তুই আমার ২ পর্বঃ২৭

0
2382

#তুই আমার ২
#পর্বঃ২৭
#Tanisha Sultana

চোখ খুলে অভি নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করলো। মিষ্টির কথা মনে আসতেই তারাহুরো করে উঠতে চাইলো কিন্তু নার্স আটকে দিলো

“আপনার শরীর একদম ঠিক নেই একদম উঠার চেষ্টা করবেন না

” আপনি বুঝতে পারছেন না। আমার বউ বিপদে আছে। আমাকে এখুনি যেতে হবে।

তখন অভির বাবা মা আর সৌরভ আসে

অভির মা কান্না করতে করতে বলে

“বাবা তুই ঠিক আছিস

” মা আমি ঠিক আছি কিন্তু মিষ্টি ঠিক নেই।

সৌরভ অভিকে বলে

“মিষ্টি কোথায় মিষ্টি
কি হয়েছে ওর

অভি ওদের সবটা খুলে বলে

” ওমাই গড এখন কোথায় খুজবো ওকে

অন্ধকার রুমে হাত পা বাধা অবস্থায় আছে মিষ্টি।

“কেউ আছো আমাকে বাচাও হেল্প মি

চিৎকার করে বলছে মিষ্টি। দুজন মানুষ মিষ্টির ওখানে আসে। অন্ধকারে মুখ বুঝা যাচ্ছে না। তবে একজন ছেলে আর একজন মেয়ে এটা মিষ্টি বুঝতে পারছে।

” বেবি আমি বাঁচতে এসেছি তোমায়

কন্ঠটা শুনে মিষ্টির মুখ থেকে একটাই নাম বেরিয়ে আসে

“কৃশ তুমি

” আরে ভাই তোদের ভালোবাসার এতো টান যে জাস্ট ভয়েজ শুনে তোকে চিনে ফেললো

“আপি বুঝো না কেনো আত্মার একটা টান আছে না

” রিনি আপু আর কৃশ তোমরা দুজনে মিলে আমাকে কিডন্যাপ করছে

“হুমমমম

” কিন্তু কেনো কি চাও তোমরা

“তোমাকে চাই মিষ্টি।

” আমাকে দিয়ে কি করবে তোমরা

“মিষ্টি তুমি তো খুব চালাক। তাই তুমি যদি না থাকো তাহলে আর কেউ আমার পথে বাধা হয়ে দাড়াবে না। আর ওই অভিকে নিয়ে পবলেম নেই একটু কান্না কাটি করলেই আমাকে মেনে নেবে খুব ভালোবাসে তো আমাকে। তাই ভাবছিলাম তোমাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেবো। বাট আমার এই কলিজার টুকরা তোমাকে ছাড়া বাঁচবে না। তাই প্লান চেন্জ। করে ফেললাম। তোমাকে নিয়ে কৃশ বিদেশে চলে যাবে। ওখানে তোমরা সুখে থাকবে আর এখানে আমি সুখে থাকবো

” তোমাদের প্লান কখনো সাকসেসফুলি হবে না অভি

মিষ্টিকে থামিয়ে বলে রিনি

“অভি তোমাকে বাঁচাতে আসবে সিরিয়াসলি
তুমি না আমাকে হাসালে মিষ্টি। একদিন তো হয়ে গেছো কেউ এসেছে আসে নি তো। আর তোমাকে তো আমরা অভির সামনে দিয়ে নিয়ে আসলাম ওতো কিছু করলো না। তাহলে তুমি ভাবছো কি করে

” আপি মিষ্টিকে খাবার দিলে না তো

“ওকে খাবার দেওয়ার দরকার নেই খুব ধরিবাজ মেয়ে
চল

কৃশ আর রিনি চলে যায়। মিষ্টি মনে মনে রিনির কথাগুলো ভাবতে থাকে। সত্যি তো অভি তো আমাকে বাচালো না। অভি তো বেচে গেছো। মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু আমাকে এখান থেকে যেতে হবে। আমার বাপি দাভাই তো খুব টেনশন করছে

মিষ্টি ছোটাছুটি করা শুরু করে। দরিটা শক্ত না হওয়ায় ছিড়ে যায়। মিষ্টি দরি ছাড়িয়ে উঠে দাড়ায়। বেরোনের মতো কোনো দরজা জানালা কিছু খুজে পাচ্ছে না। হঠাৎ টেবিলের ওপড় চোখ পড়তেই দেখে মিষ্টির ব্যাগ। ব্যাগ থেকে ফোন বের করে অভিকে ফোন দেয়। কিন্তু অভি ফোন ধরে না। পরে জীমকে ফোন দেয়

” কি রে বোন এতো রাতে ফোন দিলি যে

মিষ্টি হাউমাউ করে কেঁদে বলে

“দাভাই ওরা আমাকে কিডন্যাপ করেছে। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমার খুব ভয় করছে আমাকে ?নিয়ে যাও

বোন শান্ত হ। আমাকে বল কে কিডন্যাপ করেছে

” রিনি আর কৃশ

কিহহহহহ

“হ্যাঁ। ওরা আমাকে অন্ধকার রুমে আটকে রেখেছে

” জায়গাটার নাম বল

“রিনিদের বাড়িতে

মিষ্টি আর কিছু বলার সুযোগ পায় না কারন কে যেনো রুমে ঢুকছে। মিষ্টি ফোনটা বন্ধ করে লুকিয়ে রেখে আগের জায়গায় বসে পড়ে।

জীম আর আবির পাগলের মতো মিষ্টিকে খুজছে। পুলিশকে খবর দিয়েছে।

অভিকে ডাক্তার ঘুমের ঔষুধ খাইয়ে গুম পাড়িয়ে দিয়েছিলো। অভির ঘুম ভাঙতেই ফোনটা হাতে নেয়। ফোন হাতে নিতেই পঞ্চাশ বার ফোন দিছিলো মিষ্টি। অভি আবার মিষ্টির নাম্বারে ডায়াল করে কিন্তু ফোন বন্ধ। অভি পাগলের মতো বেরিয়ে যায়। আবির জীম অভি সৌরভ দাড়িয়ে আছে

” অভি প্লিজ ভাই বল রিনির বাড়ি কোথায়

“রিনির বাড়ি দিয়ে তোমরা কি করবে

” রিনি মিষ্টিকে রিনিদের বাড়িতে আটকে রেখেছে।

ওরা সবাই রিনিদের বাড়ির উদ্দেশ্যে যায়।
তিনদিন যাবৎ মিষ্টির পেটে একটু পানিও পড়ে নি। কৃশ আর রিনি বিদেশে যাওয়ার সব ব্যবস্থা করে ফেলেছে এখন মিষ্টিকে নিতে এসেছে। মিষ্টির পরনের ময়লা জামাটা পাল্টে দেয় রিনি। দাড়ানোর মতো শক্তি নেই মিষ্টির।

এদিকে অভিরা রিনিদের বাড়িতে পুলিশ নিয়ে চলে এসেছে। পুলিশের গাড়ির শব্দ শুনে রিনি বলে

“কৃশ পুলিশ চলে এসেছে এখন তো মিষ্টিকে নিয়ে যাওয়া পসিবল না। ভাই চল

রিনি কৃশের হাত ধরে টামছে কৃশ যাচ্ছে না

” কি হলো চল

“আপু এক মিনিট

কৃশ গান বের করে

” ভাই তুই কি করবি

“মিষ্টি যদি আমার না হয় তাহলে কারো হবে না

মিষ্টির বুকে গুলি চালিয়ে দেয় কৃশ তারপর রিনির হাত ধরে পালায়।

গুলির শব্দে সবাই চমকে যায়

” বাপি আমার বোন ঠিক আছে তো

আবির এগোতে পারছে না।ধাপ করে বসে পড়ে। সৌরভ দৌড়ে ভেতরে চলে যায়। জীম আর অভি পাগলের মতো ছুটছে।
পুলিশ চারদিক ঘিরে ফেলেছে রিনিকে ধরতে পারে। রিনি কৃশকে তার লোক দিয়ে সেফ জায়গায় পাঠিয়ে দেয়। যার ফলে কৃশকে ধরতে পারে না।

অভি এ রুম থেকে ও রুমে ছুটাছুটি করছে একটা রুমে লাল জামা পড়া একটা মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখে। অভি একটু একটু করে মেয়েটার দিকে এগিয়ে যায়। মেয়েটার মুখ দেখে মিষ্টি বলে চিৎকার করে। জীম সৌরভ এগিয়ে এসে দেখে মিষ্টি বেহুশ হয়ে পড়ে আছে। মুখটা শুকনো চুল গুলো এলোমেলো। জীম মিষ্টিকে কোলে নিয়ে পাগলের মতো দৌড়াচ্ছে। সৌরভ ওর পেছনে দৌড়াচ্ছে। আর অভি ওখানেই বসে আছে।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে