#তুই_হবি_শুধু_আমার (২)💙
#সাইরাহ্_সীরাত
#পর্ব_০৬
মুগ্ধতার সামনে বুকে হাত গুজে দাড়িয়ে আছে রোজ। ক্রোধান্বিত দৃষ্টি তাঁর, হাতে ধাঁরালো ছু’রি। মুগ্ধতার মুখ টেপ দিয়ে আটকে রাখা। রোজ বেশ কিছুসময় মুগ্ধতার দিকে চেয়ে থেকে বলে,
-“নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছো কি করে তুমি? ”
মুগ্ধতার তরফ থেকে জবাব আসে না। রোজ শব্দ করে হাসে। মুগ্ধতার বা’হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল সামান্য একটু কা’টার সঙ্গে সঙ্গেই অজ্ঞান হয়ে গেছে মেয়েটা।একটুতে যার এই অবস্থা সে এত গরম দেখায় কিভাবে? রোজের চোখে-মুখে ফুটে উঠলো বিরক্তি। মেজাজ তিক্ততায় ঘেরা। মেয়েটাকে সহ্য করতে পারছে না সে। এমন সময় ফালাকের সহসা আগমনে রোজ সরুচোখে তাকায়। ফালাক রক্তচক্ষু নিক্ষেপ করে। রোজ সে দৃষ্টি উপেক্ষা করে বলে,
-“আপনার এই ননীর পুতুলকে নিয়ে যান।দূর্বলকে রোজ আ’ঘাত করে না।একে একটু সবল হতে সাহায্য করবেন প্লিজ। রাগটা ততদিন চেপে রাখবো নিজের মাঝে। ”
ফালাক উত্তর না দিয়ে মুগ্ধতার বাঁধন খুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কড়া সিকিউরিটির মধ্যে মুগ্ধতাকে অপহরণ করে রোজ বুঝিয়ে দিয়েছে ফালাকের রাগের থেকে ওর জেদ কত ভয়ঙ্কর। ফালাকের ক্রোধ বাড়লেও সে কিছু বলল না। মুগ্ধতার তেমন কোনো ক্ষতি করেনি রোজ তাই নিজের রাগটাকেও নিয়ন্ত্রণ করে ফেললো সে। রোজ যেতে যেতে বলল,
-“যাকে এত ভালোবাসেন, তাকে কষ্ট পেতে দেখে যেমন অনুভব করলেন!আমিও তেমনটাই অনুভব করেছিলাম যখন ঘড়িটা ও পুকুরে ফেলেছিল। এবার বুঝলেন তো ওর ওপর কেন রাগ হচ্ছে আমার। ”
ফালাক এবার উত্তর দিল, কিন্তু সে উত্তর রোজের কান অবধি পৌঁছালো না। রোজ চলে গেল বাড়িতে। বিয়ের কাজ বাকি। যতদ্রুত সম্ভব কাজগুলো সমাপ্ত করতে হবে।
🍁🍁🍁
রোজ বাড়িতে এসে দেখলো ওর জন্য একটা পার্সেল এসেছে।নীলরঙা পার্সেল। নীল কাগজে খুব সুন্দর করে মোড়ানো পার্সেলটা দেখামাত্র রোজের ভালো লেগে যায়। রোজের বাবাও রোজকে এভাবেই প্যাকিং করে গিফট দিত। রোজ পার্সেলটা খুলে দেখলো তাতে নীল রঙা একটা চিরকুট আর শাড়ি গহনা। লাল বেনারসি দেখে রোজ সন্দিগ্ধচোখে তাকায়। ভুল করে অয়ন্তির পার্সেল চলে আসলো নাকি? রোজ চিরকুট খুলে পড়তে শুরু করে।
💙চাঁদ! নামটা তোমার জন্য একদম পার্ফেক্ট। আমার সমকক্ষ কেউ হতে পারবে এটা কখনও ভাবিনি আমি। তোমাকে দেখার পর মনে হলো, রাজত্ব করা শুধু আমি একা নই, আরও একজন মানুষ জানে। আমার পথের কা’টা হওয়ার জন্য ধন্যবাদ। কাটা দিয়ে কাটা তোলা মনে হয় আমার থেকে ভালো কেউ জানে না।তবে আমি তুমি নামক কা’টাটা তুলতে চাই না। কারণ তুমি নামক কা’টাটা ঠিক আমার বুকে বিদ্ধ হয়েছে।এই যন্ত্রণা আমি পেতে চাইনি, তবুও তুমি দিলে। এর শাস্তি কি তোমার প্রাপ্য নয়? ভালোলাগা কিংবা ভালোবাসা নয়। তোমাকে আমার প্রয়োজন, শুধু সেই কারনেই আমার মন তোমাকে চায়। স্বেচ্ছায় ধরা দেবে না জানি। তাই জোরপূর্বক তোমাকে নিজের করতে হবে।সাবধানে থেকো, আমি মানুষটা তোমার থেকেও বেশি প্রতিশোধ পরায়ণ। আমাকে আ’ঘাত করে তুমি বেঁচে যাবে এই ধারণা করা তোমার কাল হয়ে দাড়াবে। আর চাঁদ নামটা কেন তোমার জন্য পার্ফেক্ট সেটা নাহয় আস্তে আস্তে জানলে। আমার কোনো তাড়া নেই, ধীরেসুস্থে তোমাকে পরাজিত করে আমি তোমায় আমার কন্টকরাজ্যে নিয়ে আসবো। রাজা হিসেবে আমি মন্দ নই, কিন্তু তোমাকে রাজ্যের রানি হিসেবে রাখতে চাইনা। আসলে তোমাকে কেন চাই সেটা নিজেও জানি না। শুধু জানি, আমার যেটা ভালো লাগে,যেটা একবার পেতে চাই, সেটা শুধু আমার হবে। আর কারোর না। কেউ যদি আমার জিনিসে নজর দেয় তাহলে তাঁর চোখ উপড়ে মার্বেল খেললেও শান্তি পাইনা আমি। তাই নিজেকে অন্যকারোর সঙ্গে জড়িয়ে ফেলবে না আশা করি। কারন তুমি অন্যকাউকে নিজের জীবনে আনার চেষ্টা করলে তাঁর জীবনের সঙ্গে সঙ্গে তোমাকেও শেষ করে ফেলবে এই হিং’স্র রাজা।
শাড়িটা আমার ভালো লাগলো বলে পাঠালাম। ভেবেছি তোমাকে পরাজিত করে যেদিন নিজের কাছে নিয়ে আসবো সেদিন তোমার পরনে এই শাড়িটা থাকবে। এটা অতি মূল্যবান আমার কাছে।এটা যত্ন করে নিজের কাছে রাখবে। ভুলেও আমার দেওয়া কোনো জিনিসের অমর্যাদা করবে না। কারন আমাকে বা আমার জিনিস অসম্মান করার ফল অত্যন্ত ভয়াবহ। 💙
রোজ এবারের জিনিসগুলো ফেললো না। গুছিয়ে রেখে দিল আলামারিতে,কারন জিনিসগুলো প্রেরকের সামনে পোড়ানোর মজাটাই আলাদা। সে ভাবলো কি করে তাঁর পছন্দ ও ইচ্ছানুয়ায়ী রোজের জীবন চলবে?এত বোকা রাজা রাজত্ব করতে শিখেছে কিভাবে? রোজের দুঃখ হলো।রাজত্ব করাটা কি তাকে শেখানো উচিত? অবশ্যই হ্যাঁ।এত সাহস দেখানোর ফলস্বরূপ রোজ তাকে রাজত্ব করা শেখাবে। এটাও বোঝাবে রানি হিসেবে রোজকে রাখা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়, যে রানিই তাকে কোথাকার কোন রাজা রানি হিসেবে রাখবে কিনা ভাববে! এটা তো রানির জন্য অসম্মানজনক। আর রোজের মতো রানি নিজের সম্মান নষ্ট করা একদমই পছন্দ করে না। কারন এটা তাঁর অহংকার নয় অলংকার!
🍁🍁🍁
রেস্তরাঁয় বসে পুডিং খাচ্ছে সারিম। পাশেই আরশান ও অয়ন্তি। সারিম ওদের সঙ্গে আসতে চায়নি, রোজ বার বার মানা করে দিয়েছিলো দাদাই আর হীরামনের সঙ্গে যাওয়ার জেদ করবে না,ওদের একা ঘুরতে যেতে দেবে, তুমি ফারিয়া আন্টিদের সঙ্গে থাকবে। কিন্তু আরশান নিজেই জোর করে ওকে আনলো। সারিম আরশানের দিকে তাকিয়ে অয়ন্তির দিকে তাকালো। দুজনেই নিশ্চুপ।কেউ কথা বলছে না কেন? সারিম খেতে খেতে বলে ওঠে,
-“তোমরা কেউ কথা বলছো না কেন? ”
আরশান সারিমের দিকে তাকায়। সারিম উত্তরের জন্য খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আরশান হেসে বলে,
-“আমি তো সবসময় বলি। তোমার হীরামনকে জিজ্ঞেস করো, সে কেন চুপ থাকে। কখনও কথা বলে না আমার সঙ্গে। এটা কি ঠিক? ”
-“একদম না। হীরামন তুমি দাদাইয়ের সঙ্গে কথা বলো না কেন? ”
অয়ন্তি কপোট রাগ দেখিয়ে বলে,
-“কেউ যদি ভুলভাল উপহার পাঠায় তাঁর সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করে? কেউ রাগিয়ে দিলে তুমি তাঁর সঙ্গে কথা বলবে সারিম? ”
-“না, কারন রেগে কথা বলতে গেলে অনেক ভুল কথা বলে ফেলা হয়। আপিয়া বলে রাগ হলে শান্ত থাকতে হয়। ”
আরশান নরম কন্ঠে বলে,
-“কেউ যদি না বুঝে ভুল করে। তাহলে তাকে ক্ষমা করা উচিত। ”
সারিম সায় দিল, “হ্যাঁ, এটাও ঠিক। ”
অয়ন্তি কিছু বললো না। কফি পানে মনোযোগ দিলো। কিছুসময় আগে আরশান সবার সামনে ওকে অপ্রস্তুত করে দিয়েছে। মা-বাবার সামনে গতকাল রাতের ঝগড়া বলে দিয়ে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। অয়ন্তি মনে মনে ঠিক করেছে আরশানের সঙ্গে বিয়ের আগের দিন অবধি কথাই বলবে না। এটা ওর শাস্তি। আরশানের সে শাস্তি পছন্দ না। সারিম বোকা চাহুনি নিক্ষেপ করে বলে,
-“আমি বাথরুমে যাবো। ”
আরশান সচকিত দৃষ্টিতে তাকায়, “ছোট নাকি বড়?”
-“বড়! ”
আরশান উঠে ওকে নিয়ে বাথরুমে গেল। কিন্তু সারিম দুমিনিটেই কাজ শেষ করে বেরিয়ে আসে। আরশান ভ্রু কুঁচকে বলে,
-“হয়েছে? ”
-“তুমি এখানে কি করছো দাদাই? ”
-“দাড়িয়ে আছি। কেন? ”
-“উফ তুমি কি বোকা, আমি তোমাদের একা রেখে চলে আসলাম। আর তুমি এখানে দাড়িয়ে আছো? ”
-“মানে? ”
-“মানে আপিয়া বলেছে তোমাদের একা গল্প করতে দিতে, একা ঘুরতে যেতে দিতে। ”
আরশান ঠোঁট টিপে হেসে বলে,
-“তাই? তো, তোমার আপিয়া এটা কেন বলেছে? ”
সারিম ঠোঁট উল্টে বলল, “তা তো জানিনা। কিন্তু ভালো কোনো কারনেই বলেছে। আমার আপিয়ার অনেক বুদ্ধি বুঝলে। সে ভালো কথা বলে সবসময়,ভালো কাজ করে।”
-“তা তো বটেই। আমরাই বোকা। ”
-“এবার তুমি যাও, হীরামনের রাগ ভাঙাও। আমি এই রেস্টুরেন্ট ঘুরে দেখি। তুমি ওনাদের বলে দাও, যেটায় সাতরঙা জুস থাকে। ওটা আমাকে বানিয়ে দিতে। নীল রঙের জুসটা বেশি দেবে। আমার ওটা ভালো লাগে। রেইম্বো জুস ওটার নাম। ”
আরশান হেসে জুসের অর্ডার দিয়ে টেবিলে ফিরে যায়। ওয়েটারকে বলে সারিমকে রেস্তরা ঘুরিয়ে দেখাতে। অয়ন্তি গম্ভিরমুখে বসে আছে। আরশান রাগ বাড়িয়ে দিতে বলল,
-“নরমাল হও কুসুম। তোমাকে শাঁকচুন্নির মত লাগছে।”
অয়ন্তি তেতে উঠে বলে, “তা তো লাগবেই। পুরান হয়ে গেছি না? নতুন তাজা ফুল চাই আপনার। শুকিয়ে যাওয়া এই কুসুম দিয়ে আর কাজ চলবে? চলবে না তো। ”
-“সেকি! তুমি শুকিয়ে গেছো নাকি? দেখে তো মনে হয় কয়েক কেজি ওজন বেড়েছে তোমার। ফুটবলের মতো গোল হয়ে যাচ্ছো। ”
-“বাপের বাড়ি খেয়ে নিচ্ছি। আপনার বাড়িতে ভাতের চেয়ে খোঁটা বেশি শোনা লাগবে তাই। ”
-“আমি কখন খোঁটা দেই? তবে হ্যাঁ আমার বাড়িতে গেলে তোমাকে ডায়েট করতে হবে। কারন আমার স্লিম মেয়ে পছন্দ। মিনি সাইজের হাতির বাচ্চা না। ”
-“আবার খোঁটা, আমি হাতির বাচ্চা? তো যান কোনো টিকটিকির বাচ্চা খুজে বিয়ে করেন। ”
-“ওত ছোটখাট বাচ্চামানুষ চাইনা আমার। ”
-“আপনার কি চাই তা জানা আছে আমার। নতুন নতুন ফুলের ঘ্রাণ লাগে আপনার। কলেজে কত ইনা মিনা টিনা ছিল জানি না ভেবেছেন? ”
-“ইনা মিনা কোথ থেকে আসলো? আমার তিনটা এক্স ছিল। তাঁর মধ্যে দুই নাম্বারটা টিনা। প্রথমটার নাম তুবা ছিল আর লাস্টটার নাম নিশা। ”
-“চরিত্রহীন লোক। ”
-“তুমি এমন ভাব করছো যেন তোমার বয়ফ্রেন্ড ছিলো না? ”
-“ছিল না। কারন আমি চেয়েছিলাম আমার বরের সাথে প্রেম করতে। তাও বিয়ের পর, এজন্যই তো এতদিন আপনার সঙ্গে তেমন কথা বলিনি। রোজ ভেবেছে প্রেম করেছি, তবুও অস্বীকার করিনি আমি। আর সামান্য একটা কথায় আপনি আমাকে সবার সামনে খোঁটা দিলেন। ”
-“তো কি করবো? বিয়ে ঠিক হয়েছে। একসপ্তাহ পরেই বিয়ে অথচ তুমি আমার সঙ্গে ফোনেও কথা বলতে চাও না। এটা ঠিক? ”
-“আপনি যখন যখন ফোন করেন, সারিম রোজ তখন সামনেই থাকে। ওদের সামনে ফোন ধরলে আপনি যা বলেন তাতে আমার লজ্জা লাগে। লজ্জা পেলে সারিম প্রশ্ন করে, রোজ হাসে। তখন আমার লজ্জা আরও বেড়ে যায়। ”
অয়ন্তির অভিমানি কন্ঠস্বরে আরশান হেসে দেয়। বলে, “আহারে! বেচারি লাজুক বউটা আমার ভীষণ লজ্জায় পড়েছে। আমি তো জানতাম না, আচ্ছা বিয়ের পরেই নাহয় লজ্জা দেবো। এখন যাস্ট ভালোমন্দ কথা। ওকে?”
-“ওকে।”
🍁🍁🍁
-“লা’শটা দাফন করে দাও। ”
রোজের কথায় ইফতি চোখ বড় বড় করে তাকালো। রোজ বিরক্তকন্ঠে বলে,
-“এভাবে তাকাবে না। তোমার চোখগুলো ব্যাঙের মতো লাগে। ”
-“কিন্তু ও তো ম’রেনি। ”
রোজ এবার বেশ জোরে পায়ের কাছে ভান ধরে পড়ে থাকা ছেলেটার পেট বরাবর লা’থি দিলো। সে নড়লো না। রোজের ভয়ে ভান ধরেই পড়ে থাকলো। কারন রোজ যদি টের পায় সে সজ্ঞানে আছে তাহলে প্রচন্ড মা’র খাবে। রোজ আরও তিনটে লা’থি দিয়ে বলে,
-“না ম’রলে জিন্দা কবর দিয়ে দাও। এমনিতেও শ্বাস নিচ্ছে না। যাও দাফনটা দ্রুত কর, ইটস মাই অর্ডার।”
ইফতি আরও দুজন স্টাফ ডেকে ছেলেটাকে তুলতে গেলে ছেলেটা উঠে বসে। রোজ চেয়ারে হেলান দিল। চিবুক হাতের উল্টোপাশে ভর দিয়ে শান্ত চোখে তাকিয়ে আছে রোজ। দৃষ্টি স্থির, অথচ মেজাজ চড়াও হয়ে আছে ওর। ছেলেটা প্রায় দিনই অয়ন্তিকে বিরক্ত করে। আরশানের সঙ্গে এই ছেলেটার জন্যই গত কাল রাতে অয়ন্তি ঝগড়া হয়েছে। ছাদে যাওয়ার সময় রোজ শুনেছিলো ওদের কথোপকথন। অয়ন্তির জীবনে কোনো জটিলতা চায় না রোজ,তাই ইফতিকে দিয়ে অয়ন্তির বন্ধুর কাছ থেকে ছেলেটার পরিচয় ও স্বয়ং ছেলেটাকে জোগাড় করে এনেছিলো। আনার পর থেকে ছেলেটা সব অস্বীকার করেছে। ইফতি পেটানোর পর যা একটু স্বীকার করেছিলো রোজকে দেখে পুরোই পাল্টি খেলো। সে রোজকে দেখে ভেবেছিল রোজ অভিযোগ করেছে। তাই সে বাঁচার জন্য বলেছে “আমি অয়ন্তিকে না রোজকে দেখতে যেতাম,রোজকে পছন্দ করি আমি। রোজ অয়ন্তির বোন, ওর সঙ্গে ঘুরতো। আপনারা ভুল ভাবছেন। অয়ন্তির বিয়ে ঠিক, ওকে কেন বিরক্ত করবো আমি? ” ব্যাস। ইফতির হাত থেকে লাঠি নিয়ে রোজ নিজে ওকে থার্ড ডিগ্রি দিতে শুরু করলো, একপর্যায়ে ছেলেটা শ্বাস বন্ধ করে মরার মতো পড়ে রইলো। যেন রোজরা ভয় পেয়ে ছেড়ে দেয়।কিন্তু রোজ তো দাফনের কথা বলছে। ছেলেটা উঠে রোজের পায়ের কাছে বসে পড়ে। রোজ চেয়ার ঘুরিয়ে বলে,
-“এটাকে আমার সামনে থেকে সরাও, ইভটিজিংসহ যা যা কেস মনে আসে, ওর মামলায় ঠুকে জেলে ভরে দাও। ”
-“আর করবো না, অয়ন্তির তৃসীমানাতেও আর যাবো না। প্লিজ ছেড়ে দাও। আমি অয়ন্তি কেন কাউকে বিরক্ত করবো না সবাইকে বোন না, মায়ের নজরে দেখবো। ”
-“আবার বলো! ”
ছেলেটা পুনরায় কথাগুলো বলতেই রোজ ওকে ছেড়ে দিতে বলে। ছেলেটা ছাড়া পেয়ে ছুটে চলে যায়। ইফতি সন্দিহান কন্ঠে বলে,
-“তুমি কি ওকে সত্যিই দাফন করতে বলেছিলে? নাকি ভয় দেখিয়ে কথা আদায় করলে? ”
-“কয়েক ঘা দিয়ে ছেড়ে দিলে ও আবার হীরামনকে বিরক্ত করতো। এবার তা করার কথা চিন্তাও করবে না। কারন ও বুঝে গেছে, আমি ঠান্ডা মাথায় মানুষ মা’রতে জানি। ”
-“তোমাকে দেখলে তেমনটাই মনে হয়। ”
রোজ উঠে ফোনে চোখ নিবদ্ধ করে যেতে যেতে বলল,
-” আমাকে বিশ্লেষণ করা তোমার কাজ নয়। তদন্তে মনোযোগ দাও। ডাফার। ”
চলবে?