তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব_৯

0
1996

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা
পর্ব_৯
#মেঘ_বালিকা
.
.
আজ তাসিনের বাবা-মা তাদের দেশের বাড়ি বেড়াতে যাবে..তনুও বেশ খুশি কারণ সেও যাবে তাদের সাথে..কিন্তু তাসিন যেতে পারবে না..ওর কাজ পরে গেছে…
.
সকাল থেকে বেশ খুশি খুশি লাগছে…এতো খুশি মনে হয় এর আগে লাগেনি..কারনটা হলো তাসিন..কিছুদিন হলেও ওর থেকে রেহাই পাওয়া যাবে..ও আমার উপর এইকয়দিন আর কোনো রকম টর্চার করতে পারবে না..
.
ডাইনিং টেবিলে বসে সবাই ব্রেকফাস্ট করছি..সবাই চুপচাপ খাচ্ছি..হঠাৎ সব নিরবতা ভেদ করে তাসিন বলে উঠলো,,
-আব্বু-আম্মু আমার তোমাদের কিছু বলার আছে!!
তাসিনের বাবা খেতে খেতেই জবাব দিলো,
-হ্যা বলো কি বলবে!
-আব্বু আসলে তনু তোমাদের সাথে যেতে পারবে না…
তাসিনের মুখে হঠাৎ এমন কথা শুনে আমার গলায় খাবার আটকে গেলে..এবার সবার নজর আমার উপর পরলো..তারপর মা বলে উঠলো,,,
-কেনো যেতে পারবে না কেনো?
-আসলে আম্মু ও আমাকে ছেড়ে যেতে চাইছে না..আমি একা থাকবো তো তাই আর কি.. ও আসলে তোমাদের লজ্জায় কিছু বলতে পারছিলো না তাই আমাকেই বলতে হলো..
এবার বাবা-মা দুজনেই হেসে দিলো..আর আমি বোকার মতো বসে রইলাম..তারপর বাবা বললো,,
-এই ব্যাপার তাহলে..তা তনু মা তুই তো আমাদের বললেই পারতি আমরা কি তোকে জোর করতাম..বোকা মেয়ে..এর জন্যে এতো লজ্জার কি আছে..জানিস তো বিয়ের প্রথম প্রথম তোর শ্বাশুরি মাও এমন করতো..আমায় একা ছেড়ে কোথাও যেতে চাইতো না..(বলেই উচ্চস্বরে হো হো করে হেসে উঠলেন)
আমার শ্বাশুরি মা মনে হয় এই কথায় একটু লজ্জাই পেয়েছেন..
.
বাবা-মা চলে গেছেন..তাদের যাওয়ার কিছুক্ষন পর তাসিন রহিমা খালাকেও তার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে..যতোদিন বাবা-মা না আসবে ততোদিন তার ছুটি..সেও খুশি মনে চলে গেছে..এবার সারা বাড়িতে শুধু আমি আর তাসিন..আমার খুব কান্না পাচ্ছে..ও ইচ্ছা করে সব করেছে..
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
বিছানায় বসে বই পরছিলাম এমন সময় তাসিন আমার সামনে এক গাদা জামা-কাপড় এনে রাখলো..আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,,
-এতো জামা-কাপড় এখানে কেনো রাখলেন!!এগুলো দিয়ে কী হবে?
-ধোয়া হবে..জামা গুলো ময়লা হয়ে গেছে..যাও এগুলো ধুয়ে দেও..
-কিইইই…আমি!!
-হ্যা এতো অবাক হওয়ার কি আছে!!
-মানে আপনি পাগল এতো গুলো জামা আমি একা কিভাবে ধুবো!!আর তার থেকে বড় কথা জামা গুলো সবই পরিষ্কার এখানে তো আমি কোনো ময়লা দেখতে পাচ্ছি না..
তারপর তাসিন কিছুনা বলেই পাউডার আর তেল এনে জামাগুলোর উপর ঢেলে দিলো..তারপর একটু বাঁকা হেসে বললো,,,
-লুক তনু..এবার জামাগুলো ময়লা হয়ে গেছে এখন তো আর কিছু বলতে পারবে না..সো যাও ধুয়ে ফেলো…
.
পুরো জামার গুষ্টি আমাকে ধরিয়ে দিয়ে তাসিন আরামে বসে বসে ফোন টিপছে..আর এদিকে আমি জামা ধুতে গিয়ে নিজেকেই ধুয়ে ফেলছি..তাসিনের রাগ এখন আমি ওর জামা কাপড়ের উপর দেখাচ্ছি..ইচ্ছা মতো আছড়াচ্ছি তো একবার পানি ভিতর চুবাচ্ছি..জামাগুলাকে তাসিন কল্পনা করে এইসব করছি আমি..আর ইচ্ছা মতো তাসিনকে মনে মনে বকা-ঝঁকা করছি..
.
অবশেষে অনেক কষ্টে জামা-কাপড় গুলো ধুয়া সম্পূর্ন করে ছাদে চলে গেলাম..
.
এদিকে তাসিন এতোক্ষন আড় চোখে তনুর কান্ড কারখানা সব দেখছিলো..আর মিটিমিটি হাসছিলো..ওর বেশ লাগছিলো তনুকে এভাবে রাগী রাগী ফেসে দেখতে..ওকে জ্বালাতে ওর কেনো জানি খুব ভালো লাগে..
.
ছাদে জামাগুলো নাড়া শেষ করে আসতে নিবো তখনই কেউ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমার খোলা চুলে মুখ ডুবিয়ে দিলো..বুঝতে পারলাম তাসিন তাই একঝটকায় ওকে ছাড়িয়ে চলে আসলাম নিচে..ফাজিল একটা..আমাকে এতো খাটিয়ে এখন ঢং করতে আসছে..ঠিক করছি চলে আসছি..হুহহ
.
রাতে খাওয়ার সময় হলো এক সমস্যা…যা রান্না ছিলো তা দিয়ে দুপুরের খাওয়া হয়েছে..রাতে খাওয়ার জন্যে এখন রান্না করতে হবে..কিন্তু সমস্যা হলো আমি রান্না করতে পারিনা..অল্পের মধ্যে ভাত আর আলু সিদ্ধ ছাড়া তেমন কিছু পারিনা..দুইজন দুইজনের দিক তাকা তাকি করছি..তাসিন আলু সিদ্ধ দিয়ে খেতে নারাজ..তাই আমিও বলে দিয়েছি খেতে হলে নিজে ব্যবস্থা করে নিন..
.
রাত ১০টা বাজে এখনও রান্না হয়নি..
আমার পেটের মধ্যে ইঁদুর গুলো ছুটোছুটি করছে..সেই কখন তাসিন কিচেনে গিয়েছে..সে নাকি নিজে রান্না করবে..এর আগেও নাকি অনেকবার রান্না করেছে..সবাই খেয়ে নাকি প্রশংসাও করেছে..কিন্তু আমার জানা মতে ও রান্নার র ও জানে না..হঠাৎ কিচেন থেকে খুব জোরে কিছু একটার শব্দ হলো..শব্দ শুনে আমি তাড়াতাড়ি কিচেনে গেলাম..গিয়ে আমি অবাক..কিচেনের সব কিছু এলোমেলো..নিচে একটা বাটি পরে আছে আর তাসিন কিচেনের এক কিনারে চুপ করে বসে আছে..তারপর আমি বলে উঠলাম,,
-কি করেছেন এগুলো???কিচেনের এই হাল কেনো??আর দেখে তো মনে হচ্ছে এখনো রান্না শুরুই করেননি..
-তনু এগুলো আমার দ্বারা সম্ভব না..ইমপসিবল..এতোক্ষন ধরে চেষ্টা করেও কি রান্না করবো সেটাই ঠিক করতে পারিনি..আমি কি পারি নাকি এসব করতে…
-তাহলে আপনি যে তখন বললেন আপনি রান্না পারেন?এর আগেও রান্না করেছেন!!!
-ও.ওগুলো তো এমনিই বলেছি হে হে(ক্যাবলা মার্কা একটা হাসি দিয়ে)
মেজাজটাই এখন খারাপ হয়ে যাচ্ছে আমার..না পারলে বলে দে মিথ্যা কথা কেন বলবি!!কিন্তু এখন কি খাবো..দুইজন দুইজনের মুখের দিকে তাকিয়ে আছি…
.
রাত ১২টা…
শেষমেশ কোনো উপায় না দেখে ভাত আর আলু সিদ্ধ রান্না করে এখন খেতে হচ্ছে..আমার অবশ্য তেমন কোনো অসুবিধা হচ্ছে না..আমি বেশ তৃপ্তি করেই খাচ্ছি কিন্তু তাসিনের বেশ কষ্ট হচ্ছে খেতে বারবার গলায় খাবার আটকে যাচ্ছে..ভাতের থেকে পানিই বেশি খাচ্ছে ও..ওর অবস্থা দেখে আমার হাসি পাচ্ছে..সামান্য আলু সিদ্ধ দিয়ে ভাত খেতে পারছে না..
.
.
.
চলবে….
.
.
.
( সরি আজকে পার্টটা ছোট করে দিয়ার জন্যে…আসলে রোযা রেখে গল্প লেখা একটু অসুবিধা হচ্ছে.. আর আজকের পার্টটায় লেখায় একটু ভুল থাকতে পারে…সবাই ভুলগুলো শুধরিয়ে পড়ার চেষ্টা করবেন এবং ভুল-ক্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন..ধন্যবাদ)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে