Sunday, October 5, 2025







তুমি রবে ২৭

তুমি রবে ২৭ . . অজ্ঞাত দানব রূপের মানুষটি এগারো বছর আগে যা পূরণ করতে পারেনি, আজ সে তা পূরণ করবেই হয়তো। এ কথা ভাবতেই মাহির নিঃশ্বাস বেরিয়ে আসছে যেন। কিন্তু সেদিন মাহি নীরবে পালিয়ে চলে এসেছিল, আজ সে কোনোভাবেই নীরব থাকবে না। মানুষটা যখন মাহির হাত বেঁধে দেওয়ার চেষ্টায় তখন মাহি পায়ের হাই হিলের আঘাত ফেলল তার পায়ের পাতাতে প্রচন্ড জোরে। আঘাতের প্রকট যন্ত্রণায় তার হাত কিছুটা শিথিল হলে মাহি এরপর কনুইয়ের মাধ্যমে আঘাত করল তার পাঁজরে। আর্তনাদে সে “আহ!” করতেই মাহি তার থেকে ছুটে গেল। সে আবার ধরতে এলে মাহি অন্ধকারের মাঝেই আন্দাজ করে এবার তার চোখে ঘুষি মারল। এখানে বেশ কিছু সময় মিলে গেল মাহির হাতে। তাকে কাবু করার উপযুক্ত সময় এখন। মাহি থামল না। মুখের কস্টেপটা খুলে ফেলে দিলো। এরপর আন্দাজের বশেই মাহি তারউপর এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি মারল। তাকে লাথি, ঘুষি মারতে থাকল আর রোষাবিষ্ট কণ্ঠে চেঁচিয়ে সে তাকে বলতে থাকল, – “নরপশুর বাচ্চা! অন্ধকারে চিপাতে পুরুষত্ব দেখাতে আসিস! এই শুয়ার! নিজেকে পুরুষ দাবি করিস তুই? পুরুষ! পুরুষের ক্ষমতা দেখাতে আসিস? আজ তোকে নারীর চন্ডীরূপ দেখাব আমি। হাতে চুরি পড়া এই চুরির ধার তোকে দেখাব।” চুরি হাত থেকে খুলে মাহি তা মুঠির মধ্যে গুঁজে আঙুলগুলোতে পেঁচিয়ে তার চোখে মুখে ঘুষি মারল। এদিকে মাহির ঝাঁঝালো চেঁচানো কণ্ঠ শুনে রাস্তা থেকে কিছু মানুষ ফোনের আলো জ্বালিয়ে মাহির কণ্ঠ অনুসরণ করে চলে এলো সেখানে। আলোতে সেই মানুষটাকে স্পষ্ট দেখতে পেয়েই এবার মাহি তার অন্ডকোষ বরাবর লাথি মেরে বসল। আর লাথি মারার সময় বলল, – “এই দ্যাখ নারীর রণমুর্তি। তোর এই পুরুষত্ব নিস্তেজ করে ক্ষমতা আমরা কতখানি রাখ দ্যাখ শুয়ার।” দানব রূপের মানুষটা লাথি খেয়ে সেখানে চেপে ধরে বসার আগেই মাহি আবারও সেখানেই লাথি মারল। চারজান লোক সেখানে জমা হয়ে গেছে। মাহিকে দেখেই তারা এক অপরের মাঝে বলাবলি করল, – “এই এটা মমিনের মেয়ে না?” মসজিদের ইমাম তোফাজ্জল ছিলেন সেখানে। তিনি উত্তর দিলেন, – “হ্যাঁ তাই তো।” এলোমেলো চুল, রক্ত লাল ভেজা চোখ আর মুখ তার। তাকে দেখে কারো আর বুঝতে বাকি নেই কী ঘটনা হচ্ছিল এখানে। মাহি সেই দানবটার মুখ ঢেকে রাখার কাপড়টা টেনে খুলে ফেলল। দানবটা আহ্, উহ্ করতে করতে নিচে বসে পড়েছে। মাহি এরপর তার চুল টেনে ধরে তার বুকের মাঝে একদম লাথি মেরে বসল। সেখানে উপস্থিত মানুষগুলো মাহিকে ধরে সরিয়ে আনতেই মাহি তাদের চেঁচিয়ে বলল, – “ছাড়ুন আমাকে। এই কুত্তাকে আমি আজ খুনই করব।” তোফাজ্জল মাহিকে আটকে ধরে বলল, – “আমরা দেখছি। তুমি থামো মা। আমাদেরকে বলো কী হয়েছে?” – “অন্ধকারে চিপাতে টেনে এনে পশুত্ব দেখাতে এসেছিল এই শুয়ার। আজ ওকে আমি খুন না করে এখান থেকে যাব না।” মাহি এ কথা বলেই তাদের কাছ থেকে ছুটে আসল। নিচে একটা গাছের মোটা ডাল পড়েছিল। সেটা তুলেই মাহি তার মাথায় আঘাত করে বসলো। মাহিকে আবার টেনে নিয়ে তার সেখান থেকে বের করে আনলো। সঙ্গে এলাকার দুজন যুবকও ছিল। তারা ওই লোকটাকে টেনে বের করে নিয়ে আসলো সেখান থেকে। কিন্তু সে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না। মাথার আঘাতটা খুব ভয়াবহ তার। মুখ থুবড়ে নিচে পড়ে গেল সে। রক্তে তার নীল শার্ট কালো হয়ে গেছে। ইমাম বলল, – “ওকে আগে হাসপাতাল নিয়ে যা। এরপর পুলিশকে খবর দে। এ তো আমাদের এলাকার নয় মনে হচ্ছে। তোরা কেউ চিনিস?” রতন নামের যুবকটি বলল, – “আমরাও চিনতেছি না।” – “তাইলে নিশ্চয় ওকে ফলো করে এসেছে।” মাহি তখনো তার দিকে তাকিয়ে ক্রোধে ফুলছিল। তোফাজ্জল বললেন, – “চলো তো মা। তোমাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।” বাড়িতে আসার পর তোফাজ্জলের মুখ থেকে সব শোনার পর মুমু মেয়েকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল। মাহি তখন পুরোপুরি নিশ্চুপ। তার চোখে তখন আর কান্না নেই। মমিন পুরো স্তব্ধ। আলহাজ মুমুকে বলল, – “বউমা এভাবে কান্নাকাটি বন্ধ করো তো। ওকে ঘরে নিয়ে যাও।” মাহি বিরক্তির সুরে বলল, – “মা আমি অ্যাসল্টেড হইনি। তাই এভাবে কান্না করো না তো। আমি গোসল করব। ছাড়ো। বলছি তো তোমাদের চিন্তা করার মতো কিছু হয়নি।”
. তার পরের দিন ছিল মাহির অফ ডে। সে সারাদিন ল্যাপটপ মুখের সামনে নিয়ে কাজ করল, বিকালে বাসা থেকে বেরিয়ে দিয়ার সঙ্গে বাইরে গিয়ে ঘোরাফেরা করল, রাতে মিমির সাথে বসে রোজকার মতো অনেকক্ষণ গল্প করল। রাতে খাবার সময় লিমনের বউ আশাকে খাবার বেড়ে আনতে হেল্প করল। সে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু চুপচাপ হাত গুটিয়ে সে বসে থাকতে পারে না। এ বাড়িতে একটা মাত্র ছেলে বউ সে। সবাই-ই খুব আদর করে তাকে। তাই প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরও তাকে বাবার বাড়ি যেতে হয়নি। নিজের শ্বাশুড়ি আর ননদের সেবা যত্নের সঙ্গে চাচিশ্বাশুড়ি, চাচিশ্বাশুড়ির মেয়ে মানে তার আর এক ননদ মাহির সেবাযত্নেরও কমতি নেই। কিন্তু প্রত্যেকে মাহির এত বেশি স্বভাবসুলভ আচরণ দেখে খুব অবাক। ছোট থাকতে সে একই বিপদের মুখোমুখি হয়েছিল। সেখান থেকেই ‘স্বাধীনতা’ নামক শব্দটা মাহির জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনাটি ভুলতেও মাহির কম সময় লাগেনি। হ্যাঁ এটা ঠিক, তখনের মাহি আর আজকের মাহির মাঝে বয়সের ফারাকটা অনেক। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে মেয়েরা চুপসে থাকে এটা ভেবে যে সমাজের মানুষেরা তাকে নিয়ে কতভাবে সমালোচনা করবে। কেউ কেউ অতি বন্ধুত্বের রূপ দেখিয়ে কোনো ছেলেপক্ষ এলে তাদের কানে সুন্দরভাবে এই ঘটনাগুলোর বিবরণ দিয়ে দেবে। যেমনটা মুমু আর মমিন ভেবেই এখন অস্থির। সোমকে তারা মনে মনে ভীষণ পছন্দ করে। মাহির অবর্তমানেও সোম এ বাড়িতে এসে তাদের সঙ্গে গল্প গুজব করে সময় কাটিয়ে গেছে। বিভিন্ন কাজে মমিনকে সে সহায়তা করেছে। এই ঘটনা জানার পর সোম না পেছালেও সোমের মা রুবিনা সে নিশ্চয় এত সহজ করে ভাববে না ব্যাপারটা। আর সোম ছাড়া যে তাদের মেয়ে অচল তা নয়। অনেক ভালো ঘরের ছেলেরা মাহির জন্য প্রস্তাব নিয়ে আসে আর আসবেও। কিন্তু তারাও যদি এই ঘটনা জানতে পারে তবে কি তারা এই ঘটনাকে স্বাভাবিকভাবে নেবে? কখনোই নেবে না হয়তো। এসব চিন্তা মমিন আর মুমু করলেও মাহির এমন কোনো চিন্তায় নেই। সে তার প্রতিদিনকার মতো যেভাবে চলে এই ঘটনার পরেও তেমন। তবে এর মাঝে সব থেকে খারাপ ব্যাপারটা হলো যে ছেলেটা এই ক্ষতিটা করতে এসেছিল সেই ছেলেটা সেই রাতেই হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে। আর এখানেই মাহিকে ভাবাচ্ছে খুব। যে অবস্থা মাহি তার করেছিল তাতে তার দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি অন্তত সেই রাতের মধ্যেই পাওয়া সম্ভব না। মোটকথা, তার সেন্সই ফেরার কথা না। তাহলে অবশ্যই কেউ একজন তাকে সাহায্য করেছে। . অফিসের জন্য রেডি হয়ে মাহি সকালের নাশতা করতে এলো। মমিন আর আলহাজ তাকে দেখে আবার খাওয়াতে মনোযোগ দিলো। কিন্তু তাদের মুখ দেখে মাহি বুঝতে পারল তাকে কিছু বলতে চায় তারা। মাহি আলহাজকে আগে বলল, – “কিছু বলতে চান দাদু?” – “না তেমন কিছু নয়।” মমিন বলল, – “আমার কিছু বলার আছে তোকে। খাওয়া শেষ করে ঘরে আসিস।” – “বাবা আমার হাতে সময় নেই বেশি। এখনই বলো।” – “অফিস ছেড়ে দে। ওখানে আর তোকে জব করতে হবে না।” মাহির হাতে গ্লাস ছিল। অনেক শব্দ করে সেটা টেবিলে রাখল ও। এরপর বেশ কড়া সুরেই বলল, – “এরপর বলবে আমাকে বের হতে হলে বডিগার্ড নিয়ে বের হতে হবে। তারপর খুব তাড়াতাড়ি আমার বিয়ের আয়োজন করে আমাকে বিদায় করে তোমরা চিন্তামুক্ত হবে।” মমিন ধমকে বলল, – “আস্তে কথা বল। যদি এমন কিছু করি তো ভুল কী? যেটা হয়েছে সেটা নিয়ে এলাকার এমন কেউ নেই যে জানে না। আত্মীয়দের মধ্যেও জানাজানি হতে বাকি নেই।” – “সেটার দোষ কি আমার? ওই কুলাঙ্গারের জন্য আমি আমার জীবন নষ্ট করব?” – “জীবন নষ্ট মানে?” – “হ্যাঁ জীবন নষ্টই তো। একই ঘটনার জন্য আমি যে বয়সে বন্ধুবান্ধব নিয়ে হই হুল্লোড় করব সেই বয়সে আমাকে পাহাড়া দিয়ে রাখা হয়েছে, ছেলে বন্ধুদের থেকে দূরে রাখা হয়েছে। মেয়ে বন্ধুদেরও সাথে কোথাও যেতে দেওয়া হয়নি। আর এখন কী করতে চাইছো তোমরা! আমার চাকরি করা বন্ধ করে আমাকে বিয়ে দিয়ে সারাজীবনের জন্য এই পাহাড়ার ভেতর ফেলতে চাইছো। অশিক্ষিত, নির্বোধ বাপ-মা আর তোমাদের মাঝে আজ পার্থক্য থাকল কী?” মুমু মেয়ের দিকে এগিয়ে এসে ধমকে বলল, – “মাহি! একদম চুপ কর। এত বড় সাহস তুই তোর বাবার মুখে মুখে কথা বলছিস! চড় মেরে গাল লাল করে দেবো।” প্রচন্ড রাগ আর কষ্টে মাহির গাল বেয়ে চোখের পানি গড়িয়ে পড়ল। টিপিকাল শ্রেণীর বাব মায়েরা মেয়ের সম্মান বাঁচাতে আর চক্ষু লজ্জার ভয়ে ঠিক এভাবেই একটা মেয়ের সমস্ত স্বপ্ন, তার স্বাধীনতা মাটিতে পুতে তাকে সমপর্ণ করে দেয় সমাজের রক্ষণশীল নামক কোনো পুরুষের হাতে। আর আজ তার বাবা-মাও একই পথ বেছে নিলো। – “তোরা থাম৷ আমি কিছু কথা বলব।” আলহাজের আদেশে মুমু সরে এলো মেয়ের কাছ থেকে। – “ধর্ষণ আমাদের সমাজে এখন ভাত মাছ। যার কোনো বিচার নেই। এর জন্য সমাজের কিছু সুশীল মানুষ আবার মেয়েদেরই দায়ী করে। তাদের কথা আর নাই বা বললাম। একাত্তরের রাজাকার আর আমাদের সমাজের এই সুশীলদের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু মমিন, তোরা কি জানিস তোরা কী ভুল করছিস? এই রাজাকারদের ভয়ে তোরা মেনি বিড়াল সাজছিস। ওর সঙ্গে যা হয়েছে তাতে ওর জায়গায় অন্য মেয়ে হলে আজ তোদের হাসপাতাল দৌঁড়াদৌঁড়ি করতে হতো। বউমার চোখের পানি শেষ হতো না। মিডিয়া প্রেস এসে মুখের ওপর ক্যামেরা ফেলে ভিডিও করতো। তারপর দেখতে পেতি সব পত্রিকা আর নিউজ চ্যানেলে তোর মেয়ের নামে একটা সুন্দর হেডলাইন। সাথে তোদের ছবিও দেখতি মেয়ের বাবা-মা হিসেবে। হ্যাঁ আজকে যদি মিডিয়া আসতো তবে আমি ওর পিঠে বাহবা দিয়ে বলতাম “জবাই করার সুযোগটা দিন আপনারা। ওই জানোয়ারকে আমার নাতির হাতে জবাই করার সুযোগ দিন।” অন্তত কিছু মেয়ে তা দেখে একটু হলেও আত্মবল পেতো। এমন পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ মেয়ের মন আতংকে দূর্বল হয়ে যায়৷ দুই পার্সেন্ট মেয়েও এভাবে মুখোমুখি হতে পারে না ওইসব কুত্তাদের। ও হয়েছে, ও তাকে ঘায়েল করেছে। এর মাঝে ও যে নিজের আত্মবল টিকিয়ে রাখতে পেরেছে, তোদের উচিত ওকে মাথায় তোলা।” মমিন বলল, – “আমি কী ভাবছি তা আপনি বুঝতে পারছেন না আব্বা?” – “বিয়ে? যদি বিয়ে না হয়? তাই ভাবছিস? না হলে না হবে। ও যদি নিজের সম্মান বাঁচাতে পারে তবে ও সারাজীবন কুমারী হয়েও নিজের ভরনপোষণের দায়িত্ব নিজে টেনেই থাকতে পারবে। এটা তোদের কাছে আবেগের কথা মনে হতে পারে৷ কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছি ওর ভবিষ্যৎ ভোরের আলোর মতো আলোকিত। তবে আমার একটা সিদ্ধান্ত আছে। এই চাকরি ওকে ছাড়তে হবে।” মাহি ছলছল চোখে অবাক হয়ে তাকাল দাদুর দিকে। আলহাজ নাতির দিকে তাকিয়ে বলল, – “তোর ছুটির বেশিরভাগ সময় ছয়টা থেকে সাতটা। আসতে আসতে তোর সময় লেগে যায় কতখানি তা তুই নিজেও জানিস। সমাজের কথা বাদ দিয়েই বলি। একটা রুটি রাস্তার মাঝে পড়ে থাকলে ওই একটা রুটির জন্যই কুকুরের জিহ্বার ডগায় পানি চলে আসবে। দৌঁড়ে আসবে ওই রুটিটা খাওয়ার জন্য। কী বোঝাতে চাইছি তা নিশ্চয় বুঝতে পারছিস। রুটির জন্য কুকুরেরা কোনো মানুষকেই ভয় পায় না। যে চাকরির ছুটির সময়ই রাত। সেই চাকরি আমি চাই না তুই কর।” – “তাহলে আজ থেকে বসে থাকব ঘরের মধ্যে?” – “আমি তা বলিনি। ইনশাআল্লাহ চাকরির অভাব পড়বে না তোর যোগ্যতার কাছে। আর চাকরি নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।” . সেদিনই মাহি রিজাইন দেয় কোম্পানিতে গিয়ে। তার এক সপ্তাহ পর এক সকালে আলহাজ নাশতা শেষ করার পর মাহিকে রেডি হতে বলে বাইরে বের হওয়ার জন্য। কোথায় যাবে মাহি জিজ্ঞেস করলে আলহাজ কোনো উত্তর দেয়নি। ট্যাক্সি করে মাহিকে নিয়ে এলো প্যারোটের সামনে। মাহি তখন বিস্ময়ের চোখে আলহাজের দিকে চেয়ে থাকলে তখন আবরার গাড়ি থেকে নেমে এসে আলহাজের সামনে দাঁড়ায়। চোখে মুখে বিস্ময়ের ছাপ আড়ালে রেখে মাহি আবরার এর সঙ্গে পরিচিত হয়। তাকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করার মুহূর্তে আবরার বলে, – “বিউটি কুইন আমার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা একদমই পছন্দ নয়।” মাহি তখন হেসে উত্তর দেয়, – “পছন্দ আমারও নয়। তবে বয়স বিশেষে আমি দেখেছি বেশিরভাগ এল্ডারলি এই রীতিটা ভীষণ পছন্দ করেন।” – “আলহাজ দেখেছিস তোর নাতি তো আমাকে বুড়ো বানিয়ে দিলো রে। তাহলে আর আমার সুযোগ নেওয়া হলো না। আমি কিন্তু খুব কষ্ট পেলাম মেয়ে।” মাহি আগের মতোই হেসে বলল, – “সুযোগ দেবো না তা তো বলিনি। এমন এল্ডারলি হ্যান্ডসামকে সুযোগ না দিয়ে চরম বোকামি করতে চাই না।” আবরার আর আলহাজ হা হা করে হেসে উঠল। মাহিকে অবাক করে দিয়ে আবরার তাকে এক্সিকিউটিভ পদে বসিয়ে সবার সঙ্গে নিজে পরিচয় করিয়ে দিলো। তার দাদু তাকে এত বড় অস্বস্তিতে ফেলবে তা সে ভাবতেও পারেনি। আবরার সবাইকে বলল সে মাহিকে হায়ার করে তাদের কোম্পানিতে এনেছে। আশেপাশে চোখ বুলিয়ে শুধু মাহি আশফিকেই খুঁজছিল। এই মানুষটির মুখোমুখি হয়ে তাকে দিনের বেশিরভাগ সময়টা কাটাতে হবে ভাবতেই মাহির অশান্তিবোধ হলো৷ যদিও সেদিন আশফি আর দিশান ঢাকাতে ছিল না। তাই অফিসে তাদের উপস্থিতিও দেখতে পায়নি মাহি। আবরার অবশ্য আশফিকে আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছিল তার কোম্পানির জন্য সে একজন দারুণ মানুষকে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি থেকে হায়ার করছে তার কোম্পানির জন্য। আশফি খুব ব্যস্ত থাকায় তার সিভি না দেখেই দাদাকে জানিয়ে দিয়েছিল তার কোনো সমস্যা নেই। বাড়িতে ফিরে মাহি আলহাজকে জিজ্ঞেস করল, – “প্যারোটেই কেন আমাকে চাকরি করতে হবে দাদু?” – “কারণ আবরার নিজেই চাইছিল তুমি সেখানে আসো। আর তোমার সবরকম সুযোগ আর নিরাপত্তার জন্য সে সবসময় তোমার খেয়াল রাখবে।” এরপর আর মাহি কথা বাড়াতে পারেনি। আগামীকাল সে কীভাবে নিজেকে আশফির মুখোমুখি করবে সেই কথায় ভাবতে থাকল। খুব ছিমছাম আর করিতকর্মা হয়েই সে আশফিকে সবসময় ফেস করবে। এটাই ভেবে রাখল সে। . . দিশান খুব মনোযোগ দিয়ে ফোন চাপছিল। একবার আড়চোখে তাকিয়ে সে দেখল প্রায় আধা ঘন্টা ধরে তার ভাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে খুবই আকর্ষণীয়ভাবে প্রেজেন্ট করতে ব্যস্ত। অফিসে যাওয়ার জন্য দিশান প্রায় এক ঘন্টা ধরে বসে আছে রেডি হয়ে। কিন্ত আজ তার ভাইয়ের সজ্জা যেন শেষ হতেই চাইছে না। সে এবার বিরক্ত হয়ে বলল, – “আর কত সময় ভাই? কী করছো বলো তো?” – “দেখতেই তো পাচ্ছো।” শার্টের হাতার বোতাম লাগাতে লাগাতে বলল আশফি। দিশান হঠাৎ হেসে উঠল। এরপর ভাইয়ের কাছে এসে দাঁড়িয়ে বলল, – “মিট করবে না কি? চেয়েছে করতে?” – “না।” – “তবে? এত সাজ কার জন্য? ঐন্দ্রী তো নয়।” – “উফ্! ফালতু কথা বলে মেজাজ নষ্ট কোরো না আমার।” দিশানের উৎসুক দৃষ্টি দেখে আশফি মাহির সিভিটা দিশানের হাতে তুলে দিলো। দিশান সিভিটা হাতে নিয়ে দেখতেই হেসে ভাইকে জিজ্ঞেস করল, – “কীভাবে সম্ভব এটা?” – “তা জানি না। দাদা ওর কথায় বলেছিল আমাকে।” – “কিন্তু হঠাৎ করে মাহিকে হায়ার করতে গেল কেন দাদা?” – “বলেনি।” – “আমার তো দারুণ লাগছে ভাই। কষ্ট করে তোমাকে কিছু করতে হলো না।” আশফির মুখেও খুশির রেখা। আশফি বলল, – “তুমি বেরিয়ে পড়ো দিশান। আমি একটু পরে আসব।” – “কেন?” – “জানতে পারবে।” দিশান হেসে ভাইকে বেস্ট অফ লাক জানিয়ে বেরিয়ে পড়ল। সকাল দশটা বাজে। কিন্তু মেঘঘন আকাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সন্ধ্যা হতে চলেছে। কিছুদিন পরই শীতের সময়। আর এই আবহাওয়ার অর্থ হাঁড় কাঁপানো শীতের আগমন। গাড়িতে বসে চারপাশটা দেখার মুহূর্তে হঠাৎ নজর গেল বায়পাসে তার। ছাতা মাথায় করে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে দিয়া তার মায়ের বকুনি শুনছে রাস্তার মাঝে। দিয়ার সাজসোজ্জা ছিল বেশ ভারি। এরপর দিয়ার মা দিলরুবা মেয়েকে বকা শেষ করে একটা রিক্সায় উঠে চলে গেল। দিয়া চোখের চশমাটা খুলে সেটা মুছছিল দাঁড়িয়ে। দিশান তাকে এড়িয়ে চলে যেতে পারল না। ছাতা একটা নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দিয়ার সামনে এসে দাঁড়াল। দিয়া তখনো খেয়াল করেনি দিশানকে। দিশান দেখল দিয়ার শ্যামলা বর্ণের মুখটা কাঁদতে কাঁদতে লাল করে ফেলেছে। – “আপনি ঠিক আছেন?” দিশানের আকস্মিক কণ্ঠ শুনে চমকে তাকাল দিয়া। দিশানকে দেখে চশমাটা দ্রুত মুছে হাঁটতে শুরু করল সে। কিন্তু দুঃখের বিষয় পথের মধ্যেই তার পায়ের স্যান্ডেলটাও ছিঁড়ে গেল। দিশান এগিয়ে এসে বলল, – “কিছু মনে না করলে আমি আপনাকে লিফ্ট দিই?” দিয়া ভারি কণ্ঠে উত্তর দিলো, – “ধন্যবাদ। দরকার নেই।” বায়পাসে দাঁড়িয়ে দিয়া রিক্সার জন্য অপেক্ষা করতে শুরু করল সে। এদিকে বৃষ্টির তেজ বেড়ে যাওয়াতে বৃষ্টির ছাট পুরো ভিজিয়ে দিচ্ছে ওদের। দিশান আবার এগিয়ে এসে বলল, – “বৃষ্টি পড়ছে খুব। এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে ভিজে যাবেন। চলুন নামিয়ে দিই আপনাকে।” দিয়া কোনো উত্তর দিলো না। নিচে জমে থাকা পানির মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে গিয়ে হঠাৎ কীভাবে যেন তার মাঝে পড়ে গেল। এবার আরও বেশি কান্না পেল তার। সব বিপদ কি তার সাথেই হয়? হ্যাঁ শুধু তার সাথেই হয়। না হলে একই সময়ের মাঝে তার কতগুলো বিপদ ঘটল। দিশান এগিয়ে এসে হাতটা বাড়াল ওর দিকে। কিন্তু সে সাহায্য গ্রহণ না করে কষ্ট করে উঠে দাঁড়াল। মায়ের আচরণে আজ সে খুবই কষ্ট পেয়েছে। বরাবরই তার গায়ের রং নিয়ে দিলরুবা ভীষণ চিন্তিত। তাকে কত প্রকার বিউটি ক্রিম কিনে দিয়ে ইউজ করতে বলে সে, কিন্তু দিয়া তার এক ফোঁটাও ব্যবহার করে না। এ নিয়ে তার আক্রোশের শেষ নেই। বিভিন্ন হাই ক্লাসেস ছেলে পেলে বেহায়ার মতো দিয়াকে নিয়ে তার সামনে বসে গল্প করে সে। এমনকি দিয়ার সাজসোজ্জাও দিয়া নিজের মন মতো করতে পারে না। মায়ের পছন্দ মতো তাকে ভারি মেকাপ ইউজ করতে হয় বাইরে বের হওয়ার সময়। এইতো আজ সকালের ঘটনা। এক ছেলের সঙ্গে দিয়াকে দেখা করানোর জন্য একটা রেস্টুরেন্ট গিয়েছিল সে দিয়াকে নিয়ে। শ্যামলা মেয়েটার চেহারাতে এক গাদা ভারি মেকাপ দিয়ে তার মুখের রংই সে বদলে দিয়েছে। আর যেদিন দিয়া অতিরিক্ত মেকাপ করে সেদিন তার মুখ প্রচন্ড ঘেমে ওঠে আর সে নিজেও ঘামতে থাকে। এই ঠান্ডা ওয়েদারে তাকে এভাবে ঘামতে দেখে যেতে পথে বেশ বকাঝকা করল সে মেয়েকে। এরপর যখন রেস্টুরেন্ট এলো ছেলের সামনে, তখন দিয়া এত বেশি নার্ভাস হয়ে পড়ল যে তার ঘামের পরিমাণ আরও বেড়ে গেল। ওয়াশরুমে গিয়ে সে মেকাপ ঠিক করে এলো। কিন্তু ঘামের জন্য বারবার বিশ্রী অবস্থা হয়ে যাচ্ছিল তার মুখের। দিলরুবার চোখ রাঙানিতে দিয়া আবার গেল ওয়াশরুমে মেকাপ ঠিক করতে। কিন্তু তখন সে পুরো মুখটা ধুয়ে প্রচন্ড প্রশান্তিতে ফিরে এলো। তাকে দেখে দিলরুবার রাগের শেষ নেই। কিন্তু তা অপ্রকাশ্য রাখল। এরপর ছেলে কথাবার্তা বলা শেষে সে সরাসরি জানাল যে দিয়া দেখতে সুন্দর। কিন্তু তার মা ফর্সা মেয়ে চায়। কারণ তার সবগুলো ছেলের বউই নাকি ভীষণ ফর্সা। দিয়া রাগে উঠে দাঁড়িয়ে তাকে বলে এসেছিল, – “আপনার তো ফর্সা মেয়ে চায় বলে আমাকে পছন্দ হলো না। কিন্তু আপনি জানেন আপনি আমাকে পছন্দ করলেও আমি আপনাকে করতাম না? যে ছেলে আগেই মেয়ের মাকে বলে মেয়ে ফর্সা হতে খুব। সে ছেলেকে আমার মায়ের পছন্দ হলেও আমার রুচিতে তাকে কখনোই টানে না।” আর এখানেই দিয়ার প্রতি দিলরুবার রাগ আরও বেশি বেড়ে যায়। রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়েই তাকে রাস্তার মধ্যে বকতে শুরু করে। দিয়া কান্না চোখে ওই ভেজা গায়েই আবার হাঁটতে শুরু করলে দিশান এবার রেগে যায়। – “কী সমস্যা বলুন তো আপনার? আমি আপনার প্রতিবেশী তো না কি? আমি বলছি আপনাকে বাড়ি পৌঁছে দেবো। আর আপনি এক্সট্রা ইগো না মুড নিয়ে এই অবস্থায় হনহন করে হাঁটা শুরু করছেন।” দিয়ার রাগটা ছিল খুব ওর মায়ের প্রতি। সেই রাগটা সে দিশানের ওপর ঝেরে বলল, – “আপনার কী সমস্যা হ্যাঁ? আপনি দেখতে পাচ্ছেন না যে আমি হেঁটে যাচ্ছি? আপনার লিফ্ট নেবো না আমি। আর বাড়িতেও যাব না।” দিশান একটা জিনিস ভেবে হেসে উঠল। মাহির বন্ধু সে, তাই বলে আচরণও মাহির মতো হবে সেটা সে ভাবেনি। দিশানকে হাসতে দেখে দিয়া জিজ্ঞেস করল, – “আপনার হাসি আমার সহ্য হচ্ছে না। আমার চোখের সামনে থেকে যান তো।” দিশান হাসিটা ধরে রেখেই বলল, – “যার ওপর রাগ করে কষ্ট করছেন সে তো দেখতে পাচ্ছে না।” দিয়া এবার মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলো। দিশান না শুনে না বলেই দিয়ার হাতটা ধরে বলল, – “আসুন।” দিয়া এবার আর কিছু বলল না। দিশানকে বাঁধাও দিলো না। . অফিসে আসার পর মাহি আশফি বা দিশান কারো দেখায় পায়নি। তাও যেন তার অস্বস্তিবোধটা কাটছে না। অবশ্য অফিসে আসার পর সে তার কেবিন থেকেও বের হয়নি। আর সে ভেবেছিল আশফি এসে অবশ্যই তার কোম্পানির নতুন এক্সিকিউটিভ পোস্টের মানুষটার সঙ্গে দেখা করতে চাইবে। আর সেটা এখন অবধি হয়নি বলেই মাহি নিশ্চিত আশফি অফিসে আসেনি। কিন্তু কাজের জন্য তো তাকে অবশ্যই আশফির সঙ্গে দেখা করতে হবে। বেলা এগারোটার সময় মাহিকে ডাকা হলো আশফির চেম্বার থেকে। রুমে আসার পর মাহি দেখল আশফি মাত্রই ঢুকেছে রুমে। গা থেকে স্যুটটা খুলে হ্যাঙারে ঝুলিয়ে রাখছে সে। আশফি সামনে ফিরে তাকিয়ে দেখল মাহি আজ চুলটা খোঁপা করে গাঢ় নীল রঙের শাড়ি পরেছে। খুবই সাধারণ সোজ্জা তার। তাও যেন দারুণ লাগছে তাকে দেখতে। আশফি তাকে বসতে বলে নিজেও বসলো। টেবিলের ওপর হলুদ বর্নের টিউলিপের স্তবক। টিউলিপের প্রতি মাহির কড়া রকমের দূর্বলতা। অন্য জায়গায় হলে সে একবার হলেও ফুলগুলো ছুঁয়ে দেখতো। কথা শুরু করার পূর্বেই এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটল রুমে। মাহি তখনো দাঁড়িয়ে ছিল। আকস্মিক ধাক্কা পেয়ে সে শরীরের ঝোঁক সামলাতে চেয়ারের হাতল ধরল। প্রচন্ড রাগে আশফি উঠে দাঁড়িয়ে…. …………………………. (চলবে) – Israt Jahan Sobrin আপনাদের হয়তো মনে হচ্ছে গল্পটা ঝিমিয়ে পড়ছে। তাই ইগনোর করে যাচ্ছেন বা ভালো না লাগার ফলে লাইক কমেন্ট থেকে বিরত থাকছেন। তাতে আমার কোনো অসুবিধা নেই। তাদের কিছু বলারও নেই আমার। যারা ধৈর্য রাখতে পারবেন গল্পটার শেষ জানার জন্য আমি শুধু তাদেরকে বলছি, অন্তত একটা লাইনের মন্তব্য করার চেষ্টা করবেন।
পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ