তোমাকে_চাই পার্ট_৭+৮+৯

0
2438

তোমাকে_চাই পার্ট_৭+৮+৯
#আরবি_আরভী

আমি নিজেকে আর আটকাতে পারলাম না দৌড়ে তার কাছে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম আর কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলেছিলাম,,,
-ভালোবাসি আপনাকে অনেক অনেক বেশি?
উনি আমাকে তার বুক থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললেন,,
-তুই এখান থেকে যা নিসা,,,
আমি কিছু বলব তার মাঝেই পিছনে দরজা থেকে চাচির কন্ঠ,,
-আরে নিসা তুমি এত রাতে,,, কি হইছে মা?
আমি চাচিকে দেখে রীতিমত ভয় পেয়েছিলাম (আল্লাহ রে চাচি আবার রেহান ভাইয়াকে যে জড়িয়ে ধরছি ঐটা আবার দেখল না তো?) পরে তার কথাতে তেমন কোনো ছাপ পাইনি তাই নিশ্চিতে উত্তর দিলাম,,,
-আসলে চাচি রেহান ভাইয়াকে আম্মু ডাকছিল তাই এসেছি,,??
চাচি রুমে এসে রেহান ভাইয়ার বিছানাটা ঠিক করতে করতে বললেন,,
-রেহান যাতো কথাটা শুনে আয় বাবা,,
-ওকে আম্মু যাচ্ছি,,
তারপর রেহান ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,,
-তুই যা নিসা আমি আসছি,,,,?
আমি বেশ বুজতে পেরেছিলাম যে উনি আমার সাথে আসতে চাচ্ছিলেন না,, (পথে যদি আবার আক্রমন করি সেই ভয় হয়তো) তাই একটা ভেংচি কেটে ওখান থেকে চলে এসেছিলাম,,,?

তার কিছু দিন পর রেহান ভাইয়ার জন্মদিন ছিল,,প্রতি বছরের মতো এবারও উনার জন্মদিন অনেক ধুমধামের সাথে সেলেব্রেট করছি উনার ফ্রেন্ডস আর অনেক মেহমান এসেছিল,, আমি উনার জন্য একটা লাল গোলাপ আর একটা ডাইরী গিফট হিসেবে এনেছিলাম,,,,ঐদিন জিনিয়া আপুকে বেস্ট লাগছিল নীল একটা শাড়ি পরেছিলন আপু অনেক সুন্দর লাগছিল তাকে,,,,,আমি বাহিরে এসে দেখলাম রেহান ভাইয়া জিনিয়া আপু সব কাজিনরা আর উনার ফ্রেন্ডসরা সবাই মিলে অনেক মজা করছেন আমি রেহান ভাইয়ার দিকে মুগ্ধভাবে তাকিয়ে রইলাম ফর্সা শরীরটাতে নীল পাঞ্জাবি পরেছেন উনি, চুলগুলো জেল দিয়ে স্টাইল করা, হাতে ব্রেন্ডের একটা ঘড়ি অস্থির লাগছিল তাকে?,,, হতাৎ লহ্ম্য করলাম পার্টিতে থাকা কয়েকটা মেয়ে রেহান ভাইয়াকে ঘুরঘুর করে দেখছিল? একটা মেয়ে তো বলেই ফেলল,,,
-দেখ রেহানকে নীল পাঞ্জাবিতে কি হেন্ডসাম লাগছে?
আরেকজন বলল,,
-দেখ জিনিয়া আর রেহানকে একসাথে অনেক ভালো লাগছে,,, তাদের বিয়ে হলে তারা বেস্ট কাপিল হবে,,তাই না?
-হুম্ম ঠিক বলেছিস,,
কথাগুলো শোনা মাত্রই আমার রাগে গাঁ জলতে থাকে মনে হচ্ছিল মেয়েগুলাকে গিয়ে মাতায় তোলে একটা আছাড় মারি??,,,তারপর হাতে এক মগ পানি নিয়ে রাগি মাথায় রেহান ভাইয়ার কাছে গিয়ে ওনাকে একটু আড়ালে আসার জন্য বললাম,, উনি আসতে চাইছিলেন না আমি জোরে উনার হাত ধরে টেনে এনে বললাম,,,,
-কি পাঞ্জাবি পরেছেন দেখতে একদম বিশ্রী লাগছে,,,
-কিইইইই (অবাক হয়ে চোখগুলো বড় করে)??
-হুম তারাতারি পাঞ্জাবিটা বদলে আসুন,,
-তর ভালো খারাপ দিয়ে আমি কি করব,,, আমি পাঞ্জাবি চেইঞ্জ করব না,,,?
-করবেন না???(রাগিভাবে তাকিয়ে)?
-না
করবেন নাতো??????
-নাআআআআআআ??
-ঠিক আছে তাহলে এই নেন,,,,, (সম্পুর্ণ মগের পানি উনার পাঞ্জাবিতে ঢেলে দিয়ে)
-What The Hell নিসা?????(ভীষণ রেগে পাঞ্জাবির পানি মুছতে মুছতে)
আমি কাজটা করেই দৌড়?,,,,,তার কিছুখন পর দেখলাম রেহান ভাইয়া বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছেন আমি ভাবলাম এইটাই পারফেক্ট টাইম আমার গিফটা দেওয়ার জন্য যদিও সবার গিফটের তুলনায় আমারটা একদম তুচ্ছ ছিল তবুও অনেক ভালবাসা দিয়ে মোড়ানো ছিল?,,,,,,আমি উনার কাছে গিয়ে হাতে থাকা গোলাপ আর ডাইরীটা এগিয়ে দিলাম আর বললাম,,,
-ভেতরে অনেক মানুষ তাই এইখানে দিলাম,,,Happy Birth day,, (লজ্জা লাগছিল তাই মুচকি হাসছিলাম)?
রেহান ভাইয়া আমার হাত থেকে গিফটগুলো নিয়ে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বিরক্তভাবে আমার দিতে তাকিয়ে বলেছিলেন,,,
-এইগুলোও কি গিফট হয়,,,যত্তসব ফালতু,,, আর হে ধন্যবাদ ভেতরে না দেওয়ার জন্য না হয়ে আমার ফ্রেন্ডসরা আমার উপরে হাসতো???
আমি কিছুই বলছিলাম না তার দিকে তাকিয়ে থেকে সুধু কান্না করছিলাম,, এত্তটা অবহেলা এত্তটা অপমান কেউ কাউকে করতে পারে আমার জানা ছিল না অনেক ঘৃণ পেয়েছিলাম ঐদিন?????,,,,,

সন্ধ্যার সময় নাচ-গানের আসর বসলো জিনিয়া আপু নাচবে (আপু অনেক ভালো নাচে) কিন্তু আপু একা নাচতে চাইছিল না তাই সবাই মিলে জোর করে যার জন্মদিন তাকেও পাঠালো (রেহান ভাইয়াকে) সাকিব ভাইয়া (রেহান ভাইয়ার বন্ধু) তাদের মাঝে চালু করে দিল একটা অসম্ভব রোমান্টিক গান ,,,,

pehli nazar me kese jaado kar diya…..tera apon bethaa hai mera jiya….Jane kiya hogaa kiya hogaa kiya pata……Is palkho milke aj jilhe zara…..Me ho iyaha tu hai iyaha meri bahome ay aybhi za….
Ojanneza duno zaha meri bahome ay bulzaa??

খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে নাচছিল তারা,,,,সত্যিই তাদের একসাথে অনেক মানায় দুজনেই খুব সুন্দর,,,আমি সুধু তাকিয়ে ছিলাম আর অহ্যর নয়নে কাঁ ন্না করছিলাম ,, মনে মনে ভাবছিলাম আমি শত চেষ্টা করেও কোনো লাভ হবে না প্রতিবারই আমি ব্যার্থ হব কারন উনি আমাকে ভালবাসেন না??, তাই আজ থেকে আর কোনো দিন উনার কাছে ভালবাসার কথা বলব না আজ সব শেষ ????,,,সারা রাত কাঁন্না করছিলাম খুব কষ্ট পেয়েছিলাম আমি?

ঐ দিনের পর থেকে রেহান ভাইয়াকে আমি এড়িয়ে যেতে থাকি,, উনাকে দেখলে মাতা নিচু করে সেখান থেকে কেটে পরি,, কথা বলিনি পুরো এক মাস,, সব কিছু ভুলে পড়াশোনায় কন্সেনট্রেট করতে থাকি,,,তারপর একদিন স্কুল ছুটির পর আমি আর আমার কয়েকটা ফ্রেন্ড মিলে একসাথে বাড়ি ফিরছিলাম,,, তাদের মধ্যে একজনের নাম সাব্বির যে আমার এক ফ্রেন্ডকে অনেক পছন্দ করত,,,,পথের মাঝে হতাৎ সে আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল,,
-এই নিসা একটু শোন প্লিজ,,
-কি রে মাঝ রাস্তায় এইভাবে ডেকে কি বলবি তারাতারি বল,,,?
আমার হাতে একটা চিঠি আর কয়েকটা চকলেট দিয়ে,,
-এই গুলো প্লিজ জান্নাতকে দিয়ে দিস,,
-ওকে দোস্ত ?
কথাটা বলার পর রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখি অনেক স্পিডে একটা বাইক ছুটচ্ছে আমার বুজতে বাকি রইল না বাইকটা যে রেহান ভাইয়ার হয়তো বাড়িতে যাচ্ছে,,,,আমি অনেক ভয় পেয়েছিলাম “আল্লাহ রে চিঠি আর চকলেট নেওয়াটা আবার দেখল নাতো??”,,, পরে ভাবলাম এত্ত স্পিডে বাইক রাইডিং করলে কি আর দেখবে?,,,,,
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


তারপর বাড়ি ফিরে কাধ থেকে ব্যাগটাও রাখতে পারি নাই রেহান ভাইয়া চিৎকার করে আমাকে ডাকছেন (মনে হচ্ছিল আমার অপেক্ষায় যেন ছিলেন)?,,, আমি উনার রুমে দৌড়ে গিয়ে শোনি,,,
-ছেলেটা কে ছিল নিসা,,?
-কোন ছেলে ভাইয়া?
-পথে যার কাছ থেকে চিঠি নিয়েছিলি?
আমি উনাকে রাগাবার জন্য বললাম,,
-আমাকে অনেক পছন্দ করে তাই,,,?
কথাটা শেষ না করতেই রেহান ভাইয়া আমাকে কষে একটা থাপ্পর মারলেন,, আমি থাপ্পর দেওয়া গালটা ধরে কান্না করছিলাম?,,,,

রেহান ভাইয়া কিছুক্ষন আমার কাঁন্নারত মুখটার দিকে তাকিয়ে থেকে আমাকে এক টানে তার বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে জোরে আকড়ে ধরে বলেছিলেন,,,,
-I LOVe YOU,,,,,,,,,
চলবে
#তোমাকে_চাই
#পার্ট_৮
#আরবী_আরভি

আমি থাপ্পর দেওয়া গালটা ধরে কান্না করছিলাম।।।রেহান ভাইয়া কিছুখন আমার কান্নারত মুখটার দিকে তাকিয়ে থেকে আমাকে এক টানে তার বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে জোরে আকড়ে ধরে বলেছিলেন,,,,

-I LoVe You

কথাটা শোনা মাত্রই আমার হৃদয়টা কেমন যেন ব্যাথা করে উঠল আমি যেন নিজের কানকেই বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না তার আকড়ে ধরা শরীরটাকেও না,,,,,, সবকিছু আমার সপ্নের মতো লাগছিল আমি কাঁন্না থামিয়ে মূর্তির মতো দাড়িয়ে আছি,,, আমার কানে তার হৃদয়ের স্পন্দন স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল,,,,,,কিছুখন পর সে আমাকে ছেড়ে দিল আমি বাক্যহীন ভাবে নিচে দিকে তাকিয়ে আছি বলার মতো কোন ভাষাই খোঁজে পাচ্ছিলাম না,, উনি আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে একটা ঝাকুনি দিয়ে বলে উঠলেন,,,
-কি রে নিসা কিছু বল,,,,
আমি বাকরুদ্ধ হয়ে তার দিকে চোখগুলো বড় বড় করে শুধু একটা কথাই জিজ্ঞাসা করেছিলাম,,,,
-এটা কি সত্যি নাকি আমি সপ্ন দেখছি?
-এটা সত্যি,,অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম তোকে বলল,,,
-আমার কেন জানিনা বিশ্বাস হচ্ছে না মনে হচ্ছে সব কল্পনা,,,
-তাহলে কি করলে বিশ্বাস করবেন আপনি?
-আমাকে একটা চিমটি কাটেন তো,,,,
চিমটি কাটার কথাটা শোনে উনি একটু মুচকি হেসে আস্তে আস্তে আমার দিকে এগোতে শুরু করলেন,,,,আমি ভয়ে এক পা এক পা করে পেছাতে লাগলাম হতাৎ গিয়ে দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেয়ে থেমে গেলাম উনি আমার কাছে এসে তার দু হাত দিয়ে আমার মুখটা স্পর্শ করে উপরে উঠিয়ে তার দু ঠোঁট দিয়ে ঠিক আমার নিচ ঠোঁটের বা পাশটায় একটা কামর বসিয়ে দিলেন,, আমি আঁহহ করে চিৎকার করায় উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলেছিলেন,,
-একদম পারফেক্ট চিমটি (মুচকি হেসে),,,,
আমি লজ্জায় তাকে সরিয়ে এক দৌড়ে ঘরে চলে এলাম।।।।,আমি যেন কিছুই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না,, “আল্লাহ এটা কি সত্যি”।। ঐ দিন রাতেও আমি ঘুমাতে পারিনি চোখ বন্ধ করলেই সুধু তাকে দেখতাম আর মুচকি হাসতাম একদম পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলাম সেদিন,,,,,

পরের দিন সকালবেলা স্কুলে যাচ্ছি হতাৎ রেহান ভাইয়া আমার হাতটা ধরে একটানে তার রুমে নিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে বললেন,,,
-স্কুলে যাচ্ছিস?
-হুম্মম
-হুম্মম কি তোকে যেন আর কোন দিন ঐ ছেলেটার সাথে কথা বলতে না দেখি,,, শুধু ঐটা না কোনো ছেলের সাথেই যেন না দেখি বুজচ্ছিস (নাকে মুখে জ্বলার ভাব নিয়ে)
আমি তাকে রাগাবার জন্য বললাম,,
-কেন কথা বললে কি করবেন?
-এক থাপ্পরে সব দাঁত ফেলে দিব,,,
কথাটা বলেই উনি দরজা খোলে কোথায় যেন চলে গেলেন আর এদিকে আমি হাসতে হাসতে শেষ।।।,,কথাগুলো বলার সময় তার চেহারাটা একদম লাল হয়ে গিয়েছিল আসলে উনাকে রাগলেও ভালো লাগে,,,,,,দুপুরবেলা সবাই টেবিলে খেতে বসেছে মিঠি আপু রেহান ভাইয়ার একদম বরাবর বসেছেন আমি তার পাশেই সবাই যখন খেতে ব্যস্ত তখন আমার মাতায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি আসে আমি আস্তে করে নিজের পাটা রেহান ভাইয়ার পায়ের উপর রাখি উনি আমার দিকে রাগান্বিতভাবে আড়চোখে তাকালেন আমিও আড়চোখে তার দিকে তাকিয়ে হাসছি আর ভাত খাচ্ছি উনি আমার পাটা সরিয়ে দিলেন আমি অনেক বার একি কাজ করলাম আর উনি বারেবারে সরিয়ে দিচ্ছিলেন,,,, তারপর আমি আর রাখলাম না মন দিয়ে ভাত খাচ্ছি,,,, কিছুখন পর ভুলে মিঠি আপুর পা উনার পায়ের সাথে লেগে গেছে (যেহেতু আপু উনার বরাবর বসেছিলেন) রেহান ভাইয়া হয়তো ভেবেছিলেন এটা আমার পা তাই জোরে মিঠি আপুর পায়ে একটা লাথি দিলেন,,,,,, মিঠি আপু লাথি খেয়ে চিৎকার দিয়ে কাঁন্না করছিলেন সবাই তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন,,,,
-কে যেন আমাকে লাথি দিয়েছে,,,,
কথাটা শোনে আমার আর বুজতে বাকি রইল না কাজটা কে করেছে,,, আমি রেহান ভাইয়ার দিকে তাকাতেই দেখি উনি করুন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন ঐ দিন আমি অনেক হেসেছিলাম,,

এইভাবে দুষ্টু মিষ্টি খুনসুঁটিতে কেটে গিয়েছিল আমাদের রিলেশনের ৪ টি মাস একদিন রাত্রি বেলা আমি রেহান ভাইয়ার রুমে গিয়ে পড়ছি,, কিসের পড়া আসলে দুষ্টুমি করার জন্য যাওয়া এই আর কি,,,,, রেহান ভাইয়াকে রাগানোর জন্য একটু পরে পরে শুধু বলছি,,,,,
-জানেন স্কুলে যাওয়ার সময় একটা ছেলেকে রাস্তায় দেখি,,, ছেলেটা অস্থির দেখতে, অনেক হ্যান্ডসাম অনেক ভালো লাগে ছেলেটাকে,,,,,
উনিতো কথাগুলো শোনে, বই পড়ছেন আর বড় বড় নিঃশ্বাস নিচ্ছেন,,,,,বেটা যে ভেতরে ভেতরে পুড়ছে তা বোঝাই যাচ্ছিল ,,,,, আমি তার মুখের দিকে তাকাতেই হিহি করে হেসে দিলাম একদম লাল হয়ে গেছে।।। উনি আমাকে ধমক দিয়ে হাসি থামিয়ে বললেন,,,
-তুই পড়বি নাকি এখান থেকে যাবি??(ভীষণ রেগে)
-পড়ব,,,,
-তাহলে বই খোল,,,
আমি ব্যাগটা থেকে বই বের করে বইটা খোলা মাত্রই ধপাস করে একটা প্রেমের চিঠি রেহান ভাইয়ার সামনে পরল সাথে কয়েকটা গোলাপ ফুলের পাপড়িও,,,চিঠিটার উপরে একটা হার্ট আঁকা তার ভেতরে বড় বড় করে লেখা (Nisha + Akash) চিঠিটা দেখার পরপর আমি তারাতারি করে লুকাতে চেয়েও লুকাতে পারিনি রেহান ভাইয়া ঠিকই চিঠিটা দেখে ফেলেছিল,,

চিঠিটা দেখে উনি আমার দিকে চোখগুলো রসগোল্লার মতো করে হা করে তাকিয়ে আছেন আমিও তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি,,, (মনে মনে ভাবছি আজকে আমার আর রহ্মা নেই),,,,,,,,,
চলবে

#তোমাকে_চাই
#পার্ট_৯
#আরবি_আরভী

চিঠিটা দেখে উনি আমার দিকে চোখগুলো রসগোল্লার মতো করে হা করে তাকিয়ে আছেন আমিও তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি,,, (মনে মনে ভাবছি আজকে আমার আর রহ্মা নেই?) উনি আমার ধ্যান ভেঙে পড়ার টেবিল থেকে লাফ দিয়ে উঠে ঠাসসসসসসসসসসস করে কষে একটা থাপ্পর দিয়ে জোরে ধমক দিয়ে বলে উঠলেন,,,,
-এত্তই যদি অন্য ছেলেদের সাথে প্রেম করার শখ তাহলে আমার জীবনে এলি কেন নিসা,,,,বল?(প্রচন্ড জোরে চিৎকার করে)
আমি কাঁদো কাঁদো কন্ঠে তাকে বললাম,,
-আপনে বিশ্বাস করেন আমি জানি না এই ছেলেটা কে আর এই চিঠিটা কিভাবে আমার ব্যাগে এলো?
-তাই,,, তাহলে এতখন রাস্তায় একটা ছেলেকে অনেক ভালো লাগে , ছেলেটা অনেক সুন্দর এইসব কেন বলছিলি,,,, এখন ধরা পড়ে বলচ্ছিস চিনি না ( প্রচন্ড রেগে)??
আমি তাকে কিছুতেই বুঝাতে পারছিলাম না যে আমি তার সাথে এত্তখন মজা করেছি আর আমি জানি না যে এই চিঠি আর আকাশ কে??? উনি আমার উপর ভীষণ রেগে গিয়েছিলেন এক পর্যায় উনি আমার হাতটা ধরে টেনে এনে একটা ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিলেন ,,,,, প্রচন্ড রেগে গিয়েছে বেচারা ??? আমি অনেক বার দরজা ধাক্কা দিলাম কিন্তু উনি দরজাটা খোলছিলেন না তাই মন খারাপ করে ঘরে চলে এলাম,,,,

পরের দিন সকাল বেলা স্কুলে যাব তাই উনার রুমে ব্যাগটা আনার জন্য গেলাম,, গিয়ে দেখি মহোদয় একান্ত মনে খুব মনোযোগের সাথে টেবিলে বসে পড়ছেন আমি যেতেই যেন পড়ার গতি ১০% থেকে ১০০% করে ফেললেন,, আমি তো বুজতে পারছিলাম আসলে উনি আমার সাথে কথা বলবেন না বলে এমনটা করছে,,,, আমি তার কাছে গিয়ে হাল্কা একটা কাশি দিয়ে বলে উঠলাম,,,,
-ভাইয়া কি পড়ছেন??,,
রেহান ভাইয়া আমার কথার কোন উত্তরি দিলেন না বরং পড়ার গতি আরও বাড়িয়ে দিলেন ,,,, তার কোন উত্তর না পেয়ে আমি আবার বললাম,,
-কি পড়ছেন ভাইয়া,,,
তাও কোন উত্তর পাই না,,,এভার সত্যি অনেক রাগ হচ্ছিল,,উনি এমন ভাব করছেন যেন এখানে কেউ নাই?? তাই আমি তার ধারনাটাকে ভুল প্রমান করতে তার গালে জোরে একটা kiss করে তারাতারি করে ব্যাগটা হাতে নিয়ে এক দৌড়,,,,,,,,,

(এই গল্পটার লেখিকা আমি “ArobiArVy” অনেক আপুরা অনেক গ্রুপে বিভিন্ন নামে গল্পটা পোস্ট করছ,,, তাদের বলতে চাই অন্যের পোস্ট কপি না করে নিজেরা নিজেদের মতো ট্রাই কর,,,,,,☺)

দুপুরবেলা স্কুল থেকে ফিরে গোসল করে সুন্দর করে পরিপাটি হয়ে রেহান ভাইয়ার রুমে গেলাম গিয়ে দেখি রেহান ভাইয়া নেই,,,তারপর বুজলাম উনি ওয়াশরুমে শাওয়ার নিচ্ছেন,, আমি ওয়াশরুমের দরজাটার কাছে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কথা বলতে লাগলাম,,,
-রেহান আপনে এত্তখনে গোসল করছেন,,, আমি স্কুল থেকে এসে গোসল করে, ভাত খেয়ে, সাজুগুজু করে আপনার রুমে এসে পরেছি আর আপনে এখনো শাওয়ার নিচ্ছেন,, ?
অপর পাশ থেকে কোন উত্তর পেলাম না,,, বেটা দেখি ভালই রেগে আছে আমার উপরে, তাকে আরও রাগিয়ে দিলে কেমন হয়?? আমি মুচকি হাসছি আর উনাকে বলছি,,,,
– জানেন আজকে আসার পথে না একটা ছেলেকে দেখেছি,,,অনেক হ্যান্ডসাম অনেক হট,,??
কথাগুলো বলছি আর মুচকি হাসছি,, হট কথাটা শোনার পরেই উনি ঠাস করে ওয়াশরুমের দরজাটা খোলে আমার হাতটা শক্ত করে ধরে এক টানে শাওয়ারের নিচে দাড় করিয়ে দিলেন ,, পানিতে আমার সব সাজ নষ্ট হয়ে গেল আমি উপরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনি আমার একদম কাছে এসে দাড়িয়ে আছেন আর আমার দিকে অপলকভাবে তাকিয়ে আছেন ,,উনার ঠোঁটগুলো থেকে পানি বেয়ে আমার মুখে পরছে,, পানিতে ভেজে দুইজনের শরীর একদম টইটুম্বুর হয়ে গেছে আমি আরও একটু ভালো ভাবে উনার দিকে তাকাতেই দেখলাম উনার চোখগুলো লাল হয়ে আছে ,,,, অনেক সময় ধরে কান্না করলে যেমনটা হয়ে ঠিক সেইরকম,,,?উনি আমার মুখটা উপরের দিকে উঠিয়ে তার ঠোঁট গুলো দিয়ে আমার ঠোঁট গুলেকে স্পর্শ করার জন্য আস্তে আস্তে মাতা এলিয়ে দিতেই চাচি ডাকে উঠলেন,,
-রেহান,,,,,,,,রেহান তারাতারি খেতে আয়,,,
-হুম্মম আসছি আম্মু,,,
কথাটা বলেই উনি আমার হাতটা ছেড়ে দিলেন,,,আমি আর দেরি না করে ওখান থেকে কেটে পরলাম,,?

সেদিন বিকেল বেলা সবাই ঘুরতে যাওরার প্লেন করছিল,,, সবাই রেডি অনেক সুন্দর লাগছিল সবাইকে তার মধ্যে অন্যতম লাগছিল উনাকে,, সাদা শার্ট পরেছিলেন চোখে কালো চশমা, হাতে ব্রেন্ডের একটা ঘড়ি,,, সব মিলে অসাধারন লাগছিল তাকে,,? সবাই রেডি হয়ে নিচে নেমে গাড়ির জন্য ওয়েট করতে লাগলাম একসাথে দুটা গাড়ি এসেছে সবাই যার যার মতো গাড়িতে উঠে যাচ্ছে আমি কিছু না ভেবে রেহান ভাইয়া যে গাড়িতে উঠেছেন সেই গাড়িতে যেইনা উঠার জন্য পাটা বারিয়েছি অম্নি রেহান ভাইয়া আমাকে থামিয়ে দিয়ে মিঠি আপুকে ডাক দিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে নিলেন, ,,তারপর উরা চলে গেল আমি শুধু গাড়িটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম মনে অজান্তেই চোখ বেয়ে পানি পরতে লাগল,,,অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম উনার এরুপ আচরনে,???,,,,,তারপর আমি অন্য গাড়িতে উঠে গেলাম,,

আমরা একটা পার্কে গিয়েছিলাম অনেক সুন্দর ছিল পার্কটা,, সব কাজিনরা বসে আছি হতাৎ রেহান ভাইয়া সবার জন্য আইস্ক্রিম নিয়ে এলেন,,, যেহেতু আইস্ক্রিম আমার খুব প্রিয়?? তাই আইস্ক্রিমগুলো দেখার সাথে সাথে সবার আগে আমি দেওয়ার জন্য হাত বাড়িয়েছিলাম,,, রেহান ভাইয়া একে একে সবাইকে দিচ্ছে কিন্তু আমাকে দেওয়ার নাম নেই আমি সেই কখন থেকে উনার সামনে হাত পেতে আছি উনি দেখেও না দেখার বান করছেন,, এক পর্যায় আইস্ক্রিম শেষ,,, আমি উনার দিকে পলকহীনভাবে তাকিয়ে আছি মিঠি আপু আমার অবস্থা দেখে রেহান ভাইয়াকে বলে উঠলেন,,
– ভাইয়া নিসা আইস্ক্রিম পায় নাই তো?
উনি অন্যদিকে তাকিয়ে আইস্ক্রিম খেতে খেতে বললেন,,,,
-নিসার পা আছে ও নিজে গিয়ে আইস্ক্রিম আনতে পারে,,,,
তখন আমি বুজেছিলাম আসলে রেহান ভাইয়া ইচ্ছা করেই আমার জন্য আইস্ক্রিম আনেননি,,,আমি অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম ঐ দিন নিজের চোখের পানি আড়াল করতে পারছিলাম না তাই সবার সামনেই কেঁদে দিয়েছিলাম??,,,,,,,,,চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে