তুই বিহনে পর্ব-০২

0
370

#তুই_বিহনে
#লেখনীতে_নূরজাহান_আক্তার_আলো
#দ্বিতীয়_পর্ব

-‘আফা! ওই আফা উঠেন। শরমের কাজবাজ থাকলে কইরা লন।’

একনাগাড়ে পরপর তিনবার ডাকার পর মেহজাবিন ঘুম ঘুম চোখে তাকাল। সদ্য ঘুম থেকে জেগে ঘটনা কিছুই বুঝল না সে। শুধু বুঝল৷ সামনে দাঁড়ানো মানুষটা তাকে ডাকছে,কেন
ডাকছে, কি করণে ডাকছে মস্তিষ্ক বুঝতে চাইছে না। সে ঘুমে তলিয়ে যাওয়ার আগে আবার সেই ডাক। তবে এবার একটু জোরেই ডেকেছে। সে এবার সোজা হয়ে বসল। ঘাড় ঘুরিয়ে
দেখে বাসের রোগা পাতলা টিনটিনে হেল্পার তাকে ডাকছে।
কি আশ্চর্য! হেল্পার কেন ডাকবে? সিলেটে কী এসে গেছে?
কী সর্বনাশের কথা ঢাকা থেকে সিলেটে এসে গেছে অথচ সে একটুও জাগা পায় নি? সে দ্রুত চোখ ডলে বাইরে তাকাল।
বাস থেমেছে। বিরতি দিয়েছে। বাসের কেউ নেই, সবাই যার যার কাজ সারতে গেছে। পাশের ছেলেটাও নেই। কী অভদ্র, একটা মেয়ে বাসে একা একা ঘুমাচ্ছে আর সে চলে গেছে। অভদ্রতার খাতিরেও তো ডাকতে পারত। সে এমনি এমনি অভদ্রের খেতাব দেয় নি, ছেলেটা চূড়ান্ত লেভেলের অভদ্র।
তখন হেল্পার তার হলুদপাটির দাঁত বের করে বলল,
-‘আফা বেশি সুমায় নাই, শরমের কাজ করার হইলে জলদি যান।’
-‘শরমের কাজ, শরমের কাজ, করছেন কেন? কোন শরমের কাজের কথা বলছেন? আর শরমের কাজ করবই বা কেন? আশ্চর্য তো।’
-‘আগেই রাইগেন না আফা। থামেন,একটুখানি সবুর করেন। আমার কথা ঠান্ডা মাথায় শুনেন।’
-‘পরিষ্কারভাবে বলুন। ঘুরানো প্যাঁচানো কথা বুঝি না আমি।’
_’এর আগে বাস থামার পর এক বেডিরে কইছিলাম ‘আফা হাগা মুতা করলে যান গা। দুই মিনিটের মধ্যেই বাস ছাইড়া দিবো।’ একথা শুইনা বেডির ফেমিক আমাকে আচ্ছা মতো
পিডাইছিল। আমার কথায় নাকি বেডি শরম পাইছিল। তাই
শরমের কথা শরম বইলা চালায়। হাগা মুতা নাকি নষ্ট ভাষা।
আর নষ্ট ভাষা মাইগোর লগে কইতে হয় না। হেরা নাকি খুব লজ্জা পায়।’
হেল্পারের একথা শুনে মেহজাবিন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। বলার শব্দ কোনো শব্দ খুঁজে পেল না। তবে সে তড়িৎ গতিতে উঠে দাঁড়াল। হেল্পারের সাহায্যে উপর থেকে লাগেজ নামিয়ে একটা ড্রেস নিয়ে বাস থেকে নামল।এই সুযোগ চেঞ্জ করে নেওয়ার। বাস থেমেছে একটা রেস্তোরার সামনে। নাম
‘খাই খাই।’ এ আবার কেমন আজব নাম? রেস্তোরায় মানুষ খাবার খায় খুবই সুন্দর কথা। তাই বলে নামও রাখবে ‘খাই খাই।’
দুনিয়াটা বড়ই আজব। তারচেয়ে আজব দুনিয়াতে বাস করা মানুষজন। সে বাস থেকে নেমে হেল্পারকে বলল সে না আসা অবধি বাস যেন না ছাড়ে। এক্ষুণি চলে আসবে। বেশি সময় লাগবে না তার।একথা শুনে হেল্পার কথা দিলো জান থাকতে তাকে ছাড়া বাস ছাড়তেই দিবে না সে। হেল্পারের কথা শুনে সে হাসল। কৃতজ্ঞতা জানাল৷ চিন্তামুক্ত হয়ে সে ওয়াশরুমের খোঁজে পা বাড়াল। বাসের মানুষজন হাঁটছে, কেউবা খাচ্ছে, কেউবা হাসিগল্পে মশগুল। সে এক মহিলার থেকে জানতে পারল, মেয়েদের ওয়াশরুম বামদিকে, ছেলেদের ডানদিকে।
সে মেয়েদের ওয়াশরুমের সামনে গিয়ে দেখে ইয়াবড় লাইন। বিরক্ত হলেও সে লাইনে দাঁড়াল। তবে যে লাইনে দাঁড়াল তার পাশের লাইনের ভিড়টা আগে শেষ হলো। সে চট করে লাইন ভঙ্গ করে পাশের ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ল। এখানে অবস্থা যা তা। সে কোনোমতে শাড়িটা বদলে হালকা পার্পেল কালারের সালোয়ার কামিজ পরে নিলো। দেহে প্রাণ থাকতে সে আর কোনোদিন শাড়ি পরে জার্নি করবে না। বাসেও উঠবে না। এ তার নিজের কাছে নিজেরই প্রমিস। যতটুকু শিক্ষা পাওয়ার পেয়ে গেছে। এই শিক্ষাটুকুই যথেষ্ট তার জন্য। তারপর চোখ মুখসহ হাতে-পায়েও পানি দিয়ে চুলগুলো কোনোমতে বেঁধে কাঁটা গুঁজে নিলো। চুল বাঁধার সময় হাত চ্যাটচ্যাট করলেও তাড়াহুড়োয় তেমন পাত্তা দিলো না।উফ! সালোয়ার কামিজে শাস্তি লাগছে।এতক্ষণ মনে হচ্ছিল তার শরীরে সাপ পেঁচিয়ে আছে। এদিকে, শাড়ি খুলে যাওয়ার ভয়ে পেডিকেটের নাড় এতটা টাইট করে বেঁধেছিল শাড়ির ঘর্ষণে সেখানে লাল হয়ে ছাল উঠে জ্বলতে শুরু করেছে। সেই জ্বলোনির তালে তালে মেজাজও হাই হচ্ছিল৷ না পারছিল সেখানে হাত বুলাতে না পারছিল নাড় ঢিলা করতে। কি একটা অবস্থা! এইদিকে কে
যেন একনাগাড়ে ওয়াশরুমের দরজায় ধাক্কাতে আছে। ওরে বাবারে, থামাথামির নাম নেই। সে কোনোমতে শাড়ি গুছিয়ে বাসের সিটের উপর রেখে এলো। ক্ষুধায় মাথা ঘুরছে। কিছু খাওয়া দরকার। সে সময় দেখে রেস্তোরায় ঢুকে দেখে ভীড় খুব। এককোণের টেবিলে বসে তারই পাশের সিটের অসভ্য ছেলেটা রুটি তরকারি খাচ্ছে। তাও হালুম হালুম করে। যেন জীবনেও খাবার দেখে নি। সে সেখানকার একজনকে ডেকে
জিজ্ঞাসা করল, এখানে কি কি খাবার দাবার পাওয়া যাবে?
মাঝ বয়সী এক লোক কোমরে গামছা বেঁধে অভিজ্ঞ হাতে রুটি বেলেই যাচ্ছে। তিনিই জানাল, অন্য যেইসব আইটেম ছিল সব শেষ। খেতে হলে রুটি তরকারি খেতে হবে।এছাড়া উপায় নেই। অগত্যা মেহজাবিন রুটি তরকারির সঙ্গে ডিম ভাজা দিতে বলে ফাঁকা টেবিল দেখে সেও বসল। গরম গরম রুটি তরকারি পেয়ে ঝটপট খাওয়াও শুরু করল। ছেলেটার খাওয়া শেষে সে বিল মিটিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কোলাকোলা খাচ্ছে।কানে ফোন ধরা। সম্ভবত কারো সঙ্গে কথা বলছে৷ সে আর সেদিক তাকাল না দ্রুত খাওয়া শেষ করে বিল মিটিয়ে বাসের কাছে এসে দাঁড়াল। বার দু’য়েক মিলিয়ে নিলো এটা তারই বাস নাকি। যাওয়ার আগে একটা চিহ্ন’ও রেখেছিল।
তার কাছে বাড়তি শুকনো খাবার আগে তাও কোলাকোলা,
ঝাল চকলেট, চিপস, কিনে বাসে উঠে বসল ৷ সে বসার দুই মিনিট পর হেল্পার এলো। তার সাহায্যে সে পুনরায় লাগেজ নামিয়ে শাড়িটা রেখে দিলো। পরপর তিনবার সাহায্য করায়
সে হেল্পারকে কিনে আনা কোলাকোলাটা উপহার দিলো। কী যে খুশি হলো হেল্পারটা। তারপর সে সবাইকে ডাকল, বাঁশি বাজাল। বাঁশি শুনে সকলে ধীরে ধীরে বাসে উঠে বসল। সব সিট পূর্ণ হতেই আবার চেক দিয়ে বাস ছাড়ল। ঘড়িতে তখন রাত্রি আড়াইটা। ভোর হতে অনেক দেরি। অনেক পথ বাকি। সে স্যান্ডেল খুলে সিটে দু’পা তুলে হাঁটু মুড়ে বসল। আজকে আকাশে চাঁদ নেই। বেহায়া চাঁদ বলাতে রাগ করে চলে গেছে বোধহয়।

এইদিকে ইফতি পাশের সিটে বসে সেই তখন থেকে উশখুশ করছে। মেয়েটার চুলে চুইংগাম লাগিয়ে দিলো, তবুও কিছু বলছে না কেন? তার তো লঙ্কা কান্ড বাঁধিয়ে দেওয়ার কথা।
তবে কি সে খেয়াল করে নি? তার কি উচিত হবে মেয়েটাকে বলে দেওয়া। বললে কি বা বলবে, ‘এই যে মেয়ে শুনুন আমি আপনার চুলে চুইংগাম লাগিয়ে দিয়েছিল। আপনি উচিত রাগ করা, রাগ করুন প্লিজ।’
যদি বলেও গণপিটুনি খাওয়া থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারবে তো? সম্ভবত না। এরচেয়ে চুপ করে থাকাটাই বোধহয় শ্রেয়।
কিন্তু চুপ থাকলে তো মেয়েটার উপকার হবে না। তার জানা উচিত, তার চুলে চুইংগাম আছে। তাছাড়া প্রতিটা মানুষের অধিকার তার নিজের ব্যাপারে সব কথা সবার আগে জানা।
তাই সে গলা খাঁকারি দিয়ে বলল,
-‘এই যে শুনছেন একটা কথা বলার ছিল। কথাটা জানা
জরুরি।’
মেহজাবিন শুনেও জবাব দিলো না। কাঠ মেরে সেভাবেই বসে রইল। তখন ছেলেটি পুনরায় বলল,
-‘আপনি যখন ড্রেস চেঞ্জ করে খাবার খাচ্ছিলেন তখন আপনার চুলে গোলাপি গোলাপি কিছু একটা দেখেছিলাম।
দূর থেকে মনে হলো চুইংগামের মতো। গোলাপির শাড়ির সাথে চুলে কি গোলাপি চুইংগাম লাগিয়েছেন? এটা কি নতুন ফ্যাশান?’
এবার মেহজাবিন ধড়ফড় করে উঠে চুলের কাঁটা খুলে হাত গলিয়ে দিলে চুলের ভাঁজে। এবং জটের মতো চুইংগামের অস্তিত্বও টের পেল। সে এবার কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
-‘কে করেছে এটা?’
-‘জ্বি আমিই করেছি। রাগের মাথায় করে ভেবে দেখলাম কাজটা করা ঠিক হয় নি। এজন্য সরি।’
-‘আপনাকে এখন কি করা উচিত বলে আপনার মনে হয়?’
-‘যা ইচ্ছে করতে পারেন। তবে যেটাই করুন আগে আমার বায়োডাটা জেনে নিন। আমি ইফতি। বয়স আটাশ। বছরের ছয় মাস বাবার ব্যবসা দেখা শোনা করি। বাকি ছয়মাস বনে বাঁদাড়ে ঘুড়ে বেড়ায়। অফিসের কাজে সিলেটে যাচ্ছি, উঠব মামনির বাসায়। নিন এবার দ্রুত আমার শাস্তি ঠিক করুন,
সাতটা রুটি খেয়ে পেট টানটান। যখন তখন ঘুমিয়েও যেতে পারি।’
মেহজাবিন এবারও নিশ্চুপ। ইফতির কোনো কথার জবাবই সে দিলো না। পুনরায় চুল বেঁধে নিয়ে পূর্বের মতো চুপ করে বসে রইল। মন খারাপ হয়ে গেছে। এখন চুল থেকে চুইংগাম ছাড়াবে কিভাবে? দীর্ঘক্ষণ সেভাবে থাকতে থাকতে সে ঘুমে তলিয়ে গেল। মন খারাপের মুহূর্তগুলোতে তার ঘুম আসে। মেয়েটাকে ঘুমাতে দেখে ইফতি খুব অবাকই হলো। এমন অদ্ভুত প্রজাতির মেয়ে এর আগে দেখে নি সে, পেট দেখার কথা বলার রাগে গনগন করছিল। যেন তাকে তুলে আছাড়ই মেরে দিবে। অথচ চুলে চুইংগাম লাগিয়ে দিলো তবুও কিছুই বলল না! কেউ যদি কিছু না বলে তাহলে সে বা কি করতে পারে? অপরাধ করেছে, সেটা স্বীকারও করেছে। এসব কথা ভাবতে ভাবতে সেও ঘুমিয়ে গেল।

দীর্ঘ সাত ঘন্টা পর বাস সিলেটে এসে পৌঁছাল। বাইরে তখন ঝকঝকে দিনের আলো। বাস থেমেছে বাস স্ট্যান্ডে। অনেকে নেমে পড়েছে। হইহট্টগোল শুনে ইফতির ঘুম ভাঙল। দুইহাত দুই পাশে ছড়িয়ে আড়মোড়া ভাঙল। ঘাড় পিঠ ব্যথা করছে।
তখন তার খেয়াল হলো পাশের সিটের মেয়েটা নেই। ওমা, মেয়েটা তাকে ডিঙিয়ে কখন চলে গেল? গেল তো গেল বলে গেল না কেন? সে সাতপাঁচ না ভেবে ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে বাস থেমে নামল। তারপর একটা সিএনজি নিয়ে নিয়ে চলে গেল মামনির বাসায়। এদিকে মেহজাবিন ফুপির বাসায় পৌঁছেই কেঁদে কেটে একাকার অবস্থা। কিছুতেই চুইংগাম ছাড়ানো
যাচ্ছে না। যেই দেখছে সেই বলছে চুল কাঁটা ছাড়া উপায় নেই। রাতে লাগানো চুইংগাম সকালে শুকিয়ে আরো খারাপ অবস্থা। মেহজাবিনের মা এখনো বুঝতে পারছে না, মেয়ের চুলে চুইংগাম লাগল কে? তবে কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না, এখন কিছু বললেই মেয়েটা ষাঁড়ের মতো চেঁচিয়ে উঠবে। না, তিনিও উপায় না পেয়ে চুল কেঁটে ফেলার কথা বললেন। এই কথা শুনে মেহজাবিনের কান্না বেড়ে গেল। তখন সেই মুহূর্তে কেউ একজন বলে উঠল, গুডমনিং এভিওয়ান।’
দুঃচিন্তার মুহূর্তে একথা শুনে সকলে দরজার দিকে তাকাল।
দুই হাতে দুটো ব্যাগ নিয়ে ইফতি দাঁড়িয়ে আছে। মুখভর্তি হাসি। তার আসতে লেটই হয়েছে। মেহমান হিসেবে আসবে ফল মিষ্টি ছাড়া তো আর আসা যায় না। তাই সেগুলো কিনে আসতে আসতে খানিক দেরি হলো। দেরি হলেও সমস্যা হয় নি, মেহমান দের জন্য কেনা ফল খেতে খেতেই এসেছে সে।
কারণ, খালি হাতে কারো বাসায় যাওয়ার ছেলে ইফতি নয়, আবার মেহমানদের জন্য যা কিনবে সবগুলো ভদ্রভাবে সব দিয়ে দেওয়ার ছেলেও সে নয়।’
একটু চালাক না হলে দুনিয়াতে টেকা খুবই মুশকিল। কিন্তু এখানে এসে সে অবাকই হলো। বাসের মেয়েটা এখানে কি করছে? এদিকে তাকে দেখামাত্রই মেহজাবিন রান্নাঘরের দিকে দৌড়ে গেল, খুঁজে খুঁজে আঁশবটি নিয়ে ছুটে গেল ইফতির দিকে।অবস্থা বেগতিক দেখে আঁতকে উঠল সকলে। মেহজাবিনের বাবা কোনোমতে মেয়েকে থামালেন, আদুরে ভাবে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত হতে বললেন। এরপর কি হয়েছে জানতে চাইলেন। মেহজাবিন কেঁদে কেটে চোখ মুখ লাল করেছেন। কান্নার চোটে কথা বলতেও পারছে না।
ইফতির খুব মায়া হলো। ইশ! মেয়েটা কিভাবে কাঁদছে। সে হাতের ফল মিষ্টি রেখে বলল,
-‘হয়, হয়, কান্নাকাটি করলে আমারও এইরকম হয়। ভয় নেই এটাই স্বাভাবিক। উনাকে কেউ টিস্যু এনে দাও প্লিজ, নাকভর্তি সর্দির কারণে ঠিকঠাকভাবে অভিযোগ জানাতে পারছে না।
এ কথা বলতে দেরি মেহজাবিনের হামলে পড়তে দেরি হলো না। সে শক্ত করে ইফতির মাথার চুল ধরে, দুই হাত দিয়ে ঠিক বরই গাছ ঝাঁকানোর মতো করে ঝাঁকাচ্ছে। এমনকান্ডে
ইফতি টু শব্দও করতে পারল না। তখন মেহজাবিনের দাদু আজমত আলী বিরবর করে বললেন,
-‘বুনো ওলের সঙ্গে বাঘা তেঁতুল, এ কি করে সম্ভব?’
পাশ ফিরে তখন আজিজুল হাই তুলে জবাব দিলো,
-‘নিয়তি বুঝলে, সবই নিয়তি। তোমার কপালে যদি লেখা থাকে তুমি হাগতে হাগতে মারা যাবে, তাহলে এই নিয়তিও কেউ খন্ডাতে পারবে না। আজ হোক অথবা বছর পর তুমি হাগতে হাগতে ক্লান্ত হয়ে যাবে। তারপর পানি শূন্যতায় মারা যাবে।’
-‘বেয়াদব।’
ছোটো ছেলের আজিজুলের কথা শুনে আজমত আলী খুব রেগে গেলেন। ঠিক একারণে আজিজুলের সঙ্গে কথা বলতে চান না তিনি। সবসময়ই ভুলভাল বকে মেজাজ গরম করে। তখন আজিজুল হতাশার শ্বার ফেলে বাবাকে বলল,
-‘হাগার কথা বললাম বলে বেয়াদব হয়ে গেলাম। কেন আব্বা, আপনি কি হাগেন না? হাগা হলো খাঁটি বাংলা শব্দ।
বাংলা ভাষা, বাংলা শব্দ নিয়ে আমাদের এত অহংকার, তাই না? যে শব্দ আমাদের অহংকার সেসব শব্দ ব্যবহার করতে লজ্জা কিসের?’

To be continue……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে