গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍
লেখিকাঃ- konika Islam sanju
part:14
আয়াত অপূর্বের দিকে রাগী লুকে তাকিয়ে আছে,,,, অপূর্ব আয়াতকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে,,
—- এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? আয়াত রেগে বলে
—- তোমরা তিনটায় কোনো খিচুড়ি পাকাচ্ছ,, নয়তো একসাথে তিনজনের হাত কি করে কাটে?? আরিয়ান বলে
—- আমি বাইকে থেকে পরে গিয়েছিলাম। সাদী কিছু না বলে খাবার ছেড়ে চলে যায়। আর আলভিরা তাকিয়ে আছে সাদীর যাওয়ার দিকে। খেতে খেতে আয়ান বলে
— তা আরবি তুই অপূর্বের রুমে কি করছিলি? আরবি থতমত খেয়ে বলে
—- না তেমন কিছু না ,, আমি পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম আর তখনই। আয়ান আয়াতকে উদ্দেশ্য করে বলে
—- আমার লেট হচ্ছে আমি বের হচ্ছি। একটু রুমে আসো। আয়াতও আয়ানের সাথে রুমে চলে আসে। আয়ান আয়াতের কোপালে একটা চুমু দিয়ে বলে
—- জানটা আমার সাবধানে থাকিস ,,, আর বিকেলে অফিস থেকে ফিরে তোকে নিয়ে বের হবো। আয়াত তো অবাক, আয়ান তা দেখে মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায়। আয়ানকে আসতে দেখেই সেখান থেকে একটা ছায়া সরে যায়।
________
সাদী রুমে হঠাৎ করে ঢুকে যায় আলভিরা। আলভিরাকে দেখে বেস অবাক হয় সাদী। আলভিরা গিয়ে সরাসরি জড়িয়ে ধরে সাদীকে,, সাদী আলভিরাকে নিজের থেকে আলাদা করে বলে
— কি হয়েছে? এখানে কি চাই? আলভিরা সাদীর গালে হাত রেখে বলে
—- তোমাকে চাই… সাদী আলভিরার হাত সরিয়ে বলে
—- কালকে তো আমিও বলেছিলাম,, তখনতো আমাকে ফিরিয়ে দিতে ২বার ভাবিস নি? উল্টো ইগো দেখিয়ে ইগনোর করে ছাঁদ থেকে নিজের রুমে চলে গিয়েছিলি।
কালকের কথা রাতে রেস্টুরেন্টে থেকে আসার পর,, আলভিরা ছাঁদে চলে আসে ঘুম আসছিলো না,, আর তখনই সাদী ছাঁদে আসে,,,, আলভিরা সাদীকে দেখে জিজ্ঞেস করে
—- এতো রাতে?? জিএফ এর সাথে কথা বলতে আসছেন। সাদী আলভিরার পাশে রেলিঙে চড়ে বসে বলে
—- না জিএফ নেই কিন্তু একজন আছে যাকে অনেক ভালোবাসি। আলভিরা সাদীর দিকে তাকিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে বলে
— কে?? সাদী আলভিরার হাত ধরে চুমু দিয়ে বলে
— তুই,, #তোর_শহরের_প্রেম তোর হাসি সব। আলভিরা যেন আকাশ থেকে পরে, সেও যে সাদীকে ভালোবাসে,, খুশিতে চোখ বেয়ে পানি চলে আসে,, আর নিজেও জানে না কি মনে করে ছুটে নিজের রুমে চলে আসে। আর আলভিরার এমন কাজে রেগে ইচ্ছেমতো দেওয়ালে পান্ঞ্চ মারে সাদী, ফলে হাত ছিলে রক্ত বের হয়। আলভিরা বলে
—- আমি কি হ্যা না কিছু বলেছিলাম,, খুশিতে আত্মহারা হয়েছিলাম তাই দৌড়ে পালিয়ে ছিলাম। আর হাতের কি অবস্থা করেছেন। সাদী আলভিরাকে হাগ করে বলে
—+ আমার মায়া জ্বালে আটকালে তুমি আর বের হতে পারবে না,,, পাখি। আলভিরা মুচকি হাসি দিয়ে বলে
—- আচ্ছা এখন ছাড়ো,, আমাকে যেতে হবে,,নাশতা শেষ করবে নিচে আসো
________
বিকেল হয়ে গেছে,,, আয়াত ঘুম থেকে উঠে দেখে আরবি, আলভিরা আর ইরা কমড়ে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে। আরবি বলে
—- উঠলি তবে,, কখন থেকে ডেকে চলছি। আলভিরা বলে
—- সে সব কথা পরে হবে,,, আগে রেডিতো কর। দুজন মিলে আমাকে রেডি করিয়ে দেয়। রেড গাউন চুলগুলো বান করা,,, মুখে মেকাপ আর জুয়েলারি। ফোনে মেসেজ আসতেই,, আমি নিচে নামতে লাগলাম ওদের বিদায় দিয়ে।। জনাব গাড়িতে হেলান দিয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।। তাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে,, আমার অনেকটা আন ইজি লাগছে,, তাই কিছু না বলেই গাড়িতে বসে পরলাম। উনিও গাড়িতে বসে আমার সিটবেল্ট বেধে দিয়ে গাড়ি স্টার্ট করলেন। কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ ছিলাম। কিছুক্ষণ পর আমি বললাম,
— ” কোথায় যাচ্ছি আমরা?”
আয়ান ড্রাইভ করতে করতে বললো
— ” গেলেই দেখতে পাবে।”
আমি বিরক্ত হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
— ” এমন কেনো আপনি? সবসময় থ্রিল থ্রিল ভাব রাখেন । সবসময় মনের মধ্যে চলতে থাকে এরপর কী হবে? এরপর কী হবে?”
আমার কথায় উনি শব্দ করে হেসে দেয়,
আমি মুখ ভেংচি কেটে বাইরে তাকিয়ে রইলাম। প্রায় ঘন্টারও বেশি সময় ধরে গাড়ি চলল। আমি ওনাকে আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি কারণ জানি কিছুই বলবেন না। হঠাৎ একটা জায়গায় গাড়ি এসে থামলো। আমি দেখলাম একটা বাড়ির সামনেই গেইটেই গাড়িটা থেমেছে হয়তো ফার্মহাউজ। আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকাতেই উনি পকেট থেকে একটা রুমাল বার করে আমার চোখ বেধে দিলেন। আমি অবাক হয়ে বললাম,
— ” ক্ কী করছেন কী? এমন একটা জায়গায় নিয়ে এসছেন। মেরে গুম করে দেবেন নাকি? যাতে নতুন বউ আনতে সুবিধা হয়? ”
আয়ান আমাকে কোলে তুলে নিয়ে বললেন,
— “মাথায় সব উল্টা পাল্টা চিন্তা,, কিন্তু আইডিয়াটা কিন্তু মন্দ না।”
আমি হাসলাম না দেখেই বুঝতে পারলাম উনিও হাসছেন। অনেকক্ষণ কেটে যাওয়ার পরেও উনি হেটেই যাচ্ছেন। আমি বিরক্ত। তাই বললাম
— কোথায় যাচ্ছেন বলবেন? হাটছেন তো হাটছেনই কষ্ট হচ্ছে না।” আয়ান বলে
— ” আসলে পেছনে একটা নদী আছে। মেরে সেখানেই ফেলবো তোকে,, তাই একটু কষ্ট করাই যায়,, তোর মতো আপদকে বিদায় করতে।”
আমি একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললাম,
— ” ওহ আচ্ছা।”
কিছুক্ষণ মধ্যেই উনি আমায় একটা জায়গায় দাঁড় করালেন। আমার দুইকাধে হাত রেখে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললেন,
— ” আর ইউ রেডি টু ডাই?”
আমি ঠোঁটে হাসি রেখেই বললাম,
— ” কমপ্লিটলি।”
উনি আলতো করে আমার চোখের বাঁধন খুলে দিলেন। আমি সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। আবছা লালচে অন্ধকারে সামনে বয়ে চলা নদীটা খুব বেশি সুন্দর লাগছে। চারপাশটা এতোটা সুন্দর করে সাজানো যে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে আমার। আমার সরাসরি সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। কারণ সামনে একটা বড় বোর্ডে গোলাপ ফুল দিয়ে মোটা করে ইংলিশে লেখা আই লাভ ইউ। আমি সাথেসাথেই শক্ত হয়ে গেলাম। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিনা। সবকিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছে। উনি আমার দুই বাহু ধরে নিজের ধারে ঘুরিয়ে নিলেন। আমি স্হির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম ওনার দিকে। উনি মুখে মুচকি হাসি ঝুলিয়ে বললেন,
— ” ইয়েস আই লাভ ইউ।কখন থেকে ভালোবাসি আমি জানি না। নিজের সবটা দিয়ে ভালোবাসি। আমি নিজেও জানিনা কেনো, কীভাবে ভালোবেসেছি তোকে। শুধু এটুকু জানি যে ভালোবাসি। তোর হাসি, রাগ, কেদে দেওয়া, মুখ ফুলিয়ে তাকিয়ে থাকা, ভ্রু কুচকানো এইসবকিছু আমার নেশা হয়েগেছে। অন্যদের মতো উইল ইউ ম্যারি মি বলতে পারবোনা কারণ বিয়ে হয়ে গেছে। আর আই এম সরি জান আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি তোকে,, কিন্তু আজকের পর আর তোর চোখের কোনে পানি আসতে দিব না।
#তোর_শহরের_প্রেম,, আমাকে প্রেমে পরতে বাধ্য করেছে।
আয়াত যেন বিশ্বাস করতে পারছেনা,,, আয়ান এইসব বলছে,, এটা কি সে আয়ান যে আয়াতকে দেখতে পারতো না?? আয়াত বলে
—- আপনি মজা করছেন?? আয়ান রেগে বলে
— তোকে সত্যি এখন মেরে নদীতে ফেলে দিব। যা বলছি তার উত্তর দে। আয়াত রেগে ভেংচি কেটে বলে
—- সুন্দর করে বলেন,, নয়তো হ্যা বলবো না৷ আয়ান দাড়িয়ে বলে
—- তোর হ্যা বা নাতে আমার কিছু যায় আসে না। এখন আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে, তাই আর আশিক ওয়ারার মতো ঘুরতে হবে না। আয়াত রেগে বলে
—- হিটলার একটা।আর দৌড়। আয়ান বলে
—- তবে রে দাড়া তোকে দেখাচ্ছি মজা। আয়াত দৌড়াতে দৌড়াতে ফার্মহাউসের ভিতরে চলে যায়। আয়ান নিজের কোট টা সোফায় ছুড়ে মারে আর টাইটা খুলে হাতা ঘুটিয়ে আয়াতকে খুজতে লাগে। আয়াতকে পায় আয়ান একটা রুমে,, আয়াত আয়ানের কাছে এসে গালে আলতো করে হাত রেখে বলে
—– ভাবতেও পারেনি আপনার থেকে এমন কিছু পাবো,,, আই লাভ ইউ। আয়ানও আয়াতকে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে
—- আই লাভ ইউ টু ( এবার ওরা ওদের মতো থাকুক,, কালকে আবার দেখা হবে )
________
চলবে