তোমাকে_চাই(Season_3)পর্ব:-১৩+১৪
#আরবি_আরভী
#Part_13
চোখ থেকে ঘৃণার জল পরতে লাগলো।। বেঈমান।। ছ্বিঃ রেহান এমনটা করতে পারলো আমার সাথে।। ইচ্ছে করছে এই রাস্তায় নিজের জীবন দিয়ে দি।।।মিঠি আপু ভেবেছিলেন আমি কিছু দেখতে পাইনি তাই রেহানকে দেখা মাত্রই বলতে লাগলেন,,,,,
-মামা থামান থামান দেখলি তো নিসা এবার বিশ্বাস হল তো আমাকে,,, রেহান ভাই একটা লম্পট আর সাথে বেয়াদব মেয়েটাও,,, ইডিয়টস।।
আমি ডুকরে কেদে ফেললাম রিকশাওলা আমাদের দিকে ভেবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে থাকলে মিঠি আপু উনাকে চলতে বলে আমাকে সারা পথ এটা ওটা বুঝাচ্ছেন আর শান্তনা দিচ্ছেন।। আমি কিছুই বলিনি।। কি বা বলব।। আমার সব শেষ।। কেন করলো রেহান এমন।। আমাকে এত বড় ধোঁকা দিলো,,,, আমার বিশ্বাসের এই পরিনতি দিলেন উনি।।
-নিসা শান্ত হও বোন ,,,,সত্যি আমি তোকে হার্ট করতে চাইনি,,,
-আমি সরি আপু তুমিই ঠিক ছিলে,,আমি মরে যাবো আমার মতো গাদার বেচে থাকার কোনো অধিকার নেই,,,,,উনি কেন আমার সাথে এমন করলেন বলতে পারো আপু,, আমি উনাকে খুব ভালোবাসি নিজের থেকেও বেশি বিশ্বাস করতাম উনাকে ,,, (কাদতে কাদতে)
-আমি জানি তুই ভাইকে অনেক ভালোবাসি কিন্তু ছেলেরা এমনই হয়,, মাথা ঠান্ডা কর কাউকে এখন কিচ্ছু বলার দরকার নেই ,,
-আমার সাথে এত্ত বড় একটা বেঈমানী করল আর আমি চুপ করে থাকব এটা অসম্ভব,,,,
-ভাই খুব চালাক দেখবি পরে তোকেই নানা কথা শুনাবে কারন তোর কাছে কোনো প্রমাণ নেই,,, ভাই বলবে এটা উনি ছিলেন না তুই দেখেনিস,,,,
– আপু দয়া করে প্রেগন্যান্সির ব্যাপারে তুমি কাউকে কিছু বল না,,,
-আচ্ছা ঠিক আছে বলব না,,।।
আমি আর কথা বাড়াইনি।। এক দিক থেকে আপুও ঠিক বলছেন।। রেহান আমাকেই কথা শুনাবে।। কিন্তু বুকটা ফেটে যাচ্ছে।। আমি কক্ষনো উনার কাছ থেকে এমন কিছু আশা করিনি।। ভালোবাসার এই প্রতিদান দিলেন আমায়,,,।। আজকের পর থেকে উনার সাথে কথা বলতে ঘৃণা করবে আমার।। মনটাই ভেঙে দিল।। উনাকে আর বিশ্বাস করি না ভালোবাসি না উনি থাকুক উনার প্রিয়তমাকে নিয়ে।।আমি চলে যাবো অনেক দূর ।। উনাকে খুশি দেখাই যে আমার মূখ্য কামনা।।
বাসায় ফিরে চাচী ডাক্তার কি বলেছেন তা জানতে চাইলে,,,, আমি বলে উঠলাম
-তেমন কিছু হয়নি শরীর দুর্বল হয়ে গেছে কিছু ভিটামিন দিয়েছেন খেলে ঠিক হয়ে যাবো,,,,
-সামান্য দূর্বলতার কারনে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়,,, আল্লাহ জানেন কোন প্রেমিকের সাথে দেখা করতে গেছে এসে আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করছে বোকা পেয়েছে আমাকে ,,,,,, ফালতু মেয়ে একটা,,,,
রুমে এসে আয়নার দিকে তাকিয়ে অঝোর নয়নে কেদে ফেললাম।। যার জন্য আমি আমার মা-বাবা ফ্যামিলি এমনকি আমার পড়াশোনা ফ্রেন্ডস সব ছাড়লাম আজ সে আমাকে গোল খাওয়ালো।। ভালোবাসায় এতটাই অন্ধ ছিলাম মানুষটাকে চিনতেই পারলাম,,,,,,
রেহান অসিফ থেকে ফেরার পর উনার সাথে একটি কথাও বলিনি।। ইচ্ছা করছেন না।। কেমন মুখোশ পড়া মানুষ।। নির্লজ্জের মতো আবার আমার সাথে কথাও বলছেন।।
রাতে উনি বিছানায় আধ শুয়া অবস্থায় ল্যাপটপে কাজ করতে থাকলে আমি রাগে অভিমানে বলেই ফেললাম,,,
-টুশি আপুর সাথে কি সম্পর্ক আপনার,,
রেহান আমার কথার কোনো পাত্তায় দিলেন না নিজ লাগে ব্যাস্ত,,,,,
-কি কথা বলছেন না কেন,,, আজকে আপনাকে আর টুশিকে বেশ রোমান্টিক মুডে দেখেছি,,,, ওকে ভালোবাস্লে আমাকে বিয়ে করলেন কেন,,,,
-কারন টুশিকে আগে পাইনি তাই তোকে বিয়ে করেছি,,,,,
আমি উনার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে চোখের পানি ফেলতে থাকলে উনি বলে উঠেন,,,
-অফিসিয়াল কাজে বাহিরে গেলে পথে টুশির সাথে আমার দেখা হয় আর ওগাড়িতে লিভ চায় ব্যাস এইটুকুই,,, আর তুই বলছিস ওর সাথে আমার কি সম্পর্ক,, আচ্ছা এসব বাজে চিন্তা তোর মাথায় আসে কোথেকে হ্যা,,,
মিঠি আপু ঠিক বলেছেন উনি উল্টো আমাকেই কথা শুনাবেন।। আমি বেশ বুঝতে পারছি উনাকে হাতেনাতেই ধরতে হবে।। তাছাড়া আর কোনো উপায় নেই।।
বেশ রাত প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে।। সবাই ঘুমিয়ে পড়েছেন আমাকে ছাড়া।। বর অন্য নারীর প্রতি আসক্ত হয়ে পরলে বউয়ের চোখে কি আর ঘুম থাকে,,,।।বারান্দায় এসে দাড়িয়ে আছি।। নিঝুম রাত বৃষ্টির পানিতে বারান্দার মেঝটা ভিজে গেছে আমি সেই ভেজা মেঝেতে দাড়িয়ে বৃষ্টির পানির আনন্দ নিচ্ছি,,,,,।। রেহান আমাকে আর ভালোবাসেন না আমাকে তার আর ভালো লাগে না।। টুশির জন্য আমার কাছে মিথ্যা বলছেন।। বাহ বাহ বাহ।। আমি তার কেউ না,,,, খুব কষ্ট পাচ্ছি কথাগুলো ভেবে চোখ দিয়ে অনাবরত পানি পরছে,,,।।
এমন সময় রেহান এসে আমাকে পেছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরে,,,,
-বৃষ্টির পানিতে অসুস্থ হয়ে পরবা রুমে চল,,,
-ছাড়েন,,,, ঘৃনা করি আপনার ছোঁয়াকে,,,
তারপর ঘরে এসে বিছানার এক কোণে শুয়ে পরলাম,,,।।
পরেরদিন রেহান অফিস থেকে এসে একনাগাড়ে কলিংবেল বাজাতে লাগলেন ।। আমি বিরক্তিকর ভাব নিয়ে দরজা খুলতেই উনি আমাকে দেখে হাতে একটা শাড়ির ব্যাগ আর এক গুচ্ছ ফুল ধরিয়ে গালে চুমু খেয়ে ভেতরে চলে গেলেন,,,,।। আমি হা করে দাড়িয়েই আছি।। এ কি রে বাবা।। ছেলে তো নয় পুরাই আগুনের গোলা।।
ব্যাগটা খুলে আমি অবাক অনেক সুন্দর একটা শাড়ী তাও আমার পছন্দের নীল রঙের।। বেচারা ভেবেছে এগুলো দিয়ে আমাকে মানিয়ে নিবে।। কিন্তু এমন কিছুই হবে না।।
রাত ১ টা রেহান কাজ শেষ করে গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন ।।
আমি ইচ্ছা করে উনাকে বিরক্ত করতে ডেকে বললাম,,,
-এই যে শুনুন,,,, (ধাক্কা দিয়ে)
-কি,,,,(ঘুম ঘুম স্বরে)
-আমি ফুচকা খাব,,,,
-কালকে নিয়ে আসব,,,
-না আমি এক্ষুনি খাব,,
উনি ঘুমন্ত চোখ নিয়ে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে জ্যাকেটটা পড়ে বাহিরে চলে গেলেন,,,, আমি অবাক।। আমার প্রতি কোনো রাগ নেই উনার।।। উনাকে সন্দেহ করে আমি কি ঠিক করছি নাকি ভুল,, বুঝতে পারছি না।।
সকালে চাচীর কথায় টুশি আপুকে ডাকতে এলে তাকে রুমে পেলাম না।। চলেই যাচ্ছিলাম হঠাৎ লক্ষ্য করলাম কালকে রেহানের দেয়া ফুলগুলোর মতোই ফুল টুশি আপুর টেবিলে রাখা ফুলদানিতে সাজানো।। কাছে গিয়ে দেখলাম ফুলগুলোতে একটা কার্ডও আটকানো যাতে লেখা ছিল,,,,, Love you jan ফ্রম Rehan।।
তার মানে রেহান আমাকে দেয়া সেম সারপ্রাইজ টুশিকেও দিয়েছেন।।
চলবে,,
#তোমাকে_চাই(Season_3)
#আরবি_আরভী
#Part_14 #শেষ_পার্ট
তার মানে রেহান আমাকে দেয়া সেম সারপ্রাইজ টুশিকেও দিয়েছেন।। টুশি আপু সবকিছ জেনেশুনে রেহানের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে।। শয়তানের কথা ভাবছি আর শয়তান হাজির,,,
-কি নিসা হঠাৎ কি মনে করে,,,
-এই ফুলগুলো কি রেহান আপনাকে দিয়েছেন,,,
-হ্যা,, তো,
-আপনার লজ্জা করে না অন্য কারো বরের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়াতে,,
-এই মেয়ে কি বলছ তুমি,, আমার বফ দিয়েছে,,দুনিয়ায় কি শুধু তোমার বরের নামই রেহান নাকি,, তোমার লজ্জা করল না আমাকে এসব কথা বলতে,,,
রুমে এসে বালিশ চাপা দিয়ে কাদতে লাগলাম।। মিথ্যাবাদী মেয়ে একটা।।ইচ্ছে করছে কয়েকটা থাপ্পড় মেরে আসি।। সব আমার দোষ রেহানকে চিনতে আমি ভুল করেছি।। মানুষ ঠিকই বলে যার বাহিরটা যত সুন্দর ভেতরটা তত কুৎসিত হয়।। রেহান তার প্রমাণ।।
দুপুরে শরীরটা খারাপ করলে আমি শুয়ে থাকি।। হঠাৎ একটা অচেনা নাম্বার থেকে আমার ফোনে মেসেজ আসে।।যেটা খুলতেই রেহান আর টুশির কিছু আনন্দ মূহুর্ত ছবি আমার চোখের সামনে বেসে উঠে।। সবকিছু কি কম ছিল যে এটাও আমাকে দেখতে হল।।ছবিগুলো দেখে ইচ্ছে করছে এক্ষুনি গলায় ফাঁসি দিয়ে মরে যাই।।
কথাগুলো ভাবছি এমন সময় সাব্বিরের কল আসে,,,,
-কেমন আছ নিসা,,
-ছবিগুলো তাহলে আপনি পাঠিয়েছেন তাই না,,,
-যাক তুমি দেখেছ তাহলে,,
-আপনে ওদের সম্পর্কে কিভাবে জানলেন,,,
-হা হা হা টুশি তো প্রায় রেহানের সাথে দেখা করতে অফিসে আসে,,, তাছাড়া দুজন যেভাবে কাঁঠালের আঠার মত লেগে থাকে,,,
মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল।। কলটা কেটে ডাইরেক্ট রেহানকে কল দিলাম,,,
-হ্যালো,,
-কোথায় আপনি,,
-অফিসে,,, আর কোথায় থাকব,
-টুশি আপু কি আপনার সাথে,,,,
-টুশি আমার সাথে থাকবে কেন,,
-না মানে আপনার প্রেমিকা তো আপনার সাথে থাকতেই পারে তাই না,,
-ওয়াট,,,
কথাটা বলে ফোন অফ করে দিলাম।। সারাদিন উনার সাথে আমার কোনো কথা হয়নি।। রাত ১১ টা বেজে গেছে কিন্তু এখনো উনি বাড়ি ফিরছেন না।। খুব টেনশন হচ্ছে।। কল করছি কিন্তু বন্ধ বলছে।।,,,,,,, কিচ্ছুক্ষণ পর রেহানের গাড়িটা দেখে মনে স্বস্তি পেলাম।। দৌড়ে সিড়ি বেয়ে উনার কাছে যাচ্ছি।। টুশি আপুদের ফ্ল্যাটের কাছে এসে ধমকে দাঁড়িয়ে গেলাম।। টুশি রেহানকে খুব জোরে জড়িয়ে ধরে কাদো কাদো কন্ঠে বলতে থাকে,,
-কত টেনশন হচ্ছিল জানো তুমি,,, ফোন বন্ধ কেন তোমার,,
– ফোনে চার্জ ছিল না,, ঠিক আছে পরে কথা হবে আসি তাহলে বায়,,
-না কোথাও যাবা না,,,
টুশি আপু রেহানকে ছাড়তে চাচ্ছেন না।। বরং আস্তে আস্তে রেহানকে কিস করার জন্য তার দিকে এগিয়ে আসছেন আর রেহান টুশিকে এসব করতে বাদা দিচ্ছেন।।
-এমন করছ কেন রেহান চোখদুটো বন্ধ করে জাস্ট আমাকে ফিল কর,,,
-উউফফফ ছাড় টুশি আমার এসব ভালো লাগছে না প্লিজ,,,, অনেক রাত হয়েছে তুমি ঘরে যাও,,,
আমি বোকার মত দাড়িয়ে থেকে সব দেখছি।।খুব ঘৃণা পাচ্ছে রেহানের প্রতি।। সত্যি তাদের খুব ভালো মানায়।। আমিই তাদের মাঝে বেমানান।। আমাকেই সরে যেতে হবে।। মনকে আর মানাতে পারলাম না তাই একটু আওয়াজ দিয়ে বলেই ফেললাম,,,,
-চাচী টেনশন করছে কিস করা শেষ হলে তাড়াতাড়ি বাড়ি আসবেন,,,
দুজনেই হতভম্ব হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।। রেহান তো রীতিমত দৌড়ে আমার কাছে এসে নানা ছলাকলা বুঝাতে ব্যাস্ত।। আমি নিরব পরিবেশ বজায় রেখে রুমে এসে দরজাটা বন্ধ করে বলতে লাগলাম,,,,
-টুশি আপুর সাথে আপনার যে অবৈধ সম্পর্ক আছে এখন সেটা অস্বীকার করবেন কিভাবে মি.রেহান,,,
-নিসা বিশ্বাস কর,, ওই মেয়ে মানে টুশির সাথে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই,,, নিচে তুই যা দেখেছিস সব একটা প্ল্যান মাত্র,,,কলেজে টুশির সাথে আমার বন্ধু সোহেলের সম্পর্ক হয়।।সোহেল এখন বিদেশে।। টুশি আমার বন্ধুর কাছ থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়ে পরে ব্রেকআপ করে দেয়।। অনেকদিন পর দেখা হয়েছে তাই টুশি ভেবেছে আমি তাকে চিনতে পারিনি।। সোহেলকে ব্যাপারটা জানালে সে আমাকে যেভাবেই হোক টুশিকে আশেপাশে রাখতে বলে কিছুদিন পর সোহেল দেশে ফিরলে ওর একটা শায়েস্তা করবে বলেছে,,,,,,,, আমি কোনোভাবেই রাজি ছিলাম না কিন্তু সোহেল এত্ত রিকুয়েস্ট করে বলল আর বারণ করতে পারিনি,,, তুই বিষয়টা জানলে খুব রাগ করতিস তাই ইচ্ছা করেই বলিনি,,,,, আমি শুধু তোকেই ভালোবাসি লক্ষী বউ আমার,,,
-নাইচ জোক্স,,, আমি বোকা তাই ভেবেছি আপনে হয়তো আমাকে সত্যি ভালোবাসেন আসলে আমি ভুল ছিলাম।। আপনে যদি একবার বলতেন নিসা তোকে আমার আর ভালো লাগে না তাহলে বিশ্বাস করেন আমি কোনো কথা ছাড়াই আপনার ঘর থেকে চলে যেতাম,,,,, কিন্তু না আপনে দুই নৌকার মাঝি হতে চেয়েছেন ভাহ,,, আপনাকে আমি জাস্ট ঘৃণা করি,,,
রেহানের নাক মুখ লাল হয়ে গেছে।।। চোখে পানি টলমল করছে।। ভীষণ রেগে গিয়ে নিজেকে নিজে বকাঝকা করছেন আর আমাকে বলছেন,,,
-তোকে কিভাবে যে বোঝাব আচ্ছা ঠিক আছে আমি সোহেলকে কল দিচ্ছি তুই ওর কাছ থেকে সত্তিটা জেনে নে,,,,
-আমি কারো সাথে কথা বলব না।। আপনি টুশির সাথে ভালো থাকেন।। আমি চলে গেলে টুশিকে আর লুকিয়ে আদর করতে হবে না কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবে না,,,।। আপনারা খুব আনন্দে থাকবেন,,, অনেক ভালো হবে তাই না,,
-না খুব খারাপ হবে নিসা আমি তোকে ছাড়া বাচতে পারবো না অনেক ভালোবাসি তোকে,,, (চোখের পানি ফেলে)
-আচ্ছা আমি যদি আপনার সাথে একই কাজ করতাম তাহলে আপনে আমাকে বিশ্বাস করতেন তো,,,, (কাদতে কাদতে)
-আমি তোকে ভালোবাসি নিসা তুই বললে টুশিদের ফ্ল্যাট থেকে তাড়িয়ে দিব,,, তার সাথে আমার আর কোনো যোগাযোগ হবে না তাও প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাস না,,,, প্লিজ নিসা জাস্ট একবার সোহেলের সাথে কথা বল,,,
-আমি আর কিছু জানতে চাই না,,, নিজের চোখ তো আর আপনার মত আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না বলুন,,, আর আপনি টুশি আপুকে আপনার কুলে বসিয়ে রাখতে পারেন তাতে আমার কিছু যায় আসে না,,,, ইচ্ছে করলে তার সাথে শারীরিক সম্পর্কও করতে পা,,,,,,
কথাটা শেষ করতে পারলাম না রেহান আমার গালে কষে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলেন।।। খুব রাগ হচ্ছিল তাই আমিও উল্টো উনার গালে থাপ্পড় দিয়ে বলেতে থাকি,,,,
-আপনে একটা লম্পট,, চরিত্রহীন বাজে ছেলে আপনাকে স্বামী বলতে ঘৃণা হয় আমার,,,, (চোখের পানি ফেলে
মেজাজ গরম করে ঐ দিনই ছোট আন্টিদের বাড়ি চলে এলাম।। আন্টির ছেলেসন্তান নেই তাই আমরাই তার কাছে প্রিয়।। আন্টিকে রেহান আর টুশির সম্পর্কের ব্যাপারে সব খুলে বললাম।। সাথে প্রেগন্যান্সির কথাটাও।।রেহান এমন কিছু করতে পারে তা নাকি আন্টি ভাবতেও পারেননি।।
এদিকে রেহান আব্বু-আম্মুসহ সবাই আমাকে খুজতে খুজতে পাগল হয়ে যাচ্ছেন।। পরেরদিনই রেহান হাজির আন্টিকে খুব আকুতি মিনতি করে বলে গেছেন আমি আন্টির কাছে এলে যেন উনি রেহানকে জলদি ইনফর্ম করে দেয়।। আমি এখানে আছি তা কাউকে জানাতে মানা করেছি তাই আন্টি আমার কথা চেপে যান।। আড়ালে থেকে সব শুনেছি।।
তিনদিন হয়ে গেছে রেহানের সাথে আমার কোনো যোগাযোগ নেই।। গভীর রাত রেহানের কথা খুব মনে পরছে।। আজকাল তো রুমে একা থাকতে খুব ভয় করে রেহানের সাথে থেকে অবস্থ হয়ে গেছি কি না।। উনি হয়তো আমাকে ভুলেই গেছেন।। কাউকে বিশ্বাস করলে এটাই বুঝি তার শেষ পরিনিতি।। খুব ভালোবাসি রেহান আপনাকে খুব,,,,,, অনেক ইচ্ছা করছে রেহানের সাথে কথা বলতে,,, তাই আর দু পাঁচেক না ভেবে আন্টির ফোনটা এনে নতুন সিম দিয়ে উনাকে কল দিলাম,,,, প্রথম রিংয়ে রেহান কলটা রিসিভ করে নেন।। তার মানে উনি এখনো জেগে আছেন,,
-হ্যালো,,,(কান্নারত ভাঙা কন্ঠে)
-________(চুপ করে কান্না চেপে রাখছি)
-হ্যালো কে,,
-________(উনার কন্ঠ শুনে কেদে উঠলাম,,,,
-নিসা তুই কোথায় আছিস আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি তোকে ছাড়া,,, প্লিজ ফিরে আয়,,
-কেন আমার সাথে এমন করলেন আপনি,, আমাকে বোকা বানালেন,,,
-আমি তোকেই ভালোবাসি নিসা,, প্লিজ একবার বল তুই কোথায় আছিস আমি এক্ষুনি আসছি,,,
-জাহান্নামের চৌরাস্তায় আছি মরে গেছি আমি,,,, (ডুকরে কেদে)
-নিসা প্লিজ কল কাটিস না,, জানিস আমার খুব ইচ্ছা ছিল আমাদের একটা মেয়ে বেবীর,, ওর নাম আমি আনিশা রাখতাম,,
-আপনার এসব ফালতু কথা শুনতে চাই না রাখছি,,, আপনি আমাকে ভুলে যান ,,
–নিসা একটা গান শুনবি,,
-আমি ঘুমাব
-ইচ্ছা করছে গাইতে শুধু তোর জন্য
-উউফফ শুনান তাড়াতাড়ি,,,
আমার সকল অভিযোগে তুমি তোমার মিষ্টি হাসিটা আঁকি আমি আমার না বলা কথার মাঝে তোমার গানের কত সুর বাসে,,,,,,,,, ভুলিনি তো আমি তোমার মুখের হাসি আমার গাওয়া গানে তোমাকে ভালোবাসি,,,,
উনার কন্ঠে গানটা অসম্ভব সুন্দর ছিল।।হুট করে গান গাওয়া থামিয়ে,,
-নিসা তোকে খুব মনে পরছে ,,,জানি না কেন মনে হচ্ছে তোর সাথে আমার আর দেখা হবে না,,, আল্লাহর কাছে ইহকাল ও পরকালে আমি শুধু তোকেই চাই নিসা,,,, (কান্নারত কন্ঠে)
আমি আর কথা বাড়ালাম না।। ফোনটা কেটে দিলাম।।
পরেরদিন দুপুরে আমি গোসল করে বারান্দায় এসে চুলের পানি শুকাচ্ছি হঠাৎ আন্টি হাতে ফোন নিয়ে কাদতে কাদতে আমার কাছে এসে আতংকের সাথে বলতে থাকে,,,
-নিসা রে রেহান গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছে হাসপাতালে নেয়ার আগেই নাকি মারা গেছে,,,
কথাটা শোনার পর মনে হল উপরের আকাশটা পায়ের নিচের জমিনটা যেন সরে গেছে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি আমি ।। আমার সন্তান জন্মের আগেই তার বাবাকে হারিয়ে ফেলল।।অনাত হয়ে গেল।।রেহান জানতেই পারলেন না উনি বাবা হতে যাচ্ছিলেন ,,,।। ঘটনাস্থলের পর চাচী প্রায় এক মাস যাবৎ ICU তে ভর্তি ছিল।। আর আমি জিন্দা লাশ,,,,,,।।ICU থেকে ফেরার পর চাচী ম্যান্টালি চিক হয়ে পরেন নিজে নিজে কথা বলেন,,,,মধ্য রাতে রেহানের রুমে এসে ঘুমিয়ে পরেন,, মাঝে মাঝে অফিস থেকে রেহানের আসার অপেক্ষা করেন,,,,রেহানের কাপড়ের সুগন্ধ নেন।। একমাত্র ছেলে উনার।।
পরে সোহেলের বিয়টা বিবেচনা করে তা সত্ত প্রমানিত হয়,, রেহান সত্যি কথা বলেছিলেন,,,, সোহেলের সাথে সম্পর্ক টুশি নিজে স্বীকার করে তাছাড়াও অনেক প্রমানও পাওয়া যায়,,
বর্তমানে নিসা আপু রেহান ভাইয়ার আব্বু আম্মুর সাথে থাকেন ।।তার একটা মেয়ে হয়েছে কিউট প্রিন্সেস আনিশা।।। খুব দুষ্টু প্লেতে পড়ে।। উনার শাশুড়ি আপুকে নিজের মেয়ের মত রাখে।।আনিশা উনার হৃদয়ের টুকরো।। এটাই উনার ছেলের শেষ চিহ্ন ।।। আনিশা ওর আব্বুর জন্য অপেক্ষা করে থাকে কারন নিসা আপু বলেছে ওর আব্বু নাকি বিদেশে গিয়েছে ।। অবুঝ আনিশা তার আব্বুর জন্য পুতুল বানিয়ে বলে এটা নাকি ওর আব্বু বিদেশ থেকে ফিরে এলে ওঁকে দিবে।। নিসা আপুকে এটা যত্ন করে আলমারিতে তালা দিয়ে রাখতে বলে।। এমনই আরও কত কি যে জমাচ্ছে মেয়েটা ওর আব্বুকে দিবে বলে আল্লাহ জানেন।।
________________সমাপ্ত ________________
(আজকে আমার গল্পটা পরিপূর্ণতা পেলো,,,,, মানুষগুলো অতীতে এমন রুক্ষ মেজাজি ছিল তা ভাবতেও পারিনি (রেহান ভাইয়ার আব্বু-আম্মু) নিসা আপু আমার বোনের ফ্রেন্ড,,,,যাই হোক আমার এই গল্পটা যারা শুরু থেকে পড়ে আসছেন গল্পটাকে ভালোবেসে আমাকে আরও জানার উৎসাহ দিয়েছেন তাদের আমি মন থেকে ধন্যবাদ দিতে চাই,,,,,,,, সত্যি তোমরা না থাকলে আমি সবটা লিখতে আগ্রহ খুজে পেতাম না,,,,,অনেক সময় ব্যাক্তিগত কারনে পার্টগুলো দিতে দেরি হয়েছে তাই আমি অত্যন্ত দুঃখিত কাউকে আশা দিয়ে বাসিয়ে রাখার কোনো উদ্দেশ্যে আমার ছিল না,,,, অনেক আপু গল্পটাকে ফেক ভেবেছেন,, বিরক্ত হয়ে পড়েননি তাদের বলব,,,,আমি সবগুলো পার্ট সাজিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি আর লেখার মাধুর্যতা বাড়াতে অনেক শব্দ আমি নিজে এড করেছি,,,সবার প্রতি ভালোবাসা,,, সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন সবাইকে ধন্যবাদ,,,,,,,,,, ☺)
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
Amr khub kosto hycha….. rehan ka maragelo kno? Sabbir r satti samne alo na…… happy ending dite parten….. golpo ta khub sundor chilo sudu sad ending
rehan jeno beche Thake season 4 chai
story ta ki real chilo ?? eta ki konno real gothona? Last bolen Nisha amr bon er friend tai bolchi
গল্পটার sad ending কেনো হলো!?যাদের মধ্যে এতো ভালোবাসা ছিলো সেটা এইভাবে শেষ হয়ে গেলো?
প্রথম থেকে গল্পটা পড়ে শেষে এই রকম হবে জানলে আমি পড়তাম। খুব কষ্ট লাগছে এইরকম story পড়ে ??