18.8 C
New York
Sunday, October 5, 2025

Buy now







তোমাতে মত্ত আমি পর্ব-০২ + বোনাস পর্ব

#তোমাতে_মত্ত_আমি
#লেখনীতে – #Kazi_Meherin_Nesa
#পর্ব – ০২

ড্রইংরুমের সোফায় আরাম করে বসে ফোনে কিছু একটা করছিলো ফাহাদ, ওর বাবা আবার তখন কাজের উদ্দেশ্যে বাইরে যাচ্ছিলেন। ছেলেকে এসময়ে এখানে দেখে উনি প্রশ্ন করলেন..

“তুমি এখনও রেডি হওনি কেনো?”

“আসলে আব্বু, আমি অনেক ক্লান্ত। বাড়ির বাইরে ছিলাম এতদিন আই সেখানে অনেক কাজের কতো চা’প ছিলো। এক সপ্তাহের জন্যে ছুটিতে আছি। সাতদিন পর থেকে কাজ শুরু করবো”

“এইটুকু কাজেই হা’পি’য়ে গেছো? তাহলে আমাদের বয়সে গিয়ে কি করবে? তখন তো আরো বড় দায়িত্ব সামলাতে হবে”

“তোমাদের বয়সে যেতে অনেক দেরি আছে, ততদিনে সব শিখে যাবো। ইউ নো, সময় সব শিখিয়ে দেয় রাইট?”

“তোমার সাথে ত’র্ক করে আমার শক্তিক্ষয়ের ইচ্ছে নেই, তাহলে যাও আলফাকে কলেজে পৌঁছে দিয়ে এসো। ওর যাওয়ার সময় হয়ে গেছে”

“আমি কেনো যাবো? আই অ্যাম নট হার ড্রাইভার!”

“ওয়াইফকে ড্র’প করে দিলে কেউ ড্রাইভার হয়ে যায়না, তোর আম্মুকেও তো আমি কতো জায়গায় নিয়ে ড্র’প করে দিয়ে আসি এর মানে কি আমি তোর মায়ের ড্রাইভার?”

“আব্বু, আমি সেটা বলিনি। ও তো এতোদিন নিজেই গেছে সেখানে আজ আমার ওর সাথে যাওয়ার কোনো দরকার আছে বলে মনে হয় না। আফটার অল সি ইজ অ্যা’ডা’ল্ট, পথ হা’রি’য়ে যাবেনা যে আমার ওকে নিয়ে যেতে হবে”

“নিজের স্ত্রীর প্রতি এতো উদাসীনতা? ফাহাদ আমি এতদিন ভেবেছিলাম তুমি হয়তো দেশের বাইরে আছো তাই আলফার প্রতি কোনো দায়িত্ব পালন করছো না এখন তো দেখছি..”

“আব্বু, আমি কিন্তু কোনো দায়িত্ব পালনের জন্যে বিয়েটা করিনি। বিয়ের আগেই সব তোমাকে বলে দিয়েছিলাম তাহলে আজ এসব কথা কেনো বলছো? তুমি জানো সব জানোই”

“ফাহাদ! মুখে মুখে ত’র্ক করো না”

বাবা ছেলের এই বা’ক’বি’ত’ণ্ডা আলফার কানে এসেছে, ও তখন যাওয়ার জন্যে বের হচ্ছিলো। তা দেখামাত্রই মিস্টার খান বললেন…

“আলফা, তুমি বাইরে গিয়ে দাড়াও তো। আজ ফাহাদ তোমায় দিয়ে আসবে কলেজে”

“আব্বু, কেনো ফো’র্স করছো আমায়? বললাম তো আমি যাবো না”

“ফাহাদ, যেটা বলছি সেটাই করো”

তখনই আলফা শান্তস্বরে বলে উঠলো..

“আঙ্কেল, আমি নিজেই যেতে পারবো। তাছাড়া গতরাতে আমি নিজের গাড়ি নিয়েই এসেছি, তাই আমাকে কারো ড্র’প করে দিতে হবে না। আমি তো আর বাচ্চা নই যে হা’রি’য়ে যাবো”

“তুমি কি আমাকে শুনিয়ে কথাগুলো বলছো?”

“না তো, আমি শুধু আঙ্কেলের কথার উত্তর দিলাম”

ফাহাদের দিকে একবারও না তাকিয়ে আলফা সোজা চলে যায়, গাড়ির দরজা খুলতেই ফাহাদকে বাইরে আসতে দেখে দাড়িয়ে পড়ে আলফা। ফাহাদ এসে চোখ গ’র’ম করে সামনে দাড়াতেই আলফা বলে..

“আমি তো বললাম তোমাকে যেতে হবে না”

“আমি সে জন্যে বাইরে আসিনি, ইন ফ্যাক্ট যদি কখনো তুমি নিজে থেকেই আমাকে বলো তাও আমি তোমার জন্যে ড্রাইভ করবো না”

“ফাইন! আমি তাহলে আসছি”

“আমি তোমায় যেতে বলিনি”

“আমার কোথাও যেতে তোমার থেকে অনুমতি নেওয়ার দরকার আছে বলে মনে হয় না, ইন ফ্যাক্ট তুমি চাইলেও আমি তোমার থেকে কোনো বিষয়ে অনুমতি নেবো না”

“গুড! কিন্তু তুমি আমার বাবার সামনে ঐভাবে কথা বলবে না। এমনিতেই তোমার জন্যে আমার আর আব্বুর মধ্যে রা’গা’রা’গি হচ্ছে। আব্বু তোমার জন্যে আমায়..”

“যা হচ্ছে তা আপনাদের বাবা ছেলের ব্যাপার, আমার মনে হয় না এতে আমার কোনো দো’ষ আছে যার জন্যে আপনি এভাবে আমায় সা’শা’চ্ছে’ন। আপনার উচিত আঙ্কেলের সঙ্গে কথা বলে সব ফি’ক্স করে নেওয়া”

“অফ কো’র্স তোমার জন্যে হচ্ছে! এখন তো মনে হচ্ছে ভু’ল’টা আমারই হয়েছে। শুরুতে আমিই যদি তোমায় ফোন করে আমার আসার কথাটা বলতাম সেটাই ভালো ছিলো, তখন তোমায় এই বাড়িতে আসতে পরিষ্কারভাবে না করে দিতে পারতাম। তাহলে আব্বু আর আমার মধ্যে এসব ঝা’মে’লা’ও হতো না”

“আমারও এখানে এসে আপনার মুখোমুখি পড়ার কোনো ইচ্ছেই ছিলো না ফাহাদ, যদি জানতাম যে আপনি এখানে আছেন আমি কখনোই আসতাম না”

এরপর আর কথা না বাড়িয়ে নিজ গন্তব্যে চলে যায় আলফা, সকালবেলায় সামান্য একটা বিষয় নিয়েই মুড অফ হয়ে গেলো আলফা ফাহাদ দুজনের। ফাহাদের আ’ফ’সো’স ও নিজে কেনো আলফাকে এই বাড়িতে আসতে বারণ করলো না আর আলফার চি’ন্তা এমন আচরণ তো ফাহাদ রোজ করবে। এমন একটা মানুষের সঙ্গে থাকা কিভাবে সম্ভব হবে?
____________________

আজ কলেজ থেকে একটু আগেই ফিরেছিলো আলফা, তখন ফাহাদ বাড়িতে ছিলো না। আলফার জানতেও ইচ্ছে হয়নি ফাহাদ কোথায় গেছে, গতকাল থেকে ফাহাদের আচরণে হ’তা’শা বাড়ছে মেয়েটার। এভাবে তো আর যাই হোক সংসার করা সম্ভব নয়, কিন্তু বাবাকে কে বোঝাবে? ড্রইংরুমে একা একা বসে এসব ভাবনাতেই মত্ত ছিলো আলফা, তখনই মিসেস খান এসে বসেন ওর পাশে…

“আলফা, কি হয়েছে? একা এভাবে চুপচাপ বসে আছো যে?”

“কিছুনা আন্টি, একটু ক্লা’ন্ত লাগছে তো তাই। আপনি তো একটু পর রাতের খাবার বানাবেন তাইনা? চলুন আমি সাহায্য করি”

“তোমাকে কিছু করতে হবে না, সারাদিন পর বাড়ি ফিরেছো বিশ্রাম করো। রান্নার ঝা’মে’লা আমি সামলে নেবো”

“আন্টি, আপনিও কি আমার আম্মুর মতো ভাবছেন আমি আপনার রান্নাঘরের অবস্থা বে’হা’ল করে দেবো? আমি টুকটাক সাহায্য অন্তত করতে পারবো”

এক গাল হাসলেন মিসেস খান..

“আরে না না, আমি সেটা ভেবে বলিনি। আমাদের ৪ জন মানুষের রান্না মাত্র, আমি একাই পারবো। শুধু শুধু তোমাকে কেনো খা’টা’তে যাবো হুম? তুমি বসো, আমি বরং তোমার জন্যে খাওয়ার কিছু নিয়ে আসি”

“একটু আগেই তো খেলাম আন্টি, এখন আর খিদে পায়নি। আপনি বসুন একটু আমার সাথে”

“হুমম! আচ্ছা ফাহাদের সাথে কি কিছু হয়েছে তোমার?”

ফাহাদের প্রসঙ্গ উঠতেই আলফার মুখের হাসি মিলিয়ে গেলো, মিসেস খানের প্রশ্নের উত্তর স্বরূপ না সূচক মাথা নাড়লো ও..

“ওহ! আসলে কি জানো তো ফাহাদকে ছোটো থেকেই আমরা দুজনে একটু বেশী আদর দিয়ে মাথায় তুলে ফেলেছিলাম। শুধু নিজের পছন্দ ছাড়া বাকি সব বিষয়ে বরাবরই ও উদাসীন। তাছাড়া বিয়ের পর এতদিন তোমরা আলাদা ছিলে তাই ও এমন করছে। আস্তে আস্তে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে”

“কিছু মনে করবেন না আন্টি, কিন্তু অপছন্দের কোনো জিনিসের সাথে সহজে অ্যাডজাস্ট করা যায়না এটা আমি জানি। আমার মনে হয় না আমাদের এই সম্পর্কের কোনো ভবিষ্যত আছে। অবশ্য আমি কোনো আশাও করিনা। আমার মনে হয় আমি আর ফাহাদ দুজনে আলাদাই ভালো থাকবো”

“তুমি কি এখনই হাল ছেড়ে দিতে চাইছো মা? ফাহাদকে তুমি ভুল বুঝোনা। ছেলে হিসেবে ও ভালো শুধু তোমাদের এই সম্পর্কের প্রতি একটু উদাসীন। সময়ের সাথে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে”

মিসেস খানের কথার কোনো উত্তর দিলো না আলফা, এই একই কথা গত ছয় মাসে নিজের মায়ের মুখেও শুনেছে বহুবার তাই এসব কথা শোনার আগ্রহ নেই আলফার। তবে হ্যাঁ মেয়েটা সব ভাগ্য ও সময়ের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রেখেছে যা হবে, তাই মেনে নেবে বলে..
_______________________

ঘড়ির কাঁটা প্রায় বারোটা ছুঁই ছুঁই, কিন্তু ফাহাদের ঘরের টেবিল ল্যাম্প এখনও জ্বলছে। সেই ল্যাম্পের আলোতেই কোনো একটা বইয়ের পাতা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে ব্যস্ত আলফা।

“রাত ১২ টা বাজে! আর কতক্ষন বসে থাকবে ওখানে?”

ফাহাদের ঘুম জড়ানো কন্ঠের কথাগুলো ক’র্ণ’পাত করলো না আলফা, এতে করে ফাহাদ কিছুটা বি’র’ক্ত হলো। ঘুম ঘুম চোখে উঠলো বিছানা থেকে, আলফার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে দেখলো ও কি করছে..

“বই পড়ার আর সময় পেলে না?”

উত্তর দিলো না আলফা, ফাহাদ বইটা উল্টে কভার পেজ দেখে বুঝলো এটা ইতিহাস বিভাগের কোনো একটা বিষয়ের বই..

“ওহ! তুমি তাহলে এই সাবজেক্টের প্রফেসর? তোমার স্টুডেন্টরা সবাই তো তাহলে একেকজন ইতিহাসবিদ”

“আপনি ঘুম থেকে উঠে এলেন কেনো?”

“প্রায় ২ ঘণ্টা আগে আমি ঘুমিয়েছি, তুমি তখন এখানেই বসেছিলে এখনো এখানেই বসে আছো। তাই দেখতে এলাম কি করছো। কোমড়ে ব্য’থা হচ্ছে না তোমার?”

“আমার অভ্যাস আছে”

“কিন্তু আমার তোমাকে এভাবে দেখার অভ্যাস নেই”

“আপনি আমাকে দেখেছেনই বা কয়দিন?”

“গতকাল থেকে তো দেখছি!”

“আচ্ছা, আমার এখানে বসে থাকায় আপনার কোনো স’ম’স্যা হচ্ছে?”

“ইয়েস, তুমি লাইট জ্বা’লিয়ে রেখেছো এটাই আমার মূল স’ম’স্যা”

“টেবিল ল্যাম্পের আলো কম!”

“তাতে কি? কম হলেও তো ঘর আলো হয়ে আছে। গত রাতেও তুমি লাইট অন করে রেখেছিলে তাতে আমার ঘুম ভালোভাবে হয়নি, আজও লাইট অন রেখেছো কেনো?”

“আমি একটা কাজ করছি, দেখতেই তো পাচ্ছেন”

“রাতটা ঘুমানোর জন্যে, কাজের জন্যে সারাদিন রয়েছে। লাইট বন্ধ করো এখন”

আলফা কিছু না বলেই লাইট বন্ধ করে দিলো এরপর সোজা বিছানায়, ফাহাদ কিছুটা অবাক হলো ওর নিরবতা দেখে। ও তো ভেবেছিলো আলফা কিছু বলবে, দুজনের হয়তো আবারো কথা কা’টা’কা’টি হবে। সে হিসেবে তৈরিও হয়েছিলো ফাহাদ কিন্তু আলফা তো কিছুই বললো না! পরদিন সকালে ফাহাদের ছোটো ভাই ফারহান বাড়িতে ফিরেছে ট্যুর থেকে, এসেই আলফাকে বাড়িতে দেখে খুশিতে আটখানা হয়ে গেছে।

“ভাবী! খুব ভালো হয়েছে তুমি এসেছো। তোমার সাথে তো সেভাবে কথা বলারই সুযোগ হয়নি আমার। এখন থেকে সেসব পু’ষি’য়ে নেবো”

“হুম, অবশ্যই! আর তোমার কোনো ব্যাপারে যদি সাহায্য লাগে আমায় বলতে পারো”

“অফ কোর্স বলবো ভাবী!”

ভাবী – দেবরের প্রীতি দেখে হ’তা’শ কন্ঠে ফারহানকে উদ্দেশ্য করে ফাহাদ বলে উঠলো..

“বাহ! চমৎকার! বড় ভাই এতদিন পর বাড়ি ফিরেছে সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। বাড়ি ফিরে একবার আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিস কিছু তুই?”

“ভাইয়া, তুমি আজ হোক বা কাল হোক বাড়ি ফিরবে এটা জানা কথা কিন্তু ভাবী যে ফিরবে এটা আমার জন্যে আনএক্সপেকটেড ছিলো”

“৬ মাস পর বাড়ি ফিরলাম আমি ফারহান! এতোটা সময় পর আমায় দেখে তোর তো কোনো রিয়েকশনই নেই”

ভাইয়ের কথায় পাত্তাই দিলো না ফারহান, সে আলফার সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত। আলফাও বেশ ভালোভাবে ফারহানের সঙ্গে কথা বলছে যা দেখে ফাহাদ কিছুটা অবাকই হয়েছে বটে। ফারহানের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথা আর আমার সঙ্গেই অস্বাভাবিক?! আজ কলেজের যেতে একটু দেরীই হয়েছে আলফার, কলেজে পরীক্ষা নেই আজ তাই গার্ডও নেই তবে ক্লাস আছে। ক্লাস নেবে ও আজ, ক্লাসের শিক্ষার্থীরা সবাই ওকে বেশ পছন্দ করে। আলফাও এখানে আসার পর নতুন অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, সিনিয়র কলিগদের থেকে নতুন কিছু শিখছে। কলেজের শেষে বেরোনোর পথে আলফার ক্লাসের এক ছাত্র ছুটে আসে..

“গুড আফটারনুন ম্যাডাম”

“হুম, গুড আফটারনুন।”

“ম্যাডাম, আপনার অ্যাসাইন্মেন্ট”

হাসিমুখে অ্যাসাইন্মেন্টটা হাতে নেয় আলফা, প্রথম ২-৩ পেজ উল্টে দেখে। ছেলেটার হাতের লিখা বেশ সুন্দর আর প্রেজেন্টেশনও সুন্দর হয়েছে। অ্যাসাইন্মেন্টটা হাতে নিয়েই আলফা প্রশ্ন করলো..

“কি ব্যাপার সাদমান? সবাই যখন জমা দিলো তখন তোমাকে দেখলাম না, ক্লাসে ঠিকমতো না এলে রেজাল্ট খা’রা’প হবে এটা নিশ্চয়ই জানো?”

“সরি ম্যাডাম, এরপর থেকে আপনার ক্লাস আর মিস দেবো না”

আলফা হাঁটা ধরলো, সাদমানও আস্তে আস্তে ওর পেছন পেছন যাচ্ছিলো। হুট করেই বলে উঠলো..

“ম্যাডাম! কিছু যদি মনে না করেন তাহলে একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো?”

পা থামিয়ে সাদমানের দিকে ফিরে তাকালো আলফা..

“কিছু মনে করতে পারি, এমন কিছু নিশ্চয়ই বলবে না?”

“না না ম্যাডাম, বিষয়টা একটু ব্যক্তিগত হতে পারে তাই আর কি জিজ্ঞাসা করলাম”

“বলো”

“আর ইউ…”

সঙ্গে সঙ্গেই ফোন বেজে উঠলো আলফার, আলফা কল রিসিভ করলো। সাদমানের পুরো কথা আর শোনা হলো না, যাওয়ার সময় আলফা বলে গেলো…

“সাদমান, কাল থেকে রেগুলার ক্লাস করবে নাহলে অ্যাসাইন্মেন্টট বা এক্সামের খাতা কোনোটাতেই আমার থেকে বেটার নাম্বার আশা করো না”

আলফার যাওয়ার পানে চেয়ে দী’র্ঘ’শ্বা’স ফেললো সাদমান, আজও জানা হলো না। আলফা কলেজে নতুন হওয়ায় ওর সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানতে পারেনি সাদমান কিন্তু আলফার প্রতি বেশ ইন্টারেস্ট ওর। তাই ভেবেছিলো আজ সরাসরি একটু কথা বলতে কিন্তু সেটা আর হলো কই? আবারো কোনো এক সময় সুযোগের অপেক্ষায় রইলো সাদমান।
_______________________

ফাহাদ নিজের আলমারিতে আলফাকে ড্রেস রাখার জায়গা দেয়নি ঠিকই তবে কাবার্ড খালি করে দিয়েছে। আলফা সেখানেই নিজের জামাকাপড় গুছিয়ে রাখছে। এরই মাঝে ফাহাদ কোত্থেকে যেনো এসে গায়ের টি শার্ট খুলে আলমারির সামনে গেলো। ফাহাদের এ কা’ন্ড দেখে আলফা থ’ত’ম’ত খে’য়ে বলে উঠলো..

“আরেহ, ফাহাদ! কি করছেন আপনি?”

“ওহ! তুমি এখানে আছো? সরি, খেয়াল করিনি”

“একটা মেয়ের সামনে এভাবে হুটহাট গা খালি করতে ল’জ্জা করেনা আপনার?”

“ল’জ্জা’র কি আছে? তুমি সবসময়ই তো এখন থেকে এখান থেকে থাকবে। এখন তোমার করা ভেবে সবসময় একটা শার্ট পড়ার জন্যে ওয়াশরুমে যেতে পারবো না আমি!”

“অন্তত রুমে নক করে আসবেন, তাহলে আমি বেরিয়ে যেতাম। এরপর আপনি ফাঁকা ঘরে বসে শার্ট কেনো সব খুলে ফেলুন সেসব অন্তত আমার নজরে পড়বে না”

আলমারি থেকে একটা টি শার্ট নিয়ে কাধের ওপর রেখে আলফার দিকে কয়েক পা এগিয়ে এলো ফাহাদ, আলফা নিজের জায়গা থেকে সরেনি শুধু চোখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নিয়েছে…

“তুমি আমাকে এভাবে দেখার অভ্যাস করে নাও, কারণ নিজের রুমে নক করে অন্তত আমি আসতে পারবো না”

“রুমটা আপনার একার না”

ফাহাদ আরো একটু এগিয়ে এলো, ফাহাদের এতোটা নিকটে আসায় আলফা কিছুটা অ’স্ব’স্তি’বোধ করছে তবে বুঝতে দিলো না। আলফাকে এখনও নিজ জায়গায় অটল দেখে হাসলো ফাহাদ…

“ওয়াও, আমার এতো কাছে আসাতেও দেখছি তোমার কোনো রিয়েকশন নেই। আই লাইক দিজ!”

এবার ফাহাদের দিকে তাকালো আলফা, ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি এনে বললো..

“সামনে দাড়ানো মানুষ বা জিনিসের প্রতি রা’গ বা ঘৃ’না এই দুটোর কোনো একটা অনুভুতি যখন কাজ করে তখন রিয়েকশন আপনাআপনিই চলে আসে। কিন্তু আপনার প্রতি তো আমার কোনো অনুভূতি নেই তাই রিয়েকশনের প্রশ্নই আসেনা”

আলফার এহেন কথায় থ মে’রে গেলো ফাহাদ, আলফা যে এমন কিছু বলবে ভাবতেই পারেনি। কথাগুলো ওর কাছে অ’প’মা’নে’র থেকে কোনো অংশে কম লাগলো না, এই দুদিনে আলফা কে যাও একটু মেনে নিয়েছিলো কিন্তু এমন কথা শোনার পর ফাহাদের মেজাজ আরও বি’গ’ড়ে গেলো

চলবে….

#তোমাতে_মত্ত_আমি
#লেখনীতে – #Kazi_Meherin_Nesa
#বোনাস_পর্ব

সন্ধ্যার নাস্তায় আজ পুরো পরিবার একসঙ্গে বসেছে, আজ আলফা প্রথমবারের মতো সবার জন্যে চা – নাস্তা বানিয়েছে। সকলেই প্রশংসা করেছে শুধু একজন বাদে। তার ভাষ্যমতে, চা অতোটাও ভালো হয়নি। ফাহাদের এহেন কথা শুনে ছেলের পিঠে আলতো করে চাপড় মা’র’লে’ন মিসেস খান..

“কেনো শুধু শুধু মি’থ্যে বলছিস? চা টা তো অনেক ভালো হয়েছে”

“আম্মু! এর থেকে ভালো চা আমি বানাতে পারি”

ছেলের কথায় হেসে উঠলেন মিস্টার খান..

“তাই নাকি ফাহাদ? তুমি তো চুলাই জ্বা’লা’তে পারো না আবার চা করা শিখলে কিভাবে?”

“আব্বু, ছয় মাস আমি একা থেকেছি। সব আমাকেই করতে হয়েছে ওখানে। চা বানানোও ভালোই শিখেছি”

“আচ্ছা, এতো কথার কিছুই নেই। ফাহাদ, তাহলে এক কাজ কর। তুই একদিন আমাদের সবাইকে চা নাস্তা বানিয়ে খাওয়া। তাহলে বুঝবো কতো ভালো শিখেছিস”

“আম্মু! তুমি কি চ্যা’লে’ঞ্জ করছো আমায়? ফাইন! চ্যা’লে’ঞ্জ অ্যাকসেপ্ট করলাম কিন্তু আলফার থেকে যদি বেটার চা বানাতে পারি তাহলে কি লাভ হবে আমার?”

“ভাইয়া! তুমি এতো সি’রি’য়া’স কেনো হচ্ছো? আম্মু আব্বু তো মজা করে বললো তোমাকে আর তুমি কিনা একেবারে সি’রি’য়া’স হয়ে গেলে?”

“অবশ্যই আমায় সি’রি’য়া’স হতে হবে ফারহান, আমাকে আলফার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে সেটা দেখছিস না? আমি অন্তত চা বানানোর মতো সামান্য বিষয়ে কারো কাছে হা’র’তে চাইনা”

কথাগুলো ফাহাদ আলফার দিকে তাকিয়েই বলেছে, আলফা ভ্রু কুঁচকে নিলো। তিলকে এভাবে তাল বানানোর মানে কি বুঝলো না। ফাহাদ যেনো দিনদিন সবকিছু এক র’ণ’ক্ষে’ত্র বানিয়ে ফেলছে যেখানে আলফা ওর বিপরীতে থাকা কোনো শ’ত্রু এবং ওকে প’রা’জি’ত করাই ফাহাদের একমাত্র উদ্দেশ্য! রোজকার মতন আজও রাতে বারান্দায় বসে আছে আলফা, এই বাড়িতে এই একটাই জায়গা আছে যেখানে দু দ’ণ্ড বসলে আলফা কিছুটা শান্তি পায়। আজ রাতে রুমে কোনো বাতিই জ্বা’লা’য়’নি, কারণ ফাহাদের অ’ভি’যো’গ গুলো শুনতে শুনতে এখনই প্রায় উঠেছে। আর ভালো লাগছেনা আলফার। অনেকক্ষণ বারান্দায় ছিলো আলফা, শি’র’শি’রে হাওয়া বইছে আর তা গায়ে লাগতে লাগতে প্রায় চোখে ঘুম চলে এসেছে। রুমে চলে আসে আলফা, বিছানার সামনে যেতেই চোখে পড়লো যে কানে ইয়ারফোন গুঁজেই ঘুমিয়েছে পড়েছে ফাহাদ। আলফা আস্তে করে ইয়ারফোন খুলে গুছিয়ে রাখলো সাইড টেবিলের ওপর। ফাহাদ গভীর ঘুমে ম’গ্ন আর আলফা ফাহাদকে দেখতে। মিনিট দুয়েক সময় নিয়ে ফাহাদের বদনখানি পর্যবেক্ষণ করলো। তারপর? কি জানি কি হলো! হঠাৎই ঘুমন্ত এই পুরুষটিকে একটু ছুঁ’য়ে দেওয়ার ইচ্ছে জাগলো আলফার মনে। ইচ্ছেটাকে চে’পে রাখলো না মেয়েটা, আলতো হাতে ছুঁ’য়ে দিলো ফাহাদের গাল। ঘুমের মধ্যে ফাহাদ একটু নড়ে উঠতেই দ্রুত হাত সরিয়ে অন্যপাশে ঘুরে গেলো আলফা। কয়েক মুহূর্তের জন্য হয়তো এই পুরুষটির প্রতি দু’র্ব’ল হয়ে পড়েছিল মেয়েটা, এরপর নিজেকে বেশ ভালোভাবে বোঝালো..এই পুরুষটির প্রতি দূ’র্ব’ল হওয়া যাবেনা, কিছুতেই না।
______________________

আজ অফিসে যাবে ফাহাদ তাই সকালেই সব প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে। অফিসের জন্যে বেরিয়েও গেছিলো কিন্তু ফোন রেখে যাওয়ায় আবার ঘুরে রুমে আসতে হয়েছে। কিন্তু দরজার সামনে এসে দাড়াতেই নিজের থেকে কয়েক হাত দূরে দাড়ানো রমণীর দিকে তাকাতেই চোখ আ’ট’কে গেলো। বেগুনী রঙের শাড়িটায় আলফাকে যে কি ভীষন মানিয়েছে তা হয়তো ফাহাদ টের পেয়েই থ’ম’কে গেছে, হঠাৎ অনুভব করলো বুকের ভেতর যেনো কোনো এক ঢেউ খেলে গেলো। এরপর! হাত খোঁপা করায় ব্যস্ত থাকা আলফাকে দেখে বুকের ভেতর যেনো আরেকদফা তো’ল’পা’ড় হলো ফাহাদের। কি অদ্ভুত! এই মেয়েটা তো এক কথায় শ’ত্রু, তাহলে তাকে চোখের সামনে দেখে এমন অনুভব হওয়ার কি মানে? ভেবে পেলো না ফাহাদ। খোঁপা বা’ধা শেষে আলফা ঘুরে তাকাতেই খানিকটা থ’ত’ম’ত খেয়ে উঠলো ফাহাদ, গলা ঝে’ড়ে বলে উঠলো..

“এই শাড়িতে তোমায় ঠিক মানাচ্ছে না”

“তাতে আমি কি করতে পারি?”

আলফা বিশেষ পাত্তা দিলো না ফাহাদের কথার, ফোনটা হাতে নিয়ে ব্যাগ কাধে তুলে নিলো। দরজার সামনে আসার পরও ফাহাদ সরেনি, ওখানেই দাড়িয়ে আছে!

“এভাবে সামনে এসে দাড়িয়ে আছেন কেনো?”

“আশেপাশে আরো জায়গা আছে। ত..তুমি আমার সামনে এসেই দাড়িয়ে পড়লে কেনো?”

দরজার ঠিক সামনে দাড়িয়ে ফাহাদ এ কথা কোন আ’ক্কে’লে বলছে ভেবে পেলো না আলফা, পরক্ষণেই কিছু একটা ভেবে বলে উঠলো..

“ওহ! আমি তো ভুলেই গেছিলাম। রোজ সকাল সকাল আমার সঙ্গে একটা ঝামেলা না বাঁ’ধা’লে তো আপনার আবার ভালো লাগেনা”

“এক্সকিউজ মি! আমি ঝা’মে’লা করি?”

“করছেনই তো। অফিসের জন্যে বেরিয়ে গেছিলেন, কিন্তু এইযে দেখুন ঘুরে চলে এসেছেন”

আলফার কথা শুনেই রুমের ভেতর ঢু’ক’লো ফাহাদ, বিছানার ওপর থেকে ফোনটা হাতে তুলে দেখিয়ে বললো..

“ফোন নিতে এসেছিলাম আমি, আমার কাছে তুমি এত্তো ইম্পর্ট্যান্ট নও যে অফিসে যাওয়ার জন্যে বেরিয়ে আবার ঘুরে আসবো তোমার সঙ্গে ঝ’গ’ড়া করতে”

আলফা কিছু না বলেই বেরিয়ে যাচ্ছিলো তখন..

“মনে রেখো আলফা, আমার কাছে তোমার ইম্পর্টেনস টোটালি জি’রো। কখনো কিছু এক্সপেক্ট করো না আমার থেকে”

“আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন ফাহাদ, আমি প্রথমদিনই জানিয়েছি। আপনার থেকে বা এই সম্পর্কের থেকে আমার এক্সপেকটেশন ও টোটাল জি’রো”

কথাগুলো বলেই দ্রুত পায়ে বেরিয়ে গেছে আলফা, ফাহাদের দিকে ফিরে তাকায়নি। আসলে ফাহাদের কথা শোনার পর ইচ্ছেই হয়নি!
________________________

বান্ধবীর সঙ্গে কফিশপে বসে আছে আলফা, আজ বহুদিন পর নিজের প্রিয় বান্ধবীর সঙ্গে দেখা হলো..

“তুই যে শ্বশুরবাড়ি গেছিস আমায় বললি না কেনো? সেদিন যে আমি ফোন করেছিলাম তখন তো তুই ওখানেই ছিলি তাইনা?”

হ্যাঁ সূচক মাথা নে’ড়ে কফি কাপে চুমুক দিলো আলফা..

“আচ্ছা! যাই হোক, তোর হাসবেন্ড তো ফিরেছে। এখন তোদের মধ্যে সব ঠিক হয়ে গেছে?”

“আমাদের মধ্যে যা আছে সবই স’ম’স্যা, কিছু ঠিক হবার নেই। ফাহাদের আমার প্রতি কোনো ই’ন্টা’রে’স্ট নেই আর আমারও না”

“মানে? কিছুই ঠিক হয়নি এখনও? তাহলে একসাথে অ্যাডজাস্ট কিভাবে করছিস?”

“ঠিক হবার মতো সম্পর্ক আমাদের নেই, তবে অ্যাডজাস্টমেন্ট এর চেষ্টা করছি। জানিনা কতদিন অব্দি এই চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারবো”

“সারাজীবন শুধু অ্যাডজাস্ট করেই পার করবি নাকি? এভাবে তো আর সংসার হয় না”

“সংসার? সংসার শুরু হয় সম্পর্ক থেকেই কিন্তু আমাদের সম্পর্কই তো ন’ড়’ব’ড়ে। আমরা শুধু একসঙ্গে একই ছাদের তলায় আছি মাত্র, একে আর যাই হোক অন্তত সংসার বলেনা”

আলফার কথার কি উত্তর দেবে ভেবে পেলো না জারা, শুধু এইটুকু বুঝলো যে মেয়েটা হয়তো ফ্যামিলির চা’প ও নিজ সম্পর্কের অ্যাডজাস্টমেন্টের মাঝে পি’ষে যাচ্ছে…
________________________

সেদিনের পর প্রায় মাস খানেক কে’টে গেছে, সবটা আগের মতোই। অ্যাডজাস্টমেন্টে কোনোরকম দিন পার করছে আলফা । এর মধ্যে একবারও আলফার বাবা ওকে ও বাড়ি যেতে বলেনি, যদিও ওর মা অনেকবার বলেছিলো কিন্তু আলফা আর যায়নি। আজ কলেজে নিজের গাড়ি নিয়ে আলফা, তাই ট্যাক্সিতে বাড়ি ফিরবে বলে ঠিক করলো। কলেজ থেকে বেরিয়ে একটু সামনে এগোতেই ফাহাদকে দেখে বেশ অবাক হয় আলফা, আজ যেনো বেশ তৈরি হয়েই এসেছে। নেভি ব্লু রঙের শার্টটায় বেশ মানিয়েছে শ্যামবর্ণের পুরুষটিকে, যার জন্যে শত রা’গ ঘৃ’না থাকা সত্বেও কয়েক মুহূর্তের জন্যে চোখ আটকে গেছিলো আলফার..

“আপনি এখানে কি করছেন?”

হেলানরত অবস্থা থেকে সোজা হয়ে দাড়ালো ফাহাদ..

“কলেজে দেখলাম বেশ সুন্দরী মেয়ে আছে, তোমার মতো অ্যাভারেজ একজনকে এই সুন্দরী মেয়েদের টিচার হিসেবে ঠিক মানতে পারলাম না”

“আপনি কি এখানে মেয়ে দেখতে এসেছেন?”

“আরে নাহ, তোমার কলেজে যা দেখলাম সবই তো বাচ্চা বাচ্চা মেয়ে। আমি এতোটাও সৌন্দর্য পি’পা’সু নই যে হাঁটুর বয়সী মেয়েদের দিকে নজর দেবো”

“তাহলে কি করতে এসেছেন?”

“তোমার বাড়ি থেকে ডিনারের জন্যে ইনভাইট করা হয়েছে, সেখানে আমাদের দুজনকে একসঙ্গে যেতে হবে”

“আমার বাসা থেকে? কে ইনভাইট করলো? আম্মু?”

“না, তোমার আব্বু আমাকে ফোন করেছিলো”

বাবার কথা শুনে আলফা দীর্ঘশ্বাস ফেললো, নিজের মেয়েকে নয় বরং মেয়ের জামাইকে ফোন করে দাওয়াত দিয়েছে বিষয়টা আলফার একটু খা’রা’প’ই লাগলো বটে। ডিনারের কথা শুনে নিজের হাতঘড়িতে নজর বুলালো আলফা, ঘড়ির কাঁ’টা জানান দিচ্ছে এখন বিকেল চারটা বাজে..

“বিকেল ৪ টা বাজে মাত্র, এখন কি ডিনার টাইম?”

“নাহ! তবে আমার একটা জায়গায় যাওয়ার আছে। তাই আগেই বেরিয়েছি”

“ঠিক আছে। আমি রেডি থাকবো। ডিনার টাইম যখন হবে তখন না হয় আমরা যাবো, এখন আমি বাড়ি চলে যাচ্ছি আপনার যেখানে যাওয়ার আছে যেতে পারেন”

আলফা যাওয়ার জন্যে পা বাড়াতেই ফাহাদ বাঁ’ধা দিয়ে বলে..

“আমি নয়, আমরা যাবো!”

“আমি কেনো আপনার সাথে যাবো?”

ফাহাদ কোনো উত্তর না দিয়ে টে’নে গাড়িতে বসালো আলফাকে, এদিকে আলফা প্রশ্ন করেই যাচ্ছে কোথায় যাবে কিন্তু ফাহাদ উত্তরই দিলো না। প্রায় আধ ঘণ্টা পর একটি বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামলো। এই বাড়িতে যে আজ কারো বিয়ে হচ্ছে তা বাড়ির সামনে টাঙানো বর – বধূর নামের বোর্ড দেখে বুঝলো আলফা..

“এ তো একটা বিয়ে বাড়ি, আপনাদের কোনো আত্মীয়র বিয়ে আছে নাকি আজ?”

“আত্মীয় নয়, তবে ভীষন পরিচিত একজনের বিয়ে এখানে”

“আ’জ’ব তো! তাহলে শুধু শুধু আমায় নিয়ে এসেছেন কেনো এখানে? আপনার চেনা কারো বিয়েতে আমাকে সঙ্গে আনার কোনো মানেই হয় না”

“মানে আছে! কারণ আজ আমি এখানে তোমাকে দেখানোর জন্যে এনেছি”

“আমি কোনো বস্তু নই যে এভাবে আমায় বয়ে নিয়ে আসবেন কাউকে দেখানোর জন্যে”

“এখানে অনেক মানুষ আছে আলফা, আমাদের ঝা’মে’লা’টা না হয় আমরা বাড়ি গিয়ে কন্টিনিউ করবো? এখানে নয়!”

ফাহাদের কথাটা যুক্তিসঙ্গত বলেই আর কথা বাড়ালো না আলফা..

“কাকে দেখাবেন আমায়?”

“যার বিয়ে”

“হে’য়া’লি ছাড়ুন তো! কার বিয়ে হচ্ছে এখানে?”

“আমার প্রা’ক্ত’ন প্রেমিকার!”

চলবে….

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......

Related Articles

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Stay Connected

20,625ভক্তমত
3,633অনুগামিবৃন্দঅনুসরণ করা
0গ্রাহকদেরসাবস্ক্রাইব
- Advertisement -spot_img

Latest Articles