#তুমি_আমার_স্নিগ্ধ_ফুল
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর
#পর্বঃ২৭
কেটে গেলো আরো কিছু সপ্তাহ। সবার জীবন ব্যস্ততায় ঘিরে ধরলো। প্রীতি আর ইয়ানাও পড়াশোনা নিয়ে বিজি হয়ে পড়লো। সাথে কিছু সম্পর্কের ও পরিবর্তন আসলো। ইয়ানা আর পারফির সম্পর্ক অনেকটা উন্নত হলো। আগের মতো ইয়ানা পারফির সাথে কথা বলতে জড়তায় গুটিশুটি হয়ে থাকে না এখন পারফির সাথে অনেকটা ফ্রি হয়ে গিয়েছে। পারফি বন্ধুসুলভ আচরণ ইয়ানার মন জয় করে নিয়েছে। এখন আর দুজন আলাদা ঘুমোয় না। এখন ইয়নার ঠাই হয়েছে পারফির বুকে।
ইয়ানা বুঝতে পারছে ও দিন দিন পারফির প্রতি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, এটাকে ভালোবসা বলে কিনা ঠিক জানা নেই ইয়ানার। কিন্তু এইটুকু জানে ওর জীবনে পারফি এখন সব। যার কাছে পৃথিবীর সমস্ত সুখ খুঁজে পায়।
পারফির প্রতিটা কাজে ইয়ানাকে প্রতিটা মুহূর্ত মুগ্ধ করে। এই যে প্রতিটি রাতে অফিস থেকে ফেরার সময় একটা করে ফুল নিয়ে আসবে। রাতে ঘুমানোর সময় বুকের মাঝে আগলে রাখবে। রোজ সকালে কলেজে পৌঁছে দিয়ে তারপর অফিসে যাবে আবার দুপুরে গাড়ি পাঠিয়ে দিবে ঠিক ভাবে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য। পারফির প্রতিটি কাজে খুব খুব কেয়ার করবে যার প্রতিটা কাজ ইয়ানা মুগ্ধ হয়ে দেখতে থাকে।
সকাল সকাল কলেজে যাওয়ার জন্য ইয়ানা রেডি হচ্ছিলো আর কথা গুলো ভাবছিলো তখন পিছ থেকে পারফি বলে উঠলো এতো মনোযোগ দিয়ে কি ভাবা হচ্ছে ম্যাডাম?
পারফির কথায় ইয়ানা ভাবনার জগৎ থেকে বের হলো। পিছু ঘুরে পারফির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো তেমন কিছু না। চলুন আমার রেডি হওয়া হয়ে গিয়েছি।
পারফি সম্মতি দিয়ে ইয়ানাকে নিয়ে পিয়াসা বেগমের থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলো। কলেজের সামনে এসে ইয়ানাকে বললো সাবধানে থেকো, আজ তো প্রীতি নেই তাই একা কোথাও যেও না। আমার সময় হলে দুপুরে এসে নিয়ে যেতে আসবো।
ইয়ানা সম্মতি দিয়ে পারফিকে বাই বলে কলেজের ভিতরে ঢুকে গেলো। প্রীতি ওর নানু বাড়ি দুদিনের জন্য বেড়াতে গিয়েছে যার জন্য আজ ইয়ানাকে একা আসতে হলো কলেজে। ঠিক করেছিলো দুদিন ক্লাস করবে না কিন্তু সামনে এক্সাম আছে তাই ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস চলছে তাই বাধ্য হয়ে আসা লাগলো।
প্রীতি নেই দেখে ইয়ানার একা একা মন খারাপ লাগছিলো। মন খারাপ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে তখন চোখে পড়লো এলিজাকে। করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে। সেদিন রিসিপশনের পর আর দেখে নি এলিজাকে কিন্তু আজ হঠাৎ ওদের কলেজে এলিজাকে দেখে অবাক হলো বেশ।
ইয়ানা কোনো কথা না বলে এলিজার পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিবে অমনি পিছু থেকে ডেকে উঠলো এলিজা।
এলিজার ডাকে থামলো ইয়ানা, আবার কিছু একটা মনে করে চলে যেতে নিবে অমনি এলিজা ইয়ানার সামনে এসে বললো ডাকার পড় ও চলে যাচ্ছো কেনো? দেখছো না আমি ডাকছি?
ইয়ানা চোখমুখ কঠিন করে বললো আসলে আপু শুনতে পাই নি,কিছু বলবেন?
হ্যা বলার জন্য এইতো ডেকেছি।
হ্যা বলুন কি বলবেন?
এলিজা কিছুটা সময় নিয়ে বললো তুমি পারফির জীবন থেকে সরে যাও। আমরা একে অপরকে ভালোবেসি, এখন তুমি থার্ড পারসন আমাদের মাঝে ঢুকে আমাদের আলাদা করে দিচ্ছো। তাই বলছি পারফির জীবন থেকে সরে যাও।
এলিজার কথা শুনে ইয়ানা চোখ ছোট ছোট করে তাকালো এলিজাট দিকে। তারপর তাচ্ছিল্য হেঁসে বললো কি ভেবেছেন আপনি বলবেন আপনারা একে অপরকে ভালোবেসেন আর তা বিশ্বাস করে আমি সুরসুর করে পারফির জীবন থেকে সরে যাবো?
অফকোর্স সরে যাবে, তোমার কোনো অধিকার নেই আমার পারফির জীবনে থাকার তাই ভালোয় ভালোয় বলছি পারফির জীবন থেকে সরে যাও।
ইয়ানা চোখমুখ শক্ত করে বললো জানতাম আপনি থার্ডক্লাশ একটা মেয়ে কিন্তু এখন দেখছি তার থেকেও নিচু আপনি। অন্যের হাসবেন্ডকে নিজের বলে দাবি করছেন। আর কি বললেন জানি আমি আপনাদের ভিতর থার্ড পারসন? আমি না বরং আপনি সেই থার্ড পারসন। আপনার ভিতর নূন্যতম লজ্জাবোধ টুকু ও নেই বেহায়ার মতো অন্যের হাসবেন্ডের পিছু পড়ে আছেন।
ইয়ানার কথায় এলিজা রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে বললো এই মেয়ে মুখ সামলে কথা বলো আর নাহলে খুব খারাপ হবে বলে দিলাম। কি যোগ্যতা আছে তোমার পারফির পাশে থাকার? কোথায় তুমি আর কোথায় পারফি। মিডিক্লাশ মেয়ে একটা, তুমি আমার পারফিকে ফাশিয়ে বিয়ে করে আমার থেকে ওকে কেঁড়ে নিয়েছো। তোমার মতো মিডেলক্লাস মেয়েদের কাজ এইতো অন্যের জিনিস কেঁড়ে নেওয়া।
ইয়ানা দাঁতে দাঁত চেপে বললো যতটুকু বলেছেন এখানেই থেমে যান। ওই মুখ দিয়ে আর একটা বাজে কথা বের করলে খুব খারাপ বলে দিলাম মিস এলিজা। মিডিলক্লাস আমি না আপনি নিজের ব্যবহারে বুঝিয়ে দিচ্ছেন আসলে কে মিডিক্লাস। নেক্সট টাইম আমার আশেপাশেও আসার চেষ্টা করবেন না এ বলে ইয়ানা চলে যেতে নিবে অমনি পিছ থেকে এলিজার কিছু কথা শুনে পা জোড়া থেমে গেলো।
এলিজা রাগে হিসহিসিয়ে বলে উঠলো তুমি একটা নির্লজ্জ মেয়ে। আগে নিজের লভেল টা দেখো তারপর পারফিকে নিয়ে ভাবো। একজন এতিম কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ে হয়ে বিখ্যাত বিজনেসম্যান পারফি চৌধুরীকে ফাঁসিয়ে তার গলায় ঝুলে পড়েছো। এখনো সময় আছে পারফির জীবন থেকে সরে যাও।
এলিজার কোনো কথা ইয়ানার কানে গেলো না শুধু একটা কথাই কানের কাছে বারংবার বাজতে লাগলো এতিম শব্দটা।ইয়ানা পিছু ঘুরে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলো কি যা-তা বলছেন? কে এতিম হুম? আর একটা বাজে কথা বললে আমি এখানে পারফিকে ডাকতে বাধ্য হবো বলে দিলাম।
এলিজা বাঁকা হেসে বললো এমন ভাব করছো যেনো কিছুই জানো না। নিজে তো খুব ভালো করেই জানো রাস্তায় পড়ে থাকা মেয়ে তুমি। তোমাকে কুড়িয়ে নিয়ে নিজের পরিচয় এ বড় করেছে তোমার বর্তমান বাবা। কে জানে কার কুকর্মের ফল তুমি যার জন্য রাস্তায় ফেলে রেখে গিয়েছিলো। বিশ্বাস না হলে নিজের বাবার কাছ থেকে সত্যিটা জেনে নিতে পারো। অবশ্য সবতো তোমার জানাই, এখন না জানার ভান করে আমার পারফির গলায় ঝুলে আছো। কিন্তু বেশিদিন এভাবে ঝুলে থাকতে পারবে না। পারফি যখন জানবে তুমি একটা রাস্তার মেয়ে তখন তোমাকে ছুঁড়ে ফেলে দিবে।
এলিজার কথায় ইয়ানা বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো। নিজের কানকে যেনো বিশ্বাস করতে পারছে না। বিরবির করে বললো এ হতে পারে না, সব মিথ্যে, কিছু বিশ্বাস করি না আমি বলতে বলতে কোনো দিকে না তাকিয়ে ইয়ানা ছুটে কলেজের বাহিরে চলে গেলো। নিজেকে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য লাগছে। কি করবে কোন দিকে যাবে কিছু মাথায় আসছে না। ইয়না নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করে বিরবির করে বললো সব মিথ্যে, আমি জানি ও আমাকে পারফির জীবন থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য এগুলো বলেছে।
ইয়ানা নিজেকে যতই বুঝাক তবুও মনটা ব্যাকুল হয়ে যাচ্ছে। নিজেকে একটু শক্ত করে সিএনজি তে উঠে বসলো। সোজা চলে গেলো ইসহাক আহমেদের কাছে।
ইসহাক আহমেদে কাজের জন্য বের হতে যাবে তখন কলিংবেল বেজে উঠলো। ইসহাক আহমেদ দরজা খুলে ইয়ানাকে এমন বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখে বিচলিত হয়ে ইয়ানাকে বাসার ভিতরে এনে গালে হাত রেখে বললো কি হয়েছে মামনী তোমাকে এমন লাগছে কেনো? কেউ কিছু বলেছে?
ইয়ানা কোনো কথা না বলে অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকালো ইসহাক আহমেদের দিকে।
ইয়ানাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইসহাক আহমেদ আরো বিচলিত হয়ে পড়লেন। বার বার ইয়ানাকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন কি হয়েছে।
ড্রয়িংরুমে কথার আওয়াজ পেয়ে ইতি বেগম রান্নার ঘর থেকে ড্রয়িংরুমে এসে ইয়ানাকে অমন বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখে তিনি নিজেও বিচলিত হয়ে জানতে চাইলো কি হয়েছে।
ইয়ানা একবার ইতি বেগের দিকে তাকিয়ে ফের ইসহাক আহমেদের দিকে তাকিয়ে ভাঙা গলায় বললো আমি তোমার আসল মেয়ে না তাইনা বাবা?
ইয়ানার কথায় বুকের ভিতর কামড় মেয়ে উঠলো ইসহাক আহমেদের। মনে পড়ে গেলো ১৭ বছরের আগের সেই রাত্রির কথা।
আজ থেকে ঠিক ১৭ বছর আগে বৃষ্টিময় এক রাতে ইসহাক আহমেদ রাতের বেলা কাজ থেকে ফিরছিলেন। রাত কিছুটা গভীরে ছিলো আর বৃষ্টি হওয়াতে চারপাশে কোনো মানুষজন ছিলো না, কোনো গাড়ি ও ছিলো না। তিনি বুঝলো যে এখন গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে লাভ নেই। রাত বারছে তাই হাতে থাকা ছাতাটা মাথায় দিয়ে রাস্তার পাশ ঘেঁসে হাটতে লাগলেন। হাঁটতে হাঁটতে এক সময় অস্পষ্ট ভাবে একটা বাচ্চার কান্না কানে ভেসে আসলো। এতো রাতে এমন বাচ্চার কান্না কোথা থেকে ভেসে আসছে মাথায় আসলো না ইসহাক আহমেদের। আশেপাশে কোনো বাড়ি ও নেই যে সেখান থেকে কান্না ভেসে আসবে। তিনি সচেতন চোখে বারবার এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো তখন চোখে পড়লো রাস্তার অপজিট পাশে কপড়ে মোড়ানো কিছুর দিকে। তিনি ছুটে রাস্তা অপজিট পাশে যেয়ে কাপড়ে মোড়ানো জিনিসটার দিকে এগিয়ে গেলো।
সেখানে যেতে দেখতে পেলো সেখানে কাপড়ে মোড়ানো ফুটফুটে একটা বাচ্চা কান্না করে চলেছে। ল্যাম্পপোস্টের আলোতে স্পষ্ট দেখা গেলো ফুলের মতো একটা নবজাতক বাচ্চার গগনবিহারী চিৎকার।
ওই নবজাতক বাচ্চাকে এভাবে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে ইসহাক আহমেদ হাত থেকে ছাতা ফেলে দিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিলো। বৃষ্টিতে ভিজে শরীর ঠান্ডায় বরফ হয়ে গেছে।
ইসহাক আহমেদ আশেপাশে চোখ বুলালো কেউ আছে কিনা দেখার জন্য। কিন্তু কাউকে চোখে পড়লো না। বুঝলো যে কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ফুটফুটে বাচ্চাটাকে এভাবে এখানে ফেলে গিয়েছে। তিনি বাচ্চাটার দিকে মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে মনে মনে ভাবলো কোন পাষাণ মা এভাবে পারলো এই ফুটফুটে বাচ্চাটাকে এভাবে ফেলে দিতে?
বাচ্চাটার কান্না ক্রমশ বেড়েই চলেছে তা দেখে তিনি বুকের মাঝে বাচ্চাটাকে আগলে নিলো। তারাতাড়ি ছাতাটা উঠিয়ে দ্রুত বাচ্চাটাকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।
বাসায় আসতে কলিংবেল চাপতে ইতি বেগম দরজা খুলে দিলো। দরজা খুলে ইসহাক আহমেদের কোলে এক নবজাতক বাচ্চাকে দেখে অবাক হয়ে বললো একি এই বাচ্চা কার? এভাবে ভিজে আছে কেনো?
ইসহাক আহমেদ বিচলিত হয়ে বললো সব পরে বলছি আগে বাচ্চাটাকে ভেজা সব কিছু পাল্টে গরম করার ব্যবস্থা করো। ঠান্ডায় শরীর বরফ হয়ে গিয়েছে আর কিছুক্ষণ এভাবে থাকলে কোনো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
ইসহাক আহমেদের কথায় ইতি আর কথা না বাড়িয়ে বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিলো। তারপর ভেজা কাপড় পাল্টে বাচ্চাটাকে উষ্ণ করতে লাগলো। বাচ্চাটার শরীর উষ্ণ হতে আস্তে আস্তে কান্নার রেশটা কমে আসলো। একসময় বিড়াল ছানার মতো ইতি বেগমের কোলে ঘুমিয়ে পড়লো।
বাচ্চাটা শান্ত হতে ইতি বেগম ইসহাক আহমেদের কাছে জানতে চাইলো কিভাবে কি ঘটেছে।
ইসহাক আহমেদ আস্তে আস্তে সব কিছু খুলে বললো ইতি বেগমকে। সব শুনে ইতি বেগমের ও খারাপ লাগলো। তখন ইসহাক আহমেদ বললো আজ থেকে ও আমাদের মেয়ে। আমরা ওকে আমাদের পরিচয়ে বড় করবো।
ইতি বেগম তাকালো বাচ্চাটার দিকে। বাচ্চাটার দিকে তাকাতে খুব মায়া হলো ইতি বেগমের। ফুটফুটে ফুলের মতো বাচ্চাটা তার সাথে লেপ্টে আছে। ইতি বেগম ও ইসহাক আহমেদের কথায় সম্মতি দিলো যে এখন থেকে এটা ওদের মেয়ে।
বাচ্চাটার নাম দিলো ইমার সাথে মিলিয়ে ইয়ানা। ইমা তখন খুব ছোট, তখন নিজের একটা বোন পেয়ে ইমা সে কি খুশি। আস্তে ধীরে ইয়ানা বড় হতে লাগলো সেই সাথে ইতি বেগম ও পাল্টে গেলো। ইয়ানার সাথে আস্তে আস্তে দূর ব্যবহার করতে লাগলো।
ইসহাক আহমেদ ইতি বেগমকে অনেক বোঝাতো কিন্তু ইতি বেগম দিন দিন নির্দয় হয়ে উঠলো। তখন থেকে ইসহাক আহমেদ একা হাতে ইয়ানাকে সামলে রাখতো। বুকের ভিতর সবসময় আগলে রাখতো। কখনো একবারের জন্য ভাবে নি ইয়ানা তার আপন মেয়ে না। তার কাছে ইমা, ইয়ানা সমান ছিলো। দুটো মেয়েকে নিয়েই ছিলো তার পৃথিবী।
সবসময় ভেবেছে ইয়ানাকে ওর আসল পরিচয় কখনো জানতে দিবে না। ইতি বেগম যতই ইয়ানার প্রতি নির্দয় থাকুক না কেনো ইসহাক আহমেদ কাঠকাঠ বলে দিয়েছিলো যদি কোনো দিন ইয়ানাকে ওর আসল পরিচয় জানায় তাহলে তার চেয়ে বেশি খারাপ আর কেউ হবে না।
ইতি বেগম ও তাই যাই করুক না কেনো ইয়ানার সাথে কিন্তু কখনো ও যে তার নিজের মেয়ে না সেটা ইয়ানার সামনে ভুলেও বলে নি।
আর রইলো ইমা, ইয়ানা ছিলো ইমার কলিজার টুকরো বোন। ইসহাক আহমেদের মতো সব সময় বোনকে আগলে রেখেছে। কখনো ভাবে নি ও ওর আপন বোন না। কখনো জানতেও দিবে না বোনকে যে ওর বোন ওর আপন বোন না। কিন্তু সত্যি কথা কি আদো কোনো দিন লুকিয়ে রাখা যায়?
#চলবে?
#তুমি_আমার_স্নিগ্ধ_ফুল
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর
#পর্বঃ২৮
ইয়ানা ইসহাক আহমেদকে ঝাকিয়ে পাগলের মতো কান্না করতে করতে বললো কি হলো বাবা কথা বলছো না কেনো? বলো না আমি তোমার মেয়ে কিনা? বলোনা ও সব মিথ্যা বলছে, আমি শুধু তেমার মেয়ে। আমিতো তেমার মেয়ে শুধু তোমারি মেয়ে কথাগুলো বলে বিলাপ করে কান্না করতে লাগলো ইয়ানা৷
ইয়ানার কান্নায় ইসহাক আহমেদ ভাবনা থেকে বের হলো। তারাতাড়ি করে ইয়ানাকে বুকের মাঝে আগলে নিয়ে বললো কে বলেছে মামনী তুমি আমার মেয়ে না? তুমি শুধুই আমার মেয়ে। তুমি আমাকে বলো কে তোমাকে কি বলেছে? আমি এখনি তাকে তোমার কাছে এনে জিজ্ঞেস করবো আমাকে মেয়েকে কেনো মিথ্যা বলেছে।
ইয়ানা কিছুক্ষণ ইসহাক আহমেদের বুকে পড়ে কান্না করে হঠাৎ করে ইসহাক আহমেদকে ছেড়ে কিছুটা দূরে যেয়ে কন্নারত গলায় বললো আর মিথ্যে বলো না বাবা, আমাকে তুমি রাস্তা কুড়িয়ে পেয়েছিলে তাইনা? আর এই জন্যই মা আমাকে এতো বছর দূরে ঠেলে দিয়েছিলো?
ইয়ানার কথায় ইতি বেগম ইয়ানার দিকে যেতে যেতে বললো এরকম কিছু না ইয়ানা। তুই আমাদের মেয়ে, কে কি বলেছে সেটা মাথা থেকে ঝেরে ফেল মা। এই যে আমি তোর মা আর এই তোর বাবা।
ইতি বেগমকে নিজের দিকে এগোতে দেখে ইয়ানা সরে যেয়ে কান্না করতে করতে বললো তোমরা সবাই মিথ্যা বলছো, আমার কাছে আসবে না এ বলে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে ইয়ানা দৌড়ে ডাইনিং টেবিলের উপর থেকে ছু/রি নিয়ে হাত বরাবর ধরলো।
ইয়ানার কাজে ইসহাক আহমেদ আর ইতি বেগম দুজন ভরকে গেলো। ইসহাক আহমেদ ইয়ানার দিকে যেতে যেতে বললো ইয়ানা মামনী এমন পাগলামো করে না। এই যে আমি, আমি তোমার বাবা হই বিশ্বাস করো মামনী তুমি আমারি মেয়ে।
ইয়ানা ইসহাক আহমেদকে থামিয়ে দিয়ে বললো এদিকে আসবে না বাবা আমি কিন্তু ছু/রি চালিয়ে দিবো। আমি সত্যিটা জানতে চাই, আমাকে আর মিথ্যে বলো না বাবা। আমাকে এই মুহূর্তে সত্যি বলবে আর নাহলে আমি নিজেকে নিজে শেষ করে দিবো এ বলে ইয়ানা হাতে ছু/রি চালাতে যাবে অমনি ইসহাক আহমেদ করুণ স্বরে বললো না মামনী এমন করো না, আমি বলছি, আমি সব বলছি তুমি একটু শান্ত হও মামনী হাত জোর করে বলছি তোমাকে।
ইসহাক আহমেদের কথায় তাচ্ছিল্য হাসলো ইয়ানা, ছু/রি টা আস্তে করে রেখে ঝাপসা চোখে ইসহাক আহমেদের দিকে তাকিয়ে বললো তার মানে সত্যি আমি তোমার মেয়ে না? বলতে বলতে ইয়ানা মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যেতে নিলে ইসহাক আহমেদ দৌড়ে যেয়ে ইয়ানাকে আগলে নিলো। ইতি বেগম ও দৌড়ে এসে ইয়ানাকে ধরলো।
——————————————
পারফি দুপুরে আসলো ইয়ানার কলেজের সামনে। মেয়েটা আজ কলেজে একা তাই সময় করে নিজেই আসলো নিতে। অনেক্ষণ যাবত অপেক্ষা করে চলেছে কিন্তু ইয়ানার দেখা মিলছে না। কলেজ ছুটি হয়ে গিয়েছে একে একে সব স্টুডেন্ট চলে গেছে কিন্তু ইয়ানা এখনো আসছে না দেখে পারফি গাড়ি থেকে নেমে কলেজে প্রবেশ করলো। চারপাশে চোখ বুলালো দুই একটা স্টুডেন্ট ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়লো না।
কলেজের ভিতর ইয়ানাকে না পেয়ে পারফি মনে মনে ভাবলো বাসায় চলে গেলো নাতো? কিন্তু কলেজ তো মাত্র ছুটি হলো বাসায় গেলেতো আমার সামনে দিয়েই যেতো।
পারফি এবার পকেট থেকে ফোন বের করে ইয়ানার নাম্বারে কল লাগালো।রিং হচ্ছে কিন্তু ফোন রিসিভ হচ্ছে না। আরো কয়েকবার ফোন করলো কিন্তু রিসিভ হচ্ছে না। পারফির কপালে এবার ভাজ পড়লো, ইয়ানাতো এমন করে না। ফোন করলে সাথে সব সময় চেষ্টা করে প্রথম বারে ফোন রিসিভ করতে। আজ হঠাৎ কি হলো বুঝতে পারছে না। এবার কল করলো পিয়াসা বেগমের কাছে কিন্তু তার ফোন ও রিসিভ হচ্ছে না তা দেখে পারফির এবার টেনশন হতে লাগলো কোনো বিপদ হয় নি তো।
পারফি দ্রুত গাড়িতে উঠে ফুল স্পীডে গাড়ি চালিয়ে ১০ মিনিটের ভিতরে বাসায় পৌঁছে গেলো।
বাসায় প্রবেশ করতে দেখতে পেলো পিয়াসা বেগম রান্না করছে। পারফি পিয়াসা বেগমের কাছে এগিয়ে গিয়ে বললো আম্মু কখন থেকে ফোন করছি ফোন তুলছিলে না কেনো?
পিয়াসা বেগম পারফির দিকে তাকিয়ে বললো কাজ করছিলাম বাবা, ফোন রুমে তাই শুনতে পাই নি, কিছু কি হয়েছে?
ইয়ানা কোথায়? আমাকে না বলে বাসায় চলে এসেছে কেনো?
পিয়াসা বেগম তরকারি নাড়াচাড়া করছিলো পারফির কথায় হাতজোড়া থেমে গেলো। পারফির দিকে তাকিয়ে বললো ইয়ানা চলে এসেছে মানে? ওতো এখনো আসে নি কি বলছিস তুই?
পিয়াসা বেগমের কথায় পারফি চিন্তিত মন আরো চিন্তিত হয়ে পড়লো। পিয়াসা বেগম চিন্তা করবে ভেবে তারাতাড়ি কথা ঘুড়িয়ে বললো ওহ্ আমিতো ভুলেই গিয়েছি ইয়ানা বলেছিলো আজ ওদের বাসায় যাবে, বাবা এসে নিয়ে গিয়েছে হয়তো।
পারফির কথায় পিয়াসা বেগম যেনো জীবন ফিরে পেলো। তখন পারফির মুখে ইয়ানার ওই কথা শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিলো কোনো বিপদ হয় নাইতো।
পিয়াসা বেগম বললো ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি আমাকে। কাজের প্রেশার বেশি নাকি যে সব গুলিয়ে ফেলছিস?
হ..হ্যা ইদানীং একটু বেশি প্রেশার যাচ্ছে। আচ্ছা তুমি রান্না করো আমার একটু কাজ আছে এখন যেতে হবে।
সেকি মাত্র এইতো আসলি, ফ্রেশ হয়ে খেয়ে যা।
বাহিরে খেয়ে নিবো ইমার্জেন্সি কাজ পড়ে গিয়েছে বলতে বলতে পিয়াসা বেগমকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে গেলো।
পারফির ফের গাড়িতে উঠে ফোন লাগালো ইসহাক আহমেদের কাছে। ইসহাক আহমেদের ফোন ও রিসিভ হচ্ছে না। বারবার ফোন করতে লাগলো কিন্তু কোনো ফলাফল পাচ্ছে না। টেনশনে পারফির মনে কু ডাকতে লাগলো। গাড়ি ছুটালো ইয়ানাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
——————————————-
ইয়ানা পাথর হয়ে নির্বিকার ভাবে বসে আছে। জীবনের এতো বড় একটা ধাক্কা মেনে নিতে পারলো না। এ যেনো এক অনুভূতি শূন্য পাথরে রুপ নেওয়া ইয়ানা।
পাশেই ইসহাক আহমেদ বসা, চোখ জোড়া ভিজে আছে। কিছুক্ষণ আগে ইয়ানা সব জানার জন্য অনেক পাগলামো করছিলো, নিজের ক্ষতি করতে চেয়েছিলো, শেষে কোনো উপায় না পেয়ে ইয়ানাকে সব কথা বাধ্য হয়ে খুলে বলতে হলো। জীবনে কোনো দিন ভাবে নি এভাবে সত্য টা সামনে চলে আসবে। তার কলিজার টুকরো মেয়েটা যেনে যাবে সে ওর বাবা না। কষ্ট বুকটা ফেটে যাচ্ছে, মেয়েটার দিকে আজ তাকানো যাচ্ছে না।
ইয়ানার অন্য পাশে ইতি বেগম বসা তার চোখেও পানি। তিনি ইয়ানাকে এক পাশ থেকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে বলতে লাগলো আমাকে ক্ষমা করে দিস মা, সৎ মা আসলেই কোনো দিন আপন মা হয় না তাই তোকে পর করে রেখেছিলাম। কিন্তু বিশ্বাস কর মা তোকে যখন প্রথম এই দুই হাত দিয়ে কোলে তুলে নিয়েছিলাম তখন অদ্ভুত এক টান অনুভব করেছিলাম তোর প্রতি। তার পর থেকে একটা বারের জন্য ভাবি নাই তুই আমার মেয়ে না। ইমা আর তোকে নিজের সবটা ভালোবাসা দিয়ে বড় করতে লাগলাম।
তুই যখন একটু বড় হয়েছিলি তখন এলাকার বিভিন্ন মানুষ এসে আমাকে বলতো পর কখনো আপন হয় না। এই মেয়েকে এতো আদর দিয়ে বড় করছো এক সময় দেখবে এই মেয়ে তোমাকে পড় করে দিয়ে চলে গেছে। তোমার সব সুখ কেরে নিয়েছে আরো অনেক ধরনের কথা বলতো। আমি তাদের কথা কানে তুলতাম না উল্টো তাদের কথা শুনিয়ে দিতাম। তারপর তুই যখন আরেকটু বড় হয়েছিলি তখন এলাকার মানুষ তোর সামনে বলতো তুই আমাদের আসল মেয়ে না, আমরা তোকে কুড়িয়ে পেয়েছি। তুই তখন ছোট ছিলি তাই ওদের কথার মানে বুঝতি না।
তোর বাবা সারাদিন আতঙ্কে থাকতো তুই বড় হলে এলাকার মানুষের কথার মানে তুই বুঝে যাবি। তিনি চাইতো না কোনো দিন তোর সামনে সত্যিটা আসুক। তিনি চাইতো তুই সারাজীবন তার আপন মেয়ে হয়ে থাকবি তাই তোর বাবা হুট করে সিদ্ধান্ত নিলো এই এলাকা ছেড়ে চলে যাবে অন্য এলাকায় যেখানে আমাদের কেউ যেনো না চিনে আর সত্যিটাও যেনো তোর সামনে কখনো না আসে।
এই এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় যাওয়া আমার ছিলো ঘোর আপত্তি। কারণ ছোট বেলা থেকে এই এলাকায় আমি থেকে এসেছি। ওই এলাকায় এই ছিলো আমার বাবার বাড়ি তাই ছোট বেলা থেকে ওই এলাকা আমার বেড়ে ওঠা। সেদিন আমি তোর বাবার বিরুদ্ধে বললাম আমি এ এলাকা ছাড়তে রাজি না কিন্তু তোর বাবা আমার কথা শুনে নি, তিনি আমাদের নিয়ে চলে আসলো অন্য এলাকায়।
অন্য এলাকায় আসার পর সেদিন প্রথম বারের মতো আমার মনে হয়েছিলো তুই আমার আপন মেয়ে না। তোর জন্য আমার ছোট বেলা থেকে বেড়ে ওঠা এলাকা ছেড়ে দিতে হয়েছে। সেদিন মনে হলো আসলেই পর কখনো আপন হয় না। তুই পর তাই তুই আমার সুখ কেঁড়ে নিচ্ছিস। সেদিনের পর থেকে আস্তে আস্তে তোর প্রতি আমার বিরক্তবোধ শুরু হলো। তোর বাবা তুই বলতে পাগল ছিলো তখন আমার মনে হতো তুই আমার সব কেঁড়ে নিচ্ছিস, মনে হতো আমার ইমার থেকে ওর বাবাকে তুই কেঁড়ে নিচ্ছিস দিন দিন, তাই তোকে সহ্য করতে পারতাম না। সেই থেকে তোকে নিজের থেকে দূরে রেখে পর করে দিয়েছি।
কথাগুলো বলে থামলো ইতি বেগম। তারপর ডুকরে কেঁদে উঠে ফের বললো কিন্তু বিশ্বাস কর মা আমার এতো দিনের কাজের জন্য আমি অনুতপ্ত। তুই শুধু আমার মেয়ে, আমার মেয়ে হয়ে থাকবি। সেই প্রথম যেদিন তোকে কোলে নিয়ে নিজের বুকে আগলে নিয়েছিলাম ঠিক সেভাবে বাকি জীবন আগলে রাখতে চাই। এসব কথা তুই কখনো মাথায় ও আনবি না। তুই আমার সোনা মেয়ে, আমার মেয়ে হয়েই সারাজীবন থাকবি।
ইতি বেগমের সব কথা নীরবে শুনে গেলো ইয়ানা। এতো কিছু শোনার পর ও ইয়ানার ভিতর কোনো ভাব ভঙ্গি দেখা গেলো না। ঠিক আগের মতো নির্বিকার ভাবে নীরবে বসে আছে।
ইয়ানার অবস্থা দেখে ইসহাক আহমেদ, ইতি বেগম মিলে ইয়ানাকে অনেক কিছু বলে স্বাভাবিক করতে চাইলো কিন্তু ইয়ানার কোনো রেসস্পন্স নেই তা দেখে দুজনের মন হুহু করে কেঁদে উঠলো।
তখন কলিংবেল বেজে উঠলো। ইতি বেগম নিজের চোখের পানি মুছে নিজেকে একটু স্বাভাবিক করে আস্তে ধীরে যেয়ে দরজা খুলে দিলো। দরজা খুলতে ভেসে উঠলো পারফিট চিন্তিত মুখশ্রী।
পারফি চিন্তিত গলায় বললো আন্টি ইয়ানা কি এখানে এসেছে? আপনারা কেউ ফোন রিসিভ করছেন না কেনো? কিছু কি হয়েছে? ইয়ানা ঠিক আছে?
পারফির বিচলিত কন্ঠস্বর শুনে ইতি বেগম কি জবাব দিবে খুঁজে পেলো না। কি বলবেন উনি তোমার ইয়ানা ঠিক নেই? কোন মুখে সব খুলে বলবে কিছু বুঝতে পারলো না। ইতি বেগম দরজার সামনে থেকে সরে ভাঙা গলায় বললো ভিতরে এসো।
ইতি বেগমের ভাঙা গলা শুনে পারফি আরো ব্যাকুল হয়ে গেলো। বুঝতে পারছে কিছু হয়েছে। তখন বাসায় প্রবেশ করতে বসার ঘরে সোফায় ইয়ানাকে বসে থাকতে দেখে সেখানে এগিয়ে গেলো। ইয়ানার কাছাকাছি আসতে পারফির বুকের ভিতর কামড় মেরে উঠলো। কেমন বিধ্বস্ত লাগছে ইয়ানাকে, চোখ গুলো ফুলে গেছে, কেমন নির্বিকার ভাবে বসে আছে তা দেখে পারফি কাঁপা কাঁপা পায়ে ইয়ার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ইয়ানার দুই গালে হাত দেখে বিচলিত হয়ে বলতে লাগলো এই ইয়ানা কি হয়েছে তোমার? তোমাকে দেখতে এমন লাগছে কেনো? কেউ কিছু বলেছে তোমায়? বলোনা কি হয়েছে তোমার বিড়াল ছানা?
পারফি এতো কিছু বলার পর ও ইয়ানার কোনো রেসপন্স না পেয়ে পারফি আরো বিচলিত হয়ে পড়লো। বিচলিত হয়ে এটা ওটা জিজ্ঞেস করেই চলেছে কিন্তু ইয়ার ভিতরে কোনো ভাব ভঙ্গি প্রকাশ পেলো না।
পারফিকে এমন বিচলিত হতে দেখে ইসহাক আহমেদ মাথা নিচু করে ভাঙা গলায় বললো ওকে কিছু জিজ্ঞেস করে লাভ নেই বাবা। আমার মেয়েটা এখন কথা বলার অবস্থায় নেই।
ইসহাক আহমেদের কথায় পারফি ইসহাক আহমেদের দিকে তাকালো। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে আমার বিড়াল ছানার? আমাকে সব খুলে বলুন প্লিজ। ওকে এমন বিধ্বস্ত লাগছে কেনো? কে কি করেছে ওর সাথে আমাকে সব বলুন বাবা।
#চলবে?
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং….🥰