#তুই হবি শুধু আমার
#সাইরাহ্_সীরাত
#সূচনা_পর্ব
আমি কখনও মা হতে পারবো না আর’জে আরশান। এটা জানার পরও আমার পেছনে কেন আদাজল খেয়ে পড়ে আছেন? আপনার ক্যারিয়ার, আপনার পরিবারের মর্যাদা’র কথা ভাবুন এবং অন্য কোনো নারীতে আসক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন।
কথাগুলো বলে কুসুম নিজের হ্যান্ড ব্যাগটা হাতে তুলে নিল।আরশান পানি পান করে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে। ক্যাফের ওয়েটার ছোট নোটপ্যাড এনে আরশান ও কুসুমকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করে,
-ম্যাম, স্যার! আপনাদের অর্ডার?
আরশান বিরক্ত দৃষ্টিপাত নিক্ষেপ করে কুসুমকে বলল,
-কি নিবেন? আমি কফি আর স্যান্ডুইচ নিচ্ছি।
আরশানের ভাবলেশহীন প্রতিক্রিয়া ও স্বাভাবিক ভঙ্গির প্রশ্ন শুনে থমকাল কুসুম। চলে যাওয়ার জন্য উঠেছিল সে। আরশানের প্রশ্ন শুনে এবার তাঁর ললাটে দীর্ঘ ভাঁজ পড়ে। অনুভূতিশূণ্য মানুষটির এমন আচরণ ভাবাচ্ছে কুসুমকে। কুসুম যতদূর শুনেছিল মানুষটি প্রচন্ড ত্যাড়া, বদমেজাজি, বাস্তববাদী একজন। তাহলে তাঁর মাথায় কি বংশরক্ষা’র চিন্তা আসছে না? সন্তানলাভের কামনা আসছে না? কুসুমকে বসতে না দেখে আরশান আবারও ঠান্ডা গলায় বলল,
-বসুন। বসে কথা বলি। আপনার জন্য একটা শো বাদ দিয়ে এসেছি। সময় নষ্ট করেছি, এই গরমে রোদের তাপ সহ্য করেছি,তাপ লেগে আমার ফর্সা চামড়া পুড়ে গেল। আর আপনি এসেই নিজের মূল্যবান বক্তব্য শুনিয়ে চলে যাচ্ছেন?আমার কথা শুনবেন না? আর কে বলল আমি আপনার পেছনে আদাজল খেয়ে পড়ে আছি?আর ইয়্যু কিডিং উইদ্থ মি মিস কুসুম মীর্জা? আপনার মাঝে কি আছে? যার জন্য রেডিও জকি আরশান খাঁন আপনার পেছনে ঘুরবে?
অপমানে মুখটা থমথমে হয়ে আসল কুসুমের। আরশান তা দেখে বাঁকা হাসে। কুসুম চলে যাবে এমন ভাব নিয়ে সামনে তাকাতেই দেখল সবাই হা করে ওদের দিকে চেয়ে আছে। ওদের দিকে ঠিক নয়, মূলত আরশানের দিকে। পপুলার রেডিও জকি আরশানকে দেখার আগ্রহ তাদের কৌতুহল দমন করতে দেয়নি। আরশানের প্রতিটা বাক্য তাদের কানে পর্যাপ্ত আওয়াজেই পৌঁছেছে যার দরুন তাদের অদ্ভুত দৃষ্টির সম্মুখে পড়তে হলো কুসুমকে। দু-একজন ছবি তুলতে আসলো। আরশান বিরক্তি নিয়ে তাদের এড়িয়ে যায়। আরশান আবারও তাঁর শীতল কন্ঠে শুধাল,
-বসবেন? নাকি সিনক্রিয়েটের বাকি পর্যায়গুলো এপ্লাই করবো মিস কুসুম?
কুসুম ধপ বসে পড়ল।লোকটা মারাত্মক লেভেলের বদ। আরশান ওয়েটারের দিকে তাকিয়ে বলে,
-ম্যাডামের জন্য এ্যাপেল জুস, কাস্টার্ড আর ফালুদা আনুন।
কুসুম আড়চোখে তাকাল। ওর প্রিয় খাবারের তালিকা জানে নাকি লোকটা? ওয়েটার চলে যেতেই কুসুম তিক্ত কন্ঠে বলে ওঠে,
-কি সমস্যা? আমি তো বললাম আমি খাবো না। আমি বাড়ি যাবো।
-যেতে তো আটকাই নি।খালি পেটে আছেন,আগে খেয়ে নিন, তারপর যান।
-আপনার কি মানসিক প্রবলেম আছে? নাকি বড়লোক বাড়ির জামাই হওয়ার প্রবৃত্তিতে হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেয়েছে? কত টাকা চাই আপনার?আমাকে বলুন আমি দিচ্ছি।
আরশান জবাব না দিয়ে ফোনের দিকে চাইল। ওর শো একটা মেয়ে হোস্ট করছে। এবং দারুনভাবে হোস্ট করে শ্রোতাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করছে। আরশানের ভ্রু কুঁচকে থাকা দৃষ্টি ফোনের ওপর থেকে নড়ছেই না। এই মেয়ে তো এবার ওর শো’টাও হাতিয়ে ফেলবে। ওদিকে কুসুম রাগে কিড়মিড় করে উঠছে। এতক্ষণ ধরে কুসুম যে গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বলেছে তা কি এই পাঠার মত মানুষটা শুনেছে? তখন থেকে ফোন গুতিয়েই চলেছে। কি এত দেখছে ফোনে? কুসুম টেবিলে মৃদু আ’ঘাত করে।
-এই যে মহামান্য রেডিও জকি মহাশয়! কি সমস্যা তা বলছেন না কেন? কত টাকা চাই?
আরশান মাথা তুলে তাকাল। কুসুমের চেহারায় চোখ বুলিয়ে কফিমগে চুঁমুক দেয়।
-টাকা দিয়ে কি হবে? আমার শান্তির প্রয়োজন। বাড়িতে আমার বিয়ে নিয়ে যে অশান্তি শুরু হয়েছে তা নির্মূলিত করতে আমার বিবাহের প্রয়োজন। এবং আপনার বাবা স্বয়ং বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন আমার বাবার কাছে। তাই এই বিয়ে ভাঙার বাহানাগুলো বাবার সামনে গিয়ে দেখালে খুশি হবো মিস কুসুম।
কুসুম স্তব্ধচোখে তাকাল। লোকটা বুঝে ফেলল কি করে কুসুমের অভিলাষ? কুসুম কন্ঠে দৃঢ়তা রেখে বলে,
-একটা মেয়ে সন্তান নিয়ে মিথ্যে বলবে বলে মনে হয় আপনার?
আরশানের স্পষ্ট জবাব,
-আগে মনে হত না। কিন্তু আপনাকে দেখার পর মনে হতে শুরু করেছে। এমন একটা কথা সত্যিই কি কোনো মেয়ে শুধুমাত্র বিয়ে ভাঙতে বলবে? বলতে পারে?
কুসুম অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল মুহূর্তেই। মিথ্যা বলার অভ্যাস নেই ওর। তবুও মিথ্যাগুলো বেশ চড়া গলায় বলেছিল। কিন্তু এই অতি চালাক লোকটা সব ধরে ফেলেছে। তাই কুসুম নিজের কপোট রাগ মিটিয়ে শান্ত দৃষ্টিপাত নিক্ষেপ করল আরশানের দিকে।
-বিয়েটা আমি করতে চাই না আরশান। প্লিজ ট্রাই টু আন্ডারস্টান্ড। আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি।
আরশান কফির কানায় ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে,
-ওকে!
কুসুম আমোদে উচ্ছ্বাসিত কন্ঠে এক প্রকার লাফিয়ে উঠে বলে,
-তার মানে আপনি বিয়েটা ভাঙবেন?ধন্যবাদ আরশান। অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুনুন বাড়িতে গিয়ে আপনি না হয় এটা বলে দেবেন, যে আমাকে আপনার পছন্দ হয়নি কারন আমি সিগারেট খাই। দুবার টেস্ট করতে গিয়ে ধরা খেয়েছিলাম, এই অযুহাত অবশ্যই কাজে লাগবে।
-রিয়েলি? মেয়েরাও সিগারেট টেস্ট করতে চায়? আর কি কি টেস্ট করেছেন? অ্যালকোহল? গাঁজা? ড্রাগের চক্কর? টেস্ট করার প্রশ্ন আসলে আমি এটাও সন্দেহ করছি যে আপনি ছেলেদেরও টেস্ট করেন নি তো?আই মিন লিভ ইন টাইপ কিছু?
আরশানের বাক্যে হতভম্ব চোখে চাইল কুসুম। প্রথম অপমানের ধাক্কা কা’টতে না কা’টতেই নতুন অপমানে জর্জরিত করে দিল কুসুমের হৃদয়টা। এমন ঠোঁটকা’টা লোকের সামনে পড়াটাই ওর ভুল হয়েছে। কুসুম এই বাজে অপমান মুখ বন্ধ করে সহ্য করে নিল।কার্যসিদ্ধির জন্য মানুষ কত কি করে? কুসুম একটু অপমান সহ্য করতে পারবে না? কুসুম অনুনয় করে বলে,
-প্লিজ! বিয়েটা ভা’ঙা নিয়ে কথা বলি? আর এসব টেস্ট করবো কেন? আমাকে দেখে কি আপনার এমন মেয়ে মনে হয়?
আরশানের সহজ সরল স্বীকারক্তি,
-মনে হবার কি আছে? গত আধঘন্টায় আপনাকে দেখে তো এমনই লাগে। আর আমি নির্দ্বিধায় বলছি, আপনি মেয়েটা এমনই। অত্যন্ত বাজে প্রকৃতির।
কুসুমের মাথা রাগে দপদপ করে জ্বলছে। মহাঅসভ্য প্রকৃতির এই ছেলের সঙ্গে আর কথা বলবে না । উঠে দাড়াতেই ওয়েটার খাবার নিয়ে আসলো। কুসুম বসে পড়ল। এতগুলো কথা হজম করার পরেও পেটের ক্ষুধা মেটেনি। কথা যখন গিলল তখন খাবার রেখে যাবে কেন? লোকটার পকেট খসিয়ে আরও কিছু অর্ডার দিয়ে সব খাবার শেষ করে তবেই উঠবে সে। কুসুম কিছু খাবার অর্ডার দিয়ে আরশানের দিকে তাকাল। ফোনের মধ্যে ঢুকে আছে। কুসুম সন্দিগ্ধ চোখে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিল,
-কি দেখছেন?
আরশান ফোনে দৃষ্টি রেখেই জবাব দিল,
-আপনি ভালোবাসার রংমহল শো’টা শুনেছেন কখনও? ফ্রিকোয়েন্সি ৯৮.০৪ এফ এম’য়ে তে হয়। রেডিও ফুর্তি আই মিন আমাদের রেডিও চ্যানেলে। ওই আরজে আমার শো হোস্ট করছে। কেমন করছে, সেটা দেখছি। আপনার জন্য তো আমাকে শো’টা ক্যান্সেল করে আসতে হলো।
কুসুমের চেহারা মুহূর্তেই বদলে গেল। এই শো সে শুরু থেকে শুনছে। প্রতি শুক্রবার রাত বারো’টায় হয়। এবং সোমবার সকাল এগারো’টায় হয়ে থাকে। এক মধুরকন্ঠী, সুমিষ্টভাষী মেয়ে হোস্ট করে। দারুন গলার সঙ্গে দারুন বুদ্ধির এই মেয়েটার জন্য রেডিও সেন্টারের নাম-ডাক তিনমাসেই দ্বিগুণ হয়েছে। কুসুম নিজেও তো মাঝে মাঝে কলার সেজে কথা বলে। মেয়েটির অনেক বড় ফ্যান কুসুম। আরশান কি তাকে চেনে? কুসুমের রাগ গলে গেল নিমিষে। সে প্রবল আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করে,
-আপনাদের চ্যানেল? যাই হোক আপনি কি চেনেন ওকে?মানে রংমহলের আর’জে’কে, আমার সঙ্গে একটু দেখা করিয়ে দেবেন? প্লিজ! প্লিজ!
আরশান ভ্রু কুঁচকে তাকাল। কুসুম এবার বাচ্চাদের মত বায়না ধরছে। কিছুক্ষণ আগের তেজ গেল কোথায়? আরশান হতাশ চোখে বিরবিরিয়ে বলে,
-তোর জ্বালায় শান্তি নেই রে! কুফা হয়ে এসেছিস এই মাসুম আরশানের জীবনে।দিস ইজ রিয়েলি ব্যাড বেবি, ঠু মাচ!
কুসুম আবারও বলে,
-ভাও খাচ্ছেন নাকি? আরে মিটিং ফিক্সড করার জন্য একটা বড় এ্যামাউন্টও পাবেন। কুড়ি পঁচিশ হাজারে হবে?
আরশান আনমনে জবাব দিল,
-আমার সঙ্গেই মাসে একবার দেখা হয়। আপনার সঙ্গে দেখা করাবো কি করে? তাছাড়া আমার ওত ঠেকা পড়েনি যে আপনার মত মেয়ের সঙ্গে ওর দেখা করিয়ে বদনাম কুড়োবো।
কুসুম কোনো কথা বলল না। না খেয়েই উঠে দাড়াল। এরপর গটগট করে বেরিয়ে গেল। যেতে যেতে আপন মনে আওড়াল,’দু’টাকার আরজে আমাকে কথা শুনিয়ে দিল? আমাকে? তোর কপালো দজ্জাল বউ জুটবে। যে তোকে দিনে দশবার দৌড়ানি দেবে বেয়াদব! তোর বউ একটা আকাইম্মা হবে, দেখে নিস্। সামান্য একটা কথা বললাম আর ভাব দেখ। আমি সিঙ্গেলই ম’রবো তাও একে বিয়ে করবো না। কখনও না ‘
ওদিকে কুসুম চলে যেতেই আরশান ফোনে নিজের বাবার নাম্বারে ডায়াল করে গম্ভীরকন্ঠে বলল,
-মেয়ে পছন্দ হয়েছে আমার। আগামী মাসের মধ্যে বিয়ের ডেট ফিক্সড করো। আমি একেই বিয়ে করবো। আর কাউকে না।
ওপর পাশ থেকে উত্তর আসার অপেক্ষা করল না সে। ফোন কে’টে কুসুমের রেখে যাওয়া কাস্টার্ডের বাটি’টা হাতে নিয়ে কুসুমের চামচ দিয়েই দু’চামচ খেল আরশান। এরপর ফোনে থাকা কুসুমের ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলে,
-যত ইচ্ছে ওড়ো, কিন্তু সেটা আরশানের গন্ডির মধ্যেই। তার বাইরে না কুসুম। বিকজ আমি তোমাকে ছাড়বো না। কিছুতেই না।
ঠিক তখনই ওর ফোনে কল আসল। ভালোবাসার রং মহলের আর’জে ফোন করেছে। ফোন রিসিভ করতেই আরশান শুনতে পেল,
-ভালোবাসা’কে খাঁচায় বন্দি করতে নেই। পাখিকে যত আটকে রাখবে সে তত উড়ে যেতে চাইবে। আর যদি মুক্ত রাখো, ভালোবাসা দাও তাহলে খাঁচা নয় আপন নীড়ে সে এমনিতেই ফিরবে।
এটুকু বলেই ফোন রেখে দিল সে। আরশান সন্দিগ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করল ফোনের ওপর। মেয়েটা কি অন্তর্যামী? আরশান মনে মনে কি পরিকল্পনা করে, এমনকি ওর সামনে দাড়িয়ে কে কি ভাবে তা বুঝে ফেলে কি করে? কুসুমকে কি ভালোবাসায় বাঁধতে বলল? আরশানের গন্ডির রেখা মুছে ফেলতে বলল? আরশান একগুঁয়ে অভিলাষ নিয়ে বলে,
-শুনবো না। তুই প্রেমে পড়িসনি কখনও, তাই বুঝিসনা বেবি। এভ্রিথিংক ইজ ফেয়ার ইন লাভ এ্যান্ড ওয়ার। যখন কাউকে ভালোবাসবি তখন বুঝবি একজনকে ঠিক কতটা চাইলে তাকে আটকে রাখার প্রবৃত্তি জাগে। তাকে খুব কাছে পাওয়ার, বুকের গহিনে লুকানোর, এই মনস্কামনা ভুল নয়। ভুল হতেই পারে না।
আরশান ফোন বের করে একজনকে কল করে সরল ভঙ্গিতে বলে,
– তোর ভাবির প্রেমিককে খুজে বের কর। হাত’পা ভে’ঙে আমার কাছে আনবি। আমার বউয়ের সঙ্গে প্রেম করার সাধ আমি পূরণ করে ছাড়বো!
ওদিকে কুসুমের ফোনে আসা একটা টেক্সট দেখে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। ভয় পাবে? আতঙ্কিত হবে নাকি চটজলদি পুলিশ স্টেশনে একটা কেস ঠুকে দেবে বুঝে উঠতে পারছে না সে। রেডিও জকি’রা তো ভালো চরিত্রের দারুন স্বভাবের মানুষ হয়।এমন ছ্যাছড়া,লু’চ্চা, বেশরম আর’জে কুসুম জীবনেও দেখেনি। কি বেয়াদব লোকটা! কুসুমকে ম্যাসেজ দিয়েছে,
– সন্তান না হওয়ার কারন তো জানিয়েছ!এবার সন্তান হওয়ানোর প্রসেসটা জেনে নাও। আমার দাদি, বছর ঘোরার আগে নাতনি বা নাতির চেহারা দেখতে চান। আর হ্যাঁ, স্যরি ফর দ্যাট সিনক্রিয়েট মাই কুসুম! ইয়্যু নো? হাও মাচ আই লাভ ইয়্যু!তোমাকে দেখলেই আমার তোমাকে চেপে ধরে ইয়ে করতে মন চায়। এবার তোমার মিথ্যা শুনে মাথায় রাগ চড়ে গিয়েছিল বলে কিছু করলাম না।পরের বার সামনে এলে এসব কন্ট্রোল আর রাগের ‘স্লাং’ ইউজ করলাম না। আমি চাইনা আমার ব্যাপারে তোমার ফার্স্ট ইমপ্রেশন খারাপ হোক। ওকে! এবার বাড়ি গিয়ে জেনে রাখার চেষ্টা করো স্বামীর মন ভালো করার বিশেষ কিছু টেকনিক। আ’ম ওয়েটিং। ওহ হ্যাঁ, টেকনিক গুলোয় অবশ্যই ‘আঁদর’ শব্দটা এ্যাড রাখবে। সেটা কিভাবে কি উপায়ে করবে সেটা তোমার ইচ্ছে, এটুকু ছাড় তোমাকে দেওয়া যেতেই পারে। আর তোমার বয়ফ্রেন্ড প্রাপ্ত না প্রান্ত, তাঁর হাড়গোড় জোড়া লাগবে কিনা ঠিক জানা যায়নি, তুমি চাইলে, তাকে না দেখেও দিন পার করতে পারবে। তাই ওকে দেখার ইচ্ছে মনে মনে থাকলেও তা আমার সামনে দেখানোর চেষ্টা করবে না। এর ফলাফল কঠিন ও বিশ্রি হবে তোমার জন্য। আমার চরিত্র, ইজ নট কুসুমের (ফুলের) মত পবিত্র মাই লাভ। তাই সাবধান। ভুলেও ভুল করার চেষ্টা করবে না। তাহলে বিয়ে ছাড়াই বাচ্চার মা হয়ে যাবে। অবশ্য বাচ্চার বাপের পরিচয়ে আমার নামই থাকবে। বাট বিয়ের আগে এসব ভালো নয় বুঝলে! আমার তো তোমার মত টেস্ট করার স্বভাব নেই। আমি বাসর রাতে সব হিসেব চুকানোর মত ভদ্র জামাই।
তোমার হবু স্বামী আরশান খাঁন।
চলবে?