তোমার জন্য সব পর্ব-০৬

0
27

#তোমার_জন্য_সব (৬)
✍️ #রেহানা_পুতুল
ধন্যবাদ স্যার। আপনার ছায়া থেকে,দৃষ্টি থেকে, আমি দূরে থাকতে ইচ্ছুক।”
কাঠ কাঠ গলায় বলল কলি।

কলির ভাবভঙ্গি ও কথায় মাহমুদের মাঝে বিস্ময়ের সীমা রইল না। কলির প্রতি এবার রা*গ হলো না তার। বরং চুম্বকের মতো আকর্ষণ অনুভব করলো। এই হৃদয় ভাঙ্গচুর করা অনুভব তার জীবনে এই প্রথম। সে ধ্যানমগ্ন ঋষির ন্যায় কলির মুখপানে ঠায় চেয়ে রইলো শীতল চাহনিতে।

মাহমুদ প্রত্যক্ষভাবে উপলব্ধি করতে পারলো,কলির কথায় অভিমান,ক্ষোভ, বিরক্ত, উপচে উপচে পড়ছে। একটু কৌশলের আশ্রয় নিলো সে।

“ছাত্রী হয়ে শিক্ষকের কথার মর্যাদা দিবেন না? আপনাকেত আমি অনুগত,বাধ্য ছাত্রী মনে করতাম।”

কলি কোন প্রতিউত্তর খুঁজে পেল না। সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে গেলো। মাহমুদ তাকে নিয়ে একটি ফাস্টফুডে প্রবেশ করলো। পিছনে গিয়ে কর্ণারের টেবিলটায় বসলো। একজন ওয়েটার গিয়ে মেন্যুলিস্ট দিলো। কলির ভারি অস্বস্তি লাগছে। সে টেবিলের উপর মাথা উপুড় করে রাখলো খানিকক্ষণ।

“কলি আমি একটু কিছু বলতে চাই আপনাকে।”

কলি মাথা তুলে নিলো। নিরস ভঙ্গিতে বলল,
“শুনছি স্যার।”

কলির সামনে মেন্যু লিস্ট এগিয়ে দিয়ে বলল মাহমুদ,
” সেটা বলছি। কি খাবেন। যা ইচ্ছে অর্ডার করুন।”

“কিছুই না স্যার।”

“কলি কিছু অর্ডার ত দিতে হবে।”

“আপনি দিয়ে আপনি খান না স্যার। তাদের দরকার বিলের। একজন খেলো না দুজন খেলো সেটা বিষয় না তাদের কাছে।”

“আপনি কি এটা বুঝতে পারছেন,যে অতিরঞ্জিত করে ফেলছেন আমার সঙ্গে? বলুন কি খাবেন।”

হালকা মেজাজে বলল মাহমুদ।

” আমি নয়। আপনিই অতিরিক্ত করছেন স্যার”
থমথমে সুরে বলল কলি।

মাহমুদ হতভম্ব হয়ে গেলো কলির নির্দয় আচরণে। মনে অসম্ভব রকমের আঘাত পেলো।
” বেশ খেতে চাচ্ছেন না যেহেতু ফোর্স করব না। যেটা বলতে চাই তা হলো, আপনি আমার ছায়াও মাড়াবেন না।’ আমার বলা এই কথাটা আমি চূড়ান্তভাবে তুলে নিলাম চিরদিনের জন্য। আপনি এনিটাইম আমার ছায়া ভালোভাবেই মাড়াতে পারবেন। আর খুব সরি আমার মিস বিহেভিয়ারের জন্য। প্লিজ অভিমান পুষে রাখবেন না।”

” স্যার আমি ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চের একজন সাধারণ স্টুডেন্ট। আমার অভিমান,কষ্টে আপনার এত দায় কেন?”

ভারি মুডে জানতে চাইলো কলি।
মাহমুদ তপ্ত স্বাস ছাড়লো। বলল,

” প্রথমতটা বাকি থাকুক আপাতত। দ্বিতীয়ত,
একজন ছাত্রী আমার উপর বিরক্ত। এটা একজন শিক্ষকের জন্য ভালো কথা নয়। তৃতীয়ত,আমার মা আদেশ করেছে আপনাকে সরি বলতে। মায়ের কথার গুরুত্ব আমার কাছে অপরিসীম। আবারও সরি বলছি কলি।”

কলি এবার বিব্রত হলো স্যারের নমনীয় আচরণে। মার্জিত গলায় বলল,

“প্লিজ স্যার এভাবে বলবেন না। আচ্ছা বুঝলাম। স্যার উঠি? আমার বাস ধরতে হবে।”

“না। আরেকটু। মোটরসাইকেল বনানী টু লালবাগ। রোড ফ্রি থাকলে এই বড়জোর ত্রিশ মিনিট।”

“স্যার আমি বাইকে যাব না। আমার পড়ে যাওয়ার ভীতি আছে।”

“যেভাবে বসলে ভীতি থাকবে না। সেভাবে বসবেন। বাইকে না চড়লে ভেবে নিব আপনি এখনো ক্রুদ্ধ আমার উপরে।”

কলি উঠে গিয়ে নিচে রাস্তার উপরে চলে এলো। মাহমুদ ওয়েটারদের হাতে কিছু সম্মানী দিয়ে ত্রস্ত পায়ে নিচে নেমে এলো।

“কলি আমি পৌঁছে দিতে চাই। নয়তো বুঝে নিবো আপনি স্বাভাবিক হন নি আমার উপর।”

একদিকে লেট। রাস্তায় জ্যাম। আরেকদিকে মাহমুদের চাওয়া। কলির মানা করার জো নেই। তবুও কলি বিনীতভাবে প্রত্যাখ্যান করলো মাহমুদের প্রস্তাব।

“স্যার আপনি যা ইচ্ছা ভাবতে পারেন। কিন্তু এটা আমার পক্ষে অসম্ভব।”

বাস এলে কলি উঠে যায়। মাহমুদের চোখ আরক্ত হয়ে উঠলো। বাইকে চড়ে জোরে স্টার্ট দিলো। ভাবতে লাগলো কলির কথা। ফাস্টফুডে নিয়েও একটা মেয়েকে খাওয়াতে পারল না। বারবার বলেও বাইকে চড়াতে পারল না। কলির ব্যক্তিত্ব এতটাই প্রখর, ভাঙ্গবে তবু মচকাবে না। অথচ অন্যকোন মেয়ে হলে বলার সঙ্গে সঙ্গেই লুফে নিতো। বুকের বাঁ পাশটা চিনচিন ব্যথা করে উঠলো মাহমুদের। বিক্ষুব্ধ মেজাজে বাইক দ্রুত গতিতে চলে যাচ্ছে। মাহমুদ কলিকে নিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে আছে। সে নিতে পারছে না কলির অপমানগুলো।

হঠাৎ একটা প্রাইভেট কারের ধাক্কায় মাহমুদ ছিটকে পড়ে যায় রাস্তার একপাশে। এক দুজন করে মানুষের জটলা লেগে যায়। পুলিশ এগিয়ে আসে। নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যালে। এবং তার বাইক পুলিশের হেফাজতে নিয়ে নিলো। মোবাইলের ডায়াল নাম্বার চেক করে বাসায় ফোন দিলো। পাগলের মতো কাঁদতে কাঁদতে তার পরিবারের সবাই ছুটে এলো।

কলি বাসায় গিয়েই হাতমুখ ধুয়ে খেয়ে নিলো। ক্ষুধাটা বেশ চনমনিয়ে উঠেছে পেটের ভিতর। কলির বোন মিলি এলো বাসায়।
“কিরে আপা কখন এলি।”

“এইতো বিকেলেই। তোর লেট হলো কেন?”

“ঝড়,তুফান,বাসের জন্য ওয়েট। এইতো।”

“ওরে আমার ছুলুবুলুটা। আমার মামপাখিটা। দেখিতো।”

মিলির তিন বছরের মেয়ে সুহিকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে বলল কলি। জুলি লাফিয়ে লাফিয়ে এলো তাদের সামনে।
বলল,
“বড় আপা তোর জন্য একটা সাদীর প্রস্তাব আনছে। মোবাইলে ছবি দেখ। মন্দ না বেটা। হিরো হিরো ভাব আছে।”

কলি হোঁচট খেলো।
“আপা সত্যিই। কে? কই ছবি?”

রেবেকা এসেই চনচন করে উঠলো। জুলিকে ধমকে উঠলো।

“পেটে কিছুই হজম হয়না তার। বদ হজমের সিরাপ খাস তুই? পাজী মেয়ে। সব কথা এভাবে বলতে হয়?”

“আম্মু থাক না। বলছে কি হয়েছে? সমস্যা নেই।”
বলল কলি।

“এই মিলি তুই ভালো করে বল কলিকে।”

জুলি তার রুমের বারান্দায় চলে গেলো। একটু মন খারাপ হলে বা মা বকা দিলেই সে বারান্দার কোণে গিয়ে চুপটি করে দাঁড়ায়। সেখানে তার একটি ছোট্ট টিয়া পাখি আছে। পাখি পুষতে তার ভীষণ শখ। খাঁচার ভিতরেই থাকে বন টিয়া পাখিটি। বিভিন্ন উপায়ে কিছু টাকা জমিয়েছিলো সে। পরে দুলাভাইকে নিয়ে নিজেই কাঁটাবন গিয়েছে। তখন অবশ্য তার আর টাকা লাগেনি। মিলির জামাই ছোটশালিকে খাঁচাসহ এই বন টিয়া পাখিটি কিনে উপহার দিয়েছিলো। বহু সাধনা করে টিয়াকে তাদের নামগুলো বলা শিখিয়েছে জুলি। স্বাগতম, শুভসকাল,শুভ দুপুর,শুভ বিকেল শিখিয়েছে। জুলির অফুরন্ত আনন্দ হয়,যখন টিয়া নাকি নাকি সুরে জুলি, কলি,মিলি বলে ডাকে।

কলিকে, মিলি পাত্রের কথা বলল। তার চাচাচো দেবর হয় সম্পর্কে। কলি মুখের উপর মানা করে দিলো। বলল,

“রিলেটিভের ভিতরে বউ হওয়ার ইচ্ছে নেই আপা। আগ্রহ আসেনা আমার।”

তার মা রেবেকা হই হই করে উঠলেন কপাল চাপড়ে। এমনিতেই রেবেকার মেজাজ রাতদিন তেতে থাকে সংসারে ঘানি টানতে হিমশিম খেতে হয় বলে। তার মধ্যে মেয়েদের এত নকশা,খুঁত ধরা তার সহ্য হয়না। সে মিলি ও কলির সামনে এসে বলল,

“এই পর্যন্ত কতগুলো বিয়ের ভালো ভালো প্রস্তাব আসলো। উনার এটার হলে সেটা হয়না। সেটা হলে ওটা মিলেনা। খালি অমিলই খুঁজে পায়। তার জন্য পাত্র অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিতে হবে। এইখানে খারাপ কিরে মেয়ে। জানাশুনা ছেলে। পরিচিত। আজকাল ভালো ছেলে পাওয়াই ত মুশকিল। প্রায় সবগুলো ছেলের চরিত্রে দোষ পাওয়া যায়। হয় ডিভোর্স হওয়া,নয় দুই তিনটা প্রেম করেছে,কেউ আবার বিপত্নীক। হাহ!”

“আহা আম্মু হইছে। চুপ করো।” বলল মিলি।

রেবেকার মুখ আর থামে না। গজগজ করতে করতে চলে গেলো।

কলি স্থির হয়ে আছে। মিলি বড় সন্তান বলে বাবা,মায়ের জন্য তার ভালোবাসা,টান সবচেয়ে বেশি। কেননা জীবনের টানাপোড়েনে তাদের হা-হুতাশ দেখেছে খুব কাছ থেকে ছোটবেলা থেকেই।

সে বোনকে শান্তনা দিয়ে বলল,

“থাক বোন। আম্মুর উপর মন খারাপ করিস না। দেখ, আমাদের আম্মু,আব্বুর অল্প আয় দিয়ে কত কষ্ট করে সংসার টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে বিয়ে দিয়ে দিলো। কেন? অর্থাভাবের জন্যই ত। একটা ভাই নেই আমাদের। যে বড় হয়ে চাকরি করবে। কোন ভরসায় তিনটা মেয়েকে ধরে রাখবে? বল?
গ্রামে হলে হাঁস মুরগী, সবজি গাছ,পুকুরের মাছ,ক্ষেতের ধান,গাছের নারকেল,সুপারি গাছ থেকেও আয় বের করা যায়। একটা মধ্যবিত্ত সংসারে গ্রামে এসব ভালো সাপোর্ট দেয়। যেটা শহরে একদম নেই। আগে আম্মু আমাদের সবার ড্রেস সেলাই করতো। এখন কোমর আর মাথা ব্যথার জন্য সেটাও পারে না। ছুটা বুয়া এসে একবেলা কাজ করে দিয়ে যায়। আর সারাদিন সব কাজ আম্মুরই করতে হয়। তুই যা পড়াশোনা ও টিউশনির ফাঁকে আম্মুকে টুকটাক হেল্প করিস কাজে। জুলিত তাও করে না। একটু পড়াশোনা, মোবাইলে গেম,টিকটিক, ও তার টিয়া পাখি নিয়েই পড়ে থাকে। ”

কলির চোখ ভিজে উঠলো। অভিমানী সুরে বলল,

” তাই বলে আমার মন না টানলেও হ্যাঁ বলতে হবে? কারো গলায় ঝুলে পড়বো বাঁদরের মতো? আমার খরচ অনেকটা আমি কাবার দিই আপা। তিনটা মেয়েকে পড়াই তাদের বাসায় গিয়ে গিয়ে। নিজের ব্যক্তিগত খরচ,মোবাইলে রিচার্জ,ভার্সিটির বেতন,জুতা,ব্যাগ,জামাকাপড় সবই আমার টিউশনির টাকা থেকে চলে। জুলিকে দিই কিছু মাঝে মাঝে। অনার্স শেষ হলেই জবে ঢুকে যাবো। এখন চাইলে পারব না। পড়ার ব্যাঘাত ঘটবে। আমিতো অবিরাম চেষ্টায় আছি সংসারের হাল ধরার।”

“তা আমি বেশ জানি কলি। তুই আদর্শ বাবা মায়ের আদর্শ মেয়ে হয়েছিস।”

নুরুল হক এলেন কলির রুমে। কিছু বললেন না । সারা অবয়ব জুড়ে এক অসহায় ব্যর্থ পিতার নিদারুণ চিহ্ন। দুই মেয়ের মাথায় পিতৃস্নেহের পরশ বুলিয়ে ফের চলে গেলেন নিজের রুমে। ভারি স্বাস ছেড়ে বিছানার অবসাদগ্রস্ত শরীরের ভার ছেড়ে দিলেন।

বাসায় বিয়ে নিয়ে বিক্ষিপ্ত কথাবার্তা হওয়ার দরুন মিলির অন্যকিছু আর মাথায় এলোনা। মাহমুদ স্যারের কথাও মনে হলো না। সে পরেরদিন ভার্সিটিতে গেলো। ক্লাস টিচার ক্লাস শেষ করে বললেন,

“মাহমুদ স্যারের দুইটা ক্লাস অন্য স্যার এসে নিবে। তিনি আপাতত আসতে পারবেন না। গতকাল বিকেলে বাসায় যাওয়ার সময় বাইক এক্সিডেন্ট করেছে।”

হঠাৎ এমন খবরে পুরো ক্লাসে পিনপতন নিরবতা নেমে এলো। সবাই স্যারের খোঁজখবর নেওয়া শুরু করলো। খেয়ার চোখ ছলছল করে উঠলো। সে জিজ্ঞেস করলো,

“স্যার কিভাবে জানলেন?”

“মাহমুদ স্যারের ছোট বোন ফোন করে সকালে হেড প্রধানকে অবগত করেছে।”

“স্যার কোন হসপিটালে মাহমুদ স্যার?আমাদের দেখতে যাওয় উচিত না?”

দুঃখী দুঃখী গলায় জিজ্ঞেস করলো রিমি।

“অবশ্যই উচিত। আমরা সব টিচাররাও এক সঙ্গে যাবো। মিসেস নাজমা ম্যাডামও যাবেন।”

“স্যার আপনি এড্রেস লিখে দেন। যার যার ইচ্ছে হয় স্যারকে দেখতে যাবে।”
বলল রিফাত।

তিনি বোর্ডে হাসপাতাল, ডিপার্টমেন্ট ও কেবিন নাম্বার লিখে দিলেন।
সেদিন বিকেলে বাংলা বিভাগের সব স্যার,ম্যাডামরা মাহমুদ স্যারকে দেখতে গেলেন। স্টুডেন্টরা যে যার মতো গেলো দেখতে। খেয়া ও রিমি ঠিক করেছে তার পরেরদিন যাবে।

কলি এতক্ষণ পিছনে বসে সব শুনেছে। মানবিকবোধ থেকে তারও খুব খারাপ লাগছে স্যারের জন্য। সেও বোর্ড থেকে হাসপাতালের এড্রেস লিখে নিলো খাতার এককোনে।

কলি বাসায় গিয়ে রাতে মাহমুদ স্যারের কথা বলতেই তার বাবা,মা গিয়ে দেখে আসতে বলল। কলি ঠিক করলো পরের দিন ক্লাস শেষ করেই ডাকা মেডিক্যাল যাবে। তারপর বাসায় ফিরবে।

বিকেল পাঁচটা। কলি হাসপাতালে গেলো। তিনতলায় গিয়ে সরাসরি কেবিনে প্রবেশ করলো। শুরুতেই চোখে পড়লো মাঝবয়েসী দুজন নর নারীকে। পাশে বসা একটি মেয়েও রয়েছে। তার সিনিয়র হবে। কলি তাদেরকে সালাম দিলো।

“কে তুমি?”

মাহমুদের বাবা বলল।

মাহফুজা বলল,
“কে আর হবে। তার ছাত্রী হবে। কতজন যে এলো দেখতে। বসো মা।”

কলি দেখতে পেলো মাহমুদ বেডে শোয়া। খেয়া ও রিমি তার পাশে দাঁড়িয়ে। খেয়া বিষাদগ্রস্ত মুখে দাঁড়িয়ে আছে। খেয়া বলল,

“আরেহ কলি তুইও এলি। ভালোই হলো।”

“তোরা কখন এলি?”

কলি জিজ্ঞেস করলো।

“আমরাতো গাড়ি নিয়ে এসেছি। আরো আগেই। তুই বাসে এলি?”

“হুম।”

কলি বিনম্রভাবে বসে আছে বাকি বেডের একপাশে। মাহমুদ কলিকে দেখলো। কিন্তু কথা বলল না। কারো সঙ্গেই সে কথা বলেনি। কথা বলা নিষেধ। এবং পারছেও না। কিছুক্ষন স্যারকে দেখে খেয়া,রিমি চলে গেলো।

কলি বলল,
“তোরা চলে যাচ্ছিস?”

“হ্যা কলি। তুই থাক। আমরা দুজন ত আরো আগেই আসছি। আর কেবিনে একসঙ্গে বেশিমানুষ দেখলে নার্স এসে ঝাড়বে।”

“এটা রাইট খেয়া।”
বলল মাহমুদের ছোটবোন আনুশকা।

খেয়া তাগিদ দিয়ে আনুশকাকে মনে করিয়ে দিলো,
“আপু স্যারকে হরলেক্স ও ফ্রুটসগুলো খাওয়াবেন।”

কলি খালি হাতে গেলো বলে ইতস্ততবোধ করতে লাগলো।
তারা দুজন চলে গেলে আবদুর রহমান বিস্মিত কন্ঠে ছেলেকে বললেন,

“এই মাহমুদ, খেয়া মেয়েটা যে কতকিছু নিয়ে আসলো, ও তোর স্টুডেন্ট?”

“মাহমুদ মুখ নেড়ে ইশারায় বোঝাল ‘হ্যাঁ’। ”

“ওহ! মাশাল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ! এবার বুঝলাম কেন সে এতোকিছু নিয়ে আসলো তোরজন্য। এত কেয়ার করলো। এর সঙ্গেইতো তোর বিয়ে ঠিক করেছি আমি। এই মেয়েই তোর পাত্রী।”

আন্দোলিত কন্ঠে বলল আবদুর রহমান।

মাহমুদ স্তম্ভিত হয়ে কপাল ভাঁজ করে ফেলল। তার আহত মন ও শরীর আরো আহত হয়ে গেলো। দুমড়ে মুচড়ে একাকার হয়ে যাচ্ছে সে ভিতরে।

“ওহ। মাত্রই জানলাম। আপনাকে উষ্ণ অভিনন্দন স্যার। শুভবিবাহ মোবারকবাদ।”

আন্তরিক হেসে সন্তুষ্টি চিত্তে বলল কলি।

চলবে…,
#Romantic #shortstory #shortstorywriter #rপুতুল #romanticsuspense #lovestory #loveshortstoryputul #writer #writing #genre #samajik #Rehana #putul

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে