#তিক্ত_প্রতিশোধ
#পর্ব ১১
#Raiha_Zubair_Ripte
সকালে ঘুম থেকেই উঠে বালিশের পাশে থাকা ছোট কাগজটা পড়ে জানতে পারে অহনা, শুভ্র ব্যাবসার কাজে কয়েকদিনের জন্য ইতালি গেছে,কাগজটাতে এ-ও লেখা আছে,ঠিকঠাক মতো যেনো অহনা খাবার খায়,নিজের যত্ন নেয়। আর টাইম করে দু বেলা শুভ্র নিজে থেকেই ফোন দিবে।
হাতে থেকে চিঠি টা বিছানায় রেখে অহনা ফ্রেশ হয়ে নিচে যাওয়ার জন্য রুম থেকে বের হয়।
সিঁড়ির কাছে আসতেই অহনার চোখ যায় ড্রয়িং রুমের সোফায়,অভ্র আর আমজাদ হোসাইন বসে আছে কপালে হাত ঠেকিয়ে।
অহনা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে শব্দ করে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে ডাইনিং টেবিল থেকে গ্লাসে জল ভরে সেটা খেতে থাকে।
অভ্র প্রচুর রেগে আছে,অহনাকে তার এতোটা হালকা ভাবে নেওয়া ঠিক হয় নি। অভ্র রেগে-মেগে সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ডাইনিং টেবিলের কাছে এসে পেছন থেকে অহনার চুলের মুঠি ধরে জোরে।
আচমকা এতো জোরে চুল ধরায় অহনা আহহ শব্দ করে উঠে।
অভ্র অহনার চুলের মুঠি ধরে পেছন থেকে খানিক নিচু করে টেনে বলে,,
” তোকে বলেছিলাম না এতো বাড় না বাড়তে, এ কাজ নিশ্চয়ই তোর,তুই ঐ মেয়েগুলো কে ওখান থেকে বের করেছিস,তোর জন্য আমাদের কতো টাকা লস হয়েছে তুই জানিস,আজ তোকে তো আমি,,,
কথাটা বলেই অভ্র অহনার চুলের মুঠি ছেড়ে অহনাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে চড় মারতে উদ্ধত হলে অহনা টেবিলে থাকা ধারালো ফল কাটার ছুরি নিয়ে অভ্রর ডান হাত বরাবর কেটে দেয়। অভ্র ব্যাথায় চোখমুখ কুঁচকে ফেলে।
” একদম আমার সাথে এভাবে কথা বলবে না তোমার সাহস হয় কি করে আমার গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করার,তোমার এই হাত আমি ভেঙে ফেলবো দ্বিতীয় বার এমন চেষ্টা করলে।
আমজাদ হোসেন এগিয়ে এসে বলে,,
” অহনা তুমি কেবল মোশারফের মেয়ে আর আমার ছেলের বউ বলে কিন্তু তোমায় কিছু করা হচ্ছে না তাই বলে যে সবসময় তোমায় ছেড়ে দেওয়া হবে এটা ভুলেও আশা করো না।
” যে আমার লোকসান করবে তাকে তো আমি এমনি এমনি ছেড়ে দিবো না,সে হোক আমার মেয়ে আর হোক সে অন্য কেউ।
কথাটা বলতে বলতে সদর দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে মোশারফ হোসেন।
মোশারফের এমন কথা শুনে অহনা অবাক চাহনি নিয়ে তার বাবার দিকে তাকায়।
” কি বললেন আঙ্কেল আপনি এটা।
” যা শুনেছো তাই বললাম অভ্র, ও আমার মেয়ে তাই কি হয়েছে,ওর জন্য তো আমি আমার সাজানো এতোদিনের সাম্রাজ্য নষ্ট হতে দিতে পারবো না। তাই ওকে,,,
” কি আমাকে কি করবে তুমি হ্যাঁ, তোমায় বাবা হিসেবে ডাক দিতে আমার ঘৃণা হচ্ছে ছিঃ এই লোকটা কি-না আমার জন্মদাতা পিতা!
অহনার কথা শুনে মোশারফ হোসেন এগিয়ে এসে সজোরে অহনার গালে চড় বসিয়ে দেয়। অহনা তাল সামলাতে না পেরে দু কদম পিছিয়ে যায়। গালে হাত দিয়ে ছলছল নয়নে মোশারফের দিকে তাকায় অহনা।
” ডাকিস না বাবা বলে আমায়,এমনিতেও অন্যের মেয়েকে এতোদিন নিজের মেয়ে বলতে বলতে আমি হাঁপিয়ে গেছি, জেনে গেছিস ভালোই হয়েছে,এবার তোকেও অন্য মেয়েদের সাথে পা’চার করে দিবো।
মোশারফের কথাটা কর্ণকুহর হতেই অহনা থমকে যায়,তার বাবা এটা কি বলছে অন্যের মেয়ে মানে?
অহনা মোশারফ হোসেনের সামনে এসে বলে,,
” তুমি কি বললে এটা, অন্যের মেয়েকে মেয়ে বলতে বলতে হাঁপিয়ে গেছো মানে কি?
মোশারফ হোসেন দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে বলে,,
” যা বলেছি শুনেছোই তো, তুমি আমার মেয়ে নও।
” কিহ! তুমি কি আমার সাথে মজা করছো বাবা, হয়তো মজাই করছো তাই না, বলো না বাবা মজা করছো তাই না।
অহনা মোশারফ হোসেনের দু হাত আঁকড়ে ধরে অনুনয়ের সুরে বলে।
মোশারফ হোসেন অহনার থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়।
আমজাদ হোসেন অবাক হয়ে বলে,,
” এসব কি বলছো মোশারফ তুমি,অহনা তোমার মেয়ে নয়?
” না আমার মেয়ে নয় ও। ওঁকে তো আমার স্ত্রী হসপিটাল থেকে দত্তক নিয়ে এসেছিলো। আমার স্ত্রী কখনো মা হতে পারবে না তাই ওঁকে দেখে আর ওর জন্মদাত্রী মা ওকে জন্ম দিতে গিয়ে মা’রা গিয়েছিলো,আর ওর বাবা ওকে নিতে চাইছিলো না তাই আমার স্ত্রী আনে।
কেমন নির্দ্বিধায় বলে দিলো মোশাররফ হোসেন, অহনা নিজের কান কেই বিশ্বাস করতে পারছে না,এ কোন সত্যির মুখোমুখি হলো সে। প্রথমত এক ধাক্কা খেলো এসব অন্যায়ের সাথে নিজের বাবা কে জড়িত দেখে আর এখন সে জানতে পারলো যাকে এতো দিন ধরে বাবা বলে জেনে এলো সে আসলে তার বাবা-ই না।
অহনা ফ্লোরে বসে পড়লো, চিৎকার করে তার কাঁদতে ইচ্ছে করছে কিন্তু গলা দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না,শুনেছি অনেক কষ্ট পেলে নাকি মানুষ নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে ব্যার্থ হয় বা অনুভূতি শূন্য হয়ে পড়ে।
অহনার ক্ষেত্রেও তাই,সে পারছে না চিৎকার করে কাঁদতে।
মোশারফ হোসেন চোখের ইশারায় অভ্র কে অহনাকে নিয়ে যেতে বলে।
অভ্র অহনাকে বসা থেকে উঠিয়ে টানতে টানতে অহনাদের রুমে নিয়ে যায়। অহনা একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেছে,অহনাকে ঘরে এনে বন্ধ করে দরজা লাগাতেই অহনার হুশ আসে। অহনা একের পর এক দরজায় বারি দিতে থাকে আর চিৎকার করে বলতে থাকে,,
” দরজা আটকালে কেনো তোমরা,আমায় বের হতে দাও,তোমাদের কাউকে আমি ছাড়বো না,যেই জঘন্যতম কাজে তোমরা নেমেছো, মৃত্যু তোমাদের অতি নিকটতম। তোমরা অকালেই কতো নিষ্পাপ মেয়েদের ঝড়ে ফেলছো,নিকৃষ্ট লোক তোমরা।
কথাটা বলেই দরজায় পিঠ ঠেকিয়ে কাঁদে অহনা।
কাল রাতে যখন অহনা ঘুমানোর চেষ্টা করছিলো,কিছুতেই অহনার ঘুম আসছিলো না, অহনা বিছানা থেকে নেমে শুভ্রর দিকে চেয়ে দেখে শুভ্র বেঘোরে ঘুমোচ্ছে।
অহনা বেলকনিতে গিয়ে সায়েম কে ফোন দিয়েছিলো,রাত তখন একটা বাজে। অতো রাতে অহনার ফোন আসায় সায়েম ঘাবড়ে গিয়েছিলে তাড়াতাড়ি করে ফোন রিসিভ করতেই অহনা বলে উঠে,,
” সায়েম আমি তোমাকে আমার শশুর বাড়ির লোকেশন সেন্ড করছি তুমি তাড়াতাড়ি চলে আসো।
কথাটা বলেই অহনা ফোন রেখে দিয়ে মেসেজে লোকেশন সেন্ড করে দেয়।
প্রায় আধ ঘন্টার মধ্যে সায়েম চলে আসে,অহনা বেলকনি থেকে দেখতে পায় সায়েমের গাড়ি,বাড়ির বাহিরের মেন গেট থেকে খানিকটা দূরেই গাড়ি পার্ক করেছিলো সায়েম অহনার কথা মতে।
অহনা চুপিসারে একবার আমজাদ আর অভ্রর ঘর পরখ করে দেখে তারা জেগে আছে নাকি। কিন্তু না তারা বেঘোরে ঘুমোচ্ছে।
অহনা সেই সুযোগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সায়েমের কাছে যায়।
সায়েম গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। অহনাকে দেখে এগিয়ে এসে বলে,,
” কি ব্যাপার অহনা তুমি এতো রাতে আসতে বললা কেনো।
” আগে চলো আমাদের বাড়ির পেছনে যেতে যেতে সব বলছি। কোনো আওয়াজ করবে না।
কথাটা বলেই তারা দুজনে বাড়ির পেছনের জঙ্গলে হাঁটতে থাকে।
সায়েম আবার ও বলে উঠে,,
” কি ব্যাপার বললে না, আর এতো রাতে এই জঙ্গলে ঢুকছো কেনো।
” আমাদের ইমিডিয়েটলি জঙ্গলের ভেতরে থাকা মেয়েদের বাঁচাতে হবে।
” হোয়াট! কি বলছো,এই জঙ্গলের ভেতর মেয়ে আসবে কোথায় থেকে।
অহনা হাঁটা থামিয়ে অহনার দেখা সকল ঘটনা সায়েম কে খুলে বলে।
সব শুনে সায়েম কি বলবে,কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না।
সায়েম খানি বাদে বলে উঠে,,
” আচ্ছা তাহলে কি রিয়ার মৃ’ত্যুর পেছনে তাদের হাত।
” হয়তো, আমি আশি পার্সেন্ট শিউর হয়েছি, তারাই রিয়ার খু’ন করেছে।
” কিন্তু তারা কেনো রিয়ার খু’ন করবে।
” হয়তো রিয়া ও আমার মতো এমন কিছু জেনেছিলো। ঐ দেখো কেঁচি গেট আমাদের এইখান দিয়েই খুব সতর্কতার সাথে ঢুকতে হবে।
কথাটা বলেই অহনা এগিয়ে গিয়ে দেখে কেঁচি গেটের আশেপাশে কেউ আছে না-কি, কিন্তু না কেউ নেই।
অহনা ধীর পায়ে কেঁচি গেট টা খুলে এদিক ওদিক চেয়ে সায়েম কে ইশারায় বলে ভেতরে ঢুকতে।
সায়েম ভেতরে ঢুকলে অহনা আর সায়েম মিলে ডান দিকে থাকা লম্বা রাস্তাটার ভেতরে দিয়ে যেতে থাকে খানিক হাঁটতেই তাদের চোখ যায় সামনে থাকা হাত পা বাঁধা মেয়েগুলোর দিকে।
মেয়েগুলো অহনাকে দেখে উমমম শব্দ করতে লাগলো,হয়তো তারা এই নরক থেকে বাঁচার আলো পেয়েছে।
অহনা তড়িঘড়ি পায়ে মেয়েগুলোর দিকে যেতে নিবার সময় এক লোক এসে হাজির হয় অহনার সামনে।
অহনা ভড়কে যায় কোমড়ে লুকানো ছুরি টা বের করে লোকটাকে আঘাত করতে নিলে লোকটা বলে উঠে,,
” আপু আমি আপনায় সাহায্য করতে এসেছি,আমি আপনার শত্রু নই।
লোকটার কথা শুনে অহনা ভ্রু কুঁচকে ফেলে।
” মানে কি বলছেন এগুলো,আপনি তো ওদের হয়ে কাজ করেন তাহলে আপনি কিভাবে আমায় সাহায্য করবেন।
” আপু আমি হাসান,আমি দায় ঠেকে এখানে কাজ করি। যদি পারতাম তাহলে এখান থেকে দূরে পালিয়ে যেতাম,টাকার লোভে পড়ে এই জগতে পা রেখেছিলাম কিন্তু এখন বুঝতে পারছি লোভে পড়ে কাজ করতে গিয়ে কতো বড় জঘন্য কাজ করছি।
” আমি আপনাকে কেনো বিশ্বাস করবো।
” আমাকে বিশ্বাস না করা ছাড়া তো আপনার আর কোনো উপায় নেই। আপনিই তো সেদিন ঐ সুরঙ্গ বেয়ে এসেছিলেন, আমি সেদিন আপনাকে দেখেছিলাম, চাইলেই তো বলে দিতে পারতাম বা ধরিয়ে দিতে পারতাম।
” আপনি জানলেন কিভাবে?
” আপনি যখন লুকিয়ে লুকিয়ে স্যারের কার্যকলাপ দেখছিলেন তখন আমি আপনার পিছে খানিকটা দূরেই ছিলাম। আপনি যখন ফুলদানি টা ভুল বসত ফেলে ছিলেন আর স্যার আপনায় দেখে ফেলবে বলে দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে চলে গিয়েছিলেন,তখন স্যার কে বলেছিলাম ফুলদানি টা আমার হাতে লেগে পড়েছে।
” ওহ, আচ্ছা এখানে তো অনেক লোক দেখেছিলাম তখন যখন মেয়ে গুলো কে নিয়ে আসলো,তাহলে তারা কোথায়?
” তারা বেঘোরে ঘুমোচ্ছে আমি তাদের খাবারে কড়া ডজের ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে দিয়েছিলাম। আমি জানতাম আপনি আজ আসবেন।
” তুমি জানতে মানে!
” কারন আমি আজ ও কেঁচি গেটের বাহিরে আপনাকে দেখেছি,মনে হয়োছিলো আজ রাতে আবার আপনি আসবেন তাই, আর কথা বাড়াবেন না ওদের খুলে নিয়ে যান।
অহান আর কথা না বলে তড়িঘড়ি করে সায়েম আর অহনা আর হাসান নামের ছেলেটা প্রায় দশ- বারোজন মেয়োর হাত পায়ের বাঁধন খুলে ফেললো।
মেয়েগুলোর হাত পায়ের বাঁধন খুলার পর মেয়েগুলো জড়িয়ে ধরে অহনাকে। সেখানে থাকা এক ছোট খাটো কিউট দেখতে এক মেয়ে কেঁদে কেঁদে বলে উঠলো,,
” আপু আজ আপনও এসেছেন বলে আমরা এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা রাস্তা পেলাম,আমার বাবা মা হয়তো এতোক্ষণে কেঁদে কেটে হয়রান হয়েগেছে,আমার মা তো হার্টের রুগী না জানি কি করছে।
” তা তোমাদের এখানে কিভাবে নিয় আসলো তারা।
” আসলে আপু আমরা সবাই প্রতারিত হয়েছি,,,,
” আপু এদের তো প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে তার পর দেখা করার নাম করে নির্জন জায়গা থেকে এদের তুলে আনা হয়।
মাঝখান থেকে মেয়েটিকে থামিয়ে হাসান বললো।
অহনা দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে বলে,,,
” তোমাদের বয়স কতো বলো তো সতেরো আঠারো হবে,আলাপ হয় কিভাবে তোমাদের এদের সাথে,এক ছেলে দেখা করতে বললো একটু মিষ্টি মিষ্টি কথা বললো আর তোমরাও গলে গিয়ে চলে আসলে দেখা করতে আশ্চর্য আমি।
” আপু আমাদের ভুল হয়ে গেছে প্রমিস আর কখনো এসবে জড়াবো না। প্লিজ আমায় আমাদের বাসায় দিয়ে আসুন।
” হুমম সায়েম তুমি ওদের নিয়ে যাও। আর হাসান তুমি তো এই জগৎ থেকে দূরে চলে যেতে চেয়েছিলে তুমি কি যাবে এই অন্ধকার জগৎ থেকে দূরে।
” ইচ্ছে তো আছে আপু যাবার কিন্তু এখন আর সেটা পসিবল নয়। আপনারা বরং চলে যান ওরা জেগে যেতে পারে।
” কিন্তু সকাল হলে ওরা মেয়ে গুলো কে না দেখতে পেলে তখন তো তোমাদের উপর চওড়া হবে।
” আপু আমাদের চিন্তা কইরেন না, আমি সব সিসিটিভি অফ করে রাখছি আর আপনি চলে যান,কোনো ঝামেলা হলে বাকিটা আমি সামলিয়ে নিবো।
” সত্যি পারবে তো সামলাতে তুমি।
” হ্যাঁ আপু পারবো আপনি যান।
অহনা আর কথা না বাড়িয়ে চলে যায়, জঙ্গলের থেকে বাহির হয়ে গাড়ির কাছে এসে অহনা সায়েম কে বলে,,
” সায়েম তুমি ওদের কে ওদের বাসায় পৌঁছে দাও,আর শুনো আমার মনে হয় ওরা সব বুঝতে পেরে যাবে কাজটা আমারই।
” তাহলে তো তারা তোমার সাথে কিছু করে ফেলতে পারে।
” চিন্তা করো না আমি সবটা সামলে নিবো,আর হ্যাঁ যদি আমি তোমায় সারাদিনে কোনো ফোন কল মেসেজ না দেই তাহলে মনে করবে আমি বিপদে,তখন আমার বাড়ির আশেপাশেই ছদ্মবেশে থেকো তুমি।
” আচ্ছা তাহলে আমি আসি,নিজের খেয়াল রেখো।
” হুমম যাও।
সায়েম গাড়িতে উঠে মেয়েগুলোকে গাড়িতে বসিয়ে চলে যায়।
অহনার গাড়িটির যাওয়ার দিকে চেয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়ে।
সদর দরজা লাগিয়ে আবার আমজাদ আর অভ্রর ঘর চেক করে নিজের ঘরে গিয়ে শুভ্রর পাশে শুয়ে পড়ে।
জঙ্গলের ভেতরে থাকা সেই আস্তানায় বসে আছে মোশারফ, আমজাদ, অভ্র।
তাদের সামনে মাথা নত করে আছে তাদের লোকজন।
অভ্র এগিয়ে এসে তাদের দিকে চেয়ে চেয়ে বলে,,
” বল তোদের মধ্যে কে অহনাকে এই কাজে সাহায্য করেছে,আমি নিশ্চিত অহনার পক্ষে একা এই কাজ করা সম্ভব নয়,তোদের মধ্যে থাকা কারো সাহায্য ছাড়া।
লোকগুলোর মধ্যে থাকা এক লোক কাঁপা কাঁপা স্বরে বলে উঠে,,
” স্যার আমরা সত্যি জানি না, আপনি বিশ্বাস করুন।
” ওহ রিয়েলি গুড। হাসান এদিকে আয় তো।
আচমকা হাসান অভ্রর মুখে নিজের নাম শুনে চমকে উঠে।
কাঁপা কাঁপা পায়ে অভ্রর সামনে এসে দাঁড়ায়।
” তুই ও কি জানিস না কে করলো এই কাজ টা।
” ন ন না স্যার আ আমিও জানি না।
কথাটা মুখ থেকে বের হতেই অভ্র পাশে থেকে বড় তলোয়ার টা নিয়ে এক কোঁপ দিয়ে মাথা থেকে শরীর টা আলাদা করে দেয়।
সবাই কেঁপে উঠে হাসানের এমন পরিনতি দেখে।
” বেইমানের বা’চ্চা,আমাদের খেয়ে আমাদের সাথে থেকে আমাদের সাথেই বেইমানি করিস। কি মনে করেছিলি তুই সিসিটিভি বন্ধ করে দিবি আর আমি বুঝতে পারবো না। তোদের অজানার বাহিরেও আমি সিসিটিভি লাগিয়েছি। সব সিসিটিভি বন্ধ করতে পারলেও সেটা করতে পারিস নি।
আমি স্পষ্ট দেখেছি তুই করেছিলি সাহায্য। আর সবাই কান খুলে শুনে রাখো আমাদের সাথে যে বেইমানি করবে আমাদের পিঠ পিছে যে আঘাত করবে তার অবস্থা এমনই হবে।
কথাটা বলে অভ্র বেড়িয়ে যায় নতুন শিকারের উদ্দেশ্যে।
#চলবে