? নাহ কিছুই বুঝতে পারছি না।
এরমধ্যে আমি এসে পরি। এরপর আমি মায়াকে নিয়ে শুয়ে পরি। ও আমাকে আর আমি ওকে ছাড়া একটুও ঘুমাতে পারিনা। ও আমার বুকে মাথা লুকিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবে। আর আমারও এভাবে ঘুমাতে ভালো লাগে। আমি মায়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি আর মনে মনে বলছি, জাওলাদ, তুই আমার মায়ার জীবন ধ্বংস করতে চাচ্ছিলি না। এখন তোর জীবন কে বাঁচাবে!! এসব ভাবতে ভাবতেই আমি ঘুমিয়ে পরি।
পরদিন সকালে,
আমিঃ মায়া হইছে??
মায়াঃ এইতো আসছি। এতো অস্থির হয়েছো কেন?? আসছিতো।
আমিঃ আরে তাড়াতাড়ি।
মায়াঃ এইতো আসছি। চলো।
আমিঃ হুম চলো।
মায়াঃ কিন্তু আমরা যাচ্ছিটা কোথায়??
আমিঃ গেলেই দেখবে। তবে আর যাই হোক, তুমি আজ অনেক খুশী হবে সিউর।
মায়াঃ কি বলো। তাহলে তাড়াতাড়ি চলো।
এরপর আমি মায়াকে নিয়ে গাড়িতে করে রওনা দেই। মায়াকে বেশ হাসি খুশী লাগছে আজ। কারণ আজ অনেক দিন পর ঢাকার রাস্তায় মায়া ঘুরতে বের হয়েছে তার প্রিয় মানুষটার সাথে। আমি মায়ার একটা হাত ধরে আছি। কোনো কথা বলছি না। চুপচাপ গাড়ি চালাচ্ছি। কপালের রগ দুটো খাড়া হয়ে আছে। হঠাৎ মায়া বলে উঠলো,
মায়াঃ এই, তুমি কি রেগে আছো নাকি?? মনে হচ্ছে খুব রেগে আছো।
আমি মায়ার দিকে তাকিয়ে মিথ্যা একটা হাসি দিয়ে বলি,
আমিঃ আরে না না। তুমি ভুল বুঝছ।
মায়াঃ ওহহ।
কিছুক্ষন পরই আমি গাড়ি থামাই। আর মায়াকে বলি,
আমিঃ মায়া নামো আমরা এসে পরেছি।
মায়া গাড়ি থেকে নেমে যেন বিশাল একটা সক খায়। কারণ মায়া দেখে ও ওর মামার বাসার সামনে। মায়া স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। মায়া ভাবছে আমি রাগ করে ওকে এখানে নিয়ে আসছি। তাই মায়া দ্রুত আমার কাছে এসে বলে,
মায়াঃ দোহাই লাগে আমাকে এখানে দিয়ে যেও না। ওরা আমাকে শেষ করে ফেলবে। আমি অনেক দূরে কোথাও চলে যাবো। তাও এখানে আমাকে দিয়ে যেও না। দোহাই লাগে তোমার।
আমিঃ মায়া অার একটা কথাও না বলে আমার সাথে অাসো।
আমি মায়ার হাত ধরে আমার সাথে উপরে ওর মামা বাসায় নিয়ে যাই। বেল বাজাতেই ছবির সেই মহিলা মানে মায়ার মা দরজা খুলেন।
মায়াঃ মা….কান্নাসিক্ত কণ্ঠে।
মাঃ মায়া…অবাক হয়ে।
আমি মায়াকে নিয়ে ভিতরে যাই। গিয়েই জোরে চিৎকার করে ডাক দি,
আমিঃ জাওলাদ….জাওলাদ….
মায়ার মামা মানে জাওলাদ দ্রুত বাইরে আসে। মায়াকে দেখে সেও অবাক। তার চেয়ে বেশি অবাক আমাকে দেখে।
জাওলাদঃ মায়া!!! এই তুমি কে?? কোন সাহসে আমার নাম ধরে ডাকছো?? আমি কে চিনো??
আমিঃ এই নে মায়াকে। তোর মায়াকে প্রয়োজন ছিল না নে। দিয়ে গেলাম তোর কাছে। এখন কি করবি কর ওর সাথে।
মায়া অনেক কান্না করছে। মায়ার মা মায়াকে ধরে আছে আর কান্না করছে।
জাওলাদঃ শুয়া*** তোকে বলতে হবে আমি কি করবো?? তুই এখান থেকে যা না হলে কিন্তু জানে ফিরতে পারবি না।
আমিঃ না বলনা তুই আর কি করবি ওর সাথে?? তোর তো কোনো ক্ষমতাই নাই।
জাওলাদঃ কিহহ, তাইলে শোন, ওকে এক মাস্তানের কাছে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করবো। তারপর ওকে ওরা চিরে চিরে খাবে। এবার বুঝলি আমার ক্ষমতা??
আমিঃ ব্যাস এতটুকুই করবি?? আর কিছু না??
জাওলাদঃ মানে!!
আমিঃ তুই কাল থেকে অনেক কিছু করিবি। এই দেখ, এই যে বুতামটা দেখছিস এখানে তোর সব কথা ভিডিও সহ রেকর্ড হয়ে গিয়েছে। রাফি….
আমি রাফিকে ডাক দিতে রাফি পুলিশ সহকারে মায়াদের বাসায় ঢুকে।
জাওলাদ তার বউ আর মায়া আর ওর মা সবাই অবাক।
আমিঃ স্যার সব তো শুনলেনই। এখানেও প্রমাণ আছে। আর ভিক্টিমতো আপনার সামনেই।
পুলিশঃ জ্বি আবির সাহেব আমরা সব শুনেছি প্লাস দেখেছিও। এই শয়তানকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
আমিঃ স্যার আমাকে শুধু একটা সুযোগ দিন ওর সাথে একটা বোঝাপড়া আছে আমার। নাহলে কখনো শান্তি পাবো না।
পুলিশঃ জ্বি সিউর।
আমি মায়ার মামা মানে জাওলাদের সামনে গিয়ে দাঁড়াই। এরপর হাতটা শক্ত করে কষিয়ে একটা থাপ্পড় মারি। অার বলি,
আমিঃ এই থাপ্পড়টা আমার মায়াকে এতো দিন কষ্ট দেওয়ার জন্য। আর আদালতে তোর মতো পশুকে যে শাস্তি দিবে সেটা একটা মেয়েকে অত্যাচার করার জন্য। আরে, যে মায়ের জাতের পেট থেকে এলি সেখানেই আঘাত করলি। তাকেই নষ্ট করতে চাচ্ছিলি। তোর এ জন্মে কেন পরকালেও তোর এই পাপের মাফ নাই। একজন পুরুষ হয়ে একটা মেয়ে আর তার মাকে কষ্ট দিস না। লজ্জা করে না?? ওদের অনেক কষ্ট দিছোছ। এবার সেই কষ্টগুলো ১০০ গুন বেশি হয়ে তোর কাছে ফিরে আসবে। স্যার ওকে নিয়ে যান। আর সর্বোচ্চ শাস্তি দিন ওকে।
পুলিশঃ অবশ্যই।
এরপর পুলিশ মায়ার মামাকে ধরে নিয়ে যায়।
মায়ার মা আর মায়া দুজনেই অবাক হয়ে আছে। এমন কিছু হবে তারা কখনোও ভাবে নি। জাওলাদকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। সাথে জাওলাদের বউকেও।সবাই চলে গেলে আমি সোফায় বসি। এখন একটু ভালো লাগছে। আমার মায়াকে কষ্ট দিয়েছে এতো বছর। আমি এতো সহজে ছেড়ে দিব। কখনোই না। আমি সোফায় বসতেই মায়ার মা আমার দিকে পানি এগিয়ে দিতে দিতে বলে,
মায়ার মাঃ তুমি কে বাবা?? যে আমাদের ফেরেস্তার মতো বাঁচালে??
আমি পানিটা নিয়ে মায়াকে ইশারা করলাম।
মায়াঃ মা, আমি বলছি ও কে। তাহলে শোনো।
এরপর মায়া ওর মাকে শুরু থেকে সব বলে। মায়ার মাতো সব শুনে খুশীতে কান্নায় ভেঙে পরে।
আমিঃ মা, আর কাঁদবেন না। আজ এখানে তিনটে কারণে এসেছি। একটা তো হলোই। এখন আরেকটা বলি, মা মায়াকে আমার বউ করে নিয়ে যেতে চাই। যদি আপনি সম্মতি দেন তাহলে।
মায়ার মা আরো খুশী হয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
মাঃ বাবা, তোমাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিব আমি কিছু খুঁজে পাচ্ছিনা। একটা বাবা হারা মেয়ের মায়ের যে কত দুশ্চিন্তা তা কেউ কখনো বুঝবে না। তোমার মতো ছেলের হাতে আমার মেয়েকে তুলে দিতে পারলে আমি মরেও শান্তি পাবো। যে ছেলে নারীদের এত্তো সম্মান আর ভালোবাসে তার কাছে আমার মেয়ে রানী হয়ে থাকবে।
আমিঃ কি যে বলেন না, শুধু দোয়া করবেন। এবার বলি আমার ৩য় কারণ। মা, আপনি এখনই আমার সাথে আমার বাসায় যাবেন। আর আজ থেকে আপনি আমার সাথেই থাকবেন। প্লিজ না করবেন না। এটা আমার জামাই হিসেবে একটা কর্তব্য।
মাঃ বাবা তুমি সত্যিই আমাদের জন্য ফেরেস্তা।
পাশে মায়ার দিকে তাকালাম। ওর চোখে মুখে আমার জন্য সম্মান শ্রদ্ধা আর অফুরন্ত ভালোবাসা দেখছি।
আমিঃ মা, আমার বাবা-মাকে আমি আসতে বলেছি তারা কালকে সকালে চলে আসবে। তারপর আপনার এই অপ্সরাকে বিয়ে করে আমার বউ করে নিয়ে যাবো।
মায়া অনেক লজ্জা পাচ্ছে। লজ্জায় একদম গোলাপি হয়ে গিয়েছে।
মাঃ বাবা, তোমার কাছে আমরা দুজনই চির ঋণী থাকব।
আমিঃ কি যে বলেন না। এটা আমার কর্তব্য।
এরপর মায়া আর মায়ার মাকে আমার নিজ বাসায় নিয়ে আসি। মায়া ওর মাকে পেয়ে অনেক অনেক খুশী। আমি বাসায় এসে আমার রুমে যাই। জামা কাপড় চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে আসি। ওয়াশরুম থেকে বাইরে আসতেই মায়া আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। আমিতো পুরো অবাক হয়ে যাই। এরপর যা করলো মায়া, আমিতো লজ্জায়ই পরে যাই। মায়া আমাকে….
চলবে….
কি হবে এরপর ভাবতে থাকুন। আর কেমন লেগেছে জানাবেন কিন্তু। সাথে থাকবেন ধন্যবাদ।