#তোমাতে_বিলীন_হবো
#Tahsina_Arini
#পর্ব_২৮
(অনুমতি ব্যতীত কপি নিষিদ্ধ)
তনন, তাহসী ওরা কথা বলার মাঝেই হঠাৎ ওদের উপর কিছু পড়তে থাকলো। দুজনে খেয়াল করে দেখলো পার্টি স্প্রে। তাহসী চেপে গেল তননের দিকে। তননের সব বন্ধুরা রয়েছে, সাত-আটজন। সবাই একসাথে তননের বার্থডে উইশ করলো। তনন সবাইকে ধন্যবাদ জানালো হাসি মুখে। তাহসী তখন একপাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে।
তননের এক বন্ধু বলল,
-“ভাবী ও আছেন দেখছি।”
তাহসী মৃদু হাসলো। এত ছেলের মাঝে তার অস্বস্তি লাগছে। তনন তাহসীর দিকে এক পলক দেখে বললো,
-“তোরা থাক। আমি ওকে দিয়ে আসছি।”
-“কেন? ভাবী ও থাক। তুই তো ভাবীর সাথে ভালো করে পরিচয় করিয়ে দিলি না!”
অগত্যা সবার জন্য তাহসী কে ভিতরে যেতে হলো। তাহসী তনন কে খুঁচিয়ে যাচ্ছে এখানে থাকবে না জন্য। তনন অসহায় চাহনিতে তাকাচ্ছে। একসময় তাহসী ফিসফিস করে বললো,
-“তুই না বললে ওরা এমনিতেই জানছে তুই এখানে?”
-“আরে মিট করার কথা ছিল আমার। এটা আমার এক ফ্রেন্ড মানে ওইযে রায়ান, ওর বাবার রেস্টুরেন্ট। তো ওরা এখানেই মিট করতে চাইলো। আমি ভেবেছি আমি তোমাকে দিয়ে আসবো এর মধ্যে। কিন্তু ওরা আগেই এসে গেছে।”
কেকের কথা উঠতেই তাহসী সবার মাঝে কথা বলবে কিনা বুঝে উঠতে পারলো না। এমনিতেও এতক্ষণ ধরে সে চুপ করেই আছে। রিয়ান ওয়েটার কে কেক আনতে বললেই তাহসী তননকে খুঁচিয়ে বললো,
-“কেক কাটবে নাকি এখন! এটা তো ইসলাম বহির্ভূত তনন।”
তননের এক বন্ধু মাহিন ওদেরকে লক্ষ করে বললো,
-“ভাবী আস্তে করে কি বলছেন? আমাদের সবার সামনেই বলেন যেহেতু আমরাও আছি।”
সবাই হেসে উঠল। তাহসী তননের দিকে তাকালে তনন আশ্বস্ত করলো। তাহসী গলা ঝেড়ে বললো,
-“কেক কাটা তো ইসলাম ধর্মে নেই। এটা তো খ্রিষ্টান ধর্মের রীতি। তো আমাদের কেক কাটা উচিত নয়?”
সবাই একটু চুপ থাকলো। রিয়ান বললো,
-“তো কাটবো না! আমরা তো খ্রিষ্টান ধর্মের রীতি অনুযায়ী কাটি না। বার্থডে উপলক্ষে করা হয়!খুশির জন্য।”
-“কিন্তু বার্থডে আসা মানে জীবন থেকে একটা বছর চলে যাওয়া। আমাদের জীবন মৃত্যু নির্ধারিত আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে। এটা তো আপনারা সবাই জানেন তাই না? আশা করি মানেন ও। আর আমার নির্ধারিত সময় থেকে একটা বছর চলে যাচ্ছে,এটা কি সুখের হলো? তো বলা যায় এটা দুঃখের তবে যদি কেউ আল্লাহ তায়ালার আদেশ নিষেধ অনুযায়ী না চলে। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) উনার বার্থডে তে রোজা রাখতেন। আমরা বরং কেক না কেটে এটা করতে পারি। কেক, পার্টি না করে সেই টাকাই যারা খেতে পায় না,তাদের খাওয়াতে পারি।”
দুই একজন চোখ মুখ কুঁচকে তাকালো। তাহসী ঠিক ই বুঝলো এদের পছন্দ হয়নি কথা গুলো। তবে বাকিগুলো সায় জানালো।
শেষ পর্যন্ত কেক কাটা হলো না। বন্ধুরা মিলে তননকে গিফট দিলো। তনন সবাইকে বিরিয়ানি খাওয়ালো। কিন্তু রিয়ান কোনোভাবেই তননকে পেইমেন্ট দিতে দিল না।
মাহিন বললো,
-“তো তনন ভাবী তোকে কি গিফট দিলো?”
তনন তাহসীর দিকে এক পলক তাকিয়ে দেখে বললো,
-“বাইক!”
তননের আরেক বন্ধু বললো,
-“ভাবী তো ফা’টি’য়ে দিছেন।”
তনন বললো,
-“আচ্ছা তোরা থাক। আমি এবার তাহসী কে নিয়ে যাই। অনেকটা রাত হয়ে গেছে।”
-“সব নয়টা বাজে। এটা অনেকটা রাত?”
-“তোদের কাছে না। তোদের কাছে তো রাত বারোটাও ম্যাটার না। আচ্ছা তোরা থাক। আমি ওকে দিয়ে আসছি।”
রিয়ান বললো,
-“না,আসা লাগবে না তোর। আমারও আজ একটা কাজ আছে।”
তনন সবাইকে বিদায় জানিয়ে চলে গেল তাহসী কে নিয়ে। তাহসী বাইক থেকে নেমে তননের সামনে দাঁড়ালো। তনন জিজ্ঞাসা সূচক চাহনিতে তাকালো। তাহসী মুচকি হেসে লজ্জা নিয়ে বললো,
-“এত সুন্দর মুহূর্ত আমাকে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।”
তননের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
-“তবে তুমি তো আমাকে দাওনি। ওটা বাইক থেকেও দামী ছিল।”
তাহসী মন খারাপ করে জানতে চাইলো কি। তনন তাহসীর কানের কাছে মুখ এগিয়ে নিয়ে বললো,
-“কি’স! তবে হ্যা কাল সব উসুল করে নিবো।”
তাহসী তননকে আলতো ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বাসার মধ্যে ঢুকে গেল। তনন হাসতে হাসতে বাইক নিয়ে চলে গেল।
🍁🍁🍁
পরদিন তাহসী যেয়ে হাজির হলো বুয়েটের ক্যাম্পাসে। তননকে ফোন দিলে তনন ধরলো না। তাহসী তননকে এসএমএস দিয়ে ক্যান্টিনে যেয়ে বসলো। তনন সম্ভবত ক্লাসে এ রয়েছে এখনো। কাল রাতে এটাই ঠিক হয়েছিল দু’জনের মধ্যে যে তাহসী এখানে আসবে। এখান থেকে একবারে দুজন বাস স্ট্যান্ডে যাবে।
কিছুক্ষণ বাদে তনন আসলো। তননকে দেখে তাহসী উঠে দাঁড়ালো। তনন বললো,
-“বসো । এখনো এক ঘন্টা সময় বাকি। নাস্তা করে যাই।”
তননের কথাতে তাহসী আবার বসলো। তনন বার্গার আর জুস অর্ডার করলো। খেতে খেতে বললো,
-“বাইক নিয়ে চিন্তায় আছি। মেসে ফেলে যাওয়া কেমন দেখায়!”
তাহসী বললো,
-” হুম আসলেই।”
খানিক থেমে তাহসী বললো,
-“ভাইয়া যে বাসাতে ওখানে রেখেই তো যাওয়া যায় তাই না? এবার বলো না যে এটাও তোমার ইগোতে লাগবে!”
তনন কিছুক্ষণ পর সম্মতি জানিয়ে বললো,
-“রিস্ক নেওয়ার থেকে এটাই ভালো।”
তাহসী বললো,
-“তাহলে বসে আছো কেন? বাইক নিয়ে ভাইয়ার ওখানে রেখে আসো। সময়-ও তো নেই।”
তনন বলে উঠলো,
-“সময় পাবো? জ্যাম লাগলে তো শেষ!”
তাহসী বললো,
-” দাঁড়াও ভাইয়াকে ফোন দিই।”
তাহসী একটু কথা বলে ফোন তননের দিকে এগিয়ে দিয়ে ইশারায় কথা বলতে বললো। তনন কথা শেষ করে তাহসীকে ফোন ফিরিয়ে দিয়ে বললো,
-“এটা ঠিক হলো না। ভাইয়া বলছে আমাদের চলে যেতে। ভাইয়া অফিস থেকে যাওয়ার পথে নিয়ে যাবে।”
-“ব্যাপারটা কেমন ই তবে ভালো হবে।”
-“একটা চান্স নিবো?”
-“এখান থেকে মেস, মেস থেকে ভাইয়ার বাসা, সেখান থেকে বাস স্ট্যান্ড! আর ভাইয়া নেই, বাসায়। তো বললেই তো আর দারোয়ান গ্যারেজে বাইক রাখতে দিবে না!”
-“হুম। ভাইয়াকে কষ্ট দেওয়া।”
-“খাওয়া শেষ।”
-“হুম। চলো।”
_________
সেলিনা শেখ তনন, তাহসী দুজনকে দেখে অবাক হলেন। সেলিনা শেখ রাগ দেখিয়ে বললেন,
-“তনন তুই নাকি আসতে পারবি না!”
-“মেনেজ করে আসতে হলো। দেখো তোমার বউমা কেউ নিয়ে আসছি।”
-” দুইজন ফ্রেশ হও রুমে যেয়ে।”
চলবে ইনশাআল্লাহ;
#তোমাতে_বিলীন_হবো
#Tahsina_Arini
#পর্ব_২৯
(অনুমতি ব্যতীত কপি নিষিদ্ধ)
রাত এগারোটা বাজে তখন। তাহসী তননের রুমের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে বাইরে দেখছে।
তনন রুমে এসে তাহসী কে জানালার কাছে দেখে এগিয়ে গেল। কাছে যেয়ে জিজ্ঞেস করলো,
-“কি দেখছো এই জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে? জানালা খুলেছো কেন? তোমার রুমের মতো আমার রুম এতো সুন্দর না!”
তননের রুমের এই দিককার জানালাটা রাস্তার দিকে। রাস্তা দিয়ে এখনও মানুষ যাচ্ছে আসছে এটাই দেখছিল তাহসী। আর আশেপাশে একটু ঝোপ ঝাড় রয়েছে। তাহসী পিছু ঘুরে উত্তর দিল,
-“জঙ্গল কোথায়? রাস্তা তো। ঠাণ্ডা বাতাস আসছে তাই খুলেছি।”
-“ওহ বন্ধ করে দিয়ে ঘুমাতে এসো।”
-“তুমি এতো তাড়াতাড়ি ঘুমাও? রাত জেগে পড়তে যে!”
-“পড়ি তো। আজ তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চাচ্ছি। একটা বই এনেছি। ওটা এখন পড়তে মন চাচ্ছে না।”
বলতে বলতে এগিয়ে আসলো তনন।
তাহসী জানালার পাল্লায় হাত দিয়ে সেগুলো টেনে আনলো। এরপর ছিটকিনি দিতে নিলে তনন পিছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরলো। তাহসী কেঁপে উঠে ছিটকিনি লাগাতে গেলে আঙ্গুলে ব্যথা পেল। উহ শব্দ করে উঠতেই তনন তাহসীকে ছেড়ে দিয়ে তাকে সামনে নিয়ে আসলো।
-“কি হলো?”
-“ওই একটু ব্যথা লেগেছে।”
-“আমি একটু ছুঁলেই সমস্যা!”
তাহসী ইতস্তত করে কিছু বলতে যাবে তার আগেই সেলিনা শেখ এর কন্ঠ ভেসে আসলো। তাহসী এগিয়ে যেয়ে দরজা খুললো। তনন যেয়ে বিছানার উপর বসলো।
সেলিনা শেখ বললেন,
-“তোরা কাল আছিস নাকি চলে যাবি?”
তাহসী তননের দিকে তাকালো। তাহসীর কালকে নিজের বাড়িতে একবার যাওয়ার ইচ্ছা। এখনো এটা নিয়ে তননের সাথে কথা বলা হয়নি। সে এবার কিছু ভেবে আসেনি। তনন বলেছে আর চলে এসেছে। কোন যেন এবার কোনো প্লান করতে ইচ্ছা করেনি।
তনন বললো,
-“পরশুদিন সকালে যাবো ইনশাআল্লাহ। এমনিতে কাল রাতে যেতাম। কিন্তু তাহসী আছে,তাই পরশুদিন ইনশাআল্লাহ।”
-“আচ্ছা। দরজা লাগিয়ে দাও তাহসী।”
এটা বলে সেলিনা শেখ চলে গেলেন।
মা চলে যেতেই তনন উঠে এলো। তাহসীর দরজা লাগানো হতেই তনন তাকে কোলে তুলে নিল।
-“নাহ, বেশি ভর না। তোলা যায় দেখছি।”
ঘটনার আকস্মিকতায় তাহসী হতভম্ব হয়ে গেছে। তননের টিশার্ট মুঠো করে ধরে বললো,
-“এটা কোনো মুভি না। আল্লাহ বাঁচাও। আমাকে না আবার ফেলে দেয়!”
-“কি বললি তুই? তাহলে আমার হাত না লাগা পর্যন্ত নামাচ্ছি না!”
তনন এক পা ফেলতেই তাহসী তাকে শক্ত করে ধরলো।
-“মজা করবি না একদম।”
-“ছি ছি ছি! হাজব্যান্ড কে তুই তুকারি।”
-“কে আগে করে? আমাকে নামা তুই!”
তনন তাহসীকে বিছানার উপর আলতো করে ছেড়ে দিল। বিছানা থেকে কম দূরত্বে ছেড়ে দেওয়ায় তাহসীর ব্যথা লাগেনি। তাহসী হাফ ছেড়ে বললো,
-“জান টাই যাচ্ছিল!”
-“এই যে আমি তোমার জান এখানে। কোথায় যাচ্ছিলাম আমি? আর আমি মাঝে মাঝে ভুলে বলে ফেলি। কিন্তু আপনি আমাকে ফলো করে ইচ্ছা করে তুই বলেন।”
তাহসীর দিকে ঝুঁকে বললো তনন।
তনন পুনরায় বললো,
-“আমার শরীরে ভালো শক্তি আছে। এবার ফার্স্ট বার বলে মাফ করা হলো। নেক্সট বার এত নড়াচড়া করলে ফেলে দেওয়া হবে।”
-“এ্যাহ, আসছে। মাফ চাইছে কে শুনি?”
-“সবসময় মাফ চাওয়া লাগে না। পাওনা হয়ে যায়। এটা তোমার পাওনা ছিল।”
তনন তাহসীর পাশে শুয়ে পড়লো। তাহসী বললো,
-“আমার পাওনা নয়। লাইট অফ করে এসো।”
-“কেন?”
-“নিজেই তো বললে ঘুমাবে।”
তনন তাহসীর একদম কাছাকাছি সরে গেল। তাহসীর ঠোঁটে আচমকা চুমু খেয়ে বললো,
-“অন্য কারণে ডেকেছি। বুঝো না নাকি বুঝেও…..”
তাহসী অন্য দিকে দৃষ্টি সরিয়ে নিল। আগে না বুঝলেও এখন বেশ বুঝতে পারছে। তনন বললো,
-“তোমার বাড়ি যেতে চাও না? কিছু বলছো না দেখছি।”
-“তো চাইবো না? এক রাত থাকতে পারলে ভালো হতো।”
-“ছুটি পেলে এসে থেকো। কাল এখানেই থাকো প্লিজ। বরং দুপুর, বিকেলে থেকে আসতে পারো কয়েক ঘন্টা।”
-“কেন রাত থাকলে কি?”
তনন তাহসীর হাত নিজের হাতের মুঠোয় পুরে তার উপর চুমু খেয়ে বললো,
-“প্লিজ এটা বলো না বা আবদার করো না। আমার মন চাচ্ছে না কেন জানি। দুইটা রাত আমার সাথেই থাকো। আমি মায়ের সাথে থাকি এই দুইটা রাত। তুমি যদি সমান সমান থাকতে চাও পরে এসে দুইদিন বেশি থাকবো না হয় তোমার বাড়ি।”
এরপর তাহসী নাকোচ করার কিছু পেল না। তাই তাহসী বললো,
-“ওকে। সমস্যা নেই। কাল দুপুরে ওখানে যেয়ে বিকালে আসবো।”
-“আচ্ছা।”
দু’জনেই কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করলো। তাহসী উঠতে নিলেই তনন বললো,
-“আরে উঠছো কেন?”
-“ফোন নিতাম।”
-“হোয়াই? কাল বলো তোমার আম্মুকে।”
তাহসী পুনরায় বালিশে মাথা রাখতে গেলে তনন টান দিতেই তাহসী তননের দিকে ঝুঁকে পড়ল।
-“অস’ভ্য।”
-“জানি।”
তনন কিছু না বলে তাহসী কে ছেড়ে দিল। তাহসী আবার ভাবলো রগ করলো কি-না। কিন্তু তাহসী কে ভুল প্রমাণিত করে তনন তাহসীর উপরে উঠে গেল। গভীর ভাবে চুমু খেয়ে ঠোঁটে ঠোঁট রেখেই বললো,
-“কবে থেকে একসাথে থাকতে পারবো বলোতো?”
তাহসী তখন ঘন ঘন শ্বাস ফেলতে ব্যস্ত। তনন গাঢ় স্বরে বললো,
-“কাটে কি বলছি? উনি তো এখন একটা কথারও উত্তর দিবে না। থাক কাল আলোচনা করবো।”
তনন তাহসীর গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো। তাহসী তননের পিঠে হাত রেখে বললো,
-“লাইট অফ করো।”
-“উঁহু।”
গলা থেকে মুখ তুলে বললো তনন।
-“প্লিজ।”
-“চুপ। তোমাতে বিলীন হতে চাই তাহসী। এর আগে কখনো অনুমতি নিইনি তোমার। আজ নিচ্ছি। দিবে না?”
-“লা..ইট অ..ফ করো।”
-“দিবে না অনুমতি, তাই তো?”
তাহসী চুপ করে গেল। একে কিছু বলে লাভ আছে! আর না এখন তর্ক করতে পারবে। তননের স্পর্শ গাঢ় থেকে গাঢ় হলো। তাহসীর মুখ দিয়ে আর কথা বের হলো না।
🍁🍁🍁
সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তননের ঘুম ভেঙ্গে গেল। তনন ঘুম ভাঙ্গতেই নিজের কাঁধের কাছে তাহসী কে আবিষ্কার করলো। তাহসীর চুলের পানিতে তার বালিশের একপাশ ভিজে গেছে। তাহসীকে স্পর্শ করলে তার ঘুম ভেঙ্গে যায় দেখে তনন কখনো জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর আবদার করেনি। দুজন দুপাশেই ঘুমায়। এখন দু’জন দু’জনের কাছে দেখে তননের মুখে হাসি ফুটে উঠল। তাহসীর কোমর থেকে নিজের হাত সরিয়ে তনন ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আস্তে করে তাহসী কে ডাকতে লাগলো।
দুই মিনিট বাদেই তাহসীর ঘুম ভাঙ্গল। চোখ ডলে আশেপাশে তাকালো। মনে পড়লো সে এখন তননের বাড়িতে। আস্তে আস্তে রাতের কথাও মনে পড়লো।
তাহসী আড়চোখে তননের দিকে তাকিয়ে উঠে বসলো। বালিশের পাশে থেকে ওড়না নিয়ে গায়ে জড়িয়ে বিছানা থেকে নামলো। কাপড়ের ব্যাগের সাইড থেকে ব্রাশ নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা লাগালো তাহসী। প্রথম দিনের মতোই তননের সামনে লজ্জা লাগছে আজ তার।
তাহসী ফ্রেশ হয়ে বের হতেই তনন গেল ওয়াশরুমে। তাহসী ব্রাশ ব্যাগে রেখে আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালো। চুল চিরুনি করে নতুন করে চুল বেঁধে মুখের দিকে তাকাতেই চোখ গেল গলার দিকে। গলার একটু নিচে বাম সাইডে তিলটা বেশ ভালোই লাল হয়ে আছে। তাহসী আঙ্গুল দিয়ে ছোঁয়ার আগেই তনন স্পর্শ করলো সেখানে। তাহসী আস্তে করে শব্দ করে উঠলো। তননের পানি ওয়ালা হাত পড়ায় জ্বলে উঠেছে।
তনন ড্রেসিং টেবিলের উপর থেকে ভ্যাসলিন নিয়ে ওখানে লাগিয়ে দিল।
-“স্যরি।”
তাহসী কিছু না বলে মুখ নামিয়ে নিয়ে সরে গেল। তার খুবই লজ্জা লাগছে। তননকে তার দিকে এগিয়ে আসা দেখে তাহসীর আরো লজ্জা লাগছে।
তনন তার হাতে একটা ক্রিম দিয়ে বললো,
-“পিঠে লাগায় দাও তো। তোমার থেকে আমার বেশি জ্বলছে।”
তাহসী কাঁপা কাঁপা হাতে আলতো করে ক্রিম লাগিয়ে গেল। পিঠের মাঝখান টাই আঁচড়ের দাগ। তাহসী লজ্জা পেয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। তনন সেদিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে হাসলো।
চলবে ইনশাআল্লাহ;