Monday, October 6, 2025







তোমাকে বলার ছিল পর্ব-০৫

তোমাকে বলার ছিল…
পঞ্চম পর্ব
-বল আজ কোন চ্যাপ্টার পড়তে চাও ?
– তোমার গলা এরকম শোনাচ্ছে কেন ? তোমার কি শরীর খারাপ ?
– না আমি ঠিক আছি I সুজন ক্লান্ত কন্ঠে বলল
– ভিডিও টা একটু অন করো তো
– কেন ?
– করই না
সুজন ভিডিও অন করেছে I যথাসম্ভব চেষ্টা করছে নিজেকে স্বাভাবিক দেখানোর I তবু ওর চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে শরীর বেশ খারাপ I তৃণা একটু চমকালো I তবে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করল না I স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল
– বাসায় থার্মোমিটার আছে ?
-আছে হয়তো I কেন ?
– নিয়ে আসো তো
সুজন বাধ্য ছেলের মত উঠে ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে এলো I টেবিলের উপর রেখে থার্মোমিটার বের করল I ডিজিটাল থার্মোমিটার, আগেকার দিনের মতন নয় যে; মুখে দিয়ে বসে থাকতে হবে I চট করে টেম্পারেচার মেপে সুজন নিজেই অবাক হয়ে গেল I
– কত ?
– 103
– আচ্ছা I জ্বরের ওষুধ আছে ?
সুজন বক্স এ উঁকি দিয়ে বলল আছে I
– হুম I তুমি খেয়েছো কিছু ?
– কখন ?
– সেটা তো আমি জানতে চাচ্ছি কখন খেয়েছো ?
– মনে নেই
তৃণার খুব বিরক্ত লাগলো I কি অদ্ভুত ছেলে রে বাবা I কখন খেয়েছে সেটাই মনে করতে পারছে না I তৃণা বিরক্তি চেপে বললো
– ঠিক আছে মনে করতে হবে না I তুমি অনলাইনে কিছু অর্ডার দিয়ে দাও I
সুজন ফোন হাতে নিয়ে বসে রইল I তৃণা তাড়া দিয়ে বলল
– কি হল তাড়াতাড়ি করো
– কি অর্ডার করবো বুঝতে পারছিনা
– আমি বলে দিচ্ছি I একটা চিকেন স্যান্ডউইচ I গ্রিল চিকেন মেনশন করে দাও I আর সঙ্গে অরেঞ্জ জুসI
সুজন অনেকটা সময় নিয়ে অর্ডার করলো I তারপর বলল
– তুমি কি করে জানলে এগুলো খেতে ভালো লাগবে ?
– জ্বরের সময় কোন কিছুই খেতে ভালো লাগেনা I আমার যখন জ্বর হয়, আমি অনেক রকম খাবারের কথা ভাবি I কিছুই ভালো লাগেনা I তখন মনে হয় এই দুটো খেলে খুব ভালো লাগবে I
সুজন হাসলো I বলল , চলো পড়া শুরু করি I খাবার না আসা পর্যন্ত তোমার পড়া ধরি I
সুজন দেশ কায়দা করে কিছু প্রশ্ন করল আগের দিনের পড়া থেকে I তৃণা সাবলীলভাবেই উত্তর দিল I
সুজনের মুখ আনন্দে ঝলমল করে উঠল I খুশি হয়ে বলল
-বাহ I বেশ ভালো পড়িয়েছি বল
তৃণা মনে মনে হাসলো I এই চ্যাপ্টারটা ওর আগে থেকেই পড়া ছিল I পড়ানোর কথা ও বলেছিল শুধুমাত্র সুজনকে ব্যস্ত রাখার জন্য I পরীক্ষার 3 মাস আগে হিয়া এমন একটা কান্ড করলো I ছেলেটার রেজাল্ট না খারাপ হয়ে যায় I একটা অপরাধবোধ কাজ করছিল তৃণার মধ্যে I
– তাই তো মনে হচ্ছে I মনে হয় তোমার দরজায় কেউ এসেছে I দেখো খাবার চলে এসেছে কিনা
সুজন উঠে খাবার আনতে গেল I তৃণার ও কিছু খাওয়া হয়নি দুপুর থেকে I খিদে পেয়েছে খুব I রান্নাঘরে গিয়ে দেখতে হবে কিছু আছে কিনা I প্রতিদিন বাইরে খাওয়া পোষায় না I আজ ও বাড়িতে কেউ নেই I সবাই গেছে বৌভাতের অনুষ্ঠানে I সুজন খাবার নিয়ে ফিরে এলো I একহাতে খাবারের বক্স অন্য হাতে জুসের বোতল I সুজন খাবার টেবিলে রেখে বললো
-আরেকটু পড়া ধরি
– না তুমি আগে খেয়ে নাও I তারপর ওষুধ খাও I
– একা একা খেতে ইচ্ছা করছে না I ছোটবেলায় আমার যখন জ্বর হতো মা আমার পাশে বসে খাইয়ে দিতেন I
– তুমি মাকে খুব মিস করছো তাই না ? ফোন করে নাও একটা I কিংবা ভিডিও কলে কথা বলতে পারো; আমি রেখে দেই ?
– না না I মা-বাবা ইউরোপে গেছে I বেড়াতে I আমার জ্বরের কথা বলিনি; শুধু শুধু টেনশন করবে
– ও আচ্ছা I তাহলে আর কি করা I দাঁড়াও কেউ বোধহয় এসেছে , আমি একটু দেখে আসি I
গেট খুলে তৃণা হতভম্ব হয়ে গেল I ওর জন্য একটা পার্সেল এসেছে I তৃনা বললো
– আমি তো কিছু অর্ডার করিনি I
লোকটা বলল আপনার ঠিকানাই দেয়া আছে I আর পেমেন্ট করা হয়ে গেছে I
তৃণার মনে পড়ল সুজন প্রায়ই হিয়ার জন্য কবিতার বই সহ নানা উপহার পাঠাতো I ওর বাড়িতে সমস্যা হবে বলে তৃণার ঠিকানায় পাঠাতো I তৃণা খাবার নিয়ে ফিরে গিয়ে বলল
– তুমি খাবার পাঠালে কেন ?
– একা একা খেতে ইচ্ছা করছিল না I চলো খাওয়া শুরু করি
খাওয়া শেষ করে , ঔষধ খেয়ে সুজন বলল
– আজকে আর পড়াতে ইচ্ছা করছে না
– ঠিক আছে পড়াতে হবে না তুমি বরং রেস্ট নাও
– তুমি কি ফোন রেখে দিচ্ছ ?
– হ্যাঁ তুমি ঘুমাও
-আমার ঘুম আসছে না I একটু কথা বলবে তৃণা ? আজকে বাসায় ও কেউ নেই I
-আচ্ছা ঠিক আছে I তুমি আরাম করে বস I আর বারান্দার দরজা টা বন্ধ করে দাও I ঠান্ডা লাগছে না ?
সুজন খেয়াল করলো সত্যিই তো বারান্দার দরজা খোলা তাই এত ঠান্ডা লাগছিল I কি অদ্ভুত খেয়াল করা হয়নি I তৃণা বললো
– চা খাবে ?
– না চা খেলে আর ঘুমাতে পারবো না
– আমি যদি একটু চা নিয়ে আসি তোমার কি সমস্যা হবে ?
– সমস্যা হবে কেন ? এটা স্বাধীন দেশ তুমি চা খেতেই পারো I একথা বলে ও নিজেই হেসে ফেললো
তৃণা হাসতে হাসতে বলল দাঁড়াও আমি একটু চা নিয়ে আসি
দূরে কোথাও বৃষ্টি হয়েছে বাতাসে ঠান্ডা ভাবI তৃণা আয়েশ করে চা এ চুমুক দিয়ে বলল
– তুমি গ্রাজুয়েশনের পর কি করতে চাও সুজন ?
– পিএইচডি করার ইচ্ছা I এখানে বোধ হয় থিসিস করা হবে না I মাস্টার্স করতে US চলে যেতে পারি I তুমি কি করতে চাও ?
-আমি ? আমার কথা বাদ দাও I
– কেন ? বাদ দেবো কেন ?
– আমি সামান্য মানুষ I পাস করে একটা চাকরির ধান্দা করব I যাতে একটু নিজের মতো করে থাকতে পারি I
-তুমি থিসিস করবে না ?
– মনে হয় না I
– কেন ? তুমি এত ব্রাইট স্টুডেন্ট I তোমার তো রিসার্চে যাওয়া উচিত I
– এসব বিলাসিতা আমাকে মানায় না I তাছাড়া আমার অতো অ্যাম্বিশন ও নেই I আমি সাধারণ জীবনেই খুশি I
– কি যেন একটা কবিতা পড়েছিলাম এরকম I মনে করতে পারছিনা I
তৃণা একটু হাসলো I তারপর বলল
– ঘুমিয়ে পড়ো I অনেক রাত হয়েছে I
– আচ্ছা I কালকে আবার কথা হবে I
ফোন রেখে তৃণা চা নিয়ে বারান্দায় চলে গেল I হিয়া কে একটা ফোন করা দরকার I একটু আগে ট্রাই করেছিল; সুইচড অফ দেখাচ্ছে I
এই বারান্দাটা একসময় ওর শোবার ঘর ছিল I এখনো মনে আছে বেশ অনেকদিন ও এখানে ছিল I দাদি বোধহয় কারো কাছ থেকে শুনেছিলেন I আচমকা একদিন দাদি চলে আসায় চাচা চাচি খুব অপ্রস্তুত হয়েছিলেন I চাচা-চাচির ঘর, টুম্পার ঘর ছাড়া ও এ বাড়িতে আরেকটা শোবার ঘর আছে I সেটাকে গেস্ট রুম বানিয়ে রাখা হয়েছে I চাচির গ্রামের বাড়ি থেকে প্রায়ই আত্মীয়-স্বজনরা আসে , তখন ওখানেই থাকতে দেয়া হয় I দাদি আসার পর ও ঐ ঘরটায় খুলে দেয়া হয়েছিল I কিন্তু দাদি ওখানে থাকলেন না I ব্যাগ নিয়ে বারান্দায় চলে এলেন তৃণার কাছে I বললেন
-আমি এখানেই ঘুমাবো
– আম্মা এখানে আপনার কষ্ট হবে
– আমার ছোট বাচ্চাটার যদি এখানে কষ্ট না হয় I তাইলে আমার কষ্ট হবে কেন ? তুমি রেহানা আর টুম্পা কে নিয়ে এখানে আসো I আমার জরুরী কথা আছে I চাচা চাচি ভয়ে ভয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালেন I
– টুম্পা কই ? ওরে ও ডাক দাও I
চাচি টুম্পাকে ডাকতে গেলেন I তৃণা উঠে চলে যেতে চাইলো I দাদি হাত ধরে ওকে টেনে বসলেন
– শোনো সামাদ , একটা কথা তোমারে পরিষ্কার কইরা বইলা রাখি , এই বাড়িটা কিন্তু তোমার আব্বা বানাইছেন I এখনো এ বাড়ির দলিল আমার কাছে I উনি একতলা-দোতলা বানাইছিলেন দুই ছেলের জন্য I জহির যা করছে তারপরে ওরে আমার দেওয়ার রুচি নাই I কিন্তু তুমি যদি মনে করে থাকো যে এইটার দখল তুমি পুরা নিবা তাইলে ভুল করবা I
– আম্মা বাচ্চাদের সামনে এইসব কথা বলা কি ঠিক ?
দাদি গর্জে উঠলেন
– ঠিক হইব না কেন ? ওরাও জানুক I কোনকিছু তো লুকানোর নাই I তিন তালা তুমি বানাইছো তুমি সেই খানে থাকো I একতলা দোতলা তুমি আমাকে বুঝিয়ে দাও I তোমার উপর ভরসা করে আমি বাচ্চাটারে এইখানে পাঠাইছি I আর তুমি ওকে বারান্দায় ফালায়া রাখছো ? আমি মরলে তো লাথি মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিবা I
– ছি আম্মা এসব কি বলেন
– ঠিকই তো বলি I কোন আক্কেলে তুমি মাইয়াটারে বারান্দায় রাখছো ? নিজের মেয়েরে তো রাখো নাই I
-আমি আজকেই তৃণার ঘরের ব্যবস্থা করে দিব I আপনি মাথা ঠাণ্ডা করেন I
এই ঘটনার পর তৃণা ঘর পেয়েছিল ঠিকই I কিন্তু চাচা চাচির আচরণ আরো খারাপ হয়ে গেছিল I উনাদের ধারণা তৃণাই দাদিকে উস্কে দিয়েছিল I তৃণা তখন ক্লাস এইটে I বৃত্তি পরীক্ষার সময় ওকে কোচিং করতে দেয়া হলো না I ক্লাস নাইনে সাইন্স নিয়ে পড়তে যাওয়ার সময় ও নানান ঝামেলা হল I ক্লাস এইটে বৃত্তি পাওয়ার পর পাড়ার দুটো ছেলে মেয়েকে পড়াতো তৃণা I তাই দিয়ে ওর খরচ চলে যেত I এসএসসির সময় বাড়ি থেকে সাইন্স নিতে নিষেধ করেছিল কিন্তু স্কুলের টিচারদের চাপে পড়ে আর কিছু করতে পারলেন না I স্কুলের টিচাররা অনেক সাহায্য করেছে তৃণা কে I কোনরকম প্রাইভেট না পড়েই অনেক ভাল রেজাল্ট করেছে ও I কিন্তু ঝামেলা বাধলো কলেজে ভর্তির সময় I বাড়ি থেকে কিছুতেই ওকে সাইন্স নিয়ে পড়তে দেবেনা I যদিও ও সরকারি কলেজেই পড়তে চাচ্ছিলো I কলেজের খরচ ও নিজেই দেবে বলেছে I তবু বাড়ি থেকে রাজি হচ্ছিল না I আসলে চাচি চাইছিলেন না তৃণার ভালো কিছু হোক I টুম্পাকে নিয়ে সারাক্ষণই একটা হীনমন্যতায় ভুগছিলেন উনি I অগত্যা বাধ্য হয়ে আর্টস নিয়ে পড়বে ঠিক করল তৃণা I যখন কলেজে ভর্তির জন্য লাইনে দাঁড়ালো I অসম্ভব কান্না পাচ্ছিল ওর I হঠাৎ করেই তৃণা টের পেল কেউ একজন ওর হাত ধরে লাইন থেকে টেনে বের করে নিয়ে আসছে I তৃণা অবাক হয়ে গেল I বলল
– আন্টি আপনি ?
– তুই এখানে কি করছিস ? এটাতো আর্টসের লাইন I
তৃণা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো I ওর গলা ধরে আসছে I কোনমতে বলল
– আমি জানি I
সুলতানা খেকিয়ে উঠে বললেন
– জানি মানে কি ? তুই কি আর্টস এ ভর্তি হবি নাকি ? এত ভালো রেজাল্ট তোর I চল আমার সঙ্গে I
তৃণা মিন মিন করে বলল
– আন্টি আমার বাসা থেকে….
– বুঝেছি আমি I চল আমার সঙ্গে I
সুলতানা একরকম জোর করেই তৃণাকে সায়েন্সে ভর্তি করলেন I ওর কোন নিষেধ শুনলেন না I বললেন
– বেতন ফেতন তো সব তুই দিবি তাহলে আবার ওদের অত পোড়ানি কিসের ?
– আন্টি সাইন্সে পড়লে টিচার রাখতে হবে আমি এতটা পারবোনা I
– চুপ কর তুই I হিয়ার জন্য তো আমি টিচার রাখবই I সে তুই ওর কাছ থেকে দেখে নিস I

একটা কথা সেদিন তৃণা বুঝেছিল যে ভদ্র মহিলা তাকে সত্যিকারের স্নেহ করেন I মনটা কৃতজ্ঞতায় ভরে গিয়েছিল I সেদিন সুলতানা তৃণাকে অনেক বোঝালেন I তৃণা বুঝেছিল এই পৃথিবীতে নিজের অধিকারের জন্য নিজেকেই লড়তে হয় I সেদিনের পর নিজেকে বদলে ফেলেছিল তৃণা I এমনিতে ও বাকপটু , আত্মবিশ্বাসী কিন্তু বাড়িতে সব সময়ই মাথা নিচু করে থাকতো I সেদিনের পর তৃণা প্রতিবাদ করতে শিখেছিল I আর যার জন্য এসব সম্ভব হয়েছিল আজ তার মেয়েকে তৃণা কিছুতেই উচ্ছন্নে যেতে দেবে না I কিছুতেই না I

হিয়াটা বুঝলো না I এত ভালো একটা ছেলে I ওর জন্য এত কষ্ট পাচ্ছে I কি করে পারল ও এমন করতে I তৃণার মনে আছে, হিয়ার জন্মদিনে অনেকগুলি কবিতার বই , একটা শাড়ি আর অনেক চকলেট পাঠিয়েছিল সুজন I হিয়া খুব বিরক্ত হয়েছিল I শাড়ীটা দেখে বলেছিলো

– এহ ! এরকম বুড়ো মানুষের শাড়ি কেউ দেয়
-এমন করছিস কেন শাড়িটা তো সুন্দর
– তোর পছন্দ হবে তুই রেখে দে
– কি যা তা বলছিস I আমি কেন রাখব
– শোন নেক্সট দিন এটা পড়ে ওর সঙ্গে দেখা করতে যাবি
– আর কাজ নেই আমার এ বুড়ো মানুষের শাড়ি পড়বো
তৃণা খুব আগ্রহ নিয়ে কবিতার বইগুলো দেখছিল I একটা বইয়ের প্রথম পাতায় সুজন উইশ করেছে ওকে I কি সুন্দর করে একটা কবিতা লিখেছে

যেদিন তুমি আপনি ছিলে একা
আপনাকে তো হয় নি তোমার দেখা।
সেদিন কোথাও কারো লাগি ছিল না পথ-চাওয়া;
এপার হতে ওপার বেয়ে
বয় নি ধেয়ে
কাঁদন-ভরা বাঁধন-ছেঁড়া হাওয়া।

আমি এলেম, ভাঙল তোমার ঘুম,
শূন্যে শূন্যে ফুটল আলোর আনন্দ-কুসুম।
আমায় তুমি ফুলে ফুলে
ফুটিয়ে তুলে
দুলিয়ে দিলে নানা রূপের দোলে।
আমায় তুমি তারায় তারায় ছড়িয়ে দিয়ে কুড়িয়ে নিলে কোলে।
আমায় তুমি মরণমাঝে লুকিয়ে ফেলে
ফিরে ফিরে নূতন করে পেলে।

আমি এলেম, কাঁপল তোমার বুক,
আমি এলেম, এল তোমার দুখ,
আমি এলেম, এল তোমার আগুনভরা আনন্দ,
জীবন-মরণ তুফান-তোলা ব্যাকুল বসন্ত।
আমি এলেম, তাই তো তুমি এলে,
আমার মুখে চেয়ে
আমার পরশ পেয়ে
আপন পরশ পেলে।

তৃণা বলেছিল
– তোর ওকে একটা রিটার্ন গিফট দেওয়া উচিত
– যা না দিয়েছে এর আবার রিটার্ন গিফট I তুই একটা কিছু কিনে দিস I কোন কবিতার ফবিতার বই I
অগত্যা তৃণা নিজেই একটা কবিতার বই কিনে হিয়াকে দিয়ে বলেছিল
– কিছু একটা লিখে দে অন্তত
– ও তুই লিখে দিয়ে দে I আমি অতসব পারবোনা
**********
সুজন ভেবেছিল আজ খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বে I কিন্তু ফোনটা রাখার পর যেন দু চোখের ঘুম উড়ে গেছে I জ্বরটা বোধ হয় ছেড়ে গেছে সেইসঙ্গে ঘুমটাও পালিয়ে গেছে I সুজন অন্যমনস্ক ভাবে ওর বইয়ের তাক থেকে কবিতার বইগুলো নামাতে লাগলো I হঠাৎই একটা বইয়ে চোখ আটকে গেল I এই বইটা হিয়া ওকে দিয়েছিল I হিয়ার জন্ম দিনের পর I প্রথম পাতায় একটা কবিতা লেখা I কবিতাটা পড়ে বিমোহিত হয়ে গিয়েছিল সেদিন সুজন I হিয়া লিখেছিল
আজ তোমাকে আমার মাঝে পেয়ে
মনে হচ্ছে হৃদয় মাঝে উঠলো জোয়ার ধেয়ে

তুমি এলে লাগলো আমার ঘোর
তুমি এলে ঘুচলো আমার অপেক্ষার প্রহর

তুমি এলে উঠল সূর্য ভরে
তুমি এলে আধার গেল সরে
তুমি এলে কাটলো অন্ধকার
তোমার মাঝে আমায় পাওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার I

কবিতাটা পড়ে সঙ্গে সঙ্গেই হিয়াকে ফোন করেছিল সুজন I ও ধরেনি I বাধ্য হয়েই টেক্সট করেছিল
– এই কবিতাটা কার লেখা হিয়া ?
– আমার
– তুমি কবিতা লেখ !
– আগে লিখতাম না এখন লিখি I শুধু তোমার জন্য I

চলবে……..

লেখনীতে
অনিমা হাসান

এই পর্বে দুটো কবিতা দেয়া হয়েছে I প্রথমটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বলাকা থেকে নেয়া আর শেষেরটা আমার নিজের লেখাI খুবই বিচ্ছিরি কাঁচা হাতের লেখা I প্রাসঙ্গিক আর কোন কবিতা না পাওয়ায় এটাই দিতে হলো I আশা করছি পাঠকেরা বিরক্ত হবেন না I

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ