গল্পের নামঃ-#তার_শহরের_প্রেম😍😍
লেখিকাঃ- #Konika_islam
part:-15
“সকাল একটি দুর্দান্ত আশীর্বাদ,, এটি প্রত্যাশার এক নতুন আলো, যা আমরা জীবন বলে থাকি তার আর একটি সূচনা দেয়। “সুযোগগুলি সূর্যোদয়ের মতো।আয়াতের ঘুম ভাঙতেই নিজেকে আবিষ্কার করে আয়ানের বাহুডোরে,, আয়ান আয়াতের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, আয়াত তা দেখে একটা মুচকি হাসি দিয়ে আবার জড়িয়ে ধরে আয়ানকে,, আয়ান আয়াতের মাথায় চুমু দিয়ে বলে
—– মাহা রানীর ঘুম হলো। আয়াত বলে
—- হুমমম। তারপর দুজন উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয়। আয়াত বারান্দায় দাড়িয়ে চুল ঝারছে,, আয়ান গিয়ে আয়াতকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে গালে একটা কিস দিয়ে বলে
—- নাশতা করবি নিচে চল। আয়াত বলে
— আপনি জান আমি আসছি। আয়ান আয়াতের চুলের গন্ধ নিতে নিতে বলে
—- উহুুু একসাথে। আয়াত কিছু বলে না,,, খাওয়া দাওয়া শেষ করে আয়ান আর আয়াত যায় গার্ডেনে। চারদিকে ফুলের সমারোহ আর পাখির কিচির মিচির শব্দ,,, পরিবেশটা খুব সুন্দর। আয়াত একটা গোলাপ ফুল ছিরে নিজের কানের পিঠে গুজে দিয়ে বলে
—- দেখেন তো আমাকে কেমন লাগছে?? আয়ান ডেভিল হাসি দিয়ে বলে
— রেড ভেলভেট কেক লাগছে। আয়াত আয়ানকে তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখেই দৌড়। আয়ানও আয়াতের পিছু পিছু দৌড়। আয়াত যেতে যেতে একদম সুইমিংপুলের ধারে চলে এসেছে তা দেখে আয়ান বলে
—- এখন কোথায় যাবি? আয়াত আরেক পা পিছালেই পরে যেতে চাইলে আয়ান ধরে ফেলে। আর সুযোগ বুঝে আয়াত উপরে উঠে আয়ানকে পানিতে ফেলে দেয়। আর হাসতে লাগে। আয়ান ভিজে একাকার হয়েগেছে। আয়ান নিজের হাত বারিয়ে দেয় আর বলে
—- তুল আমাকে,, আয়াতও খুশি মনে তুলতে যায়,,, আর আয়ান আয়াতকে টান দিয়ে পানিতে ফেলে দেয়। আয়াত আয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে
—– এটা কি হলে?? আয়ান বলে
—- তখনতো খুব হাসছিলি এখন?? আয়াত আয়ানের দিকে বাচ্চাদের মতো ফেস করে তাকায় আর ফিক করে হেসে দেয় সাথে আয়ানও।। আয়ান আয়াতের দিকে হাত দিয়ে পানি ছুড়ে মারে,, আয়াতও কম না।
_________________
আরিয়ান রুমে বসে আছে মাথায় হাত দিয়ে , চোখ গুলো লাল হয়ে আছে,,,, ভয়টাও কাজ করছে প্রবল সামনেই দাড়িয়ে আছে ইরা,,, আরিয়ান চোখ মুখ শক্ত করে বসে আছে। ইরা বলে
—- তুমি কেন আয়াতের পিছু পরে আছ? আরিয়ান অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে বলে
— কয আই লাভ হার। ইরা উঠে দাড়ায় আর চড় বসিয়ে দেয় আরিয়ানের গালে
— আয়াত আর আয়ান দু’জন দু’জনকে নিয়ে ভালো আছে। আজকেও তো তুমি ওদের দিনটা খারাপ করতে চেয়ে ছিলে। আরিয়ান রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইরার দিকে। ইরা বলে
—– আহমেদ মেনশনে আসার আগে আমি চৌধুরী মেনশনে গিয়ে ছিলাম তোমাকে সারপ্রাইজ দিব বলে,, কিন্তু তুমি তো আমাকে অবাক করে দিয়ে আয়ান আর আয়াতের রুমে চলে যাও। আর কি সব বলছিলে আয়ানকে সরিয়ে দিব!! তোমার লজ্জা করে না??আর তুমি কালকে বাইক থেকে পরে হাত কেটেছ?? সিরিয়াসলি ভাই। আমি কিন্তু তোমার সাথেই ছিলাম বাইকে,,, আমরা বাসায় আসার পর তুমি সোজা রুমে চলে গিয়েছিলে। আরিয়ান ইরার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে ,,, অপূর্ব বলে
—- আমি জানি নিজের মানুষটাকে অন্যের হতে দেখা কতটা কষ্ট কর। কিন্তু আয়াত এখন বিবাহিত,, তোমাকে বুঝতে হবে,,, আরবিকে আমি লাইক করতাম সেটা যদি আমি আয়ানকে আগে বলতাম বা সম্পূর্ণ পরিবারকে বলতাম তাহলে এতো কিছু হতো না। বিয়ের আগের দিন আয়ানকে সব বলেছিলাম,, আয়ান বলেছিল এখন সম্ভব না কিছু। তখন আমি রেগে বলছিলাম,,, তোর থেকেও তোর প্রিয় মানুষটা আমি কেড়ে নিব,,, তাই সে আয়াতের উপর আরো আকৃষ্ট হয়ে পরে।।।তখনই আরিয়ান বলে
—- তো আমি কি করব??? আমি যে ওর প্রতি আসক্ত। ইরা গিয়ে আরিয়ানের দুইগালে হাত রেখে বলে
—- আয়াত তোমার না,, আয়ান আয়ানের আমাদের বিগ বির,,,, বিগ বি আমাদের কত লাভ করে আর সেখানে তুমি??? প্লিজ আরিয়ান। আরিয়ান এবার না পেরে ইরাকে ধরে কেঁদে দেয় আর বলে
—- আই এম রিয়েলি সরি ইরা আমার এমনটা ভাবা ঠিক হয়নি আমি আয়ান ভাইয়ার কাছে ক্ষমা চাইব। তখনই অপূর্ব বলে
—- সেটা আর বলতে হবে না,, পরিবেশ যেমন আছে থাক। আয়ানের রাগ সম্পর্কে আমাদের সবারই কম বেশি ধারনা আছে। আরিয়ান বলে
—- আমি হটাৎ করে ঘুমিয়ে গেলাম কিভাবে দুপুরে? ইরা একটা হাসি দিয়ে বলে
—- তোমার রুমে যে একটা সার্ভেন্ট এসেছিল জুস নিয়ে তাকে আমি পাঠিয়ে ছিলাম আর সেখানে ঘুমের ঔষধ মিলিয়ে দিয়ে ছিলাম। আরিয়ান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,, ইরা বলে
—– থাক হয়েছে এবার নিচে চলো।
_____________
কিছু সময় পর সবাই একসাথে এসে হাজির আয়াত আয়ানও এসেছে। তখনই আয়াতের মা বলে
—- আয়াত তাড়াতাড়ি যা তৈরি হয়েনে। বিকেল থেকে তো সব কাজ শুরু হবে।
আয়াত বলে
—- একটু পর যাই,, গার্ডেনে দেখে আসি কি অবস্থা । আয়াতের পিছু পিছু আয়ানও যায়। আয়ানকে দেখে আয়াত বিরক্ত হয়ে বলে
—- কি শুরু করেছেন? এমন পিছু পিছু ঘুরার মানে কি?? সবাই কি ভাববে?? আয়ান চোখ গুলো ছোট ছোট করে বলে
—- আমার পা আমার ইচ্ছা যা খুশি করব। তোর কি? আয়াত বলে
—- আমার কিছু না জান।
অন্য দিকে আলভিরা শুধু বলছে,,
—- এটা এখানে কেন? ঐখানে কেন? ডেকোরেশনের লোকরা পাগল হয়েগেছে!! সাদী কমড়ে হাত দিয়ে বলে
—- এখানে কি করেন মেডাম আপনি?? আলভিরা ওড়না দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বলে
—- দেখেন না কাজ করছি!! সাদী বলে
—- কাজ কইরা উল্টায় ফালায়ছে। নিজে কাজ না করে অন্যদের প্যারা দিস। আলভিরা ভেংচি কেটে বলে
—- তো কি হইছে,, আমিতো জ্বালাচ্ছি আর আপনি আপনি কি?? অন্য দিকে আয়াত আর আয়ান ঝগড়া করছে,, তা দেখে আরিয়ান এসে বলে
—– কি হয়েছে? আয়াত বলে
—-দেখনা তোমার ভাই এখন আমাকে রুমে নিয়ে যাবে। আমি নাকি রোদে থাকলে আমার রঙ জ্বলে যাবে,, আচ্ছা বলতো আমি কি কাপড় নাকি যে রঙ জ্বলবে?? আরিয়ান ফিক করে হেসে দেয়। তখনই ইরা এসে বলে
—- এটা কি ঠিক ভাইয়া। আয়ান বলে
—- কি করব!! পার্টিতে সবাই যদি আমার এমন রঙ জ্বলা বউ দেখে আমি মুখ লুকাবো কোথায়??
আয়াত বলে
—- সমস্যা নেই মেকাপ করে ঠিক করে নিব। আয়ান বলে
— এই আটা ময়দা সুজি মেখে আটার দাম আকাশ ছোঁয়া করে দিয়েছিস,, এখন থেকে বাবাকে বলবো আটা ময়দার বিজনেস শুরু করতে। আয়াত রেগে আয়ান কে মারতে আসলে আয়ান দেয় দৌড়,, আয়াত ও আয়ানকে ধরার চেষ্টা করছে কিন্তু হঠাৎ করেই আয়ান থমকে যায়,,, আয়াত দাড়িয়ে পরে।।। আলভিরা সাদী ঝগড়া করছিল কিন্তু যখনই আয়ানের বরাবর চোখ যায় সবাই নিশ্চুপ কারো মুখ দিয়ে কথা অব্দি বের হচ্ছে না ।। আয়াতের হাত পা দিয়ে কাঁপ উঠে গিয়েছে হঠাৎ করে মাথা ঘুরে পরে যায় আয়াত,, সেটা দেখে আরিয়ান
—– আয়াত বলে চিৎকার দিয়ে উঠে। আয়ানের হুশ আসেতেই দৌড়ে যায় সে আয়াতের কাছে,, আর আয়াতের দুই গাল ঝাঁকিয়ে বলে
—- এই এই আয়াত চোখ খুল। সবাই ব্যস্ত হয়ে পরে আয়াতকে নিয়ে৷ আয়ান দেরি না করে আয়াতকে কোলে তুলে নিয়ে সোজা বাসায় ঢুকে যায়।
চলবে।