Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"তোমায় ছোঁয়ার ইচ্ছেতোমায় ছোঁয়ার ইচ্ছে পর্ব-২৫+২৬

তোমায় ছোঁয়ার ইচ্ছে পর্ব-২৫+২৬

#তোমায়_ছোঁয়ার_ইচ্ছে
#পর্ব_২৫
#সুমাইয়া_মনি

ইসানা ফ্যাক্টরি থেকে বেরিয়ে সোজা বাড়ি চলে আসে। সোহানা পিছু নিলে কঁড়া গলায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
বাড়িতে এসে কাপড়চোপড় গুছিয়ে মামা বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হয়। ক্ষণে ক্ষণে রাদের প্রপোজাল তার চোখ জলে ঘোলা করে দিচ্ছে। নিজেকে সামলে বাড়ি থেকে বের হবার সময় টাইসনকে দেখে থামে। চোখেরজল গুলো মুছে কোলে তুলে নেয়। রাদের জন্য ছোট একটি চিরকুট লিখে টাইসনের গলায় বেঁধে দেয়। চলে আসে মামাবাড়ি। এগ্রিমেন্টে সাইন না করলে জবটা আজ ইসানা ছেড়ে দিতো। কিন্তু মামাতো বোনের বিয়ের জন্য তাকে বাধ্যতামূলক জবটি করতে হবে। কাল স্যালারি পেয়েছে। স্যালারির টাকা দিয়েই হলুদের অনুষ্ঠান হবে।
কাল বাদে পরশু গায়ে হলুদ। মামা-মামি, ভাই-বোন’রা খুশি হয় ইসানাকে দেখে। তাদের সঙ্গে আলাপনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ইসানা। এ-প্রান্ত রাদ তার কেবিনে এসে চেয়ারে চোখ বন্ধ করে হেলান দিয়ে বসল। মাথায় তার বিক্ষিপ্ত রাগ চওড়া হয়ে রয়েছে। মুরাদ কেবিনে প্রবেশ করার পর লিসা আসে।
রাদকে জিদ্দিভাবে বসে থাকতে দেখে মুরাদকে ইশারায় জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে? প্রপোজালের বিষয়টি লিসাও জানতো। এতে তার আপত্তি ছিল না। মুরাদ লিসাকে কাছে ডেকে কানে কানে ওপরের ঘটনাটি জানায়। লিসা চোখ পিটপিট করে রাদের পানে তাকায়। এখন সে নিজেও নিরবতা পালন করছে মুরাদের ন্যায়। মুরাদের ফোনে কল আসে। সোহানার কল দেখে পীক করে কেবিন ত্যাগ করে,
‘ইসানা আপু কোথায় গিয়েছে?’
‘বাড়ি গেছে।’
‘ওহ!’
‘রাদের কি খবর?’
‘প্রচণ্ড রেগে আছে।’
‘একা ছেড়ে দেও তাকে। আপনাআপনি ঠিক হয়ে যাবে।’
‘মনে তো হচ্ছে না।’
‘এখন কী করবে? আমার তো মনে হয় না ইসানা রাদের প্রপোজাল কখনো মেনে নিবে।’
‘তাহলে তোমার বলা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।’
‘কী?’
‘জ’ব’র’দ’স্তি!’
সোহানা শুনে চুপ হয়ে রয়। পরক্ষণে মুখ খুলে,
‘আন্টিকে জানাবে না?
_
রাত একটা নাগাদ বাড়ি ফিরে রাদ। রাদকে দেখে টাইসন ছুড়ে আসলে ইগনোর করে রুমের দিকে এগোয়। টাইসন কিছুটা হতাশ হয়। রাদ বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে চোখ বুঁজল।
টাইসন মাথার পাশে বসে। রাদ চোখ খুলে তাকায়৷ টাইসনের গলায় কাগজের টুকরো দেখে হাতে নেয়। সেখানে লিখা ছিল,
‘আমি মামা বাড়ি গেলাম। একদিন আগে যাওয়ার জন্য দুঃখিত!’
রাদ কাগজটি পাশে ফেলে উঠে জামাকাপড় বদলে নেয়। টাইসনকে খাবার দিয়ে ইসানার ওড়নার টুকরোটি হাতে নেয়।
বালিশে মাথা রেখে হাজারটা অভিযোগ করতে থাকে ইসানার বিরুদ্ধে।
‘আমি কী দেখতে অসুন্দর? আমার কী অধিকার নেই ভালোবাসার? বয়সে ভেদাভেদ দেখে আপনি আমাকে রিজেক্ট করেছেন? শুনে রাখুন, এই রাদই আপনার জীবনের এক অংশ হবে। আপনি চাইলেও বাঁধা দিতে পারবেন না। পারবেন না।’ লাস্টেরটুকু আওড়াতে আওড়াতে ঘুমিয়ে যায়।
.
সকালে ঘুমহীন ফুলা ফুলা চোখ নিয়ে ইসানাকে ফুলের দোকানে অর্ডার কনফার্ম করতে আসতে হয়। সেখান থেকে ফিরার পথে রেহানা আনসারীর সঙ্গে দেখা হয়। তাকে দেখা মাত্রই ইসানার দম বন্ধ হবার উপক্রম। ইসানাকে অনুরোধ করে গাড়িতে বসতে বলেন তিনি। তৎক্ষনাৎ না করতে পারল না বিধায় অগ্যত গাড়িতে উঠতে হয় তাকে।
তার গাড়িতে করে ইসানা বাড়ি অব্ধি আসে। ইসানা পুরো রাস্তায় ভীতু হয়ে বসেছিল। কালকের ঘটনাটি তুলে না ধরে বসে এই ভয়ে চুপচাপ ছিল। কিন্তু এমনটি হয়নি। ইসানাকে এবিষয় নিয়ে তিনি কিছু বলেনি। তারমানে বিষয়টি এখনো তার কাছে অজানা! ভেবে ইসানা মৃদু নিশ্বাস নিলো।
ঘন্টাখানেক হলো বাড়ি পৌঁছেছে রেহানা আনসারী। রাদ দৃষ্টি নত রেখে বিছানার ওপর বসে রয়েছে। পাশে টাইসন সহ মুরাদও ছিল। কাল রাতের ঘটনাটি লিসা তাকে জানিয়েছে। এজন্যই হঠাৎ আজ তার ঢাকাতে আসা। তিনি বেশকিছুক্ষণ রাদকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখলো। আগের তুলনায় ছেলের স্বাস্থ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। আরো কিছুক্ষণ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে শান্ত কণ্ঠে বলল,
‘ইসানাকে প্রপোজ করার সাহস কীভাবে হয় তোমার? মনে রাখা উচিত ছিল ইসানা তোমার চেয়ে বয়সে বড়ো এবং ডিভোর্সি!’
রাদ বিনাবাক্যে মায়ের কথা শুনছে। তিনি ফের বললেন,
‘তোমার এ প্রপোজালে আমি আপত্তি না করে পারছি না রাদ।’
রাদ এবার মুখ খুলে। দৃষ্টি অন্যদিকে ফেলে কাঠিন্য স্বরে বলল,
‘আপনার আপত্তিতে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই।’
‘আমার কথা বলা এখনো শেষ হয়নি।’ তেজি স্বরে শুধালেন তিনি।
_
সারাদিন ভাবনায় মসগুল থাকা অবস্থায় দিন কাটে ইসানার। পুরো ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল রেহানা আনসারীকে নিয়ে। তিনি বিষয়টি জেনেছেন কি-না এটা নিয়েই বেশ চিন্তিত। হঠাৎ ঢাকায় আসার পিছনে নিশ্চয় কোনো কারণ রয়েছে।
বাড়ি থেকে আশার পর থেকে রাদ একবারও কল দেয়নি।
নিজেও দেওয়ার সাহস দেখান না।
.
কাপড় ডেলিভারি করা হয় কিছুক্ষণ আগে। রাদ নিজের কেবিনে বসে ছিল। মুরাদ ছুটে এসে রাদকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা জানায়।
‘যে ফ্যাক্টরি থেকে কাপড় ডেলিভারি করা হয়েছে সে-ই ফ্যাক্টরিতে ইভান সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট হিসাবে জব করছে তিনদিন হলো।’
রাদের আদলে রাগের আফা ফুটে উঠলো। দাঁতে দাঁত পিষে বলল,
‘তাকে আমার অফিসে ইনভাইট কর এক্ষুণি। আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাই সরাসরি।’
‘জাস্ট ওয়েট!’
আধাঘন্টা বাদে ইভান রাদের ফ্যাক্টরিতে হাজির হয়। কেবিনে পারমিশন নিয়ে প্রবেশ করে,
‘আসতে পারি স্যার?’
রাদ ইভানের গলার আওয়াজ শুনে গম্ভীর কণ্ঠে ভেতরে আসার নির্দেশ দেয়। ইভান এগিয়ে আসলে রাদ উঠে দাঁড়িয়ে ডেস্কের এপ্রান্তে এসে টেবিলের ওপর বসে দাঁতমুখ খিঁচে বলল,
‘নতুনে কোন ছক এঁকেছেন জানতে পারি মি.ইভান আহমেদ?’
ইভান ক্ষীণ হেসে জবাব দিলো,
‘মানুষ যদি একবার ভুল করে। তাকে দ্বিতীয়বার কেউ সুযোগ দিতে চায় না। এতে ভালো হবার সুযোগ হয়ে উঠে না সে-ই ব্যাক্তির। আমি অন্যায় করেছি। অতীত ভুলে নতুন ভাবে জীবনযাপন করতে চাই। আপনারা যদি আমার অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন, মনে হয় না আমি আপনাদের নিকট ভালো হতে পারব কখনো।’
‘তার মানে আপনি বলতে চাইছেন এখন ভালো হয়ে গেছেন?’ মুরাদ অকপটে বলে উঠলো।
‘জি, চেষ্টা করছি!’
রাদ এগিয়ে এলো তার নিকট। পকেটে এক হাত রেখে গুরুগম্ভীর গলায় বলল,
‘আপনি ভালো হন বা খারাপ থাকেন তার খবর তো আমি নিয়েই ছাড়বো। তবে, আমার প্রিয় জিনিসের ওপর নজর দিলে আপনাকে ছেড়ে দেওয়ার কোনো ওয়ে থাকবে না।’
‘ইসানার কথা বলছেন? সমস্যা নেই। আমি কোনো অধিকার নিয়ে ওর কাছে যাব না। শুধু আমাকে নিয়ে আগের ভুল ধারণা গুলো অন্তর থেকে মুছে ফেলুন। আর আশা করছি ডেলিভারি ক্যান্সেল করবেন না। আমার চেয়ে ফ্যাক্টরির বেশি লোকসান হবে।’
ইভানের শান্ত-ভদ্র ব্যবহার দেখে রাদ ও মুরাদ দু’জনে অবাক হয়। মানুষ যে এত দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে তার চাক্ষুষ সাক্ষী ইভান নিজে! দু’জনের নিরবতা দেখে ইভান নিজ থেকে বলল,
‘আর কিছু বলবেন?’
রাদ উল্টোদিকে ঘুরে দাঁড়ায়। মুরাদ বলল,
‘আপনি আসতে পারেন।’
ইভান বিনাবাক্য ব্যয় করে কেবিন ত্যাগ করল। রাদ চেয়ারে বসে সংশয় বশে মুরাদের পানে চেয়ে বলল,
‘দু’জন লোক’কে নজর রাখতে বল তার ওপর।’
‘ওকে।’
__
রাত পেরিয়ে সকাল হলো। নতুন এক দিনের সূচনা হয়। ইসানার কাজকর্ম শুরু হয়ে যায়। সিমার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছাদে করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। সেখানে ডেকোরেশন করার দায়ভার তার। দশটা বাজে তাদের আসতে বলা হলেও ডেকোরেশনের লোকরা বারোটা নাগাদ উপস্থিত হয়। আপাতত প্লাস্টিকের ফুল দিয়ে ডেকোরেট করছে। বিকেলে তাজা ফুল লাগানো হবে। পরিপূর্ণ ভাবে সাজানো হলে ইসানা একটু স্বস্তি পায়। চেয়ার টেনে বসার পর টুং করে ফোনে মেসেজ আসে। সে ফোন হাতে নিয়ে চেক করল, মেসেজটি রাদের নাম্বার থেকে করা হয়েছে। সেখানে ছোট্ট করে লিখা ছিল ‘স্যরি’। ইসানার আদলে তেমন পরিবর্তন দেখা যায় না। মিনিট কয়েক পর আবার মেসেজ আসল। সে-ই বার্তাতে লিখা ছিল,’প্রপোজ করার জন্য নয়। রূঢ় ব্যবহারের জন্য স্যরি।’
রাগে নাকের পাটা ফুলে উঠে তার। ফোন আনলক করে চুপচাপ বসে রয়।
.
সন্ধ্যার দিকে মেহমানদের আনাগোনা শুরু হয়। ইতিমধ্যে সিমাও পার্লার থেকে চলে এসেছে। ওঁকে স্টেজে বসানো হয়। সুরভী খাতুন ইসানাকে স্টেজের বোগল থেকে টেনে রুমে নিয়ে এলো। তিনি কিঞ্চিৎ রাগী কণ্ঠে বললেন,
‘অবস্থা কি তোর? নিজের দিকে তাকিয়ে দেখ কি পড়ে আছিস তুই?’
‘মামি আমি ওর বড়ো বোন। তার কি সাজগোজ থাকে বলো?’
‘থাকে না কে বলেছে? এক্ষুণি তৈরি হয়ে নে। বাকি কাজ মানিক দেখবে।’
‘মামি আমি চাই না সিমাকে হলুদ দিতে।’
‘ডিভোর্সি তো কি হয়েছে? সমাজের ভণ্ড রেওয়াজ আমি মানি না। আমাদের পরে তুই ওঁকে হলুদ দিবি। দেখবো কে কি বলে।’
‘মামি..’
‘একটা কথাও শুনতে চাই না।’ বলতে বলতে ইসানাকে রুমের ভেতরে রেখে দরজা ভিড়িয়ে দেয়। ইসানা কিঞ্চিৎ বিপদে পড়ে। সরু নিশ্বাস টেনে মামির আদেশ পালন করে। লাল ও হলুদ রং মিশ্রণ একটি গাউন পরিধান করল। চোখে মোটা কাজল, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক পড়ে ফ্রিজ থেকে একটি গোলাপ খোপায় গেঁথে নেয়।
হঠাৎ সেখানে সোহানার আগমন ঘটে। ইসানাকে রেডি হতে দেখে হাসিমুখে এগিয়ে এসে বলল,
‘গলা খালি খালি লাগছে। রাদের নেকলেসটি কোথায়?’
‘পড়বো না।’ অভিমানী স্বরে বলল।
‘নিশ্চয় টলির ভেতরে?’ বলতে দেরি হলেও ইসানার টলি ঘাঁটতে সময় লাগে না। ওপরেই বাক্স সহ পেয়ে যায় নেকলেসটি। ইসানা নিষেধ করার পরও জোরপূর্বক নেকলেসটি গলায় পড়িয়ে দেয়। একটি ছবি ক্লিক করে লুকিয়ে রাদের হোয়াটসঅ্যাপে সেন্ড করে সে।
রাদ তখন গাড়িতেই ছিল। মুরাদকে নিয়ে ইসানাদের মামাবাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে তারা। ইসানার ছবিটি দেখে রাদ মৃদু হাসে। ছবিটি জুম করে অপলক নয়নে দেখে মন জুড়াচ্ছে। অদ্ভুত এক প্রশান্তি অনুভব করে তার হৃদমাঝারে!
.
.
.
#চলবে?

#তোমায়_ছোঁয়ার_ইচ্ছে
#পর্ব_২৬
#সুমাইয়া_মনি

হলুদের অনুষ্ঠান হচ্ছে। একে একে সবাই হলুদ দিচ্ছে সিমাকে। রাদ ও মুরাদ স্টেজের অপর প্রান্তে সোফায় বসে রয়েছে। তার পাশেই বসেছিল রেহানা আনসারী। ইসানা কাল তাকেও নিমন্ত্রণ করেছে। সুরভী খাতুন তাকে সময় দিচ্ছে। দু’জনে খোশগল্পে মসগুল। অন্য পাশে অতিথিদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে কাজকর্ম লিয়াকত আলী ও মানিক সামলাচ্ছে। সিমা স্টেজে বসে ইসানাকে কাছে ডাকে। তার কাছে এগিয়ে গেলে গালে হলুদ লাগিয়ে দেয় মজার ছলে। ইসানা এক চিনটি হলুদ নিয়ে কপালে ছুঁয়ে দেয়। সিমার সঙ্গে সেখানে বসে সুন্দর কিছু ছবি ক্লিক করে। রাদ দূর থেকে ইসানাকে দেখছিল। শেষ বসা থেকে উঠে স্টেজের নিকট এগোয়। রাদকে আসতে দেখে ইসানা উঠতে চাইলে সিমা হাত ধরে বসিয়ে রাখে। আস্তেধীরে নিজেকে ছাড়ার কথা বললেও সিমা ওঁকে ছাড়ে না। রাদ সিমার মুখোমুখি দাঁড়ায়। আলতো ঝুঁকে এক চিমটি হলুদ নিয়ে সিমার কপাল ছোঁয়। পকেট থেকে একটি ডায়মন্ডের রিং বের করে সিমাকে উপহার দেয়। যাওয়ার পূর্বে ইসানার চোখের দিকে চেয়ে মৃদুহেসে বলে,
‘আপনাকে সুন্দর লাগছে!’
ইসানা লজ্জায় নজর সরিয়ে ফেলে। সিমার সামনে বলাতে আরো বেশি লজ্জা অনুভব হয়। ফিসফিস করে সিমা ইসানার কাছে জিজ্ঞেস করে,
‘এটা দুলাভাই নাকি আপু?’
রাগান্বিত চোখে তাকাতেই সিমা ছোট্ট করে জবাব দেয়,’ স্যরি আপু।’
ইসানা স্টেজ থেকে নামে। রাদ, মুরাদ, সোহানা ও রেহানা আনসারী দের ঘরেই খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। একত্রে খেয়ে তারা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। মুরাদ আজ রাদের বাড়িতেই নিশিযাপন করবে। সোহানাকে রেখে দেয় ইসানা। বাড়িতে যেতে দেয় না। রাতে সিমাকে মেহেদী পড়ানো হয়।
বোনের বিয়ের উপলক্ষে ইসানা নিজেও মেহেদী পড়ে দু হাত রাঙিয়ে। গভীর রাত হয়ে যায় মেহেদী লাগাতে লাগাতে।
সিমা ঘুমানোর আগে তার হবু স্বামীর সঙ্গে আলাপন সেরে নেয়। তিনজন একত্রে ঘুমায়। খুব কাছের আত্মীয়-স্বজনরা পাশের রুমটিতে ঘুমিয়েছে।
সকালে সবার আগে ইসানা ঘুম থেকে উঠে। সিমাকে গোসল করিয়ে পার্লারে পাঠায়। এখন তার আর কোনো কাজ নেই। বাকি কাজ সব সেন্টারের লোকদের।
ইসানা কিছুক্ষণের জন্য ফুরসত পেয়ে যায়। কাল রাতের তোলা ছবি গুলো দেখতে থাকে সোহানার ফোনে। তখনই তার ও রাদে পরস্পর দৃষ্টি প্রেক্ষাপটের দৃশ্যটি দেখতে পায় চিত্র আঁকারে। কিছুক্ষণের জন্য ছবিটির পানে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখলেও পরক্ষণে কটমট চোখে তাকায় সোহানার দিকে।
সোহানা বুঝতে পেরে ছোঁ মেরে ফোন নিয়ে নেয়। দাঁত বের করে হেসে কেঁটে পড়ে। ইসানা বড়ো দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।
বাড়ির বাকি কাজকর্ম গুলো সেরে ইসানা রেডি হয়ে সেন্টারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।
একটার দিকে সিমা পার্লার থেকে ফিরে। ওঁকে নিজ হাতে খাইয়ে নিজেও খেয়ে নেয়। ইতিমধ্যে আত্মীয়দের খাওয়াদাওয়া অর্ধেক প্রায় শেষ। বরপক্ষের আসার সময় হয়েছে। ইসানা স্টেজ থেকে নেমে সেন্টারের বাহিরে এসে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। কারণ এখনো রাদ ও মুরাদ আসে নি। রেহানা আনসারী আধা ঘণ্টা হলো এসেছেন। কল দিবে কি দিবে না ভেবে দ্বিধাদ্বন্দে পড়ে যায়। শেষে মুরাদকে কল দিতে উদ্যত হতেই রাদের নাম্বার থেকে কল আসে। ধক করে উঠে ইসানার বুক। সেকেন্ড কয়েক ফোনের স্ক্রিনে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে কল পীক করে।
‘হ্যালো?’
অপর পাশ থেকে গুরুগম্ভীর আওয়াজ ভেসে আসে,
‘গ্রিন গার্ডেন হোটেলের ৩০২ নাম্বার রুমে চলে আসুন।ওয়েটিং ফর ইউ!’ ইসানাকে বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন রেখে দেয় রাদ। ইসানা মিনিট কয়ে চুপ থেকে ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে তিনটা বেজে ছত্রিশ মিনিট। বরপক্ষ আসলো বলে। এই মুহূর্তে সেন্টার ত্যাগ করলে মামা-মামী খুঁজে বেহাল হয়ে যাবে। তবুও রাদের নির্দেশ সে অমান্য করতে চায় না। নেহাৎ তার আন্ডারে কাজ করে বলে। ভেতরে এসে মামিকে বলে বাহিরে এসে দ্রুত রিকশায় চড়ে বসে। রওয়ানা হয় গ্রিন হোটেলের উদ্দেশ্যে।
.
‘রাদ এটা কি আদৌও ঠিক হবে? যেখানে আন্টির কোনো আপত্তি নেই। সেখানে এসব করা অহেতুক!’ মুরাদ সরস স্বরে বলল রাদকে।
‘আমি আমার জেদ এবং কথা রাখতে চাই। যেটা আমি আগেই জানিয়ছিলাম তাকে।’ রুক্ষ ভাষায় বলল রাদ।
‘কথা নয়, জেদ বল। তোর জেদের বশে বড়ো মসিবতে না পড়িস পরে!’
রাদ প্রতিত্তোরে কিছু বলল না। মুরাদ বিরক্ত হয়ে বলল,
‘যা করার কর আমি গেলাম।’ বলে রুম প্রস্থান করল। মুরাদ চলে যাওয়ার তিন মিনিট অতিবাহিত হতেই ইসানা কক্ষে প্রবেশ করে। রাদ তখন সোফায় বসে ছিল। ইসানাকে আপাদমস্তক দেখে নেয়। ব্লু রঙের লেহেঙ্গা সঙ্গে হালকা পরিপাটি সাজসজ্জা আদলে। দেখতে চমৎকার লাগছে।
ইসানা রাদের চোখের পানে চেয়ে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করল,
‘এখানে ডেকে আনার কারণ জানতে পারি কী?’
রাদ তার পাশের টি-টেবিল থেকে একটি পেপার হাতে নিয়ে ইসানার দিকে তুলে ধরে গম্ভীর কণ্ঠে বলে,
‘পেপারটি পড়ে সাইন করে দিন।’
ইসানা হাত থেকে নিয়ে মনোযোগ দিয়ে পেপারগুলো পড়ে। হঠাৎ সে নিজেকে শূন্য অনুভব করে। মাথায় যেন বিশাল বড়ো আকাশ ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। চোখেমুখে ক্রোধ নিয়ে তেজি কণ্ঠে বলল,
‘এসবের মানে কি?’
‘কাবিনের পেপার পড়ে এখনো বুঝতে পারেন নি মানে কী?’
‘নাহ! ক্লিয়ার করে বলুন।’
‘কোট ম্যারেজ হবে আমাদের। সাইন করুন সানা।’
‘অসম্ভব! আপনি কীভাবে ভাবলেন আমি এই পেপারে সাইন করব?’
‘খুব সহজেই বুঝে নিয়েছি। আপনাকে ছোট্ট একটি গল্প বলি। একটি মেয়ের বিয়ে হচ্ছে। বেশ ধুমধাম করে। গায়ে হলুদ শেষ। পরদিন বরপক্ষে আসবে। হঠাৎ জানা গেল বরপক্ষ কোনো কারণে আসবে না। বিয়েটা ক্যান্সেল হয়ে যাবে। তখন বউ সাজ সজ্জিত সেই মেয়েটির কী হবে? সমাজে তার স্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? সবাই তাকে কটুক্তি করবে, অসম্মান করবে। নিচু চোখে দেখবে সে-ই পরিবারকে।’
‘আমাকে কেন বলছেন এসব?’ উগ্র কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল ইসানা।
রাদ ইসানার চোখের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে ক্ষীণ হেসে বলল,
‘সেইম ঘটনা যদি আপনার মামাতো বোনের সঙ্গে ঘটে? অথবা সে-ই পরিবারটি যদি আপনার হয়, তখন?’
ইসানার দম বন্ধ হয়ে আসছে রাদের কথা শুনে। শরীর ঈষৎ কেঁপে উঠে। কাঁপা গলায় ঘনঘন চোখের পলক ফেলে বলল,
‘কী বলতে চাইছেন আপনি?’
‘সিম্পল! যদি পেপারে সাইন না করেন তাহলে সেইম ঘটনা ঘটবে আপনাদের সঙ্গে।’
‘আপনি এভাবে আমাকে ফোর্স করতে পারেন না।’
‘আমি আপনাকে ফোর্স করছি না। জাস্ট যেটা হওয়ার সেটা উল্লেখ করছি সহজ ভাবে।’
চোখের জলে ঘোলাটে হয়ে আসছে চোখ তার। বাকরূদ্ধ সে! বরপক্ষদের দেরিতে আসার পিছনে রাদের কূটকৌশল রয়েছে এটা তার বুঝতে অসুবিধা হয় না। কর্কশ গলায় বলল,
‘আপনি এটা করতে পারেন না।’
‘রাদ কি করতে পারে, সেটা এখনো আপনার অজানা! বরপক্ষ আসে নি তাই না? আসবে বলে মনে হচ্ছে না।’ ঘাড়ে দ্রুত হাত চালিয়ে ক্রুদ্ধ স্বরে বলল রাদ।
ইসানার চোখের জল এইবার গাল বেয়ে পড়ে। ঠোঁট বরাবর আসতেই মুছে নিয়ে অনুরোধ স্বরে বলল,
‘এমনটা করবেন না। আমার ছোট বোনের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে।’
‘করব না। সাইন করে দিন তাহলে!’ দু কাঁধ উঁচু করে বলল সে।
‘আপনার আমার বিয়ে হয় না, হতে পারে না। ঠিক না।’
‘অহেতুক কথাবার্তা শুনতে ইচ্ছুক নই। সাইন করলে, তবেই বরপক্ষের গাড়ি সেন্টারে পৌঁছাবে।’ নাকের পাটা ফুরিয়ে বলল রাদ।
ইসানার চোখ থেকে ঘনঘন জল ঝড়ছে। দৃষ্টি নত রেখে মৌনব্রতে মন দোটানায় পড়ে রয়। ফোনের রিংটোনের শব্দে মৌন্যতা কেটে যায় তার। স্ক্রিনে কলদাতার নাম দেখে নিজেকে স্বাভাবিক বানিয়ে ফোন পীক করে,
‘মামি বলো।’
‘আসছিস না কেন? এখানে তুই নেই, বরপক্ষ’রা আসছে না। তোর মামা অস্থির হয়ে আছে।’ বিচলিত কণ্ঠে বললেন সুরভী খাতুন।
‘আমি আসছি।’ ছোট্ট জবাবে ফোট রেখে দেয়। দৃষ্টি স্থাপন রাখে পেপারের দিকে। অতিরিক্ত কান্না চাপিয়ে রাখায় ঠোঁট কেঁপে উঠে তার। প্রথম বিয়েতে জোরপূর্বক কবুল বলতে হয়েছিল। আর এখন সেটাই হচ্ছে। ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাকে দ্বিতীয় বারের মতো হার মানতে হবে। তার বোনের জন্য! দীর্ঘশ্বাস নিয়ে চোখ বুঁজে নেয় সে। রাদ ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে ছিল বিধায় ইসানার মায়াময় অশ্রুসিক্ত আদল নজরে আসে নি। সে বেশ আটঘাট বেঁধে তবেই নেমেছে। ইসানাকে নিজের করার জে’দ রক্ষার্থে সে যে-কোনো কিছু করতে প্রস্তুত আছে!
গাল বেয়ে আসা অশ্রুটুকু মুছে হাতে কলম তুলে নেয়। কাঁপা হাতে নিজের নামের অক্ষরটি সুস্পষ্টভাবে লিখে দেয়। রাদ নজর তাক করে ইসানার হাতের ওপর। লেখা শেষে ইসানা চলে যেতে উদ্যত হতেই রাদ থামিয়ে ফোন টেবিলের ওপর রেখে এগিয়ে যায়। ইসানার মুখোমুখি হয়ে কোটের পকেট থেকে আংটিটি বের করে অনামিকা আঙুলে পড়িয়ে দেয়। ইসানা নিরব দর্শকের মতো চেয়ে দেখছে। তার বুকের অনুভূত মৃ’ত! আচমকাই যেন তার মৃ’ত্যু ঘটেছে।
রাদ ইসানার আঙুলের ওপর নজর রেখে কোমলভাবে বলল,
‘বলেছিলাম রিজেক্ট করা জিনিসের ওপর ঝোঁক একটু বেশিই আমার। আজ থেকে আপনি আমার লিগ্যাল ওয়াইফ মিসেস.সানা আনসারী। আই এম ইউ’র লিটেল হাসবেন্ড রাদ আনসারী।’
ইসানা চোখ জোড়া শক্ত করে বুঁজে নেয়। পরক্ষণে রাদের পানে ক্রুদ্ধা দৃষ্টি ফেলে বলল,
‘বিয়ে নয়, এটাকে ব’লি’দা’ন বলে। নিজেকে আপনার কাছে ব’লি’দা’ন করেছি।’ হাত ঝামটা দিয়ে সরিয়ে দ্রুত পায়ে প্রস্থান করে। এতক্ষণ কান্না আঁটকে রাখলেও এখন বাঁধভাঙা অশ্রু বর্ষিত হচ্ছে নয়ন জুড়ে। উঁচু স্বরে কাঁদতে কাঁদতে হোটেল থেকে বেরিয়ে যায়। আশেপাশের লোকজন তার দিকে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকালেও এতে তার কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই।
ইসানা সেন্টারে পৌঁছাবার পর পরই বরপক্ষের গাড়ি উদয় হয়। সবাই নতুন জামাইকে বরন করার জন্য এগিয়ে যায়। ইসানা ফাঁকা স্থানে নিরব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তখনকার রেশ এখনো কাঁটেনি। যেন সব দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। কিন্তু নাহ! বাস্তবে ঘটেছে এমন। ছোট বোনের আগে তার বিয়ে হয়েছে। তার চেয়ে দু’বছর কম একটি যুবকের সঙ্গে। কিছুক্ষণ বাদে গেট থেকে সব মেহমান সরে যায়। আগত হয় রাদ। ইসানার ব্লু লেহেঙ্গার সঙ্গে ম্যাচিং করে গর্জিয়াছ পাঞ্জাবি, পায়জামা পড়েছে। তার সুদর্শন লুক দেখে বাকিরা মোহিত হলেও ইসানার অনীহা লাগছে। নজর সরিয়ে নিতেই সোহানা তার পার্শ্বস্থিত দাঁড়ালো। হাসিমুখে বলল,
‘বাহ! রাদকে দেখতে নয়া জামাই, নয়া জামাই লাগছে।’
ইসানার বিতৃষ্ণা চলে আসে জামাই শব্দটিতে। দ্রুত অন্য পাশে সরে দাঁড়ায়। এবং দূর থেকেই তার মামাতো বোনের বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ সচক্ষে দেখে। একটি মেয়ের জীবনে বিয়ে নিয়ে কতশত স্বপ্ন থাকে৷ কিন্তু তার জীবনে বিয়ে নামক শব্দটি বিষের সমতূল্য!
.
.
.
.
#চবলে?

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ