তৈলচিত্রের কলঙ্কিনী পর্ব-০১

0
943

#তৈলচিত্রের_কলঙ্কিনী
#পর্ব_১
#লেখিকা_মুসফিরাত_জান্নাত

ঘন্টা কয়েক আগে যেই লোকটা তাকে ধর্ষণ করেছে,এখন তার পাত্রী হয়ে বসে আছে রায়া। হ্যাঁ আগে সে ধর্ষিতা,তার পরে পাত্রী।এই বিষয়ে অবগত হওয়ার পর থেকে পাংশু মুখ করে বসে বসে আছে সে।তার পাংশু বদন খানিকে আরও খানিকটা পাংশুটে করে দিতেই যেনো রায় হলো এই মুহুর্তে তাদের বিয়ে হবে।কথাটা কর্ণগোচর হতেই মাথায় ব’জ্রপা’তের আঘাত হানে যেনো।নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারে না সে।বিষ্ময়ে চক্ষুদয় ফে’টে পড়তে চাইছে।তার বাবা কীভাবে পারলো এমন একটা সিদ্ধান্ত নিতে?যেই লোকটা কিনা ঘন্টা কয়েক আগে তার সন্মান খুইয়ে দিয়েছে এমন একটা মানুষের হাতে সারাজীবনের জন্য তাকে কীভাবে তুলে দিতে রাজী হলো তার বাবা?ব্যাপারটা ভাবতেই রাগে পুরো শরীর জ্ব’লে ওঠে তার।বিষয়টা হজম করতে পারে না সে।আবার চিৎকার করে বাড়ি মাথায়ও তুলতে পারে না।মেয়েদের যে এভাবে চিৎকার করা বারণ।আবার এমন একটা সিদ্ধান্ত মেনে নেয়াও আপত্তিকর।আজকের সকালটা যে কোন কু লক্ষনে মুখ দেখে শুরু হয়েছিলো তার কে জানে?একের পর এক আ’ঘাত যাচ্ছে মস্তিষ্কের উপর দিয়ে।দু হাতে মাথা চে’পে ভাবতে থাকে সে।আজ সকালটাও বেশ ফুরফুরে ছিলো তার জন্য।কিন্তু অঘটনটা শুরু হয় স্কুলে যাওয়ার সময়টা থেকে।স্কুলের যাত্রাপথে কাঁচা মাটির বড় সড়কে পা ফেলতেই ভয়ে গুটিয়ে গিয়েছিলো সে।সামনে মোড়ের শূন্য চা স্টলে বসে রয়েছিলো জাহেদ,সাথে তার দুইটে চ্যালা।বহুদিন যাবত ওদের দল উত্যক্ত করে চলেছে তাকে।এদের জ্বালাতনেই সপ্তাদসী রায়াকে বিয়ের পিঁড়িতে বসানোর আয়োজন চলছিলো।বিয়ের দিন তারিখ ঠিকঠাক। বয়সটা আঠারো ছুঁলেই বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।একরাশ বিরক্তি জেঁকে বসে রায়ার মাঝে।মাথার ঘোমটা আরও একটু দীর্ঘ করে লম্বা পা ফালায় মহাবিদ্যালয় অভিমুখে।

বড় ছাতিম গাছ অতিক্রম করতেই হাঁক ছাড়ে জাহেদ।

“আরে রায়া যে।কনে যাও?এদিকে আসো।”

দাঁত কেলিয়ে গা জ্বালানো হাসি দেয় নোংরা পুরুষটা।সিগারেটের আগুনে পোড়া কালসেটে ওষ্ঠের ফাঁক গলিয়ে ধবধবে সাদা দাঁত দৃশ্যমান হয়।আড়চোখে পরখ করে প্রস্থান করতে উদ্যত হয় রায়া।কিন্তু ভাগ্য তার সুবিধার নয়।এক লাফে বেঞ্চি থেকে নেমে চিতা বাঘের ন্যায় দৌড়ে সামনে আসে জাহেদ।মুখ গম্ভীর করে শুধায়,

“এ কেবা বেদবি রায়া।বড়রা ডাকলে না হুন্যাই চইল্যা যাও।এই হিক্কা পাইছ্যাও পড়ালেহা হইরা?”

রাগে গা জ্বলে যায় রায়ার।র’ক্ত বর্ন চক্ষু তুলে তাকায় জাহেদের দিকে।আবারও ফিচেল হাসি দেয় জাহেদ।ব্যঙ্গ করে বলে,

“ওমনে তাকাইয়ো না মাইয়া।ভয়ে ভষ্ম হইয়া যাইতেছি।”

চোখ মুখ আরও শক্ত করে ফেলে রায়া।বিরক্তি কপাল ছাপিয়ে ওষ্ঠাগত হয়।

“পথ ছাড়েন।কলেজ যাব আমি।”

কর্ণগোচর হয় রিনরিনে কন্ঠ।তাৎক্ষণিক জবাব দেয় জাহেদ,

“হে তাতো যাইবাই।তোমার হারাজীবন কলেজে যাওয়ার ব্যবস্থাই হরব্যার আচ্চি।বিয়্যা হইয়া গ্যালে তো আর যাইব্যার পারব্যানা।”

কেঁপে ওঠে রায়ার অন্তরআত্মা।কি করতে চাইছে লোকটা?আবারও ফিচেল হাসে জাহেদ।সাথে তাল মেলায় সুজন ও নয়ন,তার খাস চ্যালা।রায়ার দিকে এক হাত বাড়িয়ে দিয়ে জাহেদ বের করে তার কুৎসিত কন্ঠ,

“পরের ঘরে চইল্যা যাইব্যা।বিয়্যার আগে এল্লা আদর সোহাগ করমু না তাই কি হয়?চলো আমাগারে সাথে।”

নোংরা স্পর্শ পেতেই কষিয়ে এক চ ড় বসিয়ে দেয় জাহেদের খসখসে গালে।আকষ্মিক ঘটনায় ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে জাহেদ।তার পৈশাচিকতা আরও বৃদ্ধি করে খপ করে ধরে রায়ার হাত।কিছু বুঝে ওঠার আগেই হ্যাঁচকা টানে তাল হারিয়ে ফেলে সে।জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হল তাকে।দিনের স্বচ্ছ আলোয় বিষয়টা গুটি কয়েক মানুষের দৃষ্টি গোচর হলো।লোকটার তুলে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য স্পষ্ট,মেয়েটার সর্বনাশ হতে যাচ্ছে।সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে ঘটনা প্রচারে মন দিল তারা।এ কান ও কান করে ঘটনা ছড়িয়ে পড়ল দ্রুত।

কন্যার গতরে লাগলো ধ’র্ষনের কালসেটে কালিমা।দুধের ন্যায় শুভ্রা রঙা শরীরে র’ক্তিম আঁচরে ক্ষ’তবিক্ষত করে দিলো কেমন নির্মমতায়! বদনখানি ছেয়ে গেলো বিষাদের পাহাড়ে। অক্ষিদুটো ধূ-ধূ মরুভূমির ন্যায় শূন্য,কোথাও যেন কিছু নেই।শরীরের চকচকে নেভী ব্লু রঙের জামাটা ছিঁ’ড়ে ফেলে দিয়ে মেয়েটার শরীরে এঁকে দিলো ধর্ষনের লোলুপ্ত ছাপ।সাদা পায়জামায় জমেছে ছোপ ছোপ র’ক্তের স্রোত।এতক্ষণের এত ধস্তাধস্তিতে রায়ার ক্লান্তি ভর করেছে শরীর জুড়ে।ধর্ষকরা পৈশাচিক সম্ভোগ শেষে তাকে ছুড়ে ফেলে চলে গেল।তারপর ক্লান্ত শরীরে নিথর দেহটাকে টেনে নিজ বাড়ি অব্ধি নিয়ে এসেছিলো সে।তারপরের ঘটনা আর কিছু মনে নেই।সঙ্গা হারিয়ে নেতিয়ে পড়েছিলো বিধ্বস্ত দেহে।ঘটনাটা মাথায় আসতেই উষ্ণ র’ক্তস্রোতের ধারা বইয়ে গেলো রায়ার মস্তিষ্ক জুরে।এই ধর্ষকের সাথেই কিনা তার সংসার করতে হবে।কীভাবে পারবে সে এটা মেনে নিতে?তবে কী পরিবারের সিদ্ধান্তে নিজের অস্তিত্ব বিসর্জন দিতে হবে?

বর্তমান ঘটনায় হতবিহ্বল রায়ার বোন রোজী তালুকদার।হায়েনাদের খপ্পড়ে পড়ে কতটা ক’ষ্ট পেয়েছে তার বোনটা ভাবতেই হু হু করে কেঁদে উঠলো তার মন।অথচ চোখ তার শূন্য।ধর্ষিতা মেয়েমানুষ মানেই সমাজের চোখে লজ্জা।কীভাবে এই লজ্জা ঢাকা যায় সেজন্যই এই বিয়েটার আয়োজন করেছে তার বাবা মা।ঘটনা কাল থেকে ঘন্টা দুয়েকের ব্যবধানে যে বিচার সভা বসেছিলো।তাদের ভাগ্য ভালোই বলতে হয়।গ্রাম্য সমাজে কোনো বিষয় নিয়ে এতো দ্রুত বিচারসভা না বসলেও এই বিষয়টা নিয়ে বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছিলো।বিচারের রায় অনুযায়ী আজ রাত্রিতেই বিবাহ পড়ানো হবে রায়া ও জাহেদের।এতে নাকি রায়ার কলঙ্ক ঘুচে যাবে।হিতাকাঙ্ক্ষীরা বুঝিয়ে দিল এটা ছাড়া উপায়ও নেই।মেয়ের আর অন্যত্র বিবাহ হবে না।সমাজে মুখও দেখাতে পারবে না কেও।এই রায় মেনে নিলে উভয় পরিবারই লাভবান হবে।তাছাড়া জাহেদ মজুমদারের পরিবারও খারাপ নয়।অঢেল সম্পত্তির মালিক তারা।ভাতে কাপড়ে সুখেই থাকবে তার কন্যা।রায়ার পরিবারও মেনে নিল এ হাস্যকর রায়।অথচ মানতে নারাজ রায়া।
___
আরম্ভ হয়ে গেল বিবাহের আয়োজন।ব্যা’থা যুক্ত শরীরে অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের এক কোণায় ঘাপটি মেরে বসে আছে রায়া।গায়ে সকালে পরিধান করা ছেড়া ইউনিফর্ম।ক্ষতস্থান নির্গত র’ক্ত শুকিয়ে গায়ের সাথে লেপ্টে আছে।দু-চোখে তার নিগূঢ় শূণ্যতা।চোখের পানি শুকিয়ে টান ধরেছে। তার জীবন সবসময় বিষাদের নদীতেই ডুবে ছিল।তবুও সেখানে নিস্তব্ধতার বাস করতে পারেনি।প্রচুর চঞ্চল ছিল মন।অথচ ধর্ষিতা শব্দটা তাকে টেনে এনে ফেলল মাঝ সমুদ্রের ঢেউয়ে।যার দরুন এই সমাজ ওই অপবিত্র মানুষটার গলায়ই ঝুলিয়ে দিচ্ছে তাকে।এখান থেকে বাঁচার উপায় কী? না-কি এভাবেই পাড় করতে হবে তার জীবন তরী?

প্রশ্নরা হামাগুড়ি খায়।অথচ উত্তরের ঝুলি শূণ্য।রায়ার মাথা ঝিম ধরে ওঠে।সতেরো বছরের জীবনটা কতটুকুই বা? ছোটো একটা জীবন তার।অথচ কষ্টে,বিষাদে পূর্ণ হয়ে অশীতিপর বৃদ্ধার ন্যায় হয়ে গিয়েছে সে।

নিজের ভাবনার মাঝে কি মনে করে উঠে দাঁড়ায় রায়া। এলোমেলো পা ফেলে যায় কিচেনে।ওকে দেখে ঘৃনায় দুরে সরে যায় তার চাচি ও অন্যরা।এসব দেখেও ভাবাবেগ শূন্য রায়া।যে মানুষগুলো একটা ধর্ষকের হাতে তাকে তুলে দিতে পারে তাদের থেকে এর চেয়ে আর কিই বা আশা করবে সে।কাওকে পরোয়া না করে একটা গ্লাস হাতে নিয়ে জগ ধরতে যায়।রায়ার আচরন ঠিক পছন্দ হয়না সবার।রায়ার দাদী রওশন আরা তালুকদারেরও যে তেমন ভালো লাগেনি ব্যপারখানা তা উনার গুমোট চেহারাতেই স্পষ্ট।হই হই করে উঠে তিনি বললেন,

“একি মেয়ে,ওই নোংরা শরীরে বাসনে হাত দিতে আসছিস কি করে?শরীর যে তোর অপবিত্র।”

দাদীর কথা শুনেও যেনো কানে নেয় না রায়া।জগ থেকে পানি ঢেলে ঢকঢক করে গলা ভিজিয়ে নেয়।
পাশ থেকে রায়ার চাচী শিউলি তালুকদার ভারাক্রান্ত গলায় বলেন,

“ছিহ!এমন মেয়ে মানুষ আর দুটো দেখিনি।ধর্ষিতা হয়েও এমন বেহায়ার মতো ওই মুখে খাবার তুলছিস কি করে বল তো?আমার তো ভাবতেই লজ্জায় মাথা কা’টা যাচ্ছে।এমন দৃশ্য দেখাটাও যে লজ্জার।”

এই প্রথম বার কণ্ঠে প্রতিবাদ তোলে রায়া।শক্ত কণ্ঠে বলে,

“চোখ দুটো বন্ধ রাখলেই তো পারেন।এই দৃশ্য আপনাকে দেখতেও হতো না।আর লজ্জায় মাথাও কা’টা যেতো না।”

“ধর্ষিতা মা* হয়েও এতো ভাব কীসের কে জানে!দেখো কথার কী শ্রী।আর কিছুদিন পরই ভালো সম্বন্ধে বিয়ে ঠিক ছিলো।এই কয়টা দিনও নিজের সম্মানটা ধরে রাখতে পারলো না।আবার মুখে খই ফোটাতে আসছে।”

পাশ থেকে তাচ্ছিল্য করে বলে রওশন আরা।দাদীর এমন কথায় ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে রায়া।রাগে শরীর রি রি করে ওঠে।তীব্র প্রতিবাদে মুখ খুলতে যাবে তার পূর্বেই কি মনে করে রান্নার কাজে ব্যস্ত কাজের মেয়ে রহিমা কথাটা টেনে নিয়ে বলে,

“এবা কইরা কতা কইয়েন না আম্মা।কেও কি যাইচা নিজের সম্মান নষ্ট হরে নাকি কন?এইডা ওর কপালের লেখন আছিলো।”

জবাবে ব্যাঙ্গাত্মক কণ্ঠে রওশন আরা বলেন,

“তাই নাকি রহিমা?পবিত্র নারীরা প্রয়োজনে নিজের প্রান বিলিয়ে দেয় তবু সম্মান খোয়ায় না।আর এই মেয়ে কলঙ্কিত হয়ে ঢ্যাং ঢ্যাং করে সারা পাড়া হেটে বাড়ি ফিরেছে।এমন মেয়েকে ওরা পুত্র বধু করে নিচ্ছে এই ঢের।এত দরদ দেখানো লাগবে না ওকে।”

কথাগুলো হয়তো মন ছুয়ে গেলো শিউলি তালুকদারের।ঠোঁটের কোনে ফুটলো তার কুটিল হাসির রেখা।এই হাসিতে যেনো নিভৃতেই শাশুড়ীকে সমর্থন করলেন তিনি।রাগে অগ্নিশর্মা হলো রায়া।হটাৎ সেখানে ছুটে এল রায়ার মা রাহেলা। ব্যস্ত কণ্ঠে রায়ার উদ্দেশ্যে বললেন,

“দেখো কান্ড,এখনো তুই গোছল করে পরিষ্কার হস নি কেনো?বিয়ের ডালা তো এসে গিয়েছে।বউ সাজবি কখন?”

মায়ের কথার জবাবে নির্লিপ্ত কণ্ঠে সে বলে,

“এতো তাড়া নেই আম্মু।এ বিয়ে করছি না আমি।”

মুহুর্তে যেনো বি’স্ফোরণ হলো সেখানে।সবার চোখ চড়কগাছ।বলে কি মেয়ে?ধর্ষিতা মেয়ে বিয়ে না দিলে এ সমাজে তারা মুখ দেখাতে পারবে না এটা কি বুঝছে না মেয়ে!

রায়ার কণ্ঠে উচ্চারিত শব্দগুলো শুনে বিচলিত হলেন রওশন আরা খন্দকার।এ কেমন ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো এই অসময়ে।হই হই করে তিনি বললেন,

“হায় হায়, এ কেমন অপয়া মেয়ে! নিজের সব যে খুইয়েছিস ওর হাতে।এখন ওকে বিয়ে করবি না কেন?সমাজে মুখ দেখাতে পারবি কেও?সম্মান যে টুকু বা বাঁচত তাও মাটিতে মিশে যাবে।”

তড়িৎ কথাটা টেনে নেয় রায়া।কাঠ কাঠ গলায় সে বলে,

“যে সম্মান খুইয়ে দিয়েছে তার হাতে তুলে দিয়েই সম্মান বাঁচাতে চাইছেন দাদী।অথচ সে নিজেই সম্মানের পাত্র নয়।”

প্রতিউত্তরে ঘোৎ ঘোৎ করে রওশন আরা বলেন,

“এসব কি ধরনের কথা রায়া।মাঝে মাঝে কাঁ’টা দিয়েই কাঁ’টা তুলতে হয়।সেজন্যই এ বিয়ে তোকে করতে হবে।”

“আমি এ বিয়ে কিছুতেই করব না।একবার প্রকাশ্যে কলঙ্কিত হয়েছি বলে বারবার নিভৃতে কলঙ্কিত হতে পারব না।একটা ধর্ষকের বউ হয়ে বাঁচাটাও কলঙ্কের।”

কথাটা সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই তাকে জোর করে টেনে এনে ঘরে নিয়ে যেতে নেয় রাহেলা।শক্ত হাতের বাধনে ক্ষ’তস্থানের ব্যথায় কুঁকিয়ে ওঠে রায়া।তবুও নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে টেনে আনতে নেয় সে।রায়া নির্লিপ্ত গলায় বলে,

“আমাকে জোর করে লাভ নেই আম্মু।একবার যখন বলেছি বিয়ে করবো না, তো আমাকে দিয়ে এ বিয়ে করানো সম্ভব নয়।”

কি ছিলো রায়ার এই কণ্ঠে?যা থমকে দিতে বাধ্য করলো তাদের।কঠোর অভিব্যক্তির রাহেলারও বুক কাঁপিয়ে দিলো যেনো।থেমে গেলো সে।চোখ সরু করে সে জিজ্ঞেস করলো,

“কি করতে চাইছিস তুই?”

“আইনের আশ্রয় নিবো আমি।আমি কখনোই এমন অপরাধীকে বিয়ে করে মুক্তি দিব না।এমনকি কোনো কিছুর বিনিময়েও না।”

রায়ার এই দৃঢ় চিত্তের আবির্ভাব দেখে তটস্থ হয় সকলে।এ কেমন রুপী রায়াকে দেখছে তারা?শান্ত মুখোভঙ্গী অথচ চোখে মুখে কেমন ছারখার করে দেওয়া অদৃশ্য শক্তি।মেয়েটির এই চেহারা যেনো ভীত করে দিলো তাদের।একে অপরের মুখের দিকে তাকালো তারা।এসব দেখেও ভাবলেশহীন রায়া।বরং তাদের ভীতগ্রস্ত চেহারা তার সাহস আরও বাড়িয়ে দিলো।অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া মানুষগুলো এতো ভীত হয়?ঠোঁট চেপে হাসলো সে।চপল পা ফেলে বেড়িয়ে গেলো সদর দরজা পেরিয়ে।তটস্থ চোখে সেদিকে তাকিয়ে রইলো তারা।হাজার চেয়েও বাধা দিতে পারলো না কেও।তাদের বাধা দেওয়ার শক্তিকে যেনো অদৃশ্য সাহস দিয়ে পুড়িয়ে দ’গ্ধ করে দিয়েছে মেয়েটি।কি করতে চলেছে সে?

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে