#তিনশত_পয়ষট্টি_পৃষ্ঠা
#মুসফিরাত_জান্নাত
#পর্বসংখ্যা_০৪
“বিয়ের তিন বছরে নিজের স্বামীর সাথে স্বাভাবিক কোনো সম্পর্কে জড়াতে পেরেছো কখনো?সব বউরা তার স্বামীর আকর্ষণ পেতে সেজেগুজে শাড়ি পরে ঘুরে বেড়ায়।স্বামীর মন মতো চলাফেরা করে।কিন্তু তোমার বেলায়?কখনো করেছো এসব?করেছো তো শুধু বাড়াবাড়ি।কিভাবে স্বামীর থেকে পালিয়ে বেড়ানো যায়,স্বামীকে লোকের সামনে লজ্জায় ফেলা যায়, অপদস্ত করা যায় এসব নিয়ে থেকেছো শুধু।এমন করলে সংসার টিকবে কারো? শুধু বিয়ে হইলেই হয়না প্রিয়তা, বৈবাহিক সম্পর্কটা সারাজীবন টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হয়। মেয়েরা তার স্বামীকে চোখে হারাতে ব্যস্ত হয়।কিন্তু তুমি?তুমি তো তার দৃষ্টি থেকে পালিয়ে বেড়িয়েছো।তোমার বর তোমাকে ডিভোর্স দিতে চাইবে না তো কি করবে?বিয়ে করে বউ রুপী বোন পালবে?”
ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে শেষ যাত্রা শেষে ভাইয়ের বাড়ি এসে পা রাখতেই তার ভাবি এসব বলে বকবক করে যাচ্ছে।প্রিয়তা আগে থেকেই জানতো এমন কিছু হবে।তাই তেমন প্রতিক্রিয়া দেখা গেলো না তার মাঝে।শুনেও যেনো কিছু শোনেনি এমন গা ছাড়া ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে রইলো।কিন্তু পাশ থেকে প্রান্ত ধমকের সুরে বললো,
“তুমি থামবে বিন্দু?মেয়েটা এমনি সংসার ভা’ঙার য’ন্ত্রনায় পুড়ছে, তাকে আর পুড়িও না।অন্যের চরকায় তেল না দিয়ে নিজের কাজে যাও।”
স্বামীর কথায় তার দিকে কড়া চোখে তাকালো বিন্দু।সে প্রতিবাদ করে বললো,
“আমি থামবো কেনো?ভুল কিছু বলেছি আমি?তোমার সাথে এমন করলে তুমিই কি আমাকে এই সংসারে টিকিয়ে রাখতে?রাখতে না।তাহলে তোমার বোন বলেই কি তার বেলায় নিয়ম পাল্টে যাবে?”
প্রান্ত বিরক্ত হয়ে বললো,
“নিয়ম পাল্টানোর কথা কে বলেছে?পাল্টালোও বা কোথায়?সে তো চলেই এসেছে।”
বিন্দু তাচ্ছিল্য করে বললো,
“হ স্বামীর ভাত তো আর খাওয়ার মুরদ নেই।ভাইয়ের ঘাড়ে বসে বসে খাবার খেতে এসেছে।”
কথাটা শুনে রাগে ফুঁসে উঠলো প্রান্ত।সাথে প্রিয়তার গা জ্বলে উঠলো।সে আর নিশ্চুপ থাকতে পারলো না।প্রান্ত পাল্টা জবাবে কিছু বলতে যাবে তার আগেই প্রিয়তা কথা টেনে নিয়ে বললো,
“ভুল বললে ভাবি।আমি আমার ভাইয়ের টাকায় খেতে আসিনি।উলটো আমার টাকাও ভাঙিয়ে খাচ্ছো তোমরা। আমার আব্বুর তো কম ছিল না আর কম নেইও।আইন মোতাবেক সেসবের ভাগিদার আমিও সেটা মনে রেখো।যেটার সম্পূর্ণটা এখন তোমরা ভোগ করছো।”
কথাটা শুনে অপ্রত্যাশিত এক ধাক্কা খেলো বিন্দু। চেহারার ভঙ্গিমা বদলে গেলো তার।প্রিয়তা যে এমন কিছু বলবে তা তার ধারনায় ছিলো না।তাই থমকাতে বাধ্য হলো সে।কিন্তু পরক্ষণেই আবার নিজেকে পূর্বের রুপে ফিরিয়ে নিয়ে বললো,
“এই বয়সে কোন মেয়ে তার বাবার সম্পত্তির অংশ নেয়?সব ছেলেরা ভোগ করে।মেয়েদের জন্য ওসব শেষ বয়সের পাওনা।তাই তোমার এখন এসব বলা অযৌক্তিক।”
এবার প্রিয়তা ব্যঙ্গ করে হেসে জবাব দেয়,
“এটা কোন সংবিধানে লেখা আছে বলতে পারো ভাবি?আমার জানা মতে তো বাবা মা’রা যাওয়ার পরই সব সম্পদের ওয়ারিশ আমি হয়েছি।আমার যখন খুশি তখন আদায় করতে পারবো।কেও বাধা দিতে পারবে না এতে।”
প্রিয়তার এহেন জবাবে কিছুটা দমে যায় বিন্দু।চোখ দুটো সরু করে কণ্ঠ কিঞ্চিৎ নামিয়ে বলে,
“স্বামীর কাছে থেকে অবহেলা পেয়ে এখানে চলে এসেছো সেই সম্পত্তির ভাগ নিতে?”
প্রিয়তা নির্লিপ্ত কণ্ঠে বলে,
“কেও যদি বাধ্য করে তবে নিজের ভাগ তো বুঝে নিতেই হবে।আর তারা যদি বাড়াবাড়ি না করে, তবে আমার এখন সেসব চাই না।আমার কেবল শান্তি চাই।এখন ভেবে দেখো কি করবে!”
কথাটা বলে নিজের ঘরে চলে গেলো প্রিয়তা।আর বিন্দু একদম নিশ্চুপ হয়ে গেলো।স্বার্থে টান পড়বে ভাবতেই দমে যেতে বাধ্য হলো সে।চুপসে যাওয়া মুখ নিয়ে রান্না ঘরে এগিয়ে গেলো সে।প্রান্ত এসব দেখে তপ্ত শ্বাস ছাড়লো।সে একা সব সম্পদ ভোগ করছে প্রিয়তার মুখে এমন কথা শুনে বুকে খানিকটা চোট লাগলেও স্বস্তিও পেলো খানিক।সে নিজেই তো প্রিয়তাকে শক্ত হয়ে সব আঘাত প্রতিহত করতে বলেছিলো।প্রিয়তা তো এজন্যই এসব বললো।সে যেভাবেই হোক তাতে সফল হয়েছে এই ঢের।প্রান্ত জানে এসব না বললে বিন্দু এত সহজে থামতো না।আর এসব শোনার পর বিন্দুও আর প্রিয়তাকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে না।তার সাথে খারাপ আচরণও করবে না।এত সম্পত্তির দখলদারিত্ব কেই বা ছাড়তে চায়?এর চেয়ে ভালো সে ননদকে মেনে নিলো।
______
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের ঘরটায় চলে এসেছে প্রিয়তা। দরজা খোলাই ছিলো।সে দেখতে পেলো সে ও বাড়িতে যাওয়ার সময় যেভাবে রেখে গিয়েছিলো কোনো কিছু তেমন নেই।নিজের মতো করে গুছিয়ে নিয়েছে বিন্দু।এমনকি ফার্নিচার গুলোরও জায়গা বদল হয়েছে।এখানে যে সবটায় বিন্দুর আধিপত্য তা বুঝাতেই যেনো এই চেষ্টা।প্রতিবারই এমনটা করে বিন্দু।প্রিয়তা আসবে কেবল গেস্টের মতো এটা বুঝিয়েই ছাড়ে।
প্রিয়তা কাবার্ড খুলে দেখলো সেখানেও বিন্দুর কাপড় চোপড় স্থান পাচ্ছে।সে সেগুলো এক পাশে সড়িয়ে নিজের ড্রেসগুলো রাখার জায়গা গুছিয়ে ফেললো।তারপর সঙ্গে নিয়ে আসা সব কিছু গোছাতে শুরু করলো।সবকিছু নিজের সুবিধা মতো গুছিয়ে গোছল সেড়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো সে।কিছুটা বিশ্রাম দরকার।এই বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগে মস্তিষ্ক লাই পেয়ে উঠলো।আবারও য’ন্ত্রণাময় ঘটনাগুলো টেনে টেনে স্মৃতি রুপে সজাগ করে দিলো নিজ দ্বায়িত্বে।সেই স্মৃতির দহনে চোখে জ্বালা করে উঠলো প্রিয়তার।এই চোখেই তো সে কাওকে নিয়ে স্বপ্ন সাজালো।বুক উজার করে ভালোবাসলো।অথচ এই চোখেই এখন য’ন্ত্রনার বিচরণ।প্রিয়তার দু চোখ ছাপিয়ে যন্ত্রণারা উপচে পড়লো।সারাদিন শক্তের খোলসে আবদ্ধ থাকা কন্যা নরম হয়ে এলো।ভেঙে পড়লো তাকে সোজা করে রাখা মিথ্যা কাঠামো।অঝোরে কাঁদতে লাগলো সে।কেনো বার বার তার সাথে এমনটা হচ্ছে?তার প্রাপ্তির খাতাই কেনো শেষ পর্যায়ে এসে প্রতিবার শূন্য হচ্ছে?সে তো সব সময়ই খুব যত্নে জীবনের সমীকরণ মেলাতে চায়।তবে কোথায় তার ভুল থাকে?সে জানে এবারের ঘটনায় তার ভুল হিসেবে কোনটা সবার দৃষ্টিতে পড়ে।তার ভাবির কথাগুলোই একজোটে ভুল হিসেবে উপস্থাপন করবে সবাই।কিন্তু সেগুলো কি আসলেই ভুল?ওই টুকু বয়সে যখন সে স্বামীই বুঝতো না, স্বামীর মনোরঞ্জন করতো কিভাবে?এটা মানুষ জন কেনো বুঝছে না?তায়্যেবই বা কেনো বোঝেনি?নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে সে।কিন্তু কোনো উত্তর পায় না।কেবল দু চোখ বেয়ে পানি গড়ায়।চোখের পানি ও মনের দুঃখ একাকার হয়ে যায়।ক্রমাগত কান্নায় ক্লান্তি ভর করে শরীরে।এভাবে এক সময় সে ঘুমিয়ে যায়।
______
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নেমেছে। ঘড়িতে আটটা বাজে।বেশ কিছু সময় অনেক কিছু ভেবে বিন্দু উঁকি দিলো প্রিয়তার ঘরে।এই নিয়ে তিনবার এ ঘরে উঁকি দিয়েছে সে।কিন্তু প্রিয়তা ঘুমে থাকায় ফিরে যেতে হয়েছে প্রতিবার।কিন্তু সে এবার সজাগই আছে।তাই এ যাত্রায় ফিরে না গিয়ে ঘরে ঢুকলো বিন্দু।প্রিয়তা ভাবির দিকে তাকিয়ে দেখে কেমন দ্বিধা করছে বিন্দু।সে গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
“কিছু বলবে?”
জবাবে বিন্দু বলে উঠলো,
“রাত হয়ে গেছে৷দুপুরে তো না খেয়ে ঘুমালে।এখন কয়টা খেয়ে নেও।তোমার জন্য আগে ভাগে রান্না করেছি। ”
বিন্দুর দিকে তাকিয়ে মিথ্যে হাসি দিলো প্রিয়তা।বিন্দুর কণ্ঠ এখন একদম নরম।সে বুঝে গেলো তখনের দেওয়া ডোজ কাজ করেছে।মানুষ আসলে শক্তের ভক্ত আর নরমের যম।সে তখন শক্ত হয়েছে বলেই বিন্দু এত নরম হয়েছে।সে ধাতস্থ কন্ঠে বললো,,
“যাও আসছি।”
কথাটা বলে হাদিস বইটা রেখে উঠলো প্রিয়তা।এখানে এসে কষ্টগুলো বুকে চেপে ধরছিলো তার।তাই মন না চাইলেও হাদিস বই নিয়ে পড়তে বসেছে সে।সামনের বছর তার এইচ এস সি পরীক্ষা।কিন্তু তখন বিষাদের মুহুর্তে একাডেমিক বইগুলো সঙ্গে নিয়ে আসার কথা মাথায় ছিলো না।সেগুলো নিয়ে আসলে হয়তো একাডেমিক বই নিয়েই বসতো।তবে দুঃখ ভোলার মাধ্যম হিসেবে এই হাদিস বইটাও মন্দ লাগছে না।বরং এর মাঝে উল্লেখ করা সাহাবিদের ছোট ছোট সংগ্রাম ও কষ্টের গল্পগুলো নতুন দমে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে তাকে।কষ্ট ভুলতে পারছে সে।সাহাবীরা আগে কত কষ্ট সহ্য করেছে, সে তুলনায় তার দুঃখ গুলো তো অতি সামান্য।
বিয়ের পর পড়া বাদ যায় নি তার।জামাই শিক্ষিত,বউকেও শিক্ষিত হতে হবে।এই যুক্তিতে তায়্যেবই তার পড়ায় জোর দিয়েছিলো।বিয়ের পর সংসারের কাজ তার উপর না চাপিয়ে পড়াশোনাটা চাপিয়ে দিয়েছিলো তার স্বামী।আর তায়্যেবের সিদ্ধান্তের উপর ও বাড়ির কেও কিছু বলার সাহস পায়নি।লোকটা একটু বেশিই জেদী কিনা!সেই সুবাদে লেখা পড়া বেশ ভালোই চলেছে প্রিয়তার।সংসার করেও নিয়মিত স্কুল কলেজ করেছে।এস এস সি তে সব বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছিলো সে।তারপর তাকে কলেজে ভর্তি করা হলো।এটাও তায়্যেবের ইচ্ছায়।সে তখন বিদেশ চলে গিয়েছে।কিন্তু প্রিয়তার খেয়াল রাখা অব্যহত ছিলো।তারপর ধীরে ধীরে সব বদলে গেলো।
জীবন কখন কোন দিকে মোড় নেয় তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেও জানে না, জানতে পারে না।আমাদের আগে থেকে কিছুই জানা থাকে না পরে কি হবে।সেই কি কখনো জানতো তায়্যেব তার জীবন সঙ্গী হবে।কিন্তু হয়েছিলো তাই।সেই আধ পরিচিত মানুষটা হুট করে একদিন তার স্বামী রুপে হাজির হয়েছিলো।আবার হুট করেই সে জীবন হারিয়ে যাচ্ছে।এসব ভেবে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো সে।তারপর এগিয়ে গেলো খাবার টেবিলে।বিন্দু অনিচ্ছাতে হলেও বেশ সমাদর করছে তাকে।এটা সেটা তুলে দিচ্ছে।তখনের বা’ঘিনী বিন্দু এখন নরম হয়ে তার ক্ষ’তে মলম লাগাচ্ছে।মেকি কণ্ঠে সে বলছে,
“এখন খেতে মন চাইবে না তোমার এটা স্বাভাবিক।কিন্তু জানো তো, এখনই তোমার নিয়ম মতো খেতে হবে।তা না হলে মন শক্ত রাখবে কিভাবে?পেট ভরা থাকলে দুঃখও কম লাগে জানো?না খেলে কিন্তু চিন্তায় ও পুষ্টির ঘাটতিতে শরীর পড়ে যাবে।তাছাড়া ডিভোর্স তো এমন কিছু নয় যার জন্য না খেয়ে থাকতে হবে তাই না?কত মেয়ের ডিভোর্স হয়।পরে আবার ভালো ছেলের সাথে বিয়ে হয়।সে সংসারে কিন্তু তখন সুখই হয়।আর এটাই নিয়ম।প্রথম ঘর অনেকের ভাঙলেও দ্বিতীয় ঘর টিকে থাকে বেশিরভাগের।বেশ সুখেই থাকা যায় দ্বিতীয় ঘরে।তুমিও সুখী হবে দেখো।”
বিন্দু হটাৎ এত মধুর কথার জাল কেনো বিছিয়েছে তা এতক্ষণে বুঝলো প্রিয়তা।শান্ত ব্রেনে এখন যে তাকে আরেক বিয়ের ব্যবস্থা করে এ বাড়ি থেকে তাড়াতে চাইছে তা সে ঢের বুঝলো।এতে বিন্দুর সাপও ম’রবে, লাঠিও ভা’ঙবে না।প্রিয়তা এ বাড়ি থেকে বিদায় হবে ঠিকই কিন্তু সম্পদ এখন ভাগ করে দিতে হবে না।বেশ ভালো পরিকল্পনা করেছে তার ভাবি।সে খানিকটা আড়ালেই হাসলো।তারপর শান্ত কণ্ঠে বললো,
“দ্বিতীয় সংসারে সবাই সুখী হয় না ভাবি।বরং মুখ বুঁজে সেসব বিষয় সহ্য করে যায়, যা প্রথম সংসারে কোনো মেয়ে করেনি।সে খারাপ এটা না শোনার জন্যই হাজারো কষ্ট সয়ে দ্বিতীয় ঘর করে প্রত্যেক নারী।হ্যাঁ ব্যতিক্রম থাকে না তা বলছি না।অনেকে হয়তো সুখী হয়।কিন্তু আগে থেকে তার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।তাই এমন ফালতু চিন্তা বাদ দেও।”
প্রিয়তার এমন কথায় সচকিত হয় বিন্দু।থমথমে গলায় জিজ্ঞেস করে,
“এটাকে ফালতু চিন্তা মনে হলো তোমার?”
প্রিয়তা জোর দিয়ে বললো,
“অবশ্যই ফালতু চিন্তা।”
এবার বেশ অবাক হলো বিন্দু।সে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
“তার মানে কি বলতে চাইছো তুমি?”
সে নিস্পৃহ কণ্ঠে জবাব দিলো,
“তুমি যেটা বুঝেছো সেটাই।আমি আর কখনো বিয়ে করবো না।”
“একটা মেয়ে মানুষ কখনো সারাজীবন একা চলতে পারে?”
বিষ্মিত অভিব্যক্তিতে জবাব তার।প্রিয়তা গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
“সবাই একাই চলে ভাবি।আশেপাশের সবাই কেবল খানিক পথের সঙ্গী হয় মাত্র।মাঝ পথে অনেক সঙ্গীর বদল হয়, হারিয়ে যায়।কিন্তু জীবনটা যার তার সারাজীবন ওভাবেই পাড় করতে হয়।হোক ভিন্ন সঙ্গীর সহিত অথবা একা।জীবন কেটেই যায়।কিন্তু আমি কেবল জীবন কাটানোর জন্য বাঁচতে চাই না।আমি আমার নিজের সবটা দিয়ে ওসব মানুষকে ভালো রাখার জন্য বাঁচতে চাই, যাদের জন্ম থেকেই একা চলতে হয়।ফুটপাতের অসহায় বাচ্চাদের জন্য কিছু করে যেতে চাই আমি।এতে কেও আমাকে সাপোর্ট না দিলেও আমি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকবো।”
কথাটা বলে খাবার শেষ করে উঠলো প্রিয়তা।বিন্দু বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে রইলো।এই মেয়ে দেখি তালাকপ্রাপ্তা হওয়ার আগেই উচ্ছন্নে গেলো!প্রিয়তা সেসব উপেক্ষা করে চলে গেলো।
#চলবে……..