গল্পের নামঃ- #তার_শহরের_প্রেম😍😍
লেখিকাঃ- konika Islam sanju
part:13
আয়ান রুমে আসতেই আয়াত আয়ানকে ইচ্ছে মতো মারতে লাগে৷ আয়াতকে এমন ক্ষেপে থাকতে দেখে আয়ান মনে মনে বলে
—– আল্লাহগো এই যাত্রা বউয়ের হাত থেকে শহীদ হওয়ার আগে বাচায় নাও জীবেন আর করতাম কি না এমন পরে ভাববো,,, কারণ ওকে জ্বালায়তে সেই ভালো লাগে। আয়াত খেয়াল করে দেখে আয়ান আলাদা জগৎই হয়তো কিছু ভাবছে!! আয়াত আয়ানের চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলে
— এই যে,,মি. লম্বু কি ভাবছেন?? একা একা ঝগড়া করে কি মজা আছে?? আয়ান বলে
—- ভালো করে ঝগড়া করবি?? তাহলে আগে আমি তোকে ইচ্ছে মতো মেরে নেই তারপর!! আয়াত ভাব নিয়ে বলে
—- আমি আপনাকে পিটাবো,, কারণ আপনি আমাকে চিমটি কেটেছেন। আয়ান হালকা রেগে বলে
—- তুই অপূর্বের সাথে জায়গা বদলি করেছিস তাই। আয়াত কমড়ে হাত দিয়ে এক ভ্রু উচু করে বলে
—- এর আগে কি আমার হাতে কাঁকড়া কামড়াচ্ছিল? আয়ান একটা ডেবিল হাসি দিয়ে বলে
— হ্যা আবার কামড়াবে,, বলেই আয়াতকে চিমটি কাটে আয়াত রুমের এইদিক সেইদিক দৌড়াতে লাগে,, আয়ানও। একটা সময় দু’জন হাপিয়ে গেলে আয়ান বলে
—– ওয়েট একটু রেস্ট নিয়েনেই,,, যা আমার জন্য কফি নিয়ে আয়। আয়াত বলে
—- আমি কেন কফি বানাবো?? সামনেই তো ক্যাফে আছে!! সেখান থেকে খেয়ে আসুন আর আমাকেও খাওয়ান!! আয়ান ভেবে বলে
—- ওকে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়েনে,,,, আমি নিচে গিয়ে সবাইকে বলছি,, আর ডিনার করে ফিরব। আয়ান চলে যায় আর আয়াত তৈরি হতে লাগে,,,,,,,, বেইবি পিংক কালারের শাড়ি,, গলায় একটা চেন,,, কানে সাদা পাথরের ঝুমকা,,, চোখে কাজল,, আর ঠোঁটে পিং লিপস্টিক,,,,হাইলাইট করা কমড় অব্দি চলুগুলো খোলা,,,, সব মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
_________
আয়াত শাড়ির কুঁচি ঠিক করতে করতে নিচে নামছে,,আরেক হাতে ফোন, আর আয়াতকে দেখে একই সাথে একই সময় দুজনের চোখ আটকে যায়,,,, আয়ান কি মনে করে আয়াতের হাত ধরে সোজা রুমে নিয়ে আসে,,, আয়াত বলে
—- কি হচ্ছে!? আরে বাবা হলো টাকি!! নিচে সবাই একসাথে ওদের অপেক্ষা করছে। আয়ান আয়াত কে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে দেয় আর একটা টিসু নিয়ে, আয়াতের ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে দেয়,,, চোখের কাজলটাও হালকা করে দেয় আর চোখ মুখ শক্ত করে বলে
—- এভাবে এতো সাজার কি আছে? আমি ছাড়া কারো সামনে এভাবে যাবি না। কারণ তুই আমার স্ত্রী অন্য কারো না৷ আয়াতের চোখ দিয়ে পানি পরছে এটা দুঃখের না সুখের কারণ আয়াতের মতে আয়ান এই প্রথম তার উপর জোর খাটিয়েছে,, আয়াতকে কান্না করতে দেখে আয়ান বলে
—- এই কান্না করবি না,,, এখন চল। সবাই একসাথে রেস্টুরেন্টে চলে আসে।। কিন্তু আসার সময় আরিয়ান আর ইরা, আলভিরা, সাদী বাইকে করে আসে। আরিয়ান ইরাকে বলে
—- ধরে বসো নয়তে পরে যাবে। ইরা অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলেছিল।
—- সেটাই ভালো। আরিয়ান হঠাৎ করে ইরার এমন পরিবর্তনের কারণ খুজতে লাগে,, আর তারা রেস্টুরেন্টে পৌঁছে যায়। সাদী আর আলভিরাও বাইকে এসেছে ,,, আর হঠাৎ করে বৃষ্টি হওয়াতে আলভিরা খানিকটা ভিজে যায়। আয়ান সামনের ক্যাফেটাতে না গিয়ে বেস দূরে একটা রেস্টুরেন্টে আসে। সাদী বলে
—- এইরে আলভিরা তোর তো আটা ময়দা সব ধুয়ে মুছে গিয়েছে!! আলভিরা রেগে নিজের পার্স দিয়ে সাদীকে মেরে বলে
—- মূর্খ বালক,,, কুদ্দুস আলী এটকে আটা ময়দা না মেকাপ বলে মেকাপ,,,, আর এটা ওয়াটার প্রুফ। সাদী উপরে উঠতে উঠতে বললো
—- মেকাপ মাইখা যদি এত সুন্দর হয়ে গেলি,, তাহলে একটু খেতেও তো পারিস!! তাহলে তোর কালো মন, দিল, প্রাণটা সাদা হবে। আলভিরা বলে
—- তোমার মতো,,, উল্লুকের মতো ভাল্লুকের থেকে এরে চেয়ে বেশি আশা করা,, বৃথা। তখনই ইরা আলভিরাকে ডাকে। তাড়াতাড়ি করে উপরে উঠতে যায়। আরিয়ান সেদিকে এক পলক তাকিয়ে সেও নিজের মতো ফোন বের করে উপরে উঠতে লাগে আর বলে
—সাদী একটু ওয়েট কর।সাদী বলে
–আরিয়ান একটা জিনিস খেয়াল করেছিস এবার কিন্তু ইরা অনেকটা বদলে গেছে তোর সাথে তেমন কথা বলে না ইভেন তোকে এভয়েড করে চলে । আরিয়ান বলে
—ওকে আমি খুব ভাল করেই চিনি দুইদিন যেতে দে দেখিস আবার আগের রুপে ফিরে আসবে এখন হয়তো এভাবেই একটু এটিটিউড দেখাচ্ছে ব্যাপার না বাদ দে ওর কথা। সাদীও আর তেমন কথা বারায় না সোজা ওপরে চলে যায় যে দেখে সবাই ছবি তুলতে ব্যস্ত। কিন্তু সবার মাঝে এক কোণে বসে আছে অপূর্ব আর ফোনের ভিতরে কি যেন করছে তার এই সবে কোন ইন্টারেস্ট নেই গিয়ে বসে পড়ে অপূর্বর পাশে।। সাদী বলে
.
— আজকাল খেয়াল করলে দেখি এসে আরিয়ান কিন্তু আয়াতের উপরে বেশ সেনসিটিভ হয়ে যাচ্ছে ।স্বাদের কথা শুনে আরিয়ান মুচকি হাসে আর অপূর্ব আর আয়াতের দিকে এক পলক তাকিয়ে দেখে দুজন ছবি তুলতে ব্যস্ত আয়াত কি যেন বলছে আয়ানকে আর মুচকি মুচকি হাসছে । আয়াত বলছে
—- আপনার পিক গুলো সেম মুফিজ মুফিজ লাগছে। আয়ান চোখ গুলো ছোট ছোট করে বলে
—– তোকে কিসের মতো লাগছে রাক্ষস রাণী কটকটি। তখনই আরবি বলে
—- এখানে এসেও ঝগড়া করবি?? আর একবার যদি ঝগড়া করেছিস তাহলে আমি বেরিয়ে যাবো। আয়াত আয়ানের হাত ধরে বলে
—- কি যে বলো না আপু,, এগুলো তো খুনশুটি,, ভালোবাসার খুনশুটি। শাকিল বলে
—- আগেও আমারও মনে হতো,, কিন্তু খুনশুটি থেকে যে কখন খুনাখুনি হবে বুঝতেও পারবে না। জেইনাব চোখ রাঙিয়ে বলে।
—- আজকে আর বেড রুমে জায়গা হবে না। ফাহাদ বলে
—- তোমাদের তো খুনাখুনি, আর খুনশুটি আর আমাকে তো শুটকি মাছের মতো রোদে শুকায়৷ ফহাদের কথা শুনে ফারিন বলে
—- আজকে তোমারও জায়গা হবে না। সাদী দূর থেকে বলে
—- আলহামদুলিল্লাহ আমার কোনো শাকচুন্নি নেই। আলভিরা বলে
—- তোমার কপালে রাক্ষসী আছে। সাদী বাকা হাসি দিয়ে বলে
— না সে আমার রূপকথা গল্পের রাজকুমারী। আলভিরা ভেংচি কেটে ছবি তোলায় মনোযোগ দেয়।
_______________
চারদিকে পিন পিন নিরবতা,,,, চেয়ারে বসে পাশে থাকা টেবিলে লাইট টা একবার ওন করছে আরেকবার ওফ করছে সেই অজানা ব্যক্তি। তখনই তার ফোনে একটা আনানোন নাম্বার থেকে মেসেজ আসে মেসেজে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে লেখা আছে
—– আয়াত আর আয়ানের মাঝ থেকে সরে যাও,, নয়তো আমার আসল রূপ দেখবে তুমি,,,, আয়ানকে আয়াতকে নিয়ে সুখে থাকতে দাও,, নয়তো তোমার জীবনে আমি চলে আসলে তোমার সব ফ্রিডম শেষ। তখন না এই কুল থাকবে না ঐকুল,,, ।। মেসেজটা দেখা মাত্র সেই অজানা ব্যাক্তিটার ঘাম ঝরতে লাগে,,, তাড়াতাড়ি করে পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে কিন্তু সে ব্যার্থ,, শেষ না পেরে পানির গ্লাসটা জোরে চাপ দিয়ে ভেঙে ফেলে হাত দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে,,, কিভাবে জানলো??? না আয়াত আমার।
________
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেতে খাবার টেবিলে বসে আয়াত অবাক, কারণ আরিয়ান আর সাদীর হাতে বেন্ডেজ করা,,, অপূর্বের হাতেও। আয়াত আরিয়ানকে বলে
—- হাতে কি হয়েছে??ইরাও আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে,, অসহায় দৃষ্টিতে,,, কারণ সে যতযাই করুক তাকে লাভ তো করে আরিয়ানের কষ্টতে তারও কষ্ট হচ্ছে। আরিয়ান ইরার দিকে তাকিয়ে বলে
—- কিছু না ব্যাথা পেয়েছি,, বাইক রেস করতে গিয়ে।
সাদী কিছু না বলেই খাবারের টেবিল ছেড়ে উঠে যায়। অপূর্ব চুপচাপ খাচ্ছে,,, আয়াত বলে
—- অপূর্ব ভাইয়া তুমি?? অপূর্ব বলে
—- জানিনা সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে যাওয়ার সময় পিছলে পড়ে গিয়েছিলাম আর থামাতে বেলেন্স করতে গিয়ে এমন হয়েছে আর আরবি তো হাতের বেন্ডেজ করে দিয়েছে। আরবি খাওয়া ছেড়ে একবার আয়ানের দিকে তাকায় আরেকবার অপূর্বের দিকে,, অপূর্ব ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে খাচ্ছে আর আয়াত রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অপূর্বের দিকে
চলবে৷
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে,,রিচেক করতে পারিনি। 🥰🥰