#তুমি_আমার
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_15
দিনের আলো নিশির চোখে পড়তেই ঘুমে ভেঙ্গে যায়। পিটপিট চোখে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করে কোথায় আছে ও। চারিদিকে ভালো করে দেখে বুঝতে পারে নিজের ঘরে শুয়ে আছে কিন্তু ও তো গেট টুগেদারে ছিলো এখানে আসলো কি করে। নিশি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে তাড়াতাড়ি উঠে বসে। উঠে বসতেই মাথা ব্যাথা অনুভব করে সাথে সাথে নিশি মাথাটা চেপে ধরে। মাথা এত ব্যাথা করছে কেন নিশি ঠিক বুঝতে পারছে না তবে এটা বুঝতে পারছে গত কাল রাতে নিশ্চয়ই কিছু একটা অঘটন ঘটেছে কিন্তু সেটা কি। ওয়াসরুম থেকে পানি পড়ার আওয়াজ আসছে তার মানে রেহান শাওয়ার নিচ্ছি। নিশি এবার নিজের দিকে তাকাতেই চোখের মনি আরও বড় হয়ে যায়। নিশি গত রাতে যে কাপড় পড়ে ছিলো এই কাপড়ে না বরং অন্য কাপড় ওর গায়ে তার মানে কি রেহান।
রেহান ওয়াসরুমে দরজা খুলে বের হতেই নিশি চকিতে রেহানের দিকে গোল গোল চোখে তাকায়। টাউজার পড়ে বের হয়েছে রেহান,, গলাতে সাদা টাওয়ালটা ঝুলছে আর তার সাহায্যে ভেজা চুলগুলা মুজছে। রেহানকে দেখে নিশি শুকনো একটা ঢোক গিলে। রেহান নিশির দিকে তাকিয়ে বলে
–গুড মার্নিং। অবশেষে ম্যাডামের ঘুম ভাঙ্গলো তাহলে।
রেহানের কথা শুনার সাথে সাথে নিশির হেচকি উঠে যায়। রেহান নিশির হেচকি উঠা দেখে টেবিল থেকে এনে পানির গ্লাস এগিয়ে দেয়। নিশি এক নিমিষেই পুরা গ্লাসের পানিটা শেষ করে।
–ঠিক আছো তুমি।
নিশি মাথা নাড়িয়ে বুঝায় ও ঠিক আছে কিন্তু ভেতরে নিশি একদমেই ঠিক নেই। নিশি হাসফাস করছে কালকে রাতে কি হয়েছে জানার জন্য। কিন্তু লজ্জায় বলতে পারছে না রেহানকে কিছু একে তো নিজের গায়ের জামা পাল্টানো তার উপর রাতে কি হয়েছে তার কিছুই মনে করতে পারছে না। রেহান আয়নার ভেতর দিয়ে নিশিকে পর্যবেক্ষণ করছে হাত কাচলাছে, ঠোট দুটো চেপে ধরে আছে নিশি কিছু একটা বলতে চাইছে কিন্তু বলতে পারছে না তাই রেহানেই নিশির সামনে এগিয়ে এসে বলে
–কিছু বলবে?
নিশি থতমত খেয়ে যায়। রেহানের দিকে আড়ষ্ট চোখে তাকিয়ে বলে
–না মানে আসলে।
–হুম আসলে কি বলো?
নিশি ঢোক গিলে অসহায় চেহারায় বলে
–আসলে কালকে রাতে কি হয়েছিলো??
রেহানের মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি এসে হানা দেয় বাকা হেসে বলে
–এমা তোমার কিছু মনে নেই রাতে কি হয়েছিলো?
–কি হয়েছিলো? [চমকে]
রেহান লজ্জা পাওয়ার ভাব ধরে বলে
–যাহ আমার বলতে লজ্জা করছে।
নিশি কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছেনা। রাতে কি এমন হয়েছিলো যে রেহানের লজ্জা লাগছে বলতে। নিশি এক লাফে বেড থেকে নেমে দাঁড়িয়ে বলে
–বলুন না কি হয়েছিলো রাতে আর আমি তো গেট টুগেদারে ছিলাম আর বাড়িতেই বা কখন আসলাম আর আমার কাপড় চেইন্জ কে করলো?
রেহান আলমারি কাছে গিয়ে শার্ট বের করতে করতে বলে
–তোমার কি সত্যি কিচ্ছু মনে নেই।
–মনে থাকলে কি আর আমি আপনাকে জিঙ্গেস করতাম আজব। [অধৈর্য গলায় বলে]
–আমি এটা তোমার কাছ থেকে আশা করি নি নিশি ভেবেছিলাম তুমি গতকাল রাতটা নিজের মনের মনিখোটায় বন্ধি করে রাখবে কিন্তু তুমি।
শার্ট পড়তে পড়তে বলে
–মানে কি এমন হয়েছিলো যে মনের মনিখোটায় বন্ধি করে রাখতে হবে।
রেহান খুব কষ্ট নিজের হাসি আটকে রাখছে। নিশির মুখটা যা দেখার মতো হয়েছে না। নিশি জিঙ্গাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রেহানের দিকে রেহানের উত্তর শুনার জন্য
–তোমার কাছে আমি এটা আশা করি নি নিশি।
বলেই হনহনিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায় রেহান। নিশি বোকার মতো রেহানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলে
–আরে কি হয়েছে সেটা তো বলে যান।
_____
রেহান ঘর থেকে বের হতেই হা হা করে হেসে উঠে। রেহানের ইচ্ছে ছিলো আরও একটু নিশিকে জ্বালাতে কিন্তু এই হাসির জন্য রেহান পারলো না নিশিকে জ্বালাতে। বুক ফেটে যাচ্ছিলো হাসি আটকে রাখতে তাই কোনো মতে হাসি আটকে রেখেছিলো এতক্ষন। রেহান হাসি হাসি মুখ নিয়ে ডায়নিং টেবিলে বসে। রেহেলা বেগম রেহানের হাসি মুখখানা দেখে বলে
–কি হয়েছে আমার ছেলেটার সকাল সকাল এত খুশি কেন?
–কিছু হয় নি মা এমনি হাসছি।
রেহেলা বেগম আর কিছু বলে না ছেলে হাসি খুশি আছে এটাই অনেক। রেহান রাহির দিকে ফিরে বলে
–রাহি নিশির কাছে যা তো একটু ওর হয়তো তকে দরকার পড়তে পারে।
রাহি রেহানের দিকে এক পালক তাকিয়ে। সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে রেহানের ঘরে আসে। এসে দেখে নিশি তব্ধা হয়ে বসে আছে বিছানায় আর কিছু একটা মনে করার চেষ্টা করছে চোখ বন্ধ করে। রাহি নিশির পাশে এসে বসে বলে
–কি হয়েছে নিশু আপু। রাতের নেশা এখনও কাটে নি।
রাহির কন্ঠ শুনে নিশি চমকে রাহির দিকে তাকিয়ে বলে
–মানে।
–মানে গতকাল রাতে তুমি যা করেছিলে।
–কি করেছি আমি বল না প্লিজ। রেহানকে অনেক জিঙ্গাস করেছি কিন্তু ওনি কিছু বলে নি না বলে চলে গেছে।
–কালকে তুমি হয়তো গেট টুগেদারে গিয়ে মদ খেয়ে ফেলেছিলে।
–কিহ???
–হে। ভাইয়া তোমাকে কোলে করে নিয়ে বাড়িতে আসে তারপর তোমাকে লেবুর শরবত খাওয়ানো হয়। শরবতটা খাওয়ার পর তুমি যা করলে।
–কি করলাম?
–তুমি ভাইয়ার শরীরের বমি করে যাচ্ছে তাই অবস্থা করে ফেলেছিলে ভাইয়ার। ভাইয়ার তো অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে তোমার বমি দেখে। ভাইয়া কোনো মতে নিজেকে ঠিক রেখেছে তোমার বমি দেখে। ভাইয়ার একটাই সমস্যা কারো বমি দেখলে উল্টা ভাইয়া নিজেই বমি করা শুরু করে দেয়।
–কি বলছো কি তুমি রাহি।
–হুমম।
নিশি ঢোক গিলে অসহায় চেহারায় বলে
–আচ্ছা আমার ড্রেস চেইন্জ করলো কে?
–আমি করেছি। তুমি তো বমি করেই অজ্ঞান।
–ওও আচ্ছা তার মানে তোমার ভাইয়া আমার ড্রেস চেইন্জ করে নি তাই তো।
–না না ভাইয়া তোমার এমন অবস্থা দেখে ঘর থেকে পালিয়েছে। আমি আর কাজের লোক মিলেই এসব করলাম।
নিশি আপরাধি মুখ করে রাহির হাত ধরে বলে
–সরি রাহি আমার জন্য তোমাকে এত কষ্ট করতে হলো।
–আরে না এর জন্য সরি বলতে হবে না তোমাকে নিশু আপু। এখন যাও চট করে ফ্রেস হয়ে নিচে এসো সবাই অপেক্ষা করছে তোমার জন্য।
–হুমমম।
নিশি ফ্রেস হতে চলে যায় আর রাহি নিচে চলে যায়। প্রায় বিশ মিনিট পর নিশি শাওয়ার নিয়দ ওয়াসরুম থেকে বের হয়েই রেহানকে দেখে চমকে যায়। আধশোয়া হয়ে পায়ের উপর পা তুলে ফোন টিপছে। নিশি রেহানের দিকে ছোট ছোট চোখে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষন আগে লোকটা কিভাবে নিশিকে গোল খাওয়ালো ভাবে যায়। কি সংঘাতিক এইলোক। নিশি ত বেচারি আকাশকুসুম কত কিছুই ভেবে ফেলেছিলো ছিহ। নিশি রেহানের সামনে দাঁড়িয়ে বলে
–আপনি আমার সাথে এমন করলেন কেন??
–কি করলাম আমি আবার?
ফোনের দিকে তাকিয়ে বলে কথাটা
–মানে আপনি এখন না জানার ভান ধরছেন।
–ফ্রেস হয়ে এসেছো এবার নিচে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে রেডি হয়ে নাও তোমাকে কোচিং এ দিয়ে আমি অফিসে যাবো তাই যা করবে তাড়াতাড়ি করো আধ ঘন্টা তোমার হাতে সময় আছে।
রেহানের কথায় নিশির টনক নড়লো এত কিছুর মাঝে মাথা থেকে কোচিং এ যাওয়ার কথাটা ভুলেই গিয়েছিলো। তাই আর কথা না বাড়িয়ে নিচে চলে যায় নিশি।
_____
কোচিং শেষে নিশি কোচিং এর বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। এখন নিশির উদ্দেশ্য রেহানকে কল করে জেনে নেওয়া রেহান কি আসবে নিশিকে নিতে নাকি একাই বাড়ি ফিরে যাবে। নিশি রেহানকে দুই বার কল দেওয়ার পর রেহান কল ধরে
–হ্যালো!
–হে বলো।
–আপনি কি আসবেন আমাকে নিতে।
–না আমার কিছু কাজ আছে অফিসে তুমি ড্রাইভারকে ফোন করে জায়াগার নামটা বলো ড্রাইভার এসে তোমাকে নিয়ে যাবে।
–আচ্ছা ঠিক আছে।
–আর শুনো মাতাব্বরি করে একা একা রাওয়ানা দিবে না ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে আসার পর গাড়ি করে বাড়িতে যাবে বোঝা গেলো।
–হুমম।
–আচ্ছা তাহলে রাখি।
রেহান ফোন রাখতে যাবে এমন সময় ফোনের ওপাশ থেকে একটা পরিচিত কন্ঠস্বর ভেসে।
–আরে ভাবি আপনি এখানে?
নিশিও হেসে পাশের মানুষটিকে জবাব দেয়।
–জি আমি।
রেহান নিশিকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই নিশি কলটা কেটে দেয়।
রেহানের বুঝতে বাকি রইলো না এখন নিশির পাশে কে আছে। রেহান সাতপাচ কিছু না ভেবেই অফিস থেকে বের হয়ে যায়। উদ্দেশ্য এখন একটাই তাড়াতাড়ি নিশির কাছে পৌছাতে হবে।
#চলবে
#তুমি_আমার
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_16
রিফাত আর নিশি পাশাপাশি বসে আছে। কিন্তু কারো মুখেই কোনো কথা নেই রিফাতেই নিরবতা ভেঙ্গে বলা শুরু করে
–তো কি অবস্থা তোমার?
নিশি চকিতে রিফাতের দিকে তাকিয়ে বলে
–ভালো ভাইয়া আর আপনি কি আমাকে কিছু বলতে চান।
রিফাত বাকা হেসে
–খুব স্মার্ট তো তুমি কিভাবে বুঝে গেলে আমি কিছু বলতে চাই।
–আমার মনে হলো আপনি আমাকে কিছু বলতে চান তাই বললাম।
–বলতে তো অনেক কিছুই চাই বাট তুমি কোনটা শুনতে চাও।
–আপনি কি বলবেন সেটা তো আর আমি জানি না তাই আপনি যেটাই বলবেন সেটাই আমি শুনবো।
–ওকে তাহলে তোমার বরের আগের জীবন সম্পর্কে কিছু বলি আমি যে গুলা তুমি জানো না।
নিশি ভ্রু কুচকে রিফাতের দিকে তাকিয়ে বলে
–কি জানি না আমি।
–আসলে তোমার বর না গভীর জলের মাছ বুঝলে।
–মানে।
–বোকা মেয়ে। আমি জানি তোমার আর রেহানের মাঝে কিছুই হয়নি যেটা সাধারণ স্বামী স্ত্রীর মাঝে হয়ে থাকে।
–আপনি ঠিক কি বলতে চাইছেন সেটা স্পষ্টভাবে বলুন এমন হেয়ালি ভাবে বললে বুঝবো কি করে।
–আসলে তোমার স্বামীর জীবনে একজন নারী ছিলো যাকে তোমার স্বামী ভীষন ভালোবাসত কিন্তু নারীটা তাকে ঠকিয়ে অন্য জনের কাছে চলে যায়।
–সেই নারীটার নাম কি রিয়া।
–তুমি রিয়ার নাম জানো কি করে?
নিশি দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলে।
–ওনি একবার ঘুমের ঘোরে নামটা বলেছিলো।
–ও তার জন্যই তুমি আবাক হও নি আমার কথাটা শুনে।
–হুমম।
–ওওও। আসলে রিয়া খুব লোভী একটা মেয়ে ছিলো রেহানকে ভালোবাসত শুধু ওর টাকার জন্য যখনেই দেখলো রেহানের থেকে বড়লোক এক ছেলে ওকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে তখনেই রেহানকে ছেড়ে চলে যায়। এরপর রেহান ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলো ওকে ওর বন্ধুরা খুব কষ্টে ডিপ্রেশন থেকে বের করে। আমিও ওর বন্ধু কিন্তু আমাদের সম্পর্কটা দা আর কুমড়ার মতো কিন্তু আমি চাই রেহান ভালো থাকুক সুখে থাকুক। রেহানের চোখে তোমার জন্য ভালোবাসা দেখিছি আমি ওই দিন কিন্তু ও সেটা প্রকাশ করতে চাইছে না তাই তোমাকেই কিছু একটা করতে হবে যাতে রেহান নিজের মুখে স্বীকার করে ও তোমাকে ভালোবাসে। এক বার ভালোবেসে ও ঠকে গেছে ওর ধারনা আবার ও কাউকে নিজের সবটা দিয়ে ভালোবাসলে ও হয়তো আবার ঠকে যাবে।
–আপনি কি করে বুঝলেন যে ওনি আমাকে ভালোবাসে।
–একটা ছেলে আরেকটা ছেলেকে দেখলেই বুঝতে পারে তার মনে কি চলছে।
নিশি কি বলবে ঠিক বুঝতে পারছেনা তাই চুপচাপ বসে আছে। রেহান কি সত্যি ওকে ভালোবাসে নাকি শুধু মাএ মোহ। ইদানিং রেহান নামক মানুষটিকে ওর কাছে গোলকধাধা ছাড়া আর কিছুই লাগে না।
রিফাত কিছু ক্ষন চুপ থেকে বলে
–নিশি আমি এখন যাই এখন কেমন। আমার সাথে তোমাকে দেখলে তোমার স্বামী আবার আমার কলার ধরতে আসবে। আমার আবার সম্মানের গুরুত্বটা একটু বেশি তোমার স্বামী যদি এই মানুষ ভরা রাস্তায় আমার কলার ধরে তাহলে আমার ইজ্জতের ফুলদা হয়ে যাবে। আমি বরং এখন আসি আর আমার সাথে যে তোমার দেখে হয়েছে এটা কিন্তু রেহানকে বলবে না কেমন।
–আচ্ছা কিন্ত আপনি এভাবে পালাচ্ছেন কেন??
–ও তুমি বুঝবে না আমি আমার মান নিয়ে পালাতে পারলেই বাচি।
নিশি ভ্রু কুচকে রিফাতের দিকে তাকিয়ে রিফাতের বলা কথা গুলা শুনছিলো কিন্তু এই কথা গুলার মানে ঠিক ও বুঝতে পারলো।
অচমকাই নিশির সামনে কেউ এসে দাড়ায়। নিশি লোকটিকে দেখে মাএই দরফরিয়ে বসা থেকে উঠে দাড়ায়
–একি রেহান আপনি এখানে??
এবার নিশি বুঝতে পারলো রিফাত কেন এভাবে পালিয়ে গেলো। রেহান গম্ভীর সুরে বলে
–কেন আমি কি এখানে আসতে পারি না।
–না আসতেই পারেন কিন্তু আপনি যে বললেন আপনি ব্যস্ত তাই আমাকে নিতে আসবেন না।
–তোমার সাথে এতক্ষন কে ছিলো?
নিশি ভড়কে যায় রেহানের কথায়। ঢোক গিলে বলে
–কেউ ছিলো না তো।
রেহান মুখশ্রী শক্ত করে বলে
–সত্যি কেউ ছিলো না নাকি আমার থেকে কিছু লুকাচ্ছো।
–আজব আপনার কাছ থেকে কেন কিছু লুকাবো। আর লুকালেই বা কি আমি তো আর আপনার কেউ হই না।
রেহানের মস্তিষ্ক জ্বলে উঠে নিশির বলা কথা শুনে নাকের পাটা ফুলিয়ে উচ্চস্বরে বলে উঠে
–কেউ হই না আমি তোমার? কি বলতে চাইছো পরিস্কার করে বলো।
–আস্তে এভাবে চিৎকার করবেন না এটা আপনার বেড রুম না যে চার দেয়ালের মাঝে আপনার চিৎকার সীমাবদ্ধ থাকবে। তাই প্লিজ সিনক্রিয়েট করবেন না।
কথাটা বলেই নিশি গাড়ির কাছে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে। কিচ্ছু ভালো লাগছে নিশির কেন জানি নিজেকে খুব অসহায় অসহায় লাগছে। গাড়ির সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিশি। রেহানও গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে নিশির মায়াভরা মুখশ্রীর দিকে পালক তাকিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করা শুরু করে। কারো মুখে কোনো কথা নেই। নিরবতা ভেঙ্গে নিশি বলে উঠে
–আপনার ভালোবাসার মানুষটির নাম কি রেহান?
স্ট্রিয়ারিং রেহানের হাত জোরে কেপে উঠলো নিশির কথা শুনে। হঠাৎ নিশি এই প্রশ্ন করাতে রেহান কিছুটা ঘাবড়ে যায়। পরক্ষনেই নিজেকে স্বাভাবিক রেখে নিশির দিকে তাকিয়ে বলে
–মানে!
–কিছু না।
রেহানও কথা বাড়ালো না তবে এটা বুজতে পারছে নিশির কিছু একটা তো হয়েছে সেটা রিফাতের দ্বারা কিন্তু কি হয়েছে সেটা বুঝতে পারছে না।
গাড়ি থামে রহমান ভিলায় সামনে। নিশি রেহানের দিকে এক পালক তাকিয়ে দেখে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে সোজা বাড়ির ভেতরে ডুকে পড়ে। নিশির যাওয়ার দিকে রেহান বলে
–কিছু তো একটা হয়েছে যার উত্তর ওই রিফাত দিতে পারবে আমি স্পষ্ট ওর কন্ঠ শুনেছি ফোনে।
রেহান ফোন হাতে নিয়ে রিফাতকে কল করে সাথে সাথে কল রিসিভ করে রিফাত বলে
–হঠাৎ আমাকে স্মরন করলি যে কাহিনি কি?
–তুই নিশির দেখা করেছিস?
–হঠাৎ এই প্রশ্ন।
–যা বলছি তার উত্তর দে রিফাত।
–হুমম করেছি তো।
–কি বলেছিস তুই ওকে?
–কিচ্ছু না।
–তুই কি আমার অতিত নিয়ে ওকে কিছু বলেছিস।
রিফাত শব্দ করে হেসে বলে
–হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।
–তার মানে তুই আমার অতিতের কথা ওকে বলেছিস তাই তো।
–অল্প কিছু টা বলেছি।
–অল্প কিছুটা মানে।
–মানে একটু বলেছি।
রেহান দাতে দাত চেপে বলে
–কাজটা ভালো করিস নি তুই রিফাত।
–যে কাজটা একদিন তুই করতি এই কাজ আমি আরও আগে করে দিলাম সিম্পল এতে এতো রাগার কি আছে আর আমি এখন রাখি আমার মিটিং আছে।
ঠাস করে লাইনটা কেটে দিলো রিফাত। রেহানের এখন একটাই চিন্তা রিফাত কি ওই কথাটাও নিশিকে বলে দিয়েছে যদি বলে থাকে তাহলে নিশি কি রকম রিয়েক্ট করেছে ভেবে কুল পাচ্ছে না রেহান।
–না এতে ভেবে লাভ নেই এই বিষয়ে নিশির সাথে কথা বলা দরকার। ও কতটুকু জেনেছে আমার অতিত সম্পর্কে তা আমায় জানতে হবে।
রেহান গাড়ি বাড়ির ভেতরে ডুকাতে যাবে তখনেই কল আসে অফিস থেকে রেহান কলটা ধরার সাথে সাথে তড়িৎ গতিতে ফোনের ওপাশের লোকটা বলে উঠে
–স্যার কোথায় আপনি তাড়াতাড়ি অফিসে আসুন। ক্লায়েন্টরা রেগে যাচ্ছে মিটিং লেইট হচ্ছে বলে।
রেহান কপালে চেপে ধরে নিশিকে নিয়ে এতটাই মগ্ন ছিলো যে অফিসের ব্যাপারটা ভুলে গেছে।
–তুমি ওনাদের দশ মিনিট অপেক্ষা করতে বলো আমি আসছি।
–জি স্যার।
রেহান গাড়ি স্ট্রাট করে বলে
–বউকে না হয় পরে সামলাবো আগে অফিস সামলে নেই। বউ তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না কিন্তু অফিসে না গেলে বড় লস হয়ে যাবে কোম্পানির।
#চলবে