তিক্ত প্রতিশোধ পর্ব-১৭

0
695

#তিক্ত_প্রতিশোধ
#পর্ব ১৭
#Raiha_Zubair_Ripte

তো মিসেস অহনা আপনি জানতে পারলেন কিভাবে জয়নাল মিয়া আপনার চাচা? এইসব খু’ন কি আপনি আদৌও করেছেন?আপনার কি একবার ও আপনার চার বছরের বাচ্চাটার কথাটা মনে হলো না,সে কি করে মা বাবা ছাড়া বেড়ে উঠছে আপনার কোনো আইডিয়া আছে?

অহনা একবার অফিসার এনামুল হকের দিকে তাকিয়ে নৈঃশব্দে হেঁসে চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া নোনা জল সন্তপর্ণে মুছে বলে,,

” যার এই দুনিয়াতে কেউ নেই সে কি বাঁচে না! আমি জানি আমার ছেলে খুবই ভালো আছে,সায়েম নিজের ছেলের মতোই আমার ছেলেকে ভালোবাসে।তার কোনো অযত্ন সায়েম হতে দিবে না।

” আজ না হয় আপনার ছেলে জানে না আপনি ওর মা কিন্তু সত্যি কতোদিন চেপে রাখতে পারবেন যখন সে বড় হবে তখন সত্যি টা জানতে পারলে কি হবে।

” সময়ের উপর ছেড়ে দিয়েছি সব।

” ওহ্ তার পরের দিন নিশ্চয়ই চন্দ্রা গিয়েছিলেন।

” হ্যাঁ তার পরের দিন রাত এগারোটার পরে চন্দ্রা গিয়েছিলাম আমরা তিনজন সহ বাকি আরো সাত-আট জন। চুপি চুপি ভবন টার ভেতরে ঢুকে দেখি দশ-বারো জন লোক ড্রাগস গুলো প্যাকেট করছে, আমরা সবাই গিয়ে কৌশলে তাদের ধরে ফেলছিলাম কিন্তু,,

” কিন্তু কি মিসেস অহনা।

” সেদিন তাদের ধরার পর হঠাৎ ভবনের সব লাইট গুলো নিভে যায়,পুরো ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে পড়ে ভবন টা,প্যান্টের পকেট থেকে ফোন বের করে ফোনের টর্চ অন করতেই দেখি কেউ পিস্তল হাতে করে পেছন থেকে আমার মাথায় তাক করে দাঁড়িয়ে আছে। এরমধ্যে ভবনের লাইট গুলো জ্বলে উঠে,আকস্মিক আমার শশুর কে এখানে দেখে চমকে গিয়েছিলাম। উনি হুংকার দিয়ে বলে উঠে,,

” এই অহনা তোমার সঙ্গী দের বলো আমার লোকদের কে ছেড়ে দিতে তা না হলে তোমায় সোজা উপরে পাঠিয়ে দিবো।

” আমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে শশুর মশাই ওদের বলবো আপনার লোক ছেড়ে দিতে!

কথাটা বলেই অহনা পেছন থেকে আমজাদ হোসেনের পায়ে সজোরে লা’থি মে’রে হাত থেকে পিস্তল টা কেড়ে নিয়ে সজোড়ে গালে চড় বসিয়ে দেয় অহনা।

” তোর তো সাহস কম না তুই আমায় থাপ্পড় মারিস,আজ তোকে আমি শেষ ই করে ফেলবো।

কথাটা বলে অহনার দিকে তেঁড়ে আসতেই পেছন থেকে তন্ময় আমজাদ হোসেনের কোমড়ে লা’থি মারে। যার দরুন আমজাদ হোসেন ফ্লোরে পড়ে যায়।

তন্ময় আমজাদ হোসেনের উপর উঠে বসে ইচ্ছে মতো চড় ঘুষি মারতে থাকে।

আমজাদ হোসেন মার খেয়ে নেতিয়ে পড়লে তন্ময় আমজাদ হোসেন কে ছেড়ে দিয়ে অহনার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে,,

” অহনা ইনিই তোমার শশুর?

” হ্যাঁ তন্ময়।

কথাটা বলে তন্ময়ের থেকে চোখ সরিয়ে আমজাদ হোসেনের দিকে চোখ যেতেই অহনার চোখ বড় হয়ে যায় তড়িঘড়ি করে দু হাত দিয়ে তন্ময় কে ধাক্কা মে’রে সরিয়ে দেয়,আর গুলি টা এসে সোজা অহনার ডান হাতে এসে লাগে।

তন্ময় অহনার হাতে গুলি লাগা দেখে বুঝতে আর বাকি নেই কেনো তাকে ধাক্কা মে’রে সরিয়ে দিয়েছে। আমজাদ হোসেনের দিকে ঘুরে তাকাতেই দেখে আমজাদ হোসেন আবার গুলি করার জন্য উদ্ধত হচ্ছে, তন্ময় আর সময় নষ্ট না করে নিচে পড়ে থাকা পিস্তল টা নিয়ে সোজা আমজাদ হোসেনের বুক বরাবর গুলি করে।

রিফাত দৌড়ে এসে অহনাকে ধরে ফেলে,তন্ময় গিয়ে আমজাদ হোসেনের পার্লস চেক করে দেখে তিনি মা’রা গেছেন।

অন্য সহকারী রা আমজাদের লোকগুলো কে ততক্ষনে গাড়িতে করে নিয়ে যায়,ভবন টাতে পড়ে রইলো অহনা,রিফাত,তন্ময় আর আমজাদের মৃ’ত দেহ ।

তন্ময় অহনার কাছে এসে অহনাকে ধরে গাড়িতে নিয়ে গিয়ে বসায়,আর রিফাত কে বলে লা’শ টা নিয়ে যেতে।

অহনাকে নিয়ে সোজা তন্ময় হসপিটালে চলে আসে।

ডক্টর অহনার হাতে ব্যান্ডেস বেঁধে দিয়ে বলে,,,

” এখন আর কোনো বিপদ নেই,আমি গুলি বের করে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিয়েছি,আর এই যে মিস্টার আপনি আপনার ওয়াইফকে নিয়ে যেতে পারেন

ডক্টরের কথা শুনে তন্ময় বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে,,

” হোয়াট কি বলছেন,আমি পিউর সিঙ্গেল উনি আমার ওয়াইফ নয়।

ডক্টর নির্বাক হয়ে চেয়ে থেকে বলে,,

” তাহলে আপনি কেনো এসেছেন উনার সাথে।

” আমরা একই জায়গায় কাজ করি গোয়েন্দা বিভাগে,আপনায় ডক্টর কে বানায়ছে হ্যাঁ দেখছেন তার হাতে গুলি লেগেছিলো আর আপনি এটা বলছেন।

” ওহ আচ্ছা। আমি কিছু মেডিসিন লিখে দিয়েছি ওগুলো খাইয়ে দিবেন।

তন্ময় মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জানিয়ে অহনাকে ধরে তার বাসায় নিয়ে যায়।

রিফাত আমজাদ হোসেনের লা’শটা নিয়ে অফিসে শামসুল আলমের নিকট নিয়ে যায় এবং বলে আমজাদ হোসেন পালানোর চেষ্টা করলে তাকে গুলি করতে বাধ্য হয় এবং সেখানেই মা’রা যায়।

★ ★ ★ ★ ★

শুভ্র সবেই কফি টা মুখে তুলতে নিবে টেলিভিশনে তার বাবার এমন মৃ’ত্যুর নিউস শুনে হাতে থাকা কফি টা পড়ে যায় ফ্লোরে।

পকেট থেকে ফোন বের করে তার এক সঙ্গী কে ফেন করে বলে,

” এসব কি করে হলো?

ফোনের ওপাশ থেকে বলা হয়,,

” স্যার আপনার ওয়াইফ অহনা ম্যাম এসব করছে,আপনার বাবা ড্রাগের সাপ্লাই দিতো,অহনা ম্যামকে বড় স্যার গুলি করতে নিলে ম্যামের সঙ্গী বড় স্যার কে গুলি করে।

” অহনা এখন কোথায়?

” শুনেছি ম্যাম নাকি তার এক ফ্রেন্ডের বাসায় থাকে

” লোকেশন টা সেন্ড করো কুইক।

” ওকে স্যার।

শুভ্র ফোন টা টি-টেবিলের উপর রেখে সোফায় বসে বলে,,

” রনি এই রনি এদিকে আয় তো।

রনি শুভ্রর ডাক শুনে শুভ্রর কাছে এসে বলে,,

” হ্যাঁ ভাইয়া বলুন কি হয়েছে।

” গাড়ি বের কর আমি বের হবো।

” ঠিক আছে।

কথাটা বলে রনি গিয়ে গাড়িতে বসতেই শুভ্র গিয়ে বসে পড়ে। রনির দিকে তাকিয়ে বলে,,

” গাড়ি স্টার্ট কর,আর এই লোকেশনে নিয়ে চল।

ফোনটা রনির দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে।

রনি কথা না বাড়িয়ে শুভ্রর দেওয়া লোকেশনে চলে যায়।

সেদিন শুভ্র কে যখন অহনা ঘরে বন্দী করে রেখে গিয়েছিলো, অহনা কে রাতে বাগান বাড়ি আনার পরই মলি বেগম কে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছিলো।সেদিন বাগান বাড়ি দেখা শোনা করার মলি বেগম কে ফোন করে এনে তারপর দরজা খুলিয়েছিলো,
এর পর সোজা ঢাকায় ব্যাক করে তার পরের দিন একটা ডিল ছিলো তাই।

শুভ্রর ধ্যান ভাঙ্গে গাড়ি থামানো তে,সামনে চেয়ে দেখে দু তলা একটা বাড়ি। রনি কে বাসায় চলে যেতে বলে শুভ্র সোজা ভেতরে ঢুকে পড়ে,সদর দরজায় কলিং বেল বাজালে তন্ময়ের মা এসে দরজা খুলে দেয়।

দরজার সামনে অচেনা মানুষ দেখে তন্ময়ের মা বলে উঠে,,

” কি ব্যাপার কাকে চান।

শুভ্র কোনো জবাব না দিয়ে সোজা বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়ে। সিঁড়ির কাছে যেতেই পেছন থেকে তন্ময়ের মা বলে উঠে,,

” আরে অদ্ভুত তো আপনি ভেতরে কেনো ঢুকছেন, বের হন আমার বাসা থেকে।

শুভ্র পেছন ঘুরে বলে,,

” অহনা কোন রুমে থাকে সেটা বলুন।

” সেটা আপনায় কেনো বলবো হ্যাঁ।

” কারন আমি অহনার স্বামি তাই আপনি বলতে বাধ্য।

তন্ময়ের মা শুভ্র কে ভালো মতন পর্যবেক্ষণ করে সদর দরজার পেছন থেকে ঝাড়ু টা বের করে হাতে নিয়ে শুভ্রর দিকে তেড়ে গিয়ে বলে,,

” এই তুই সেই শুভ্র অহনার স্বামি তুই মেয়ে পা’চার করিস খারাপ লোক তোরে আজ আমি শেষ করে দিবো।

কাল যখন অহনার কোথাও থাকার মতো জায়গা ছিলো না তখন তন্ময় অহনাকে তার বাসায় নিয়ে আসে, অহনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে অহনা সব বলে দেয় তার ব্যাপারে।

কথাটা বলেই ঝাড়ু দিয়ে এক বারি বসাতে নিলে শুভ্র
ঝাড়ু টা এক হাত দিয়ে ধরে ঠাস করে তন্ময়ের মায়ের গালে চড় বসিয়ে দেয়, পকেট থেকে পিস্তল টা বের করে তন্ময়ের মায়ের মাথায় তাক করে বলে,

” এই বুড়ি আর একবার আমার গায়ে টাচ করার চেষ্টা করবি তো তোরে উপরে পাঠায় দিবো বল অহনা কই।

শুভ্রর এমন চাহনি দেখে তন্ময়ের মা ভয় পেয়ে আমতা আমতা করে বলে,,

” উপরে গিয়ে সোজা বা দিকের দ্বিতীয় রুম টাতে অহনা আছে।

শুভ্র তন্ময়ের মা কে ধাক্কা মে’রে ফ্লোরে ফেলে দিয়ে সোজা সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে বা দিকের দ্বিতীয় রুম টাতে ঢুকে দেখে অহনা বিছানায় ঘুমাচ্ছে,ডান হাতে ব্যান্ডেজ করা।

তন্ময় অফিসে যাবার আগে অহনা কে মেডিসিন খাইয়ে দিয়ে গেছে যার দরুন এই অবেলায় অহনা ঘুমাচ্ছে।

শুভ্র সোজা অহনার কাছে গিয়ে চুলের মুঠি টেনে উঠায়।

আকস্মিক ঘুমের মধ্যে হঠাৎ এভাবে চুলে টান পড়ায় ব্যাথায় চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে অহনা চোখ খুলে সামনে শুভ্র কে দেখে বা হাত দিয়ে চুলের মুঠি শুভ্রর হাত থেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বলে,,

” আহ শুভ্র আমার লাগছে ছাড়ো বলছি আমায়।

” না ছাড়বো না কি করবি তুই,আমার বাপরে যেভাবে মারলি তুই আমায় ও কি সেভাবে মারবি। তোরে বাঁচায় রাখাই আমার ভুল হইছে,তোরে যদি সেদিনই আমি মেয়েগুলোর সাথে পা’চার করে দিতাম তাহলে বেশ হতো।

কথাটা বলেই অহনার চুলের মুঠি ছেড়ে গুলি লাগা ডান হাত টা চেপে ধরে টানতে টানতে নিচে নামে।

অফিসে যাওয়ার মাঝ পথে হঠাৎ তন্মশ তার মায়ের ফোন কল পেয়ে ফোন রিসিভ করতেই জানায় শুভ্র এসেছে তাদের বাসায়।

তন্ময় আর অফিসে না ঢুকে সোজা বাসায় চলে আসে,বাসায় আসার আগে অবশ্য রিফাত কে ইনফর্ম করে এসেছে।

তন্ময় কেবলই বাসায় তারাহুরো করে ঢুকছিলো,আর সামনে তাকাতেই দেখে শুভ্র অহনার আঘাত পাওয়া হাত শক্ত করে চেপে ধরেছে যার ফলে অহনার হাত দিয়ে আবার র’ক্ত পড়ছে।

তন্ময় তাড়াতাড়ি শুভ্রর কাছে গিয়ে শুভ্র কে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয় যার ফলে দু কদম পিছিয়ে যায় শুভ্র । অহনা শুভ্রর থেকে মুক্ত পেয়ে যেনো স্বস্তি পেলো,হাত ধরে মেঝেতে বসে পড়ে,হাত টা আগের তুলনায় এখন আরো ব্যাথা করছে।

শুভ্র তন্ময়ের সামনে এসে সোজা মুখ বরাবরই ঘুষি মারে,তন্ময়ের নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হয়,সেটা দেখে তন্ময়ের মা ছুটে এসে ছেলে কে ধরে, শুভ্রর দিকে তাকিয়ে বলে,,

” এই তুই কি আমার ছেলেকে মে’রে ফেলতে চাষ,অমা’নুষের বাচ্চা, বের হয়ে যা বলছি আমার বাসা থেকে।

অমা’নুষের বাচ্চা কথা টা শুনেই শুভ্রর মাথা রক্ত উঠে যায়,দিক বেদিক ভুলে তন্ময়ের মায়ের সামনে এসে সোজা পেট বরাবর লাথি বসিয়ে দেয় যার দরুন তন্ময়ের মা ফ্লোরে পরে যায় সাথে উ’মা করে চিৎকার করে উঠে।

আকস্মিক এমন ঘটনায় অহনা ও তন্ময় চমকে যায়। তন্ময় তাড়াতাড়ি করে তার মাকে উঠিয়ে ফ্লোরে বসিয়ে মাজার পেছন থেকে পিস্তল বের করে শুভ্রর দিকে তাক করতেই শুভ্র তন্ময়ের দিক গুলি ছুঁড়ে মারে। অহনার বিষয় টা বুঝতে পেরে ব্যাথা যুক্ত হাত নিয়ে তন্ময় কে বাঁচানোর জন্য দৌড় দেবার সাথে সাথে গুলি টা গিয়ে তন্ময়ের বুকের ডান পাশে গিয়ে বিঁধে।

মূহুর্তে ঢলে পড়ে যায় ফ্লোরে তন্ময়। তন্ময়ের মা একটা চিৎকার দিয়ে বসা থেকে উঠে ছেলের দেহ খানা ধরে কান্না করে দেয়। অহনা তন্ময়ের কাছে এসে তন্ময়ের মাথা টা কোলে নিয়ে কান্নারত কন্ঠে শুধায়,,

” এই তন্ময় চোখ খুলো,দেখো আন্টি কিভবে কাঁদছে তুমি ছাড়া তো আন্টির আর কেউ নেই,উঠো না তুমি আন্টির খেয়াল কে রাখবে।

নাহ তন্ময় আর কথা বলে না,তন্ময়ের মা বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে শুভ্রর সোজাসুজি দাঁড়িয়ে সোজা শুভ্রর গালে চড় বসিয়ে শুভ্রর কলার ধরে বলে,,

” কোন মায়ের গর্ভে তুই জন্ম নিয়েছিলি?এক মায়ের সামনেই তুই তার ছেলে কে মে’রে ফেললি,তোর তো জাহান্নামে ও ঠাই হবে না রে পাপিষ্ঠ। কথাটা বলে আরো একটা চড় মারার জন্য হাত তুলতে নিলে শুভ্র সোজা তন্ময়ের মায়ের পেটের সাথে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে দেয়।

আবার গুলির শব্দ শুনে অহনা পেছন ঘুরে দেখে তন্ময়ের মা ফ্লোরে ঠাস করে পড়ে যায়।

অহনা তন্ময় কে ছেড়ে দৌড়ে তন্ময়ের মায়ের কাছে এসে তন্ময়ের মা কে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে বলে,

” আন্টি ও আন্টি চোখ খুলো আন্টি আমি এখনই তোমাদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো,কথাটা বলে বসা থেকে উঠতে নিলে তন্ময়ের মা অহনার হাত ধরে বলে,,

” লাভ নেই রে আমার হাতে আর সময় নেই,তুই কিছুতেই এই পাপিষ্ঠ কে ছেড়ে দিবি না অহনা, এতো গুলো জীবন নষ্ট করার জন্য শাস্তি তুই তাকে দিবি কথা দে আমায়।

” আন্টি আমি তোমায় কথা দিচ্ছি আমি ওকে নির্মমভাবে শাস্তি দিবো আগে তোমায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে দাও।

অহনার কথা টুকু শুনে তন্ময়ের মা হেঁসে চোখ বুজে ফেলে।

তন্ময়ের মায়ের চোখ বোজা দেখে অহনা তন্ময়ের মায়ের গালে হাত দিয়ে বলে,,

” আন্টি কি হলো তুমি চোখ বন্ধ করলে কেনো,চোখ খুলো,ও আন্টি চোখ খুলো না।

” তোর আন্টি আর বেঁচে নেই,পাঠিয়ে দিছি ওপারে,শুধু শুধু ন্যাকা কান্না কেঁদে লাভ নেই।

কথাটা কর্ণকুহর হতেই অহনা বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে শুভ্রর সোজা গিয়ে শুভ্রর শার্টের কলার ধরে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বলে,,

” শয়’তানের বাচ্চা তোর থেকে তো পশু ও ভালো, কি করে পারলি এদের মার’তে। তোর শত্রুতা ছিলো আমার সাথে ওদের মার’লি কেনো, তোর মতো শয়’তান কে আমি কিছুতেই ছাড়বো না।

” আমার তুই কিচ্ছুটি করতে পারবি না,অনেক ছাড় দিয়েছি তোকে,তুই আমার রাস্তায় থাকলে আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো না। আজ তোকে তোর জায়গায় পৌঁছে দিবো।

কথাটা বলে অহনা ব্যাথা যুক্ত হাত টা আবার চেপে ধরে আগের তুলনায়। অহনা ব্যাথয় আহ শব্দ করে উঠে।

অহনাকে টানতে টানতে গাড়িতে নিয়ে গিয়ে গাড়ির দরজা লক করে শুভ্র গাড়ি চালাতে শুরু করে।

অহনা সেই সুযোগে বারবার গাড়ির গ্লাসে জোরে জোরে ঘুষি মারে,তো কখনো শুভ্র কে ধাক্কা মারে। শুভ্র এবার কষিয়ে অহনার গালে চড় বসিয়ে দেয়। চুলের মুঠি ধরে বলে,,

” বা”ন্দির বাচ্চা তোর এতো বি’গার কেন হ্যাঁ, তোর বি’গার আজকে মিটিয়ে দিবো।

কথাটা বলে পেছনের সিট থেকে দড়ি এনে অহনার হাত বেঁধে দেয়,অহনা অনেক বাঁধা দিয়েছে হাত পা দিয়ে কিন্তু কোনো লাভ হয় নি,অহনার হাত পা বেঁধে নিয়ে আসে তার বাসায়।

এদিকে রিফাত অফিস থেকে কয়েকজন লোক নিয়ে এসে তন্ময়ের বাসায় এসে দেখে তন্ময়আর তার মায়ের নিথর দেহ পড়ে আছে ফ্লোরে। দৌড়ে গিয়ে চেক করে দেখে তারা মা’রা গেছে।

অহনার কথা মনে হতেই পুরো বাড়ি খুঁজে দেখে অহনা নেই,রিফাত মাথায় এক হাত দিয়ে চুল গুলো।টেনে বলে,,

” ওহ নো, অহনা তার মানে বড় কোনো বিপদে পড়েছে,ইমিডিয়েটলি অহনাকে খুঁজে বের করতে হবে,কথাটা বলে বাকি লোক গুলো কে লা’শ নিয়ে যেতে বলে শামসুল আলম কে ফোন করে সবটা জানায় রিফাত।

শামসুল আলম রিফাত কে তন্ময়ের বাসা থাকতে বলে তিনি ও বেরিয়ে পড়ে তন্ময়দের বাসায় আসার জন্য।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে